بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময়
📕ইরফানুল কুরআন:
আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এ গুলো প্রজ্ঞাময় কিতাবের আয়াত।
📕ইরফানুল কুরআন:
১. আলিফ-লাম-রা (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই সম্যক অবগত)। এগুলো প্রজ্ঞাসম্পন্ন কিতাবের আয়াত।
اَکَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا اَنۡ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی رَجُلٍ مِّنۡہُمۡ اَنۡ اَنۡذِرِ النَّاسَ وَ بَشِّرِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنَّ لَہُمۡ قَدَمَ صِدۡقٍ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕؔ قَالَ الۡکٰفِرُوۡنَ اِنَّ ہٰذَا لَسٰحِرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
মানুষের জন্য এটা কি আশ্চর্যের বিষয় হলো যে, আমি তাদের মধ্য থেকে একজন পুরুষকে ওহী প্রেরণ করেছি, ‘মানুষকে সতর্ক করুন এবং ঈমানদারগণকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট সত্যের মর্যাদা রয়েছে। কাফিরগণ বললো, ‘নিশ্চয় এ’তো এক সুস্পষ্ট যাদুকর’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২. মানুষের জন্যে কি তা বিস্ময়কর যে, আমরা তাদের মধ্য থেকে এক (নিখুঁত) ব্যক্তির কাছে ওহী পাঠিয়েছি, আপনি (আত্মবিস্মৃত, বিপথগামী) লোকদেরকে (আল্লাহর শাস্তির ব্যাপারে) সতর্ক করুন, আর ঈমানদারদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে উচ্চ মর্যাদা (অর্থাৎ উঁচু অবস্থান)। কাফেরেরা বলে, ‘এ ব্যক্তি তো একজন সুস্পষ্ট যাদুকর’।
اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ ؕ مَا مِنۡ شَفِیۡعٍ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ اِذۡنِہٖ ؕ ذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبُّکُمۡ فَاعۡبُدُوۡہُ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ্, যিনি আসমান ও যমীন ছয় দিনের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর ‘ইস্তিওয়া’ ফরমায়েছেন (সমাসীন হন, যেমনি তার মর্যাদার উপযোগী হয়,) কর্মের ব্যবস্থাপনা করেন। কোন সুপারিশকারী নেই, কিন্তু তারই অনুমতি লাভ করার পর। তিনিই হন আল্লাহ্, তোমাদের রব; সুতরাং তার ইবাদত করো। তবুও কি তোমরা ধ্যান দিচ্ছো না ?
📕ইরফানুল কুরআন:
৩. নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী (উর্ধ্ব ও নিম্ন জগত) ছয় দিনে (অর্থাৎ ছয়টি কালে অথবা ধাপে পর্যায়ক্রমে) সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশের উপর তাঁর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করলেন (তাঁর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব দিয়ে আপন কুদরতে মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর এর ভুমন্ডল ও বস্তুজগতে স্বীয় বিধান ও শৃঙ্খলা প্রয়োগ করে তাঁর হুকুম ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেন।) তিনিই সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। (অর্থাৎ সকল কিছু একটি নিয়মের অধীনে পরিচালিত করেন। তাঁর সমীপে) তাঁর অনুমতি ব্যতীত কোন সুপারিশকারী নেই। তিনিই (মহান ও ক্ষমতাবান) আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদত করো। অতঃপর তোমরা কি (তাঁর উপদেশ গ্রহণের) চিন্তা করো না?
اِلَیۡہِ مَرۡجِعُکُمۡ جَمِیۡعًا ؕ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقًّا ؕ اِنَّہٗ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ بِالۡقِسۡطِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَہُمۡ شَرَابٌ مِّنۡ حَمِیۡمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیۡمٌۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারই দিকে তোমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে; আল্লাহর সত্য প্রতিশ্রুতি। নিশ্চয় তিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেন, অতঃপর বিলীন হবার পর পুনরায় সৃষ্টি করবেন; এ জন্য যে, ওই সব লোককে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে, ন্যায়ের সাথে পুরস্কার দেবেন; আর কাফিরদের জন্য রয়েছে পান করার নিমিত্ত অত্যুষ্ণ পানি এবং বেদনাদায়ক শাস্তি, পরিণাম স্বরূপ তাদের কুফরের।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪. (হে লোকসকল!) তাঁরই নিকট তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। (এটি) আল্লাহর সত্য অঙ্গীকার। নিশ্চয়ই তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন; অতঃপর তিনিই একে পুনরায় সৃষ্টি করবেন যাতে ঐসব লোকদেরকে ন্যায় বিচারের সাথে প্রতিদান দেন যারা ঈমান আনয়ন করে এবং নেক আমল করে। আর যারা কুফরী করে, তাদের পান করার জন্যে রয়েছে ফুটন্ত পানি ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি; তারা যে কুফরী করতো তার প্রতিদান।
ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ الشَّمۡسَ ضِیَآءً وَّ الۡقَمَرَ نُوۡرًا وَّ قَدَّرَہٗ مَنَازِلَ لِتَعۡلَمُوۡا عَدَدَ السِّنِیۡنَ وَ الۡحِسَابَ ؕ مَا خَلَقَ اللّٰہُ ذٰلِکَ اِلَّا بِالۡحَقِّ ۚ یُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনিই হন, যিনি সূর্যকে তেজষ্কর করেছেন এবং চাদকে জ্যোতির্ময়। আর সেটার জন্য ‘মানযিলগুলো’ নির্দেষ্ট করেছেন, যাতে তোমরা বছরগুলোর গণনা ও হিসাব জানতে পারো। আল্লাহ্ সেটা সৃষ্টি করেন নি, কিন্তু সত্য সহকারে। তিনি নিদর্শনগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫. তিনিই সূর্যকে বানিয়েছেন তেজদীপ্ত (আলোর উৎস), আর (তা থেকে) চাঁদকে (করেছেন) আলোকিত, আর এর (ছোট বড় প্রতিভাত হওয়ার জন্যে) সোপান নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা বছর গণনা এবং (সময়ের) হিসাব জানতে পারো। আর আল্লাহ্ এসব (কিছু) ত্রুটিহীন কৌশলেই সৃষ্টি করেছেন। (এই মহাজাগতিক বাস্তবতার মাধ্যমে তাঁর সৃজনশীলতা, একক বৈশিষ্ট এবং শক্তিমত্তায়) তিনি তাদের জন্যে নিদর্শনগুলো উদ্ভাসিত করেন যারা জ্ঞান রাখে।
اِنَّ فِی اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَّقُوۡنَ ﴿۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় রাত ও দিনের পরিবর্তিত হতে থাকা এবং যা কিছু আল্লাহ্ আসমানগুলো ও যমীনে সৃষ্টি করেছেন, সেগুলোর মধ্যে নিদর্শনাদি রয়েছে ভয় সম্পন্নদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬. নিঃসন্দেহে রাত ও দিনের পরিবর্তনে এবং ঐ (সকল) বস্তুতে আল্লাহ্ যা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছেন, সেসব লোকদের জন্যে (এরকম) নিদর্শন রয়েছে যারা খোদাভীতি অবলম্বন করে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا وَ رَضُوۡا بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ اطۡمَاَنُّوۡا بِہَا وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ عَنۡ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوۡنَ ۙ﴿۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না আর পার্থিব জীবনকে পছন্দ করে বসেছে এবং সেটাতেই নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে, আর ওই সব লোক, যারা আমার আয়াতগুলো থেকে বিমুখ রয়েছে;
📕ইরফানুল কুরআন:
৭. নিশ্চয়ই যারা আমাদের সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, দুনিয়াবী জীবনে খুশী থাকে, এর দ্বারা পরিতৃপ্ত হয় এবং যারা আমার নিদর্শনাবলী থেকে উদাসীন,
اُولٰٓئِکَ مَاۡوٰىہُمُ النَّارُ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
সেসব লোকের ঠিকানা হচ্ছে দোযখ তাদের কৃতকর্মের পরিণামস্বরূপ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮. তাদেরই ঠিকানা জাহান্নাম, ঐসব আমলের বিনিময় যা তারা অর্জন করছে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَہۡدِیۡہِمۡ رَبُّہُمۡ بِاِیۡمَانِہِمۡ ۚ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ فِیۡ جَنّٰتِ النَّعِیۡمِ ﴿۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের রব তাদের ঈমানের কারণে তাদেরকে পথ দেখাবেন; তাদের নিচে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে নি’মাতের বাগানগুলোতে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯. নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং নেক আমল করছে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালক তাদের ঈমানের কারণে (জান্নাতে) পৌঁছে দেবেন। যেখানে তাদের (বসবাস স্থলের) তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত হবে। (এ ঠিকানা) পরকালীন নিয়ামতের বাগানে (বিদ্যমান থাকবে)।
دَعۡوٰىہُمۡ فِیۡہَا سُبۡحٰنَکَ اللّٰہُمَّ وَ تَحِیَّتُہُمۡ فِیۡہَا سَلٰمٌ ۚ وَ اٰخِرُ دَعۡوٰىہُمۡ اَنِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাঁতে তাদের প্রার্থনা এ-ই হবে, ‘হে আল্লাহ্! তোমারই পবিত্রতা’। এবং তাদের সাক্ষাতের সময় অভিবাদনের প্রথম কথা হবে ‘সালাম’; আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হবে এ-ই ‘সমস্ত প্রশংসাই আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র বিশ্বজগের প্রতিপালক’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০. (নিয়ামত ও আনন্দবিহার দেখে জান্নাত)-এর মধ্যে তাদের প্রার্থনা হবে, ‘হে আল্লাহ্! আপনি পূতঃপবিত্র’ আর এতে তাদের পরস্পরের অভিবাদন (-এর শব্দ) হবে ‘সালাম’। (অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা ও ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে তাদের জন্যে অভিবাদন-বাক্য হবে ‘সালাম’) আর তাদের প্রার্থনা (এমন বাক্যে) শেষ হবে, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে, যিনি সারাজাহানের প্রতিপালক’।
وَ لَوۡ یُعَجِّلُ اللّٰہُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ لَقُضِیَ اِلَیۡہِمۡ اَجَلُہُمۡ ؕ فَنَذَرُ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আল্লাহ্ মানুষের উপর অমঙ্গল এমনই তাড়াতাড়ি প্রেরণ করতেন যেমন তারা তাদের কল্যাণকে ত্বরান্বিত করতে চায়, তবে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়ে যেতো। সুতরাং আমি তাদেরকে ছেড়ে দিই যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, যেন তারা তাদের অবাধ্যতার মধ্যে দিশেহারা হয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১. আর যদি আল্লাহ্ (কাফের) লোকদের জন্যে অকল্যাণ (অর্থাৎ শাস্তি) ত্বরান্বিত করতেন যেভাবে তারা পার্থিব কল্যাণ লাভের ক্ষেত্রে কামনা করে, তবে অবশ্যই তাদের জন্যে তাদের (জীবনের) নির্ধারিত সময়সীমা (দ্রুত) পূর্ণ করে দেয়া হতো (যাতে তারা মৃত্যুর পর দ্রুত জাহান্নামে পৌঁছে)। কিন্তু যারা আমাদের সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না তাদেরকে আমরা অবাধ্যতায় ছেড়ে দেই যাতে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
وَ اِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنۡۢبِہٖۤ اَوۡ قَاعِدًا اَوۡ قَآئِمًا ۚ فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُ ضُرَّہٗ مَرَّ کَاَنۡ لَّمۡ یَدۡعُنَاۤ اِلٰی ضُرٍّ مَّسَّہٗ ؕ کَذٰلِکَ زُیِّنَ لِلۡمُسۡرِفِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন মানুষকে দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে তখন আমাকে ডাকে-শুয়ে, বসে এবং দাঁড়িয়ে। অতঃপর যখন আমি তার দুঃখ-দৈন্য দূরীভূত করে দিই তখন এমনিভাবে চলে যায় যেন কখনো কোন দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করার কারণে আমাকে ডাকেই নি। এমনিভাবে সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে তাদের কৃতকর্ম সুশোভিত করে দেখানো হয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২. আর যখন (এরকম) মানুষকে কোনো ক্লেশ স্পর্শ করে, তখন সে তার পার্শ্বে শুয়ে, বসে অথবা দাঁড়িয়ে আমাদেরকে আহবান করে। অতঃপর যখন আমরা তার নিকট থেকে তার কষ্ট দূরীভুত করে দেই, তখন সে (আমাদেরকে ভুলে গিয়ে এমনভাবে) চলে, যেন তাকে স্পর্শ করা কোনো কষ্টে সে আমাদেরকে (কখনও) ডাকেইনি। এভাবেই সীমালঙ্ঘনকারীদের কার্যকলাপ তাদের নিকট শোভনীয় মনে হয়।
وَ لَقَدۡ اَہۡلَکۡنَا الۡقُرُوۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَمَّا ظَلَمُوۡا ۙ وَ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ مَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا ؕ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡقَوۡمَ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি তোমাদের পূর্বে বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি যখন তারা সীমালঙ্গন করেছে আর তাদের রসূলগণ তাদের নিকট স্পষ্ট দলীলাদি নিয়ে এসেছেন; এবং তারা এমনই ছিলো না যে, ঈমান আনবে। আমি এভাবে প্রতিফল দিয়ে থাকি অপরাধীদেরকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৩. আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের পূর্বেও (বহু) সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছি, যখন তারা যুলুম করেছিল; অথচ তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু তারা ঈমান আনয়নই করেনি। এভাবে আমরা অপরাধী সম্প্রদায়কে (তাদের কর্মের) শাস্তি দেই।
ثُمَّ جَعَلۡنٰکُمۡ خَلٰٓئِفَ فِی الۡاَرۡضِ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ لِنَنۡظُرَ کَیۡفَ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর আমি তাদের পর তোমাদের পৃথিবীতে স্থলাভিষিক্ত করেছি যেন দেখি তোমরা কীরূপ কাজ করো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৪. অতঃপর আমরা তোমাদেরকে তাদের পর পৃথিবীতে (তাদের) স্থলাভিষিক্ত করেছি, যাতে আমরা প্রত্যক্ষ করি যে, (এখন) তোমরা কি রূপ কর্ম করো।
وَ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیَاتُنَا بَیِّنٰتٍ ۙ قَالَ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا ائۡتِ بِقُرۡاٰنٍ غَیۡرِ ہٰذَاۤ اَوۡ بَدِّلۡہُ ؕ قُلۡ مَا یَکُوۡنُ لِیۡۤ اَنۡ اُبَدِّلَہٗ مِنۡ تِلۡقَآیِٔ نَفۡسِیۡ ۚ اِنۡ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ ۚ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اِنۡ عَصَیۡتُ رَبِّیۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ পাঠ করা হয়, তখন যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না, তারা বলতে থাকে, ‘এটা ব্যতীত অন্য একটা ক্বোরআন নিয়ে আসুন অথবা সেটাকে বদলিয়ে ফেলুন’। আপনি বলুন, ‘আমার জন্য শোভা পায় না যে, আমি তা নিজ পক্ষ থেকে বদলিয়ে ফেলবো। আমি তো সেটারই অনুসারী, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়; আমি যদি আপন রবের নির্দেশ অমান্য করি, তবে আমার নিকট মহা দিবসের আযাবের ভয় রয়েছে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৫. আর যখন তাদের নিকট আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন যারা আমাদের সাক্ষাতের আশা রাখে না তারা বলে, ‘এ (কুরআন) ব্যতীত অপর কোনো কুরআন নিয়ে আসুন, অথবা একে পরিবর্তন করুন’। (হে সম্মানিত নবী!) বলে দিন, ‘আমার অধিকার নেই যে, আমি একে আমার পক্ষ থেকে পরিবর্তন করি। আমি তো কেবল আমার নিকট যা প্রত্যাদেশ করা হয় (এর) অনুসরণ করি। আমি আমার প্রতিপালকের নাফরমানী করলে তো অবশ্যই আমি মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি।’
قُلۡ لَّوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَا تَلَوۡتُہٗ عَلَیۡکُمۡ وَ لَاۤ اَدۡرٰىکُمۡ بِہٖ ۫ۖ فَقَدۡ لَبِثۡتُ فِیۡکُمۡ عُمُرًا مِّنۡ قَبۡلِہٖ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘যদি আল্লাহ্ চাইতেন, তবে আমি সেটা তোমাদের নিকট পাঠ করতাম না, না তিনি তোমাদেরকে এ বিষয়ে অবহিত করতেন। অতঃপর আমি এর পূর্বে তোমাদের মধ্যে স্বীয় একটা আয়ুষ্কাল অতিবাহিত করেছি; সুতরাং তোমাদের কি বিবেক নেই’?
