بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময়
📕ইরফানুল কুরআন:
আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓرٰ ۟ کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ اِلَیۡکَ لِتُخۡرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ۬ۙ بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ اِلٰی صِرَاطِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَمِیۡدِ ۙ﴿۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আলিফ লা----ম রা-। এই একটি কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকাররাশি থেকে আলোর মধ্যে নিয়ে আসেন তাদের রবের নির্দেশক্রমে- তাঁরই পথের দিকে, যিনি মহা সম্মানিত, সমস্ত প্রশংসার অধিকারী;
📕ইরফানুল কুরআন:
১. আলিফ-লাম-রা। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।) এটি (মহান) কিতাব, যা আমরা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষকে (কুফরীর) অন্ধকার থেকে বের করে (ঈমানের) আলোর দিকে নিয়ে আসতে পারেন। (এছাড়াও) তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে তাঁর পথের দিকে (নিতে পারেন), যিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রশংসার অধিকারী।
اللّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ وَیۡلٌ لِّلۡکٰفِرِیۡنَ مِنۡ عَذَابٍ شَدِیۡدِۣ ۙ﴿۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্, তাঁরই যা কিছু আসমানসমূহ আছে এবং যা কিছু যমীনে এবং কাফিরদের জন্য দুর্ভোগ রয়েছে একটি কঠিন শাস্তি থেকে;
📕ইরফানুল কুরআন:
২. তিনি আল্লাহ্, যা কিছু আকাশমন্ডলীতে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে (সবকিছু) তাঁরই। আর কাফেরদের জন্যে কঠিন শাস্তির কারণে রয়েছে ধ্বংস,
الَّذِیۡنَ یَسۡتَحِبُّوۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا عَلَی الۡاٰخِرَۃِ وَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ یَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ؕ اُولٰٓئِکَ فِیۡ ضَلٰلٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
যাদের নিকট পরকাল অপেক্ষা পার্থিব জীবন প্রিয় এবং আল্লাহর পথে বাধা দেয় ও তাঁতে বক্রতা চায়, তারা দূরের ভ্রান্তিতে রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩. (তারা) সেসব লোক, যারা পার্থিব জীবনকে পরকালের বিপরীতে অধিক পছন্দ করে, (মানুষকে) আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে এবং এতে (এ সত্য দ্বীনে) বক্রতা অন্বেষণ করে। এ লোকেরা ঘোরতর গোমরাহীতে (নিমজ্জিত) রয়েছে।
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا بِلِسَانِ قَوۡمِہٖ لِیُبَیِّنَ لَہُمۡ ؕ فَیُضِلُّ اللّٰہُ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি প্রত্যেক রসূলকে তাঁর স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি যেন সে তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দেয়; অতঃপর আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট করেন যাকে চান এবং তিনি সৎপথ দেখান যাকে চান এবং তিনিই সম্মানিত, প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪. আর আমরা প্রত্যেক রাসূলকেই স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি, যাতে তিনি তাদের জন্যে (সত্যের বার্তা) অধিকতর স্পষ্ট করে দিতে পারেন। অতঃপর আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা গোমরাহ্ করেন এবং যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দান করেন। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰی بِاٰیٰتِنَاۤ اَنۡ اَخۡرِجۡ قَوۡمَکَ مِنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ۬ۙ وَ ذَکِّرۡہُمۡ بِاَیّٰىمِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّکُلِّ صَبَّارٍ شَکُوۡرٍ ﴿۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে আমার নিদর্শনাদি সহকারে প্রেরণ করেছি, ‘আপন সম্প্রদায়কে অন্ধকাররাশি থেকে আলোতে নিয়ে এসো এবং তাদেরকে আল্লাহর দিনসমূহ স্মরণ করিয়ে দাও!’ নিশ্চয় সেটার মধ্যে নিদর্শনাদি রয়েছে প্রত্যেক বড় ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫. আর নিশ্চয়ই আমরা প্রেরণ করেছিলাম মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে আমাদের নিদর্শনাবলী সহকারে যে, ‘(হে মূসা!) তুমি তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যাও। আর তাদেরকে আল্লাহর দিবসগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দাও (যা তাদের এবং তাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের প্রতি এসেছিল)।’ নিশ্চয়ই এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে পরম ধৈর্যশীল, (এবং) কৃতজ্ঞতা আদায়কারীর জন্যে।
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ اَنۡجٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ یَسُوۡمُوۡنَکُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ وَ یُذَبِّحُوۡنَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ یَسۡتَحۡیُوۡنَ نِسَآءَکُمۡ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکُمۡ بَلَآءٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَظِیۡمٌ ﴿۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন মূসা আপন সম্প্রদায়কে বললো, ‘স্মরণ করো তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ফির’আউনী সম্প্রদায়ের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছেন, যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিতো এবং তোমাদের পুত্রদের যবেহ করতো তোমাদের কন্যাদের জীবিত রাখতো; এবং এ’তে তোমাদের রবের মহা অনুগ্রহ হয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমাদের প্রতি আল্লাহর (সে) অনুগ্রহকে স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদেরকে ফেরাউনের লোকদের থেকে উদ্ধার করলেন, যারা তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতো, তোমাদের পুত্রদেরকে জবাই করতো এবং তোমাদের নারীদেরকে জীবিত ছেড়ে দিতো। আর এতে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে ছিল এক মহা পরীক্ষা।’
وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکُمۡ لَئِنۡ شَکَرۡتُمۡ لَاَزِیۡدَنَّکُمۡ وَ لَئِنۡ کَفَرۡتُمۡ اِنَّ عَذَابِیۡ لَشَدِیۡدٌ ﴿۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব শুনিয়ে দিলেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তবে আমি তোমাদেরকে আরো অধিক দেবো এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে আমার শাস্তি কঠোর’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭. আর (স্মরণ করো) যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করলেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় করো তবে আমি অবশ্যই তোমাদের উপর (অনুগ্রহ) বর্ধিত করবো আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, তবে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠিন।’
وَ قَالَ مُوۡسٰۤی اِنۡ تَکۡفُرُوۡۤا اَنۡتُمۡ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ حَمِیۡدٌ ﴿۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মূসা বললো, ‘যদি তোমরা এবং পৃথিবীতে যতো রয়েছে সকলেই কাফির হয়ে যাও, তথাপি নিশ্চয় আল্লাহ্ বেপরোয়া সমস্ত প্রশংসার মালিক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮. আর মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘যদি তোমরা এবং পৃথিবীর সকলেই কুফরী করতে শুরু করো, তথাপি আল্লাহ্ (সেসব কিছু থেকে) অমুখাপেক্ষী, প্রশংসা ও গুণগানের অধিকারী’।
اَلَمۡ یَاۡتِکُمۡ نَبَؤُا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّ عَادٍ وَّ ثَمُوۡدَ ۬ؕۛ وَ الَّذِیۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ ؕۛ لَا یَعۡلَمُہُمۡ اِلَّا اللّٰہُ ؕ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ فَرَدُّوۡۤا اَیۡدِیَہُمۡ فِیۡۤ اَفۡوَاہِہِمۡ وَ قَالُوۡۤا اِنَّا کَفَرۡنَا بِمَاۤ اُرۡسِلۡتُمۡ بِہٖ وَ اِنَّا لَفِیۡ شَکٍّ مِّمَّا تَدۡعُوۡنَنَاۤ اِلَیۡہِ مُرِیۡبٍ ﴿۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমাদের নিকট কি ওই সব লোকের সংবাদগুলো আসে নি, যারা তোমাদের পূর্বে ছিলো নূহের সম্প্রদায়, ‘আদ ও সামূদ সম্প্রদায় এবং যারা তাদের পরবর্তীতে হয়েছে? তাদেরকে আল্লাহ্ই জানেন। তাদের নিকট তাদের রসূল স্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে এসেছেন অতঃপর তারা আপন হাতগুলো আপন মুখের দিকেই নিয়ে গেলো; আর বললো ‘আমরা অস্বীকারকারী হই সেটার, যা কিছু তোমাদের হাতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং যে পথের দিকে আমাদেরকে আহ্বান করছো, তাঁতে আমাদের মনে এই সন্দেহ্ রয়েছে যে, তা বক্তব্যকে স্পষ্ট হতে দেয় না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯. তোমাদের নিকট কি সেসব লোকদের সংবাদ পৌঁছেনি, যারা তোমাদের পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে, (তারা) নূহের সম্প্রদায়, ’আদ এবং সামূদ (সম্প্রদায়ের লোক) এবং (আরো কিছু) যারা তাদের পরে এসেছে? তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ ব্যতীত কেউই জানে না (কেননা তাদেরকে ভু-পৃষ্ট থেকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে)। তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলীসহ আগমন করেছিলেন। অতঃপর তারা (ঠাট্টা-মশকরা ও বিদ্বেষবশত) নিজেদের হাত নিজেদের মুখে স্থাপন করতো এবং (বড়ই দুঃসাহসের সাথে) বলতো, ‘আমরা তা (অর্থাৎ এ দ্বীন) অস্বীকার করি, যা সহ তোমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে। আর অবশ্যই আমরা এ বিষয়ে দ্বিধান্বিত যার প্রতি তোমরা আমাদেরকে আহ্বান করছো।’
قَالَتۡ رُسُلُہُمۡ اَفِی اللّٰہِ شَکٌّ فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ یَدۡعُوۡکُمۡ لِیَغۡفِرَ لَکُمۡ مِّنۡ ذُنُوۡبِکُمۡ وَ یُؤَخِّرَکُمۡ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی ؕ قَالُوۡۤا اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا بَشَرٌ مِّثۡلُنَا ؕ تُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَصُدُّوۡنَا عَمَّا کَانَ یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا فَاۡتُوۡنَا بِسُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের রসূলগণ বললো, ‘আল্লাহ্ সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ আছে? আসমান ও যমীনের স্রষ্টা। তোমাদেরকে আহ্বান করেন যেন তোমাদের কিছু পাপ মার্জনা করেন এবং মৃত্যুর নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তোমাদের জীবন শাস্তিবিহীন অবস্থায় অতিবাহিত করান’। তারা বললো, ‘তোমরা তো আমাদের মতোই মানুষ। তোমরা তো চাচ্ছো আমাদেরকে তা থেকে বিরত রাখতে, যার আমাদের পিতৃপুরুষগণ পূজা করতো। এখন আমাদের নিকট কোন সুস্পষ্ট সনদ নিয়ে এসো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০. তাদের রাসূলগণ বললেন, ‘আল্লাহর ব্যাপারে কি কোনো সন্দেহ আছে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, (যিনি) তোমাদেরকে আহ্বান করছেন তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়ার জন্যে এবং (তোমাদের নাফরমানী সত্তেও) তোমাদেরকে একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে রাখেন?’ তারা (কাফেরেরা) বলে, ‘তোমরা তো কেবল আমাদেরই মতো মানুষ। তোমরা তো আমাদেরকে সেসব (মূর্তি) থেকে বিরত রাখতে চাও, যাদের উপাসনা আমাদের পিতৃপুরুষেরা করতো। সুতরাং তোমরা আমাদের নিকট সুস্পষ্ট কোনো দলিল উপস্থাপন করো।’
