بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
📕ইরফানুল কুরআন:
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓرٰ ۟ کِتٰبٌ اُحۡکِمَتۡ اٰیٰتُہٗ ثُمَّ فُصِّلَتۡ مِنۡ لَّدُنۡ حَکِیۡمٍ خَبِیۡرٍ ۙ﴿۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
আলিফ লা------ম রা-। এটা এমন এক কিতাব, যার আয়াতগুলো হিকমতে পরিপূর্ণ; অতঃপর সুবিন্যস্ত করা হয়েছে প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের পক্ষ থেকে;
📕ইরফানুল কুরআন:
১. আলিফ-লাম-রা। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত। এটি এমন) কিতাব যার আয়াতসমূহকে সুদৃঢ় করা হয়েছে। অতঃপর প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ (প্রতিপালক)-এঁর পক্ষ থেকে একে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে;
اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ اِنَّنِیۡ لَکُمۡ مِّنۡہُ نَذِیۡرٌ وَّ بَشِیۡرٌ ۙ﴿۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে, ইবাদত করো না কিন্তু আল্লাহরই। নিঃসন্দেহে, আমি তোমাদের জন্য তারই পক্ষ থেকে সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা।
📕ইরফানুল কুরআন:
২. এ যে, আল্লাহ্ ব্যতীত তোমরা কারো ইবাদত করো না। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে সে সত্তা (আল্লাহ্) -এঁর পক্ষ থেকে সতর্ককারী ও সুসংবাদদানকারী।
وَّ اَنِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ یُمَتِّعۡکُمۡ مَّتَاعًا حَسَنًا اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی وَّ یُؤۡتِ کُلَّ ذِیۡ فَضۡلٍ فَضۡلَہٗ ؕ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ کَبِیۡرٍ ﴿۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এও যে, আপন রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তার প্রতি তাওবা করো। তিনি তোমাদেরকে অতি উত্তম সামগ্রী উপভোগ করতে দেবেন একটা নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত; এবং প্রত্যেক মর্যাদাবানের নিকট তার অনুগ্রহ পৌছাবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমি তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩. আর এ যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তাঁর সমীপে (খাঁটি অন্তরে) তওবা করো, তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম সামগ্রীর মাধ্যমে হৃষ্ট ও পরিতৃপ্ত রাখবেন এবং প্রত্যেক মর্যাদাবানকে তার মর্যাদার প্রতিদান দেবেন। (অর্থাৎ তার আমল ও মেহনতের আধিক্যতা অনুযায়ী প্রতিদান ও মর্যাদা দান করবেন।) আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমি তোমাদের জন্যে আশংকা করছি মহাদিবসের শাস্তি।
اِلَی اللّٰہِ مَرۡجِعُکُمۡ ۚ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমাদেরকে আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে; এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাশীল।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪. আল্লাহরই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। আর তিনি সকল কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
اَلَاۤ اِنَّہُمۡ یَثۡنُوۡنَ صُدُوۡرَہُمۡ لِیَسۡتَخۡفُوۡا مِنۡہُ ؕ اَلَا حِیۡنَ یَسۡتَغۡشُوۡنَ ثِیَابَہُمۡ ۙ یَعۡلَمُ مَا یُسِرُّوۡنَ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ۚ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
শুনো! তারা আপন বক্ষকে দ্বিভাজ করে (এ জন্য যে) আল্লাহর নিকট গোপন করবে। শুনো! যখন তারা আপন বস্ত্র দ্বারা সমগ্র শরীর আচ্ছাদিত করে নেয়, তখনও আল্লাহ্ তাদের গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুই জানেন। নিশ্চয়, তিনি অন্তরসমূহের কথা সম্পর্কে জ্ঞাত।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫. জেনে রেখো! নিশ্চয়ই এরা (অর্থাৎ কাফেরেরা) নিজেদের অন্তর সংকুচিত করে, যাতে তারা সে সত্তা (আল্লাহ্) থেকে (নিজেদের অন্তরের অবস্থা) গোপন রাখতে পারে। সাবধান! যখন তারা নিজেদের (দেহে) কাপড় জড়ায় (তখনও) তিনি সকল বিষয় জানেন যা তারা গোপন করে এবং যা তারা প্রকাশ করে। নিশ্চয়ই তিনি অন্তরের (গোপন) বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত।
وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ رِزۡقُہَا وَ یَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّہَا وَ مُسۡتَوۡدَعَہَا ؕ کُلٌّ فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ভূ-পৃষ্ঠে এমন কোন বিচরণকারী নেই, যার জীবিকা আল্লাহর করুণার দায়িত্বে নয়; এবং তিনি জানেন যে, সে কোথায় অবস্থান করবে এবং (তাকে) কোথায় সোপর্দ করা হবে; সব কিছু একটা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনাকারী কিতাবের মধ্যে রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬. আর পৃথিবীতে বিচরণশীল এমন কোনো সৃষ্টি (জীব) নেই যার রিযিক আল্লাহরই (মহান) দায়িত্বে নয়। আর তিনি এর স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতিও জানেন। সকল বিষয় সুস্পষ্ট কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ) রয়েছে।
وَ ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ وَّ کَانَ عَرۡشُہٗ عَلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ لَئِنۡ قُلۡتَ اِنَّکُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡمَوۡتِ لَیَقُوۡلَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তিনিই হন, যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার আরশ পানির উপর ছিলো, এ জন্য যে, তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন তোমাদের মধ্যে কার কর্ম ভালো; এবং যদি আপনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে তোমরা মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত হবে’, তবে কাফিরগণ অবশ্যই বলবে যে, এটা তো নয়, কিন্তু সুস্পষ্ট যাদু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭. আর তিনিই (আল্লাহ্) যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী (উর্ধ্ব ও নিম্ন জগত) ছয় দিনে (অর্থাৎ সৃষ্টি ও বিকাশের ছয়টি ধাপে বা পর্যায়কালে) সৃষ্টি করেছেন এবং (পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে) তাঁর ক্ষমতার সিংহাসন ছিল পানির উপর। (আর তিনি তা থেকে জীবনের সকল উদ্ভাসকে এবং তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন) যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন যে, তোমাদের মধ্যে কর্মের বিবেচনায় কে উত্তম? আর যদি আপনি বলেন, ‘তোমাদেরকে মৃত্যুর পর (জীবিত) উঠানো হবে’, তখন কাফেরেরা অবশ্যই (এ) বলবে, ‘এ তো সুস্পষ্ট যাদু ব্যতীত (আর) কিছু নয়’।
وَ لَئِنۡ اَخَّرۡنَا عَنۡہُمُ الۡعَذَابَ اِلٰۤی اُمَّۃٍ مَّعۡدُوۡدَۃٍ لَّیَقُوۡلُنَّ مَا یَحۡبِسُہٗ ؕ اَلَا یَوۡمَ یَاۡتِیۡہِمۡ لَیۡسَ مَصۡرُوۡفًا عَنۡہُمۡ وَ حَاقَ بِہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আমি তাদের থেকে শাস্তিকে কিছু নির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে দিই তবে তারা অবশ্যই বলবে, ‘কোন বস্তু বাধা দিয়েছে?’ শুনে নাও! যেদিন তাদের নিকট আসবে সেদিন (তা) তাদের নিকট থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে ওই শাস্তি, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮. আর যদি নির্ধারিত কিছুদিনের জন্যে আমরা তাদের শাস্তি স্থগিত রাখি, তবে তারা অবশ্যই বলবে, ‘কিসে একে প্রতিহত করে রেখেছে?’ সাবধান! যেদিন এ (শাস্তি) তাদের নিকট আসবে (তখন) তাদের থেকে ফিরে যাবে না। আর এ (শাস্তি) তাদের পরিবেষ্টন করবে, যা নিয়ে তারা উপহাস করতো।
وَ لَئِنۡ اَذَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنَّا رَحۡمَۃً ثُمَّ نَزَعۡنٰہَا مِنۡہُ ۚ اِنَّہٗ لَیَـُٔوۡسٌ کَفُوۡرٌ ﴿۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আমি মানুষকে আমার কোন রহমতের আস্বাদ দিই, অতঃপর তার নিকট থেকে তা ছিনিয়ে নিই; অবশ্যই সে বড় হতাশ, অকৃতজ্ঞ।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯. আর যদি আমরা মানুষকে আমাদের পক্ষ থেকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করাই, অতঃপর (কোনো কারণে) তার নিকট থেকে তা ফিরিয়ে নেই, তবে সে খুবই হতাশ (এবং) অকৃতজ্ঞ হয়।
وَ لَئِنۡ اَذَقۡنٰہُ نَعۡمَآءَ بَعۡدَ ضَرَّآءَ مَسَّتۡہُ لَیَقُوۡلَنَّ ذَہَبَ السَّیِّاٰتُ عَنِّیۡ ؕ اِنَّہٗ لَفَرِحٌ فَخُوۡرٌ ﴿ۙ۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যদি আমি তাকে নি’মাতের আস্বাদ প্রদান করি ওই মুসীবতের পর, যা তাকে স্পর্শ করেছে, তবে সে অবশ্যই বলবে, ‘বিপদসমূহ আমার নিকট থেকে কেটে গেছে; নিশ্চয়ই সে উৎফুল্ল, অহঙ্কারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০. আর যদি তাকে আমরা (কোনো) নিয়ামতের স্বাদ আস্বাদন করাই, তাকে দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করার পর, তবে সে বলে উঠে, ‘আমার সকল বিপদ-আপদ চলে গেছে’। নির্ঘাত সে বড়ই উৎফুল্ল (এবং) অহঙ্কারকারী (হয়ে যায়);
اِلَّا الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ اَجۡرٌ کَبِیۡرٌ ﴿۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
কিন্তু যারা ধৈর্যধারণ করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য ক্ষমা ও প্রতিদান রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১. তারা ব্যতীত যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং নেক আমল করে। (কাজেই) তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
فَلَعَلَّکَ تَارِکٌۢ بَعۡضَ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ وَ ضَآئِقٌۢ بِہٖ صَدۡرُکَ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ کَنۡزٌ اَوۡ جَآءَ مَعَہٗ مَلَکٌ ؕ اِنَّمَاۤ اَنۡتَ نَذِیۡرٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ وَّکِیۡلٌ ﴿ؕ۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি আপনার প্রতি যে ওহী আসে তা থেকে আপনি কিছু বর্জন করবেন এবং এতে কি মন সংকুচিত হবে, এতদ্ভিত্তিতে যে, তারা বলে, ‘তার সাথে কোন ধন-ভাণ্ডার কেন অবতীর্ণ হয় নি অথবা তার সাথে কোন ফিরিশ্তা কেন আসে নি?’ নিশ্চয় আপনি তো সতর্ককারী আর আল্লাহ্ প্রত্যেক বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২. আশ্চর্য! এও কি সম্ভব যে, আপনি এ থেকে কিছু ছেড়ে দিবেন যা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে! আর এর দ্বারা আপনার (পবিত্রতম) অন্তর বেদনাহত হয় (এ ধারণায়) যে, কাফেরেরা বলে, ‘এ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর নিকট কোনো ধনভান্ডার কেন প্রেরিত হয়নি, অথবা তাঁর সাথে কোনো ফেরেশতা কেন আগমন করেনি?’ (এমনটি কখনো সম্ভব নয়। হে সম্মানিত রাসূল!) আপনি তো কেবল সতর্ককারী (কাউকে পার্থিব লালসা বা শাস্তিপ্রদানকারী নন)। আর আল্লাহ্ সকল কিছুর অভিভাবক।
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِعَشۡرِ سُوَرٍ مِّثۡلِہٖ مُفۡتَرَیٰتٍ وَّ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি এ কথা বলে, ‘তিনি তা নিজের মন থেকে রচনা করেছেন?’ আপনি বলুন, ‘তোমরা এর অনুরূপ স্বরচিত দশটা সূরা নিয়ে এসো এবং আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের পাওয়া যায় সবাইকে ডেকে নাও যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৩. কাফেরেরা কি বলে, ‘রাসূল এটি (এ কুরআন) নিজে রচনা করেছেন?’ বলে দিন, ‘তোমরা(ও) এর অনুরূপ রচিত দশটি সূরা নিয়ে এসো, আর আল্লাহ্ ব্যতীত (নিজেদের সাহায্যের জন্যে) যাকেই পারো আহ্বান করো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
فَاِلَّمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکُمۡ فَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَاۤ اُنۡزِلَ بِعِلۡمِ اللّٰہِ وَ اَنۡ لَّاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে, হে মুসলমানগণ! যদি তারা তোমাদের এ আহ্বানে সাড়া দিতে না পারে, তবে বুঝে নাও যে, তা আল্লাহরই জ্ঞান দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে এবং এও যে, তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই। তবে কি এখন তোমরা মেনে নেবে?