📕ইরফানুল কুরআন:
১৬. বলে দিন, ‘যদি আল্লাহ তা’আলা চাইতেন, তবে এ (কুরআন) না আমি তোমাদের নিকট তিলাওয়াত করতাম, আর না তিনি (স্বয়ং) এ ব্যাপারে তোমাদেরকে অবগত করতেন। অবশ্যই আমি (এই কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার) পূর্বেও তোমাদের মাঝে জীবন (-এর একাংশ) অতিবাহিত করে এসেছি। সুতরাং তোমরা কি বুঝতে পারো না?’
فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে অথবা তার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে? নিঃসন্দেহে, অপরাধীদের মঙ্গল হবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৭. অতঃপর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ রচনা করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে? নিশ্চিত অপরাধীরা সফলকাম হবে না।
وَ یَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَضُرُّہُمۡ وَ لَا یَنۡفَعُہُمۡ وَ یَقُوۡلُوۡنَ ہٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ قُلۡ اَتُنَبِّـُٔوۡنَ اللّٰہَ بِمَا لَا یَعۡلَمُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ سُبۡحٰنَہٗ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহ্ ব্যতীত এমন বস্তুর পূজা করে, যা তাদের না কোন ক্ষতি করে, না উপকার। আর বলে, ‘এগুলো হচ্ছে- আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’। আপনি বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্কে ওই কথা বলছো, যা তার জ্ঞানে না আসমানসমূহে আছে, না যমীনের মধ্যে’? তিনি পবিত্র এবং ঊর্ধ্বে তাদের শির্ক থেকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৮. আর (মুশরিকেরা) আল্লাহর পরিবর্তে ওইসব (মূর্তির) পূজা করে, যা না তাদের ক্ষতি করতে পারে আর না তাদের উপকার করতে পারে। আর তারা (নিজেদের ভ্রান্ত পূজাকে বৈধ করার জন্যে) বলে, ‘এ (মূর্তি) আল্লাহর সমীপে আমাদের সুপারিশকারী’। বলে দিন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্কে এ (মূর্তির সুপারিশের মনগড়া) অনুমান সম্পর্কে অবগত করছো, যার (অস্তিত্ব) না আসমানে তিনি অবগত আর না পৃথিবীতে (অর্থাৎ তাঁর সমীপে কোনো মূর্তির সুপারিশ করা, তার জ্ঞানে নেই)?’ তাঁর সত্তা পূতঃপবিত্র এবং তিনি ওইসব থেকে মহান যাদেরকে তারা (তাঁর) শরীক করছে।
وَ مَا کَانَ النَّاسُ اِلَّاۤ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً فَاخۡتَلَفُوۡا ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ فِیۡمَا فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মানুষ একই জাতি (উম্মত) ছিলো। অতঃপর পরস্পর ভিন্ন হয়েছে; আর যদি আপনার নিকট থেকে একটা কথার ফয়সালা না হয়ে থাকতো, তবে এখানেই তাদের মতভেদসমূহের মীমাংসা তাদের মধ্যে হয়ে যেতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৯. আর সমস্ত মানুষ (শুরুতে) একই দলভুক্ত ছিল, অতঃপর (পরস্পর মতবিরোধ করে) পৃথক হয়ে গিয়েছে। আর যদি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত ফরমান না থাকতো (যে, শাস্তি ত্বরান্বিত হবে না) তবে তাদের মাঝে এর ফায়সালা হয়ে যেতো, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে।
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ فَقُلۡ اِنَّمَا الۡغَیۡبُ لِلّٰہِ فَانۡتَظِرُوۡا ۚ اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারা বলে, ‘তার উপর তারই রবের নিকট থেকে কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হয় নি’? আপনি বলুন, ‘অদৃশ্য তো আল্লাহর জন্য, এখন তোমরা প্রতীক্ষা করো। আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২০. আর তারা (এখন এ অবকাশের কারণে) বলে, ‘তাঁর (অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কোনো (ফায়সালাকারী) নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হয়নি?’ আপনি বলে দিন, ‘অদৃশ্য তো কেবল আল্লাহরই জন্যে। সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা করো, আমিও তোমাদের প্রতীক্ষাকারীদের সাথে আছি।’
وَ اِذَاۤ اَذَقۡنَا النَّاسَ رَحۡمَۃً مِّنۡۢ بَعۡدِ ضَرَّآءَ مَسَّتۡہُمۡ اِذَا لَہُمۡ مَّکۡرٌ فِیۡۤ اٰیَاتِنَا ؕ قُلِ اللّٰہُ اَسۡرَعُ مَکۡرًا ؕ اِنَّ رُسُلَنَا یَکۡتُبُوۡنَ مَا تَمۡکُرُوۡنَ ﴿۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন আমি মানুষকে অনুগ্রহের আস্বাদ দিই কোন দুঃখ-দৈন্যের পর, যা তাদেরকে স্পর্শ করেছিলো, তখনই তারা আমার নিদর্শনগুলোর সাথে প্রতারণা করে, আপনি বলুন, ‘আল্লাহর গোপন ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে বেশী তাড়াতাড়ি (কার্যকর) হয়ে যায়।’ নিশ্চয় আমার ফিরিশ্তাগণ তোমাদের প্রতারণা লিপিবদ্ধ করছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২১. আর যখন আমরা মানুষকে দুর্দশাগ্রস্ত হওয়ার পর (আমার) অনুগ্রহ আস্বাদন করাই, তখন তৎক্ষণাৎ (আমাদের অনুগ্রহ ভুলে গিয়ে) আমাদের নিদর্শনাবলীতে তাদের চক্রান্ত ও প্রতারণা (শুরু) হয়। বলে দিন, ‘আল্লাহ্ চক্রান্তের শাস্তি প্রদানে তৎপর’। নিশ্চয়ই আমাদের প্রেরিত ফেরেশতাগণ লিখে রাখছেন যে চক্রান্তই তোমরা করছো।
ہُوَ الَّذِیۡ یُسَیِّرُکُمۡ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا کُنۡتُمۡ فِی الۡفُلۡکِ ۚ وَ جَرَیۡنَ بِہِمۡ بِرِیۡحٍ طَیِّبَۃٍ وَّ فَرِحُوۡا بِہَا جَآءَتۡہَا رِیۡحٌ عَاصِفٌ وَّ جَآءَہُمُ الۡمَوۡجُ مِنۡ کُلِّ مَکَانٍ وَّ ظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ اُحِیۡطَ بِہِمۡ ۙ دَعَوُا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ۚ لَئِنۡ اَنۡجَیۡتَنَا مِنۡ ہٰذِہٖ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে স্থলে ও জলে ভ্রমণ করান; এমনকি তোমরা যখন জাহাজে আরোহী হও এবং সেগুলো অনুকূল বাতাসে তাদেরকে নিয়ে চলতে থাকে আর তারা তাঁতে আনন্দিত হলো, তখন সেগুলোর উপর ঝড়ের ঝাপটা এলো এবং চতুর্দিক থেকে তরঙ্গ এসে তাদেরকে ঘিরে ফেললো আর তারা একথা বুঝতে পারলো যে, ‘তারা অবরুদ্ধ হয়ে গেছে;’ তখন তারা আল্লাহ্কে ডাকে একান্ত তারই নিষ্ঠাবান বান্দা হয়ে (এ বলে), ‘যদি তুমি আমাদেরকে এটা থেকে রক্ষা করো, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞ হবো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২২. তিনিই তোমাদেরকে জলে-স্থলে ভ্রমণ করান (অর্থাৎ ভ্রমণে সামর্থ্য প্রদান করেন)। এমনকি যখন তোমরা নৌকায় (আরোহী হিসেবে) অবস্থান করো, আর তা যাত্রি নিয়ে অনুকূল বাতাসের দোলায় চলতে থাকে এবং তারা এতে আনন্দিত হয়; তখন (অকস্মাৎ) এতে প্রবল ঝঞ্ঝাবায়ু এসে পৌছেঁ এবং সর্বদিক থেকে তাদেরকে (উত্তাল) তরঙ্গমালা এসে ঘিরে ফেলে। তখন তারা ধারণা করতে থাকে যে, (এখন) তারা এর মাধ্যমে বেষ্টিত হয়ে পড়েছে। (তখন) তারা আল্লাহর আনুগত্যে তাঁরই জন্যে একনিষ্ট চিত্তে আহ্বান করে, (আর বলে, ‘হে আল্লাহ!) যদি তুমি আমাদেরকে এ (বিপদ) থেকে মুক্তি দাও তবে আমরা অবশ্যই (তোমার) কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
فَلَمَّاۤ اَنۡجٰہُمۡ اِذَا ہُمۡ یَبۡغُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّمَا بَغۡیُکُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِکُمۡ ۙ مَّتَاعَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۫ ثُمَّ اِلَیۡنَا مَرۡجِعُکُمۡ فَنُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন আল্লাহ্ তাদেরকে পরিত্রাণ দেন, তখনই তারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে সীমাতিক্রম করতে থাকে। হে মানবকূল! তোমাদের সীমাতিক্রম করা তোমাদের নিজেদেরই ক্ষতি। পার্থিব জীবনে সুখ ভোগ করে নাও! অতঃপর তোমাদেরকে আমার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবো যা তোমাদের কৃতকর্ম ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৩. অতঃপর যখন আল্লাহ্ তাদেরকে মুক্তি দেন, তখন তারা রাজ্যে ততক্ষণাৎ (পূর্বের ন্যায়) অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করতে থাকে। হে (আল্লাহর বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘনকারী) মানব! সাবধান, তোমাদের অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন (-এর ক্ষতি) তোমাদের নিজেদের উপরই। পার্থিব জীবনের সুখ ভোগ করে নাও। পরিশেষে তোমাদেরকে আমাদের নিকটই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। সে সময় আমরা তোমাদেরকে ভালোভাবেই অবগত করবো, যা তোমরা করতে।
