❏ ইস্তেস্কার সালাত ছাড়া অন্যান্য দোয়ায় হাত তোলা
নামাজের পরের দোয়া ছাড়া অন্যান্য দোয়ায় হাত তোলার বিধান রয়েছে। এমনকি ইস্তেস্কার দোয়া ছাড়াও অন্যান্য দোয়ার সময় হাত তোলে দোয়া করার অনেক হাদিস রয়েছে। যেমন সহীহ্ হাদিসে আছে, ইমাম বুখারী ও মুসলীম, ইমাম ইবনু হিব্বান, ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) প্রমূখ বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا أَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ
-“হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল (ﷺ) দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করতেন।”
(সহীহ্ মুসলীম হাদিস নং ২১১১; সহীহ্ বুখারী, হাদিস নং ১০৩০; সহীহ্ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৮৭৭; মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৩৭২৬ ও ১৩১৮৭; ইমাম বায়হাক্বী: দাওয়াতুল কবীর, হাদিস নং ৩০৮; মুসনাদে আবী ইয়াল, হাদিস নং ৩৫০২; ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাসি নং ৬৪৪৬; মেসকাত শরীফ, ১৯৬ পৃঃ; ইমাম নাসাঈ: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ১৪৪১; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫ম খন্ড, ১৩২ পৃঃ; ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ১৫৬ পৃঃ;)
এ বিষয়ে আরেক হাদিসে আছে,
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ حَمَّادٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْأَحْوَصِ الْأَزْدِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو هِلَالٍ، صَاحِبُ هَذِهِ الدَّارِ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَفَعَ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ
-“হযরত আবী বারজা আসলামী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) দোয়ার সময় দুই হাঁত উচু করতেন।”(ইমাম হায়ছামী: মজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৭৩৩৬; মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদিস নং ৭৪৪০;)
এ সম্পর্র্কে অপর রেওয়ায়েতে আছে, ইমাম আবু ইয়ালা (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا الْمُعْتَمِرُ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنِي بَرَكَةُ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ
-“হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) দোয়ার সময় হাঁত উচু করে দোয়া করতেন।”
(ইমাম নাসাঈ: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ১৮৩৪; ইমাম হায়ছামী: মজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৭৩৩৭; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৪৫৭; মুসনাদে ইসহাক্ব ইবনে রাহবিয়া হাদিস নং ৯৮ মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ৮৮৩০;)
সুতরাং আল্লাহর নবী (ﷺ) দোয়া করলে হাঁত উঠিয়েই দোয়া করতেন। অতএব, দোয়ার সময় হাত তোলা রাসূল (ﷺ)’র সুন্নাত। উভয় হাদিসের আলোকে বলা যায়, ফরজ নামাজের পরের দোয়া নিশ্চয় নবী করিম (ﷺ) হাঁত উঠিয়ে করতেন। এমনকি তিনি উম্মতকে হাত উঠিয়ে দোয়া করতে শিক্ষা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অপর হাদিসে উল্লেখ আছে, ইমাম নাসাঈ, ইমাম বাজ্জার, ইমাম ইসহাক্ব (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ الْبَهْرَانِيُّ، قَالَ: قَرَأْتُهُ فِي أَصْلِ إِسْمَاعِيلَ يَعْنِي ابْنَ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنِي ضَمْضَمٌ، عَنْ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنَا أَبُو ظَبْيَةَ، أَنَّ أَبَا بَحْرِيَّةَ السَّكُونِيَّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ يَسَارٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ،
-“হযরত মালেক ইবনে ইয়াছার (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যখন তোমরা আল্লাহর নিকট কিছু চাও তাহলে তোমাদের দুই হাঁতের পেট দ্বারা প্রার্থনা কর।”
(সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং ১৪৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৪৮ পৃঃ; মেসকাত শরীফ, ১৯৫ পৃঃ হাদিস নং ২২৪২; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫ম খন্ড, ১২৬ পৃঃ; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৩৮ পৃঃ; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, ২য় খন্ড, ৩৮ পৃঃ;)
নাছিরুদ্দিন আলবানী বলেন, قلت: وهذا إسناد جيد، -“আমি বলি এর সনদ অতি-উত্তম।” (আলবানী: সিলসিলায়ে ছহিহা, হাদিস নং ৫৯৫;)
অতএব, দোয়া করার সুন্নাত হল, দুই হাত উচু করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। এই নিয়ম শিক্ষা দিয়েছেন স্বয়ং দ্বীনের নবী রাসূলে পাক (ﷺ)। তাই প্রিয় নবীজি (ﷺ)’র শিক্ষা বাদ দিয়ে ওহাবীদের পথে চলা চরম পথভ্রষ্টতা বৈ কিছুই নয়?