قَالَتۡ لَہُمۡ رُسُلُہُمۡ اِنۡ نَّحۡنُ اِلَّا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَمُنُّ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ مَا کَانَ لَنَاۤ اَنۡ نَّاۡتِیَکُمۡ بِسُلۡطٰنٍ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের রসূলগণ তাদেরকে বললো, ‘আমরা হই তো তোমাদের মতো মানুষ, কিন্তু আল্লাহ্ আপন বান্দাদের মধ্যে যারই প্রতি চান অনুগ্রহ করেন। আর আমাদের কাজ নয় যে, আমরা তোমাদের নিকট কোন সনদ নিয়ে আসবো, কিন্তু আল্লাহরই নির্দেশক্রমে। এবং আল্লাহরই উপর মুসলমানদের নির্ভর করা উচিত।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১. তাদের রাসূলগণ বললেন, ‘যদিও আমরা (মানবীয় সত্তায়) তোমাদের মতোই মানুষ কিন্তু (এ পার্থক্যের দিকেও লক্ষ্য করো যে,) আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তাঁর প্রতি অনুগ্রহ করেন। (কাজেই সমতা কিভাবে হলো?) আর (রয়ে গেল সুস্পষ্ট প্রমাণের বিষয়) এটি আমাদের কাজ নয় যে, আমরা আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের নিকট কোনো দলিল উপস্থিত করবো। আর আল্লাহরই উপর মুমিনদের ভরসা করা উচিত।
وَ مَا لَنَاۤ اَلَّا نَتَوَکَّلَ عَلَی اللّٰہِ وَ قَدۡ ہَدٰىنَا سُبُلَنَا ؕ وَ لَنَصۡبِرَنَّ عَلٰی مَاۤ اٰذَیۡتُمُوۡنَا ؕ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُتَوَکِّلُوۡنَ ﴿۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমাদের কী হয়েছে যে, আল্লাহর উপর নির্ভর করবো না? তিনি তো আমাদের পথগুলো আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন এবং তোমরা আমাদেরকে যেই কষ্ট দিচ্ছো, আমরা অবশ্যই সেটার উপর ধৈর্যধারণ করবো। এবং আল্লাহরই উপর নির্ভরকারীদের নির্ভর করা উচিত।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২. আর আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করবো না, যখন তিনিই আমাদেরকে (হেদায়াত ও সফলতার) পথ প্রদর্শন করেছেন? আমরা অবশ্যই তোমাদের দেয়া ক্লেশের উপর ধৈর্য ধারণ করবো। আর ভরসাকারীদের তো আল্লাহরই উপর ভরসা করা উচিত।’
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِرُسُلِہِمۡ لَنُخۡرِجَنَّکُمۡ مِّنۡ اَرۡضِنَاۤ اَوۡ لَتَعُوۡدُنَّ فِیۡ مِلَّتِنَا ؕ فَاَوۡحٰۤی اِلَیۡہِمۡ رَبُّہُمۡ لَنُہۡلِکَنَّ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কাফিরগণ তাদের রসূলগণকে বললো, ‘আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে আমাদের ভূমি থেকে বের করে দেবো। অথবা তোমরা আমাদের দ্বীনের প্রতি ফিরে এসো। অতঃপর তাদের প্রতি তাদের রব ওহী প্রেরণ করেছেন, ‘আমি অবশ্যই যালিমদেরকে বিনাশ করবো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৩. আর কাফেরেরা তাদের রাসূলগণকে বলতে লাগলো, ‘আমরা যে কোনো অবস্থায় তোমাদেরকে আমাদের ভুমি থেকে বহিষ্কার করবোই অথবা তোমরা অবশ্যই আমাদের দ্বীনে প্রত্যাবর্তন করবে’। অতঃপর তাদের প্রতিপালক তাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করলেন, ‘আমরা যালিমদের অবশ্যই ধ্বংস করে দেব’।
وَ لَنُسۡکِنَنَّـکُمُ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ ؕ ذٰلِکَ لِمَنۡ خَافَ مَقَامِیۡ وَ خَافَ وَعِیۡدِ ﴿۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি তাদের পর তোমাদেরকে পৃথিবীতে বসবাস করাবো। এটা তাঁরই জন্য, যে আমার সম্মুখে দাড়ানোর ভয় রাখে এবং আমি যে শাস্তির নির্দেশ শুনিয়েছি সেটারও ভয় রাখে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৪. আর এদের পরে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে (এ) ভূমিতে বসতি স্থাপন করাবো। এ (অঙ্গীকার) প্রতিটি ব্যক্তির জন্যে যারা আমার সম্মুখে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করে এবং আমার (শাস্তির) অঙ্গীকারে ভীত হয়।
وَ اسۡتَفۡتَحُوۡا وَ خَابَ کُلُّ جَبَّارٍ عَنِیۡدٍ ﴿ۙ۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারা মীমাংসা চেয়েছে এবং প্রত্যেক অবাধ্য, হঠকারী ব্যর্থ মনোরথ হয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৫. আর (পরিশেষে) রাসূলগণ (আল্লাহর নিকট) বিজয় প্রার্থনা করলেন এবং প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারী ব্যর্থ হলো।
مِّنۡ وَّرَآئِہٖ جَہَنَّمُ وَ یُسۡقٰی مِنۡ مَّآءٍ صَدِیۡدٍ ﴿ۙ۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
জাহান্নাম তাঁর পেছনে লেগে আছে এবং তাকে পূঁজের পানি পান করানো হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৬. (অধিকন্তু) এর (ধ্বংসের) পশ্চাতে রয়েছে জাহান্নাম। আর তাকে পান করানো হবে গলিত পুঁজ।
