بَرَآءَۃٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖۤ اِلَی الَّذِیۡنَ عٰہَدۡتُّمۡ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ؕ﴿۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
(এটা) সম্পর্কচ্ছেদের হুকুম শুনানো আল্লাহ্ ও তার রসূলের পক্ষ থেকে ওই সব মুশরিককে, যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি ছিলো এবং তারা সেটার উপর অটল থাকে নি।
📕ইরফানুল কুরআন:
১. আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর পক্ষ থেকে সম্পর্কচ্ছেদ (ও অব্যাহতি) ঘোষণা করা হলো ঐসব মুশরিকদের উদ্দেশ্যে, যাদের সাথে তোমরা সন্ধিতে (ও নিরাপত্তা চুক্তিতে) আবদ্ধ ছিলে। (আর তারা স্বীয় অঙ্গীকারের উপর অটল থাকেনি।)
فَسِیۡحُوۡا فِی الۡاَرۡضِ اَرۡبَعَۃَ اَشۡہُرٍ وَّ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی اللّٰہِ ۙ وَ اَنَّ اللّٰہَ مُخۡزِی الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর (তোমরা) চারমাস যমীনে চলাফেরা করো এবং জেনে রাখো যে, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করতে পারবে না এবং এটাও যে, আল্লাহ্ কাফিরদেরকে লাঞ্ছিতকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
২. অতঃপর (হে মুশরিকেরা!) তোমরা স্বদেশে চারমাস (পর্যন্ত) ঘুরাফেরা করো (এ অবকাশ শেষ হওয়ার পর তোমাদেরকে যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে)। আর জেনে রেখো, তোমরা আল্লাহকে কখনোই দুর্বল করতে পারবে না। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কাফেরদেরকে অপদস্তকারী।
وَ اَذَانٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖۤ اِلَی النَّاسِ یَوۡمَ الۡحَجِّ الۡاَکۡبَرِ اَنَّ اللّٰہَ بَرِیۡٓءٌ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ۬ۙ وَ رَسُوۡلُہٗ ؕ فَاِنۡ تُبۡتُمۡ فَہُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ ۚ وَ اِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ فَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی اللّٰہِ ؕ وَ بَشِّرِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ ۙ﴿۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ঘোষণা দেওয়া আল্লাহ্ ও তার রসূলের পক্ষ থেকে সমস্ত মানুষের প্রতি মহান হজ্জের দিনে এ মর্মে যে, আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট মুশরিকদের উপর এবং তার রসূলও; সুতরাং যদি তোমরা তাওবা করো, তবে তোমাদের কল্যাণ আর যদি মুখ ফেরাও, তবে জেনে রেখো যে, তোমরা আল্লাহ্কে ঠেকাতে পারবে না এবং কাফিরদেরকে সুসংবাদ শুনাও বেদনাদায়ক শাস্তির;
📕ইরফানুল কুরআন:
৩. (এ আয়াতগুলো) আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর পক্ষ হতে সমস্ত মানুষের প্রতি মহান হজ্জের দিবসে (সাধারণ) ঘোষণা যে, আল্লাহ্ মুশরিকদের থেকে বিমুখ। আর তাঁর রাসূলও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম তাদের থেকে দায়িত্বমুক্ত)। অতঃপর (হে মুশরিকেরা!) যদি তোমরা তওবা করো তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রেখো, তোমরা কখনো আল্লাহর কৌশলকে অকার্যকর করতে পারবে না। আর (হে হাবীব!) আপনি কাফেরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির খবর শুনিয়ে দিন;
اِلَّا الَّذِیۡنَ عٰہَدۡتُّمۡ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ثُمَّ لَمۡ یَنۡقُصُوۡکُمۡ شَیۡئًا وَّ لَمۡ یُظَاہِرُوۡا عَلَیۡکُمۡ اَحَدًا فَاَتِمُّوۡۤا اِلَیۡہِمۡ عَہۡدَہُمۡ اِلٰی مُدَّتِہِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
কিন্তু যেসব মুশরিকের সাথে তোমাদের চুক্তি ছিলো, অতঃপর তারা তোমাদের চুক্তির কোন রূপ ত্রুটি করে নি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকেও সাহায্য করেনি; সুতরাং তাদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পালন করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ খোদাভীরুদেরকে ভালবাসেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪. ওই মুশরিকরা ব্যতীত, যাদের সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে, পরে তারা তোমাদের সাথে (স্বীয় অঙ্গীকার পূর্ণ করার ক্ষেত্রে) কোনো ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য (অথবা পৃষ্ঠপোষকতা)ও করেনি। সুতরাং তোমরা তাদের সাথে করা সন্ধি তাদের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পূর্ণ করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরহেযগারদের পছন্দ করেন।
فَاِذَا انۡسَلَخَ الۡاَشۡہُرُ الۡحُرُمُ فَاقۡتُلُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَیۡثُ وَجَدۡتُّمُوۡہُمۡ وَ خُذُوۡہُمۡ وَ احۡصُرُوۡہُمۡ وَ اقۡعُدُوۡا لَہُمۡ کُلَّ مَرۡصَدٍ ۚ فَاِنۡ تَابُوۡا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ فَخَلُّوۡا سَبِیۡلَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন সম্মানিত মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে তখন মুশরিকদেরকে হত্যা করো যেখানে পাও এবং তাদেরকে পাকড়াও করো ও বন্দী করো আর প্রতিটি স্থানে তাদের জন্য ওঁত পেতে বসো; অতঃপর যদি তারা তাওবা করে এবং নামায ক্বায়েম রাখে ও যাকাত দেয়, তবে তাদেরকে তাদের পথে ছেড়ে দাও; নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫. অতঃপর যখন নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হয়, তখন (শান্তি চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে) তোমরা যেখানেই মুশরিকদেরকে পাও তাদেরকে হত্যা করো, আর তাদেরকে অবরোধ করো, তাদেরকে বন্দী করো, এবং তাদেরকে (গ্রেফতার ও ঘেরাও করার জন্যে) সকল ঘাঁটিতে তাদের অপেক্ষায় বসে থাকো। অতঃপর যদি তারা (বন্দী হবার পর) তওবা করে, নামায কায়েম করে এবং যাকাত আদায় করতে শুরু করে, তবে (তাদেরকে বন্দীত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে) তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
وَ اِنۡ اَحَدٌ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ اسۡتَجَارَکَ فَاَجِرۡہُ حَتّٰی یَسۡمَعَ کَلٰمَ اللّٰہِ ثُمَّ اَبۡلِغۡہُ مَاۡمَنَہٗ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে মাহবূব! যদি কোন মুশরিক আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দিন, যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছিয়ে দিন; এটা এ জন্য যে, তারা অজ্ঞ লো্ক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬. আর যদি মুশরিকদের মধ্যে কেউ আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দিন, যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায়; অতঃপর আপনি তাকে তার নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিন। তা এ জন্যে যে, তারা (সত্যের ব্যাপারে) অজ্ঞ।
کَیۡفَ یَکُوۡنُ لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ عَہۡدٌ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ عِنۡدَ رَسُوۡلِہٖۤ اِلَّا الَّذِیۡنَ عٰہَدۡتُّمۡ عِنۡدَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ۚ فَمَا اسۡتَقَامُوۡا لَکُمۡ فَاسۡتَقِیۡمُوۡا لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
মুশরিকদের জন্য আল্লাহ্ ও তার রসূলের নিকট কোন অঙ্গীকার কি করে বলবৎ থাকবে? কিন্তু ওই সব লোক, যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি মসজিদে হারামের নিকট হয়েছে; সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের জন্য চুক্তিতে স্থির থাকবে তোমরাও তাদের জন্য স্থির থাকো। নিঃসন্দেহে, পরহেয্গারদেরকে আল্লাহ্ ভালবাসেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭. (সাবধান) মুশরিকদের জন্যে আল্লাহর নিকট এবং তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর নিকট কিভাবে অঙ্গীকার থাকতে পারে, সেসব লোকজন ব্যতীত যাদের সাথে তোমরা মসজিদে হারামের নিকট (হুদাইবিয়্যায়) অঙ্গীকার করেছিলে? সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের সাথে (অঙ্গীকারের উপর) অটল থাকে, তোমরাও তাদের সাথে অটল থাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরহেযগারদেরকে পছন্দ করেন।
کَیۡفَ وَ اِنۡ یَّظۡہَرُوۡا عَلَیۡکُمۡ لَا یَرۡقُبُوۡا فِیۡکُمۡ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّۃً ؕ یُرۡضُوۡنَکُمۡ بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَ تَاۡبٰی قُلُوۡبُہُمۡ ۚ وَ اَکۡثَرُہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ۚ﴿۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
হ্যাঁ, কীভাবে? তাদের অবস্থা তো এ ‘যে, তারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তবে তারা না আত্নীয়তার প্রতি লক্ষ্য রাখবে, না চুক্তির প্রতি; নিজেদের মুখের কথা দিয়ে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে এবং তাদের হৃদয়ের মধ্যে অস্বীকার রয়েছে। আর তাদের অধিকাংশই নির্দেশ অমান্যকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮. (সাবধান, তাদের সাথে অঙ্গীকার রক্ষার প্রত্যাশা) কিভাবে হতে পারে, তাদের অবস্থা তো এমন যে, যদি তারা তোমাদের উপর আধিপত্য লাভ করে, তবে তারা না তোমাদের সাথে আত্মীয়তার কোনো মর্যাদা দেবে আর না কোনো অঙ্গীকারের। তারা তোমাদেরকে স্বীয় মুখে সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের অন্তর (এ বিষয়টি) অস্বীকার করে। আর তাদের অধিকাংশ অঙ্গীকার ভঙ্গকারী।
اِشۡتَرَوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا فَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ سَآءَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা আল্লাহর আয়াতগুলোর বিনিময়ে তুচ্ছমূল্য ক্রয় করে নিয়েছে; অতঃপর তার পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। নিশ্চয় তার খুবই মন্দকাজ করছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯. তারা আল্লাহর আয়াতের বিনিময়ে (পার্থিব উপকারের) সামান্য মূল্য অর্জন করেছে, অতঃপর তারা (দ্বীনের) পথ থেকে (মানুষকে) প্রতিহত করতে শুরু করেছে। নিশ্চয়ই এ খুবই মন্দ কাজ, যা তারা করছে।
لَا یَرۡقُبُوۡنَ فِیۡ مُؤۡمِنٍ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّۃً ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُعۡتَدُوۡنَ ﴿۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কোন মুসলমানের ক্ষেত্রে না আত্নীয়তার মর্যাদা রক্ষা করে, না অঙ্গীকারের এবং তারাই সীমালংঘনকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০. না তারা কোনো মুসলমানের সাথে আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করে, আর না অঙ্গীকারের। আর তারাই (অবাধ্যতায়) সীমালঙ্ঘনকারী।
فَاِنۡ تَابُوۡا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ ؕ وَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যদি তারা তাওবা করে, নামায কায়েম রাখে এবং যাকাত প্রদান করে, তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই; এবং আমি নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি জ্ঞানীদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১. এরপর(ও) যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত দিতে শুরু করে, তবে (তারা) দ্বীনের দিক থেকে তোমাদের ভাই (সুতরাং তোমাদের মাঝে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের নিমিত্তে একে অপরের সাথে পৃথক শান্তিচুক্তির প্রয়োজন নেই)। আর আমরা (আমাদের) নিদর্শনসমূহ সে সকল লোকদের জন্যে বিস্তারিত বর্ণনা করি, যারা জ্ঞান ও বুদ্ধি রাখে।
وَ اِنۡ نَّکَثُوۡۤا اَیۡمَانَہُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ عَہۡدِہِمۡ وَ طَعَنُوۡا فِیۡ دِیۡنِکُمۡ فَقَاتِلُوۡۤا اَئِمَّۃَ الۡکُفۡرِ ۙ اِنَّہُمۡ لَاۤ اَیۡمَانَ لَہُمۡ لَعَلَّہُمۡ یَنۡتَہُوۡنَ ﴿۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আর যদি চুক্তি করে নিজেদের শপথসমূহ ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে বিদ্রূপ করে, তবে কুফরের নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো ! নিশ্চয়, তাদের শপথসমূহ কিছুই নয়; এ আশায় যে, হয়তো তারা ফিরে আসবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২. আর যদি তারা (তোমাদের সাথে করা) স্বীয় চুক্তি ভঙ্গ করে এবং (শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গণহত্যা এবং হিংস্রতার মাধ্যমে যুদ্ধাবস্থা বহাল রাখা এবং সত্যিকারের নিরাপত্তায় মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করা সহ প্রকাশ্যভাবে) তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে তিরস্কার করে, তবে তোমরা (এ অবস্থায় বিপর্যয়, ফ্যাসাদ এবং সন্ত্রাসবাদের সম্ভাবনা দূর করতে) যুদ্ধবাজ সর্দারদের সাথে (অগ্রীম প্রতিরক্ষামূলক) যুদ্ধ করো। নিশ্চয়ই তাদের প্রতিশ্রুতির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, (এরূপ প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ এ জন্যে নাও) যাতে তারা (নিজেদের ফিতনাবাজী থেকে) বিরত হয়।
اَلَا تُقَاتِلُوۡنَ قَوۡمًا نَّکَثُوۡۤا اَیۡمَانَہُمۡ وَ ہَمُّوۡا بِاِخۡرَاجِ الرَّسُوۡلِ وَ ہُمۡ بَدَءُوۡکُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ ؕ اَتَخۡشَوۡنَہُمۡ ۚ فَاللّٰہُ اَحَقُّ اَنۡ تَخۡشَوۡہُ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমরা কি ওই সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের শপথসমূহ ভঙ্গ করেছে এবং রসূলের নির্বাসনের জন্য সংকল্প করেছে? অথচ তাদেরই পক্ষ থেকে সূচনা হয়েছে। তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছো? সুতরাং আল্লাহ্ এ কথারই অধিক উপযোগী যে, তাকে ভয় করবে যদি ঈমান রেখে থাকো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৩. তোমরা কি সেসব (বিশ্বাসঘাতক) সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের করা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে আর রাসূল (ﷺ)-কে দেশান্তর করার ইচ্ছা করেছে এবং তারাই তোমাদের সাথে প্রথমে (অঙ্গীকার ভঙ্গ ও যুদ্ধের) সূচনা করেছে? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছো? অথচ আল্লাহ্ অধিকতর হক্বদার যে, তোমরা তাকে ভয় করো, যদি তোমরা (প্রকৃত) মুমিন হও।
قَاتِلُوۡہُمۡ یُعَذِّبۡہُمُ اللّٰہُ بِاَیۡدِیۡکُمۡ وَ یُخۡزِہِمۡ وَ یَنۡصُرۡکُمۡ عَلَیۡہِمۡ وَ یَشۡفِ صُدُوۡرَ قَوۡمٍ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿ۙ۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
কাজেই, তাদের সাথে যুদ্ধ করো। আল্লাহ্ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তাদেরকে লাঞ্ছিত করেবেন, আর তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য দেবেন এবং ঈমানদারদের মনকে প্রশান্ত করবেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৪. তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো (যারা হুদায়বিয়ার শান্তিচুক্তি ভঙ্গের মাধ্যমে যুদ্ধাবস্থা চালু করেছে), আল্লাহ্ তোমাদের হাতে (জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে) তাদেরকে শাস্তি দিবেন, আর তাদেরকে অপমানিত করবেন। আর তাদের বিপক্ষে (যুদ্ধে) তোমাদেরকে সাহায্য করবেন। আর আরোগ্য দান করবেন ঈমানদার সম্প্রদায়ের চিত্তকে (যাদের উপর মক্কার যুদ্ধবাজ নেতাদের দ্বারা অত্যাচার ও নিষ্ঠুরতা আরোপ করা হয়েছিল)।