📕ইরফানুল কুরআন:
১৪. (হে মুসলমানেরা!) সুতরাং যদি তারা তোমাদের কথা গ্রহণ না করে তবে বিশ্বাস রেখো যে, কুরআন আল্লাহরই জ্ঞান দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে, আর এ যে, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই। অতঃপর (এখন) কি তোমরা ইসলামের উপর (সুদৃঢ়) থাকবে?
مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا وَ زِیۡنَتَہَا نُوَفِّ اِلَیۡہِمۡ اَعۡمَالَہُمۡ فِیۡہَا وَ ہُمۡ فِیۡہَا لَا یُبۡخَسُوۡنَ ﴿۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও সেটার সাজসজ্জা কামনা করে, আমি তাঁতে তাদের (কৃতকর্মের) পূর্ণ ফল দিয়ে দেবো এবং এর মধ্যে কম দেবো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৫. যারা (কেবল) পার্থিব জীবন এবং এর সৌন্দর্য (ও সাজসজ্জা) অন্বেষণ করে, আমরা তাদের আমলের পুরোপুরি প্রতিদান এ দুনিয়াতেই দিয়ে দেই এবং তাদেরকে এতে (এ দুনিয়ার দানে) কিছুই কমানো হয় না।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَیۡسَ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا النَّارُ ۫ۖ وَ حَبِطَ مَا صَنَعُوۡا فِیۡہَا وَ بٰطِلٌ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এরা হচ্ছে ওইসব লোক, যাদের জন্য পরলোকে কিছুই নেই, কিন্তু আগুনই এবং নিষ্ফল হয়েছে যা কিছু ওখানে করতো এবং বিলীন হয়েছে যা তাদের কৃতকর্ম ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৬. এরা ঐসব লোক যাদের জন্যে পরকালে (জাহান্নামের) আগুন ব্যতীত (প্রাপ্ত অংশ) কিছুই নেই। আর ঐসব (আমল তাদের পরকালীন প্রতিদানের হিসাব থেকে) নিষ্ফল হয়ে গিয়েছে, যা তারা দুনিয়াতে করেছিল। আর সে (সব)-গুলো বাতিল ও অকেজো হয়ে গিয়েছে, যা তারা করতো। (কেননা তাদের হিসাব পূর্ণ প্রতিদানের সাথে দুনিয়াতেই চুকিয়ে দেয়া হয়েছে, আর পরকালের জন্যে কিছুই অবশিষ্ট নেই।)
اَفَمَنۡ کَانَ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ وَ یَتۡلُوۡہُ شَاہِدٌ مِّنۡہُ وَ مِنۡ قَبۡلِہٖ کِتٰبُ مُوۡسٰۤی اِمَامًا وَّ رَحۡمَۃً ؕ اُولٰٓئِکَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ ؕ وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِہٖ مِنَ الۡاَحۡزَابِ فَالنَّارُ مَوۡعِدُہٗ ۚ فَلَا تَکُ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّنۡہُ ٭ اِنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তবে কি (সে ওই ব্যক্তির সমতুল্য,) যে আপন রবের পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে, তার নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে সাক্ষী আসে এবং তার পূর্বে মূসার কিতাব পরিচালক ও অনুগ্রহ (হিসেবে ছিলো)? তারা সেটার উপর ঈমান আনে। আর সব দলে মধ্যে যে ব্যক্তি সেটা অস্বীকার করে তবে আগুনই তার প্রতিশ্রুত স্থান। সুতরাং, হে শ্রোতা! তুমি তাঁতে সন্দিগ্ধ হয়ো না। নিশ্চয় তা সত্য, তোমার রবের পক্ষ থেকে। কিন্তু অনেক মানুষ ঈমান রাখে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৭. সে ব্যক্তি যে স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দলিলের উপর রয়েছে, আর আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সাক্ষীও (অর্থাৎ কুরআন) তার শক্তিবৃদ্ধি ও সমর্থনের জন্যে আগমন করেছে এবং এরপূর্বে মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর কিতাবও (অর্থাৎ তাওরাত এসেছিল) যা ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমত। এ লোকেরাই (কুরআন)-এঁর উপর ঈমান আনয়ন করে। (এ ব্যক্তি এবং কাফের) দলগুলোর মধ্যে এ (কুরআন) অস্বীকারকারী ব্যক্তি (কি সমান হতে পারে), যখন জাহান্নামের অগ্নি তার ঠিকানা? সুতরাং (হে শ্রবণকারী!) তোমার উচিত যে, তুমি এ ব্যাপারে সামান্যতমও সন্দেহে পতিত হবে না। নিশ্চয়ই এ (কুরআন) তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস স্থাপন করে না।
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا ؕ اُولٰٓئِکَ یُعۡرَضُوۡنَ عَلٰی رَبِّہِمۡ وَ یَقُوۡلُ الۡاَشۡہَادُ ہٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ کَذَبُوۡا عَلٰی رَبِّہِمۡ ۚ اَلَا لَعۡنَۃُ اللّٰہِ عَلَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۱۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে? তাদেরকে আপন রবের সম্মুখে উপস্থিত করা হবে এবং সাক্ষীগণ বলবে, ‘এরাই হচ্ছে যারা আপন রব সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করেছিলো। ওহে! যালিমদের উপর আল্লাহর লা’নত;
📕ইরফানুল কুরআন:
১৮. আর তার চেয়ে বড় যালিম কে হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে। এসব লোকদেরকেই তাদের প্রতিপালকের সমীপে পেশ করা হবে। আর সাক্ষী বলবে, ‘এরাই সেসব লোক যারা তাদের প্রতিপালকের বিষয়ে মিথ্যা বলেছিল’। জেনে রেখো, যালিমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত -
الَّذِیۡنَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ یَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ؕ وَ ہُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
যারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং তাঁতে বক্রতা অনুসন্ধান করে; আর তারাই পরকালকে অস্বীকারকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
১৯. যারা (অন্যদের জন্যে) আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং এতে কুটিলতা অন্বেষণ করে; আর এ সকল লোকই পরকালকে অস্বীকার করে।
اُولٰٓئِکَ لَمۡ یَکُوۡنُوۡا مُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا کَانَ لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ اَوۡلِیَآءَ ۘ یُضٰعَفُ لَہُمُ الۡعَذَابُ ؕ مَا کَانُوۡا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ السَّمۡعَ وَ مَا کَانُوۡا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা পৃথিবীতে (আল্লাহ্কে) ঠেকাতে পারে এমন নয় এবং না তাদের জন্য আল্লাহ্ থেকে পৃথক কোন সাহায্যকারী আছে। তাদের শাস্তির উপর শাস্তি হবে। না তারা শুনতে পারতো এবং না দেখতে পেতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
২০. এরা (আল্লাহ্কে) পৃথিবীতে অক্ষম করে দেবার শক্তি রাখে না, আর তাদের জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সাহায্যকারীও নেই। তাদের জন্যে শাস্তি দ্বিগুণ করে দেয়া হবে, (কেননা) তারা না (সত্য কথা) শ্রবণের শক্তি রাখতো আর না (সত্যকে) দেখতো।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারাই হচ্ছে, যারা নিজেদের আত্নাগুলোকে ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে এবং তাদের পক্ষ থেকে উধাও হয়ে গেছে যেসব কথা তারা রচনা করতো।
📕ইরফানুল কুরআন:
২১. এরাই সেসব লোক, যারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তারা যে (সব) মিথ্যা অপবাদ রচনা করতো তা তাদের থেকে উধাও হয়ে গেছে।
لَا جَرَمَ اَنَّہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ ہُمُ الۡاَخۡسَرُوۡنَ ﴿۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায়, তারাই পরকালে সর্বাধিক ক্ষতির মধ্যে (থাকবে)।
📕ইরফানুল কুরআন:
২২. এটি সম্পূর্ণরূপে সত্য যে, নিশ্চিত তারাই পরকালে সবচেয়ে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اَخۡبَتُوۡۤا اِلٰی رَبِّہِمۡ ۙ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয়, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে আর আপন রবের প্রতি ঝুকে পড়েছে, তারা জান্নাতবাসী, তারা তাঁতে সর্বদা থাকবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৩. নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাসী, সৎকর্মপরায়ণ এবং নিজেদের প্রতিপালকের সমীপে বিনম্র তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা তাতে চিরকাল বসবাসকারী।
مَثَلُ الۡفَرِیۡقَیۡنِ کَالۡاَعۡمٰی وَ الۡاَصَمِّ وَ الۡبَصِیۡرِ وَ السَّمِیۡعِ ؕ ہَلۡ یَسۡتَوِیٰنِ مَثَلًا ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۲۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
উভয় দলের অবস্থা তেমনই, যেমন অন্ধ ও বধির এবং দৃষ্টি শক্তি ও শ্রবণ শক্তিসম্পন্ন। উভয়ের অবস্থা কি এক সমান? তবে কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করছো না?
📕ইরফানুল কুরআন:
২৪. (কাফের ও মুসলমান) উভয় দলের দৃষ্টান্ত অন্ধ ও বধির এবং (এর বিপরীতে) দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ও শ্রবণশক্তিসম্পন্নের মতো। উভয়ের অবস্থা কি সমান? এরপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖۤ ۫ اِنِّیۡ لَکُمۡ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۙ۲۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি। (সে বললো) ‘আমি তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী;
📕ইরফানুল কুরআন:
২৫. আর আমরা তো নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। (তিনি তাদেরকে বলেছিলেন) ‘আমি তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী (হয়ে আগমন করেছি)-
اَنۡ لَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ اَلِیۡمٍ ﴿۲۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
যেন তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করো; নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক বিপদসঙ্কুল দিনের শাস্তির আশঙ্কা করি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৬. যে, তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত কারো ইবাদত করো না, আমি তোমাদের উপর মর্মন্তুদ দিবসের শাস্তি (আগমনের) আশংকা করছি।’
فَقَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ مَا نَرٰىکَ اِلَّا بَشَرًا مِّثۡلَنَا وَ مَا نَرٰىکَ اتَّبَعَکَ اِلَّا الَّذِیۡنَ ہُمۡ اَرَاذِلُنَا بَادِیَ الرَّاۡیِ ۚ وَ مَا نَرٰی لَکُمۡ عَلَیۡنَا مِنۡ فَضۡلٍۭ بَلۡ نَظُنُّکُمۡ کٰذِبِیۡنَ ﴿۲۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং তার সম্প্রদায়ের প্রধানরা, যারা কাফির ছিলো, বললো, ‘আমরা তো তোমাকে আমাদেরই মতো মানুষ দেখছি, এবং আমরা দেখছি না যে, তোমার অনুসরণ কেউ করেছে, কিন্তু আমাদের হীন লোকেরাই, অগভীর দৃষ্টিতে; এবং আমরা তোমাদের মধ্যে আমাদের উপর কোন শ্রেষ্ঠত্ব দেখতে পাচ্ছি না, বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৭. সুতরাং তার সম্প্রদায়ের কুফরিতে নিমজ্জিত নেতৃস্থানীয়রা বললো, ‘আমাদের কাছে তো তোমাকে আমাদের মতোই একজন মানুষ মনে হয়; আর আমরা আমাদের (সমাজের) হালকা ধারণা পোষণকারী (না বুঝে না শুনে তোমার পশ্চাতে লেগে থাকা) তুচ্ছ ও নিম্নশ্রেণীর মানুষ ব্যতীত (সম্মানিত) কাউকে তোমার আনুগত্য করতে দেখছি না। আর আমরা আমাদের উপর তোমাদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব ও উচ্চমর্যাদাও দেখছি না (অর্থাৎ শক্তি-সামর্থ, ধন-দৌলত অথবা তোমাদের দলে সম্মানিত লোকের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, মোটকথা এমন কোনো উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য দেখছি না); বরং আমরা তো তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করি।’
قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ اٰتٰىنِیۡ رَحۡمَۃً مِّنۡ عِنۡدِہٖ فَعُمِّیَتۡ عَلَیۡکُمۡ ؕ اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا وَ اَنۡتُمۡ لَہَا کٰرِہُوۡنَ ﴿۲۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! হাঁ বলো তো, যদি আমি আপন রবের নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত হই এবং তিনি আমাকে তার নিকট থেকে অনুগ্রহ দান করে থাকেন, অতঃপর তোমরা সে বিষয়ে অন্ধ হয়ে থাকো, আমরা কি সেটাকে তোমাদের গলায় বেধে দেবো আর তোমরা হও অসন্তুষ্ট?’
