بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময়
📕ইরফানুল কুরআন:
আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓـمّٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ ؕ وَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ الۡحَقُّ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আলিফ লা----ম মী-----ম্ রা—। এগুলো কিতাবের আয়াত; এবং তাই, যা (হে হাবীব!) আপনার প্রতি আপনার রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে সত্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১. আলিফ-লাম-মীম-রা। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।) এগুলো আল্লাহর কিতাবের আয়াত, এবং যা কিছু আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে (তা) সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস স্থাপন করে না।
اَللّٰہُ الَّذِیۡ رَفَعَ السَّمٰوٰتِ بِغَیۡرِ عَمَدٍ تَرَوۡنَہَا ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ وَ سَخَّرَ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ ؕ کُلٌّ یَّجۡرِیۡ لِاَجَلٍ مُّسَمًّی ؕ یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ یُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لَعَلَّکُمۡ بِلِقَآءِ رَبِّکُمۡ تُوۡقِنُوۡنَ ﴿۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ তিনিই, যিনি আসমানগুলোকে ঊর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন এমন সব স্তম্ভ ব্যতীত, যেগুলো তোমরা দেখতে পাও। অতঃপর আরশের উপর ‘ইস্তিওয়া’ ফরামায়েছেন (সমাসীন হন) যেভাবে তাঁর মর্যাদার জন্য শোভা পায় এবং সূর্য ও চন্দ্রকে অনুগত করে রেখেছেন, প্রত্যেকটি একটি নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুত কাল পর্যন্ত আবর্তন করতে থাকবে; আল্লাহ্ কর্মের ব্যবস্থাপনা করেন এবং বিশদভাবে নিদর্শনাদি বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা তোমাদের রবের সম্পর্কে নিশ্চিত বিশ্বাস করো।
📕ইরফানুল কুরআন:
২. আর তিনি আল্লাহ্, যিনি আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত (শূন্যে) সমুন্নত করেছেন যেমনটি তোমরা দেখতে পাচ্ছো। অতঃপর তিনি (সারা জাহানের উপর বেষ্টিত স্বীয়) কর্তৃত্বের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অনুগামী করেছেন। প্রত্যেকে স্বীয় নির্ধারিত সময়ে (আবর্তন পূর্ণ করতে নিজ নিজ কক্ষপথে) পরিভ্রমণ করে। তিনিই (সমস্ত জগতের) সকল নিয়মের কৌশল নির্ধারণ করে দেন। (সকল) নিদর্শনাবলী (অথবা প্রাকৃতিক নিয়মাবলী) বিস্তারিতভাবে সুস্পষ্ট করে দেন যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ায় বিশ্বাস স্থাপন করো।
وَ ہُوَ الَّذِیۡ مَدَّ الۡاَرۡضَ وَ جَعَلَ فِیۡہَا رَوَاسِیَ وَ اَنۡہٰرًا ؕ وَ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ جَعَلَ فِیۡہَا زَوۡجَیۡنِ اثۡنَیۡنِ یُغۡشِی الَّیۡلَ النَّہَارَ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তিনিই হন, যিনি যমীনকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাঁতে (নোঙ্গররূপী) পর্বতমালা ও নদীসমূহ সৃষ্টি করেছেন; এবং যমীনের মধ্যে প্রত্যেক প্রকারের ফল দু’ দু’ প্রকারের সৃষ্টি করেছেন। রাত দ্বারা দিনকে আচ্ছাদিত করেন। নিশ্চয় এ’তে নিদর্শনাদি রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩. আর তিনিই (গোলাকার হওয়া সত্তেও) পৃথিবীকে প্রসারিত করেছেন এবং এতে পর্বত ও নদী সৃষ্টি করেছেন। আর প্রত্যেক প্রকারের ফলমূল সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়। (তিনিই) রাতের দ্বারা দিনকে আচ্ছাদিত করেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্যে রয়েছে (অনেক) নিদর্শন ।
وَ فِی الۡاَرۡضِ قِطَعٌ مُّتَجٰوِرٰتٌ وَّ جَنّٰتٌ مِّنۡ اَعۡنَابٍ وَّ زَرۡعٌ وَّ نَخِیۡلٌ صِنۡوَانٌ وَّ غَیۡرُ صِنۡوَانٍ یُّسۡقٰی بِمَآءٍ وَّاحِدٍ ۟ وَ نُفَضِّلُ بَعۡضَہَا عَلٰی بَعۡضٍ فِی الۡاُکُلِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যমীনের বিভিন্ন ভূ-খণ্ড রয়েছে আর রয়েছেও পাশাপাশি; এবং বাগান রয়েছে আঙ্গুরের আর শস্য ক্ষেত্র ও খেজুরের গাছ একটা গুড়ি থেকে উৎপন্ন এবং পৃথক পৃথকভাবে সবকটি একই পানি দ্বারা সিঞ্চিত হয়। আর ফলগুলোর মধ্যে আমি একটাকে অপরটা অপেক্ষা উত্তম করি। নিশ্চয় এতে নিদর্শনাদি রয়েছে বিবেকবানদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪. আর পৃথিবীতে রয়েছে (বিভিন্ন প্রকারের) ভুখন্ড, যেগুলো পরস্পর সংলগ্ন, আর রয়েছে আঙ্গুরের বাগান, শস্যক্ষেত্র এবং গুচ্ছবিশিষ্ট ও গুচ্ছবিহীন খেজুর বৃক্ষ। এ সবকিছুই সিঞ্চিত (অর্থাৎ সেচ দেওয়া হয়) একই পানি দ্বারা। আর (এতদসত্তেও) আমরা স্বাদে কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। নিশ্চয়ই এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে রয়েছে (মহান) নিদর্শন।
وَ اِنۡ تَعۡجَبۡ فَعَجَبٌ قَوۡلُہُمۡ ءَ اِذَا کُنَّا تُرٰبًا ءَ اِنَّا لَفِیۡ خَلۡقٍ جَدِیۡدٍ ۬ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ الۡاَغۡلٰلُ فِیۡۤ اَعۡنَاقِہِمۡ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আপনি বিস্মিত হন তবে বিস্ময় তো তাদের এ কথারই যে, ‘আমরা কি মাটিতে পরিণত হওয়ার পর নতুন সৃষ্টিতে পরিণত হবো?’ এবং তারাই হচ্ছে, যারা আপন রবকে অস্বীকার করেছে এবং তারাই হচ্ছে- যাদের ঘাড়ে শিকল থাকবে এবং তারা দোযখবাসী; তাদেরকে সেখানে (স্থায়ীভাবে) থাকতে হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫. আর (কাফেরদের অস্বীকারের কারণে) যদি আপনি বিস্মিত হন, তবে (অধিকতর) বিস্ময়কর তাদের এ কথা: ‘(মৃত্যুর পর) যখন আমরা মাটিতে পরিণত হবো, তখনও কি আমাদেরকে নতুন করে সৃষ্টি করা হবে?’ তারাই সেসব লোক যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে এবং তাদের গর্দানে শিকল (পড়ানো) থাকবে, আর তারাই জাহান্নামী, তাতে তারা চিরকাল থাকবে।