اِنَّمَا مَثَلُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَآءٍ اَنۡزَلۡنٰہُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخۡتَلَطَ بِہٖ نَبَاتُ الۡاَرۡضِ مِمَّا یَاۡکُلُ النَّاسُ وَ الۡاَنۡعَامُ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَخَذَتِ الۡاَرۡضُ زُخۡرُفَہَا وَ ازَّیَّنَتۡ وَ ظَنَّ اَہۡلُہَاۤ اَنَّہُمۡ قٰدِرُوۡنَ عَلَیۡہَاۤ ۙ اَتٰہَاۤ اَمۡرُنَا لَیۡلًا اَوۡ نَہَارًا فَجَعَلۡنٰہَا حَصِیۡدًا کَاَنۡ لَّمۡ تَغۡنَ بِالۡاَمۡسِ ؕ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত তো এমনই, যেমন ওই পানি, যা আমি আসমান থেকে বর্ষণ করেছি, যা দ্বারা ভূমিজ উদ্ভিদসমূহ- সবই ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদগত হলো, যা কিছু মানুষ ও গবাদি পশু আহার করে; শেষ পর্যন্ত যখন ভূমি তার শোভা ধারণ করলো এবং অতীব সজ্জিত হলো, আর সেটার মালিকগণ মনে করলো যে, ‘এগুলো তাদের আয়ত্বে এসে গেছে; তখন আমার নির্দেশ সেটার প্রতি এসে পড়লো রাতে অথবা দিনে, অতঃপর আমি সেটকে এমনভাবে নির্মূল করে দিয়েছি, যেন তা গতকাল ছিলোই না। আমি এভাবেই নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বর্ণনা করি চিন্তাশীলদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৪. আর দুনিয়ার জীবনের দৃষ্টান্ত তো পানির ন্যায়, যা আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করলাম, অতঃপর এর মাধ্যমে পৃথিবীতে উদ্ভিদসমূহ ঘন হয়ে উদ্গত হলো, যা থেকে মানুষও ভক্ষণ করে আর চতুষ্পদ প্রাণীও; শেষ পর্যন্ত ভুমি নিজের (সমস্ত) বিকাশ ও সৌন্দর্য নিয়ে এলো এবং খুবই সুসজ্জিত হলো আর এর অধিবাসীরা মনে করলো যে, (এখন) তারা এর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান; তখন (অকস্মাৎ) রাতে অথবা দিনে এতে আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছল, তখন আমরা একে (এমনভাবে) শিকড় থেকে কর্তিত করে দিলাম যে, যেন তা গতকাল এখানে ছিলই না। এভাবে আমরা সেসব লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করি, যারা চিন্তাভাবনা করে কর্মসম্পাদন করে।
وَ اللّٰہُ یَدۡعُوۡۤا اِلٰی دَارِ السَّلٰمِ ؕ وَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহ্ শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন; আর যাকে চান সোজা পথে পরিচালিত করেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৫. আর আল্লাহ্ শান্তির আবাস (জান্নাত)-এর দিকে আহ্বান করেন এবং যাকে চান সরল পথে হেদায়াত দান করেন।
لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ ؕ وَ لَا یَرۡہَقُ وُجُوۡہَہُمۡ قَتَرٌ وَّ لَا ذِلَّۃٌ ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
সৎকর্মপরায়ণদের জন্য মঙ্গল রয়েছে এবং তদপেক্ষাও বেশী আর তাদের মুখমণ্ডলকে না কালিমা আচ্ছন্ন করবে না লাঞ্ছনা; তারাই জান্নাতের অধিবাসী, তারা তাঁতে স্থায়ীভাবে থাকবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৬. যারা সৎ কাজ করে তাদের জন্যে রয়েছে পূণ্যময় প্রতিদান। বরং (এর উপর) আরো অতিরিক্ত। আর না তাদের চেহারার উপর (ধুলো এবং) অন্ধকার ছেয়ে যাবে, আর না অপমান ও অসম্মান। এরাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা তাতে চিরকাল বসবাসকারী।
وَ الَّذِیۡنَ کَسَبُوا السَّیِّاٰتِ جَزَآءُ سَیِّئَۃٍۭ بِمِثۡلِہَا ۙ وَ تَرۡہَقُہُمۡ ذِلَّۃٌ ؕ مَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ عَاصِمٍ ۚ کَاَنَّمَاۤ اُغۡشِیَتۡ وُجُوۡہُہُمۡ قِطَعًا مِّنَ الَّیۡلِ مُظۡلِمًا ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যারা মন্দ অর্জন করেছে, সুতরাং মদের প্রতিফল অনুরূপই; আর তাদেরকে লাঞ্ছনা ছেয়ে বসবে, তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করার কেউ হবে না; যেন তাদের চেহারাগুলোকে অন্ধকার রাতের টুকরাগুলো দ্বারা আচ্ছাদিত করা হয়েছে; তারাই দোযখবাসী, তারা তাঁতে সর্বদা থাকবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৭. আর যারা মন্দ অর্জন করেছে (তাদের জন্যে) মন্দের প্রতিদান অনুরূপই হবে। আর তাদের উপর অপমান ও অসম্মান ছেয়ে যাবে, তাদের জন্যে আল্লাহ্ (-এঁর শাস্তি) থেকে কোনো রক্ষাকারীই থাকবে না। (এমন মনে হবে) যেন তাদের চেহারা অন্ধকার রাতের স্তর দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। এরাই জাহান্নামের অধিবাসী। তারা তাতে চিরকাল বসবাসকারী।
وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ نَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡا مَکَانَکُمۡ اَنۡتُمۡ وَ شُرَکَآؤُکُمۡ ۚ فَزَیَّلۡنَا بَیۡنَہُمۡ وَ قَالَ شُرَکَآؤُہُمۡ مَّا کُنۡتُمۡ اِیَّانَا تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যেদিন আমি তাদের সবাইকে উঠাবো, অতঃপর মুশরিকদেরকে বলবো, ‘নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করো তোমরা ও তোমাদের শরীকগণ; সুতরাং আমি তাদেরকে মুসলমানদের থেকে পৃথক করে দেবো এবং তাদের শরীকগণ তাদেরকে বলবে, ‘তোমরা আমাদেরকে কখন পূজা করছিলে?
📕ইরফানুল কুরআন:
২৮. আর যেদিন আমরা তাদের সকলকে একত্রিত করবো, অতঃপর মুশরিকদেরকে বলবো, ‘তোমরা এবং তোমাদের অংশীদার (ভ্রান্ত মূর্তিগুলো) স্ব স্ব স্থানে অবস্থান করো’। অতঃপর আমরা তাদের মাঝে অনৈক্য বিস্তার করাবো। আর তাদের (নিজেদের নির্মিত) অংশীদার (তাদেরকে) বলবে, ‘তোমরা তো আমাদের ইবাদত করতে না’।
فَکَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًۢا بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمۡ اِنۡ کُنَّا عَنۡ عِبَادَتِکُمۡ لَغٰفِلِیۡنَ ﴿۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং আমাদের ও তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ই সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট এ মর্মে যে, ‘আমাদের নিকট তোমাদের পূজা করার খবরই ছিলো না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৯. অতঃপর আমাদের এবং তোমাদের মাঝে আল্লাহ্ই সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট যে, আমরা তোমাদের উপাসনার ব্যাপারে (অবশ্যই) অনবগত ছিলাম।
ہُنَالِکَ تَبۡلُوۡا کُلُّ نَفۡسٍ مَّاۤ اَسۡلَفَتۡ وَ رُدُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ مَوۡلٰىہُمُ الۡحَقِّ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۳۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এখানে প্রত্যেক ব্যক্তি যাচাই করে নেবে যে সে পুর্বে প্রেরণ করেছে এবং (তাদেরকে) আল্লাহরই প্রতি ফিরিয়ে আনা হবে, যিনি তাদের প্রকৃত অভিভাবক। আর তাদের সমস্ত মনগড়া কথাবার্তা তাদের নিকট থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩০. এ (ভয়ানক) স্থানে প্রত্যেক ব্যক্তি (আমলের প্রকৃত অবস্থা) যাচাই করে নেবে যা তারা অগ্রে প্রেরণ করেছিল এবং তাদেরকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে, যিনি তাদের প্রকৃত মালিক। আর তাদের থেকে সেসব মিথ্যা কাহিনী হারিয়ে যাবে, যা তারা চর্চা করতো।
قُلۡ مَنۡ یَّرۡزُقُکُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ اَمَّنۡ یَّمۡلِکُ السَّمۡعَ وَ الۡاَبۡصَارَ وَ مَنۡ یُّخۡرِجُ الۡحَیَّ مِنَ الۡمَیِّتِ وَ یُخۡرِجُ الۡمَیِّتَ مِنَ الۡحَیِّ وَ مَنۡ یُّدَبِّرُ الۡاَمۡرَ ؕ فَسَیَقُوۡلُوۡنَ اللّٰہُ ۚ فَقُلۡ اَفَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۳۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘তোমাদেরকে কে জীবিকা দেন আসমান ও যমীন থেকে, অথবা কে মালিক কান ও চোখগুলোর এবং কে নির্গত করেন জীবিতকে মৃত থেকে, আর বের করেন মৃতকে জীবিত থেকে এবং কে সমস্ত কাজের ব্যবস্থাপনা করেন?’ তারা এখন বলবে, ‘আল্লাহ্’। সুতরাং আপনি বলুন, ‘তবে কেন ভয় করছো না?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৩১. (তাদেরকে) বলে দিন, ‘কে তোমাদেরকে আকাশমন্ডলী ও জমিন থেকে (অর্থাৎ উপরে ও নিচে) রিযিক প্রদান করেন? অথবা কে (তোমাদের) কর্ণ ও চক্ষুর (অর্থাৎ শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির) মালিক? আর কে জীবিতকে মৃত (অর্থাৎ প্রাণকে প্রাণহীন) থেকে বের করেন? আর কে মৃতকে জীবিত (অর্থাৎ প্রাণহীনকে প্রাণ) থেকে বের করেন? আর (সৃষ্টিজগতের শৃঙ্খলা) কে পরিচালনা করেন?’ তখন তারা বলবে, ‘আল্লাহ্’। তখন আপনি বলে দিন, ‘তবুও কি তোমরা (তাঁকে) ভয় করো না?’
فَذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبُّکُمُ الۡحَقُّ ۚ فَمَا ذَا بَعۡدَ الۡحَقِّ اِلَّا الضَّلٰلُ ۚۖ فَاَنّٰی تُصۡرَفُوۡنَ ﴿۳۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের সত্য রব; অতঃপর সত্যের পর কী আছে? কিন্তু (আছে কেবল) পথভ্রষ্টতা; অতঃপর কোথায় চালিত হচ্ছো?
📕ইরফানুল কুরআন:
৩২. অতঃপর এমন (মহান ও ক্ষমতাবান) আল্লাহ্ই তো তোমাদের প্রকৃত প্রতিপালক। অতএব (এ) সত্যের পর গোমরাহী ব্যতীত আর কী হতে পারে? সুতরাং তোমরা কোথায় ফিরে যাচ্ছো?
کَذٰلِکَ حَقَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ عَلَی الَّذِیۡنَ فَسَقُوۡۤا اَنَّہُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۳۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এমনিভাবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে তোমার রবের বাণী ফাসিক্বদের উপর সুতরাং তারা ঈমান আনবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৩.এভাবে আপনার প্রতিপালকের বাণী নাফরমানদের ব্যাপারে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, তারা ঈমান আনয়ন করবে না।
قُلۡ ہَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ فَاَنّٰی تُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۳۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘তোমাদের শরীকদের মধ্যে কি কেউ এমনও আছে, যে প্রথমবার সৃষ্টি করে অতঃপর বিলীন হবার পর পুন্ররবার সৃষ্টি করে?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ই প্রথমে সৃষ্টি করেন, অতঃপর ধ্বংস হবার পর পুনর্বার সৃষ্টি করবেন। সুতরাং কোথায় উল্টো পথের দিকে ফিরে যাচ্ছো’?