📕ইরফানুল কুরআন:
২৮. (নূহ আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! বলো তো, যদি আমি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের উপরও অবস্থান করি আর তিনি আমাকে স্বীয় (বিশেষ) অনুগ্রহও দান করেন; অথচ তা তোমাদের নিকট (অন্ধদের মতো) গোপন করা হয়েছে, আমরা কি এ বিষয়ে তোমাদেরকে বাধ্য করতে পারি যখন তোমরা একে অপছন্দ করো?
وَ یٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡئَلُکُمۡ عَلَیۡہِ مَالًا ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّہُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّہِمۡ وَ لٰکِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ قَوۡمًا تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۲۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে সম্প্রদায়! আমি তোমাদের নিকট এর পরিবর্তে কোন ধন-সম্পদ চাই না; আমার প্রতিদান তো আল্লাহরই নিকট রয়েছে এবং আমি মুসলমানদেরকে বিতাড়নকারী নই; নিশ্চয় তারা আপন রবের সাথে সাক্ষাতকারী, কিন্তু আমি তোমাদেরকে নিরেট মূর্খলোকরূপেই পাচ্ছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
২৯. আর হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের নিকট (এ দাওয়াত ও প্রচারকার্য)-এর বিনিময়ে কোনো ধন-সম্পদ(ও) দাবি করি না; আমার প্রতিদান তো কেবল আল্লাহরই নিকট রয়েছে। আর আমি (তোমাদের কারণে গরীব ও পশ্চাদপদ) বিশ্বাসীগণকে বিতাড়নকারীও নই। (তোমরা তাদেরকে তুচ্ছ মনে করো না, তারাই প্রকৃত সম্মানের অধিকারী) নিশ্চয়ই তারা তাদের প্রতিপালকের সাক্ষাত লাভের মাধ্যমে সৌভাগ্য অর্জনকারী। আর আমি তো প্রকৃতপক্ষে তোমাদেরকে অজ্ঞ (ও নির্বোধ) সম্প্রদায় হিসেবে দেখছি।
وَ یٰقَوۡمِ مَنۡ یَّنۡصُرُنِیۡ مِنَ اللّٰہِ اِنۡ طَرَدۡتُّہُمۡ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে সম্প্রদায়! আমাকে আল্লাহ্ থেকে কে রক্ষা করবে যদি আমি তাদেরকে বিতাড়িত করি? তবুও কি তোমরা মনোযোগ দিচ্ছো না?
📕ইরফানুল কুরআন:
৩০. আর হে আমার সম্প্রদায়! যদি আমি তাদেরকে বিতাড়িত করে দেই তবে আল্লাহ্ (-এঁর ক্রোধ) থেকে (রক্ষা করার জন্যে) আমাকে কে সাহায্য করতে পারে, তোমরা কি অনুধাবন করো না?
وَ لَاۤ اَقُوۡلُ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ خَزَآئِنُ اللّٰہِ وَ لَاۤ اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ وَ لَاۤ اَقُوۡلُ اِنِّیۡ مَلَکٌ وَّ لَاۤ اَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ تَزۡدَرِیۡۤ اَعۡیُنُکُمۡ لَنۡ یُّؤۡتِیَہُمُ اللّٰہُ خَیۡرًا ؕ اَللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ ۚۖ اِنِّیۡۤ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۳۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহ্ ধন-ভাণ্ডারসমূহ রয়েছে; এবং না এও যে, আমি অদৃশ্য জেনে নেই, আর এ কথাও বলি না যে, আমি ফিরিশ্তা হই এবং আমি তাদেরকে একথা বলি না যাদেরকে তোমাদের দৃষ্টি হীন মনে করে, ‘আল্লাহ্ কখনো তাদেরকে কোন মঙ্গল দেবেন না’। আল্লাহ্ ভালোভাবে জানেন যা কিছু তাদের অন্তরে রয়েছে। এমন করলে অবশ্যই আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩১. আর আমি তোমাদেরকে (এ কথা) বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধনভান্ডার রয়েছে (অর্থাৎ আমি অসীম সম্পদশালী), আমি (আল্লাহর প্রত্যাদেশ ব্যতীত) নিজে অদৃশ্যও জানি না, আর আমি এ কথাও বলি না যে, আমি (মানুষের মাঝে) ফেরেশতা (অর্থাৎ আমার দাওয়াহ অলৌকিক দাবির ভিত্তিতে নয়)। আর আমি তোমাদের দৃষ্টিতে তুচ্ছ লোকদের ব্যাপারে এ কথাও বলি না যে, আল্লাহ্ তাদেরকে কখনো কোনো কল্যাণ দান করবেন না। (এ তো আল্লাহর নির্দেশ এবং প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত অংশ।) আল্লাহ্ অধিকতর অবগত, যা কিছু তাদের অন্তরে রয়েছে। (যদি এমনটি বলি তবে) নিশ্চয়ই আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।’
قَالُوۡا یٰنُوۡحُ قَدۡ جٰدَلۡتَنَا فَاَکۡثَرۡتَ جِدَالَنَا فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۳۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘হে নূহ! তুমি আমাদের সাথে ঝগড়া করেছো এবং অতিমাত্রায় ঝগড়া করেছো; সুতরাং তা নিয়ে এসো যেটার প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে দিচ্ছো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩২. তারা বলতে লাগলো, ‘হে নূহ! নিশ্চয়ই তুমি আমাদের সাথে বিবাদ করেছো, বস্তুত তুমি আমাদের সাথে অনেক বিবাদ করেছো। সুতরাং এখন আমাদের নিকট এমন কিছু (শাস্তি) নিয়ে এসো যার অঙ্গীকার তুমি আমাদেরকে করছো, যদি তুমি (প্রকৃতই) সত্যবাদী হও।’
قَالَ اِنَّمَا یَاۡتِیۡکُمۡ بِہِ اللّٰہُ اِنۡ شَآءَ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ ﴿۳۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললো, ‘সেটা তো আল্লাহ্ তোমাদের নিকট উপস্থিত করবেন যদি তিনি চান আর তোমরা ঠেকাতে পারবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৩. (নূহ আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এ (শাস্তি) তো কেবল আল্লাহ্ই তোমাদের জন্যে নিয়ে আসবেন, যদি তিনি ইচ্ছে করেন; আর তোমরা (তাঁকে) প্রতিহত করতে পারবে না।
وَ لَا یَنۡفَعُکُمۡ نُصۡحِیۡۤ اِنۡ اَرَدۡتُّ اَنۡ اَنۡصَحَ لَکُمۡ اِنۡ کَانَ اللّٰہُ یُرِیۡدُ اَنۡ یُّغۡوِیَکُمۡ ؕ ہُوَ رَبُّکُمۡ ۟ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿ؕ۳۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তোমাদেরকে আমার উপদেশ উপকার দেবে না যদি আমি তোমাদের মঙ্গল কামনা করি, যখন আল্লাহ্ তোমাদের পথভ্রষ্টতা চান। তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করানো হবে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৪. আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসবে না যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করার ইচ্ছা করেন। তিনি তোমাদের প্রতিপালক আর তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।’
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ اِنِ افۡتَرَیۡتُہٗ فَعَلَیَّ اِجۡرَامِیۡ وَ اَنَا بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُجۡرِمُوۡنَ ﴿۳۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা কি বলে, ‘তিনি সেটা মনগড়াভাবে রচনা করে নিয়েছেন?’ আপনি বলুন, ‘যদি আমি তা রচনা করে থাকি, তবে আমার পাপ আমার উপরই বর্তাবে এবং আমি হলাম তোমাদের পাপ থেকে পৃথক’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৫. (হে সম্মানিত হাবীব!) তারা কি বলে, ‘রাসূল এটি (এ কুরআন) নিজে রচনা করেছেন?’ বলে দিন, ‘যদি আমি এটি রচনা করে থাকি তবে আমার অপরাধ (-এর পরিণাম) আমার উপরই আসবে। আর আমি তা থেকে দায়মুক্ত, যে অপরাধ তোমরা করছো।’
وَ اُوۡحِیَ اِلٰی نُوۡحٍ اَنَّہٗ لَنۡ یُّؤۡمِنَ مِنۡ قَوۡمِکَ اِلَّا مَنۡ قَدۡ اٰمَنَ فَلَا تَبۡتَئِسۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿ۚۖ۳۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নূহের প্রতি ওহী হয়েছে, ‘তোমার সম্প্রদায় থেকে যত সংখ্যক লোক ঈমান এনেছে তারা ছাড়া অন্য কোন মুসলমান হবে না। সুতরাং তুমি তজ্জন্য দুঃখ করো না, যা তারা করছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৬. আর নূহ (আলাইহিস সালাম)-এঁর প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছিল, ‘যারা (এখন পর্যন্ত) ঈমান আনয়ন করেছে তারা ব্যতীত (এখন) তোমার সম্প্রদায়ের (আর) কেউ কখনো ঈমান আনয়ন করবে না। সুতরাং তুমি তাদের (মিথ্যাচার ও উপহাসের) কর্মকান্ডে চিন্তিত হয়ো না।
وَ اصۡنَعِ الۡفُلۡکَ بِاَعۡیُنِنَا وَ وَحۡیِنَا وَ لَا تُخَاطِبۡنِیۡ فِی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ۚ اِنَّہُمۡ مُّغۡرَقُوۡنَ ﴿۳۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমার সামনে কিশ্তী তৈরী করো এবং আমারই নির্দেশে; আর যালিমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না; তাদেরকে অবশ্যই ডুবিয়ে মারা হবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৭. আর তুমি আমাদের নির্দেশ অনুসারে আমাদের সম্মুখে একটি নৌকা নির্মাণ করো এবং যালিমদের ব্যাপারে আমাকে (কিছু) বলো না। তারা অবশ্যই নিমজ্জিত হবে।’
وَ یَصۡنَعُ الۡفُلۡکَ ۟ وَ کُلَّمَا مَرَّ عَلَیۡہِ مَلَاٌ مِّنۡ قَوۡمِہٖ سَخِرُوۡا مِنۡہُ ؕ قَالَ اِنۡ تَسۡخَرُوۡا مِنَّا فَاِنَّا نَسۡخَرُ مِنۡکُمۡ کَمَا تَسۡخَرُوۡنَ ﴿ؕ۳۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নূহ কিশ্তী তৈরী করেছেন; আর যখন তার সম্প্রদায় প্রধানরা তার নিকট দিয়ে যেতো, তখন তা নিয়ে উপহাস করতো; বললো, ‘যদি তোমরা আমাদেরকে উপহাস করো, তবে আমরাও এক সময় তোমাদেরকে উপহাস করবো, যেমন তোমরা উপহাস করছো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৮. আর নূহ (আলাইহিস সালাম) নৌকা নির্মাণ করতে লাগলেন; আর যখনই তাঁর সম্প্রদায়ের সর্দারেরা তাঁর নিকট দিয়ে অতিক্রম করতো তাঁকে উপহাস করতো। নূহ (আলাইহিস সালাম প্রতিউত্তরে) বলতেন, ‘যদিও (আজ) তোমরা আমাদেরকে উপহাস করছো, (আগামীকাল) আমরাও তোমাদেরকে উপহাস করবো, যেভাবে তোমরা উপহাস করছো।
فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ یَّاۡتِیۡہِ عَذَابٌ یُّخۡزِیۡہِ وَ یَحِلُّ عَلَیۡہِ عَذَابٌ مُّقِیۡمٌ ﴿۳۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং অবিলম্বে জেনে নেবে কার উপর ওই শাস্তি আসছে, যা তাকে লাঞ্ছিত করবে এবং আপতিত হয় ওই শাস্তি যা স্থায়ী হবে’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৩৯. সুতরাং তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কার উপর (দুনিয়াতেই) শাস্তি অবশ্যম্ভাবী যা তাকে অপমান ও অপদস্ত করবে এবং (আবার পরকালেও কার উপর) চিরস্থায়ী শাস্তি নেমে আসবে।’
حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَمۡرُنَا وَ فَارَ التَّنُّوۡرُ ۙ قُلۡنَا احۡمِلۡ فِیۡہَا مِنۡ کُلٍّ زَوۡجَیۡنِ اثۡنَیۡنِ وَ اَہۡلَکَ اِلَّا مَنۡ سَبَقَ عَلَیۡہِ الۡقَوۡلُ وَ مَنۡ اٰمَنَ ؕ وَ مَاۤ اٰمَنَ مَعَہٗۤ اِلَّا قَلِیۡلٌ ﴿۴۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