وَ یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالسَّیِّئَۃِ قَبۡلَ الۡحَسَنَۃِ وَ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِہِمُ الۡمَثُلٰتُ ؕ وَ اِنَّ رَبَّکَ لَذُوۡ مَغۡفِرَۃٍ لِّلنَّاسِ عَلٰی ظُلۡمِہِمۡ ۚ وَ اِنَّ رَبَّکَ لَشَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনার নিকট তারা শাস্তি তাড়াতাড়ি চাচ্ছে- রহমতের পূর্বে এবং তাদের পূর্ববর্তীদের শাস্তি হয়ে গেছে। আর নিশ্চয় আপনার রব তো লোকদের অত্যাচারের উপরও তাদেরকে এক ধরণের ক্ষমা করে দেন; এবং নিশ্চয় আপনার রবের শাস্তি কঠোর।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬. আর তারা কল্যাণের পূর্বে আপনার কাছে শাস্তি অন্বেষণে দ্রুততা কামনা করে, অথচ তাদের পূর্বে বহু শাস্তি অতিবাহিত হয়েছে। আর ( হে হাবীব!) নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক মানুষের প্রতি, তাদের যুলুম সত্তেও ক্ষমাশীল। তবে নিশ্চিতভাবে আপনার প্রতিপালক শাস্তি দানেও কঠোর।
وَ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ اِنَّمَاۤ اَنۡتَ مُنۡذِرٌ وَّ لِکُلِّ قَوۡمٍ ہَادٍ ﴿۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কাফিররা বলে, ‘তাঁর উপর তাঁর রবের নিকট থেকে কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হয় নি?’ আপনি তো সতর্ককারী এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের পথ প্রদর্শক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭. আর কাফেরেরা বলে, ‘(এ রাসূল)-এঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কোনো নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হয়নি?’ (হে সম্মানিত রাসূল!) আপনি তো কেবল (নাফরমানদের খারাপ পরিণতির ব্যাপারে) সতর্ককারী এবং (পৃথিবীর) সকল সম্প্রদায়ের পথ-প্রদর্শক।
اَللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَحۡمِلُ کُلُّ اُنۡثٰی وَ مَا تَغِیۡضُ الۡاَرۡحَامُ وَ مَا تَزۡدَادُ ؕ وَ کُلُّ شَیۡءٍ عِنۡدَہٗ بِمِقۡدَارٍ ﴿۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ জানেন যা কিছু কোন মাদীর গর্ভে থাকে এবং জরায়ুতে যা কিছু কম ও বাড়ে; এবং প্রত্যেক বস্তু তাঁর নিকট একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮. আল্লাহ্ জানেন, যা প্রত্যেক নারী স্বীয় গর্ভে ধারণ করে এবং জরায়ু যে পরিমাণ সঙ্কুচিত হয় ও যে পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আর সবকিছুই তাঁর নিকট নির্ধারিত পরিমাণে রয়েছে।
عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ الۡکَبِیۡرُ الۡمُتَعَالِ ﴿۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
প্রত্যেক গোপন ও প্রকাশ্যের জ্ঞানী; সবচেয়ে মহান, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯. তিনি সকল অদৃশ্য ও দৃশ্যমান সম্পর্কে অবগত, সুমহান (এবং) সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী।
سَوَآءٌ مِّنۡکُمۡ مَّنۡ اَسَرَّ الۡقَوۡلَ وَ مَنۡ جَہَرَ بِہٖ وَ مَنۡ ہُوَ مُسۡتَخۡفٍۭ بِالَّیۡلِ وَ سَارِبٌۢ بِالنَّہَارِ ﴿۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
সমানই- যে তোমাদের মধ্যে কথা নীরবে বলে এবং যে সরবে বলে আর যে রাতে আত্নগোপন করে এবং দিনের বেলায় পথে বিচরণ করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০. তোমাদের মধ্যে যে গোপনে কথা বলে আর যে প্রকাশ্যে কথা বলে, যে রাতে (অন্ধকারে) সুপ্ত আর যে দিনের (আলোয়) বিচরণ করে, (তাঁর কাছে) সবই সমান।
لَہٗ مُعَقِّبٰتٌ مِّنۡۢ بَیۡنِ یَدَیۡہِ وَ مِنۡ خَلۡفِہٖ یَحۡفَظُوۡنَہٗ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتّٰی یُغَیِّرُوۡا مَا بِاَنۡفُسِہِمۡ ؕ وَ اِذَاۤ اَرَادَ اللّٰہُ بِقَوۡمٍ سُوۡٓءًا فَلَا مَرَدَّ لَہٗ ۚ وَ مَا لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ وَّالٍ ﴿۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
মানুষের জন্য পালাক্রমে আগমনকারী ফিরিশ্তা রয়েছে তাঁর সম্মুখে ও পশ্চাতে, যারা আল্লাহর আদেশে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণ করে। নিশ্চয় আল্লাহ্ কোন সম্প্রদায়ের নিকট থেকে তাঁর নি’মাতের পরিবর্তন করেন না যতক্ষন পর্যন্ত তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে না এবং যখন আল্লাহ্ কোন সম্প্রদায়ের অমঙ্গল চান তখন সেটা রদ হতে পারে না এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১. (প্রত্যেক) মানুষের জন্যে তার সম্মুখে এবং পশ্চাতে একের পর আরেক আগমনকারী (ফেরেশতা) রয়েছে, যারা আল্লাহর নির্দেশে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করে। আর যখন আল্লাহ্ কোনো সম্প্রদায়কে (তাদের অপকর্মের কারণে) শাস্তি দেয়ার ইচ্ছা করেন, তখন না কেউ তা রদ করতে পারে আর না তার জন্যে আল্লাহর বিপরীতে কোনো সাহায্যকারী রয়েছে।
ہُوَ الَّذِیۡ یُرِیۡکُمُ الۡبَرۡقَ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا وَّ یُنۡشِیٴُ السَّحَابَ الثِّقَالَ ﴿ۚ۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে বিজ্লী দেখান ভয় ও আশার নিমিত্ত এবং উত্তোলন করেন ভারী মেঘমালা;