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৪. (তাদেরকে) বলে দিন, ‘তোমাদের (তথাকথিত) অংশীদারদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যে সৃষ্টির সূচনা করে, অতঃপর (জীবন নিঃশেষ হবার পর) একে দ্বিতীয়বার ফিরিয়ে আনে?’ আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ্ই (জীবনকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এনে) সৃষ্টির সূচনা করেন; অতঃপর তিনিই একে পুনরায় সৃষ্টিও করবেন। সুতরাং তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো?’
قُلۡ ہَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَہۡدِیۡ لِلۡحَقِّ ؕ اَفَمَنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ اَحَقُّ اَنۡ یُّتَّبَعَ اَمَّنۡ لَّا یَہِدِّیۡۤ اِلَّاۤ اَنۡ یُّہۡدٰی ۚ فَمَا لَکُمۡ ۟ کَیۡفَ تَحۡکُمُوۡنَ ﴿۳۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘তোমাদের শরীকদের মধ্যে কি কেউ এমনও আছে যে সত্যের পথ দেখাবে?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ সত্যের পথ দেখান। সুতরাং যিনি সত্যের পথ দেখাবেন, তার নির্দেশ অনুযায়ী চলা উচিত, না তারই, যে নিজেই পথ পায় না যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে পথ দেখানো হয় না? সুতরাং তোমাদের কী হয়েছে? কীরূপ সিদ্ধান্ত দিচ্ছো?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৫. (তাদেরকে) বলুন, ‘তোমাদের (তথাকথিত) শরীকদের মধ্যে কেউ কি এমন আছে যে সত্যের দিকে পথপ্রদর্শন করতে পারে?’ আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ্ই সত্য (দ্বীন)-এর হেদায়াত দান করেন। সুতরাং যিনি সত্যের দিকে হেদায়াত দান করেন, তিনি অনুসরণের অধিকতর হক্বদার নাকি যে পথ দেখানো ব্যতীত নিজেই রাস্তা পায় না? (অর্থাৎ তাকে এক স্থান থেকে তুলে অপর স্থানে পৌঁছে দিতে হয়, যেমন কাফেররা তাদের মূর্তিকে প্রয়োজনে তুলে নেয়)। সুতরাং তোমাদের কী হলো, তোমরা কীভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকো?’
وَ مَا یَتَّبِعُ اَکۡثَرُہُمۡ اِلَّا ظَنًّا ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۳۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের অধিকাংশ অনুমানের উপরই চলে। নিশ্চয় অনুমান সত্যের (মোকাবেলায়) কোন কাজে আসে না। নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের কার্যাদী সম্পর্কে জানেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৬. তাদের অধিকাংশই কেবল অনুমানের অনুসরণ করে। নিশ্চয়ই অনুমান সত্যকে সামান্যতমও প্রতিস্থাপন করতে পারে না। অবশ্যই আল্লাহ্ খুব ভালোভাবে অবগত যা তারা করছে।
وَ مَا کَانَ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنُ اَنۡ یُّفۡتَرٰی مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لٰکِنۡ تَصۡدِیۡقَ الَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ وَ تَفۡصِیۡلَ الۡکِتٰبِ لَا رَیۡبَ فِیۡہِ مِنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۟۳۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এ ক্বোরআনের ক্ষেত্রে একথা শোভা পায় না যে, সেটাকে কেউ নিজ পক্ষ থেকে রচনা করে নেবে, আল্লাহর অবতারণ করা ব্যতীত; হ্যাঁ, সেটা পূর্ববর্তী কিতাবগুলোর সত্যায়ন এবং লওহ এর মধ্যে যা কিছু লেখা আছে সব কিছুরই বিশদ ব্যাখ্যা; সেটাতে কোন সন্দেহ নেই (সেটা) বিশ্বপ্রতিপালকের পক্ষ থেকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৭. এ কুরআন আল্লাহ্ (-এঁর ওহী) ব্যতীত অন্য কারো রচিত নয়, পক্ষান্তরে (এটি) এমন (কিতাবের) সত্যায়ন(কারী), যা এরপূর্বে (অবতীর্ণ হয়েছিল); আর যা কিছু (আল্লাহর ফলকে অথবা শরীয়তের বিধানে) লিপিবদ্ধ, এর বিস্তারিত বর্ণনা। এর (সত্যতার) মধ্যে সামান্যতমও সন্দেহ নেই, (এটি) সারাজাহানের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে।
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِسُوۡرَۃٍ مِّثۡلِہٖ وَ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۳۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি একথা বলে, ‘তিনি ওটা রচনা করছেন? আপনি বলুন, ‘সুতরাং সেটার মতো একটা সূরা নিয়ে এসো এবং আল্লাহ্কে ছেড়ে যাদেরকে পাওয়া যায় সবাইকে ডেকে নিয়ে এসো যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৮. তারা কি বলে, ‘এটি রাসূল (ﷺ) নিজে রচনা করেছেন?’ আপনি বলে দিন, ‘তবে তোমরা এর অনুরূপ কোনো (একটি) সূরা নিয়ে এসো, (আর নিজেদের সহযোগিতার জন্যে) আল্লাহ্ ব্যতীত যাকে তোমরা আহ্বান করতে পারো, আহ্বান করো; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
بَلۡ کَذَّبُوۡا بِمَا لَمۡ یُحِیۡطُوۡا بِعِلۡمِہٖ وَ لَمَّا یَاۡتِہِمۡ تَاۡوِیۡلُہٗ ؕ کَذٰلِکَ کَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۳۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
বরং সেটাকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে যার জ্ঞান তারা আয়ত্ব করতে পারে নি এবং এখনো তারা সেটার পরিণাম দেখে নি। এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীগণ অস্বীকার করেছিলো; সুতরাং দেখো যালিমদের কেমন পরিণাম হয়েছে!
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৯. বরং তারা একে (আল্লাহর এ বাণীকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে, যার জ্ঞান তারা আয়ত্তও করতে পারেনি, আর এখনও এর প্রকৃত সত্য তাদের সামনে সুস্পষ্ট হয়নি। এভাবে ঐসব লোকেরাও (সত্যকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল যারা তাদের পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। সুতরাং আপনি দেখুন, যালিমদের পরিণতি কেমন হয়েছে!
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یُّؤۡمِنُ بِہٖ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ لَّا یُؤۡمِنُ بِہٖ ؕ وَ رَبُّکَ اَعۡلَمُ بِالۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۴۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কেউ সেটার উপর ঈমান আনে আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেটার উপর ঈমান আনে না এবং তোমাদের রব ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালভাবে জানেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪০. তাদের মধ্যে কেউ এতে ঈমান আনয়ন করবে আর তাদের মধ্যে কেউ এতে ঈমান আনয়ন করবে না। আর আপনার প্রতিপালক ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত।
وَ اِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقُلۡ لِّیۡ عَمَلِیۡ وَ لَکُمۡ عَمَلُکُمۡ ۚ اَنۡتُمۡ بَرِیۡٓـــُٔوۡنَ مِمَّاۤ اَعۡمَلُ وَ اَنَا بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি তারা আপনাকে অস্বীকার করে, তবে আপনি বলে দিন, ‘আমার জন্য আমার কর্ম এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। আমার কর্মের সাথে তোমাদের সম্পর্কে নেই আর তোমাদের কর্মের সাথে আমার সম্পর্ক নেই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪১. আর যদি তারা আপনাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে, তবে বলে দিন, ‘আমার কর্ম আমার, আর তোমাদের কর্ম তোমাদের। তোমরা ঐসব কর্ম থেকে দায়মুক্ত যা আমি করছি। আর আমি ঐসব কর্ম থেকে দায়মুক্ত যা তোমরা করছো।’
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّسۡتَمِعُوۡنَ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تُسۡمِعُ الصُّمَّ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۴۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কেউ এমন রয়েছে, যে আপনার প্রতি কান পেতে রাখে, তবে কি আপনি বধিরদেরকে শুনাবেন, যদিও তাদের বিবেক না থাকে?
📕ইরফানুল কুরআন:
৪২. আর তাদের কেউ কেউ (বাহ্যিকভাবে) আপনার দিকে কান পেতে থাকে। আপনি কি বোবাদের শুনাবেন, যদিও তারা কিছু বুঝতে অক্ষম হয়?
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّنۡظُرُ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تَہۡدِی الۡعُمۡیَ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۴۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কেউ আপনার দিকে তাকায়। তবে কি আপনি অন্ধদেরকে পথ দেখাবেন, যদিও তারা দেখতে না পায়?
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৩. তাদের কেউ কেউ (বাহ্যিকভাবে) আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে। আপনি কি অন্ধদের পথ দেখাবেন, যদিও তারা কোনো অর্ন্তদৃষ্টি না রাখে?
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَظۡلِمُ النَّاسَ شَیۡئًا وَّ لٰکِنَّ النَّاسَ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۴۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় আল্লাহ্ মানুষের প্রতি কোন যুল্ম করেন না; - হ্যাঁ, মানুষই নিজেদের আত্নাগুলোর উপর যুল্ম করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষের প্রতি সামান্যতমও যুলুম করেন না, বস্তুতঃ মানুষ (নিজেরাই) নিজেদের প্রতি যুলুম করে থাকে।
وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُہُمۡ کَاَنۡ لَّمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَۃً مِّنَ النَّہَارِ یَتَعَارَفُوۡنَ بَیۡنَہُمۡ ؕ قَدۡ خَسِرَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِلِقَآءِ اللّٰہِ وَ مَا کَانُوۡا مُہۡتَدِیۡنَ ﴿۴۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যেদিন তাদেরকে উঠাবেন, (সেদিন তাদের মন হবে) যেন তারা পৃথিবীতে ছিলোই না; কিন্তু (ছিলো মাত্র) এ দিনের একটা মুহূর্তকাল; তারা পরস্পরের মধ্যে পরিচয় করবে, সম্পূর্ণ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ওই সব লোক, যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করাকে অস্বীকার করেছে এবং তারা হিদায়তের উপর ছিলো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৫. আর যেদিন তিনি তাদেরকে একত্রিত করবেন (সেদিন তারা অনুভব করবে), তারা যেন দিনের একমুহূর্তও দুনিয়াতে অবস্থান করেনি। তারা একে অপরকে চিনবে। নিশ্চয়ই তারা ক্ষতিগ্রস্ত যারা আল্লাহর সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছিল এবং তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না।
وَ اِمَّا نُرِیَنَّکَ بَعۡضَ الَّذِیۡ نَعِدُہُمۡ اَوۡ نَتَوَفَّیَنَّکَ فَاِلَیۡنَا مَرۡجِعُہُمۡ ثُمَّ اللّٰہُ شَہِیۡدٌ عَلٰی مَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۴۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি (হে হাবীব!) আমি আপনাকে দেখিয়ে দিই কিছু তা থেকেই, যা তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি অথবা আপনাকে প্রথমেই নিজের নিকট ডেকে নিই, যে কোন অবস্থাতেই তাদেরকে আমার দিকে ফিরে আসতে হবে। অতঃপর আল্লাহ্ সাক্ষী তাদের কার্যাদির উপর।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৬. আর আমরা যে (শাস্তির) অঙ্গীকার তাদের সাথে করছি, চাই এর কিছু অংশ আপনাকে (দুনিয়াতেই) দেখিয়ে দেই (যা আমরা আপনার পবিত্র হায়াতে বাস্তবায়ন করবো) অথবা (এরপূর্বে) আপনাকে ইন্তেকাল দান করি, (সর্বাবস্থায়) আমাদের দিকেই তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আল্লাহ্ (স্বয়ং) সেসব বিষয়ের সাক্ষী, যা কিছু তারা করছে।
وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ رَّسُوۡلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ رَسُوۡلُہُمۡ قُضِیَ بَیۡنَہُمۡ بِالۡقِسۡطِ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۴۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে একজন রসূল হয়েছেন; যখন তাদের রসূল তাদের নিকট আসতেন, তখনই তাদের উপর ন্যায়ভাবে মীমাংসা করে দেওয়া হতো এবং তাদের উপর যুল্ম হতো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৭. আর প্রত্যেক উম্মতের জন্যে একজন রাসূল আগমন করেছেন। অতঃপর যখন তাদের রাসূল (সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলীসহ) এসেছেন (কিন্তু তখনও তারা মান্য করেনি), তখন তাদের মাঝে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ফায়সালা করা হয়েছে। আর (কিয়ামতের দিনও এমনটিই হবে,) তাদের উপর যুলুম করা হবে না।
وَ یَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی ہٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং (তারা) বলে, ‘এ প্রতিশ্রিতি কবে (বাস্তবে) আসবে যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৮. আর তারা (ব্যঙ্গ করে) বলে, ‘এ (শাস্তির) অঙ্গীকার কখন (পূর্ণ) হবে? (হে মুসলমানেরা! বলো) যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
قُلۡ لَّاۤ اَمۡلِکُ لِنَفۡسِیۡ ضَرًّا وَّ لَا نَفۡعًا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ؕ اِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ فَلَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۴۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘আমি নিজের ভাল-মন্দের (সত্তাগতভাবে) ক্ষমতা রাখি না, কিন্তু যা আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন। প্রত্যেক দলে একটা প্রতিশ্রুতি রয়েছে; যখন তাদের প্রতিশ্রুতি আসবে তখন একটা মুহূর্ত না পেছনে হটবে, না সামনে বাড়বে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৯. বলে দিন, ‘আল্লাহ্ যতটুকু ইচ্ছা করেন ততটুকু ব্যতীত আমি আমার নিজের জন্যে না কোনো ক্ষতির অধিকারী আর না কোনো উপকারের। প্রত্যেক উম্মতের জন্যে একটি (নির্ধারিত) মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের (নির্ধারিত) মেয়াদ পূর্ণ হয়, তখন তারা না এক মুহূর্ত পিছনে হঠতে পারে, আর না সামনে অগ্রসর হতে পারে।’
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُہٗ بَیَاتًا اَوۡ نَہَارًا مَّاذَا یَسۡتَعۡجِلُ مِنۡہُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۵۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘হ্যাঁ, বলো তো, ‘যদি তার শাস্তি তোমাদের উপর রাতে এসে পড়ে অথবা দিনের বেলায়, তবে তাঁতে অপরাধীরা কোন বস্তু ত্বরান্বিত করতে চায়?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৫০. আপনি বলে দিন, ‘(হে কাফেরেরা!) একটু চিন্তা করে দেখো তো, যদি তোমাদের উপর তাঁর শাস্তি (অকস্মাৎ) রজনীতে অথবা দিবসে এসে পড়ে (তবে তোমরা কী করবে)? এটি কি তা, যা অপরাধীরা দ্রুত কামনা করে?