وَ یُذۡہِبۡ غَیۡظَ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَ یَتُوۡبُ اللّٰہُ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের অন্তরসমূহের ক্ষোভ দূর করবেন; আর আল্লাহ্ যার ইচ্ছা তাওবা কবূল করবেন এবং আল্লাহ্ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৫. আর তিনি তাদের অন্তরের দুঃখ ও ক্রোধ প্রশমিত করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তার তওবা কবুল করবেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَکُوۡا وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ وَ لَمۡ یَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لَا رَسُوۡلِہٖ وَ لَا الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَلِیۡجَۃً ؕ وَ اللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমরা কি এই ধারণায় রয়েছো যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে এবং এখনো আল্লাহ্হ পরিচয় করান নি ওই সব লোকের, যারা তোমাদের মধ্য হতে জিহাদ করবে আর আল্লাহ্, তার রসূল এবং মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না? এবং আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৬. তোমরা কি এ ধারণা করেছো যে, (বিপদাপদ ও সমস্যাদি অতিক্রম না করে এমনিতেই) তোমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, অথচ (এখনও) আল্লাহ্ সেসব লোকদেরকে স্বতন্ত্রভাবে পৃথক করেননি, যারা তোমাদের মধ্য থেকে জিহাদ করেছে, আর (যারা) আল্লাহ্ ব্যতীত এবং তাঁর রাসূল (ﷺ) ব্যতীত এবং ঈমানদারদের ব্যতীত (কাউকে) অন্তরঙ্গ বন্ধু বানায়নি? আর আল্লাহ্ এমন কর্মকান্ড সম্পর্কে খুবই অবগত, যা তোমরা করছো।
مَا کَانَ لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ اَنۡ یَّعۡمُرُوۡا مَسٰجِدَ اللّٰہِ شٰہِدِیۡنَ عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ بِالۡکُفۡرِ ؕ اُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ ۚۖ وَ فِی النَّارِ ہُمۡ خٰلِدُوۡنَ ﴿۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
মুশরিকদের জন্য শোভা পায় না যে, তারা আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে নিজেরাই নিজেদের কুফরের সাক্ষ্য দিয়ে; তাদের সমস্ত কৃতকর্ম বিনষ্ট হয়ে গেছে এবং তারা সর্বদা আগুনেই অবস্থান করবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৭. মুশরিকদের জন্যে এমন হতে পারে না যে, তারা আল্লাহর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে, যখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে। এ সকল লোকদের সমস্ত আমল বাতিল হয়ে গিয়েছে। আর তারা চিরকাল দোযখেই অবস্থান করবে।
اِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰہِ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ اَقَامَ الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَی الزَّکٰوۃَ وَ لَمۡ یَخۡشَ اِلَّا اللّٰہَ فَعَسٰۤی اُولٰٓئِکَ اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর মসজিদসমূহ তারাই আবাদ করে, যারা আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামতের উপর ঈমান আনে, নামায কায়েম রাখে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকেও ভয় করে না ; সুতরাং এটাই সন্নিকটে যে, এসব লোক সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তুর্ভুক্ত হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৮. আল্লাহর মসজিদ কেবল তারাই রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে, যারা আল্লাহ্তে ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছে, আর যারা নামায কায়েম করেছে এবং যাকাত আদায় করেছে, এবং আল্লাহ্কে ছাড়া (কাউকে) ভয় করে না। সুতরাং আশা করা যায় যে, এরা হেদায়াত প্রাপ্তদের মধ্যে গণ্য হবে।
اَجَعَلۡتُمۡ سِقَایَۃَ الۡحَآجِّ وَ عِمَارَۃَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ کَمَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ جٰہَدَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ لَا یَسۡتَوٗنَ عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۘ۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমরা কি হাজীদের পানি সরবরাহ এবং মসজিদে হারামের খেদমতকে তারই সমান স্থির করেছো, যে আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামতের উপর ঈমান এনেছে ও আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে? তারা আল্লাহর নিকট সমান নয় এবং আল্লাহ্ যালিমদেরকে সৎপথ প্রদান করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৯. তোমরা কি (কেবল) হাজীদের পানি পান করানো এবং মসজিদুল হারামের তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণের বন্দোবস্ত করাকে ঐসব লোকের (কাজের) সমান মনে করছো, যে আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করে? আল্লাহর নিকট এরা সমান হতে পারে না। আর আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ ہَاجَرُوۡا وَ جٰہَدُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ۙ اَعۡظَمُ دَرَجَۃً عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفَآئِزُوۡنَ ﴿۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
আর ওই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং স্বীয় সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেছে, আল্লাহর নিকট তাদের মর্যাদা বড় এবং তারাই সফলকাম।
📕ইরফানুল কুরআন:
২০. যারা ঈমান আনয়ন করেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে স্বীয় সম্পদ ও জীবন দিয়ে জিহাদে রত আছে, তারা আল্লাহর সমীপে মর্যাদায় অনেক শ্রেষ্ঠ। আর তারাই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছে।
یُبَشِّرُہُمۡ رَبُّہُمۡ بِرَحۡمَۃٍ مِّنۡہُ وَ رِضۡوَانٍ وَّ جَنّٰتٍ لَّہُمۡ فِیۡہَا نَعِیۡمٌ مُّقِیۡمٌ ﴿ۙ۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের রব তাদেরকে সুসংবাদ শুনাচ্ছেন নিজ দয়া ও আপন সন্তুষ্টির এবং ওই সব বাগানের (জান্নাত), যেগুলোর মধ্যে তাদের জন্য স্থায়ী নি’মাত রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২১. তাদের প্রতিপালক তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টি এবং (ঐসব) জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন, যাতে তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী সুখ-সমৃদ্ধি।
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَبَدًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عِنۡدَہٗۤ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ ﴿۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
দা সর্বদা তারা সেগুলোর মধ্যে থাকবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট মহাপুরস্কার রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২২. তারা এতে চিরকাল থাকবে। নিশ্চয় আল্লাহরই নিকট রয়েছে মহা প্রতিদান।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡۤا اٰبَآءَکُمۡ وَ اِخۡوَانَکُمۡ اَوۡلِیَآءَ اِنِ اسۡتَحَبُّوا الۡکُفۡرَ عَلَی الۡاِیۡمَانِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ঈমানদারগণ! আপন পিতা ও নিজ ভাইদেরকে অন্তরঙ্গ মনে করো না যদি তারা ঈমানের পরিবর্তে কুফরকেই পছন্দ করে; এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করবে তবে তারাই যালিম।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৩. হে ঈমানাদারগণ! তোমরা তোমাদের বাপ (- দাদা) এবং ভাইদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরীকে প্রাধান্য দেয়। আর তোমাদের মধ্যে যারাই তাদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করবে, তারাই যালিম।
قُلۡ اِنۡ کَانَ اٰبَآؤُکُمۡ وَ اَبۡنَآؤُکُمۡ وَ اِخۡوَانُکُمۡ وَ اَزۡوَاجُکُمۡ وَ عَشِیۡرَتُکُمۡ وَ اَمۡوَالُۨ اقۡتَرَفۡتُمُوۡہَا وَ تِجَارَۃٌ تَخۡشَوۡنَ کَسَادَہَا وَ مَسٰکِنُ تَرۡضَوۡنَہَاۤ اَحَبَّ اِلَیۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ جِہَادٍ فِیۡ سَبِیۡلِہٖ فَتَرَبَّصُوۡا حَتّٰی یَاۡتِیَ اللّٰہُ بِاَمۡرِہٖ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের পুত্র, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের স্বগোষ্ঠী তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ওই ব্যবসা-বাণিজ্য, যার ক্ষতি হবার তোমরা আশংকা করো এবং তোমাদের পছন্দের বাসস্থান এ সব বস্তু আল্লাহ্ ও তার রসূল এবং তার পথে যুদ্ধ করা অপেক্ষা তোমাদের নিকট প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা করো আল্লাহ্ তার নির্দেশ আনা পর্যন্ত। এবং আল্লাহ্ ফাসিক্বদেরকে সৎপথ প্রদান করে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৪. (হে সম্মানিত নবী!) আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের বাপ (-দাদা), তোমাদের পুত্র (-কন্যা), তোমাদের ভাই (-বোন), তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের (অপরাপর) আত্মীয়, তোমাদের সম্পদ যা তোমরা (মেহনত করে) অর্জন করেছো, ব্যবসা-বাণিজ্য যার লোকসানের আশংকা তোমরা করো এবং বাসস্থান যা তোমরা পছন্দ করো; তোমাদের নিকট আল্লাহ্, তাঁর রাসূল (ﷺ) এবং তাঁর পথে জিহাদ করা থেকে অধিকতর পছন্দনীয় হয়, তবে অপেক্ষা করো আল্লাহ্ স্বীয় (শাস্তির) বিধান নিয়ে আসা পর্যন্ত।’ আর আল্লাহ্ নাফরমান সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
لَقَدۡ نَصَرَکُمُ اللّٰہُ فِیۡ مَوَاطِنَ کَثِیۡرَۃٍ ۙ وَّ یَوۡمَ حُنَیۡنٍ ۙ اِذۡ اَعۡجَبَتۡکُمۡ کَثۡرَتُکُمۡ فَلَمۡ تُغۡنِ عَنۡکُمۡ شَیۡئًا وَّ ضَاقَتۡ عَلَیۡکُمُ الۡاَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ ثُمَّ وَلَّیۡتُمۡ مُّدۡبِرِیۡنَ ﴿ۚ۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় আল্লাহ্ বহু ক্ষেত্রে তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিনে, যখন তোমরা নিজেদের সংখ্যাধিক্যের উপর অহংকারী হয়ে গিয়েছিলে, তখন তা তোমাদের কোন কাজে আসে নি, এবং পৃথিবী এতোই বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিলো পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে ফিরে গিয়েছিলে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৫. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বহু ক্ষেত্রে তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন, আর (বিশেষ করে) হুনাইনের দিবসে যখন তোমাদেরকে তোমাদের (সংখ্যাগত শক্তির) আধিক্যতা মুগ্ধ করেছিল; অতঃপর এ (আধিক্যতা) তোমাদের কোনোই উপকার করতে পারেনি। আর পৃথিবী, এর বিশাল বিস্তৃতি সত্তেও তোমাদের জন্যে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে।
ثُمَّ اَنۡزَلَ اللّٰہُ سَکِیۡنَتَہٗ عَلٰی رَسُوۡلِہٖ وَ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ اَنۡزَلَ جُنُوۡدًا لَّمۡ تَرَوۡہَا وَ عَذَّبَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ وَ ذٰلِکَ جَزَآءُ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর আল্লাহ্ স্বীয় প্রশান্তি অবতীর্ণ করেছেন আপন রসূলের উপর এবং মুসলমানদের উপর এবং এমন সৈন্যবাহিনী অবতীর্ণ করেন, যা তোমরা দেখতে পাও নি, এবং কাফিরদের শাস্তি দিয়েছেন। আর অস্বীকারকারীদের শাস্তি এটাই।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৬. অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর প্রতি এবং ঈমানদারদের প্রতি স্বীয় (রহমতের) প্রশান্তি অবতীর্ণ করলেন। আর তিনি (ফেরেশতাদের এমন) বাহিনী অবতীর্ণ করলেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাও নি। আর তিনি সেসব লোককে শাস্তি প্রদান করলেন যারা কুফরী করতো। আর এটিই কাফেরদের শাস্তি।
ثُمَّ یَتُوۡبُ اللّٰہُ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর আল্লাহ্ এরপরে যাকে ইচ্ছা তাওবা (এর শক্তি) প্রদান করবেন; এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৭. অতঃপর আল্লাহ্ এরপরও যাকে চান তার তওবা কবুল করেন (অর্থাৎ তাকে ইসলামের তাওফীক ও রহমতের দৃষ্টি দিয়ে অনুগ্রহ করেন)। আর আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡمُشۡرِکُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا یَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِہِمۡ ہٰذَا ۚ وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَۃً فَسَوۡفَ یُغۡنِیۡکُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖۤ اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ঈমানদারগণ! মুশরিকগণ নিরেট অপবিত্র; সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদে হারামের নিকটেও না আসতে পারে; আর যদি তোমরা দারিদ্রের আশংকা করো, তবে অবিলম্বে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ধনী করে দেবেন আপন করুণা থেকে যদি ইচ্ছা করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ্ জ্ঞান প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৮. হে ঈমানদারগণ! মুশরিকেরা তো আপাদমস্তক নাপাক, সুতরাং তারা এ বছরের পর (অর্থাৎ মক্কা বিজয়ের পর থেকে) মসজিদে হারামের নিকট যেন না আসতে পারে। আর যদি তোমাদের (ব্যবসায় ক্ষতির কারণে) দারিদ্রতার ভয় হয়, তবে (ঘাবড়াবে না) আল্লাহ্ যদি চান, তবে অচিরেই তোমাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ থেকে সম্পদশালী করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সম্যক অবগত, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
قَاتِلُوا الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ لَا بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ لَا یُحَرِّمُوۡنَ مَا حَرَّمَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ لَا یَدِیۡنُوۡنَ دِیۡنَ الۡحَقِّ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ حَتّٰی یُعۡطُوا الۡجِزۡیَۃَ عَنۡ یَّدٍ وَّ ہُمۡ صٰغِرُوۡنَ ﴿۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
যুদ্ধ করো তাদের সাথে, যারা ঈমান আনে না আল্লাহর উপর ও ক্বিয়ামত দিবসের উপর এবং হারাম বলে মানে না ওই বস্তুকে, যাকে হারাম করেছেন আল্লাহ্ ও তার রসূল, এবং সত্যদ্বীনের অনুসারী হয় না; অর্থাৎ ওই সব লোক, যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছে, যে পর্যন্ত নিজ হাতে জিযিয়া দেবে না লাঞ্ছিত হয়ে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৯. (হে মুসলমানগণ!) তোমরা আহলে কিতাবের মধ্য থেকে ঐসব লোকদের সাথে(ও) যুদ্ধ করো, যারা না আল্লাহর উপর ঈমান রাখে, আর না পরকালের উপর; আর না এমন বস্তুগুলোকে হারাম মনে করে, যেগুলোকে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ) হারাম করেছেন, আর না সত্য দ্বীন (অর্থাৎ ইসলাম) অনুসরণ করে; যতক্ষণ পর্যন্ত না (ইসলামের নির্দেশের সম্মুখে) অনুগত ও আত্মসমর্পন করে স্বহস্তে কর আদায় করে।
وَ قَالَتِ الۡیَہُوۡدُ عُزَیۡرُۨ ابۡنُ اللّٰہِ وَ قَالَتِ النَّصٰرَی الۡمَسِیۡحُ ابۡنُ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ قَوۡلُہُمۡ بِاَفۡوَاہِہِمۡ ۚ یُضَاہِـُٔوۡنَ قَوۡلَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ قٰتَلَہُمُ اللّٰہُ ۚ۫ اَنّٰی یُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۳۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ইহুদীরা বললো, ‘উযায়ের আল্লাহর পুত্র’ এবং খ্রীস্টানরা বললো, ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র’ সব কথা তারা নিজেদের মুখে বকাবকি করে। পূর্ববর্তী কাফিরদের মতো কথা রচনা করে। আল্লাহ্ তাদেরকে ধ্বংস করুন! ওরা উল্টো দিকে কোথায় ফিরে যাচ্ছে?
📕ইরফানুল কুরআন:
৩০. আর ইহুদীরা বললো, ‘উযাইর (আলাইহিস সালাম) আল্লাহর পুত্র’ এবং খৃস্টানরা বললো, ‘মাসীহ (আলাইহিস সালাম) আল্লাহর পুত্র’। এটি তাদের (অনর্থক) কথা, যা মুুখ থেকে বের হয়, এটি এমন লোকদের কথার সাথে সাদৃশ্য (বজায়) রাখে, যারা (তাদের) পূর্বে কুফরী করেছিল। আল্লাহ্ তাদেরকে ধ্বংস করুন! তারা কোথায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে?
اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَہُمۡ وَ رُہۡبَانَہُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ الۡمَسِیۡحَ ابۡنَ مَرۡیَمَ ۚ وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡۤا اِلٰـہًا وَّاحِدًا ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ؕ سُبۡحٰنَہٗ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۳۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের পাদ্রী ও সংসারবিরাগীদেরকে খোদারূপে গ্রহণ করে নিয়েছে এবং মরিয়ম তনয় মসীহকেও; কিন্তু তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলো; তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত নেই। তিনি পবিত্র তাদের শির্ক থেকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩১. তারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের যাজকদেরকে এবং সন্ন্যাসীদেরকে প্রতিপালক বানিয়ে নিয়েছিল। আর মারইয়াম-তনয় মাসীহ (আলাইহিস সালাম)-কেও; অথচ তাদেরকে এ নির্দেশই দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন একমাত্র এক(ই) উপাস্যের ইবাদত করে, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তিনি তাদের থেকে পূতঃপবিত্র, যাদেরকে তারা অংশীদার সাব্যস্ত করে।
یُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ یُّطۡفِـُٔوۡا نُوۡرَ اللّٰہِ بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَ یَاۡبَی اللّٰہُ اِلَّاۤ اَنۡ یُّتِمَّ نُوۡرَہٗ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۳۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা তাদের মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর জ্যোতিকে নির্বাপিত করতে চায়; এবং আল্লাহ্ আপন জ্যোতির পূর্ণ উদ্ভাসন ব্যতীত অন্য কিছু মানবেন না, যদিও অপছন্দ করে কাফির।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩২. তারা নিজেদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, আর আল্লাহ্ (তা) অগ্রাহ্য করেন, বরং এ (চান) যে, তিনি স্বীয় নূরকে পূর্ণতায় উদ্ভাসিত করেন, যদিও কাফেরেরা (তা) অপছন্দ করে।
ہُوَ الَّذِیۡۤ اَرۡسَلَ رَسُوۡلَہٗ بِالۡہُدٰی وَ دِیۡنِ الۡحَقِّ لِیُظۡہِرَہٗ عَلَی الدِّیۡنِ کُلِّہٖ ۙ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُشۡرِکُوۡنَ ﴿۳۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনিই হন, যিনি আপন রসূলকে হিদায়ত ও সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, এজন্য যে, সেটাকে অন্য সমস্ত দ্বীনের উপর বিজয়ী করবেন। যদিও অপছন্দ করে মুশরিক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৩. তিনিই (আল্লাহ্) যিনি হেদায়াত এবং সত্য দ্বীনসহ তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে প্রেরণ করেছেন, সকল দ্বীনের (অনুসারীদের) উপর তাঁকে (অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে) আধিপত্যশীল করবার জন্যে, যদিও মুশরিকেরা অপছন্দ করে।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡاَحۡبَارِ وَ الرُّہۡبَانِ لَیَاۡکُلُوۡنَ اَمۡوَالَ النَّاسِ بِالۡبَاطِلِ وَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ یَکۡنِزُوۡنَ الذَّہَبَ وَ الۡفِضَّۃَ وَ لَا یُنۡفِقُوۡنَہَا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ۙ فَبَشِّرۡہُمۡ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿ۙ۳۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে, ঈমানদারগণ! নিশ্চয় বহু পাদ্রী ও সংসারবিরাগী মানুষের ধন অন্যায়ভাবে খেয়ে বসে এবং আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করে আর ওই সব লোক, যারা সঞ্চিত করে রাখে স্বর্ণ ও রৌপ্য এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না; তাদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন বেদনাদায়ক শাস্তির;
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৪. হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই (আহলে কিতাবের) অধিকাংশ যাজক এবং সন্ন্যাসী অন্যায়ভাবে (অর্থাৎ অন্যায় পন্থায়) মানুষের সম্পদ ভোগ করে থাকে এবং আল্লাহর পথে বাধা দেয় (অর্থাৎ মানুষের সম্পদ থেকে নিজেদের সিন্ধুক ভর্তি করে এবং সত্য দ্বীনের সুদৃঢ়করণ ও প্রসারের জন্যে খরচ করা থেকে মানুষকে প্রতিহত করে)। আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য কুক্ষিগত করে রাখে এবং এগুলো আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ শুনিয়ে দিন।
یَّوۡمَ یُحۡمٰی عَلَیۡہَا فِیۡ نَارِ جَہَنَّمَ فَتُکۡوٰی بِہَا جِبَاہُہُمۡ وَ جُنُوۡبُہُمۡ وَ ظُہُوۡرُہُمۡ ؕ ہٰذَا مَا کَنَزۡتُمۡ لِاَنۡفُسِکُمۡ فَذُوۡقُوۡا مَا کُنۡتُمۡ تَکۡنِزُوۡنَ ﴿۳۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে দিন উত্তপ্ত করা হবে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে, অতঃপর তা দ্বারা দাগ দেওয়া হবে তাদের ললাটগুলোতে এবং পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশগুলোতে, ‘এটা হচ্ছে তাই, যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করে রেখেছিলে, এখন স্বাদ গ্রহণ করো এ পুঞ্জীভূত করার’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৫. যেদিন এই (স্বর্ণ, রৌপ্য এবং সম্পদ) জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর এই (উত্তপ্ত উপাদান) দিয়ে তাদের ললাট, পার্শ্ব এবং পৃষ্ঠদেশ চিহ্নিত করা হবে (এবং তাদেরকে বলা হবে:) ‘এটি ওই (সম্পদ) যা তোমরা নিজেদের (ভোগের) জন্যে পুঞ্জিভুত করেছিলে। সুতরাং (এই সম্পদের) স্বাদ গ্রহণ করো যা তোমরা পুঞ্জিভুত করছিলে।’
اِنَّ عِدَّۃَ الشُّہُوۡرِ عِنۡدَ اللّٰہِ اثۡنَا عَشَرَ شَہۡرًا فِیۡ کِتٰبِ اللّٰہِ یَوۡمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ مِنۡہَاۤ اَرۡبَعَۃٌ حُرُمٌ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ ۬ۙ فَلَا تَظۡلِمُوۡا فِیۡہِنَّ اَنۡفُسَکُمۡ وَ قَاتِلُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ کَآفَّۃً کَمَا یُقَاتِلُوۡنَکُمۡ کَآفَّۃً ؕ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ مَعَ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۳۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহর নিকট বার মাস, আল্লাহর কিতাবের মধ্যে, যখন থেকে তিনি আসমান যমীন সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটা সম্মানিত। এটা সোজা দ্বীন। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে নিজেদের আত্নাগুলোর উপর যুলুম করো না এবং মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ করো, যেমনিভাবে তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ করে এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ খোদাভীরুদের সাথে আছেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৬. বস্তুত আল্লাহর কিতাবে (অর্থাৎ আল্লাহর বিধানে) আল্লাহর নিকট মাস গণনায় (লিপিবদ্ধ) মাস বারোটি, যেদিন থেকে তিনি আকাশমন্ডলী ও জমিন (-এর ধারা) সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটি মাস (রজব, জিলক্বদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম) সম্মানিত। এটিই সঠিক দ্বীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে (নিজ থেকে যুদ্ধ ও লড়াইয়ে মত্ত হয়ে) নিজেদের উপর যুলুম করো না। আর তোমরা সমস্ত মুশরিকদের বিরুদ্ধে এমনভাবে (প্রতি উত্তরে) যুদ্ধ করো, যেমনিভাবে তারা সকলে (একত্রিত হয়ে) তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরহেযগারদের সাথে রয়েছেন।
اِنَّمَا النَّسِیۡٓءُ زِیَادَۃٌ فِی الۡکُفۡرِ یُضَلُّ بِہِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا یُحِلُّوۡنَہٗ عَامًا وَّ یُحَرِّمُوۡنَہٗ عَامًا لِّیُوَاطِـُٔوۡا عِدَّۃَ مَا حَرَّمَ اللّٰہُ فَیُحِلُّوۡا مَا حَرَّمَ اللّٰہُ ؕ زُیِّنَ لَہُمۡ سُوۡٓءُ اَعۡمَالِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۳۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের মাসকে পিছিয়ে দেওয়া নয়, বরং কুফরের মধ্যে আরো এগিয়ে যাওয়া; এটা দ্বারা কাফিরদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়। এক বছর সেটাকে বৈধ সাব্যস্ত করে এবং আরেক বছর সেটাকে অবৈধ মানে, যাতে ওই গণনার সমান হয়ে যায়, যা আল্লাহ্ নিষিদ্ধ করেছেন এবং আল্লাহর নিষিদ্ধকৃতকে হালাল করে নেয়। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের চোখে ভাল লাগে; এবং আল্লাহ্ কাফিরদেরকে সৎপথ প্রদান করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৭. (সম্মানিত মাসগুলোকে) স্থগিত করা ও পিছিয়ে দেয়া কেবল কুফরী বৃদ্ধিকরণ, যা দ্বারা কাফেরদেরকে বিপথগামী করা হয়; যারা এক বছর একে হালাল সাব্যস্ত করে এবং অন্য বছর হারাম সাব্যস্ত করে; যাতে সেসব (মাসের) গণনা পূর্ণ করে যেগুলোকে আল্লাহ্ সম্মানিত করেছেন এবং সে (মাস)-গুলোকে হালাল মনে করে যেগুলোকে আল্লাহ্ হারাম করেছেন। তাদের জন্যে তাদের মন্দ কাজকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহ্ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَا لَکُمۡ اِذَا قِیۡلَ لَکُمُ انۡفِرُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اثَّاقَلۡتُمۡ اِلَی الۡاَرۡضِ ؕ اَرَضِیۡتُمۡ بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا مِنَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا قَلِیۡلٌ ﴿۳۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কী হলো যখন তোমাদেরকে বলা হয়- ‘আল্লাহর পথে অভিযানে বের হও’! তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে যমীনের উপর বসে পড়ো? তোমরা কি পার্থিব জীবনকে আখিরাতের বিনিময়ে পছন্দ করে নিয়েছো? এবং পার্থিব জীবনের সামগ্রীগুলো আখিরাতের তুলনায় নয়, কিন্তু সামান্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৮. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কী হয়েছে যে, যখন তোমাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহর পথে (জিহাদের জন্যে) বের হও’, তখন তোমরা কঠিন হয়ে ভু-পৃষ্ঠের (বস্তুগত ও তুচ্ছ পার্থিব বিষয়ের) দিকে ঝুঁকে পড়ো। তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে পার্থিব জীবনে সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছ? বস্তুতঃ পরকালে (-এর তুলনায়) পার্থিব জীবনের সামগ্রী কিছুই নয়, অতি সামান্য (মূল্য রাখে)।
اِلَّا تَنۡفِرُوۡا یُعَذِّبۡکُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا ۬ۙ وَّ یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ وَ لَا تَضُرُّوۡہُ شَیۡئًا ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۳۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তবে তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের স্থলে অন্য লোকদেরকে নিয়ে আসবেন আর তোমরা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না; এবং আল্লাহ্ সব কিছু করতে পারেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৯. যদি তোমরা (শান্তি ও মানবিক মূল্যবোধ উত্তরণে জিহাদের জন্যে) বের না হও, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিতে নিমজ্জিত করবেন, আর তোমাদের স্থলে অপর (কোনো) সম্প্রদায়কে নিয়ে আসবেন। আর তোমরা তাঁর কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
اِلَّا تَنۡصُرُوۡہُ فَقَدۡ نَصَرَہُ اللّٰہُ اِذۡ اَخۡرَجَہُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ثَانِیَ اثۡنَیۡنِ اِذۡ ہُمَا فِی الۡغَارِ اِذۡ یَقُوۡلُ لِصَاحِبِہٖ لَا تَحۡزَنۡ اِنَّ اللّٰہَ مَعَنَا ۚ فَاَنۡزَلَ اللّٰہُ سَکِیۡنَتَہٗ عَلَیۡہِ وَ اَیَّدَہٗ بِجُنُوۡدٍ لَّمۡ تَرَوۡہَا وَ جَعَلَ کَلِمَۃَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا السُّفۡلٰی ؕ وَ کَلِمَۃُ اللّٰہِ ہِیَ الۡعُلۡیَا ؕ وَ اللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۴۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি তোমরা ‘মাহ্বূব’কে সাহায্য না করো, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে সাহায্য করেছেন যখন কাফিরদের ষড়যন্ত্রের কারণে তাকে বাইরে তাশরীফ নিয়ে যেতে হয়েছে শুধু দু’জন থেকে (একজন হলেন তিনি) যখন তারা উভয়ই গুহার মধ্যে ছিলেন, যখন আপন সঙ্গীকে ফরমাচ্ছিলেন, ‘দুঃখিত হয়োনা, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ আমাদের সাথে আছেন’। অতঃপর আল্লাহ্ তার উপর আপন প্রশান্তি অবতীর্ণ করেন এবং তাকে এমন এক সৈন্যবাহিনী দ্বারা সাহায্য করেছেন, যা তোমরা দেখো নি এবং তিনি কাফিরদের কথা নিচে নিক্ষেপ করেছেন; আল্লাহর কথাই সর্বোপরি; এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪০. যদি তোমরা তাঁকে (অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে ইসলামের আধিপত্যের প্রচেষ্টায়) সাহায্য না করো, (তবে কী হয়েছে?) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁকে (সে সময়েও) সাহায্য দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলেন যখন কাফেরেরা তাঁকে (মক্কা ভুমি থেকে) বের করে দিয়েছিল; তখন তিনি ছিলেন (হিজরতকারী) দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয়জন। যখন উভয়ে (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছূর) গুহায় ছিলেন, যখন তিনি তাঁর সাথী (আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহ্ আনহু)-কে বলেছিলেন, ‘চিন্তিত হয়ো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমাদের সাথে রয়েছেন’। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁদের উপর স্বীয় প্রশান্তি অবতীর্ণ করলেন, আর তাঁদেরকে (ফেরেশতাগণের) বাহিনীর মাধ্যমে শক্তিশালী করলেন, যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি। আর তিনি কাফেরদের বাক্য নীচু ও নিম্নতর করে দিলেন। আর আল্লাহর বাণী তো (সর্বদা) সুউচ্চ ও সমুন্নত। আর আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
اِنۡفِرُوۡا خِفَافًا وَّ ثِقَالًا وَّ جَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِکُمۡ وَ اَنۡفُسِکُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
অভিযানে বের হয়ে পড়ো, চাই হালকা প্রাণে হোক, চাই ভারী হৃদয়ে এবং আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা জানো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪১. তোমরা হালকা অথবা ভারী (সকল অবস্থায়) বের হয়ে পড়ো, আর স্বীয় সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করো। এটি তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা (প্রকৃত অবস্থা) জানো।
لَوۡ کَانَ عَرَضًا قَرِیۡبًا وَّ سَفَرًا قَاصِدًا لَّاتَّبَعُوۡکَ وَ لٰکِنۡۢ بَعُدَتۡ عَلَیۡہِمُ الشُّقَّۃُ ؕ وَ سَیَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ لَوِ اسۡتَطَعۡنَا لَخَرَجۡنَا مَعَکُمۡ ۚ یُہۡلِکُوۡنَ اَنۡفُسَہُمۡ ۚ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿۴۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি কোন নিকটবর্তী সম্পদ কিংবা মধ্যম ধরণের সফর হতো, তবে তারা অবশ্যই আপনার সাথে যেতো; কিন্তু তাদের উপর তো কষ্টের পথ সুদীর্ঘ মনে হলো; এবং এখন আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, ‘আমাদের পক্ষে সম্ভব হলে অবশ্যই তোমাদের সাথে চলতাম’। তারা নিজেদের আত্নাগুলোকে ধ্বংস করছে এবং আল্লাহ্ জানেন যে, তারা নিশ্চয় নিশ্চয় মিথ্যাবাদী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪২. (গণিমতের) সম্পদ লাভের আশু সম্ভাবনা থাকলে এবং (জিহাদের) সফর সহনীয় ও সহজ হলে এ সকল (মুনাফিকেরা) অবশ্যই আপনার পশ্চাতে চলতো। কিন্তু (সে) কষ্টসাধ্য সফর তাদের নিকট অনেক দূরবর্তী মনে হলো। আর (এখন) তারা অচিরেই আল্লাহর শপথ করবে, ‘যদি আমাদের সামর্থ হতো, তবে অবশ্যই তোমাদের সাথে বের হতাম’। তারা (এ মিথ্যার মাধ্যমে) নিজেদেরকে (আরো) ধ্বংসে নিক্ষেপ করছে। আর আল্লাহ্ জানেন যে, তারা বাস্তবিকই মিথ্যাবাদী।
عَفَا اللّٰہُ عَنۡکَ ۚ لِمَ اَذِنۡتَ لَہُمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَکَ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ تَعۡلَمَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۴۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ আপনাকে ক্ষমা করুন, আপনি তাদেরকে কেন অনুমতি দিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার নিকট স্পষ্ট হয় নি সত্যবাদীরা এবং প্রকাশ পায় নি মিথ্যাবাদীরা।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৩. আল্লাহ্ আপনাকে (মর্যাদা ও সুরক্ষায়) নিরাপদ রাখুন। আপনি তাদেরকে (যুদ্ধে অংশ না নিতে) কেন অবকাশ দিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার নিকট প্রকাশ হয়ে যেতো কারা সত্য বলছিল, আর আপনি মিথ্যাবাদীদেরকেও চিনে নিতেন?
لَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ اَنۡ یُّجَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে, তারা আপনার নিকট নিজেদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদ থেকে অব্যাহতি পাবার জন্য ছুটি প্রার্থনা করবে না; এবং আল্লাহ্ খুব ভালভাবে জানেন পরহেয্গারদেরকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৪. যারা আল্লাহ্ ও পরকালে ঈমান রাখে, সেসব লোক আপনার নিকট (এ বিষয়ে) অব্যাহতি প্রার্থনা করবে না যে, তারা স্বীয় সম্পদ ও জীবন দিয়ে জিহাদ করবে (না)। আর আল্লাহ্ পরহেযগারদের ব্যাপারে সম্যক অবগত।
اِنَّمَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ ارۡتَابَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ فَہُمۡ فِیۡ رَیۡبِہِمۡ یَتَرَدَّدُوۡنَ ﴿۴۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনার নিকট এ ছুটি প্রার্থনা করছে তারাই, যারা আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামতের উপর ঈমান রাখে না এবং যাদের অন্তর সংশয়ে পড়েছে। সুতরাং তারা তো আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৫. আপনার নিকট (জিহাদে অংশগ্রহণ থেকে) অবকাশ কেবল তারাই চাইবে যারা আল্লাহ্ ও পরকালে ঈমান রাখে না এবং যাদের অন্তর সন্দেহে পড়ে রয়েছে; সুতরাং তারা স্বীয় সন্দেহে হতভম্ব ও উদ্বিগ্ন।