📕ইরফানুল কুরআন:
১২. তিনিই তোমাদেরকে (কখনো) ভয় দেখাতে এবং (কখনো) আশান্বিত করতে বিজলী দেখান। আর (কখনো) ভারী (ঘন) মেঘমালা তুলে ধরেন।
وَ یُسَبِّحُ الرَّعۡدُ بِحَمۡدِہٖ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ مِنۡ خِیۡفَتِہٖ ۚ وَ یُرۡسِلُ الصَّوَاعِقَ فَیُصِیۡبُ بِہَا مَنۡ یَّشَآءُ وَ ہُمۡ یُجَادِلُوۡنَ فِی اللّٰہِ ۚ وَ ہُوَ شَدِیۡدُ الۡمِحَالِ ﴿ؕ۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং বজ্র তাঁর প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে আজ ফিরিশ্তাগণ তাঁর ভয়ে ; এবং তিনি বজ্র প্রেরণ করেন, অতঃপর সেটা আপতিত করেন যার উপর চান আর তারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে বাকবিতণ্ডা করতে থাকে; এবং তাঁর পাকড়াও কঠোর।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৩. (বিজলী এবং মেঘমালার) বজ্রনিনাদ (অথবা এর উপর নিয়োজিত ফেরেশতা) এবং অন্যসব ফেরেশতা সভয়ে তাঁর সপ্রশংস মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে। আর তিনি বজ্রপাত প্রেরণ করেন এবং যাকে ইচ্ছা এর দ্বারা আঘাত করেন। আর তারা (অর্থাৎ কাফেরেরা, কুদরতের এ নিদর্শনাবলী) সত্তেও আল্লাহর ব্যাপারে ঝগড়া করে। আর তিনি কৌশলে কঠোর ও পাকড়াওকারী।
لَہٗ دَعۡوَۃُ الۡحَقِّ ؕ وَ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ لَا یَسۡتَجِیۡبُوۡنَ لَہُمۡ بِشَیۡءٍ اِلَّا کَبَاسِطِ کَفَّیۡہِ اِلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُغَ فَاہُ وَ مَا ہُوَ بِبَالِغِہٖ ؕ وَ مَا دُعَآءُ الۡکٰفِرِیۡنَ اِلَّا فِیۡ ضَلٰلٍ ﴿۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাঁরই আহ্বান সত্য; এবং তিনি ব্যতীত যাদেরকে তারা আহ্বান করে সেগুলো তাদের কিছুই শুনে না, কিন্তু ওই ব্যক্তির মতো, যে পানির সামনে আপন হাতের তালুদ্বয় প্রসারিত করে বসে থাকে এ জন্য যে, সেটা তাঁর মুখে পৌছে যাবে, এবং তা কখনো পৌছবে না; আর কাফিরদের প্রত্যেক বর্ণনা নিষ্ফল হয়ে ফিরে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৪. তাঁরই জন্যে সত্যের (অর্থাৎ একত্ববাদের) আহ্বান। আর তারা (কাফেরেরা) তাঁকে ব্যতীত যেসবের (অর্থাৎ মিথ্যা উপাস্য মূর্তির) উপাসনা করে, তারা তাদেরকে কোনোই সাড়া দিতে পারে না। এর দৃষ্টান্ত তো কেবল সে ব্যক্তির ন্যায়, যে নিজ হস্তদ্বয়ের তালু পানির দিকে প্রসারিত করে (বসে) রয়েছে যে, পানি (নিজেই) তার মুখে পৌঁছবে; কিন্তু (এভাবে তো) তা তার নিকট পর্যন্ত পৌঁছার নয়। আর (এভাবে) কাফেরদের (মূর্তির উপাসনা এবং তাদের নিকট) আহ্বান গোমরাহীতে নিমজ্জন ছাড়া কিছুই নয়।
وَ لِلّٰہِ یَسۡجُدُ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّ کَرۡہًا وَّ ظِلٰلُہُمۡ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ ﴿ٛ۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহ্কেই সাজদা করে যতকিছু আসমানসমূহে ও যমীনে রয়েছে- ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলো প্রত্যেক সকাল ও সন্ধ্যায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৫. আর যা কিছুই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে রয়েছে তা তো আল্লাহ্কেই সেজদা করে, (কেউ) স্বেচ্ছায় এবং (কেউ) বাধ্য হয়ে, আর তাদের ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায় (তাঁকেই সেজদা করে। সুতরাং সেসব কাফেরেরা আল্লাহ্কে ছেড়ে কেন মূর্তিদেরকে সেজদা করতে শুরু করলো?)
قُلۡ مَنۡ رَّبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ قُلِ اللّٰہُ ؕ قُلۡ اَفَاتَّخَذۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ لَا یَمۡلِکُوۡنَ لِاَنۡفُسِہِمۡ نَفۡعًا وَّ لَا ضَرًّا ؕ قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الۡاَعۡمٰی وَ الۡبَصِیۡرُ ۬ۙ اَمۡ ہَلۡ تَسۡتَوِی الظُّلُمٰتُ وَ النُّوۡرُ ۬ۚ اَمۡ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ شُرَکَآءَ خَلَقُوۡا کَخَلۡقِہٖ فَتَشَابَہَ الۡخَلۡقُ عَلَیۡہِمۡ ؕ قُلِ اللّٰہُ خَالِقُ کُلِّ شَیۡءٍ وَّ ہُوَ الۡوَاحِدُ الۡقَہَّارُ ﴿۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
আপনি বলুন, ‘কে রব আসমানসমূহ ও যমীনের?’ আপনি নিজেই বলুন, ‘আল্লাহ্,’ আপনি বলুন! ‘তবে কি তোমরা তিনি ব্যতীত এমন সবকে অভিভাবকররূপে গ্রহণ করেছো, যারা নিজেদের উপকার ও অপকার করতে পারে না?’ আপনি বলুন, ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হয়ে যাবে, অথবা অন্ধকার এবং আলো কি সমান হয়ে যাবে? তারা কি আল্লাহর জন্য এমন শরীক স্থির করেছে, যারা আল্লাহর মতো কিছু সৃষ্টি করেছে, যে কারণে তাদের নিকট সেগুলোর এবং তাঁর সৃষ্টি করা এক ধরণের মনে হয়েছে?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ প্রত্যেক বস্তুর স্রষ্টা এবং তিনি একাই সবার উপর বিজয়ী’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৬. (ঐসব কাফেরদের উদ্দেশ্যে) বলুন, ‘কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক’? আপনিই বলে দিন, ‘আল্লাহ্’। (তাদেরকে পুনরায়) জিজ্ঞেস করুন, ‘তোমরা কি তাঁকে ছাড়া (সেসব মূর্তিকে) কার্যসম্পাদনকারী রূপে গ্রহণ করেছো, যারা নিজেদের সত্তার না কোনো উপকার করতে সক্ষম, আর না কোনো ক্ষতি?’ আপনি বলে দিন, ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? কিংবা অন্ধকার ও আলো কি এক হতে পারে?’ তারা কি আল্লাহর এমন অংশীদার সাব্যস্ত করেছে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির ন্যায় নিজেরা (কিছু) সৃষ্টি করেছে যে, (ওইসব মূর্তিসৃষ্ট) এ সৃষ্টি তাদের জন্যে সাদৃশ্যপূর্ণ (অর্থাৎ বিভ্রান্তিকর) হয়ে গেল? বলে দিন, ‘আল্লাহ্ই সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা। আর তিনি এক, তিনি সকলের উপর আধিপত্যশীল।’
اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَسَالَتۡ اَوۡدِیَۃٌۢ بِقَدَرِہَا فَاحۡتَمَلَ السَّیۡلُ زَبَدًا رَّابِیًا ؕ وَ مِمَّا یُوۡقِدُوۡنَ عَلَیۡہِ فِی النَّارِ ابۡتِغَآءَ حِلۡیَۃٍ اَوۡ مَتَاعٍ زَبَدٌ مِّثۡلُہٗ ؕ کَذٰلِکَ یَضۡرِبُ اللّٰہُ الۡحَقَّ وَ الۡبَاطِلَ ۬ؕ فَاَمَّا الزَّبَدُ فَیَذۡہَبُ جُفَآءً ۚ وَ اَمَّا مَا یَنۡفَعُ النَّاسَ فَیَمۡکُثُ فِی الۡاَرۡضِ ؕ کَذٰلِکَ یَضۡرِبُ اللّٰہُ الۡاَمۡثَالَ ﴿ؕ۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেছেন। ফলে, উপত্যাকাগুলো আপন আপন উপযুক্ততা মোতাবেক প্রবাহিত হলো। অতঃপর জলস্রোত সেটার উপরিভাগে ভেসে উঠা ফেনা বহন করে নিয়ে এলো; এবং গয়না অথবা অন্যান্য আসবাবপত্র তৈরী করার উদ্দেশ্যে, যেটার উপর আগুন প্রজ্বলিত করে তা থেকেও অনুরূপ ফেনা উঠে। আল্লাহ্ বলে দেন যে, হক ও বাতিলের এই উপমা; সুতরাং ফেনা তো এমনিতেই দূর হয়ে যায় আর যা মানুষের কাজে আসে তা যমীনে থেকে যায়। আল্লাহ্ এভাবে উপমাসমূহ বর্ণনা করেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৭. তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, ফলে উপত্যকাসমূহ নিজ (নিজ) সাধ্যানুযায়ী প্রবাহিত হয়। অতঃপর জলপ্রবাহ উপরিভাগে উত্থিত আবর্জনা বহন করে নিয়ে যায়। আর অলঙ্কার অথবা অন্য কোনো সামগ্রী বানানোর জন্যে যা কিছু আগুনে উত্তপ্ত করা হয়, তার উপরও এমনি ফেনা উঠে। এভাবে আল্লাহ্ তা’আলা সত্য ও বাতিলের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন। অতঃপর (পানির হোক কিংবা আগুনের) ফেনা তো নিষ্ফল মিলিয়ে যায়। আর নিশ্চয়ই যা কিছু মানুষের জন্যে উপকারী, তা জমিনে বিদ্যমান থাকে। আল্লাহ্ এভাবে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।
لِلَّذِیۡنَ اسۡتَجَابُوۡا لِرَبِّہِمُ الۡحُسۡنٰی ؕؔ وَ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَہٗ لَوۡ اَنَّ لَہُمۡ مَّا فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا وَّ مِثۡلَہٗ مَعَہٗ لَافۡتَدَوۡا بِہٖ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ سُوۡٓءُ الۡحِسَابِ ۬ۙ وَ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمِہَادُ ﴿۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে সব লোক আপন রবের আদেশ মান্য করেছে তাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। এবং যারা তাঁর হুকুম অমান্য করেছে, যদি যমীনে যা কিছু আছে সেসব এবং এর সমপরিমাণ আরো কিছু তাদের মালিকানায় থাকতো, তবে তারা আপন প্রাণ বাচানোর জন্য দিয়ে দিতো। এরাই হচ্ছে, যাদের মন্দ হিসাব হবে; এবং তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম; আর তা কতই নিকৃষ্ট বিছানা!
📕ইরফানুল কুরআন:
১৮. তাদের জন্যে রয়েছে কল্যাণ যারা তাদের প্রতিপালকের নির্দেশ গ্রহণ করে। আর যারা তাঁর নির্দেশ অগ্রাহ্য করে, তাদের নিকট যদি পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে সমস্তই থাকে এবং এর সাথে সমপরিমাণ আরও থাকে, তারা এগুলোকে (শাস্তি থেকে বাঁচার জন্যে) প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে দিয়ে দেয়, (তবুও) তাদের হিসাব হবে কঠোর। আর তাদের ঠিকানা জাহান্নাম, এবং তা খুবই মন্দ ঠিকানা।
اَفَمَنۡ یَّعۡلَمُ اَنَّمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ الۡحَقُّ کَمَنۡ ہُوَ اَعۡمٰی ؕ اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿ۙ۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি ওই ব্যক্তি, যে জানে যে, যা কিছু (হে হাবীব) আপনার প্রতি আপনার রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, সত্য, সে ব্যক্তি কি ওই ব্যক্তির মতো হবে, যে অন্ধ? উপদেশ তারাই মান্য করে যাদের বিবেক শক্তি রয়েছে;
📕ইরফানুল কুরআন:
১৯. অতঃপর যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য; সে কি ওই ব্যক্তির ন্যায় হতে পারে, যে অন্ধ? প্রকৃত বিষয় হলো, উপদেশ গ্রহণ করে বুদ্ধিমানেরাই,
الَّذِیۡنَ یُوۡفُوۡنَ بِعَہۡدِ اللّٰہِ وَ لَا یَنۡقُضُوۡنَ الۡمِیۡثَاقَ ﴿ۙ۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই সব লোক, যারা আল্লাহর প্রদত্ত অঙ্গীকার পূর্ণ করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে বেড়ায় না।
📕ইরফানুল কুরআন:
২০. যারা আল্লাহ্কে প্রদত্ত অঙ্গীকার পূর্ণ করে এবং চুক্তি ভঙ্গ করে না,
وَ الَّذِیۡنَ یَصِلُوۡنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰہُ بِہٖۤ اَنۡ یُّوۡصَلَ وَ یَخۡشَوۡنَ رَبَّہُمۡ وَ یَخَافُوۡنَ سُوۡٓءَ الۡحِسَابِ ﴿ؕ۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তারাই যারা জুড়ে সেই বন্ধনকে, যা জোড়ার জন্য আল্লাহ্ নির্দেশ দিয়েছেন এবং আপন রবকে ভয় করে আর হিসাবের মন্দ পরিণামের আশঙ্কাবোধ করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২১. আর যারা (আল্লাহর অধিকার, রাসূলের অধিকার, বান্দার অধিকার এবং স্বীয় নিকটাত্মীয়ের অধিকার) অক্ষুন্ন রাখে, যা অক্ষুন্ন রাখার জন্যে আল্লাহ্ তা’আলা নির্দেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় প্রতিপালকের ভয়ে ভীত থাকে, আর ভীত থাকে মন্দ হিসাব থেকে,