এ বিষয়ে আরেক হাদিসে আছে, ইমাম হাকেম, ইমাম আব্দ ইবনু হুমাইদ (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي نَصْرٍ الْمَرْوَزِيُّ، ثنا أَبُو الْمُوَجِّهِ، ثنا سَعِيدُ بْنُ هُبَيْرَةَ، ثنا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ حَساْن، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ الْقُرَظِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ،
-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: যখন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে তখন দুই হাতের তালু দ্বারা প্রার্থনা করবে।” (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ১৯৬৮; মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ, হাদিস নং ৭১৫;)
এ বিষয়ে আরেক রেওয়ায়েতে আছে, ইমাম ইবনু আবী শায়বাহ (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي مُحَيْرِيزٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ،
-“হযরত আবী মুহারিজ (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যখন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে তখন দুই হাতের তালু দ্বারা প্রার্থনা করবে।”(মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নং ২৯৪০৫;)
এ সম্পর্কে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়, ইমাম নূরুদ্দিন হায়ছামী (رحمة الله عليه) উল্লেখ করেছেন,
وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: سَلُوا اللَّهَ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ
-“হযরত আবু বাকরা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: তোমরা হাতের তালু দ্বারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর।” (তাবারানী; মজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৭৩৪৬;)
এই হাদিস উল্লেখ করে ইমাম হায়ছামী (رحمة الله عليه) বলেন,
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ غَيْرَ عَمَّارِ بْنِ خَالِدٍ الْوَاسِطِيِّ، وَهُوَ ثِقَةٌ. -
“ইমাম তাবারানী (رحمة الله عليه) ইহা বর্ণনা করেছেন, এর সকল বর্ণনাকারীগণ বিশুদ্ধ তবে ‘আম্মার ইবনে খালেদ ওয়াছেতী’ ব্যতীত আর তিনি বিশ্বস্ত।”
এই হাদিস গুলো দ্বারা প্রমাণিত হয়, দোয়া করতে হলে দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করতে হবে, আর এই নিয়ম শিক্ষা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহর হাবীব (ﷺ)। ফরজ নামাজের পরে দোয়া সেটাওত দোয়া, এ কারণে আল্লাহর নবী (ﷺ)’র শিক্ষা অনুযায়ী ঐ দোয়া দুই হাঁত উঠিয়েই দোয়া করতে হবে। কারণ প্রিয় নবীজি (ﷺ) বলেছেন: فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ، (ফাছ্আলো বিবুতুনী আকুফ্ফিকুম) অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে চাইতে হলে তোমাদের হাঁতের পেট দ্বারা প্রার্থনা কর।
এ সম্পর্কে আরেকটি রেওয়ায়েত রয়েছে, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله عليه) উল্লেখ করেছেন,
حديث عبد الله بن عمرو إن النبي صلى الله عليه وسلم ذكر قول إبراهيم وعيسى فرفع يديه وقال اللهم أمتي
-“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) বলেন, নিশ্চয় যখন রাসূল (ﷺ) হযরত ইব্রাহিম ও ঈসা (عَلَيْهَا السَّلَامُ) এর কথা বললেন, অত:পর দুই হাঁত উঠিয়ে বললেন: হে আল্লাহ আমার উম্মত।”(ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ১৫৫ পৃঃ;)
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত রয়েছে, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ও ইমাম নূরুদ্দিন হায়ছামী (رحمة الله عليه) উল্লেখ করেছেন,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ يَدْعُو،
-“হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন: আমি আল্লাহর রাসুল (ﷺ) কে দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করতে দেখেছি।”(মুসনাদে আহমদ, ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ১৫৫ পৃঃ; ইমাম হায়ছামী: মজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৭৩৩৫; সহীহ্ হাদিস।)
এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম হায়ছামী (رحمة الله عليه) বলেন,
رَوَاهُ أَحْمَدُ بِثَلَاثَةِ أَسَانِيدَ، وَرِجَالُهَا كُلُّهَا رِجَالُ الصَّحِيحِ. -
“ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) ৩টি সনদে বর্ণনা করেছেন, প্রত্যেকটির বর্ণনাকারীগণ বিশুদ্ধ।”
এ সম্পর্কে আরেকটি হাদিস আছে, ইমাম তাবারানী ও ইমাম বায়হাক্বী (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ قَالَ: نا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ أَنَا عَبْدُ الْمَجِيدِ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُو بِعَرَفَةَ وَيَدَاهُ إِلَى صَدْرِهِ، كَاسْتِطْعَامِ الْمِسْكِينِ
-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে আরাফার ময়দানে হাঁত তুলে দোয়া করতে দেখেছি, আর তখন তাঁর হাঁত মোবারক বুকের কাছে ছিল খাবার চাওয়ার মিছকীনের মত।”
(ইমাম তাবারানী: মু’জামুল আওছাত, হাদিস নং ২৮৯২; ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ৯৪৭৪; ইমাম হায়ছামী: মজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৭৩৩৪;)
এ সম্পর্কে আরেক হাদিসে উল্লেখ আছে, ইমাম বাজ্জার, ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ أَبُو طَالِبٍ الطَّائِيُّ، قالَ: حَدَّثَنا عبد الله بن داود، قالَ: حَدَّثَنا إسماعيل بن عبد الملك عن ابن أبي مليكة عن عائشة رضي الله عنها قالت:.. رأيت النبي صلى الله عليه وسلم رَافِعًا يَدَيْهِ يَدْعُو لِعُثْمَانَ
-“হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন,.. রাসূলে পাক (ﷺ) কে দেখলাম দুই হাঁত উঠিয়ে উছমান (رضي الله عنه)’র জন্য দোয়া করছেন।”
(মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ২২৯; ইমাম আহমদ: ফাদ্বাইলে ছাহাবা, ১ম খন্ড, ২৩৪ পৃঃ ২৮৭ নং হাদিসের শেষে; ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ১৫৫ পৃঃ;)
যেমন আরেক রেওয়ায়েতে আছে, ইমাম বায়হাক্বী, ইমাম হাকেম ও ইমাম ইবনু আবী শায়বাহ (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْحَافِظُ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ الْفَقِيهُ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مُعَاوِيَةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذُبَابٍ، عَن سهل بن سَعْدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كَانَ يَجْعَل أصبعيه حذاء مَنْكِبَيْه وَيَدْعُو
-“হযরত সাহল ইবনে সাদ (رضي الله عنه) বলেন: নবী করিম (ﷺ) আপর অঙ্গুলী কাঁধ বরাবর তোলে দোয়া করতেন।”
(ইমাম বায়হাক্বী: দাওয়াতুল কবীর, হাদিস নং ৩১১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ১৯৬৪; মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নং ৮৪৪৫; মেসকাত শরীফ, ১৯৫ পৃঃ হাদিস নং ২২৫৪; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫ম খন্ড, ১৩২ পৃঃ;)
এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম হাকেম নিছাপুরী (رحمة الله عليه) বলেন,
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ، -“এই হাদিসের সনদ সহীহ্।”
দোয়া করা নিয়ম প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম বায়হাক্বী ও ইমাম বগভী (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ يَعْنِي ابْنَ خَالِدٍ، حَدَّثَنِي الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدِ بْنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: الْمَسْأَلَةُ أَنْ تَرْفَعَ يَدَيْكَ حَذْوَ مَنْكِبَيْكَ أَوْ نَحْوِهِمَا
-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর নিকট কিছু চাওয়ার নিয়ম হল তুমি তোমার দুই হাঁত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে অথবা অনুরূপ।”
(মেসকাত শরীফ, ১৯৬ পৃঃ হাদিস নং ২২৫৬; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫ম খন্ড, ১৩২ পৃঃ; সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং ১৪৮৯; ইমাম বায়হাক্বী: দাওয়াতুল কবীর, হাদিস নং ৩১৩; ইমাম বাগভী: শরহে সুন্নাহ, ৪র্থ খন্ড, ৪০৮ পৃঃ;)