وَ لَوۡ اَرَادُوا الۡخُرُوۡجَ لَاَعَدُّوۡا لَہٗ عُدَّۃً وَّ لٰکِنۡ کَرِہَ اللّٰہُ انۡۢبِعَاثَہُمۡ فَثَبَّطَہُمۡ وَ قِیۡلَ اقۡعُدُوۡا مَعَ الۡقٰعِدِیۡنَ ﴿۴۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি তাদের বের হবার ইচ্ছা থাকতো, তবে তজ্জন্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করতো। কিন্তু আল্লাহরই নিকট তাদের অভিযাত্রা মনঃপূত হলো না; সুতরাং তাদের মধ্যে অলসতা ভর্তি করে দিলেন এবং বলা হলো, ‘যারা বসে রয়েছে তাদের সাথে বসে থাকো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৬. যদি তারা (বাস্তবিকই জিহাদের জন্যে) বের হবার ইচ্ছা পোষণ করতো, তবে তারা এর জন্যে (কিছু না কিছু) সামগ্রী তো অবশ্যই প্রস্তুত রাখতো, কিন্তু (প্রকৃত সত্য এ যে, তাদের মিথ্যাচার ও কপটতার কারণে) আল্লাহ্ (জিহাদের জন্যে) তাদের অভিযাত্রাকেই অপছন্দ করেছেন; সুতরাং তিনি তাদেরকে (সেখানেই) বিরত রেখেছেন আর তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছে, ‘(জিহাদ এড়িয়ে) যারা বসে আছে, তাদের সাথে বসে থাকো’।
لَوۡ خَرَجُوۡا فِیۡکُمۡ مَّا زَادُوۡکُمۡ اِلَّا خَبَالًا وَّ لَا۠اَوۡضَعُوۡا خِلٰلَکُمۡ یَبۡغُوۡنَکُمُ الۡفِتۡنَۃَ ۚ وَ فِیۡکُمۡ سَمّٰعُوۡنَ لَہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি তারা তোমাদের মধ্যে বের হতো, তবে তাদের দ্বারা ক্ষতি ব্যতীত তোমাদের কিছুই বৃদ্ধি পেতো না এবং তোমাদের মধ্যে ফিত্না সৃষ্টি উদ্দেশ্যে তোমাদের মাঝে ছুটাছুটি করতো; আর তোমাদের মধ্যে তাদের গুপ্তচর রয়েছে এবং আল্লাহ্ খুব জানেন যালিমদেরকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৭. যদি তারা তোমাদের সাথে (যুক্ত হয়ে) বের হতো, তবে তারা কেবল তোমাদের অনিষ্ট ও বিপর্যয়ই বৃদ্ধি করতো এবং (অনৈক্য সৃষ্টিতে) ছুটাছুটি করে তোমাদের মাঝে ফিতনাহ্ ছড়াতে চাইতো। আর তোমাদের মাঝে (এখনও) তাদের (কিছু) গুপ্তচর বিদ্যমান রয়েছে। যালিমদের ব্যাপারে আল্লাহ্ যথেষ্ট অবগত।
لَقَدِ ابۡتَغَوُا الۡفِتۡنَۃَ مِنۡ قَبۡلُ وَ قَلَّبُوۡا لَکَ الۡاُمُوۡرَ حَتّٰی جَآءَ الۡحَقُّ وَ ظَہَرَ اَمۡرُ اللّٰہِ وَ ہُمۡ کٰرِہُوۡنَ ﴿۴۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিঃসন্দেহে তারা প্রথমেই ফিত্না চেয়েছিলো এবং হে মাহবূব! আপনার জন্য তারা কার্যপ্রণালীকে ওলট পালট করে ফেলেছে, শেষ পর্যন্ত সত্য এলো এবং আল্লাহর হুকুম প্রকাশ পেলো আর (তা) তাদের অপছন্দনীয় ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৮. প্রকৃতপক্ষে তারা পূর্বেও ফিতনা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল এবং আপনার কর্মসূচী পন্ড করে দেয়ার ফন্দি করেছিল, যতক্ষণ না সত্য এসে পৌঁছলো এবং আল্লাহর নির্দেশ প্রভাব বিস্তার করলো, যদিও তারা (তা) অপছন্দই করতো।
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّقُوۡلُ ائۡذَنۡ لِّیۡ وَ لَا تَفۡتِنِّیۡ ؕ اَلَا فِی الۡفِتۡنَۃِ سَقَطُوۡا ؕ وَ اِنَّ جَہَنَّمَ لَمُحِیۡطَۃٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কেউ আপনার নিকট এভাবে আরয করে, ‘আমাকে অব্যাহতি দিন এবং ফিত্নায় ফেলবেন না!’ শুনে নাও! তারা ফিত্নারই মধ্যে পড়েছে; এবং নিশ্চয় জাহান্নাম বেষ্টন করে আছে কাফিরদেরকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৯. আর তাদের মাঝে এমন ব্যক্তি(ও) রয়েছে যে বলে, ‘আমাকে অনুমতি দিন (আমি জিহাদে গমনের পরিবর্তে গৃহে অবস্থান করবো) এবং আমাকে ফিতনায় ফেলবেন না’। শুনে নাও! সে (তো নিজেই) ফিতনায় নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আর নিশ্চয়ই জাহান্নাম কাফেরদেরকে পরিবেষ্টন করে আছে।
اِنۡ تُصِبۡکَ حَسَنَۃٌ تَسُؤۡہُمۡ ۚ وَ اِنۡ تُصِبۡکَ مُصِیۡبَۃٌ یَّقُوۡلُوۡا قَدۡ اَخَذۡنَاۤ اَمۡرَنَا مِنۡ قَبۡلُ وَ یَتَوَلَّوۡا وَّ ہُمۡ فَرِحُوۡنَ ﴿۵۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি আপনার মঙ্গল হয়, তবে তাদের খারাপ লাগে, আর যদি আপনার কোন বিপদ ঘটে, তবে তারা বলে, ‘আমরা আমাদের কাজ পূর্বাহ্নেই ঠিক করে নিয়েছিলাম। এবং তারা খুশী প্রকাশ করতে করতে ফিরে যায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫০. আপনার কোনো কল্যাণ (অথবা স্বাচ্ছন্দ্য) হলে তা তাদেরকে পীড়া দেয়। আর আপনার কোনো মুসিবত (অথবা কষ্ট) হলে তারা বলে, ‘আমরা পূর্ব থেকেই আমাদের কাজে (সতর্কতা) গ্রহণ করেছিলাম’, আর তারা উৎফুল্লচিত্তে সরে পড়ে।
قُلۡ لَّنۡ یُّصِیۡبَنَاۤ اِلَّا مَا کَتَبَ اللّٰہُ لَنَا ۚ ہُوَ مَوۡلٰىنَا ۚ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘আমাদের নিকট পৌছবে না, কিন্তু তাই, যা আল্লাহ্ আমাদের জন্য লিবিবদ্ধ করে দিয়েছেন তিনি আমাদের মুনিব এবং আল্লাহর উপরই মুসলমানদের নির্ভর করা উচিত।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫১. (হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ্ আমাদের জন্যে যা লিখে রেখেছেন তা ব্যতীত আমাদের কখনো (কিছু) হবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক; আর ঈমানদারদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত।’
قُلۡ ہَلۡ تَرَبَّصُوۡنَ بِنَاۤ اِلَّاۤ اِحۡدَی الۡحُسۡنَیَیۡنِ ؕ وَ نَحۡنُ نَتَرَبَّصُ بِکُمۡ اَنۡ یُّصِیۡبَکُمُ اللّٰہُ بِعَذَابٍ مِّنۡ عِنۡدِہٖۤ اَوۡ بِاَیۡدِیۡنَا ۫ۖ فَتَرَبَّصُوۡۤا اِنَّا مَعَکُمۡ مُّتَرَبِّصُوۡنَ ﴿۵۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন! ‘তোমরা আমাদের উপর কোন জিনিসের অপেক্ষা করছো? কিন্তু দু’টি মঙ্গলের মধ্য থেকে একটারই এবং আমরা তোমাদের উপর এ প্রতীক্ষায় রয়েছি যে, আল্লাহ্ তোমাদের উপর শাস্তি আপতিত করবেন তারই নিকট থেকে অথবা আমাদের হাতে। সুতরাং তোমরা এখন প্রতীক্ষা করো। আমরাও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫২. আপনি বলে দিন, ‘তোমরা কি আমাদের জন্যে দু’টি কল্যাণের (অর্থাৎ বিজয় ও শাহাদতের) একটির অপেক্ষা করছো (যে, হয় আমরা শাহাদাত লাভ করি অথবা গাযী হয়ে ফিরে আসি)? আর আমরা তোমাদের জন্যে (তোমাদের মুনাফিকীর কারণে) এ বিষয়ের অপেক্ষা করছি যে, হয় আল্লাহ্ তোমাদেরকে (বিশেষ) শাস্তি দেবেন নিজ পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দিয়ে। সুতরাং তোমরা অপেক্ষা করো, আমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি (দেখি কাদের প্রতীক্ষা ফলপ্রসু হয়)।’
قُلۡ اَنۡفِقُوۡا طَوۡعًا اَوۡ کَرۡہًا لَّنۡ یُّتَقَبَّلَ مِنۡکُمۡ ؕ اِنَّکُمۡ کُنۡتُمۡ قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۵۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘সানন্দে ব্যয় করো অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে তোমাদের নিকট থেকে কখনো গৃহীত হবে না; নিশ্চয়, তোমরা নির্দেশ অমান্যকারী সম্প্রদায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৩. বলে দিন, ‘তোমরা ইচ্ছায় ব্যয় করো অথবা অনিচ্ছায়, তোমাদের থেকে কখনো এ (সম্পদ) গ্রহণ করা হবে না। তোমরা তো নাফরমান সম্প্রদায়।’
وَ مَا مَنَعَہُمۡ اَنۡ تُقۡبَلَ مِنۡہُمۡ نَفَقٰتُہُمۡ اِلَّاۤ اَنَّہُمۡ کَفَرُوۡا بِاللّٰہِ وَ بِرَسُوۡلِہٖ وَ لَا یَاۡتُوۡنَ الصَّلٰوۃَ اِلَّا وَ ہُمۡ کُسَالٰی وَ لَا یُنۡفِقُوۡنَ اِلَّا وَ ہُمۡ کٰرِہُوۡنَ ﴿۵۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারা যা ব্যয় করে তা গ্রহন করা বন্ধ হয় নি, কিন্তু (বন্ধ হয়েছে) এজন্যই যে, তারা আল্লাহ্ ও রসূলকে অস্বীকার করেছে, এবং নামাযে আসে না কিন্তু অলসতার সাথে এবং খরচ করে না কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৪. আর (অন্য) কোনো কিছুই তাদের ব্যয়সমূহ (অর্থাৎ দানসমূহ) গৃহীত হবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয় না, এ ব্যতীত যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে অস্বীকার করে, অলসতা ও অনাগ্রহ ব্যতীত নামায আদায়ে আগমন করে না এবং অনিচ্ছাকৃত অবস্থা ব্যতীত (আল্লাহর পথে) ব্যয়ও করে না।
فَلَا تُعۡجِبۡکَ اَمۡوَالُہُمۡ وَ لَاۤ اَوۡلَادُہُمۡ ؕ اِنَّمَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیُعَذِّبَہُمۡ بِہَا فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ تَزۡہَقَ اَنۡفُسُہُمۡ وَ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۵۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং তাদের সম্পদ ও সন্তান সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে। আল্লাহ্ এটাই চান যে, পার্থিব জীবনে ওই সব বস্তু দ্বারা তাদের উপর শাস্তি আপতিত করবেন এবং কুফরের উপরই তাদের শেষ নিঃশ্বাস বের হয়ে যাক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৫. সুতরাং আপনাকে যেন তাদের সম্পদ কিংবা তাদের সন্তান-সন্ততি বিমোহিত না করে। আল্লাহ্ তো কেবল এ চান যে, এসবের কারণে তাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দেন, আর তাদের প্রাণ বের হয় কাফের অবস্থায়।
وَ یَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ اِنَّہُمۡ لَمِنۡکُمۡ ؕ وَ مَا ہُمۡ مِّنۡکُمۡ وَ لٰکِنَّہُمۡ قَوۡمٌ یَّفۡرَقُوۡنَ ﴿۵۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং (তারা) আল্লাহর নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত; অথচ (তারা) তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। হ্যাঁ, ওই সব লোক ভয় করে থাকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৬. আর তারা (এমন কাপুরুষ,) আল্লাহর নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়; বস্তুত তারা সেসব লোক যারা (তাদের কপটতা প্রকাশিত হবার এবং এর পরিণতিকে) ভয় করে (কারণ, তারা কৃত্রিমভাবে নিজেদেরকে মুসলমান হিসেবে প্রকাশ করে)।
لَوۡ یَجِدُوۡنَ مَلۡجَاً اَوۡ مَغٰرٰتٍ اَوۡ مُدَّخَلًا لَّوَلَّوۡا اِلَیۡہِ وَ ہُمۡ یَجۡمَحُوۡنَ ﴿۵۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
যদি পায় কোন আশ্রয়স্থল অথবা গিরি-গুহা কিংবা সঙ্কুলান-স্থান, তবে ক্ষিপ্রগতিতে সেদিকে ফিরে যাবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৭. (তাদের অবস্থা এমন যে,) যদি তারা কোনো আশ্রয়স্থল অথবা গিরি-গুহা অথবা সুরঙ্গ পেতো, তবে সেদিকে দ্রুত বেগে পলায়ন করতো। (তারা এক মুহূর্তও আপনার সাথে থাকতো না। তবে এ সময় তারা অপারগ, সুতরাং তারা মিথ্যা আনুগত্য প্রদর্শন করছে)।
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّلۡمِزُکَ فِی الصَّدَقٰتِ ۚ فَاِنۡ اُعۡطُوۡا مِنۡہَا رَضُوۡا وَ اِنۡ لَّمۡ یُعۡطَوۡا مِنۡہَاۤ اِذَا ہُمۡ یَسۡخَطُوۡنَ ﴿۵۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে, সাদক্বাহ বণ্টনের ক্ষেত্রে আপনার সমালোচনা করে, সুতরাং যদি সেগুলো থেকে কিছু পায়, তবে সন্তুষ্ট হয়ে যায়, আর যদি না পায়, তবে তখনই তারা নারায হয়ে যায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৮. আর তাদেরই মধ্যে কিছু এমন আছে যারা সাদ্কাহ্ (বন্টন)-এর ক্ষেত্রে আপনাকে দোষারোপ করে; অতঃপর যদি তাদেরকে এ (সাদ্কাহ্) থেকে কিছু দেয়া হয়, তবে তারা সন্তুষ্ট হয়, আর যদি তাদেরকে এ থেকে কিছু দেয়া না হয়, তবে তারা তৎক্ষণাৎ বিক্ষুব্ধ হয়।
وَ لَوۡ اَنَّہُمۡ رَضُوۡا مَاۤ اٰتٰىہُمُ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ ۙ وَ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ سَیُؤۡتِیۡنَا اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ وَ رَسُوۡلُہٗۤ ۙ اِنَّاۤ اِلَی اللّٰہِ رٰغِبُوۡنَ ﴿۵۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কতই ভাল হতো যদি তারা তাতেই সন্তুষ্ট হতো, যা আল্লাহ্ ও রসূল তাদেরকে দিয়েছেন এবং বলতো, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, এখন আল্লাহ্ আমাদেরকে দিচ্ছেন আপন করুণা থেকে এবং আল্লাহর রসূল; আমরা আল্লাহরই প্রতি আসক্ত।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৯. আর কতোই না উত্তম হতো, যদি তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হতো আর বলতো, ‘আমাদের জন্যে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। অচিরেই আল্লাহ্ আমাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামও আরো) দান করবেন। নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই প্রতি আসক্ত (আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম তাঁরই মাধ্যম/ওয়াসিলা। তাঁর দান করা আল্লাহরই দান করা।’ যদি এ আক্বিদা পোষণ করতো এবং দোষারোপ না করতো, তবে এটি হতো উত্তম।)
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡہَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
যাকাত তো এসব লোকেরই জন্য- যারা অভাবগ্রস্ত, নিতান্ত নিঃস্ব, যারা তা সংগ্রহগ করে আনে, যাদের অন্তরগুলোকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা হয়, ক্রীতদাস-মুক্তির ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আর আল্লাহ্ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬০. নিশ্চয়ই সাদ্কাহ্ (যাকাত) কেবল গরীব, অভাবগ্রস্ত, তা আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্যে এবং সেসব লোকের জন্যে যাদের অন্তরে ইসলামের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য। আর (অধিকন্তু এ যে,) মানব জীবনকে (দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে) মুক্ত করানোর জন্যে, ঋণগ্রস্তদের বোঝা হালকা করার জন্যে, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্যে (যাকাত ব্যয় করা আবশ্যক)। এ (সবকিছু) আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ্ সম্যক অবগত, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
وَ مِنۡہُمُ الَّذِیۡنَ یُؤۡذُوۡنَ النَّبِیَّ وَ یَقُوۡلُوۡنَ ہُوَ اُذُنٌ ؕ قُلۡ اُذُنُ خَیۡرٍ لَّکُمۡ یُؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ یُؤۡمِنُ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ رَحۡمَۃٌ لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مِنۡکُمۡ ؕ وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡذُوۡنَ رَسُوۡلَ اللّٰہِ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۶۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কিছু এমন লোক রয়েছে, যারা ওই অদৃশ্যের সংবাদদাতাকে কষ্ট দেয় আর বলে, ‘তিনি তো কান!’ আপনি বলুন, ‘তিনি তোমাদের মঙ্গলের জন্যই কান হন। আল্লাহর উপর ঈমান আনেন এবং মু’মিনদের কথায় বিশ্বাস করেন; আর তোমাদের মধ্যে যারা মুসলমান, তাদের জন্য রহমত’। এবং যারা আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদয়ায়ক শাস্তি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬১. আর এদের (এ মুনাফিকদের) মাঝে এমন লোকও রয়েছে যারা (সম্মানিত) নবী (ﷺ)-কে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘তিনি তো কেবল কানসর্বস্ব (যা শুনেন তাই বিশ্বাস করেন)’। বলে দিন, ‘তিনি তোমাদের জন্যে কল্যাণের কান। তিনি আল্লাহ্তে ঈমান রাখেন এবং ঈমানদারগণের (কথার) প্রতিও বিশ্বাস রাখেন এবং তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনয়ন করেছে তাদের জন্যে তিনি রহমত। আর যারা রাসূল (ﷺ)-কে (বদ-আকীদা, মন্দ-ধারণা ও খারাপ কথার মাধ্যমে) কষ্ট দেয়, তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’
یَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ لَکُمۡ لِیُرۡضُوۡکُمۡ ۚ وَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗۤ اَحَقُّ اَنۡ یُّرۡضُوۡہُ اِنۡ کَانُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۶۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমাদের সামনে আল্লাহর নামে শপথ করে যেন তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে নেয়; আল্লাহ্ ও রসূলের এ হক অধিক ছিলো যে, তাকে সন্তষ্ট করবে, যদি তারা ঈমান রাখতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬২. হে মুসলমানগণ! (এ মুনাফিকেরা) তোমাদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে তোমাদের সম্মুখে আল্লাহর নামে কসম করে, অথচ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) অধিক হক্বদার যে, তাঁকে সন্তু‘ষ্ট করা হবে; যদি তারা ঈমানদার হতো (তবে এ প্রকৃত সত্য জানতো এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে সন্তুষ্ট করতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট হওয়ার মাধ্যমেই আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, কেননা উভয়ের সন্তুষ্টি একই)।
اَلَمۡ یَعۡلَمُوۡۤا اَنَّہٗ مَنۡ یُّحَادِدِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَاَنَّ لَہٗ نَارَ جَہَنَّمَ خَالِدًا فِیۡہَا ؕ ذٰلِکَ الۡخِزۡیُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۶۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি জানে না যে, যে ব্যক্তি বিরোধিতা করে আল্লাহ্ ও তার রসূলের, তবে তার জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে, যেখানে সে স্থায়ীভাবে থাকবে। এটাই বড় লাঞ্ছনা।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৩. তারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) -এঁর বিরোধিতা করে, তার জন্যে (নির্ধারিত) রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি, যাতে সে চিরকাল বসবাস করবে? এটি চরম অপমান।
یَحۡذَرُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ اَنۡ تُنَزَّلَ عَلَیۡہِمۡ سُوۡرَۃٌ تُنَبِّئُہُمۡ بِمَا فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ قُلِ اسۡتَہۡزِءُوۡا ۚ اِنَّ اللّٰہَ مُخۡرِجٌ مَّا تَحۡذَرُوۡنَ ﴿۶۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
মুনাফিক্বরা ভয় করে- তাদের উপর এমন কোন সূরা নাযিল হয় কিনা, যা তাদের অন্তরের গোপন কথা ব্যক্ত করে দেবে! আপনি বলুন! ‘বিদ্রূপ করতে থাকো, আল্লাহ্ অবশ্যই প্রকাশ করবেন যার তোমাদের ভয় রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৪. মুনাফিকেরা ভয় করে যে, মুসলমানদের প্রতি এমন কোনো সূরা নাযিল করে দেয়া হবে, যা এদের (এ মুনাফিকদের) অন্তরে (লুকায়িত) কথা তাদেরকে ব্যক্ত করে দেবে। বলে দিন, ‘তোমরা উপহাস করতে থাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এমন (বিষয়) প্রকাশ করে দেবেন যার ভয় তোমরা করছো।’
وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ لَیَقُوۡلُنَّ اِنَّمَا کُنَّا نَخُوۡضُ وَ نَلۡعَبُ ؕ قُلۡ اَ بِاللّٰہِ وَ اٰیٰتِہٖ وَ رَسُوۡلِہٖ کُنۡتُمۡ تَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۶۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে মাহবূব! যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, তবে বলবে, ‘আমরা তো এমনি হাসি-খেলার মধ্যে ছিলাম’। আপনি বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্, তার নিদর্শনসমূহ এবং তার রসূলকে বিদ্রূপ করছিলে’?
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৫. আর যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তবে তারা অবশ্যই বলবে, ‘আমরা তো কেবল (সফর এড়িয়ে থাকার জন্যে) আলাপ-আলোচনা ও হাসি তামাশা করছিলাম’। বলে দিন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর সাথে উপহাস করছিলে?’