یَّتَجَرَّعُہٗ وَ لَا یَکَادُ یُسِیۡغُہٗ وَ یَاۡتِیۡہِ الۡمَوۡتُ مِنۡ کُلِّ مَکَانٍ وَّ مَا ہُوَ بِمَیِّتٍ ؕ وَ مِنۡ وَّرَآئِہٖ عَذَابٌ غَلِیۡظٌ ﴿۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতি কষ্টে তা থেকে অল্প অল্প করে গলাধঃকরণ করবে এবং গলার নীচে অবতাঁরণ করানোর আশায় থাকবে না এবং তাঁর নিকট চতুর্দিক থেকে মৃত্যু আসবে আর সে মরবে না; এবং তাঁর পেছনে কঠিন শাস্তি।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৭. যা সে অতি কষ্টে গলাধঃকরণ করবে অথচ তা কণ্ঠনালীর নিচে নামাতে পারবে না। তাকে সর্বদিক থেকে মৃত্যু ঘিরে ধরবে, কিন্তু সে মৃত্যু বরণ(ও) করতে পারবে না। আর (পুনরায়) এর পরেই থাকবে (আরো এক) অতীব কঠিন শাস্তি ।
مَثَلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ اَعۡمَالُہُمۡ کَرَمَادِۣ اشۡتَدَّتۡ بِہِ الرِّیۡحُ فِیۡ یَوۡمٍ عَاصِفٍ ؕ لَا یَقۡدِرُوۡنَ مِمَّا کَسَبُوۡا عَلٰی شَیۡءٍ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الضَّلٰلُ الۡبَعِیۡدُ ﴿۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপন রবকে অস্বীকারকারীদের অবস্থা এমন যে, তাদের কর্মসমূহ হচ্ছে, ভস্ম সদৃশ, যার উপর দিয়ে বাতাসের প্রচণ্ড ঝাপটা এলো ঝড়ের দিনে। সমস্ত উপার্জন থেকে কিছুই হাতে এলো না; এটাই হচ্ছে দূরের পথভ্রষ্টতা।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৮. যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করেছে তাদের দৃষ্টান্ত এমন যে, তাদের কর্মগুলো ছাইয়ের ন্যায়, যার উপর দিয়ে ঝড়ের দিনে প্রচন্ড প্রবল বাতাস প্রবাহিত হয়। তারা যা অর্জন করেছিল এ (আমল) থেকে কোনো কিছুই তারা কাজে লাগাতে সক্ষম হবে না। এটি অনেক ঘোরতর গোমরাহী।
اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ اِنۡ یَّشَاۡ یُذۡہِبۡکُمۡ وَ یَاۡتِ بِخَلۡقٍ جَدِیۡدٍ ﴿ۙ۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তুমি কি লক্ষ্য করো নি যে, আল্লাহ্ আসমান ও যমীনকে সত্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন? যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে তোমাদেরকে নিয়ে যাবেন; আর একটি নতুন সৃষ্টিকে নিয়ে আসবেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৯. (হে শ্রবণকারী!) তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ্ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী যথাবিধি (প্রজ্ঞা সহকারে) সৃষ্টি করেছেন? যদি তিনি চান (তবে) তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারেন এবং (তোমাদের স্থলে) নতুন সৃষ্টি আনতে পারেন।
وَّ مَا ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ بِعَزِیۡزٍ ﴿۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এটা আল্লাহর জন্য আদৌ কঠিন নয়।
📕ইরফানুল কুরআন:
২০. আর এ (কাজ) আল্লাহর জন্যে (মোটেই) কঠিন নয়।
وَ بَرَزُوۡا لِلّٰہِ جَمِیۡعًا فَقَالَ الضُّعَفٰٓؤُا لِلَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡۤا اِنَّا کُنَّا لَکُمۡ تَبَعًا فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّغۡنُوۡنَ عَنَّا مِنۡ عَذَابِ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ قَالُوۡا لَوۡ ہَدٰىنَا اللّٰہُ لَہَدَیۡنٰکُمۡ ؕ سَوَآءٌ عَلَیۡنَاۤ اَجَزِعۡنَاۤ اَمۡ صَبَرۡنَا مَا لَنَا مِنۡ مَّحِیۡصٍ ﴿۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সবই আল্লাহর নিকট প্রকাশ্যভাবে উপস্থিত হবে; তখন যারা দুর্বল ছিলো (তারা) অহঙ্কারীদেরকে বলবে, ‘আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম, সুতরাং তোমাদের দ্বারা কি এটা সম্ভব হবে যে, আল্লাহর শাস্তি থেকে কিছু আমাদের থেকে সরিয়ে নেবে?’ (তারা) বলবে, ‘আল্লাহ্ আমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করলে আমরা তোমাদেরকেও করতাম। আমাদের জন্য একই কথা- চাই অস্থির হই কিংবা ধৈর্যশীল হয়ে থাকি; আমাদের কোথাও আশ্রয় নেই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২১. আর (হাশরের দিন ছোট-বড়) সবাই আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হবে। তখন (অনুসরণকারী) দুর্বলেরা (শক্তিশালী) অহঙ্কারীদেরকে বলবে, ‘আমরা (জীবনভর) তোমাদের অনুগত ছিলাম, কাজেই তোমরা কি আল্লাহর শাস্তি থেকে আমাদেরকে কিছুটা বাঁচাতে পারো?’ তারা (সমৃদ্ধশালীরা, তাদের অনুগত গরীবদেরকে) বলবে, ‘যদি আল্লাহ্ আমাদেরকে হেদায়াত দান করতেন, তবে আমরা তোমাদেরকেও অবশ্যই হেদায়াতের পথ দেখাতাম। (আমরা নিজেরাও গোমরাহ্ ছিলাম, কাজেই তোমাদেরকেও গোমরাহ্ করেছিলাম।) আমাদের জন্যে একই কথা, চাই (আজ) আমরা আহাজারী করি অথবা ধৈর্য ধারণ করি, আমাদের পলায়নের কোনো পথ নেই।’
وَ قَالَ الشَّیۡطٰنُ لَمَّا قُضِیَ الۡاَمۡرُ اِنَّ اللّٰہَ وَعَدَکُمۡ وَعۡدَ الۡحَقِّ وَ وَعَدۡتُّکُمۡ فَاَخۡلَفۡتُکُمۡ ؕ وَ مَا کَانَ لِیَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ سُلۡطٰنٍ اِلَّاۤ اَنۡ دَعَوۡتُکُمۡ فَاسۡتَجَبۡتُمۡ لِیۡ ۚ فَلَا تَلُوۡمُوۡنِیۡ وَ لُوۡمُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ مَاۤ اَنَا بِمُصۡرِخِکُمۡ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُصۡرِخِیَّ ؕ اِنِّیۡ کَفَرۡتُ بِمَاۤ اَشۡرَکۡتُمُوۡنِ مِنۡ قَبۡلُ ؕ اِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং শয়তান বলবে যখন মীমাংসা হয়ে যাবে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদেরকে সত্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদেরকে যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা তোমাদের সাথে রক্ষা করিনি এবং তোমাদের উপর আমার কোন আধিপত্য ছিলো না, কিন্তু এতটুকুই যে, আমি তোমাদেরকে আহ্বান করেছিলাম, তোমরা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়েছো। সুতরাং তোমরা আমাকে দোষারোপ করো না, তোমরা