অবশেষে, যখন আমার আদেশ এলো এবং উনান উথলে উঠলো, আমি বললাম, ‘কিশ্তীতে উঠিয়ে নাও প্রত্যেক শ্রেণী থেকে এক জোড়া করে নর ও মাদী এবং যাদের বিরুদ্ধে পূর্ব সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে তারা ব্যতীত আপন পরিবার পরিজনকে ও অবশিষ্ট মুসলমানদেরকে; এবং তার সাথে মুসলমান ছিলো না, কিন্তু অল্প সংখ্যক লোক।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪০. অবশেষে যখন আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছলো এবং ভু-পৃষ্ঠ (ঊর্ধ্বমুখী প্রস্রবনের মতো) প্রবল বেগে উথলে উঠতে লাগলো (তখন) আমরা বললাম, ‘(হে নূহ!) নৌকায় তুলে নাও সকল প্রজাতি থেকে (নর ও মাদী) একজোড়া, যাদের (ধ্বংসের) পূর্ব-সিদ্ধান্ত হয়ে আছে তারা ব্যতীত তোমার পরিবারকেও (নিয়ে নাও)। আর যে ব্যক্তি বিশ্বাস স্থাপন করেছে (তাকেও সাথে নাও)।’ আর তাঁর সাথে কেবল সামান্য কিছু (লোক) বিশ্বাস স্থাপন করেছিল।
وَ قَالَ ارۡکَبُوۡا فِیۡہَا بِسۡمِ اللّٰہِ مَجۡؔرٖىہَا وَ مُرۡسٰىہَا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۴۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং বললো, ‘এতে আরোহণ করো! আল্লাহর নামে সেটার গতি ও সেটার স্থিতি’। নিশ্চয় নিশ্চয় আমার রব ক্ষমাশীল দয়ালু।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪১. (নূহ আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা এতে আরোহণ করো, আল্লাহরই নামে এটি চলে এবং থেমে যায়। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।’
وَ ہِیَ تَجۡرِیۡ بِہِمۡ فِیۡ مَوۡجٍ کَالۡجِبَالِ ۟ وَ نَادٰی نُوۡحُۨ ابۡنَہٗ وَ کَانَ فِیۡ مَعۡزِلٍ یّٰـبُنَیَّ ارۡکَبۡ مَّعَنَا وَ لَا تَکُنۡ مَّعَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
‘এবং সেটা তাদেরকে পাহাড়সম তরঙ্গগুলোর মধ্যে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো এবং নূহ আপন পুত্রকে আহ্বান করে বললো, অথচ সে তার নিকট থেকে পৃথক ছিলো, ‘হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে আরোহণ করো এবং কাফিরদের সঙ্গী হয়ো না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪২. আর এ নৌকা পর্বতসম (বিশাল) ঢেউয়ের মাঝে চলতে লাগলো। তখন নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর ছেলেকে ডাকলেন, যে তাঁর থেকে পৃথক হয়ে (কাফেরদের সাথে দন্ডায়মান) ছিল; ‘হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে আরোহণ করো এবং কাফেরদের সঙ্গী হয়ো না।’
قَالَ سَاٰوِیۡۤ اِلٰی جَبَلٍ یَّعۡصِمُنِیۡ مِنَ الۡمَآءِ ؕ قَالَ لَا عَاصِمَ الۡیَوۡمَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰہِ اِلَّا مَنۡ رَّحِمَ ۚ وَ حَالَ بَیۡنَہُمَا الۡمَوۡجُ فَکَانَ مِنَ الۡمُغۡرَقِیۡنَ ﴿۴۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
সে বললো, ‘এখনই আমি কোন পর্বতে আশ্রয় নিচ্ছি। তা আমাকে পানি থেকে রক্ষা করবে’। বললো, ‘আজ আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করার কেউ নেই, কিন্তু যার উপর তিনি দয়া করবেন’। এবং তাদের মধ্যখানে তরঙ্গ আড়াল হলো। অতঃপর সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৩. সে বললো, ‘আমি (নৌকায় আরোহণের পরিবর্তে) এখনই কোনো পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছি, তা আমাকে প্লাবন থেকে রক্ষা করবে’। নূহ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘যার উপর তিনি (আল্লাহ্) অনুগ্রহ করেন সে ব্যতীত আজ আল্লাহর আযাব থেকে কোনো রক্ষাকারী নেই’। এর মধ্যেই (পিতা-পুত্র) উভয়ের মাঝে (প্রচন্ড) ঢেউ প্রতিবন্ধক হয়ে গেল। অতঃপর সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হলো।
وَ قِیۡلَ یٰۤاَرۡضُ ابۡلَعِیۡ مَآءَکِ وَ یٰسَمَآءُ اَقۡلِعِیۡ وَ غِیۡضَ الۡمَآءُ وَ قُضِیَ الۡاَمۡرُ وَ اسۡتَوَتۡ عَلَی الۡجُوۡدِیِّ وَ قِیۡلَ بُعۡدًا لِّلۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নির্দেশ দেয়া হলো, ‘হে যমীন, তুমি তোমার পানি গ্রাস করে নাও এবং হে আসমান, থেমে যাও!’ এবং পানি শুকিয়ে দেওয়া হলো। আর কার্য সমাপ্ত হলো এবং কিশ্তী জুদী-পর্বতের উপর থেমে গেলো। আর বলা হলো, ‘দূর হোক! ইন্সাফহীন লোকেরা’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৪. আর (যখন নূহের নৌকা ব্যতীত সবকিছু ডুবে ধ্বংস হয়ে গেল, তখন) নির্দেশ দেয়া হলো, ‘হে পৃথিবী! তুমি তোমার পানি শুষে নাও; হে আকাশ! তুমি ক্ষান্ত হও।’ আর পানি শুকিয়ে দেয়া হলো, নির্দেশ প্রতিপালিত হলো এবং নৌকা জূদী পর্বতের উপর স্থির হলো এবং বলা হলো, ‘যালিমেরা (রহমত থেকে) দূরে রয়েছে’।
وَ نَادٰی نُوۡحٌ رَّبَّہٗ فَقَالَ رَبِّ اِنَّ ابۡنِیۡ مِنۡ اَہۡلِیۡ وَ اِنَّ وَعۡدَکَ الۡحَقُّ وَ اَنۡتَ اَحۡکَمُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۴۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নূহ আপন রবকে আহ্বান করলো। আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমার পুত্রও তো আমার পরিবারভুক্ত এবং নিঃসন্দেহে তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য আর তুমি সবচেয়ে বড় নির্দেশদাতা’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৫. আর নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর প্রতিপালককে ডাকলেন এবং আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমার পুত্র(ও) তো আমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর অবশ্যই তোমার অঙ্গীকার সত্য, আর তুমি সমস্ত বিচারকের শ্রেষ্ঠ বিচারক।’
قَالَ یٰنُوۡحُ اِنَّہٗ لَیۡسَ مِنۡ اَہۡلِکَ ۚ اِنَّہٗ عَمَلٌ غَیۡرُ صَالِحٍ ٭۫ۖ فَلَا تَسۡـَٔلۡنِ مَا لَـیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ اِنِّیۡۤ اَعِظُکَ اَنۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۴۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এরশাদ করলেন, ‘হে নূহ! সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়, নিঃসন্দেহে, তার কর্ম বড়ই অনুপযুক্ত। সুতরাং তুমি আমার নিকট ওই বিষয়ে প্রার্থনা করো না যা সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যেন অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত না হও’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৬. ইরশাদ হলো, ‘হে নূহ! প্রকৃতপক্ষে সে তোমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত নয়, কেননা তার কর্মকান্ড সঠিক ছিল না। সুতরাং আমার নিকট এমন কিছু প্রার্থনা করো না যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যেন তুমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত (না) হও।’
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡۤ اَعُوۡذُ بِکَ اَنۡ اَسۡـَٔلَکَ مَا لَـیۡسَ لِیۡ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ وَ اِلَّا تَغۡفِرۡ لِیۡ وَ تَرۡحَمۡنِیۡۤ اَکُنۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۴۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি তোমার নিকট ওই বস্তুর জন্য প্রার্থনা করা থেকে, যে সম্পর্কে আমার জ্ঞান নেই এবং তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো ও দয়া না করো, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৭. (নূহ আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমাকে এমন বিষয়ে অনুরোধ করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাইছি যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই। আর যদি তুমি আমাকে ক্ষমা না করো এবং আমার প্রতি অনুগ্রহ (না) করো (তবে) আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।
قِیۡلَ یٰنُوۡحُ اہۡبِطۡ بِسَلٰمٍ مِّنَّا وَ بَرَکٰتٍ عَلَیۡکَ وَ عَلٰۤی اُمَمٍ مِّمَّنۡ مَّعَکَ ؕ وَ اُمَمٌ سَنُمَتِّعُہُمۡ ثُمَّ یَمَسُّہُمۡ مِّنَّا عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
বলা হলো, ‘হে নূহ! কিশ্তী থেকে অবতারণ করো।! আমার পক্ষ থেকে শান্তি এবং বরকতগুলোর সাথে, যেগুলো তোমার উপর রয়েছে এবং তোমার সঙ্গেকার কিছু সম্প্রদায়ের উপর। আর এমন কিছু সম্প্রদায় আছে, যাদেরকে আমি দুনিয়া উপভোগ করতে দেবো। অতঃপর তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে বেদনাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৮. বলা হলো, ‘হে নূহ! আমার পক্ষ থেকে শান্তি ও কল্যাণের সাথে (নৌকা থেকে) নেমে যাও, যা তোমার উপর এবং তোমার সাথে যারা রয়েছে তাদের উপর। আর (ভবিষ্যতে আবার) কয়েক শ্রেণী এমন হবে, যাদেরকে আমরা (পার্থিব নিয়ামত দ্বারা) লাভবান করবো। অতঃপর তাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পৌঁছুবে।’
تِلۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَیۡبِ نُوۡحِیۡہَاۤ اِلَیۡکَ ۚ مَا کُنۡتَ تَعۡلَمُہَاۤ اَنۡتَ وَ لَا قَوۡمُکَ مِنۡ قَبۡلِ ہٰذَا ؕۛ فَاصۡبِرۡ ؕۛ اِنَّ الۡعَاقِبَۃَ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এ সমস্ত অদৃশ্যের সংবাদ আমি আপনার প্রতি ওহী করছি। সেগুলো না আপনি জানতেন, না আপনার সম্প্রদায়, এর পূর্বে; সুতরাং ধৈর্যধারণ করুন! নিঃসন্দেহে, শুভ-পরিণাম পরহেয্গারদের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
৪৯. এ (বর্ণনা এমন) অদৃশ্যের সংবাদের, যা আমরা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করি। এরপূর্বে না আপনি তাদেরকে জানতেন, আর না আপনার সম্প্রদায়। অতঃপর আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। নিশ্চয়ই উত্তম পরিণতি পরহেযগারদেরই।
وَ اِلٰی عَادٍ اَخَاہُمۡ ہُوۡدًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا مُفۡتَرُوۡنَ ﴿۵۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ‘আদ-সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের স্বীয় সম্প্রদায়ের লোক হূদকে (নবী করে পাঠিয়েছি)। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন মা’বূদ নেই। তোমরা নিরেট মিথ্যা রচনাকারী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫০. আর (আমরা) ’আদ সম্প্রদায়ের নিকট তাদের ভাই হূদ (আলাইহিস সালাম)-কে (প্রেরণ করেছিলাম)। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়, আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোনো ইলাহ্ নেই। তোমরা আল্লাহর প্রতি (অংশীদারিত্বের) কেবল মিথ্যা অপবাদ রচনাকারী।
یٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ اَجۡرًا ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی الَّذِیۡ فَطَرَنِیۡ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۵۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে সম্প্রদায়! আমি এর পরিবর্তে তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান নিরেট তারই (বদান্যতার) দায়িত্বে রয়েছে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তবুও কি তোমাদের বোধশক্তি নেই?