لَا تَعۡتَذِرُوۡا قَدۡ کَفَرۡتُمۡ بَعۡدَ اِیۡمَانِکُمۡ ؕ اِنۡ نَّعۡفُ عَنۡ طَآئِفَۃٍ مِّنۡکُمۡ نُعَذِّبۡ طَآئِفَۃًۢ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۶۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
মিথ্যা অজুহাত রচনা করো না! তোমরা মুসলমান হয়ে কাফির হয়ে গেছো। যদি আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে ক্ষমা করে দিই, তবে অন্যান্যদের শাস্তি দেবো; এ কারণে যে, তারা অপরাধী ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৬. (এখন) তোমরা অযুহাত পেশ করো না। নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের ঈমান (প্রকাশ)-এর পর কাফের হয়ে গিয়েছো। যদি আমরা তোমাদের মধ্যে এক দলকে ক্ষমাও করে দেই (তবুও) অপর দলকে শাস্তি প্রদান করবো, কারণ, তারা ছিল অপরাধী।
اَلۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتُ بَعۡضُہُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمُنۡکَرِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَقۡبِضُوۡنَ اَیۡدِیَہُمۡ ؕ نَسُوا اللّٰہَ فَنَسِیَہُمۡ ؕ اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ ہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۶۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
মুনাফিক্ব নর ও মুনাফিক্ব নারীগণ এক থলের একই বস্তু, অসৎকর্মের নির্দেশ দেয় এবং সৎকর্মে নিষেধ করে আর নিজেদের মুষ্ঠি বন্ধ রাখে ও তারা আল্লাহ্কে ছেড়ে বসেছে; সুতরাং আল্লাহ্ও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন। নিশ্চয় মুনাফিক্বরা ওই পাকা নির্দেশ অমান্যকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৭. মুনাফিক নারী ও মুনাফিক পুরুষ একে অপরের (শ্রেণী) থেকে। তারা মন্দ বিষয়ের আদেশ দেয়, কল্যাণকর বিষয় নিষেধ করে ও (আল্লাহর পথে ব্যয় করা থেকে) নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে। তারা আল্লাহ্কে ভুলে গিয়েছে, আর আল্লাহ্ তাদেরকে ভুলে গিয়েছেন। নিশ্চয়ই মুনাফিকেরাই নাফরমান।
وَعَدَ اللّٰہُ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتِ وَ الۡکُفَّارَ نَارَ جَہَنَّمَ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ ہِیَ حَسۡبُہُمۡ ۚ وَ لَعَنَہُمُ اللّٰہُ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ مُّقِیۡمٌ ﴿ۙ۶۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ মুনাফিক্ব নর ও মুনাফিক্ব নারীগণ এবং কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মধ্যে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে; সেটা তাদের জন্য যথেষ্ট। আর তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৮. আল্লাহ্ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফেরদেরকে জাহান্নামের অগ্নির অঙ্গীকার করে রেখেছেন, (তারা) এতে চিরকাল থাকবে। এ (অগ্নি) তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ্ তাদের উপর অভিশম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে অনন্ত কালের শাস্তি।
کَالَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ کَانُوۡۤا اَشَدَّ مِنۡکُمۡ قُوَّۃً وَّ اَکۡثَرَ اَمۡوَالًا وَّ اَوۡلَادًا ؕ فَاسۡتَمۡتَعُوۡا بِخَلَاقِہِمۡ فَاسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِخَلَاقِکُمۡ کَمَا اسۡتَمۡتَعَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ بِخَلَاقِہِمۡ وَ خُضۡتُمۡ کَالَّذِیۡ خَاضُوۡا ؕ اُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۶۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
যেমন ওই সব লোক, যারা তোমাদের পূর্ববর্তী যুগে ছিলো, তোমাদের চেয়ে শক্তিতে অধিক ছিলো এবং তাদের সম্পদ ও সন্তান সন্ততি তোমাদের চেয়ে বেশী ছিলো; সুতরাং তারা নিজেদের অংশ ভোগ করে গেছে, অতঃপর তোমরা তোমাদের অংশ ভোগ করেছো, যেমনিভবে তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তাদের অংশ ভোগ করে গেছে। আর তোমরা অনর্থক আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত হয়েছো, যেমন তারা লিপ্ত হয়েছিলো। তাদের কর্ম বিনিষ্ট হয়েছে- দুনিয়া ও আখিরাতে এবং ওই সব লোকই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৯. (হে মুনাফিকেরা! তোমরা) তোমাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায়; তারা তোমাদের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী এবং সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে অধিক ছিল। অতঃপর তারা তাদের (পার্থিব) অংশ ভোগ করেছে; সুতরাং তোমরাও (একইভাবে) তোমাদের অংশ ভোগ করে নিয়েছো, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা (পার্থিব উপভোগের জন্যে) নিজেদের নির্ধারিত অংশ ভোগ করেছিল। আর তোমরাও (একইভাবে) মিথ্যায় নিমজ্জিত রয়েছো যেভাবে তারা মিথ্যায় নিমজ্জিত ছিল। তাদের আমলসমূহ বরবাদ হয়ে গিয়েছে ইহকালে ও পরকালে, আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
اَلَمۡ یَاۡتِہِمۡ نَبَاُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّ عَادٍ وَّ ثَمُوۡدَ ۬ۙ وَ قَوۡمِ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اَصۡحٰبِ مَدۡیَنَ وَ الۡمُؤۡتَفِکٰتِ ؕ اَتَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانَ اللّٰہُ لِیَظۡلِمَہُمۡ وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۷۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের নিকট কি তাদের পূর্ববর্তীদের সংবাদ আসে নি- নূহের সম্প্রদায়, ‘আদ, সামূদ ও ইব্রাহীমের সম্প্রদায়, এবং মাদ্ইয়ানবাসীদের আর ওই বস্তিগুলোর, যেগুলোকে উল্টিয়ে দেওয়া হয়েছে? তাদের রসূলগণ তাদের নিয়ে এসেছিলেন। সুতরাং তাদের উপর যুলুম করা আল্লাহর শান ছিলো না, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের আত্নাগুলোর উপর অত্যাচারী ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭০. তাদের নিকট কি সেসব লোকদের সংবাদ পৌঁছেনি, যারা তাদের পূর্বে ছিল? নূহের সম্প্রদায়, ’আদ, সামূদ, ইবরাহীমের সম্প্রদায়, মাদইয়ানের বাসিন্দা ও বিধ্বস্ত জনপদের অধিবাসী; তাদের নিকট(ও) তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আগমন করেছিলেন (কিন্তু তারা নাফরমানী করেছিল)। সুতরাং তাদের প্রতি যুলুম করা আল্লাহর শান নয়, বরং তারা (সত্য প্রত্যাখান করার কারণে) নিজেরাই নিজেদের উপর যুলুম করেছিলো।
وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ یُطِیۡعُوۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ ؕ اُولٰٓئِکَ سَیَرۡحَمُہُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۷۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মুসলমান নর ও মুসলমান নারীগণ একে অপরের বন্ধু; সৎকর্মের নির্দেশ দেয় এবং প্রতিটি অসৎকর্মে নিষেধ করে; নামায কায়েম রাখে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ্ ও (তার) রসূলের নির্দেশ মান্য করে। তারা ওই সব লোক, যাদের উপর আল্লাহ্ সমসা দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭১. আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের বন্ধু ও সাহায্যকারী। তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎ কাজে নিষেধ করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এঁর আনুগত্য করে। তাদেরই উপর আল্লাহ্ অচিরেই অনুগ্রহ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বড়ই মহাপরাক্রমশালী, অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান।
وَعَدَ اللّٰہُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا وَ مَسٰکِنَ طَیِّبَۃً فِیۡ جَنّٰتِ عَدۡنٍ ؕ وَ رِضۡوَانٌ مِّنَ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۷۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ মুসলমান নর ও মুসলমান নারীদেরকে জান্নাতসমূহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান, যে গুলোর মধ্যে তারা স্থায়ী হবে; এবং বসবাস করার বাগানসমূহের মধ্যে পবিত্র স্থানগুলোর; এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই হচ্ছে মহা সাফল্যলাভ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭২. আল্লাহ্ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের জন্যে অঙ্গীকার করেছেন এমন জান্নাতের, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত; তারা তাতে চিরকাল থাকবে। আর এমন পূতঃপবিত্র বসবাসস্থলেরও (অঙ্গীকার করেছেন), যা জান্নাতের বিশেষ স্থানে চিরসবুজ বাগানে অবস্থিত। আর (এরপর) আল্লাহর সন্তুষ্টি (এ সকল নিয়ামতের চেয়ে) বৃহত্তম (যা মহা প্রতিদানের আকারে প্রাপ্য হবে)। এটিই মহা সাফল্য।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ جَاہِدِ الۡکُفَّارَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ اغۡلُظۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۷۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী)! জিহাদ করুন কাফির ও মুনাফিক্বদের বিরুদ্ধে এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। আর তাদের ঠিকানা দোযখ এবং তা কতোই নিকৃষ্ট স্থান প্রত্যাবর্তনের!
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৩. হে (সম্মানিত) নবী! আপনি কাফের এবং মুনাফিকদের সাথে সংগ্রাম করুন এবং (শান্তি ভঙ্গ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে) তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করুন। আর তাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং এটি কতো নিকৃষ্ট ঠিকানা!
یَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ مَا قَالُوۡا ؕ وَ لَقَدۡ قَالُوۡا کَلِمَۃَ الۡکُفۡرِ وَ کَفَرُوۡا بَعۡدَ اِسۡلَامِہِمۡ وَ ہَمُّوۡا بِمَا لَمۡ یَنَالُوۡا ۚ وَ مَا نَقَمُوۡۤا اِلَّاۤ اَنۡ اَغۡنٰہُمُ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ مِنۡ فَضۡلِہٖ ۚ فَاِنۡ یَّتُوۡبُوۡا یَکُ خَیۡرًا لَّہُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّتَوَلَّوۡا یُعَذِّبۡہُمُ اللّٰہُ عَذَابًا اَلِیۡمًا ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ مَا لَہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۷۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর শপথ করে যে, তারা বলে নি; এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তারা কুফরের কথা বলেছে আর ইসলামের মধ্যে এসে কাফির হয়ে গেছে এবং তারা তাই চেয়েছিলো, যা তারা পায় নি; আর তাদের নিকট কি মন্দ লেগেছে? এ কথাই নয় কি যে, আল্লাহ্ ও রসূল তাদেরকে নিজ কৃপায় অভাবমুক্ত করে দিয়েছেন? সুতরাং তারা যদি তাওবা করে, তবে তাদের জন্য ভাল হবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আল্লাহ্ তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবেন- দুনিয়া ও আখিরাতে এবং পৃথিবীতে না তাদের কোন অভিভাবক থাকবে, না সাহায্যকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৪. (এসব মুনাফিক) আল্লাহর নামে শপথ করে যে, তারা (কিছুই) বলেনি, অথচ তারা অবশ্যই কুফরী কথা বলেছে এবং তারা ইসলামে নিজেদের ঈমান (প্রকাশের) পর কাফের হয়ে গিয়েছে। আর তারা (কতিপয় কষ্টদায়ক বিষয়ের) কামনাও করেছিল, যা তারা করতে পারেনি। আর তারা (ইসলাম ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের আচরণের) কোনো কিছুই অপছন্দ করতে পারেনি, এ ব্যতীত যে, তাদেরকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) তাঁদের অনুগ্রহে সম্পদশালী করেছিলেন। সুতরাং এরা যদি (এখনো) তওবা করে তবে তা তাদের জন্যে উত্তম, আর যদি (এভাবে) মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আল্লাহ্ তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে (উভয় জীবনেই) যন্ত্রণাদায়ক আযাবে নিমজ্জিত করবেন, আর তারা পৃথিবীতে তাদের জন্যে না পাবে কোনো বন্ধু আর না কোনো সাহায্যকারী।
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ عٰہَدَ اللّٰہَ لَئِنۡ اٰتٰىنَا مِنۡ فَضۡلِہٖ لَنَصَّدَّقَنَّ وَ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۷۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কিছু এমন লোক রয়েছে, যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিলো, ‘যদি তিনি আমাদেরকে আপন কৃপা থেকে দান করেন, তবে আমরা নিশ্চয় সাদক্বাহ দেবো এবং অবশ্যই ভাল মানুষ হয়ে যাবো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৫. এদের (এ মুনাফিকদের) মাঝে (কতিপয়) এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর নিকট অঙ্গীকার করেছিল, ‘যদি তিনি আমাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে (সম্পদ) দান করেন, তবে আমরা অবশ্যই (তাঁর পথে) দান করবো এবং নেক্কারদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
فَلَمَّاۤ اٰتٰہُمۡ مِّنۡ فَضۡلِہٖ بَخِلُوۡا بِہٖ وَ تَوَلَّوۡا وَّ ہُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ ﴿۷۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন আল্লাহ্ তাদেরকে আপন কৃপা থেকে দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করতে লাগলো এবং মুখ ফিরিয়ে উল্টে গেলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৬. অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহে (সম্পদ) দান করলেন (তখন) তারা এতে কৃপণতা শুরু করলো এবং (নিজেদের অঙ্গীকার থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিল।
فَاَعۡقَبَہُمۡ نِفَاقًا فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ اِلٰی یَوۡمِ یَلۡقَوۡنَہٗ بِمَاۤ اَخۡلَفُوا اللّٰہَ مَا وَعَدُوۡہُ وَ بِمَا کَانُوۡا یَکۡذِبُوۡنَ ﴿۷۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর এর পেছনে আল্লাহ্ তাদের অন্তরে মুনাফিক্বী স্থাপন করলেন ওই দিন পর্যন্ত, যেটার সাথে তাদের সাক্ষাৎ হবে, পরিণাম এটার যে, তারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং পরিণাম এরই যে, তারা মিথ্যা বলতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৭. অতঃপর তিনি তাদের অন্তরে (তাদের স্বীয় কৃপণতার পরিণতিতে) কপটতা সৃষ্টি করে দিলেন, যা স্থায়ী থাকবে তাঁর সাথে মিলিত হবার দিন পর্যন্ত, এ কারণে যে, তারা আল্লাহর সাথে নিজেদের কৃত অঙ্গীকার লঙ্ঘন করেছে, আর এ কারণে(ও) যে তারা মিথ্যা কথা বলতো।
اَلَمۡ یَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ سِرَّہُمۡ وَ نَجۡوٰىہُمۡ وَ اَنَّ اللّٰہَ عَلَّامُ الۡغُیُوۡبِ ﴿ۚ۷۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি জানে না যে, আল্লাহ্ তাদের অন্তরের গোপন কথা এবং তাদের কানাঘুষা জানেন আর এও যে, আল্লাহ্ সমস্ত অদৃশ্য বিশেষভাবে জানেন?
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৮. তারা কি জানে না যে, আল্লাহ্ তাদের গুপ্ত বিষয় ও গোপন পরামর্শ জানেন; আরো এ যে, আল্লাহ্ সকল অদৃশ্য বিষয়ে সম্যক অবগত?
اَلَّذِیۡنَ یَلۡمِزُوۡنَ الۡمُطَّوِّعِیۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ فِی الصَّدَقٰتِ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ اِلَّا جُہۡدَہُمۡ فَیَسۡخَرُوۡنَ مِنۡہُمۡ ؕ سَخِرَ اللّٰہُ مِنۡہُمۡ ۫ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۷۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই সব লোক, যারা দোষারোপ করে ওই সব মুসলমানকে, যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাদ্ক্বাহ দেয় এবং তাদেরকেও যারা কিছুই পায় না, কিন্তু নিজ পরিশ্রম দ্বারা, অতঃপর তারা তাদেরকে বিদ্রূপ করে। আল্লাহ্ তাদের বিদ্রূপের শাস্তি প্রদান করবেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৯. যারা সন্তুষ্টচিত্তে ও সাগ্রহে দানকারী মুমিনদের প্রতি (তাদের) সাদ্কাহর ক্ষেত্রে (লোক দেখানো ও বাধ্য হয়ে দান করার) অভিযোগ করে এবং (অভিযোগ করে) সেসব (গরীব মুসলমান)-এর প্রতিও যারা নিজেদের মেহনত ও পরিশ্রম ব্যতীত (দান করার অতিরিক্ত কিছু) পায় না; সুতরাং যারা (আল্লাহর পথে তাদের দানের আগ্রহকেও) উপহাস করে আল্লাহ্ তাদের উপহাসের দন্ড দেবেন। আর তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
اِسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ اَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ ؕ اِنۡ تَسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ سَبۡعِیۡنَ مَرَّۃً فَلَنۡ یَّغۡفِرَ اللّٰہُ لَہُمۡ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَفَرُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۸۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন কিংবা না-ই করুন, যদি আপনি তাদের জন্য সত্তরবার ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবুও আল্লাহ্ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না। এটা এজন্য যে, তারা আল্লাহ্ ও তার রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহ্ ফাসিক্বদেরকে সৎপথ প্রদান করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮০. আপনি এ সকল (দুর্ভাগা, বেআদব ও আপনার শানে দোষারোপকারী মুনাফিক)-এর জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা না-ই করুন, আপনি (স্বীয় স্বভাবজাত সহমর্মিতা, ক্ষমা ও উপেক্ষা করার মহিমান্বিত অভ্যাসের প্রেক্ষিতে) তাদের জন্যে সত্তরবার ক্ষমাপ্রার্থনা করলেও আল্লাহ্ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না। তা এ জন্যে যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর সাথে কুফরী করেছে। আর আল্লাহ নাফরমান সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
فَرِحَ الۡمُخَلَّفُوۡنَ بِمَقۡعَدِہِمۡ خِلٰفَ رَسُوۡلِ اللّٰہِ وَ کَرِہُوۡۤا اَنۡ یُّجَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ قَالُوۡا لَا تَنۡفِرُوۡا فِی الۡحَرِّ ؕ قُلۡ نَارُ جَہَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا ؕ لَوۡ کَانُوۡا یَفۡقَہُوۡنَ ﴿۸۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
যারা পশ্চাতে রয়ে গেলো তারা এ কথার উপর খুশী হলো যে, তারা রসূলের পশ্চাতে বসে আছে এবং তাদের নিকট একথা পছন্দ হলো না যে, তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করবে; এবং বললো, ‘এ গরমের মধ্যে (অভিযানে) বের হয়ো না’ আপনি বলুন, ‘জাহান্নামের আগুন সর্বাপেক্ষা বেশি গরম’। যে কোন প্রকারে তাদের বুঝে আসতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮১. রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এঁর বিরোধিতার কারণে (জিহাদ থেকে) পশ্চাতে থাকা (এ মুনাফিকেরা) নিজেদের গৃহে বসে থাকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করছিল। তারা নিজেদের সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করাকে অপছন্দ করছিলো আর বলছিলো, ‘এ গরমে বের হয়ো না’। বলে দিন, ‘জাহান্নামের আগুন সবচেয়ে বেশী উত্তপ্ত’। যদি তারা বুঝতো (তবে কতোই না উত্তম হতো)!