وَ الَّذِیۡنَ صَبَرُوا ابۡتِغَآءَ وَجۡہِ رَبِّہِمۡ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً وَّ یَدۡرَءُوۡنَ بِالۡحَسَنَۃِ السَّیِّئَۃَ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عُقۡبَی الدَّارِ ﴿ۙ۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা ধৈর্য ধারণ করেছে আপন রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য, নামায কায়েম রেখেছে এবং আমার প্রদত্ত সম্পদ থেকে আমারই পথে গোপনে ও প্রকাশ্যে কিছু ব্যয় করেছে এবং মন্দের পরিবর্তে ভাল কাজ করে সেটার প্রতিকার করে তাদেরই জন্য রয়েছে পরকালের লাভ-
📕ইরফানুল কুরআন:
২২. আর যারা স্বীয় প্রতিপালকের সন্তুষ্টির জন্যে ধৈর্য ধারণ করে, নামায কায়েম করে, আমরা তাদেরকে যে রিযিক প্রদান করেছি তা থেকে গোপনে এবং প্রকাশ্যে (উভয় পন্থায়) ব্যয় করে এবং সৎ কাজের মাধ্যমে মন্দকে দূরীভুত করে; তাদের জন্যেই পরকালে রয়েছে (সুদৃশ্য) আবাস।
جَنّٰتُ عَدۡنٍ یَّدۡخُلُوۡنَہَا وَ مَنۡ صَلَحَ مِنۡ اٰبَآئِہِمۡ وَ اَزۡوَاجِہِمۡ وَ ذُرِّیّٰتِہِمۡ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ یَدۡخُلُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ کُلِّ بَابٍ ﴿ۚ۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
বসবাস করার বাগান, যেগুলোতে তারা প্রবেশ করবে এবং যারা উপযুক্ত হয় তাদের পিতৃ-পুরুষ, স্ত্রীগণ ও সন্তান সন্ততিদের মধ্য থেকে, আর ফিরিশ্তাগণ প্রত্যেক দরজা দিয়ে তাদের নিকট এ কথা বলতে বলতে প্রবেশ করবে-
📕ইরফানুল কুরআন:
২৩. (যেখানে) চিরসবুজ বাগান রয়েছে, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের পূর্বপুরুষ এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানদের মধ্যে যারাই সৎকর্মশীল হবে তারা। আর ফেরেশতারা (জান্নাতে) তাদের নিকট প্রত্যেক দরোজা দিয়ে প্রবেশ করবে।
سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ بِمَا صَبَرۡتُمۡ فَنِعۡمَ عُقۡبَی الدَّارِ ﴿ؕ۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
‘শান্তি বর্ষিত হোক তোমাদের উপর- তোমাদের ধৈর্যধারণের পুরস্কার; সুতরাং পরকালের ঘর কতোই ভালো মিলেছে’!
📕ইরফানুল কুরআন:
২৪. (তাদেরকে স্বাগত ও মুবারকবাদ জানিয়ে বলা হবে:) ‘তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের ধৈর্যের বিনিময়ে। অতঃপর (দেখো) পরকালের আবাস কতোই না উত্তম!’
وَ الَّذِیۡنَ یَنۡقُضُوۡنَ عَہۡدَ اللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مِیۡثَاقِہٖ وَ یَقۡطَعُوۡنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰہُ بِہٖۤ اَنۡ یُّوۡصَلَ وَ یُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۙ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ اللَّعۡنَۃُ وَ لَہُمۡ سُوۡٓءُ الدَّارِ ﴿۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে তা পাকাপাকি হবার পর ভঙ্গ করে, এবং যা জুড়ে রাখার জন্য আল্লাহ্ নির্দেশ দিয়েছেন সেটা ছিন্ন করে এবং যমীনে ফ্যাসাদ ছড়ায়; তাদের অংশ হচ্ছে অভিসম্পাতই এবং তাদের ভাগ্যে জুটবে মন্দ ঘর।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৫. আর যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবার পর তা ভঙ্গ করে, যেসব (সম্পর্ক ও অধিকার) অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ্ তা’আলা নির্দেশ দিয়েছেন তা চ্ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে; তাদের জন্যে অভিসম্পাত এবং তাদেরই জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস।
اَللّٰہُ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَقۡدِرُ ؕ وَ فَرِحُوۡا بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ؕ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا مَتَاعٌ ﴿۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ যার জন্য ইচ্ছা করেন জীবিকা প্রশস্ত ও সংকুচিত করেন; আর কাফির পার্থিব জীবনের উপর উল্লাসিত হয়েছে; এবং পার্থিব জীবন পরকালের জীবনের তুলনায় নয়, কিন্তু কিছুদিন ভোগ করা মাত্র।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৬. আল্লাহ্ যার জন্যে চান জীবনোপকরণ অবারিত করেন, আর (যার জন্যে চান) সঙ্কুচিত করে দেন। আর এসব (অবিশ্বাসী) লোকেরা পার্থিব জীবনে অনেক উল্লসিত অথচ পার্থিব জীবন পরকালের তুলনায় তুচ্ছ উপভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।
وَ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ یُضِلُّ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَہۡدِیۡۤ اِلَیۡہِ مَنۡ اَنَابَ ﴿ۖۚ۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কাফিররা বলে, ‘তাঁর প্রতি কোন নিদর্শন তাদের রবের নিকট থেকে কেন অবতীর্ণ হয় নি?’ আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন এবং আপন পথ তাকে প্রদান করেন, যে তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তন করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৭. আর কাফেরেরা বলে, ‘(এ রাসূল)-এঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে কোনো নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হয়নি?’ বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা (নিদর্শনাবলী সত্তেও) গোমরাহ্ করেন। আর যে তাঁর অভিমূখী তিনি তাকে নিজের দিকে পথপ্রদর্শন করেন,
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ تَطۡمَئِنُّ قُلُوۡبُہُمۡ بِذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ اَلَا بِذِکۡرِ اللّٰہِ تَطۡمَئِنُّ الۡقُلُوۡبُ ﴿ؕ۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