📕ইরফানুল কুরআন:
৫১. হে আমার সম্প্রদায়! আমি (এ দাওয়াত ও এর প্রচারকার্য)-এর জন্যে তোমাদের নিকট থেকে কোনো বিনিময় প্রার্থনা করি না। আমার বিনিময় তো কেবল সেই সত্তার নিকট রয়েছে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা কি তা অনুধাবন করো না?
وَ یٰقَوۡمِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ یُرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا وَّ یَزِدۡکُمۡ قُوَّۃً اِلٰی قُوَّتِکُمۡ وَ لَا تَتَوَلَّوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۵۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে আমার সম্প্রদায়! (তোমরা) আপন রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তার দিকে ফিরে এসো। (তিনি) তোমাদের প্রতি মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের মধ্যে যে পরিমাণ শক্তি আছে তা অপেক্ষা আরো অধিক দেবেন। আর অপরাধ করে মুখ ফিরিয়ে নিও না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫২. আর হে সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট (গোনাহের জন্যে) ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তাঁর সমীপে (খাঁটি অন্তরে) প্রত্যাবর্তন করো। তিনি তোমাদের উপর আসমান থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তিতে আরো শক্তিবৃদ্ধি করবেন। সুতরাং তোমরা অপরাধী হয়ে তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না।’
قَالُوۡا یٰہُوۡدُ مَا جِئۡتَنَا بِبَیِّنَۃٍ وَّ مَا نَحۡنُ بِتَارِکِیۡۤ اٰلِہَتِنَا عَنۡ قَوۡلِکَ وَ مَا نَحۡنُ لَکَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۵۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘হে হূদ! তুমি কোন প্রমাণ নিয়ে আমাদের নিকট আসো নি এবং আমরা শুধু তোমার কথায় আমাদের উপাস্যগুলোকে ছেড়ে দেবার নই, না তোমার কথায় বিশ্বাস করবো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৩. তারা বললো, ‘হে হূদ! তুমি আমাদের নিকট সুস্পষ্ট কোনো দলিল নিয়ে আসনি, আর আমরা তোমার কথায় আমাদের উপাস্যদেরকেও পরিহার করবো না এবং আমরা তোমার উপর ঈমান আনয়নকারীও নই।
اِنۡ نَّقُوۡلُ اِلَّا اعۡتَرٰىکَ بَعۡضُ اٰلِہَتِنَا بِسُوۡٓءٍ ؕ قَالَ اِنِّیۡۤ اُشۡہِدُ اللّٰہَ وَ اشۡہَدُوۡۤا اَنِّیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِکُوۡنَ ﴿ۙ۵۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
আমরা তো এটাই বলি, ‘আমাদের কোন খোদার অশুভ আক্রমণ তোমাকে স্পর্শ করবে’। বললো, ‘আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী করছি এবং তোমরাও সবাই সাক্ষী হয়ে যাও যে, ‘আমি অসন্তুষ্ট ওসব থেকে যে গুলোকে তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত শরীক স্থির করো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৪. আমরা তো এটাই বলি যে, আমাদের উপাস্যদের কেউ তোমাকে (মানসিক) ব্যাধিতে নিমজ্জিত করে দিয়েছে।’ হূদ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী সাব্যস্ত করছি, আর তোমরাও সাক্ষী সাব্যস্ত করো যে, আমি এদের থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত যাদেরকে তোমরা অংশীদার সাব্যস্ত করো।
مِنۡ دُوۡنِہٖ فَکِیۡدُوۡنِیۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ لَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۵۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমরা সবাই মিলে আমার অমঙ্গল কামনা করো; অতঃপর আমাকে অবকাশ দিও না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৫. আল্লাহ্ ব্যতীত তোমরা সবাই (তোমাদের বাতিল উপাস্য সহকারে) একত্র হয়ে আমার বিরুদ্ধে (কোনো) ষড়যন্ত্র করো এবং আমাকে অবকাশও দিও না।
اِنِّیۡ تَوَکَّلۡتُ عَلَی اللّٰہِ رَبِّیۡ وَ رَبِّکُمۡ ؕ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ اِلَّا ہُوَ اٰخِذٌۢ بِنَاصِیَتِہَا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۵۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
আমি আল্লাহর উপর ভরসা করেছি, যিনি আমার রব এবং তোমাদের রব। এমন কোন বিচরণকারী নেই যার কপালের কেশগুচ্ছ (ঝুঁটি) তার কুদরতের আয়ত্বে নেই। নিশ্চয় আমার রবকে সরল পথে পাওয়া যায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৬. নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর উপর ভরসা করেছি, যিনি আমারও প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। তাঁর (পরিপূর্ণ ক্ষমতার মুষ্ঠির) আয়ত্বের বাইরে বিচরণশীল (জীবন্ত) কোনো সৃষ্টি নেই। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক (সত্য ও ন্যায়পরায়ণতায়) সরল পথে (চলার মাধ্যমে প্রাপ্তিযোগ্য)।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖۤ اِلَیۡکُمۡ ؕ وَ یَسۡتَخۡلِفُ رَبِّیۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ ۚ وَ لَا تَضُرُّوۡنَہٗ شَیۡئًا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَفِیۡظٌ ﴿۵۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে আমি তোমাদের নিকট পৌছিয়েছি যা নিয়ে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি; এবং আমার রব তোমাদের স্থলে অন্যান্যদেরকে নিয়ে আসবেন; আর তোমরা তার কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। নিশ্চয় আমার রব সমস্ত কিছুর রক্ষণাবেক্ষণকারী’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৭. এরপরও যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে আমি কার্যতই (সকল বিধানাবলী) তোমাদেরকে পৌঁছে দিয়েছি, যা সহ আমি তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি। আর আমার প্রতিপালক অপর কোনো সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন এবং তোমরা তাঁর কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক সকল কিছুর রক্ষাকর্তা।’
وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا ہُوۡدًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا ۚ وَ نَجَّیۡنٰہُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ غَلِیۡظٍ ﴿۵۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন আমার নির্দেশ এলো তখন আমি হূদ ও তার সঙ্গেকার মুসলমানদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করেছি এবং তাদেরকে কঠিন শাস্তি হতে মুক্তি দিয়েছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৮. আর যখন আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছল (তখন) আমরা হূদ (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং তাদেরকে কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি দিলাম।
وَ تِلۡکَ عَادٌ ۟ۙ جَحَدُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ عَصَوۡا رُسُلَہٗ وَ اتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ کُلِّ جَبَّارٍ عَنِیۡدٍ ﴿۵۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এ আ’দ সম্প্রদায়, যারা তাদের রবের নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করেছে আর তার রসূলগণকে অমান্য করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারীর নির্দেশ অনুসরণ করেছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৫৯. আর এ ’আদ (সম্প্রদায়), যারা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করেছিল, তারা তাদের রাসূলগণের নাফরমানী করেছিল এবং প্রত্যেক উৎপীড়নকারী (ও অহঙ্কারী) সত্যের দুশমনের নির্দেশের অনুসরণ করেছিল।
وَ اُتۡبِعُوۡا فِیۡ ہٰذِہِ الدُّنۡیَا لَعۡنَۃً وَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ عَادًا کَفَرُوۡا رَبَّہُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّعَادٍ قَوۡمِ ہُوۡدٍ ﴿۶۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অভিসম্পাত তাদের পেছনে পড়েছে এ দুনিয়া ও ক্বিয়ামতের দিনে। শুনে নাও! নিশ্চয় ‘আদ-সম্প্রদায় আপন রবকে অস্বীকার করেছে। ওহে, দূর হোক ‘আদ’, হূদের সম্প্রদায়!