فَلۡیَضۡحَکُوۡا قَلِیۡلًا وَّ لۡیَبۡکُوۡا کَثِیۡرًا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۸۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং তাদের উচিত যেন অল্প হাসে এবং প্রচুর কাঁদে; ফলস্বরূপ সেটারই, যা তারা উপার্জন করতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮২. অতএব তারা অল্প হেসে নিক, আর প্রচুর কাঁদবে (কেননা পরকালে তাদের অধিক ক্রন্দন করতে হবে); এটি এরই প্রতিফল যা তারা উপার্জন করতো।
فَاِنۡ رَّجَعَکَ اللّٰہُ اِلٰی طَآئِفَۃٍ مِّنۡہُمۡ فَاسۡتَاۡذَنُوۡکَ لِلۡخُرُوۡجِ فَقُلۡ لَّنۡ تَخۡرُجُوۡا مَعِیَ اَبَدًا وَّ لَنۡ تُقَاتِلُوۡا مَعِیَ عَدُوًّا ؕ اِنَّکُمۡ رَضِیۡتُمۡ بِالۡقُعُوۡدِ اَوَّلَ مَرَّۃٍ فَاقۡعُدُوۡا مَعَ الۡخٰلِفِیۡنَ ﴿۸۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর হে মাহবূব! যদি আল্লাহ্ আপনাকে তাদের মধ্য থেকে কোন দলের দিকে ফেরত নিয়ে যান এবং তারা আপনার নিকট জিহাদে বের হবার অনুমতি প্রার্থনা করে, তবে আপনি বলে দিন, ‘তোমরা কখনো আমার সাথে বের হবে না এবং কখনো আমার সঙ্গে কোন শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না। তোমরা প্রথমবার বসে থাকাই পছন্দ করেছো। সুতরাং বসে থাকো তাদেরই সাথে, যারা পেছনে বসে থাকে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৩. অতঃপর (হে হাবীব! তাবুক অভিযান থেকে অবসর হবার পর) যদি আল্লাহ্ আপনাকে এসব (মুনাফিক)-এর কোনো একটি দলের কাছে পুনরায় ফিরিয়ে আনেন এবং তারা আপনার নিকট (ভবিষ্যতে কোনো সংঘাতে জিহাদের জন্যে) বের হবার অনুমতি চায় তবে তাদেরকে বলুন, ‘(এখন) তোমরা আমার সাথে কখনও বের হবে না এবং আমার সাথে কোনোক্রমেই শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না; (কেননা) তোমরা প্রথবার (জিহাদ পরিহার করে) পশ্চাতে বসে থাকায় খুশি হয়েছিলে। সুতরাং (এখনও) যারা পশ্চাতে বসে আছে, তাদের সাথে বসে থাকো।’
وَ لَا تُصَلِّ عَلٰۤی اَحَدٍ مِّنۡہُمۡ مَّاتَ اَبَدًا وَّ لَا تَقُمۡ عَلٰی قَبۡرِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ کَفَرُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ مَا تُوۡا وَ ہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ﴿۸۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের মধ্যে কারো মৃতের উপর কখনো (জানাযার) নামায পড়বেন না এবং না তার কবরের পাশে দাড়াবেন। নিশ্চয় তারা আল্লাহ্ ও রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং নির্দেশ অমান্য করার (ফাসিক্বী) মধ্যেই তারা মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৪. আর এদের (এ মুনাফিকদের) কেউ মৃত্যুবরণ করলে আপনি কখনও তার (জানাযার) নামায পড়বেন না, আর না আপনি তার কবরের পাশে দাঁড়াবেন, (কেননা কোনো স্থানে আপনার পা রাখাও রহমত ও বরকতের কারণ হয়ে যায়, অথচ সে আপনার রহমত ও বরকতের উপযুক্ত নয়)। নিশ্চয়ই তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর সাথে কুফরী করেছে এবং নাফরমান অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করেছে।
وَ لَا تُعۡجِبۡکَ اَمۡوَالُہُمۡ وَ اَوۡلَادُہُمۡ ؕ اِنَّمَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ اَنۡ یُّعَذِّبَہُمۡ بِہَا فِی الدُّنۡیَا وَ تَزۡہَقَ اَنۡفُسُہُمۡ وَ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۸۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের সম্পদ ও সন্তান সন্ততির উপর আশ্চর্যবোধ করবেন না। আল্লাহ্ এটাই চান যে, তা দ্বারা তাদেরকে পৃথিবীতে শাস্তি দেবেন এবং কুফরের উপরই তাদের শেষ নিঃশ্বাস বের হয়ে যাক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৫. আর তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে। আল্লাহ্ তো কেবল এ চান যে, এসবের মাধ্যমে তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিবেন এবং (অবশ্যই) কাফের অবস্থায় তাদের প্রাণ বের হবে।
وَ اِذَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ اَنۡ اٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ جَاہِدُوۡا مَعَ رَسُوۡلِہِ اسۡتَاۡذَنَکَ اُولُوا الطَّوۡلِ مِنۡہُمۡ وَ قَالُوۡا ذَرۡنَا نَکُنۡ مَّعَ الۡقٰعِدِیۡنَ ﴿۸۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয় এ মর্মে যে, আল্লাহর উপর ঈমান আনো এবং তার রসূলের সঙ্গী হয়ে জিহাদ করো, তখন তাদের মধ্যে সামর্থ্যবান লোকেরা আপনার নিকট অব্যাহতি চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে রেহাই দিন যাতে আমরা, যারা বসে থাকে তাদের সাথী হয়ে যাই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৬. আর যখন (এমন) কোনো সূরা অবতীর্ণ হয় যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করো এবং তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর সঙ্গী হয়ে জিহাদ করো, তখন তাদের মধ্যে স্বচ্ছল ও প্রভাবশালী লোকেরা আপনার কাছে অবকাশ চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে অব্যাহতি দিন, আমরা (পশ্চাতে) উপবিষ্টদের মধ্যে থেকে যাই’।
رَضُوۡا بِاَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مَعَ الۡخَوَالِفِ وَ طُبِعَ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَہُمۡ لَا یَفۡقَہُوۡنَ ﴿۸۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের পছন্দ হলো যে, পেছনে যেসব নারী রয়ে গেছে তাদেরই সাথী হয়ে যাবে এবং তাদের অন্তরের উপর মোহর ছেপে দেয়া হয়েছে; সুতরাং তারা কিছুই বুঝে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৭. তারা পশ্চাতে অবস্থানকারী নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের সাথে থেকে যেতে পেরে সন্তুষ্ট হয়েছে, আর তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং তারা কিছুই বুঝে না।
لٰکِنِ الرَّسُوۡلُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ جٰہَدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ الۡخَیۡرٰتُ ۫ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۸۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
কিন্তু রসূল এবং যারা তার সঙ্গে ঈমান এনেছে, তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদ করেছে এবং তাদের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে; আর এরাই লক্ষ্যস্থলে পৌছছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৮. তবে রাসূল (ﷺ) এবং যারা তাঁর সাথে ঈমান আনয়ন করেছে, নিজেদের সম্পদ ও জীবন দিয়ে জিহাদ করছে; তাদেরই জন্যে রয়েছে সকল কল্যাণ। আর তারাই লক্ষ্য অর্জনকারী।
اَعَدَّ اللّٰہُ لَہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۸۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছেন বেহেশতসমূহ, যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান; তারা সর্বদা তাতেই অবস্থান করবে। এটাই মহা সাফল্যলাভ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৯. আল্লাহ্ তাদের জন্যে তৈরী রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত, (তারা) তাতে চিরকাল বসবাসকারী। এটিই মহা সাফল্য।
وَ جَآءَ الۡمُعَذِّرُوۡنَ مِنَ الۡاَعۡرَابِ لِیُؤۡذَنَ لَہُمۡ وَ قَعَدَ الَّذِیۡنَ کَذَبُوا اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ ؕ سَیُصِیۡبُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۹۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অজুহাত রচনাকারী মরুবাসীরা আসলো যেন তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং বসে রইলো ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্ ও রসূলের সাথে মিথ্যা বলেছে; অতি সত্ত্বর তাদের মধ্যেকার কাফিরদের নিকট বেদনাদায়ক শাস্তি পৌছবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯০. আর মরুবাসীদের মধ্যে কিছু অযুহাত অন্বেষণকারী (অযুহাত পেশ করার জন্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের দরবারে) এসেছে, যাতে তাদেরকে(ও) অনুমতি দেয়া হয়। আর যারা (নিজেদের মুমিন দাবী করতে) আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর সাথে মিথ্যা বলেছিল, (জিহাদ ছেড়ে) তারা পশ্চাতে রয়ে গেল। অচিরেই তাদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে তাদের নিকট যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পৌঁছবে।
لَیۡسَ عَلَی الضُّعَفَآءِ وَ لَا عَلَی الۡمَرۡضٰی وَ لَا عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ مَا یُنۡفِقُوۡنَ حَرَجٌ اِذَا نَصَحُوۡا لِلّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ ؕ مَا عَلَی الۡمُحۡسِنِیۡنَ مِنۡ سَبِیۡلٍ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿ۙ۹۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
দুর্বলদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, না পীড়িতদের বিরুদ্ধে এবং না তাদের বিরুদ্ধে, যাদের ব্যয় করার সামর্থ্য নেই যখন তারা আল্লাহ্ ও রসূলের শুভাকাঙ্ক্ষী থাকবে। সৎকর্মপরায়ণদের বিরুদ্ধে কোন পথ নেই; এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯১. (অক্ষম) বয়স্কদের কোনো অপরাধ নেই, না অসুস্থদের, আর না সেসব লোকদের(ও) যাদের ব্যয় করার মতো (সচ্ছলতাও) নেই, অথচ তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর প্রতি একনিষ্ঠ ও অনুগত। নেক্কারদের (অর্থাৎ আত্মিকভাবে পরিশুদ্ধদের) প্রতি অভিযোগের কোনো পথ নেই। আর আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
وَّ لَا عَلَی الَّذِیۡنَ اِذَا مَاۤ اَتَوۡکَ لِتَحۡمِلَہُمۡ قُلۡتَ لَاۤ اَجِدُ مَاۤ اَحۡمِلُکُمۡ عَلَیۡہِ ۪ تَوَلَّوۡا وَّ اَعۡیُنُہُمۡ تَفِیۡضُ مِنَ الدَّمۡعِ حَزَنًا اَلَّا یَجِدُوۡا مَا یُنۡفِقُوۡنَ ﴿ؕ۹۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং না তাদের উপর, যারা আপনার দরবারে উপস্থিত হয় যেন আপনি তাদেরকে বাহন দান করেন, আপনার নিকট এ জবাব পেয়েছে যে, ‘আমার নিকট কোন কিছু মওজুদ নেই, যার উপর তোমাদেরকে আরোহণ করাবো’। ফলে, তারা এভাবে ফিরে যায় যে, তাদের চোখসমূহ থেকে অশ্রু বিগলিত হতে থাকে এ দুঃখে যে, তারা অর্থ ব্যয়ের সামর্থ্য পায় নি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯২. আর না সেসব লোকের প্রতি (দোষারোপ ও অভিযোগের কোনো পথ রয়েছে) যারা আপনার নিকট (এ জন্যে) হাযির হলো যে, আপনি তাদেরকে (জিহাদের জন্যে) বাহনের ব্যবস্থা করে দিবেন (কেননা তাদের নিজেদের কোনো বাহন ছিল না, তখন) আপনি বলেছিলেন, ‘আমিও (অতিরিক্ত বাহন) পাচ্ছি না যার উপর তোমাদেরকে আরোহন করাতে পারি’। তারা (তখন আপনার অনুমতিক্রমে জিহাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার) দুঃখে অশ্রু বিগলিত নয়নে ফিরে গেল; (আফসোস) তারা এমন পরিমাণ পাথেয় পায়নি যা তারা ব্যয় করতে পারতো (এবং জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারতো)।
اِنَّمَا السَّبِیۡلُ عَلَی الَّذِیۡنَ یَسۡتَاۡذِنُوۡنَکَ وَ ہُمۡ اَغۡنِیَآءُ ۚ رَضُوۡا بِاَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مَعَ الۡخَوَالِفِ ۙ وَ طَبَعَ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
অভিযোগ তো তাদেরই বিরুদ্ধে যারা আপনার নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করে; অথচ তারা ধনবান। তাদের পছন্দ হলো যে, স্ত্রীলোকদের সাথী হয়ে পেছনে বসে থাকবে; এবং আল্লাহ্ তাদের অন্তরের উপর মোহর করে দিয়েছেন। ফলে তারা কিছুই জানে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৩. (অভিযোগের) পথ তো কেবল তাদের জন্যে রয়েছে যারা সম্পদশালী হয়েও আপনার নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করে। তারা পশ্চাতে থেকে যাওয়া নারী ও প্রতিবন্ধীদের সাথে থাকাতেই সন্তুষ্ট ছিল। আর আল্লাহ্ তাদের অন্তর মোহরাঙ্কিত করে দিয়েছেন, সুতরাং তারা বুঝতেই পারে না (প্রকৃত লাভ ও ক্ষতি কী)।
یَعۡتَذِرُوۡنَ اِلَیۡکُمۡ اِذَا رَجَعۡتُمۡ اِلَیۡہِمۡ ؕ قُلۡ لَّا تَعۡتَذِرُوۡا لَنۡ نُّؤۡمِنَ لَکُمۡ قَدۡ نَبَّاَنَا اللّٰہُ مِنۡ اَخۡبَارِکُمۡ ؕ وَ سَیَرَی اللّٰہُ عَمَلَکُمۡ وَ رَسُوۡلُہٗ ثُمَّ تُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমাদের নিকট অজুহাত বানিয়ে পেশ করবে যখন তোমরা তাদের দিকে ফিরে যাবে। আপনি বলুন, ‘অজুহাত বানিয়ে পেশ করো না, আমরা তোমাদেরকে কখনো বিশ্বাস করবো না। আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানিয়ে দিয়েছেন এবং এখন আল্লাহ্ ও রসূল তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন। অতঃপর তোমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করে যাবে, যিনি গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছু জানেন। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা কিছু তোমরা করছিলে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৪. (হে মুসলমানগণ!) তারা তোমাদের নিকট অজুহাত পেশ করবে যখন তোমরা (তাবুক সফর থেকে) তাদের নিকট ফিরে আসো। (হে হাবীব!) আপনি বলবেন, ‘বাহানা করো না, আমরা কখনো তোমাদের কথা বিশ্বাস করবো না। আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমাদের অবস্থা অবহিত করে দিয়েছেন। আর এখন (ভবিষ্যতে দুনিয়াতেও) তোমাদের কর্মকান্ড দেখবেন আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ); অতঃপর (পরকালেও) তোমাদেরকে সমস্ত গোপন ও প্রকাশ্য বিষয়ে অবগত (প্রতিপালক)-এঁর দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে সেসব (কর্মকান্ড) অবহিত করবেন যা তোমরা করতে।
سَیَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ لَکُمۡ اِذَا انۡقَلَبۡتُمۡ اِلَیۡہِمۡ لِتُعۡرِضُوۡا عَنۡہُمۡ ؕ فَاَعۡرِضُوۡا عَنۡہُمۡ ؕ اِنَّہُمۡ رِجۡسٌ ۫ وَّ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ۚ جَزَآءًۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۹۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এখন তারা তোমাদের সামনে আল্লাহর শপথ করবে, যখন তোমরা তাদের দিকে ফিরে যাবে এ কারণে যে, তোমরা তাদের চিন্তা ভবনায় থাকবে না। তবে হ্যাঁ, তোমরা তাদের চিন্তা-ভাবনা ছেড়ে দাও। তারা তো নিরেট অপবিত্র এবং তাদের ঠিকানা জাহান্নাম; ফলস্বরূপ সেটারই, যা তারা উপার্জন করতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৫. এখন তারা তোমাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নামে শপথ করবে যখন তোমরা তাদের নিকট ফিরে যাবে, যেন তোমরা তাদেরকে নিষ্কৃতি দাও। সুতরাং তাদেরকে উপেক্ষা করো। অবশ্যই তারা অপবিত্র। আর তাদের ঠিকানা জাহান্নাম, তারা যা উপার্জন করতো এটি তার প্রতিদান।
یَحۡلِفُوۡنَ لَکُمۡ لِتَرۡضَوۡا عَنۡہُمۡ ۚ فَاِنۡ تَرۡضَوۡا عَنۡہُمۡ فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یَرۡضٰی عَنِ الۡقَوۡمِ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۹۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমাদের সামনে শপথগুলো করছে যেন তোমরা তাদের প্রতি তুষ্ট হও; সুতরাং যদি তোমরা তাদের প্রতি তুষ্ট হয়ে যাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ তো ফাসিক্ব লোকদের প্রতি তুষ্ট হবেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৬. তারা তোমাদের উদ্দেশ্যে শপথ করবে, যাতে তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও। সুতরাং (হে মুসলমানগণ!) যদিও তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও, আল্লাহ্ নাফরমান সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না।
اَلۡاَعۡرَابُ اَشَدُّ کُفۡرًا وَّ نِفَاقًا وَّ اَجۡدَرُ اَلَّا یَعۡلَمُوۡا حُدُوۡدَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ عَلٰی رَسُوۡلِہٖ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۹۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
মরুবাসীগণ কুফর ও মুনাফিক্বীর মধ্যে কঠোরতর এবং এরই উপযোগী যে, আল্লাহ্ যে নির্দেশ আপন রসূলের উপর অবতীর্ণ করেন তা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবে এবং আল্লাহ্ জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৭. (এ সকল) যাযাবর মরুবাসীরা অনমনীয় কাফের এবং কঠোরতম মুনাফিক। আর (নিজেদের কুফরী ও মুনাফিকীর কঠোরতার কারণে) তারা ওই বিধানের সীমারেখার ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার উপযোগী যা আল্লাহ্ স্বীয় রাসূল (ﷺ)-এঁর প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