اَثُمَّ اِذَا مَا وَقَعَ اٰمَنۡتُمۡ بِہٖ ؕ آٰلۡـٰٔنَ وَ قَدۡ کُنۡتُمۡ بِہٖ تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ ﴿۵۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি যখন ঘটে যাবে তখনই সেটা বিশ্বাস করবে? এখনই কি মেনে নিচ্ছো? প্রথমে তো এটা ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছিলে?
📕ইরফানুল কুরআন:
৫১. যে সময় এ (শাস্তি) সংঘটিত হবে, তখন কি এর প্রতি ঈমান আনয়ন করবে? (তখন তোমাদেরকে বলা হবে,) এখন (ঈমান আনয়ন করছো? এখন কোনো লাভ নেই) অথচ তোমরা (ঠাট্টাচ্ছলে) একে (এ শাস্তিই) ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলে।’
ثُمَّ قِیۡلَ لِلَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ذُوۡقُوۡا عَذَابَ الۡخُلۡدِ ۚ ہَلۡ تُجۡزَوۡنَ اِلَّا بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡسِبُوۡنَ ﴿۵۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যালিমদেরকে বলা হবে, ‘স্থায়ী শাস্তি আস্বাদন করো, তোমাদের অন্য কোন প্রতিফল মিলবে না, কিন্তু সেটাই, যা তোমরা উপার্জন করতে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫২. এরপর (এ সকল) যালিমদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা স্থায়ী শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করো। তোমরা যা অর্জন করতে তা ব্যতীত (আর কোনো) প্রতিদান দেয়া হবে না।’
وَ یَسۡتَنۡۢبِئُوۡنَکَ اَحَقٌّ ہُوَ ؕؔ قُلۡ اِیۡ وَ رَبِّیۡۤ اِنَّہٗ لَحَقٌّ ۚؕؔ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ ﴿۵۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারা আপনার নিকট জানতে চাইবে ‘সেটা কি সত্য?’ আপনি বলুন, ‘হ্যাঁ! আমার রবের শপথ! নিশ্চয় নিশ্চয় সেটা সত্য এবং তোমরা কিছুতেই অক্ষম করতে পারবে না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৩. আর তারা আপনার নিকট জানতে চায়, ‘(চিরস্থায়ী শাস্তির) এ কথা কি (বাস্তবিকই) সত্য?’ বলে দিন, ‘হ্যাঁ! আমার প্রতিপালকের কসম! অবশ্যই তা সম্পূর্ণ সত্য। আর তোমরা (প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে আল্লাহ্কে) দুর্বল করতে পারবে না।’
وَ لَوۡ اَنَّ لِکُلِّ نَفۡسٍ ظَلَمَتۡ مَا فِی الۡاَرۡضِ لَافۡتَدَتۡ بِہٖ ؕ وَ اَسَرُّوا النَّدَامَۃَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ ۚ وَ قُضِیَ بَیۡنَہُمۡ بِالۡقِسۡطِ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۵۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি প্রত্যেক অত্যাচারী সত্তা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুর মালিক হতো, তবে অবশ্যই সে নিজ সত্তাকে মুক্ত করার জন্য (তা) দিয়ে দিতো এবং অন্তরে চুপে চুপে লজ্জিত হবে যখন শাস্তি দেখবে; আর তাদের মধ্যে ন্যায়ভাবে মীমাংসা করে দেওয়া হবে; এবং তাদের উপর যুল্ম হবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৪. যদি প্রত্যেক সীমালঙ্ঘনকারীর মালিকানায় (সমস্ত সম্পদ) বিদ্যমান হতো যা কিছু পৃথিবীতে আছে, তবে সে নিশ্চিত একে (নিজের প্রাণ রক্ষার্থে) শাস্তির বিনিময়ে দিয়ে দিতো। আর (তারা) যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন নিজেদের অনুতাপ লুকিয়ে রাখবে। আর তাদের মাঝে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে ফায়সালা করা হবে এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না।
اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۵۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
শুনে নাও! ‘নিশ্চয় আল্লাহরই, যা কিছু আসমানসমূহের মধ্যে রয়েছে এবং যমীনে’। শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকের নিকট খবর নেই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৫. জেনে রেখো! যা কিছুই আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে রয়েছে, (সমস্ত) আল্লাহরই। সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
ہُوَ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۵۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং তারই প্রতি তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৬. তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান; আর তোমাদেরকে তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে।
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ مَّوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ شِفَآءٌ لِّمَا فِی الصُّدُوۡرِ ۬ۙ وَ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۵۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে মানবকূল! তোমাদের নিকট রবের পক্ষ থেক উপদেশ এসেছে ও অন্তরগুলোর বিশুদ্ধতা, হিদায়ত এবং রহমত ঈমানদারদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৭. হে মানুষ সকল! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ ও (ব্যাধির) নিরাময় এসেছে যা অন্তরে (লুকায়িত) রয়েছে। আর ঈমানদারদের জন্যে তা হিদায়াত এবং রহমত(ও)।
قُلۡ بِفَضۡلِ اللّٰہِ وَ بِرَحۡمَتِہٖ فَبِذٰلِکَ فَلۡیَفۡرَحُوۡا ؕ ہُوَ خَیۡرٌ مِّمَّا یَجۡمَعُوۡنَ ﴿۵۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘আল্লাহরই অনুগ্রহ ও তারই দয়া, সেটারই উপর তাদের আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। তা তাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৮. বলে দিন, ‘(এ সবকিছু) আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর রহমতের কারণে (যা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে প্রেরণের মাধ্যমে তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে)। কাজেই মুসলমানদের উচিত এতে আনন্দ উদযাপন করা। তা (সমস্ত ধন-সম্পদ) থেকে উৎকৃষ্টতর যা তারা জমা করে রাখে।’
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ لَکُمۡ مِّنۡ رِّزۡقٍ فَجَعَلۡتُمۡ مِّنۡہُ حَرَامًا وَّ حَلٰلًا ؕ قُلۡ آٰللّٰہُ اَذِنَ لَکُمۡ اَمۡ عَلَی اللّٰہِ تَفۡتَرُوۡنَ ﴿۵۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘হ্যাঁ, বলো তো, যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য রিয্ক্ব অবতারণ করেছেন, তাঁতে তোমরা নিজেদের পক্ষ থেকে হারাম ও হালাল স্থির করে নিয়েছো?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ কি তোমাদেরকে সেটার অনুমতি দিয়েছেন, না তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা রচনা করছো’?
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৯. বলে দিন, ‘একটু বলো তো- আল্লাহ্ যে (পবিত্র) রিযিক তোমাদের জন্যে অবতীর্ণ করেছেন, তোমরা এ থেকে কিছু (বিষয়) বৈধ এবং (কিছু) অবৈধ সাব্যস্ত করেছো; আল্লাহ্ কি তোমাদেরকে (এর) অনুমতি দিয়েছেন নাকি তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করছো?’
وَ مَا ظَنُّ الَّذِیۡنَ یَفۡتَرُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۶۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, ক্বিয়ামতে তাদের কী অবস্থা হবে সে সম্পর্কে তাদের কী ধারণা? নিশ্চয় আল্লাহ্ মানুষের উপর অনুগ্রহ করেন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬০. আর কিয়ামত দিবসের ব্যাপারে তাদের কী ধারণা যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশ (লোক) কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে না।
وَ مَا تَکُوۡنُ فِیۡ شَاۡنٍ وَّ مَا تَتۡلُوۡا مِنۡہُ مِنۡ قُرۡاٰنٍ وَّ لَا تَعۡمَلُوۡنَ مِنۡ عَمَلٍ اِلَّا کُنَّا عَلَیۡکُمۡ شُہُوۡدًا اِذۡ تُفِیۡضُوۡنَ فِیۡہِ ؕ وَ مَا یَعۡزُبُ عَنۡ رَّبِّکَ مِنۡ مِّثۡقَالِ ذَرَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ وَ لَاۤ اَصۡغَرَ مِنۡ ذٰلِکَ وَ لَاۤ اَکۡبَرَ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনি যে কোন কর্মে রত হোন ও তার পক্ষ থেকে কিছু ক্বোরআন পাঠ করুন এবং তোমরা যে কোন কাজ করো, আমি তোমাদের উপর সাক্ষী থাকি, যখন তোমরা সেটা আরম্ভ করো। আর আপনার রবের নিকট থেকে কোন অণু-পরিমাণ বস্তুও অগোচর নয়- পৃথিবীতে, না আসমানের মধ্যে; এবং না তদপেক্ষা বৃহত্তর, কোন বস্তুই নেই, যা এক সুস্পষ্ট কিতাবের মধ্যে নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬১. আর (হে সম্মানিত হাবীব!) আপনি যে অবস্থায়ই থাকুন এবং কুরআন থেকে যে অংশই পাঠ করে শুনান; আর (হে উম্মতে মুহাম্মদী!) তোমরা যে আমলই করো, আমরা (সে সময়ই) তোমাদের সকলের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখি যখন তোমরা তাতে মগ্ন হও। আর আপনার প্রতিপালক (-এঁর জ্ঞান) থেকে অনু পরিমাণ (কিছু) না পৃথিবীতে গোপন আছে আর না আসমানে, আর এ (অনু) থেকে ক্ষুদ্রতর কিংবা বৃহত্তর কিছুই নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ) নেই।
اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿ۚۖ۶۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহর ওলীগণের না কোন ভয় আছে, না কোন দুঃখ;
📕ইরফানুল কুরআন:
৬২. সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলীগণের না কোনো ভয় আছে, আর না তারা চিন্তিত ও দুঃখিত হবে।
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿ؕ۶۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং খোদাভীতি অবলম্বন করে;
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৩. (তারা) ওইসব লোক, যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং (সর্বদা) খোদাভীতি অবলম্বন করছে।
لَہُمُ الۡبُشۡرٰی فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿ؕ۶۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের জন্য সুসংবাদ রয়েছে পার্থিব জীবনে এবং পরকালে। আল্লাহর বাণীগুলো পরিবর্তিত হতে পারে না। এটাই হচ্ছে মহা সাফল্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৪. তাদের জন্যে পার্থিব জীবনেও (সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতার) সুসংবাদ রয়েছে এবং পরকালেও (ক্ষমা ও সুপারিশের অথবা দুনিয়াতেও পূণ্যময় স্বপ্নের আকারে পূতঃপবিত্র রুহানী অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে; আর পরকালেও রয়েছে পরম সৌন্দর্যের বিচ্ছুরণ এবং এর দর্শন।) আল্লাহর ফরমানের পরিবর্তন হয় না। এটিই মহাসাফল্য।
وَ لَا یَحۡزُنۡکَ قَوۡلُہُمۡ ۘ اِنَّ الۡعِزَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ؕ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۶۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনি তাদের কথায় দুঃখিত হবেন না। নিশ্চয় সম্মান সবই আল্লাহর জন্য। তিনিই শুনেন, জানেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৫. (হে সম্মানিত হাবীব!) তাদের (শত্রুতা ও বিদ্বেষপূর্ণ) কথাবার্তা আপনাকে যেন চিন্তিত না করে। নিশ্চয়ই সমস্ত মর্যাদা ও আধিপত্য আল্লাহরই জন্যে (তিনি যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন।) তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰہِ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا یَتَّبِعُ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ شُرَکَآءَ ؕ اِنۡ یَّـتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ﴿۶۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহরই মালিকানাধীন যা কিছু আসমানগুলোতে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনের মধ্যে; এবং কিসের পেছনে যাচ্ছে ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে শরীকরূপে ডাকছে? তারা তো অনুসরণ করছে না, কিন্তু অনুমানের এবং তারা তো নয়, কিন্তু শুধু কল্পনার ঘোড়া দৌড়াচ্ছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৬. জেনে রেখো, যা কিছু আকাশমন্ডলীতে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে, সমস্ত আল্লাহরই (অধীনে)। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ব্যতীত (মূর্তির) উপাসনা করে (প্রকৃতপক্ষে নিজেদের বানানো) অংশীদারদেরও অনুসরণ করে না বরং তারা কেবল (নিজেদের) অনুমান ও ধারণার অনুসরণ করে। আর তারা তো কেবল ভ্রান্ত অনুমানই করে থাকে।
ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الَّیۡلَ لِتَسۡکُنُوۡا فِیۡہِ وَ النَّہَارَ مُبۡصِرًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّسۡمَعُوۡنَ ﴿۶۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনিই হন যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন, যাতে সেটার মধ্যে তোমরা শান্তি পাও এবং দিন সৃষ্টি করেছেন তোমাদের চোখ খুলতে; নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাদি রয়েছে শ্রবণকারীদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৭. তিনিই তোমাদের জন্যে সৃজন করেছেন রাত্রি যাতে এতে তোমরা বিশ্রাম করতে পারো আর দিনকে করেছেন আলোকোজ্জ্বল (যাতে তোমরা কার্যাদি সম্পন্ন করতে পারো)। নিশ্চয়ই তাদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে যারা (মনোযোগ সহকারে) শ্রবণ করে।
قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰہُ وَلَدًا سُبۡحٰنَہٗ ؕ ہُوَ الۡغَنِیُّ ؕ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ اِنۡ عِنۡدَکُمۡ مِّنۡ سُلۡطٰنٍۭ بِہٰذَا ؕ اَتَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তার) বললো, ‘আল্লাহ্ নিজের জন্য সন্তান গ্রহন করেছেন; পবিত্রতা তারই। তিনিই অভাবমুক্ত। তারই, যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে (রয়েছে)। তোমাদের নিকট সেটার কোন সনদ নেই। তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে ওই কথা রচনা করছো যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান নেই?