📕ইরফানুল কুরআন:
৬০. আর এ দুনিয়াতেও তাদেরকে অভিশম্পাত তাড়া করেছিল এবং কিয়ামতের দিনও (তাড়া করবে)। স্মরণ রেখো যে, ’আদ (সম্প্রদায়) তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করেছিল। সাবধান! হূদ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ’আদ সম্প্রদায় (অনুগ্রহ থেকে) দূরেই পড়ে রইলো।
وَ اِلٰی ثَمُوۡدَ اَخَاہُمۡ صٰلِحًا ۘ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ ہُوَ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَ اسۡتَعۡمَرَکُمۡ فِیۡہَا فَاسۡتَغۡفِرُوۡہُ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ قَرِیۡبٌ مُّجِیۡبٌ ﴿۶۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সামূদ সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের স্বগোত্রীয় সালিহ্কে (পাঠিয়েছি)। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি তোমাদেরকে যমীন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সেটাতে তোমাদের বসতি করিয়েছেন। সুতরাং তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তার দিকে প্রত্যাবর্তন করো। নিশ্চয় আমার রব নিকটে, প্রার্থনা শ্রবণকারী’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬১. আর (আমরা) সামূদ (সম্প্রদায়)-এর নিকট তাদের ভাই সালেহ (আলাইহিস সালাম)-কে (প্রেরণ করেছিলাম)। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত করো, তোমাদের জন্যে তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তিনিই তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এতেই তোমাদেরকে অধিবাসী করেছেন। সুতরাং তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তাঁরই দিকে ফিরে আসো। নিশ্চয় আমার প্রতিপালক নিকটেই, আহ্বানে সাড়া দানকারী।’
قَالُوۡا یٰصٰلِحُ قَدۡ کُنۡتَ فِیۡنَا مَرۡجُوًّا قَبۡلَ ہٰذَاۤ اَتَنۡہٰنَاۤ اَنۡ نَّعۡبُدَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا وَ اِنَّنَا لَفِیۡ شَکٍّ مِّمَّا تَدۡعُوۡنَاۤ اِلَیۡہِ مُرِیۡبٍ ﴿۶۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘হে সালিহ! এর পূর্বে তো তুমি আমাদের মধ্যে আশাপ্রদ মনে করা হচ্ছিলে! তুমি কি আমাদেরকে আমাদের পিতৃপুরুষদের উপাস্যগুলোর পূজা করতে বাধা দিচ্ছো? নিঃসন্দেহে, যে বিষয়ের দিকে আমাদেরকে আহ্বান করছো, আমরা তা দ্বারা এক মহা বিভ্রান্তিকর সন্দেহের মধ্যে আছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬২. তারা বললো, ‘হে সালেহ! এরপূর্বে আমাদের সম্প্রদায়ে তুমিই ছিলে আশার কেন্দ্রবিন্দু। তুমি কি আমাদেরকে (মূর্তি)-এর উপাসনা করতে নিষেধ করছো, যার উপাসনা আমাদের পিতৃপুরুষ করতো? আর (আল্লাহর একত্ববাদ,) যাঁর দিকে আমাদেরকে আহ্বান করছো নিশ্চয়ই আমরা এ ব্যাপারে খুবই বিভ্রান্তিকর সন্দেহ পোষণ করছি।’
قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ اٰتٰىنِیۡ مِنۡہُ رَحۡمَۃً فَمَنۡ یَّنۡصُرُنِیۡ مِنَ اللّٰہِ اِنۡ عَصَیۡتُہٗ ۟ فَمَا تَزِیۡدُوۡنَنِیۡ غَیۡرَ تَخۡسِیۡرٍ ﴿۶۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! হ্যাঁ, বলো তো, যদি আমি আমার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তার নিকট থেকে অনুগ্রহ দান করেন, তবে আমাকে আল্লাহ্ থেকে কে রক্ষা করবে যদি আমি তার অবাধ্যতা করি? সুতরাং তোমরা ক্ষতি ব্যতীত আমার অন্য কিছু বৃদ্ধি করবে না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৩. সালেহ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! একটু চিন্তা করো, আমি যদি ঠিক আমার প্রতিপালকের সুস্পষ্ট দলিলের উপর (অটল) থাকি এবং তিনি তাঁর পক্ষ থেকে আমার প্রতি (বিশেষ) অনুগ্রহ দান করে থাকেন; (এরপর তাঁর বিধান তোমাদের নিকট পৌঁছে দিয়ে) যদি আমি তাঁর নাফরমানী করে বসি, তবে কোন ব্যক্তি রয়েছে যে আমাকে আল্লাহ্ (-এঁর শাস্তি) থেকে রক্ষায় সাহায্য করতে পারে? অতঃপর তোমরা আমার ক্ষতি ব্যতীত (আর) কিছুই করতে পারবে না।
وَ یٰقَوۡمِ ہٰذِہٖ نَاقَۃُ اللّٰہِ لَکُمۡ اٰیَۃً فَذَرُوۡہَا تَاۡکُلۡ فِیۡۤ اَرۡضِ اللّٰہِ وَ لَا تَمَسُّوۡہَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابٌ قَرِیۡبٌ ﴿۶۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে আমার সম্প্রদায়! এটা আল্লাহর উষ্ট্রী, তোমাদের জন্য নিদর্শন। সুতরাং ওটা ছেড়ে দাও যাতে আল্লাহর জমিতে চরে এবং সেটার গায়ে মন্দভাবে হাত লাগিয়ো না যেন তোমাদের উপর আশু শাস্তি আপতিত হয়’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৪. হে আমার সম্প্রদায়! এ উটনী আল্লাহর (বিশেষ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট) যা তোমাদের জন্যে নিদর্শন; সুতরাং একে আল্লাহর জমিনে চরে বেড়াতে দাও এবং একে কোনো কষ্ট দিও না, নতুবা তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি এসে পাকড়াও করবে।’
فَعَقَرُوۡہَا فَقَالَ تَمَتَّعُوۡا فِیۡ دَارِکُمۡ ثَلٰثَۃَ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ وَعۡدٌ غَیۡرُ مَکۡذُوۡبٍ ﴿۶۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর তারা সেটার গোছগুলো কেটে দিলো। তারপর সালিহ বললো, ‘তোমরা তোমাদের ঘরে আরো তিন দিন জীবন উপভোগ করে নাও। এটা প্রতিশ্রুতি, যা মিথ্যা হবে না’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৫. অতঃপর তারা একে (পা কেটে) হত্যা করে ফেললো। সালেহ্ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘(এখন) তোমরা তোমাদের গৃহে (কেবল) তিন দিন উপভোগ করে নাও। এটি অঙ্গীকার যা (কখনো) মিথ্যাপ্রতিপন্ন হবে না।’
فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا صٰلِحًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ مِنۡ خِزۡیِ یَوۡمِئِذٍ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ الۡقَوِیُّ الۡعَزِیۡزُ ﴿۶۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন আমার নির্দেশ এলো, তখন আমি সালিহ ও তার সঙ্গেকার মুসলমানদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করেছি এবং ওই দিনের লাঞ্ছনা থেকে। নিশ্চয় তোমাদের রব সর্বশক্তিমান, মর্যাদাবান।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৬. অতঃপর যখন আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছল (তখন) আমরা সালেহ্ (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর সাথে যারা ঈমানদার ছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং সে দিনের অপমান থেকেও (নাজাত দিলাম)। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালকই শক্তিশালী ও মহাপরাক্রমশালী।
وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۶۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যালিমদেরকে ভয়ানক শব্দ পেয়ে বসলো। ফলে, ভোরে তারা নিজ নিজ ঘরে হাটুর উপর ভর করে পড়ে রইলো;
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৭. আর যালিমদেরকে ভয়ানক ধ্বনি এসে পাকড়াও করলো। ফলে প্রভাতে তারা নিজেদের গৃহে (মৃতাবস্থায়) উপুড় হয়ে রইলো,
کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَاۤ اِنَّ ثَمُوۡدَا۠ کَفَرُوۡا رَبَّہُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّثَمُوۡدَ ﴿۶۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নি। শুনে নাও! নিশ্চয় সামূদ সম্প্রদায় তাদের রবকে অস্বীকার করেছে। ওহে, লা’নত হোক সামূদ গোত্রের উপর!
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৮. যেন তারা কখনো এতে বসবাসই করেনি; মনে রেখো! সামূদ (সম্প্রদায়) স্বীয় প্রতিপালককে অস্বীকার করেছিল। সাবধান! সামূদ (সম্প্রদায় অনুগ্রহ থেকে) দূরেই পড়ে রইলো।
وَ لَقَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ بِالۡبُشۡرٰی قَالُوۡا سَلٰمًا ؕ قَالَ سَلٰمٌ فَمَا لَبِثَ اَنۡ جَآءَ بِعِجۡلٍ حَنِیۡذٍ ﴿۶۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমার ফিরিশ্তারা ইব্রাহীমের নিকট সুসংবাদ নিয়ে এলো। তারা বললো। ‘সালাম’। সে বললো, ‘সালাম’। অতঃপর অল্পক্ষণও বিলম্ব করে নি, একটা ভাজা করা গো-বৎস নিয়ে এলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৬৯. আর যথার্থই আমাদের প্রেরিত ফেরেশতাগণ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট সুসংবাদ নিয়ে আগমন করেছিলেন। তারা বললেন, ‘শান্তি (বর্ষিত হোক আপনার উপর)’, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম প্রতিউত্তরে) বললেন, ‘(আপনাদের উপরও) শান্তি বর্ষিত হোক’। অতঃপর তিনি (ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) অবিলম্বে (তাদের আতিথেয়তার জন্যে) আগুনে ঝলসানো গো-বাছুর (এর সাজ্জি অর্থাৎ আগুনে ঝলসানো মাংশ) নিয়ে এলেন।
فَلَمَّا رَاٰۤ اَیۡدِیَہُمۡ لَا تَصِلُ اِلَیۡہِ نَکِرَہُمۡ وَ اَوۡجَسَ مِنۡہُمۡ خِیۡفَۃً ؕ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ اِنَّاۤ اُرۡسِلۡنَاۤ اِلٰی قَوۡمِ لُوۡطٍ ﴿ؕ۷۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন দেখলো যে, তাদের হাত খাদ্যের দিকে প্রসারিত হচ্ছে না, তখন তাদেরকে আগন্তুক মনে করলো এবং মনে মনে তাদেরকে ভয় করতে লাগলো। তারা বললো, ‘ভয় করবেন না! আমরা লূতের সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭০. অতএব (ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) যখন দেখলেন যে, তাদের হাত (এ খাবার)-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে না, তাদেরকে তিনি ভিনদেশী মনে করলেন এবং (নিজ) অন্তরে তাদের ব্যাপারে কিছুটা ভীতি অনুভব করতে লাগলেন। তারা বললেন, ‘আপনি ভয় করবেন না! আমাদেরকে লূতের সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করা হয়েছে’।
وَ امۡرَاَتُہٗ قَآئِمَۃٌ فَضَحِکَتۡ فَبَشَّرۡنٰہَا بِاِسۡحٰقَ ۙ وَ مِنۡ وَّرَآءِ اِسۡحٰقَ یَعۡقُوۡبَ ﴿۷۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তার স্ত্রী দণ্ডায়মান ছিলো। সে হাসতে লাগলো। অতঃপর আমি তাকে ইসহাক্বের সুসংবাদ দিলাম এবং ইসহাক্বের পরবর্তী ইয়া’ক্বুবের।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭১. আর তাঁর স্ত্রী (সারাহ্ নিকটেই) দন্ডায়মান ছিলেন, তিনি হেসে দিলেন, আর আমরা তাঁকে (অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীকে) ইসহাক (আলাইহিস সালাম) এবং ইসহাক (আলাইহিস সালাম)-এঁর পর ইয়াকূব (আলাইহিস সালাম)-এঁর সুসংবাদ দিলাম।
قَالَتۡ یٰوَیۡلَتٰۤیءَ اَلِدُ وَ اَنَا عَجُوۡزٌ وَّ ہٰذَا بَعۡلِیۡ شَیۡخًا ؕ اِنَّ ہٰذَا لَشَیۡءٌ عَجِیۡبٌ ﴿۷۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
সে বললো, ‘হায়রে দুঃখ।! আমার কি সন্তান হবে! এবং (আমি) হলাম বৃদ্ধ। আর এ আমার স্বামী বৃদ্ধ। নিঃসন্দেহে, এটা তো অদ্ভুদ ব্যাপার’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭২. তিনি বললেন, ‘কী আশ্চর্য! আমি কি সন্তান জন্ম দেবো, অথচ আমি বৃদ্ধা (হয়ে গিয়েছি), আর আমার স্বামীও বৃদ্ধ? বাস্তবিকই এ তো বড়ই আশ্চর্যজনক বিষয়!’