ওই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে প্রশান্তি পায়; শুনে নাও, আল্লাহর স্মরণেই অন্তরের প্রশান্তি রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৮. যারা বিশ্বাস রাখে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। জেনে রেখো, আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমেই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে।
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ طُوۡبٰی لَہُمۡ وَ حُسۡنُ مَاٰبٍ ﴿۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারাই, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে; তাদের জন্য রয়েছে খুশী এবং শুভ পরিণাম।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৯. যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে (পরকালে) আনন্দ ও উল্লাস রয়েছে। আর রয়েছে উৎকৃষ্ট ঠিকানা।’
کَذٰلِکَ اَرۡسَلۡنٰکَ فِیۡۤ اُمَّۃٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِہَاۤ اُمَمٌ لِّتَتۡلُوَا۠ عَلَیۡہِمُ الَّذِیۡۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ وَ ہُمۡ یَکۡفُرُوۡنَ بِالرَّحۡمٰنِ ؕ قُلۡ ہُوَ رَبِّیۡ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ وَ اِلَیۡہِ مَتَابِ ﴿۳۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এভাবেই, আমি (হে হাবীব!) আপনাকে ওই উম্মতের মধ্যে প্রেরণ করেছি, যার পূর্বে অনেক উম্মত গত হয়েছে এ জন্য যে, আপনি তাদেরকে পাঠ করে শুনাবেন যা আমি আপনার প্রতি ওহী করেছি। এবং তারা রাহমানকে অস্বীকার করছে। আপনি বলুন, ‘তিনি আমার রব, তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত নেই, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করেছি এবং তাঁরই প্রতি আমার প্রত্যাবর্তন’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩০. (হে হাবীব!) এভাবে আমরা আপনাকে প্রেরণ করেছি (রাসূল রূপে) এমন এক জাতির মাঝে, যাদের পূর্বে প্রকৃতপক্ষে (বহু) জাতি গত হয়েছে; (এখন এরা সর্বশেষ উম্মত) যাতে আপনি তাদের নিকট (এ কিতাব) পাঠ করেন, যা আমরা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি। তথাপি তারা (পরম দয়ালু প্রভু) রাহমানকে অস্বীকার করছে। আপনি বলে দিন, ‘তিনি আমার প্রতিপালক, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই। তাঁরই উপর আমি ভরসা করেছি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।’
وَ لَوۡ اَنَّ قُرۡاٰنًا سُیِّرَتۡ بِہِ الۡجِبَالُ اَوۡ قُطِّعَتۡ بِہِ الۡاَرۡضُ اَوۡ کُلِّمَ بِہِ الۡمَوۡتٰی ؕ بَلۡ لِّلّٰہِ الۡاَمۡرُ جَمِیۡعًا ؕ اَفَلَمۡ یَایۡـَٔسِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ لَّوۡ یَشَآءُ اللّٰہُ لَہَدَی النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ لَا یَزَالُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا تُصِیۡبُہُمۡ بِمَا صَنَعُوۡا قَارِعَۃٌ اَوۡ تَحُلُّ قَرِیۡبًا مِّنۡ دَارِہِمۡ حَتّٰی یَاۡتِیَ وَعۡدُ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُخۡلِفُ الۡمِیۡعَادَ ﴿۳۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি এমন ক্বোরআন আসতো যা দ্বারা পর্বত স্থানচ্যুত হয়ে যেতো, অথবা যমীন বিদীর্ণ হতো, অথবা মৃতগণ কথা বলতো, তবুও এ কাফিররা মান্য করতো না, বরং সমস্ত কাজ আল্লাহরই ইখতিয়ারভুক্ত; তবে কি মুসলমানগণ এ থেকে নিরাশ হয় নি (যে, কাফিররা ঈমান আনবে? এবং তারা কি এ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জানে না) যে, আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে সমস্ত মানুষকে সৎ পথে পরিচালিত করতেন এবং কাফিরদের নিকট সব সময় তাদের কৃতকর্মের উপর এ কঠোর বিপদ-ধ্বনি পৌছতে থাকে, অথবা তাদের ঘরগুলোর নিকট আপতিত হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি আসে। নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩১. আর যদি এমন কোনো কুরআন হতো, যা দ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেতো অথবা যা দ্বারা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেতো অথবা যা দ্বারা মৃতদের সাথে কথা বলা যেতো (তবুও তারা ঈমান আনয়ন করতো না)। বরং সকল কর্মকান্ড আল্লাহরই কর্তৃত্বে রয়েছে। অতঃপর ঈমানদারগণ কি (এটি) জানে না যে, যদি আল্লাহ্ চাইতেন, তবে সকল মানুষকে হেদায়াত দান করতেন। আর সর্বদা কাফেরদের নিকট তাদের কর্মকান্ডের কারণে কোনো (না কোনো) মুসিবত আসতেই থাকবে অথবা তাদের গৃহ (অথবা জনপদ) -এর আশেপাশে আপতিত হতেই থাকবে, যতক্ষণ না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি (শাস্তি) উপস্থিত হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।
وَ لَقَدِ اسۡتُہۡزِیٴَ بِرُسُلٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ فَاَمۡلَیۡتُ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ثُمَّ اَخَذۡتُہُمۡ ۟ فَکَیۡفَ کَانَ عِقَابِ ﴿۳۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আপনার পূর্ববর্তী রসূলগণের সাথেও ঠাট্টা বিদ্রূপ করা হয়েছিলো। অতঃপর আমি কাফিরদেরকে কিছুদিনের জন্য অবকাশ দিয়েছি। তাঁরপর তাদেরকে পাকড়াও করেছি। অতঃপর কেমন ছিলো আমার শাস্তি!
📕ইরফানুল কুরআন:
৩২. আর আপনার পূর্বেও (কাফেরদের পক্ষ থেকে) অনেক রাসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হতো। সুতরাং আমি কাফেরদেরকে অবকাশ দিয়েছিলাম, অতঃপর তাদেরকে (শাস্তিতে) পাকড়াও করেছিলাম। সুতরাং (দেখুন) কেমন ছিল আমার শাস্তি!
اَفَمَنۡ ہُوَ قَآئِمٌ عَلٰی کُلِّ نَفۡسٍۭ بِمَا کَسَبَتۡ ۚ وَ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ شُرَکَآءَ ؕ قُلۡ سَمُّوۡہُمۡ ؕ اَمۡ تُنَبِّـُٔوۡنَہٗ بِمَا لَا یَعۡلَمُ فِی الۡاَرۡضِ اَمۡ بِظَاہِرٍ مِّنَ الۡقَوۡلِ ؕ بَلۡ زُیِّنَ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مَکۡرُہُمۡ وَ صُدُّوۡا عَنِ السَّبِیۡلِ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَمَا لَہٗ مِنۡ ہَادٍ ﴿۳۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি যিনি প্রত্যেক ব্যক্তির উপর তাঁর কর্মসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ করেন? আর তারা আল্লাহর অংশীদার দাঁড় করায়। আপনি বলুন, ‘তাদের নাম বলো!’ তোমরা কি তাকে তাই বলছো, যা তাঁর জ্ঞানে সমগ্র পৃথিবীতে নেই, না এমনি ভাসাভাস্য কথা? বরং কাফিরদের দৃষ্টিতে তাদের প্রতাঁরনা ভালো স্থির হয়েছে এবং সৎ পথ থেকে (তাদেরকে) রুখে দেওয়া হয়েছে। এবং আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ সৎপথ প্রদর্শনকারী নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৩. তবে কি যিনি প্রতিটি প্রাণের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করেন তিনি (আল্লাহ্) এবং (সেসব মূর্তি যা অবিশ্বাসী) লোকেরা আল্লাহর অংশীদার সাব্যস্ত করেছে- (কখনো এক হতে পারে? কখনো নয়)। আপনি বলে দিন, ‘তাদের নাম বলো (তো হে মুর্খরা!) তোমরা কি তাঁকে (অর্থাৎ আল্লাহ্কে) সমগ্র পৃথিবীতে এমন কিছুর (অস্তিত্বের) সংবাদ দিচ্ছো যা তিনি জানেন না, নাকি (এগুলো কেবল) বাহ্যিক কথাবার্তাই (প্রকৃত অবস্থার সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই)?’ বরং (প্রকৃত বিষয় হলো যে,) কাফেরদের নিকট নিজেদের চক্রান্তকে সুশোভিত মনে হয় এবং তাদেরকে (সরল) পথ থেকে নিবৃত্ত রাখা হয়েছে। আর যাকে আল্লাহ্ গোমরাহ্ করেন তো তার জন্যে কোনো হেদায়াতকারী হতে পারে না।
لَہُمۡ عَذَابٌ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ لَعَذَابُ الۡاٰخِرَۃِ اَشَقُّ ۚ وَ مَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ وَّاقٍ ﴿۳۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের পার্থিব জীবনে শাস্তি হবে এবং নিঃসন্দেহে আখিরাতের শাস্তি সবচেয়ে কঠোর; আর তাদেরকে আল্লাহ্ থেকে রক্ষা করার কেউ নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৪. তাদের জন্যে পার্থিব জীবনেও রয়েছে শাস্তি এবং পরকালের শাস্তি তো আরো কঠিন। আর তাদেরকে আল্লাহ্ (-এঁর শাস্তি) থেকে কোনো রক্ষাকারী নেই।
مَثَلُ الۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ وُعِدَ الۡمُتَّقُوۡنَ ؕ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ؕ اُکُلُہَا دَآئِمٌ وَّ ظِلُّہَا ؕ تِلۡکَ عُقۡبَی الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا ٭ۖ وَّ عُقۡبَی الۡکٰفِرِیۡنَ النَّارُ ﴿۳۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি খোদা ভীরুদের দেওয়া হয়েছে সেটার অবস্থাদি (এরূপ) সেটার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়; সেটার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং সেটার ছায়াও। খোদাভীরুদের শুভপরিণাম তো এই; এবং কাফিরদের পরিণাম আগুন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৫. পরহেযগারদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা (এমন) যে, তার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত, এর ফল এবং এর ছায়া(ও) সর্বদা বিদ্যমান। এটি সেসব লোকদের (উত্তম) পরিণাম যারা খোদাভীতি অবলম্বন করেছে। আর কাফেরদের পরিণতি জাহান্নামের অগ্নি।
وَ الَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یَفۡرَحُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ وَ مِنَ الۡاَحۡزَابِ مَنۡ یُّنۡکِرُ بَعۡضَہٗ ؕ قُلۡ اِنَّمَاۤ اُمِرۡتُ اَنۡ اَعۡبُدَ اللّٰہَ وَ لَاۤ اُشۡرِکَ بِہٖ ؕ اِلَیۡہِ اَدۡعُوۡا وَ اِلَیۡہِ مَاٰبِ ﴿۳۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা সেটারই উপর আনন্দিত হয়, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ওই সব দলের মধ্যে কিছু লোক এমনও রয়েছে, যারা সেটার কিছু অংশকে অস্বীকার করে। আপনি বলুন, ‘আমাকে তো এ নির্দেশই দেওয়া হয়েছে যেন আমি আল্লাহর বন্দেগী করি এবং যেন তাঁর শরীক দাঁড় না করি। আমি তাঁরই প্রতি আহ্বান করেছি এবং তাঁরই প্রতি আমার প্রত্যাবর্তন।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৬. আর যাদেরকে আমরা (তাওরাত) কিতাব দিয়েছিলাম, (যদি তারা বিশুদ্ধ মুমিন হয়, তবে) তারা (এ কুরআন)-এঁর ব্যাপারে আনন্দিত হয় যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর সে দলের(ই) এমন কতেক রয়েছে যারা এর কিছু অংশ অস্বীকার করে। বলে দিন, ‘আমাকে তো এ নির্দেশই দেয়া হয়েছে যে, আমি আল্লাহর ইবাদত করবো এবং তাঁর সাথে (কাউকে) অংশীদার সাব্যস্ত করবো না। তাঁরই দিকে আমি আহ্বান করছি এবং তাঁরই দিকে আমার প্রত্যাবর্তন।’
وَ کَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنٰہُ حُکۡمًا عَرَبِیًّا ؕ وَ لَئِنِ اتَّبَعۡتَ اَہۡوَآءَہُمۡ بَعۡدَ مَا جَآءَکَ مِنَ الۡعِلۡمِ ۙ مَا لَکَ مِنَ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا وَاقٍ ﴿۳۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এভাবে আমি সেটাকে আরবী মীমাংসা অবতীর্ণ করেছি আর হে শ্রোতা! যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো এরপর যে, তোমার নিকট জ্ঞান এসেছে, তবে আল্লাহর সম্মুখে না তোমার কোন অভিভাবক থাকবে, না রক্ষাকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৭. আর এভাবে আমরা একে (এ কুরআনকে) বিধান রূপে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করেছি। আর (হে শ্রবণকারী!) তোমার নিকট (অকাট্য) জ্ঞান আসার পর যদি তুমি তাদের (অর্থাৎ কাফেরদের) কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো, তবে তোমার জন্যে আল্লাহর বিরুদ্ধে না কোনো সাহায্যকারী হবে, আর না কোনো রক্ষাকারী।