নিজেদেরকে দোষারোপ করো। না আমি তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারবো, না তোমরা আমাকে সাহায্য করতে পারবে। ওই যে তোমরা পূর্বে আমাকে শরীক স্থির করেছিলে, আমি তাঁতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট’। নিশ্চয় যালিমদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২২. আর যখন ফায়সালা হয়ে যাবে তখন শয়তান বলবে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সত্য প্রতিশ্রুতি এবং আমি(ও) তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তোমাদেরকে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছি। আর আমার তো (দুনিয়াতে) তোমাদের উপর কোনো প্রকারের কর্তৃত্ব ছিল না, আমি তো কেবল তোমাদেরকে (মিথ্যার প্রতি) আহ্বান করেছি আর তোমরা (নিজেদের স্বার্থেই) আমার আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলে। এখন তোমরা আমাকে তিরস্কার করো না, বরং (স্বয়ং) নিজেরা নিজেদেরকে তিরস্কার করো। না আমি (আজ) তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারবো আর না তোমরা আমাকে সাহায্য করতে পারবে। ইতোপূর্বে, তোমাদের মধ্যে যারা আমাকে (আল্লাহর) অংশীদার সাব্যস্ত করেছিলে, নিশ্চয়ই আমি (আজ) একে অস্বীকার করছি।’ অবশ্যই যালিমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ اُدۡخِلَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ ؕ تَحِیَّتُہُمۡ فِیۡہَا سَلٰمٌ ﴿۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদেরকে বাগানসমূহে প্রবেশ করানো হবে, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান; সর্বদা সেগুলোর মধ্যে অবস্থান করবে আপন রবের নির্দেশে। সেখানে তাদের সাক্ষাতের সময়কার অভিবাদন হবে ‘সালাম’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৩. আর যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে তাদেরকে প্রবেশ করানো হবে জান্নাতে, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত, (তারা) তাতে তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে চিরকাল অবস্থান করবে। (সাক্ষাতের সময়) তাতে তাদের অভিবাদনসূচক উক্তি হবে ‘সালাম’।
اَلَمۡ تَرَ کَیۡفَ ضَرَبَ اللّٰہُ مَثَلًا کَلِمَۃً طَیِّبَۃً کَشَجَرَۃٍ طَیِّبَۃٍ اَصۡلُہَا ثَابِتٌ وَّ فَرۡعُہَا فِی السَّمَآءِ ﴿ۙ۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি কি লক্ষ্য করেন নি, আল্লাহ্ কীভাবে উপমা দিলেন পবিত্র বাক্যের? যেমন, পবিত্র বৃক্ষ, যার মূল সুদৃঢ় এবং শাখা প্রশাখা আসমানে;
📕ইরফানুল কুরআন:
২৪. আপনি কি দেখেননি, আল্লাহ্ কিভাবে দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন? পবিত্র বাক্য সে পবিত্র বৃক্ষের ন্যায়, যার শিকড় (জমিনে) সুদৃঢ় এবং এর শাখাসমূহ আকাশে বিস্তৃত,
تُؤۡتِیۡۤ اُکُلَہَا کُلَّ حِیۡنٍۭ بِاِذۡنِ رَبِّہَا ؕ وَ یَضۡرِبُ اللّٰہُ الۡاَمۡثَالَ لِلنَّاسِ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
সর্বদা তার ফলদান করে আপন রবের নির্দেশক্রমে; আর আল্লাহ্ মানব জাতির জন্য উপমাসমূহ দিয়ে থাকেন যাতে তারা অনুধাবন করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৫. (সে বৃক্ষ) তাঁর প্রতিপালকের নির্দেশে সর্বক্ষণ ফলদান করে। আর আল্লাহ্ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَ مَثَلُ کَلِمَۃٍ خَبِیۡثَۃٍ کَشَجَرَۃٍ خَبِیۡثَۃِۣ اجۡتُثَّتۡ مِنۡ فَوۡقِ الۡاَرۡضِ مَا لَہَا مِنۡ قَرَارٍ ﴿۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অপবিত্র বাক্যের উপমা যেমন একটা অপবিত্র গাছ, যা ভূ-পৃষ্ঠের উপর থেকে কেটে ফেলা হয়েছে, এখন সেটার কোন অবস্থান নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৬. আর অপবিত্র কথার দৃষ্টান্ত অপবিত্র বৃক্ষ, যা ভুপৃষ্ঠের উপর থেকেই উপড়ে ফেলা হয়, এর সামান্যও দৃঢ়তা (ও স্থায়িত্ব) নেই।
یُثَبِّتُ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِالۡقَوۡلِ الثَّابِتِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ یُضِلُّ اللّٰہُ الظّٰلِمِیۡنَ ۟ۙ وَ یَفۡعَلُ اللّٰہُ مَا یَشَآءُ ﴿۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখেন ঈমানদারদেরকে শাশ্বত বাণীতে, পার্থিব জীবনে এবং পরকালে আর আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথভ্রষ্ট করেন এবং আল্লাহ্ যা ইচ্ছা তা করেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৭. আল্লাহ্ ঈমানদারগণকে (এ) শাশ্বত বাণীর (কল্যাণের) মাধ্যমে পার্থিব জীবনেও সুপ্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং পরকালেও। আর আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথভ্রষ্ট করেন এবং আল্লাহ্ যা চান তা করেন।
اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ بَدَّلُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ کُفۡرًا وَّ اَحَلُّوۡا قَوۡمَہُمۡ دَارَ الۡبَوَارِ ﴿ۙ۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি কি তাদেরকে দেখেন নি, যারা আল্লাহ্ অনুগ্রহ অকৃতজ্ঞতাবশতঃ পরিবর্তিত করেছে এবং আপন সম্প্রদায়কে ধ্বংসের ঘরে নামিয়ে এনেছে?
📕ইরফানুল কুরআন:
২৮. আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা আল্লাহর নিয়ামত (ঈমান)-কে কুফরী দ্বারা পরিবর্তন করেছে, আর তারা তাদের সম্প্রদায়কে নামিয়ে এনেছে ধ্বংসালয়ে?
جَہَنَّمَ ۚ یَصۡلَوۡنَہَا ؕ وَ بِئۡسَ الۡقَرَارُ ﴿۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তা হচ্ছে দোযখ! তারা তাতে প্রবেশ করবে এবং কতই নিকৃষ্ট আবাসস্থল!