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৮. তারা বলে, ‘আল্লাহ্ (নিজের জন্যে) সন্তান গ্রহণ করেছেন’, (অথচ) তিনি এ থেকে পবিত্র, অমুখাপেক্ষী। যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু জমিনে রয়েছে, সবকিছু তাঁরই অধিকারে। তোমাদের নিকট এর (এ ভ্রান্ত কথার) কোনো প্রমাণ নেই। তোমরা কি আল্লাহ্ সম্পর্কে এমন (কিছু) বলো, যা তোমরা (নিজেরাও) জানো না?
قُلۡ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَفۡتَرُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ لَا یُفۡلِحُوۡنَ ﴿ؕ۶۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
৬৯. আপনি বলুন, ‘ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে তাদের মঙ্গল হবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৯. বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে, তারা সফলকাম হবে না’।
مَتَاعٌ فِی الدُّنۡیَا ثُمَّ اِلَیۡنَا مَرۡجِعُہُمۡ ثُمَّ نُذِیۡقُہُمُ الۡعَذَابَ الشَّدِیۡدَ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿۷۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
দুনিয়ার মধ্যে কিছু সুখ সম্ভোগ করাই। অতঃপর আমার দিকেই তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করাবো তাদের কুফরের প্রতিফল স্বরূপ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭০. পৃথিবীতে (কিছু দিনের) সুখ-সম্ভোগ, এরপর আমাদেরই দিকে তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমরা তাদেরকে কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো, তারা যে কুফুরী করতো তার বিনিময়ে।
وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ ۘ اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖ یٰقَوۡمِ اِنۡ کَانَ کَبُرَ عَلَیۡکُمۡ مَّقَامِیۡ وَ تَذۡکِیۡرِیۡ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَعَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡتُ فَاَجۡمِعُوۡۤا اَمۡرَکُمۡ وَ شُرَکَآءَکُمۡ ثُمَّ لَا یَکُنۡ اَمۡرُکُمۡ عَلَیۡکُمۡ غُمَّۃً ثُمَّ اقۡضُوۡۤا اِلَیَّ وَ لَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۷۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদেরকে নূহের বৃত্তান্ত পাঠ করে শুনান; যখন সে আপন সম্প্রদায়কে বলেছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমাদের নিকট দুর্বিষহ হয় আমার দণ্ডায়মান হওয়া এবং আল্লাহর নিদর্শনসমূহ স্মরণ করিয়ে দেওয়া, তবে আমি আল্লাহরই উপর নির্ভর করেছি। সুতরাং তোমরা সম্মিলিত হয়ে কাজ করো এবং নিজেদের মিথ্যা উপাস্যগুলো সহকারে তোমাদের কাজ পাকাপাকি করে নাও। পরে যেন তোমাদের কাজের মধ্যে তোমাদের কোন সংশয় না থাকে। অতঃপর (তোমাদের পক্ষে) যা সম্ভবপর হয় আমার সম্বন্ধে করে নাও! এবং আমাকে অবকাশ দিও না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭১. আর তাদেরকে নূহ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ঘটনা বর্ণনা করুন। যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায় (কাবিলের সন্তান)! যদি আমার অবস্থান এবং আল্লাহর নিদর্শন দ্বারা আমার উপদেশ তোমাদের নিকট কষ্টকর মনে হয়, তবে (জেনে রেখো) আমি তো কেবল আল্লাহরই উপর ভরসা করেছি। (আর আমি তোমাদের জন্যে ভীত নই।) সুতরাং একত্রিত হয়ে (আমার বিরুদ্ধে) তোমাদের চক্রান্ত ও তোমাদের (মনগড়া) অংশীদারদেরও (সাথে নিয়ে চিন্তা করো যে,) এরপর তোমাদের চক্রান্ত (কোনো দিন) তোমাদের নিকট গোপন না থাকে। অতঃপর আমার সাথে (যা মনে আসে) করে যাও এবং (আমাকে) অবকাশ দিও না।
فَاِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ فَمَا سَاَلۡتُکُمۡ مِّنۡ اَجۡرٍ ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ ۙوَ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۷۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমি তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না। আমার পারিশ্রমিক তো নেই কিন্তু আল্লাহর নিকটই; আর আমার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত থাকি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭২. সুতরাং যদি তোমরা (আমার উপদেশ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমি তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো কেবল আল্লাহর (মহান যিম্মার) উপর রয়েছে, আর আমাকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আমি (তাঁর নির্দেশের সম্মুখে) যেন আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত থাকি।’
فَکَذَّبُوۡہُ فَنَجَّیۡنٰہُ وَ مَنۡ مَّعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ وَ جَعَلۡنٰہُمۡ خَلٰٓئِفَ وَ اَغۡرَقۡنَا الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُنۡذَرِیۡنَ ﴿۷۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর তারা তাকে অস্বীকার করেছে।এরপর আমি তাকে ও যারা তার সাথে কিশ্তীতে ছিলো তাদেরকে উদ্ধার করেছি এবং আমি তাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করেছি। আর যারা আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করেছেন তাদেরকে আমি নিমজ্জিত করেছি। সুতরাং দেখো! যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে তাদের পরিণাম কী হলো?
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৩. অতঃপর তাঁর সম্প্রদায় তাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করলো, আর আমরা তাঁকে ও তাঁর সাথে যারা নৌকায় ছিল তাদেরকে (মহাপ্লাবনের শাস্তি থেকে) উদ্ধার করলাম এবং তাদেরকে (পৃথিবীতে) স্থলাভিষিক্ত করলাম। আর সেসব লোকদেরকে ডুবিয়ে দিলাম যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। সুতরাং দেখুন, সেসব লোকদের পরিণতি কেমন হয়েছিল যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল।
ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ رُسُلًا اِلٰی قَوۡمِہِمۡ فَجَآءُوۡہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا بِہٖ مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ نَطۡبَعُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿۷۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
অনন্তর, এর পরে আরো রসূল আমি তাদের সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি। অতঃপর তারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে এসেছে। তবুও তারা এমন ছিলো না যে, ঈমান আনতো সেটার উপর, যেতাকে তারা ইতোপূর্বে অস্বীকার করেছিলো। আমি এভাবেই মোহর করে দিই অবাধ্যদের হৃদয়গুলোর উপর’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৪. অতঃপর আমরা তাঁর পর তাদের সম্প্রদায়ের নিকট (কতোই না) রাসূল প্রেরণ করেছি, আর তাঁরা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের অবস্থাও এমন ছিল না যে তারা পূর্বে যা মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল তার উপর ঈমান আনয়ন করে। এভাবেই আমরা তাদের হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেই যারা সীমালঙ্ঘন করে।
ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ مُّوۡسٰی وَ ہٰرُوۡنَ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ بِاٰیٰتِنَا فَاسۡتَکۡبَرُوۡا وَ کَانُوۡا قَوۡمًا مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿۷۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর তাদের পরে আমি মূসা ও হারূনকে ফির’আউন ও তার পরিষদবর্গের প্রতি আমার নিদর্শনাদি সহকারে প্রেরণ করেছি। এরপর তারা অহঙ্কার করেছে এবং তারা অপরাধী লোক ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৫. অতঃপর আমরা তাদের পর মূসা ও হারুন (আলাইহিমাস সালাম)-কে ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের নিকট নিদর্শনাবলী সহ প্রেরণ করেছিলাম। কিন্তু তারা অহঙ্কার করলো এবং তারা ছিল অপরাধী সম্প্রদায়।
فَلَمَّا جَآءَہُمُ الۡحَقُّ مِنۡ عِنۡدِنَا قَالُوۡۤا اِنَّ ہٰذَا لَسِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন তাদের কাছে আমার নিকট থেকে সত্য এলো, (তখন তারা) বললো, ‘এটা তো অবশ্যই সুস্পষ্ট যাদু’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৬. অতঃপর যখন তাদের নিকট আমাদের পক্ষ থেকে সত্য আগমন করলো, (তখন) তারা বলতে লাগলো, ‘নিশ্চয় এ তো সুস্পষ্ট যাদু’।
قَالَ مُوۡسٰۤی اَتَقُوۡلُوۡنَ لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَکُمۡ ؕ اَسِحۡرٌ ہٰذَا ؕ وَ لَا یُفۡلِحُ السّٰحِرُوۡنَ ﴿۷۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
মূসা বললো, ‘তোমরা কি সত্য সম্পর্কে এরূপ বলছো যখন তা তোমাদের নিকট এলো? এটা কি যাদু? এবং যাদুকররা সফলকাম হয় না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৭. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা কি সত্যের ব্যাপারে (এমন কথা) বলছো, যখন তা তোমাদের নিকট উপনীত হয়েছে? (বুদ্ধি ও অনুভুতির চক্ষু খুলে দেখো) এটি কি যাদু? আর যাদুকর (কখনও) সফলকাম হয় না।’
قَالُوۡۤا اَجِئۡتَنَا لِتَلۡفِتَنَا عَمَّا وَجَدۡنَا عَلَیۡہِ اٰبَآءَنَا وَ تَکُوۡنَ لَکُمَا الۡکِبۡرِیَآءُ فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا نَحۡنُ لَکُمَا بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۷۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এজন্য এসেছো যে, আমাদেরকে তা থেকে ফিরিয়ে দেবে, যার উপর আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি এবং পৃথিবীতে তোমরা দু’জনেরই প্রভাব প্রতিপত্তি থাকবে? আর আমরা তোমাদের উপর ঈমান আনয়নকারী নই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৮. তারা বলতে লাগল, ‘(হে মূসা!) তুমি কি আমাদেরকে (সে পথ থেকে) ফিরিয়ে দিতে আমাদের নিকট এসেছো যার উপর আমরা আমাদের পিতৃপুরুষকে (অনুসরণকারী) পেয়েছি, আর যাতে এ ভু-খন্ডে (অর্থাৎ মিশরের ভুমিতে) তোমাদের উভয়ের আধিপত্য (বজায়) থাকে? আমরা কখনোই তোমাদের দু’জনে বিশ্বাসী নই।’
وَ قَالَ فِرۡعَوۡنُ ائۡتُوۡنِیۡ بِکُلِّ سٰحِرٍ عَلِیۡمٍ ﴿۷۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ফির’আউন বললো, ‘প্রত্যেক জ্ঞানী যাদুকরকে আমার নিকট নিয়ে এসো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৯. আর ফেরাউন বলতে লাগলো, ‘আমার নিকট সকল অভিজ্ঞ যাদুকরকে নিয়ে এসো’।
فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَۃُ قَالَ لَہُمۡ مُّوۡسٰۤی اَلۡقُوۡا مَاۤ اَنۡتُمۡ مُّلۡقُوۡنَ ﴿۸۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন যাদুকররা এলো, তখন তাদেরকে মূসা বললো, ‘নিক্ষেপ করো যা তোমাদের নিক্ষেপ করার আছে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮০. অতঃপর যখন যাদুকরেরা আসলো, তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমাদের যা নিক্ষেপ করার তোমরা তা (ময়দানে) নিক্ষেপ করো’।
فَلَمَّاۤ اَلۡقَوۡا قَالَ مُوۡسٰی مَا جِئۡتُمۡ بِہِ ۙ السِّحۡرُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَیُبۡطِلُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُصۡلِحُ عَمَلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করলো, তখন মূসা বললো, ‘তোমরা এই যা যা এনেছো, তা যাদু। এখন আল্লাহ্ তা অসার করে দেবেন। আল্লাহ্ ফ্যাসাদসৃষ্টিকারীদের কর্ম সার্থক করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮১. অতঃপর যখন তারা (নিজেদের রশি ও লাঠি) নিক্ষেপ করলো তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘যা কিছু তোমরা নিয়ে এসেছো (তা) যাদু। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এখনই একে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের কর্ম সংশোধন করেন না।