وَ مِنَ الۡاَعۡرَابِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مَا یُنۡفِقُ مَغۡرَمًا وَّ یَتَرَبَّصُ بِکُمُ الدَّوَآئِرَ ؕ عَلَیۡہِمۡ دَآئِرَۃُ السَّوۡءِ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۹۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কিছু সংখ্যক মরুবাসী হচ্ছে তারাই, যারা যা কিছু আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাকে অর্থদণ্ড বলে মনে করে আর তোমাদের উপর ভাগ্য-বিপর্যয় আসার প্রতীক্ষায় থাকে; তাদের উপরই রয়েছে মন্দ ভাগ্য চক্র; এবং আল্লাহ্ শ্রোতা জ্ঞাতা।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৮. আর এ সকল যাযাবর মরুবাসীর মধ্যে এমন লোক(ও) রয়েছে, যারা (আল্লাহ্ পথে) ব্যয় করাকে জরিমানা মনে করে এবং তোমাদের উপর যুগের আবর্তনের (অর্থাৎ বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্টের) অপেক্ষা করে। (বালা-মুসিবতের) নিকৃষ্ট আবর্তন তাদেরই উপর। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَ مِنَ الۡاَعۡرَابِ مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ یَتَّخِذُ مَا یُنۡفِقُ قُرُبٰتٍ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ صَلَوٰتِ الرَّسُوۡلِ ؕ اَلَاۤ اِنَّہَا قُرۡبَۃٌ لَّہُمۡ ؕ سَیُدۡخِلُہُمُ اللّٰہُ فِیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۹۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কিছু সংখ্যক গ্রাম্য লোক হচ্ছে তারাই, যারা আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামতের উপর ঈমান রাখে এবং যা কিছু ব্যয় করে তাকে আল্লাহর নৈকট্যসমূহ এবং রসূলের নিকট দো’আসমূহ লাভ করার উপায় মনে করে। হ্যাঁ হ্যাঁ, তা তাদের জন্য (আল্লাহর) সান্নিধ্য লাভের উপায়। আল্লাহ্ অতি সত্ত্বর তাদেরকে নিজ রহমতের মধ্যে দাখিল করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৯. আর মরুবাসীদের মধ্যে(ই) এমন ব্যক্তি(ও) রয়েছে, যে আল্লাহ্ ও পরকালে ঈমান রাখে, আর যা কিছু (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে তা আল্লাহর নৈকট্য ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামে)-এঁর (রহমতে পূর্ণ) দোয়া লাভের উপলক্ষ মনে করে। শুনে রেখো! বাস্তবিকই তা তাদের জন্যে নৈকট্য লাভের মাধ্যম। শীঘ্রই আল্লাহ্ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অবগাহন করাবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَ السّٰبِقُوۡنَ الۡاَوَّلُوۡنَ مِنَ الۡمُہٰجِرِیۡنَ وَ الۡاَنۡصَارِ وَ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡہُمۡ بِاِحۡسَانٍ ۙ رَّضِیَ اللّٰہُ عَنۡہُمۡ وَ رَضُوۡا عَنۡہُ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ تَحۡتَہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَبَدًا ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۱۰۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সবার মধ্যে অগ্রগামী প্রথম মুহাজির ও আনসার আর যারা সৎকর্মের সাথে তাদের অনুসারী হয়েছে, আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট; আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন বাগানসমূহ (জান্নাতসমূহ), যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান। তারা সদা সর্বদা সেগুলোর মধ্যে অবস্থান করবে। এটাই হচ্ছে মহা সাফল্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০০. আর মুহাজির এবং তাদের সাহায্যকারী (আনসার)-দের মধ্যে ঈমান আনয়নে অগ্রগামী এবং আত্মিক উৎকর্ষতায় তাদের আনুগত্যকারীগণ; আল্লাহ্ এদের (সকলের) প্রতি সন্তুষ্ট, আর তারাও (সকলে) তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। আর তিনি তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত। তারা তাতে চিরকাল বসবাসকারী। এটিই মহা সাফল্য।
وَ مِمَّنۡ حَوۡلَکُمۡ مِّنَ الۡاَعۡرَابِ مُنٰفِقُوۡنَ ؕۛ وَ مِنۡ اَہۡلِ الۡمَدِیۡنَۃِ ۟ۛؔ مَرَدُوۡا عَلَی النِّفَاقِ ۟ لَا تَعۡلَمُہُمۡ ؕ نَحۡنُ نَعۡلَمُہُمۡ ؕ سَنُعَذِّبُہُمۡ مَّرَّتَیۡنِ ثُمَّ یُرَدُّوۡنَ اِلٰی عَذَابٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۰۱﴾ۚ
📗কানযুল ঈমান:
এবং তোমাদের আশপাশের কিছু সংখ্যক মরুবাসী মুনাফিক্ব আর কিছু সংখ্যক মদীনাবাস্বী; তাদের স্বভাবই হয়ে গেছে মুনাফিক্বী। আপনি তাদেরকে জানেন না, আমি তাদের জানি। অতি সত্বর আমি তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেবো। অতঃপর মহাশাস্তির দিকে তারা প্রত্যাবর্তিত হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০১. আর (হে মুসলমানগণ!) তোমাদের আশপাশের যাযাবর গ্রাম্য গোঁয়াড়দের মধ্যে কিছু মুনাফিক রয়েছে, আর মদীনার কিছু বাসিন্দাও। তারা মুনাফিকীতে সিদ্ধহস্ত। আপনি তাদেরকে (এখনো) জানেন না, আমরা তাদেরকে জানি (পরবর্তীতে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকেও সমস্ত মুনাফিকদের অবগতি ও পরিচয় দান করা হয়েছে)। অচিরেই আমরা তাদেরকে দু’বার (এ দুনিয়াতেই) শাস্তি দেবো।* অতঃপর তারা (কিয়ামতে) মহা শাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। [*একবার যখন তাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো এবং তখন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম জুম’আর খুতবাহর মাঝখানে এ মুনাফিকদের নাম নিয়ে নিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দিলেন। এটি ছিল প্রথম শাস্তি, লাঞ্ছাঞ্চনা ও অপমানের আকারে ছিল। আর দ্বিতীয় শাস্তি ছিল যুদ্ধ ও ধ্বংসের আকারে ছিল, যার নির্দেশ পরবর্তীতে এসেছিল।]
وَ اٰخَرُوۡنَ اعۡتَرَفُوۡا بِذُنُوۡبِہِمۡ خَلَطُوۡا عَمَلًا صَالِحًا وَّ اٰخَرَ سَیِّئًا ؕ عَسَی اللّٰہُ اَنۡ یَّتُوۡبَ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۰۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অপর কতেক লোক রয়েছে, যারা নিজেদের গুনাহসমূহ স্বীকার করেছে আর মিশ্রিত করেছে একটা কাজ ভালো এবং অপরটা মন্দ। এ কথা নিকটে যে, আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবূল করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০২. আর অপর কিছু লোক (যারা) নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে, তারা (ভুলক্রমে) কিছু নেক কাজের সাথে অপর কিছু খারাপ কাজ মিশ্রিত করে ফেলেছে। আল্লাহ্ খুব সম্ভবত তাদের তওবা কবুল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
خُذۡ مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ صَدَقَۃً تُطَہِّرُہُمۡ وَ تُزَکِّیۡہِمۡ بِہَا وَ صَلِّ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّ صَلٰوتَکَ سَکَنٌ لَّہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۰۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে মাহবূব! তাদের সম্পদ থেকে যাকাত সংগ্রহ করুন, যা দ্বারা আপনি তাদেরকে পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র করবেন এবং তাদের জন্য মঙ্গলের জন্য দো’আ করুন। নিশ্চয় আপনার দো’আ তাদের অন্তরসমূহের প্রশান্তি এবং আল্লাহ্ শ্রোতা জ্ঞাতা।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৩. আপনি তাদের সম্পদ থেকে (যাকাত হিসেবে) সাদ্কাহ্ আদায় করুন এবং এ (সাদ্কাহ্) দ্বারা তাদেরকে (গোনাহ্) থেকে পবিত্র করুন। আর তাদেরকে (ঈমান ও সম্পদের পবিত্রতার মাধ্যমে) বরকত দান করুন এবং তাদের জন্যে দোয়া করুন। নিশ্চয়ই আপনার দোয়া তাদের জন্যে প্রশান্তি (-এর কারণ)। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সম্যক অবগত।
اَلَمۡ یَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ ہُوَ یَقۡبَلُ التَّوۡبَۃَ عَنۡ عِبَادِہٖ وَ یَاۡخُذُ الصَّدَقٰتِ وَ اَنَّ اللّٰہَ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۰۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের কি খবর নেই যে, আল্লাহ্ই তার বান্দাদের তাওবা কবূল করেন এবং সাদক্বাহসমূহ নিজেই স্বীয় ক্বুদরতের হাতে গ্রহণ করেন; আর এ’যে আল্লাহ্ তাওবা গ্রহণকারী, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৪. তারা কি জানে না যে, বস্তুতঃ আল্লাহ্ই তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং সাদ্কাহ্ (অর্থাৎ যাকাত ও দান-খয়রাত স্বীয় কুদরতী হাতে) গ্রহণ করেন; আর এরূপ যে, আল্লাহ্ই অত্যধিক তওবাকবুলকারী, অসীম দয়ালু?
وَ قُلِ اعۡمَلُوۡا فَسَیَرَی اللّٰہُ عَمَلَکُمۡ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ؕ وَ سَتُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۰۵﴾ۚ
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনি বলুন, ‘কাজ করো। এখন তোমাদের কাজ দেখবেন আল্লাহ্ ও তার রসূল এবং মুসলমানগণ। আর অবিলম্বে তোমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে, যিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সবই জানেন। অতঃপর তিনি তোমাদের কর্ম তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৫. আর বলে দিন, ‘তোমরা আমল করো; অচিরেই আল্লাহ্ তোমাদের আমল দেখবেন, আর তাঁর রাসূল (ﷺ) এবং ঈমানদারগণও। আর তোমরা অচিরেই সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয়ে অবগত (প্রতিপালকে)-এঁর দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে অবগত করবেন যা তোমরা করতে।’
وَ اٰخَرُوۡنَ مُرۡجَوۡنَ لِاَمۡرِ اللّٰہِ اِمَّا یُعَذِّبُہُمۡ وَ اِمَّا یَتُوۡبُ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۱۰۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কিছু লোককে স্থগিত রাখা হয়েছে আল্লাহর নির্দেশের প্রতীক্ষায়- তিনি হয়তো তাদেরকে শাস্তি দেবেন অথবা তাদের তাওবা কবূল করবেন; এবং আল্লাহ্ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৬. আর অপর কতিপয়(ও) রয়েছে, যাদের বিষয়ে আল্লাহর (পরবর্তী) নির্দেশ বিলম্বিত করে রাখা হয়েছে, হয়তো তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন অথবা তাদের তওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্ সম্যক অবগত, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
وَ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مَسۡجِدًا ضِرَارًا وَّ کُفۡرًا وَّ تَفۡرِیۡقًۢا بَیۡنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ اِرۡصَادًا لِّمَنۡ حَارَبَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ لَیَحۡلِفُنَّ اِنۡ اَرَدۡنَاۤ اِلَّا الۡحُسۡنٰی ؕ وَ اللّٰہُ یَشۡہَدُ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿۱۰۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতি সাধনের জন্য, কুফরের কারণে এবং মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্য আর তারই প্রতীক্ষায়, যে ব্যক্তি পূর্ব থেকেই আল্লাহ্ ও তার রসূলের বিরোধী; এবং তারা অবশ্যই বহু শপথ করবে, ‘আমরা তো কল্যাণই চেয়েছি’। আর আল্লাহ্ (এ মর্মে) সাক্ষী যে, তারা নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৭. আর (মুনাফিকদের মধ্যে তারাও রয়েছে) যারা একটি মসজিদ নির্মাণ করেছে; উদ্দেশ্য - (মুসলমানদের) ক্ষতি সাধন করা, কুফরী (শক্তিশালী করা), ঈমানদারদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা এবং ঐ ব্যক্তির জন্যে ঘাঁটি বানানো যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এঁর বিরুদ্ধে পূর্ব থেকেই যুদ্ধ করছে। আর তারা অবশ্যই কসম করবে যে, আমরা (এ মসজিদ তৈরি দ্বারা) কল্যাণ ব্যতীত অন্য কোনো ইচ্ছা করিনি। আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
لَا تَقُمۡ فِیۡہِ اَبَدًا ؕ لَمَسۡجِدٌ اُسِّسَ عَلَی التَّقۡوٰی مِنۡ اَوَّلِ یَوۡمٍ اَحَقُّ اَنۡ تَقُوۡمَ فِیۡہِ ؕ فِیۡہِ رِجَالٌ یُّحِبُّوۡنَ اَنۡ یَّتَطَہَّرُوۡا ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُطَّہِّرِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই মসজিদের মধ্যে আপনি কখনো দাড়াবেন না। নিশ্চয় ওই মসজিদ, যার ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই পরহেয্গারীর উপর রাখা হয়েছে, তা এরই উপযুক্ত যে, আপনি তাঁতে দাড়াবেন এবং সেটার মধ্যে এমন সব লোক রয়েছে, যারা খুব পবিত্র হতে চায় আর পবিত্র লোকেরা আল্লাহর নিকট প্রিয়।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৮. (হে হাবীব!) আপনি এতে (অর্থাৎ মসজিদের নামে নির্মিত এই ইমারতটিতে) কখনও দাঁড়াবেন না। তবে যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই খোদাভীতির উপর স্থাপিত, তাতে দাঁড়ানোই আপনার জন্যে অধিকতর সমীচীন। এতে এমন লোক রয়েছে, যারা (প্রকাশ্যে ও গোপনে) পূতঃপবিত্র থাকাকে পছন্দ করে। আল্লাহ্ পূতঃপবিত্রতা অবলম্বনকারী লোকদের ভালোবাসেন।
اَفَمَنۡ اَسَّسَ بُنۡیَانَہٗ عَلٰی تَقۡوٰی مِنَ اللّٰہِ وَ رِضۡوَانٍ خَیۡرٌ اَمۡ مَّنۡ اَسَّسَ بُنۡیَانَہٗ عَلٰی شَفَا جُرُفٍ ہَارٍ فَانۡہَارَ بِہٖ فِیۡ نَارِ جَہَنَّمَ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি যে ব্যক্তি নিজ ঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছে আল্লাহর ভয় ও তার সন্তুষ্টির উপর সে-ই উত্তম, না ওই ব্যক্তি, যে তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছে এক গভীর গর্তের কিনারায়, ফলে তা তাকে নিয়ে জাহান্নামের আগুনে ধ্বসে পড়েছে? এবং আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথ প্রদান করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৯. কোন ব্যক্তি উত্তম, যে নিজের ইমারতের (অর্থাৎ মসজিদের) ভিত্তি আল্লাহ্ভীতি ও (তাঁর) সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করে, নাকি সে ব্যক্তি যে নিজের ইমারতের ভিত্তি এমন গহ্বরের কিনারায় স্থাপন করে, যা ধ্বসে পড়ার উপক্রম, অতঃপর (এ ইমারাত)-এর নির্মাতাসহ জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়? আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
لَا یَزَالُ بُنۡیَانُہُمُ الَّذِیۡ بَنَوۡا رِیۡبَۃً فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ اِلَّاۤ اَنۡ تَقَطَّعَ قُلُوۡبُہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۱۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই ঘর যা তারা নির্মাণ করেছে, তা তাদের অন্তরে সমসময় সন্দেহের কারণ হয়ে থাকবে যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর খণ্ড বিখণ্ড হয়ে যায়; এবং আল্লাহ্ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১০. তাদের ইমারত, যা তারা (মসজিদের নামে) নির্মাণ করেছে, সর্বদা তাদের অন্তরে (সন্দেহ ও কপটতার কারণে) বিদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর (বারবার বিদ্ধ হওয়ার কারণে) ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর আল্লাহ্ সম্যক অবগত, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
اِنَّ اللّٰہَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَہُمۡ وَ اَمۡوَالَہُمۡ بِاَنَّ لَہُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَ یُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا عَلَیۡہِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ وَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِعَہۡدِہٖ مِنَ اللّٰہِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِکُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ بِہٖ ؕ وَ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۱۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় আল্লাহ্ মুসলমানদের নিকট থেকে তাদের সম্পদ ও জীবন খরিদ করে নিয়েছেন এর বিনিময়ে যে, তাদের জন্য জান্নাত রয়েছে। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে অতঃপর তারা হত্যা করবে এবং নিহত হবে। তার বদান্যতার দায়িত্বে সত্য প্রতিশ্রুতি তাওরাত, ইন্জীল ও ক্বোরআনে; এবং আল্লাহর চেয়ে বেশি অঙ্গীকার পূরণকারী কে আছে? সুতরাং তোমরা আনন্দ উদ্যাপন করো নিজেদের ব্যবসার জন্য, যা তোমরা তার সাথে করেছো এবং এটাই মহা সাফল্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১১. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ঈমানদারদের থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন তাদের জন্যে জান্নাতের বিনিময়ে। (এখন) তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করছে, সুতরাং তারা (সত্যের নিমিত্তে) হত্যা করে আর (নিজেও) নিহত হয়। (আল্লাহ্) নিজের মহান যিম্মায় দৃঢ় অঙ্গীকার (করেছেন) তাওরাতে, ইঞ্জীলে এবং কুরআনেও। আর কে আছে আল্লাহর চেয়ে নিজের অঙ্গীকার অধিক পূর্ণকারী? সুতরাং (হে ঈমানদারগণ!) তোমরা নিজেদের ক্রয়-বিক্রয়ে উল্লসিত হও, যার বিনিময়ে তোমরা (জীবন ও সম্পদ) বিক্রয় করে দিয়েছো। আর এটিই তো মহা সাফল্য।
اَلتَّآئِبُوۡنَ الۡعٰبِدُوۡنَ الۡحٰمِدُوۡنَ السَّآئِحُوۡنَ الرّٰکِعُوۡنَ السّٰجِدُوۡنَ الۡاٰمِرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ النَّاہُوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ الۡحٰفِظُوۡنَ لِحُدُوۡدِ اللّٰہِ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাওবাকারী, ইবাদতকারী, প্রশংসাকারী, রোযা পালনকারী, রুকূ’কারী, সাদদাকারী, সৎকাজের নির্দেশদাতা, অসৎকাজে নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারীরা; আর সুসংবাদ শুনান মুসলমানদেরকে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১২. (এসকল মুমিন যারা আল্লাহর সাথে পরকালীন সাওদা করে নিয়েছে) তওবাকারী, ইবাদতকারী, (আল্লাহর) প্রশংসা ও গুণগানকারী, পার্থিব উপভোগ পরিহারকারী রোযাদার, (বিনয় ও নম্রতার মাধ্যমে) রুকুকারী, (আল্লাহর নৈকট্যে) সেজদাকারী, সৎকাজের আদেশকারী, অসৎকাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমানার সংরক্ষণকারী। আর ঈমানদারগণকে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
مَا کَانَ لِلنَّبِیِّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ یَّسۡتَغۡفِرُوۡا لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ وَ لَوۡ کَانُوۡۤا اُولِیۡ قُرۡبٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُمۡ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ ﴿۱۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