এ বিষয়ে আরেক হাদিসে আছে, ইমাম ইবনু হিব্বান, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম বায়হাক্বী, ইমাম তিরমিজি (رحمة الله عليه) প্রমূখ বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ الْفَضْلِ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا عِيسَى يَعْنِي ابْنَ يُونُسَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرٌ يَعْنِي ابْنَ مَيْمُونٍ، صَاحِبَ الْأَنْمَاطِ، حَدَّثَنِي أَبُو عُثْمَانَ، عَن سَلْمَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ رَبَّكُمْ حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا
-“হযরত ছালমান (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের প্রভূ লজ্জাশীল ও দাতা; তাঁর কোন বান্দা তাঁর কাছে দুই হাঁত উঠালে তা খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।”
(সহীহ্ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৮৭৬; ইমাম বায়হাক্বী তাঁর দাওয়াতুল কবীরে; মেসকাত শরীফ, ১৯৫ পৃঃ; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫ম খন্ড, ১২৭ পৃঃ; সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং ১৪৮৮; তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৫৫৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৫ পৃঃ হাদিস নং ৩৮৬৫; ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ১৫৬ পৃঃ; ইমাম বায়হাক্বী: আসমাউস ছিফাত, হাদিস নং ১৫৫; সনদ বিশুদ্ধ।)
যেমন আরেক হাদিসে আছে, ইমাম তাবারানী (র:) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا عُبَيْدٌ الْعِجْلُ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرَوَيْهِ الْهَرَوِيُّ، ثنا الْجَارُودُ بْنُ يَزِيدَ، ثنا عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ رَبَّكُمْ حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي أَنْ يَرْفَعَ الْعَبْدُ يَدَيْهِ فَيَرُدُّهُمَا صِفَرًا
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের প্রভূ লজ্জাশীল ও দাতা; তাঁর কোন বান্দা তাঁর কাছে দুই হাঁত উঠালে তা খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।”(ইমাম তাবারানী: মু’জামুল কবীর, হাদিস নং ১৩৫৫৭;)
হাদিসটি হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকেও তদীয় ‘মুজামুল আওছাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত রয়েছে, ইমাম মা’মার, ইমাম বগভী ও ইমাম আবু নুয়াইম (رحمة الله عليه) বর্ণনা করেছেন,
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَبَانَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ رَبَّكُمْ حَيِيٌّ كَرِيمٌ، يَسْتَحْيِي إِذَا رَفَعَ الْعَبْدُ إِلَيْهِ يَدَهُ أَنْ يَرُدَّهَا صِفْرًا حَتَّى يَجْعَلَ فِيهَا خَيْرًا
-“হযরত আনাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের প্রভূ লজ্জাশীল ও দাতা; তাঁর কোন বান্দা তাঁর কাছে দুই হাঁত উঠালে তা খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। এমনকি এতে তাঁর কল্যাণ নির্ধারিত হয়।”
(জামেউ মা’মার ইবনে রাশিদ, হাদিস নং ১৯৬৪৮; ইমাম আবু নুয়াইম: হিলিয়াতুল আউলিয়া, ৮ম খন্ড, ১৩১ পৃঃ; ইমাম বাগভী: শরহে সুন্নাহ, হাদিস নং ১৩৮৬;)
সুতরাং রাসূলে পাক (ﷺ)’র হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয়, দোয়ার সময় হাঁত উঠানো স্বয়ং রাসূলে পাক (ﷺ)’র সুন্নাত বরং আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় এবং দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই দোয়া কবুলিয়াতের জন্য দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করা উচিৎ নয় কি? সুতরাং দোয়ার সময় দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করা মুস্তাহাব-সুন্নাত। তাই ফরজ নামাজের পরে দোয়া করা সুন্নাত এবং ঐ দোয়ার সময় দুই হাঁত উঠানো আরেকটি সুন্নাত ও সওয়াবের কাজ। তাই ফরজ নামাজের পর দোয়া একটি সুন্নাত এবং দুই হাঁত উঠিয়ে দোয়া করা আরেকটি সুন্নাত।