وَ یُحِقُّ اللّٰہُ الۡحَقَّ بِکَلِمٰتِہٖ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۸۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহ্ তার বাণী সমূহ দ্বারা সত্যকে করে দেখান যদিও অপরাধীরা অপ্রীতিকর মনে করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮২. আর আল্লাহ্ নিজের বাণী দ্বারা সত্যকে সত্য হওয়া সাব্যস্ত করে দেন, যদিও অপরাধীরা একে অপছন্দই করে।’
فَمَاۤ اٰمَنَ لِمُوۡسٰۤی اِلَّا ذُرِّیَّۃٌ مِّنۡ قَوۡمِہٖ عَلٰی خَوۡفٍ مِّنۡ فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہِمۡ اَنۡ یَّفۡتِنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّ فِرۡعَوۡنَ لَعَالٍ فِی الۡاَرۡضِ ۚ وَ اِنَّہٗ لَمِنَ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۸۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর মূসার উপর ঈমান আনে নি কিন্তু (এনেছে) তার সম্প্রদায়ের বংশধরের কিছু সংখ্যক লোক, ফির’আউন ও তার পরিষদবর্গকে এ ভয় করে যে, কখনো তাদেরকে বিচ্যুত হবার উপর বাধ্য করবে কিনা এবং নিশ্চয় ফির’আউন যমীনের উপর অহঙ্কারী ছিলো আর নিশ্চয় সে সীমা অতিক্রম করেছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৩. অতঃপর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর প্রতি তাঁর সম্প্রদায়ের কতিপয় যুবক ব্যতীত (কেউ) ঈমান আনয়ন করলো না; এ ভয়ে যে, ফেরাউন ও তার (সম্প্রদায়র্ভুক্ত) পারিষদবর্গ তাদেরকে না (কোনো) মুসিবতে নিমজ্জিত করে। আর নিশ্চয়ই ফেরাউন (মিশরের) ভুমিতে খুবই সীমালঙ্ঘনকারী ও অবাধ্য ছিল। আর সে নিশ্চয়ই (নির্যাতনে) সীমা অতিক্রমকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
وَ قَالَ مُوۡسٰی یٰقَوۡمِ اِنۡ کُنۡتُمۡ اٰمَنۡتُمۡ بِاللّٰہِ فَعَلَیۡہِ تَوَکَّلُوۡۤا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّسۡلِمِیۡنَ ﴿۸۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মূসা বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনে থাকো তবে তারই উপর নির্ভর করো, যদি তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে থাকো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৪. আর মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করো, তবে তাঁরই উপর ভরসা করো। যদি তোমরা (বাস্তবিকই) বিশ্বাসী হও।’
فَقَالُوۡا عَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡنَا ۚ رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَۃً لِّلۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۸۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা বললো, ‘আল্লাহরই উপর আমরা নির্ভর করেছি, হে আমাদের রব! আমাদেরকে অত্যাচারী লোকদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৫. তখন তারা আরয করলো, ‘আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের উৎপীড়নের লক্ষ্য বানিও না।
وَ نَجِّنَا بِرَحۡمَتِکَ مِنَ الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۸۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিজ অনুগ্রহ করে আমাদেরকে কাফিরদের থেকে রক্ষা করো!
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৬. আর আমাদেরকে তোমার অনুগ্রহ দ্বারা কাফের সম্প্রদায় (-এর আধিপত্য) থেকে মুক্তি দাও।’
وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰی وَ اَخِیۡہِ اَنۡ تَبَوَّاٰ لِقَوۡمِکُمَا بِمِصۡرَ بُیُوۡتًا وَّ اجۡعَلُوۡا بُیُوۡتَکُمۡ قِبۡلَۃً وَّ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۸۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছি ‘মিশরে আপন সম্প্রদায় এর জন্য গৃহসমূহ নির্মাণ করো ও নিজেদের ঘরগুলোকে নামাযের স্থান করো এবং নামায কায়েম রাখো; আর মুসলমানদেরকে সুসংবাদ শুনাও।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৭. আর আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর ভ্রাতার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তোমরা উভয়ে মিশরের (নগরীর) মধ্যে তোমাদের সম্প্রদায়ের জন্যে কিছু গৃহ নির্মাণ করো, আর তোমাদের (এ) গৃহসমূহকে (নামায আদায়ের জন্যে) ক্বিবলামূখী করো এবং (এরপর) নামায কায়েম করো। আর ঈমানদারদেরকে (বিজয় ও সাহায্যের) সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’
وَ قَالَ مُوۡسٰی رَبَّنَاۤ اِنَّکَ اٰتَیۡتَ فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَاَہٗ زِیۡنَۃً وَّ اَمۡوَالًا فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۙ رَبَّنَا لِیُضِلُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِکَ ۚ رَبَّنَا اطۡمِسۡ عَلٰۤی اَمۡوَالِہِمۡ وَ اشۡدُدۡ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُوۡا حَتّٰی یَرَوُا الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿۸۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মূসা আরয করলো, ‘হে আমাদের রব! তুমি ফিরআ’উন ও তার রাজন্যবর্গকে শোভা ও সম্পদ পার্থিব জীবনে দান করেছো। হে আমাদের রব! এ জন্য যে, তারা তোমার পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। হে আমাদের রব! তাদের সম্পদ বিনষ্ট করে দাও এবং তাদের হৃদয় কঠোর করে দাও যেন ঈমান না আনে যতক্ষণ পর্যন্ত বেদনাদায়ক শাস্তি না দেখে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৮. আর মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গকে পার্থিব জীবনে সৌন্দর্যের উপকরণ ও ধন-সম্পদ (-এর প্রাচুর্যতা) দিয়েছো। হে আমাদের প্রতিপালক! (তুমি কি তাদেরকে এসব কিছু এ জন্যে দিয়েছো যে,) যাতে তারা (মানুষকে কখনো লালসা ও কখনো ভীতি দেখিয়ে) তোমার পথ থেকে বিচ্যুত করে? হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তাদের সম্পদ বিনষ্ট করে দাও এবং তাদের অন্তরকে (এমন) কঠিন করে দাও যে, যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত তারা যেন ঈমান আনয়ন করতে না পারে।’
قَالَ قَدۡ اُجِیۡبَتۡ دَّعۡوَتُکُمَا فَاسۡتَقِیۡمَا وَ لَا تَتَّبِعٰٓنِّ سَبِیۡلَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনি বললেন, ‘তোমরা দু’জনের প্রার্থনা ক্ববূল হয়েছে; সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাকো এবং অজ্ঞদের পথে চলো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৯. ইরশাদ হলো, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের উভয়ের দু’আ কবুল করা হলো। সুতরাং তোমরা উভয়ে দৃঢ় থাকো এবং তাদের পথ অনুসরণ করো না যারা জ্ঞান রাখে না।’
وَ جٰوَزۡنَا بِبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡبَحۡرَ فَاَتۡبَعَہُمۡ فِرۡعَوۡنُ وَ جُنُوۡدُہٗ بَغۡیًا وَّ عَدۡوًا ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَدۡرَکَہُ الۡغَرَقُ ۙ قَالَ اٰمَنۡتُ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا الَّذِیۡۤ اٰمَنَتۡ بِہٖ بَنُوۡۤا اِسۡرَآءِیۡلَ وَ اَنَا مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۹۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি বনী ইস্রাঈলকে সমুদ্রের তীরে নিয়ে গিয়েছি। অতঃপর ফির’আউন ও তার সৈন্যবাহিনী তাদের পিছু ধাওয়া করেছে অবাধ্যতা ও যুল্মবশতঃ। শেষ পর্যন্ত যখন তাকে নিমজ্জন পেয়ে বসলো, তখন বললো ‘আমি ঈমান এনেছি (এ মর্মে) যে, কোন সত্য উপাস্য নেই তিনি ব্যতীত, যার উপর বনী ইস্রাঈল ঈমান এনেছে এবং আমি মুসলমান’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯০. আর আমরা বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে দিলাম। অতঃপর ফেরাউন ও তাঁর বাহিনী অবাধ্যতা, যুলুম ও সীমালঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলো। পরিশেষে যখন তাকে (অর্থাৎ ফেরাউনকে) নিমজ্জন গ্রাস করলো, তখন সে বলতে লাগলো, ‘আমি ঈমান আনয়ন করলাম, অন্য কোনো উপাস্য নেই তিনি ব্যতীত যার প্রতি বনী ইসরাঈল ঈমান আনয়ন করেছে এবং আমি (এখন) আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’
آٰلۡـٰٔنَ وَ قَدۡ عَصَیۡتَ قَبۡلُ وَ کُنۡتَ مِنَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۹۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
‘এখন কী? আর পূর্ব থেকে আদেশ অমান্যকারী ছিলে এবং তুমি ফ্যাসাদী ছিলে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯১. (উত্তর দেয়া হলো) ‘এখন (ঈমান আনয়ন করছো?) অথচ তুমি তো পূর্বে (অবিরত) নাফরমানী করছিলে, আর তুমি ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের মধ্যে ছিলে।
فَالۡیَوۡمَ نُنَجِّیۡکَ بِبَدَنِکَ لِتَکُوۡنَ لِمَنۡ خَلۡفَکَ اٰیَۃً ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ النَّاسِ عَنۡ اٰیٰتِنَا لَغٰفِلُوۡنَ ﴿۹۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আজ আমি তোমার লাশ বের করে আনবো যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হও এবং নিশ্চয় মানুষের মধ্যে অনেকে আমার নিদর্শন সম্বন্ধে গাফিল’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯২. (হে ফেরাউন!) সুতরাং আজ আমরা তোমার (প্রাণহীন) দেহ সংরক্ষণ করে রাখবো, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্যে (সতর্কতার) নিদর্শন হতে পারো। আর নিশ্চয়ই অধিকাংশ লোক আমাদের নিদর্শনাবলী (উপলব্ধি করা) থেকে উদাসীন।’
وَ لَقَدۡ بَوَّاۡنَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ مُبَوَّاَ صِدۡقٍ وَّ رَزَقۡنٰہُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ ۚ فَمَا اخۡتَلَفُوۡا حَتّٰی جَآءَہُمُ الۡعِلۡمُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ یَقۡضِیۡ بَیۡنَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فِیۡمَا کَانُوۡا فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۹۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি বনী ইস্রাঈলকে সম্মানের স্থান দিয়েছি আর তাদেরকে পবিত্র জীবিকা দান করেছি; অতঃপর (তারা) বিভেদের মধ্যে পড়েনি কিন্তু জ্ঞান আসার পর; নিঃসন্দেহে আপনার রব ক্বিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবেন যে বিষয়ে তারা ঝগড়া করতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৩. আর প্রকৃতপক্ষে আমরা বনী ইসরাঈলকে বসবাসের জন্যে উৎকৃষ্ট স্থান দান করেছি। আর আমরা তাদেরকে উত্তম রিযিক দান করেছি। অতঃপর তারা কোনো মতবিরোধ করেনি, যতক্ষণ না তাদের নিকট জ্ঞান ও সূক্ষ্মদৃষ্টি এসে পৌঁছল। অবশ্যই আপনার প্রতিপালক তাদের মাঝে কিয়ামতের দিনে সেসব বিষয়ের ফায়সালা করবেন, যাতে তারা মতবিরোধ করতো।
فَاِنۡ کُنۡتَ فِیۡ شَکٍّ مِّمَّاۤ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ فَسۡـَٔلِ الَّذِیۡنَ یَقۡرَءُوۡنَ الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ لَقَدۡ جَآءَکَ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ فَلَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُمۡتَرِیۡنَ ﴿ۙ۹۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে শ্রোতা! যদি তোমার কোন সন্দেহ থাকে তাঁতে, যা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তবে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে দেখো, যারা তোমার পূর্বে কিতাব পাঠকারী রয়েছে; নিশ্চয়, তোমার কাছে তোমার রবের নিকট থেকে সত্য এসেছে। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৪. (হে শ্রবণকারী!) যদি তুমি এ (কিতাবের) ব্যাপারে সামান্যও সন্দেহে পতিত হও, যা আমরা (স্বীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে) তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি; তবে (এর সত্যতার বিষয়ে) তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, যারা তোমার পূর্বে (আল্লাহর) কিতাব পাঠ করেছে। নিশ্চয়ই তোমার নিকট তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য আগমন করেছে। সুতরাং তুমি সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَتَکُوۡنَ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۹۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অবশ্যই তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা আল্লাহর নিদর্শনাদিকে অস্বীকার করেছে, যাতে তুমিও ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৫. আর কখনো ঐ সব লোকদেরও অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করছে, নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে গণ্য হবে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ حَقَّتۡ عَلَیۡہِمۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿ۙ۹۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় ওই সব লোক, যাদের বিরুদ্ধে তোমার রবের বাক্য নিশ্চিতভাবে সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না;