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا رُسُلًا مِّنۡ قَبۡلِکَ وَ جَعَلۡنَا لَہُمۡ اَزۡوَاجًا وَّ ذُرِّیَّۃً ؕ وَ مَا کَانَ لِرَسُوۡلٍ اَنۡ یَّاۡتِیَ بِاٰیَۃٍ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ لِکُلِّ اَجَلٍ کِتَابٌ ﴿۳۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি আপনার পূর্বে রসূল প্রেরণ করেছি আর তাদের জন্য স্ত্রীগণ ও সন্তান সন্ততি সৃষ্টি করেছি এবং কোন রসূলের কাজ এই নয় যে, কোন নিদর্শন নিয়ে আসবেন, কিন্তু আল্লাহর নির্দেশে। প্রত্যেক প্রতিশ্রুতির একটা নির্ধারিত কাল লিপিবদ্ধ রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৮. আর (হে রাসূল!) নিশ্চয়ই আমরা আপনার পূর্বে (অনেক) রাসূল প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে স্ত্রী(ও) দিয়েছি এবং সন্তান-সন্ততি(ও)। আর কোনো রাসূলের কাজ এ নয় যে, তিনি আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত নিদর্শন নিয়ে আগমন করবেন। আর প্রত্যেক নির্ধারিত সময়ের জন্যে কার্যবিবরণী রয়েছে।
یَمۡحُوا اللّٰہُ مَا یَشَآءُ وَ یُثۡبِتُ ۚۖ وَ عِنۡدَہٗۤ اُمُّ الۡکِتٰبِ ﴿۳۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহ্ যা চান নিশ্চিহ্ন করেন এবং প্রতিষ্ঠিত করেন; এবং মূল লিপি তাঁরই নিকট রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৯. আল্লাহ্ (সে বিবরণীতে) যা ইচ্ছা মুছে দেন এবং (যা ইচ্ছা) বহাল রাখেন। আর তাঁরই নিকট প্রকৃত কিতাব (লাওহে মাহফুয) রয়েছে।
وَ اِنۡ مَّا نُرِیَنَّکَ بَعۡضَ الَّذِیۡ نَعِدُہُمۡ اَوۡ نَتَوَفَّیَنَّکَ فَاِنَّمَا عَلَیۡکَ الۡبَلٰغُ وَ عَلَیۡنَا الۡحِسَابُ ﴿۴۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি যদি আপনাকে দেখিয়ে দিই কোন প্রতিশ্রুতি, যা তাদেরকে দেওয়া হয় অথবা পূর্বেই আমার নিকট ডেকে নিই, তবে উভয় অবস্থাতেই আপনার কর্তব্য তো শুধু পৌছিয়ে দেওয়া; আর হিসাব নেওয়া আমার দায়িত্ব।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪০. আর যদি আমরা (এ শাস্তির) কিছু অংশ আপনাকে (যাহিরী জীবনেই) দেখিয়ে দেই যা এদেরকে (এ কাফেরদেরকে) অঙ্গীকার করেছি, অথবা আপনাকে (এরপূর্বেই) উঠিয়ে নেই (এ উভয় বিষয় আমাদের মর্জির উপর নির্ভরশীল), তবে আপনার কর্তব্য তো কেবল (বিধান) পৌঁছে দেয়া। আর হিসাব গ্রহণ করা আমাদের কাজ।
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اَنَّا نَاۡتِی الۡاَرۡضَ نَنۡقُصُہَا مِنۡ اَطۡرَافِہَا ؕ وَ اللّٰہُ یَحۡکُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُکۡمِہٖ ؕ وَ ہُوَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۴۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তাদের কী বোধগম্য হয় না যে, আমি চতুর্দিক থেকে তাদের আবাদ ভূমিকে সংকুচিত করে আনছি? এবং আল্লাহ্ আদেশ করেন; তাঁর আদেশকে পশ্চাতে নিক্ষেপকারী কেউ নেই এবং হিসাব গ্রহনে তাঁর বিলম্ব হয় না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪১. তারা কি দেখে না যে, আমরা (তাদের অধীনস্ত) জমিনকে সকল দিক থেকে অবিরাম সংকীর্ণ করে দিচ্ছি (আর তাদের অধিকাংশ এলাকা ক্রমান্বয়ে ইসলামের অধীনস্ত হচ্ছে)? আর আল্লাহ্ই নির্দেশ দেন, তাঁর নির্দেশের প্রতিহতকারী কেউই নেই। আর তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
وَ قَدۡ مَکَرَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلِلّٰہِ الۡمَکۡرُ جَمِیۡعًا ؕ یَعۡلَمُ مَا تَکۡسِبُ کُلُّ نَفۡسٍ ؕ وَ سَیَعۡلَمُ الۡکُفّٰرُ لِمَنۡ عُقۡبَی الدَّارِ ﴿۴۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তাদের পূর্ববর্তীগন প্রতাঁরণা করেছে। অতঃপর সমস্ত গোপন ব্যবস্থাপনার মালিক তো আল্লাহ্ই। তিনি জানেন যা কিছু প্রত্যেক ব্যক্তি উপার্জন করে এবং এখন কাফিরগণ জানতে চায় কে পাবে পরকালের আবাস।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪২. আর নিশ্চয়ই সে সকল লোকদের সাথেও চক্রান্ত ও প্রতারণা করা হয়েছিল, যারা তাদের পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। সুতরাং সেসব চক্রান্ত বিনষ্ট করা(ও) আল্লাহর কর্তৃত্বেই। তিনি ভালোভাবেই জানেন, যা কিছু সকল মানুষ অর্জন করে। আর কাফেরেরা শীঘ্রই জেনে যাবে যে, পরকালের নিবাস কার জন্যে রয়েছে।
وَ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَسۡتَ مُرۡسَلًا ؕ قُلۡ کَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًۢا بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ ۙ وَ مَنۡ عِنۡدَہٗ عِلۡمُ الۡکِتٰبِ ﴿۴۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং কাফিররা বলে, ‘আপনি রসূল নন’। আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ সাক্ষীরূপে যথেষ্ট আমার মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে; এবং সেও যার নিকট কিতাবের জ্ঞান রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৩. আর কাফেরেরা বলে, ‘আপনি প্রেরিত নন’। বলে দিন, ‘(আমার রিসালাতের উপর) আমার এবং তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট তো আল্লাহ্ এবং সে ব্যক্তি যার নিকট (বিশুদ্ধরূপে আসমানী) কিতাবের জ্ঞান রয়েছে।’