নবী ও মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবে যদিও হয় তারা আত্নীয় স্বজন যখন তাদের সামনে সুস্পষ্ট হলো যে, ওই সব লোক জাহান্নামী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৩. নবী (ﷺ) ও ঈমানদারগণের জন্যে সমীচিন নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়, যখন তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, এ সকল (মুশরিক) জাহান্নামী।
وَ مَا کَانَ اسۡتِغۡفَارُ اِبۡرٰہِیۡمَ لِاَبِیۡہِ اِلَّا عَنۡ مَّوۡعِدَۃٍ وَّعَدَہَاۤ اِیَّاہُ ۚ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَہٗۤ اَنَّہٗ عَدُوٌّ لِّلّٰہِ تَبَرَّاَ مِنۡہُ ؕ اِنَّ اِبۡرٰہِیۡمَ لَاَوَّاہٌ حَلِیۡمٌ ﴿۱۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
ইব্রাহীমের আপন পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, তা’তো ছিলো না, কিন্তু একটা ওয়াদার কারণে, যা সে তার সাথে করেছিলো। অতঃপর যখন ইব্রাহীমের নিকট সুস্পষ্ট হলো যে, সে আল্লাহর শত্রু, তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলো। নিশ্চয়, ইব্রাহীম অতি ক্রন্দনকারী, সহনশীল।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৪. আর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিজ পিতার জন্যে (অর্থাৎ চাচা আযর, যে তাকে লালন-পালন করেছিলেন) ক্ষমা প্রার্থনা ছিল কেবল তার সাথে করা অঙ্গীকারের কারণে। অতঃপর যখন তাঁর নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সে আল্লাহর দুশমন, তখন তিনি তার থেকে বিমুখ হয়ে গেলেন (তার থেকে সম্পর্কহীন হয়ে গেলেন আর কখনো তার ব্যাপারে দোয়া করেননি)। নিশ্চয়ই ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বড়ই সহানুভুতিশীল (ক্রন্দনকারী ও) অতিশয় ধৈর্যশীল ছিলেন।
وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیُضِلَّ قَوۡمًۢا بَعۡدَ اِذۡ ہَدٰىہُمۡ حَتّٰی یُبَیِّنَ لَہُمۡ مَّا یَتَّقُوۡنَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۱۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহর জন্য শোভা পায় না যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে হিদায়াত করে পথভ্রষ্ট করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে স্পষ্টভাবে বলে দেবেন না কোন বস্তু থেকে তাদেরকে বাচতে হবে। নিশ্চয়, আল্লাহ্ সবকিছু জানেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৫. আর আল্লাহর শান নয় যে, তিনি কোনো সম্প্রদায়কে হেদায়াত দানে অনুগ্রহ করার পর গোমরাহ্ করে দেবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি তাদের জন্যে সুস্পষ্ট করে দেন, যা থেকে তাদের বেঁচে থাকা উচিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
اِنَّ اللّٰہَ لَہٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ؕ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۱۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় আল্লাহরই আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব; তিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান; আর আল্লাহ্ ব্যতীত না তোমাদের অভিভাবক আছে এবং না সাহায্যকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৬. বাস্তবিকই আকাশমন্ডলী ও জমিনের সমস্ত রাজত্ব আল্লাহরই। (তিনিই) জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। আর তোমাদের জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত না কোনো বন্ধু রয়েছে আর না কোনো সাহায্যকারী (যে আল্লাহর নির্দেশের বিপরীতে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারবে)।
لَقَدۡ تَّابَ اللّٰہُ عَلَی النَّبِیِّ وَ الۡمُہٰجِرِیۡنَ وَ الۡاَنۡصَارِ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡہُ فِیۡ سَاعَۃِ الۡعُسۡرَۃِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا کَادَ یَزِیۡغُ قُلُوۡبُ فَرِیۡقٍ مِّنۡہُمۡ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّہٗ بِہِمۡ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱۷﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় আল্লাহর রহমতগুলো ধাবিত হলো এ অদৃশ্যের সংবাদদাতা এবং ওই মুহাজিরগণ ও আনসারের প্রতি, যারা সংকটকালে তার সাথে ছিলো এর পরে যে, তাদের মধ্যে কিছু লোকের অন্তর ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো; অতঃপর তাদের প্রতি রহমত সহকারে দৃষ্টিপাত করলেন। নিশ্চয় তিনি তাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ার্দ্র, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৭. অবশ্যই আল্লাহ্ রহমতের দৃষ্টি দিলেন (সম্মানিত) নবী (ﷺ)-এঁর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতিও যারা (তাবুক যুদ্ধের) কঠিন মুহূর্তে(ও) তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম এঁর) অনুসরণ করেছিল, ঐ অবস্থার পর যে, তাদের মধ্যে একদলের অন্তর বিচলিত হবার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর তিনি তাদের প্রতি সদয় ও কৃপাদৃষ্টি দিলেন। নিশ্চয়ই তিনি তাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভুতিশীল, অসীম দয়ালু।
وَّ عَلَی الثَّلٰثَۃِ الَّذِیۡنَ خُلِّفُوۡا ؕ حَتّٰۤی اِذَا ضَاقَتۡ عَلَیۡہِمُ الۡاَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ وَ ضَاقَتۡ عَلَیۡہِمۡ اَنۡفُسُہُمۡ وَ ظَنُّوۡۤا اَنۡ لَّا مَلۡجَاَ مِنَ اللّٰہِ اِلَّاۤ اِلَیۡہِ ؕ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡہِمۡ لِیَتُوۡبُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সেই তিন জনের প্রতি, যাদেরকে মওকূফ রাখা হয়েছিলো এ পর্যন্ত যে, যখন পৃথিবী এতো বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য তা সংকুচিত হয়ে গেলো এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হলো আর তাদের মনে এ বিশ্বাস বদ্ধমূল হলো যে, আল্লাহর নিকট থেকে অন্য কোথাও আশ্রয়স্থল নেই, কিন্তু (আছে) তারই নিকট। অতঃপর তাদের কবূল করেন যেন তারা তাওবাকারী হয়ে থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ্ তাওবা কবুলকারী, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৮. আর ঐ তিন ব্যক্তির প্রতিও (অনুগ্রহের দৃষ্টি দিলেন) যাদের (ফায়সালার) বিষয় স্থগিত রাখা হয়েছিল এ পর্যন্ত, যখন ভু-পৃষ্ঠ প্রশস্ত হওয়া সত্বেও তাদের জন্যে সংকুচিত হয়ে গেলো এবং তাদের জীবন(ও) তাদের জন্যে দুর্বিসহ হয়ে পড়লো; আর তারা বুঝতে পারলো যে, আল্লাহ্ (-এঁর শাস্তি) থেকে বাঁচার আর কোনো আশ্রয়স্থল নেই, তাঁর নিকট (প্রত্যাবর্তন) ব্যতীত। তখন আল্লাহ্ তাদের প্রতি দয়া ও স্বকৃপায় ধাবিত হলেন, যাতে তারা(ও) তওবা ও প্রত্যাবর্তনের উপর অটল থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বড়ই তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ کُوۡنُوۡا مَعَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্কে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৯. হে ঈমানাদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যান্বেষীদের (সাহচর্যের) অন্তর্ভুক্ত হও।
مَا کَانَ لِاَہۡلِ الۡمَدِیۡنَۃِ وَ مَنۡ حَوۡلَہُمۡ مِّنَ الۡاَعۡرَابِ اَنۡ یَّتَخَلَّفُوۡا عَنۡ رَّسُوۡلِ اللّٰہِ وَ لَا یَرۡغَبُوۡا بِاَنۡفُسِہِمۡ عَنۡ نَّفۡسِہٖ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ لَا یُصِیۡبُہُمۡ ظَمَاٌ وَّ لَا نَصَبٌ وَّ لَا مَخۡمَصَۃٌ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ لَا یَطَـُٔوۡنَ مَوۡطِئًا یَّغِیۡظُ الۡکُفَّارَ وَ لَا یَنَالُوۡنَ مِنۡ عَدُوٍّ نَّیۡلًا اِلَّا کُتِبَ لَہُمۡ بِہٖ عَمَلٌ صَالِحٌ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
মদীনাবাসী ও তাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সঙ্গত ছিলো না যে, আল্লাহর রসূল থেকে পেছনে বসে থাকবে এবং না এও যে, তার জীবনের চেয়ে নিজেদের জীবনকে প্রিয় মনে করবে। এটা এ জন্য যে, তাদেরকে যে পিপাসা অথবা কষ্ট কিংবা ক্ষুধা আল্লাহর পথে স্পর্শ করে এবং যেখানে তারা এমন স্থানে পা রাখে, যা কাফিরদের ক্রোধ উদ্রেক করে এবং যা কিছু কোন শত্রুর ক্ষতি করে এসব কিছুর পরিবর্তে তাদের জন্য সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করা হয়; নিশ্চয়, আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২০. মদীনাবাসী এবং এর আশেপাশে (অবস্থানকারী) গ্রাম্যলোকদের জন্যে সমীচিন ছিল না যে, তারা রাসূল (ﷺ) থেকে (বিচ্ছিন্ন হয়ে) পশ্চাতে থেকে যাবে, আর না তাঁর (পবিত্র) জীবন অপেক্ষা নিজেদের জীবনকে অধিক প্রিয় মনে করবে। এ (নির্দেশ) এ জন্যে যে, তাদের আল্লাহর রাস্তায় যে পিপাসা(ই) পায়, যে দুর্দশা(ই) পৌঁছে, যে ক্ষুধা(ই) লাগে, এমন কোনো স্থানে চলাচল যেখানে চলা কাফেরদের ক্রোধান্বিত করে এবং শত্রু থেকে যা কিছুই পায় (চাই নিহত, আহত অথবা গনিমত ও অন্যান্য কিছু হোক) প্রত্যেকটি বিষয়ের বিনিময়েই তাদের জন্যে একটি নেক আমল লিপিবদ্ধ করা হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ নেক্কারদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।
وَ لَا یُنۡفِقُوۡنَ نَفَقَۃً صَغِیۡرَۃً وَّ لَا کَبِیۡرَۃً وَّ لَا یَقۡطَعُوۡنَ وَادِیًا اِلَّا کُتِبَ لَہُمۡ لِیَجۡزِیَہُمُ اللّٰہُ اَحۡسَنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারা যা কিছু ব্যয় করে ছোট অথবা বড় এবং যে প্রণালী (প্রান্তর)-ই অতিক্রম করে, সবই তাদের অনুকূলে লিপিবদ্ধ করা হয় যাতে আল্লাহ্ তাদের সবচেয়ে ভালো কাজগুলোর পুরস্কার তাদেরকে প্রদান করেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২১. আর তারা (অর্থাৎ মুজাহিদগণ) যা-ই ব্যয় করে, ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ, আর (আল্লাহর পথে) যে কোনো(ও) ময়দানই অতিক্রম করে (এ সকল ব্যয় ও সফর) তা তাদের অনুকূলেই লিপিবদ্ধ করা হয়, যাতে আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের কৃত (প্রত্যেক) আমলের উত্তম প্রতিদান দিতে পারেন।
وَ مَا کَانَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لِیَنۡفِرُوۡا کَآفَّۃً ؕ فَلَوۡ لَا نَفَرَ مِنۡ کُلِّ فِرۡقَۃٍ مِّنۡہُمۡ طَآئِفَۃٌ لِّیَتَفَقَّہُوۡا فِی الدِّیۡنِ وَ لِیُنۡذِرُوۡا قَوۡمَہُمۡ اِذَا رَجَعُوۡۤا اِلَیۡہِمۡ لَعَلَّہُمۡ یَحۡذَرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মুসলমানদের থেকে এটা তো হতেই পারে না যে, সবাই একসাথে বের হবে; সুতরাং কেন এমন হলো না যে, তাদের প্রত্যেক দল থেকে একটা দল বের হতো, যারা ধর্মের বুঝ (জ্ঞান) অর্জন করতো এবং ফিরে এসে নিজ সম্প্রদায়কে সতর্ক করতো; এ আশায় যে, তারা সতর্ক হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২২. আর এ তো হতে পারে না যে, সমস্ত মুসলমান (একসাথে) বের হয়ে যাবে। সুতরাং তাদের মধ্যে প্রত্যেক সম্প্রদায় (বা গোত্র) থেকে একটি দল কেন বের হয় না যাতে তারা দ্বীনে গভীর জ্ঞান (অর্থাৎ গভীর উপলব্ধি ও অন্তর্দৃষ্টি) অর্জন করে আর তারা তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করে যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসে, যাতে তারা (গোনাহ্ ও নাফরমানীর জীবন থেকে) বেঁচে থাকে।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قَاتِلُوا الَّذِیۡنَ یَلُوۡنَکُمۡ مِّنَ الۡکُفَّارِ وَ لۡیَجِدُوۡا فِیۡکُمۡ غِلۡظَۃً ؕ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ مَعَ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ঈমানদারগণ! জিহাদ করো ওই সব কাফিরের সাথে, যারা তোমাদের নিকটবর্তী; এবং উচিত যেন তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা পায়; আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ পরহেয্গারদের সাথে আছেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৩. হে ঈমানদারগণ! কাফেরদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটবর্তী (অর্থাৎ যারা তোমাদের ও তোমাদের দ্বীনের সরাসরি ক্ষতি করছে) ঐসব লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। (জিহাদ এমন সময় এবং এরকম হওয়া চাই যে,) তারা তোমাদের মধ্যে (শক্তি ও বীরত্বের) কঠোরতা দেখুক। আর জেনে রেখো, আল্লাহ্ পরহেযগারদের সাথে আছেন।
وَ اِذَا مَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّقُوۡلُ اَیُّکُمۡ زَادَتۡہُ ہٰذِہٖۤ اِیۡمَانًا ۚ فَاَمَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا فَزَادَتۡہُمۡ اِیۡمَانًا وَّ ہُمۡ یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ ﴿۱۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখনই কোন সূরা অবতীর্ন হয়, তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলতে থাকে, ‘তা তোমাদের মধ্যে কার ঈমানে উন্নতি দিয়েছে ? সুতরাং ওই সব লোক, যারা ঈমানদার তাদের ঈমানকে তা উন্নতি দিয়েছে এবং তারা খুশি উদ্যাপন করছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৪. আর যখনই কোনো সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন এদের (এ মুনাফিকদের) কেউ কেউ (অনিষ্টতার বাসনায়) বলে, ‘তোমাদের মধ্যে কে আছে, এ (সূরা) যার ঈমান বৃদ্ধি করেছে?’ সুতরাং যারা ঈমান আনয়ন করেছে, এ (সূরা) তাদের ঈমানকে বৃদ্ধি করে দিয়েছে এবং তারা (এ ঈমানের অবস্থার উপর) আনন্দ উপভোগ করে।
وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ فَزَادَتۡہُمۡ رِجۡسًا اِلٰی رِجۡسِہِمۡ وَ مَا تُوۡا وَ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۱۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তাদের মধ্যে কলুষতার উপর আরো কলুষতা বৃদ্ধি করেছে; আর তারা কুফরের অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৫. আর যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, এ (সূরা) তাদের (কুফরী ও মুনাফিকির) পঙ্কিলতার উপর আরো অধিক অপবিত্রতা (ও পঙ্কিলতা) যুক্ত করে দিয়েছে; আর তারা কাফের অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করেছে।
اَوَ لَا یَرَوۡنَ اَنَّہُمۡ یُفۡتَنُوۡنَ فِیۡ کُلِّ عَامٍ مَّرَّۃً اَوۡ مَرَّتَیۡنِ ثُمَّ لَا یَتُوۡبُوۡنَ وَ لَا ہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۱۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি অনুধাবন করছে না যে, প্রতি বছরই এক অথবা দু’বার পরীক্ষা করা হচ্ছে? অতঃপর তারা না তাওবা করছে, না উপদেশ গ্রহণ করছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৬. তারা কি দেখে না যে, তাদেরকে প্রতিবছর একবার অথবা দু’বার মুসিবতে ফেলা হয়? এরপর(ও) তারা তওবা করে না এবং উপদেশও গ্রহণ করে না।
وَ اِذَا مَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ نَّظَرَ بَعۡضُہُمۡ اِلٰی بَعۡضٍ ؕ ہَلۡ یَرٰىکُمۡ مِّنۡ اَحَدٍ ثُمَّ انۡصَرَفُوۡا ؕ صَرَفَ اللّٰہُ قُلُوۡبَہُمۡ بِاَنَّہُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ ﴿۱۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন তারা একে অপরের দিকে তাকাতে থাকে, ‘কেউ তোমাদেরকে লক্ষ্য করছে না তো? অতঃপর ফিরে যায়। আল্লাহ্ তাদের অন্তর পাল্টিয়ে দিয়েছেন। কারণ, তারা বোধশক্তিহীন লোক।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৭. আর যখনই কোনো সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন তারা একে অপরের দিকে তাকায় (আর ইশারায় জানতে চায়), ‘তোমাদেরকে কেউ দেখেনি তো?’ অতঃপর তারা ফিরে যায়। আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন, কেননা তারা সেসব লোক যাদের বোধ-শক্তি নেই।
لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡہِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় তোমাদের নিকট তাশরীফ এনেছেন তোমাদের মধ্য থেকে ওই রসূল, যার নিকট তোমাদের কষ্টে পড়া কষ্টদায়ক, তোমাদের কল্যাণ অতিমাত্রায় কামনাকারী, মুসলমানদের উপর পূর্ণ দয়ার্দ্র, দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৮. অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে (একজন সম্মানিত) রাসূল (ﷺ) আগমন করেছেন। তোমাদের ভোগান্তি এবং কষ্টে পতিত হওয়া তাঁর জন্যে খুবই কষ্টদায়ক। (হে লোকসকল!) তিনি তোমাদের (কল্যাণ এবং হিদায়াতের) খুবই আকাঙ্ক্ষী এবং উদগ্রীব। (আর) মুমিনদের জন্যে চুড়ান্ত(ই) দয়ার্দ্র, সীমাহীন অনুগ্রহশীল।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُلۡ حَسۡبِیَ اللّٰہُ ۫٭ۖ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ؕ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ وَ ہُوَ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۱۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনি বলে দিন, ‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত নেই। আমি তারই উপর ভরসা করেছি এবং তিনি মহান আরশের অধিপতি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৯. যদি (এ সকল অনুগ্রহরাজি ও দয়া সত্তেও) তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দিন, ‘আমার জন্যে আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। আমি তাঁরই উপর ভরসা করেছি, আর তিনি মহান আরশের মালিক।’