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৬. (হে সম্মানিত হাবীব!) নিশ্চয়ই যাদের উপর আপনার প্রতিপালকের ফরমান সত্যে পরিণত হয়েছে, তারা ঈমান আনয়ন করবে না।
وَ لَوۡ جَآءَتۡہُمۡ کُلُّ اٰیَۃٍ حَتّٰی یَرَوُا الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿۹۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদিও সব নিদর্শন তাদের নিকট আসে, যতক্ষণ পর্যন্ত (তারা) বেদনাদায়ক শাস্তি দেখবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৭. যদিও তাদের নিকট সকল নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
فَلَوۡ لَا کَانَتۡ قَرۡیَۃٌ اٰمَنَتۡ فَنَفَعَہَاۤ اِیۡمَانُہَاۤ اِلَّا قَوۡمَ یُوۡنُسَ ؕ لَمَّاۤ اٰمَنُوۡا کَشَفۡنَا عَنۡہُمۡ عَذَابَ الۡخِزۡیِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ مَتَّعۡنٰہُمۡ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۹۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে এমন কোন জনপদ নেই (যারা আমার আযাব দেখে) ঈমান এনেছে অতঃপর সেই ঈমান তাদের কাজে এসেছে, কিন্তু একমাত্র ইয়ূনুসের সম্প্রদায়। যখন (তারা) ঈমান আনলো, তখন আমি তাদের থেকে লাঞ্ছনার শাস্তি পার্থিব জীবনে অপসারিত করে দিয়েছি এবং একটা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তাদেরকে ভোগ করতে দিয়েছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৮. সুতরাং ইউনুস (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায় (-এর জনপদ) ব্যতীত আরো এমন জনপদ কেন হয়নি, যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং তাদেরকে তাদের ঈমান-আনয়ন উপকৃত করেছে? যখন (ইউনুসের সম্প্রদায়ের লোক শাস্তি অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে কেবল এর চিহ্ন দেখেই) ঈমান আনয়ন করলো, তখন আমরা তাদের থেকে পার্থিব জীবনেই লাঞ্ছিত হওয়ার শাস্তি দূর করে দিলাম। আর আমরা তাদেরকে একটি সময়সীমা পর্যন্ত উপভোগের মাধ্যমে সুপ্রসন্ন রাখলাম।
وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَاٰمَنَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ کُلُّہُمۡ جَمِیۡعًا ؕ اَفَاَنۡتَ تُکۡرِہُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۹۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আপনার রব চাইতেন, তবে পৃথিবীতে যারা রয়েছে সবাই ঈমান নিয়ে আসতো; তবে কি আপনি মানুষকে জবরদস্তী করবেন এ পর্যন্ত যে, তারা মুসলমান হয়ে যাবে?
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৯. আর যদি আপনার প্রতিপালক চাইতেন, তবে অবশ্যই পৃথিবীতে বসতিস্থাপনকারী সমস্ত মানুষ ঈমান আনয়ন করতো। (যখন প্রতিপালক তাদেরকে জোরপূর্বক মুমিন বানাননি) তবে কি আপনি মানুষের উপর জোর করবেন, যতক্ষণ না তারা মুমিন হয়?
وَ مَا کَانَ لِنَفۡسٍ اَنۡ تُؤۡمِنَ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ یَجۡعَلُ الرِّجۡسَ عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন ব্যক্তিরই ঈমান আনার সাধ্য নেই। আর শাস্তি তাদের উপর আপতিত করেন, যাদের বিবেক নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০০.আর কোনো মানুষের (নিজের এ) সাধ্য নেই যে, সে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত ঈমান আনয়ন করে। তিনি (অর্থাৎ আল্লাহ্) কুফরীর অপবিত্রতা সেসব লোকদের উপর ন্যস্ত করেন, যারা (সত্য উপলব্ধি করতে) বুদ্ধি-বিবেকের মাধ্যমে কাজ করে না।
قُلِ انۡظُرُوۡا مَاذَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا تُغۡنِی الۡاٰیٰتُ وَ النُّذُرُ عَنۡ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
(হে হাবীব) আপনি বলুন, ‘দেখো, আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে কী রয়েছে; এবং নিদর্শনসমূহ ও রসূলগণ তাদেরকে কিছুই দেয় না, যাদের অদৃষ্টে ঈমান নেই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০১. বলে দিন, ‘তোমরা দেখো তো (কেবল) আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে (এ প্রশস্ত জগতে) আল্লাহর কুদরতের কী কী নিদর্শন রয়েছে?’ আর (এসব) নিদর্শন এবং (আল্লাহর শাস্তি থেকে) ভীতিপ্রদর্শনকারী (রাসূল) সেসব লোকদের উপকারে আসবেন না, যারা ঈমান আনয়ন করতে চায় না।
فَہَلۡ یَنۡتَظِرُوۡنَ اِلَّا مِثۡلَ اَیَّامِ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ قُلۡ فَانۡتَظِرُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর তাদের কিসের প্রতীক্ষা রয়েছে? কিন্তু ওই সব লোকেরই দিনগুলোর মতো, যারা তাদের পূর্বে চলে গেছে। আপনি বলুন, ‘সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় রয়েছি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০২. সুতরাং তারা কি সেসব লোকদের (অশুভ দিনের) ন্যায় দিনের অপেক্ষা করছে, যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে? বলে দিন, ‘অপেক্ষা করো, আমি(ও) তোমাদের সাথে অপেক্ষমানদের মধ্যে আছি’।
ثُمَّ نُنَجِّیۡ رُسُلَنَا وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کَذٰلِکَ ۚ حَقًّا عَلَیۡنَا نُنۡجِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর আমি আমার রসূলগণ ও ঈমানদারগণকে উদ্ধার করবো। কথা হলো এই- আমার করুণার দায়িত্বের উপর অধিকার রয়েছে মুসলমানদের উদ্ধার করা।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৩. পরিশেষে আমরা উদ্ধার করি আমাদের রাসূলগণকে এবং সেসব লোকদেরকেও যারা একইভাবে ঈমান আনয়ন করে। (এ বিষয়টি) আমাদের মহান যিম্মায় রয়েছে যে, আমরা ঈমানদারগণকে উদ্ধার করি।
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ شَکٍّ مِّنۡ دِیۡنِیۡ فَلَاۤ اَعۡبُدُ الَّذِیۡنَ تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لٰکِنۡ اَعۡبُدُ اللّٰہَ الَّذِیۡ یَتَوَفّٰىکُمۡ ۚۖ وَ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘হে মানবকুল, যদি তোমরা আমার দ্বীনের নিকট দিয়ে কোন সংশয়ের মধ্যে থাকো, তবে আমি তো ওইগুলোর ইবাদত করবো না, আল্লাহ্ ব্যতীত যেগুলোর তোমরা পূজা করছো। হ্যাঁ (আমি) ওই আল্লাহর ইবাদত করি, যিনি তোমাদের প্রাণ বের করবেন; আর আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৪. বলে দিন, ‘হে লোকসকল! যদি তোমরা আমার দ্বীনের (সত্যতার) ব্যাপারে সামান্যতমও সন্দেহে পতিত হও, তবে (শুনো!) আমি তাদের (অর্থাৎ মূর্তির) উপাসনা করতে পারি না, তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের উপাসনা করো; বরং আমি তো সে আল্লাহর ইবাদত করি, যিনি তোমাদেরকে মৃত্যুর আলিঙ্গনাবদ্ধ করেন। আর আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আমি যেন (সর্বদা) ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত থাকি।
وَ اَنۡ اَقِمۡ وَجۡہَکَ لِلدِّیۡنِ حَنِیۡفًا ۚ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۰۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এও যে, ‘আপন চেহারা দ্বীনের জন্য সোজা রাখো অন্যসব থেকে পৃথক হয়ে এবং কখনো মুশরিকদের অন্তুর্ভুক্ত হয়ো না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৫. আর এ যে, আপনি সকল মিথ্যা থেকে বেঁচে (একনিষ্ঠভাবে) স্বীয় লক্ষ্য দ্বীনের উপর নিবিষ্ট রাখুন এবং কখনো অংশীদার সাব্যস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।’
وَ لَا تَدۡعُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَنۡفَعُکَ وَ لَا یَضُرُّکَ ۚ فَاِنۡ فَعَلۡتَ فَاِنَّکَ اِذًا مِّنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۰۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহ্ ব্যতীত সেটার বন্দেগী করো না, যা না তোমার উপকার করতে পারে, না অপকার; অতঃপর, যদি এমন করো তখন তুমি যালিমদের অন্তুর্ভুক্ত হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৬. (এ নির্দেশ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে উম্মতকে দেয়া হচ্ছে।) ‘আর আল্লাহ্ ব্যতীত সেসবের (অর্থাৎ মূর্তির) উপাসনা করো না, যা তোমার না উপকার করতে পারে, আর না তোমার ক্ষতি করতে পারে। অতঃপর যদি তুমি এমনটি করো, তবে নিশ্চয়ই তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ اللّٰہُ بِضُرٍّ فَلَا کَاشِفَ لَہٗۤ اِلَّا ہُوَ ۚ وَ اِنۡ یُّرِدۡکَ بِخَیۡرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضۡلِہٖ ؕ یُصِیۡبُ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۰۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
‘এবং আল্লাহ্ যদি তোমাকে কোন দুঃখ-কষ্ট দেন, তবে তিনি ব্যতীত সেটা মোচনকারী কেউ নেই। আর যদি তোমার মঙ্গল চান, তবে তার অনুগ্রহকে প্রতিহত করার কেউ নেই। তাকেই প্রদান করেন আপন বান্দাদের মধ্যে যাকে চান। এবং তিনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৭. আর যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে কোনো কষ্টে পতিত করেন, তবে তিনি ব্যতীত কেউ একে দূর করার নেই। আর যদি তিনি তোমাদের কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তবে কেউ তাঁর অনুগ্রহকে প্রতিহত করার নেই। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান নিজ অনুগ্রহ প্রদান করেন, আর তিনি মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَکُمُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۚ فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیۡہَا ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿۱۰۸﴾ؕ
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘হে লোকেরা! তোমাদের নিকট তোমাদের রবের নিকট থেকে সত্য এসেছে। সুতরাং যে সরল পথে এসেছে সে স্বীয় মঙ্গলের জন্যই সৎপথে এসেছে; আর যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে নিজের অমঙ্গলের জন্যই পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং আমি তোমাদের কর্মবিধায়ক নই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৮. বলে দিন, ‘হে লোকসকল! নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য আগমন করেছে। সুতরাং যে হেদায়াত বেছে নেয়, তবে সে নিজেরই কল্যাণের নিমিত্তে হেদায়াত বেছে নেয়। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তবে সে নিজেরই ধ্বংসের নিমিত্তে পথভ্রষ্ট হয়। আর আমি তোমাদের কর্মবিধায়ক নই (যে, তোমাদেরকে কঠোরতার মাধ্যমে সত্যের পথে নিয়ে আসবো)।’
وَ اتَّبِعۡ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ وَ اصۡبِرۡ حَتّٰی یَحۡکُمَ اللّٰہُ ۚۖ وَ ہُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সেটার উপরই চলুন যা আপনার প্রতি ওহী হয় এবং ধৈর্যধারণ করুন, যতক্ষণ না আল্লাহ্ নির্দেশ দেবেন আর তিনি সর্বাপেক্ষা উত্তম নির্দেশদাতা।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৯. (হে রাসূল) আপনি এরই অনুসরণ করুন, যা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয় এবং ধৈর্যধারণ করুন যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্ ফায়সালা করেন। আর তিনিই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী।