সম্মানিত একজন শিক্ষিকা বোন বলেন, আমি স্কুল থেকে ফিরে রান্নাঘরের কাজ শেষ করে বের হতে প্রায় অর্ধ রাত হয়ে যায়। একদিন আমার ভাই এসেছিল।
সে এসব দেখে বলল, আমি তো সবসময়ই তোমাকে রান্নাঘরে দেখি!
আমি বিরক্তির সুরে বললাম, তাহলে কেন তুমি লাইলাতুল কদরে আমার জন্য দোয়া কর না যে, আল্লাহ যেন আমাকে রান্নাঘরের জ্বালা থেকে মুক্তি দান করেন!
এই বলে আমি কিছু সময় চুপ রইলাম কিন্তু মাথায় ইমাম আহমাদ (রাহি)-এর ঘটনাটি ঘুরপাক খেতে শুরু করল। তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন, "হে আল্লাহ! আমাকে হাদিস হিফজ করার মতো সময় দাও।"
কিন্তু তিনি আফিয়াতের কথা বলতে ভুলে যান। ফলে তিনি সুযোগ তো পেয়েছিলেন তবে তা বন্দি অবস্থায় জেলখানায়। তাই তো কেউ যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাইবে তার তো আফিয়াত ও উত্তম বস্তুটি চাওয়া উচিত।
তাই ঝটপট করে ভাইকে বললাম, "দেখ, আমার রান্নাঘরের ঝামেলা থেকে মুক্তির দোয়া যদি তোমার করতেই হয়, তবে এই দোয়া করবে, যে আল্লাহ যেন আমাকে আফিয়াতের সাথে মুক্তি দান করেন। "
.
পরেরদিন ছাত্রীদেরকে এই বিষয়টি আমি বুঝিয়ে বলছিলাম এবং সতর্ক করছিলাম।৷ তাদেরকে ইমাম আহমাদের গল্পও শুনালাম।
তাদের মধ্য থেকে এককজন ছাত্রী দাঁড়িয়ে পড়ল এবং বলা শুরু করল, উস্তাদ! আমাদের বাড়ির পাশে এক মহিলা আছে। আমি তাকে চিনি। সে সবসময় দোয়া করেন,
" হে আল্লাহ! আমাকে বিনা পরিশ্রমে ঘরে বসে বসে তিন মিলিয়ন টাকার মালিক বানিয়ে দাও। "
সে যেকোন সম্মানিত জায়গায় যেতেন বা যেকোন বরকতময় রজনীতে এই একি দোয়া করতেন, " তিন মিলিয়ন টাকা বিনা পরিশ্রমে ঘরে বসে বসে। "
উস্তাদ, আল্লাহর শপথ! এভাবে দোয়া করার ফলে কিছুদিন পর তার দোয়া অনুযায়ী ৩ মিলিয়ন টাকা ঘরে বসে বসে কাছে তো আসল কিন্তু-----
কিন্তু কি?!
কিন্তু ম্যাডাম, তার যেহেতু এ পরিমাণ টাকা কামানোর যোগ্যতা ছিল না। আর তার দোয়া ছিল তার লাগবেই। তাই তো তার ছেলেকে যখন কিছু ব্যক্তি হ**ত্যা করে তার দিয়াত হিসেবে সে ৩ মিলিয়ন পেয়ে যায়।
উস্তাদ- এইজন্যই আমি তোমাদেরকে সতর্ক করেছি। অর্থাৎ যখন দোয়া করবা তখন আফিয়াত ও খায়েরও চাইবা।
যদি সম্পদ চাও তাহলে বলবা, 'হে আল্লাহ! আমাকে এতটুকু সম্পদ দেন যেন সে সম্পদ আমার দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়াত ও কল্যাণময় জীবন কাটানোর জন্য যথেষ্ট হয়।'
যদি পাত্র/পাত্রী কামনা কর তাহলে বলবা, 'হে আল্লাহ! আমাকে এমন ভাল ছেলে/মেয়ে মিলিয়ে দিন যাকে পেয়ে আমি দুনিয়া ও আখিরাত আফিয়াত এবং কল্যাণের সাথে কাটিয়ে দিতে পারি। এবং সে আমার চক্ষু শীতলকারী হওয়ার পাশাপাশি আমার সাহায্যকারীও হতে পারে।'
– শায়েখ রাতিব নাবুলুসী (হাফি)
অনুবাদ - আব্দুর রহমান
[আফিয়াত = নিরাপত্তা, সুস্থতা ইত্যাদি।
খায়ের = কল্যাণ, উত্তম ইত্যাদি।]
কার্টেসি - নুসরাত বিনতে কবির