📕ইরফানুল কুরআন:
২৯. (সেটি) জাহান্নাম, যাতে তারা নিক্ষিপ্ত হবে। আর এটি নিকৃষ্ট ঠিকানা।
وَ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ اَنۡدَادًا لِّیُضِلُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ قُلۡ تَمَتَّعُوۡا فَاِنَّ مَصِیۡرَکُمۡ اِلَی النَّارِ ﴿۳۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহর জন্য সমকক্ষ স্থির করলো তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য। আপনি বলুন, ‘কিছু ভোগ করে নাও, তোমাদের পরিণাম আগুনই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩০. আর তারা আল্লাহর জন্যে অংশীদার সাব্যস্ত করেছে, যাতে তারা (লোকজনকে) তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত করে। বলে দিন, ‘তোমরা (কিছু দিন) ভোগ করে নাও। নিশ্চয়ই তোমাদের পরিণতি অগ্নিরই দিকে (গমন করা)।’
قُلۡ لِّعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا یُقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ یُنۡفِقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا بَیۡعٌ فِیۡہِ وَ لَا خِلٰلٌ ﴿۳۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আমার ওই সব বান্দাকে বলুন, যারা ঈমান এনেছে, যেন তারা নামায কায়েম রাখে এবং আমার প্রদত্ত সম্পদ থেকে কিছু আমার পথে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে ওই দিন আসার পূর্বে, যেদিন না সওদাগরী হবে, না বন্ধুত্ব।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩১. আমার মুমিন বান্দাদের বলে দিন যে, তারা যেন নামায কায়েম করে এবং যে রিযিক আমরা তাদেরকে দান করেছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে (আমাদের পথে) ব্যয় করে, সেদিন আগমনের পূর্বে যেদিন না কোনো ধরণের ক্রয়-বিক্রয় হবে, আর না কোনো (পার্থিব) বন্ধুত্ব (কাজে আসবে)।
اَللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخۡرَجَ بِہٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزۡقًا لَّکُمۡ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡفُلۡکَ لِتَجۡرِیَ فِی الۡبَحۡرِ بِاَمۡرِہٖ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡاَنۡہٰرَ ﴿ۚ۳۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ তিনিই, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, এবং আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেছেন; অতঃপর তা দ্বারা কিছু ফলমূল তোমাদের জীবিকার জন্য উৎপাদন করেছেন; এবং তোমাদের জন্য নৌযানকে তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছেন, যাতে তাঁর নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণ করে; এবং তোমাদের জন্য নদীগুলোকে নিয়ন্ত্রাণাধীন করেছেন;
📕ইরফানুল কুরআন:
৩২. তিনিই আল্লাহ্, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর এ পানি দ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্যে ফল-মূল উৎপাদন করেছেন। আর তিনি জলযানকে তোমাদের অধীনস্ত করে দিয়েছেন, যাতে তাঁর নির্দেশে সমুদ্রে চলতে পারে। আর তিনি নদী-নালাকে(ও) তোমাদের অধীনস্ত করেছেন।
وَ سَخَّرَ لَکُمُ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ دَآئِبَیۡنِ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ ﴿ۚ۳۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তোমাদের জন্য সূর্য ও চাঁদকে অনুগত করেছেন, যেগুলো একই নিয়মে চলছে; এবং তোমাদের জন্য রাত ও দিনকে অনুগত করেছেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৩. আর তিনি তোমাদের উপকারার্থে সূর্য এবং চন্দ্রকে (বিধানানুযায়ী একটি নিয়মের) অধীনস্ত করে দিয়েছেন, যা সর্বদা (স্ব স্ব কক্ষপথে) পরিভ্রমণ করছে। আর তোমাদের (জীবনের শৃঙ্খলার) জন্যে রাত এবং দিনকেও (একটি নিয়মের) অনুগত করে দিয়েছেন।
وَ اٰتٰىکُمۡ مِّنۡ کُلِّ مَا سَاَلۡتُمُوۡہُ ؕ وَ اِنۡ تَعُدُّوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ لَا تُحۡصُوۡہَا ؕ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَظَلُوۡمٌ کَفَّارٌ ﴿۳۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তোমাদেরকে অনেক কিছু মৌখিক প্রার্থনার উপর প্রদান করেছেন এবং যদি আল্লাহর অনুগ্রহগুলো গণনা করো, তবে সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। নিশ্চয়, মানুষ বড় যালিম, বড়ই অকৃতজ্ঞ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৪. আর তিনি তোমাদেরকে সকল কিছু দান করেছেন যা তোমরা তাঁর নিকট প্রার্থনা করেছো। আর যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা করতে চাও (তবে) এর সংখ্যা পুরোপুরি নির্ণয় করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অতি মাত্রায় যালিম, বড়ই অকৃতজ্ঞ।
وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰہِیۡمُ رَبِّ اجۡعَلۡ ہٰذَا الۡبَلَدَ اٰمِنًا وَّ اجۡنُبۡنِیۡ وَ بَنِیَّ اَنۡ نَّعۡبُدَ الۡاَصۡنَامَ ﴿ؕ۳۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং স্মরণ করুন! যখন ইব্রাহীম আরয করলো, ‘হে আমার প্রতিপালক! এ শহরকে নিরাপদ করে দাও এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে প্রতিমাগুলোর পূজা থেকে বিরত দূরে রাখো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৫. আর (স্মরণ করুন) যখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! এ (মক্কা) শহরকে নিরাপদ স্থান বানিয়ে দাও, আমাকে এবং আমার সন্তানদেরকে মূর্তির উপাসনা থেকে রক্ষা করো।
رَبِّ اِنَّہُنَّ اَضۡلَلۡنَ کَثِیۡرًا مِّنَ النَّاسِ ۚ فَمَنۡ تَبِعَنِیۡ فَاِنَّہٗ مِنِّیۡ ۚ وَ مَنۡ عَصَانِیۡ فَاِنَّکَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে আমার রব! নিশ্চয়, প্রতিমাগুলো বহু লোককে পথভ্রষ্ট করেছে; সুতরাং যে আমার সঙ্গ অবলম্বন করেছে সে তো আমার; এবং যে আমার কথা অমান্য করেছে, তবে নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৬. হে আমার প্রতিপালক! এসব (মূর্তি) অনেক মানুষকে গোমরাহ্ করেছে। অতঃপর যে আমার অনুসরণ করবে, সে তো আমার দলভুক্ত হবে আর যে কেউ আমার অবাধ্য হবে, তবে তুমি তো মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
رَبَّنَاۤ اِنِّیۡۤ اَسۡکَنۡتُ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ بِوَادٍ غَیۡرِ ذِیۡ زَرۡعٍ عِنۡدَ بَیۡتِکَ الۡمُحَرَّمِ ۙ رَبَّنَا لِیُـقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ فَاجۡعَلۡ اَفۡئِدَۃً مِّنَ النَّاسِ تَہۡوِیۡۤ اِلَیۡہِمۡ وَارۡ زُقۡہُمۡ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۳۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে আমার রব! আমি আমার কিছু বংশধরকে এমন এক উপত্যকায় বসবাস করালাম, যা’তে ক্ষেত হয় না- তোমার সম্মানিত ঘরের নিকট; হে আমাদের রব! এ জন্য যে, তারা নামায ক্বায়েম রাখবে। অতঃপর তুমি কিছু লোকের হৃদয়কে তাদের দিকে অনুরাগী করে দাও এবং তাদেরকে কিছু ফলমূল খেতে দাও, হয়তো তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৭. হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমি আমার বংশধর (ইসমাঈল আলাইহিস সালাম)-কে (মক্কার) অনুর্বর উপত্যকায় তোমার পবিত্র গৃহের নিকট বসতি স্থাপন করিয়েছি; হে আমার প্রতিপালক! যাতে তারা নামায কায়েম করে। সুতরাং তুমি মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ ভালোবাসায় অনুরাগী করে দিও। আর তাদেরকে (সকল প্রকার) ফলফলাদি দ্বারা রিযিক দান করো, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা আদায় করে।
رَبَّنَاۤ اِنَّکَ تَعۡلَمُ مَا نُخۡفِیۡ وَ مَا نُعۡلِنُ ؕ وَ مَا یَخۡفٰی عَلَی اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ ﴿۳۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে আমাদের রব! তুমি জানো যা আমরা গোপন করি এবং যা প্রকাশ করি এবং আল্লাহর নিকট কিছুই গোপন নেই যমীনে এবং না আসমানে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৮. হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি তো (সকল কিছু) জানো যা আমরা লুকিয়ে রাখি এবং যা আমরা প্রকাশ করি। আর আল্লাহর নিকট কোনো কিছুই গোপন নেই, না জমিনে, না আকাশমন্ডলীতে।
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ وَہَبَ لِیۡ عَلَی الۡکِبَرِ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَسَمِیۡعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আমাকে আমার বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাক্বকে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব প্রার্থনা শ্রবণকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৯. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে, যিনি আমাকে বার্ধক্যে ইসমাঈল এবং ইসহাক (আলাইহিমাস সালাম, দুই সন্তান) দান করেছেন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক দু’আ শ্রবণকারী।
رَبِّ اجۡعَلۡنِیۡ مُقِیۡمَ الصَّلٰوۃِ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ ٭ۖ رَبَّنَا وَ تَقَبَّلۡ دُعَآءِ ﴿۴۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে আমার রব! আমাকে নামায ক্বায়েমকারী রাখো এবং আমার কিছু বংশধরকেও। হে আমাদের রব! এবং আমার প্রার্থনা কবুল করে নাও।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪০. হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এবং আমার সন্তানদেরকে নামায কায়েমকারী বানাও। হে আমাদের প্রতিপালক! আর তুমি আমার দু’আ কবুল করো।
رَبَّنَا اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الۡحِسَابُ ﴿۴۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার মাতা-পিতাকে ও সমস্ত মুসলমানকে, যেদিন হিসাব ক্বায়েম হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪১. হে আমাদের প্রতিপালক! ক্ষমা করে দাও আমাকে এবং (ক্ষমা করে দাও) আমার পিতা-মাতাকে* এবং সমস্ত মুমিনকে, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।’
* (এখানে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের প্রকৃত পিতা তারাখের দিকে ইংগিত করা হয়েছে। তিনি কাফের ও মুশরিক ছিলেন না, বরং সত্য দ্বীনের উপর ছিলেন। আযর প্রকৃতপক্ষে ছিলেন তাঁর চাচা। সে তাঁকে (অর্থাৎ ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে) তাঁর পিতার ইন্তেকালের পর লালন-পালন করেছিল। এ জন্যে তাকে প্রথা অনুযায়ী পিতা বলা হয়েছে এবং সে ছিল মুশরিক। আর তাঁকে এ জন্যে মাগফিরাতের দু’আ করা থেকে বাধা দেয়া হয়েছিল। আর এখানে তাঁর প্রকৃত পিতা-মাতার জন্যে মাগফিরাতের দু’আ করা হচ্ছে। এ দু’আ আল্লাহর এ পরিমাণ পছন্দ হয়েছিল যে, একে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর নামাযের মধ্যেও বহাল রাখা হয়েছে।
وَ لَا تَحۡسَبَنَّ اللّٰہَ غَافِلًا عَمَّا یَعۡمَلُ الظّٰلِمُوۡنَ ۬ؕ اِنَّمَا یُؤَخِّرُہُمۡ لِیَوۡمٍ تَشۡخَصُ فِیۡہِ الۡاَبۡصَارُ ﴿ۙ۴۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কখনো আল্লাহ্কে অনবহিত মনে করো না যালিমদের কার্যকলাপ সম্পর্কে। তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছেন না, কিন্তু এমন দিনের জন্য , যে দিন চোখগুলো বিস্ফারিত (স্থির) হয়ে থাকবে;
📕ইরফানুল কুরআন:
৪২. আর আল্লাহ্কে সেসব কাজ থেকে অনবহিত মনে করো না, যা যালিমেরা করছে। তিনি তো এদেরকে (এ যালিমদেরকে) কেবল সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দিচ্ছেন, যেদিন (ভীতির কারণে) চক্ষুসমূহ স্থির থাকবে।
مُہۡطِعِیۡنَ مُقۡنِعِیۡ رُءُوۡسِہِمۡ لَا یَرۡتَدُّ اِلَیۡہِمۡ طَرۡفُہُمۡ ۚ وَ اَفۡـِٕدَتُہُمۡ ہَوَآءٌ ﴿ؕ۴۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
ভীত-বিহ্বল হয়ে দৌড়ে বের হয়ে পড়বে আপন মাথা উঠানো অবস্থায়, তাদের দৃষ্টি তাদের দিকে ফিরবে না এবং তাদের অন্তরগুলোতে কোন বিবেক শক্তি থাকবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৩. তারা (হাশরের ময়দানের দিকে) তাদের মাথা উঠানো অবস্থায় দৌঁড়াতে থাকবে, তাদের চোখের পলকও পড়বে না এবং তাদের অন্তর হবে শক্তিশূন্য।
وَ اَنۡذِرِ النَّاسَ یَوۡمَ یَاۡتِیۡہِمُ الۡعَذَابُ فَیَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا رَبَّنَاۤ اَخِّرۡنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ نُّجِبۡ دَعۡوَتَکَ وَ نَتَّبِعِ الرُّسُلَ ؕ اَوَ لَمۡ تَکُوۡنُوۡۤا اَقۡسَمۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ مَا لَکُمۡ مِّنۡ زَوَالٍ ﴿ۙ۴۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মানুষকে ওই দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন। যখন তাদের উপর শাস্তি আসবে তখন যালিমগণ বলবে, ‘হে আমাদের রব! কিছুকালের জন্য আমাদেরকে অবকাশ দাও যেন আমরা তোমার আহ্বানে সাড়া দিই এবং রসূলগণের গোলামী করি’। তবে কি তোমরা পূর্বে শপথ করে বলতে না, ‘আমাদেরকে দুনিয়া থেকে কোথাও সরে যেতে হবে না?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৪. আর আপনি মানুষকে সেদিনের ব্যাপারে সতর্ক করুন, যেদিন তাদের উপর শাস্তি নেমে আসবে; তখন অত্যাচারিরা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে সামান্য সময়ের জন্যে অবকাশ দাও যাতে আমরা তোমার আহ্বানে সাড়া দিতে পারি এবং রাসূলগণের অনুসরণ করতে পারি।’ (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরাই কি পূর্বে কসম করেছিলে না যে, তোমাদের কখনোই পতন হবে না’?
وَّ سَکَنۡتُمۡ فِیۡ مَسٰکِنِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ تَبَیَّنَ لَکُمۡ کَیۡفَ فَعَلۡنَا بِہِمۡ وَ ضَرَبۡنَا لَکُمُ الۡاَمۡثَالَ ﴿۴۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তোমরা তাদের ঘরগুলোতে বসবাস করতে, যারা নিজেদের অনিষ্ট করেছিলো এবং তোমাদের নিকট খুব স্পষ্ট হয়েছে- আমি তাদের সাথে কেমন করেছি এবং আমি তোমাদেরকে দৃষ্টান্তসমূহ দিয়েই বলে দিয়েছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৫. আর তোমরা (তোমাদের সময়ে) সেসব লোকদের (ছেড়ে যাওয়া) প্রাসাদে বসবাস করতে (যারা তাদের নিজ নিজ যুগে) নিজেদের আত্মার উপর যুলুম করেছিল। অথচ তোমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, আমরা তাদের সাথে কী আচরণ করেছিলাম। আর আমরা তোমাদের (উপলব্ধির) জন্যে দৃষ্টান্তও বর্ণনা করেছিলাম।
وَ قَدۡ مَکَرُوۡا مَکۡرَہُمۡ وَ عِنۡدَ اللّٰہِ مَکۡرُہُمۡ ؕ وَ اِنۡ کَانَ مَکۡرُہُمۡ لِتَزُوۡلَ مِنۡہُ الۡجِبَالُ ﴿۴۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় তারা নিজেদের সাধ্যমত চক্রান্ত করেছে আর তাদের চক্রান্ত আল্লাহর আয়ত্বাধীন রয়েছে; এবং তাদের চক্রান্ত কিছুটা এমন ছিলো না যে, তাতে পর্বতমালা টলে যেতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৬. আর তারা (সম্পদ ও ক্ষমতার নেশায় মত্ত হয়ে) নিজেদের সাধ্যমত ভীষণ চক্রান্ত করেছিল, যখন আল্লাহর নিকট তাদের সকল চক্রান্ত বিনাশ হয়েছিল; যদিও তাদের চক্রান্তমূলক কৌশল এমন ছিল যে, এর মাধ্যমে পাহাড়ও উপড়ে যায়।
فَلَا تَحۡسَبَنَّ اللّٰہَ مُخۡلِفَ وَعۡدِہٖ رُسُلَہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ ذُو انۡتِقَامٍ ﴿ؕ۴۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তুমি কখনো মনে করো না যে, আল্লাহ্ আপন রসূলগণের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৭. সুতরাং আল্লাহ্কে কখনো স্বীয় রাসূলগণের সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গকারী মনে করো না! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আধিপত্যশীল, প্রতিশোধগ্রহণকারী।
یَوۡمَ تُبَدَّلُ الۡاَرۡضُ غَیۡرَ الۡاَرۡضِ وَ السَّمٰوٰتُ وَ بَرَزُوۡا لِلّٰہِ الۡوَاحِدِ الۡقَہَّارِ ﴿۴۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে দিন পরিবর্তিত করা হবে যমীনকে এ যমীন ব্যতীত; এবং আসমান গুলোকেও; আর সব লোক বের হয়ে দণ্ডায়মান হবে এক আল্লাহর সামনে, যিনি সবার উপর বিজয়ী (পরাক্রমশালী)
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৮. যেদিন (এ) জমিন পরিবর্তিত হয়ে ভিন্ন জমিন হবে এবং সমস্ত আকাশমন্ডলীও পরিবর্তিত হবে এবং সমস্ত মানুষ সবার উপর আধিপত্যশীল একক আল্লাহর সম্মুখে হাযির হবে।
وَ تَـرَی الۡمُجۡرِمِیۡنَ یَوۡمَئِذٍ مُّقَرَّنِیۡنَ فِی الۡاَصۡفَادِ ﴿ۚ۴۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সেদিন আপনি অপরাধীদেরকে দেখবেন যে, তারা বেড়ীসমূহে একে অপরের সাথে শৃঙ্খলিত হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৯. আর সে দিন আপনি অপরাধীদেরকে শিকলাবদ্ধ দেখবেন;
سَرَابِیۡلُہُمۡ مِّنۡ قَطِرَانٍ وَّ تَغۡشٰی وُجُوۡہَہُمُ النَّارُ ﴿ۙ۵۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের জামাসমূহ হবে আলকাতরার এবং তাদের মুখ-মণ্ডলকে আগুন আচ্ছন্ন করে নেবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫০. তাদের পোশাক হবে আলকাতরার (অথবা এমন তৈলাক্ত পদার্থের যা সহজে দাহ্য)। আর অগ্নি আচ্ছন্ন করবে তাদের মুখমন্ডল,
لِیَجۡزِیَ اللّٰہُ کُلَّ نَفۡسٍ مَّا کَسَبَتۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۵۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এজন্য যে, আল্লাহ্ প্রত্যেককে তাঁর কৃতকর্মের প্রতিফল দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহর পক্ষে হিসাব গ্রহণে কোন বিলম্ব হয় না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫১. যাতে আল্লাহ্ প্রত্যেক ব্যক্তিকে (কৃতকর্মের) বিনিময় দেবেন যা তারা অর্জন করেছে।
ہٰذَا بَلٰغٌ لِّلنَّاسِ وَ لِیُنۡذَرُوۡا بِہٖ وَ لِیَعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَا ہُوَ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ وَّ لِیَذَّکَّرَ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿۵۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এটা মানুষের নিকট নির্দেশ পৌছানো এবং এজন্য যে, এটা দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হবে এবং এ জন্য যে, তারা এ কথা জেনে নেবে যে, তিনি একমাত্র উপাস্য হন; এবং এজন্য যে, বোধশক্তিসম্পন্নরা উপদেশ মান্য করবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫২. এ (কুরআন) মানুষের জন্যে পরিপূর্ণ বার্তা, যাতে তাদেরকে এর দ্বারা সতর্ক করা হয় এবং যাতে তারা ভালোভাবে জানতে পারে যে, সে সত্তা (আল্লাহ্)-ই একক উপাস্য; আর যাতে জ্ঞানী লোকেরাই উপদেশ গ্রহণ করে।