قَالُوۡۤا اَتَعۡجَبِیۡنَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰہِ رَحۡمَتُ اللّٰہِ وَ بَرَکٰتُہٗ عَلَیۡکُمۡ اَہۡلَ الۡبَیۡتِ ؕ اِنَّہٗ حَمِیۡدٌ مَّجِیۡدٌ ﴿۷۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
ফিরিশ্তাগণ বললো, ‘আল্লাহর কাজে কি তুমি বিস্ময় বোধ করছো? আল্লাহর রহমত ও তার বরকতসমূহ তোমাদের প্রতি রয়েছে, হে এ পরিবারবর্গ! নিঃসন্দেহে, তিনিই সমস্ত প্রশংসার মালিক, সম্মানের অধিকারী’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৩. ফেরেশতাগণ বললেন, ‘আপনারা কি আল্লাহর নির্দেশের উপর আশ্চর্যান্বিত হচ্ছেন? হে গৃহের অধিবাসীরা! আপনাদের উপর আল্লাহর রহমত এবং তাঁর বরকত। নিশ্চয়ই তিনি প্রশংসার উপযুক্ত, মর্যাদার অধিকারী।’
فَلَمَّا ذَہَبَ عَنۡ اِبۡرٰہِیۡمَ الرَّوۡعُ وَ جَآءَتۡہُ الۡبُشۡرٰی یُجَادِلُنَا فِیۡ قَوۡمِ لُوۡطٍ ﴿ؕ۷۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন ইব্রাহীমের ভয় দূরীভূত হলো এবং তিনি সুসংবাদ পেলেন, তখন আমার সাথে লূতের সম্প্রদায় সম্পর্কে বাদানুবাদ করতে লাগলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৪. অতঃপর যখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর ভীতি দূরীভুত হলো এবং তাঁর নিকট সুসংবাদ এসে পৌঁছল, তখন আমাদের (ফেরেশতাদের) সাথে লূতের সম্প্রদায়ের ব্যাপারে বাদানুবাদ করতে লাগলেন।
اِنَّ اِبۡرٰہِیۡمَ لَحَلِیۡمٌ اَوَّاہٌ مُّنِیۡبٌ ﴿۷۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় ইব্রাহীম সহনশীল, অতি ক্রন্দনকারী, আল্লাহ্ অভিমুখী।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৫. নিশ্চয়ই ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ছিলেন অত্যন্ত সহিষ্ণু স্বভাবের, ক্রন্দনকারী, সর্বাবস্থায় আমাদের নিকট প্রত্যাবর্তনকারী।
یٰۤـاِبۡرٰہِیۡمُ اَعۡرِضۡ عَنۡ ہٰذَا ۚ اِنَّہٗ قَدۡ جَآءَ اَمۡرُ رَبِّکَ ۚ وَ اِنَّہُمۡ اٰتِیۡہِمۡ عَذَابٌ غَیۡرُ مَرۡدُوۡدٍ ﴿۷۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
হে ইব্রাহীম! এই চিন্তায় পড়ো না। নিশ্চয় তোমার রবের নির্দেশ এসে পড়েছে এবং নিঃসন্দেহে, তাদের প্রতি শাস্তি আগমনকারী, যা হটানো যাবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৬. (ফেরেশতাগণ বললেন,) ‘হে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)! এ (বিষয়) থেকে বিরত হোন। নিশ্চয়ই এখন তো আপনার প্রতিপালকের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পড়েছে। আর তাদের শাস্তি প্রত্যাসন্ন যা প্রতিহত হতে পারে না।’
وَ لَمَّا جَآءَتۡ رُسُلُنَا لُوۡطًا سِیۡٓءَ بِہِمۡ وَ ضَاقَ بِہِمۡ ذَرۡعًا وَّ قَالَ ہٰذَا یَوۡمٌ عَصِیۡبٌ ﴿۷۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন লূতের নিকট আমার ফিরিশ্তারা আসলো, তখন তার মনে তাদের জন্য দুঃখ হলো এবং তাদের কারণে হৃদয় সংকুচিত হলো আর বললো, ‘এটা অতি কঠিন দিন’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৭. আর যখন আমাদের প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট আসলেন (তখন) তিনি তাদের আগমনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন এবং তাদের রক্ষায় (নিজেকে) অসমর্থ মনে করলেন আর বলতে লাগলেন, ‘এ দিনটি বড়ই কঠিন’! (ফেরেশতাগণ ছিলেন অতিশয় সুদর্শন আর হযরত লূত আলাইহিস সালাম তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের অসৎ স্বভাব সম্পর্কে অবগত ছিলেন। সুতরাং সম্ভাব্য ফিতনার আশঙ্কায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন।)
وَ جَآءَہٗ قَوۡمُہٗ یُہۡرَعُوۡنَ اِلَیۡہِ ؕ وَ مِنۡ قَبۡلُ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ ہٰۤؤُلَآءِ بَنَاتِیۡ ہُنَّ اَطۡہَرُ لَکُمۡ فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ لَا تُخۡزُوۡنِ فِیۡ ضَیۡفِیۡ ؕ اَلَـیۡسَ مِنۡکُمۡ رَجُلٌ رَّشِیۡدٌ ﴿۷۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং তার নিকট তার সম্প্রদায় ছুটে আসলো এবং তাদের মধ্যে পূর্ব থেকেই মন্দ কাজের অভ্যাস স্থান পেয়েছিলো। বললো, হে আমার সম্প্রদায়! এ গুলো হচ্ছে আমার সম্প্রদায়ের কন্যা। এরা তোমাদের জন্য পবিত্র। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো এবং আমাকে আমার মেহমানদের মধ্যে লজ্জিত করো না! তোমাদের মধ্যে কি একজন লোকও সচ্চরিত্রবান নেই?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৮. (সুতরাং এমনিই হলো, যার আশঙ্কা তিনি করেছিলেন) আর লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায় (মেহমানদের আগমনের সংবাদ শুনার সাথে সাথেই) তাঁর নিকট ছুটে এলো, আর তারা পূর্ব থেকেই কুকর্মে লিপ্ত ছিল। লূত (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার (নাফরমান) সম্প্রদায়! এরা আমার (সম্প্রদায়ের) কন্যাগণ, তারা তোমাদের জন্যে (বিবাহের মাধ্যমে) পবিত্র ও বৈধ। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো এবং আমার মেহমানদের ব্যাপারে (নিজেদের অশ্লীলতার কারণে) আমাকে অপমানিত করো না! তোমাদের মাঝে কি সৎস্বভাবের কোনো মানুষ নেই?’
قَالُوۡا لَقَدۡ عَلِمۡتَ مَا لَنَا فِیۡ بَنٰتِکَ مِنۡ حَقٍّ ۚ وَ اِنَّکَ لَتَعۡلَمُ مَا نُرِیۡدُ ﴿۷۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘তোমার জানা আছে যে, তোমার সম্প্রদায়ের কন্যাদের প্রতি আমাদের কোন কর্তব্য নেই এবং তুমি অবশ্যই জানো যা আমাদের অভিলাষ’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৭৯. তারা বললো, ‘তুমি ভালোভাবেই জানো যে, তোমার (সম্প্রদায়ের) কন্যাদেরকে আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। আর তুমি তো জানোই আমরা কী চাই।’
قَالَ لَوۡ اَنَّ لِیۡ بِکُمۡ قُوَّۃً اَوۡ اٰوِیۡۤ اِلٰی رُکۡنٍ شَدِیۡدٍ ﴿۸۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললেন, ‘হায়! তোমাদের প্রতিরোধের যদি আমার শক্তি থাকতো কিংবা যদি কোন মজবুত স্তম্ভের আশ্রয় নিতাম।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮০. লূত (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হায়! যদি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার শক্তি থাকতো অথবা আমি (আজ) কোনো সুদৃঢ় দুর্গে আশ্রয় নিতে পারতাম।’
قَالُوۡا یٰلُوۡطُ اِنَّا رُسُلُ رَبِّکَ لَنۡ یَّصِلُوۡۤا اِلَیۡکَ فَاَسۡرِ بِاَہۡلِکَ بِقِطۡعٍ مِّنَ الَّیۡلِ وَ لَا یَلۡتَفِتۡ مِنۡکُمۡ اَحَدٌ اِلَّا امۡرَاَتَکَ ؕ اِنَّہٗ مُصِیۡبُہَا مَاۤ اَصَابَہُمۡ ؕ اِنَّ مَوۡعِدَہُمُ الصُّبۡحُ ؕ اَلَـیۡسَ الصُّبۡحُ بِقَرِیۡبٍ ﴿۸۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
ফিরিশ্তারা বললো, ‘হে লূত! আমরা আপনার রবের প্রেরিত। তারা আপনার নিকট পৌছতে পারবে না। সুতরাং আপনি আপনার পরিবারবর্গকে নিয়ে রাতারাতি বের হয়ে পড়ুন এবং আপনাদের মধ্যে কেউ যেনো পেছন দিকে ফিরে না তাকায়; আপনার স্ত্রী ব্যতীত। তাকেও তাই স্পর্শ করবে যা তাদেরকে স্পর্শ করবে। নিশ্চয় তাদের প্রতিশ্রুত সময় হচ্ছে প্রভাতকাল। প্রভাত কি নিকটবর্তী নয়?’
📕ইরফানুল কুরআন:
৮১. (তখন ফেরেশতাগণ) বলতে লাগলেন, ‘হে লূত (আলাইহিস সালাম)! আমরা আপনার প্রতিপালকের প্রেরিত। তারা কখনো আপনার নিকটে পৌঁছতে পারবে না। অতঃপর আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে রাতের কোনো এক সময়ে বের হয়ে যান আর আপনাদের মধ্যে কেউ যেন ঘুরে (পশ্চাতে) না তাকায়; তবে আপনার স্ত্রীকে (সাথে নিবেন না)। নিশ্চয়ই তার প্রতিও (একই শাস্তি) পতিত হবে, যা তাদের প্রতি আগত হবে। নিশ্চয়ই তাদের (শাস্তির) নির্ধারিত সময় প্রাতঃকাল। প্রাতঃকাল কি নিকটবর্তী নয়?’
فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا جَعَلۡنَا عَالِیَہَا سَافِلَہَا وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہَا حِجَارَۃً مِّنۡ سِجِّیۡلٍ ۬ۙ مَّنۡضُوۡدٍ ﴿ۙ۸۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর যখন আমার আদেশ আসলো তখন আমি উক্ত জনপদের উপরিভাগকে নিচের দিকে উল্টিয়ে দিলাম এবং তাদের উপর ক্রমাগত কঙ্কর পাথর বর্ষণ করলাম;
📕ইরফানুল কুরআন:
৮২. অতঃপর যখন আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছল তখন আমরা এ জনপদের উপরিভাগকে (উল্টে দিয়ে) নিচে করে দিলাম এবং আমরা তাদের উপর ক্রমাগত (এবং স্তরে স্তরে) প্রস্তর ও পাকা মাটির কঙ্কর বর্ষণ করলাম,
مُّسَوَّمَۃً عِنۡدَ رَبِّکَ ؕ وَ مَا ہِیَ مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ بِبَعِیۡدٍ ﴿۸۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
তোমার রবের নিকট যেগুলো চিহ্নিত হয়ে রয়েছে এবং সেই পাথরগুলো যালিমদের থেকে মোটেই দূরে নয়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৩. যা আপনার প্রতিপালকের নিকট থেকে চিহ্নিত ছিল। আর এ (প্রস্তরের শাস্তি) যালিমদের থেকে (এখনও) সুদূরে নয়।
وَ اِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاہُمۡ شُعَیۡبًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ وَ لَا تَنۡقُصُوا الۡمِکۡیَالَ وَ الۡمِیۡزَانَ اِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ بِخَیۡرٍ وَّ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ مُّحِیۡطٍ ﴿۸۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং মাদ্য়ানবাসীদের প্রতি তাদের স্বগোত্রীয় ও শু’আয়বকে (পাঠিয়েছি)। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই এবং মাপে ও ওজনে কম করো না; নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে ভাল অবস্থাসম্পন্ন দেখছি এবং আমি তোমাদের সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তির আশঙ্কা করছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৪. আর আমরা মাদইয়ান (অধিবাসী)-এর নিকট তাদের ভাই শুয়াইব (আলাইহিস সালামকে প্রেরণ করেছিলাম)। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত করো, তোমাদের জন্যে তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই। আর পরিমাপ ও ওযনে কম করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সমৃদ্ধশালী দেখছি। আর আমি তোমাদের জন্যে এমন দিনের শাস্তির ভয় (অনুভব) করছি, যা (তোমাদেরকে) বেষ্টনকারী।
وَ یٰقَوۡمِ اَوۡفُوا الۡمِکۡیَالَ وَ الۡمِیۡزَانَ بِالۡقِسۡطِ وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَہُمۡ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে আমার সম্প্রদায়! মাপ ও ওজন ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণ করো এবং লোকদেরকে তাদের প্রাপ্যবস্তুগুলো কম করে দিও না এবং যমীনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৫. আর হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা পরিমাপ ও ওযন ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণ করো। আর মানুষকে তাদের দ্রব্যাদিতে কমিয়ে দিও না এবং বিপর্যয়সৃষ্টিকারী হয়ে পৃথিবীতে ধ্বংস ছড়িও না।
بَقِیَّتُ اللّٰہِ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ۬ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِحَفِیۡظٍ ﴿۸۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
আল্লাহর প্রদত্ত যা অবশিষ্ট থাকে তা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বিশ্বাস করো এবং আমি তোমাদের কিছুর তত্বাবধায়ক নই’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৬. আল্লাহর অনুমোদিত যা অবশিষ্ট থাকে (তাই) তোমাদের জন্যে কল্যাণকর, যদি তোমরা ঈমানদার হও। আর আমি তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নই।’
قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ اَصَلٰوتُکَ تَاۡمُرُکَ اَنۡ نَّتۡرُکَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَاۤ اَوۡ اَنۡ نَّفۡعَلَ فِیۡۤ اَمۡوَالِنَا مَا نَشٰٓؤُاؕ اِنَّکَ لَاَنۡتَ الۡحَلِیۡمُ الرَّشِیۡدُ ﴿۸۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘হে শু’আয়ব! তোমার নামায কি তোমাকে এ নির্দেশ দিচ্ছে যে, আমরা আমাদের পিতৃ-পুরুষদের খোদাগুলোকে বর্জন করবো অথবা স্বীয় ধন সম্পদের ক্ষেত্রে যা ইচ্ছা তা করবো না? হাঁ -জ্বী! তুমি তো বড়ই বুদ্ধিমান, সদাচারী’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৭. তারা বললো, ‘হে শুয়াইব! তোমার নামায কি তোমাকে এ নির্দেশই প্রদান করে যে, আমরা সেসব (উপাস্যদেরকে) ছেড়ে দেবো যাদের উপাসনা আমাদের পিতৃপুরুষেরা করতো, অথবা এ যে, আমরা যা কিছু আমাদের সম্পদের ব্যাপারে চাই, করবো (না)? নিশ্চয়ই তুমিই (একা) খুবই ধৈর্যশীল, হেদায়াতপ্রাপ্ত (রয়ে গেলে)!’
قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ رَزَقَنِیۡ مِنۡہُ رِزۡقًا حَسَنًا ؕ وَ مَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اُخَالِفَکُمۡ اِلٰی مَاۤ اَنۡہٰکُمۡ عَنۡہُ ؕ اِنۡ اُرِیۡدُ اِلَّا الۡاِصۡلَاحَ مَا اسۡتَطَعۡتُ ؕ وَ مَا تَوۡفِیۡقِیۡۤ اِلَّا بِاللّٰہِ ؕعَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ وَ اِلَیۡہِ اُنِیۡبُ ﴿۸۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! হ্যাঁ, বলো তো! যদি আমি আমার রবের নিকট থেকে একটি স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত হই এবং তিনি আমাকে তার নিকট থেকে উৎকৃষ্ট জীবিকা দিয়ে থাকেন; এবং আমি চাই না যে, যা আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি নিজেই সেটার বরখেলাফ করতে থাকবো। আমি তো যথাসম্ভব সংশোধনই করতে চাই এবং আমার সামর্থ্য আল্লাহরই নিকট থেকে। আমি তারই উপর নির্ভর করেছি এবং তারই অভিমুখী হচ্ছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৮. শুয়াইব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! একটু বল তো, আমি যদি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নিদর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি আমাকে তাঁর পক্ষ থেকে উত্তম রিযিক(ও) দান করেন (তবে এরপরও কেন সত্য প্রচার করবো না?) আর আমি এ(ও) চাই না যে, তোমাদের পশ্চাতে লেগে (সত্যের বিপরীতে) এমন কিছু করতে শুরু করি যা করতে তোমাদেরকে আমি নিষেধ করছি। আমি তো যতদূর সম্ভব (তোমাদের) সংশোধনই চাই। আর আমার সামর্থ আল্লাহর (সাহায্য) থেকেই। আমি তাঁরই উপর ভরসা করেছি এবং তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তন করছি।
وَ یٰقَوۡمِ لَا یَجۡرِمَنَّکُمۡ شِقَاقِیۡۤ اَنۡ یُّصِیۡبَکُمۡ مِّثۡلُ مَاۤ اَصَابَ قَوۡمَ نُوۡحٍ اَوۡ قَوۡمَ ہُوۡدٍ اَوۡ قَوۡمَ صٰلِحٍ ؕ وَ مَا قَوۡمُ لُوۡطٍ مِّنۡکُمۡ بِبَعِیۡدٍ ﴿۸۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে আমার সম্প্রদায়! আমার সাথে বিরোধ যেন তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করিয়ে বসে, যাতে তোমাদের উপর আপতিত হয় যা আপতিত হয়েছিলো নূহ এর সম্প্রদায় অথবা হূদ এর সম্প্রদায় কিংবা সালিহ এর সম্প্রদায়ের উপর; এবং লূত এর সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে মোটেই দূরে নয়;
📕ইরফানুল কুরআন:
৮৯. আর হে আমার সম্প্রদায়! আমার সাথে শত্রুতা ও বিরোধিতা তোমাদেরকে সে পর্যন্ত যেন প্রণোদিত না করে যে, (যার কারণে) তোমাদের উপর এমন (শাস্তি) এসে পড়ে, যেমন (শাস্তি) নূহের সম্প্রদায় অথবা হূদের সম্প্রদায় অথবা সালেহের সম্প্রদায়ের নিকট এসেছিল। আর লূতের সম্প্রদায় (-এর যুগ তো) তোমাদের থেকে খুব দূরে (অতিক্রান্ত) নয়।
وَ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ رَحِیۡمٌ وَّدُوۡدٌ ﴿۹۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপন রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো অতঃপর তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করো; নিশ্চয় আমার রব পরম দয়ালু, প্রেমময়’।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯০. আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তাঁর সমীপে (খাঁটি অন্তর নিয়ে) তওবা করো। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক অসীম দয়ালু, প্রেমময়।’
قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ مَا نَفۡقَہُ کَثِیۡرًا مِّمَّا تَقُوۡلُ وَ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡنَا ضَعِیۡفًا ۚ وَ لَوۡ لَا رَہۡطُکَ لَرَجَمۡنٰکَ ۫ وَ مَاۤ اَنۡتَ عَلَیۡنَا بِعَزِیۡزٍ ﴿۹۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
(তারা) বললো, ‘হে শু’আয়ব! তোমার অনেক কথা আমাদের বুঝে আসে না এবং নিঃসন্দেহে আমরা তোমাকে আমাদের মধ্যে দুর্বল দেখছি। আর যদি তোমার স্বজনবর্গ না থাকতো তবে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে থাকতাম। এবং আমাদের দৃষ্টিতে তোমার কোন মর্যাদা নেই।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯১. তারা বললো, ‘হে শুয়াইব! তোমার অধিকাংশ কথা আমাদের বুঝে আসে না। আর আমরা তোমাকে আমাদের সমাজে এক দুর্বল ব্যক্তি মনে করি। আর যদি তোমার পরিবার না থাকতো তবে আমরা তোমাকে প্রস্তর নিক্ষেপ করতাম। আর (আমরা সে দিকটাই বিবেচনা করছি, নতুবা) তুমি আমাদের দৃষ্টিতে কোনো সম্মানের অধিকারী নও।’
قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَہۡطِیۡۤ اَعَزُّ عَلَیۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اتَّخَذۡتُمُوۡہُ وَرَآءَکُمۡ ظِہۡرِیًّا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ ﴿۹۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের উপর আমার স্বজনদের প্রভাব কি আল্লাহ্ অপেক্ষাও বেশি? এবং তোমরা তাকে তোমাদের পৃষ্ঠ-পশ্চাতে ফেলে রেখেছো। নিশ্চয় তোমরা যা কিছু করছো সব আমার রবের ক্ষমাতধীন রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯২. শুয়াইব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার পরিবার কি তোমাদের নিকট আল্লাহর চেয়ে অধিক সম্মানিত? আর তোমরা তাঁকে (অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলাকে যেন) নিজেদের পশ্চাতে রেখে দিয়েছো। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক তোমাদের (সকল) কর্মকান্ড পরিবেষ্টন করে আছেন।
وَ یٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ اِنِّیۡ عَامِلٌ ؕ سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ یَّاۡتِیۡہِ عَذَابٌ یُّخۡزِیۡہِ وَ مَنۡ ہُوَ کَاذِبٌ ؕ وَ ارۡتَقِبُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ رَقِیۡبٌ ﴿۹۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা স্ব স্ব স্থানে আপন আপন কাজ করতে থাকো। আমি আমার কাজ করছি। শিগ্গির জানতে পারবে কার উপর আসছে ওই শাস্তি, যা তাকে লাঞ্ছিত করবে আর কে মিথ্যাবাদী। এবং অপেক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রয়েছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৩. আর হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের অবস্থানে কাজ করতে থাকো, আমিও আমার কাজ করতে থাকি। তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কার উপর শাস্তি নেমে আসে যা তাকে অপমানিত করবে, আর কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরাও অপেক্ষা করতে থাকো এবং আর আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।’
وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا شُعَیۡبًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ اَخَذَتِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۹۴﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যখন আমার নির্দেশ এলো তখন আমি শু’আয়ব এবং তার সঙ্গেকার মুসলমানদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ করে রক্ষা করেছি এবং যালিমদেরকে ভয়ানক বিকট শব্দ পেয়ে বসেছে। ফলে তারা ভোর বেলায় নিজ নিজ ঘরে হাটুর উপর ভয় করে পড়ে রইলো;
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৪. আর যখন আমাদের (শাস্তির) নির্দেশ এসে পৌঁছল তখন আমরা শুয়াইব (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর সাথে ঈমানদারদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করলাম আর যালিমদেরকে ভয়ানক এক ধ্বনি এসে পাকড়াও করলো। সুতরাং তারা প্রভাতে নিজেদের গৃহে (মৃতাবস্থায়) উপুড় হয়ে পড়ে রইলো;
کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّمَدۡیَنَ کَمَا بَعِدَتۡ ثَمُوۡدُ ﴿۹۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
যেন তারা কখনো সেখানে বসবাসই করে নি। ওহে! দূর হোক মাদয়ানবাসী যেমন দূরীভূত হয়েছে সামূদ সম্প্রদায়।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৫. যেন তারা কখনো এতে বসবাসই করেনি। শুনো! মাদইয়ান (অধিবাসী)-এর জন্যে ধ্বংস, যেভাবে সামূদ (সম্প্রদায়) ধ্বংস হয়েছিল।
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰی بِاٰیٰتِنَا وَ سُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿ۙ۹۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে আমার নিদর্শনসমুহ ও সুস্পষ্ট প্রভাব সহকারে,
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৬. আর নিশ্চয়ই আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-কেও আমাদের নিদর্শনাবলী এবং সুস্পষ্ট দলিলসহ প্রেরণ করেছিলাম,
اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ فَاتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ فِرۡعَوۡنَ ۚ وَ مَاۤ اَمۡرُ فِرۡعَوۡنَ بِرَشِیۡدٍ ﴿۹۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
ফির’আউন ও তার রাজন্যবর্গের প্রতি প্রেরণ করেছি। অতঃপর তারা ফির’আউনের কথামত চললো; আর ফিরা’আউনের কার্যকলাপ সরলতার উপর ছিলো না।
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৭. ফেরাউন ও তাঁর সর্দারদের নিকট। অতঃপর (সম্প্রদায়ের) সর্দারেরা ফেরাউনের নির্দেশের অনুসরণ করলো, অথচ ফেরাউনের নির্দেশ সঠিক ছিল না।
یَقۡدُمُ قَوۡمَہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فَاَوۡرَدَہُمُ النَّارَ ؕ وَ بِئۡسَ الۡوِرۡدُ الۡمَوۡرُوۡدُ ﴿۹۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
সে আপন সম্প্রদায়ের অগ্রভাগে থাকবে ক্বিয়ামতের দিনে; অতঃপর সে তাদেরকে নিয়ে দোযখের মধ্যে অবতরণ করবে এবং সেটা কতই নিকৃষ্ট ঘাট অবতরণের!
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৮. কিয়ামতের দিনে সে তার সম্প্রদায়ের আগ্রভাগে চলবে, পরিশেষে তাদেরকে উপনীত করবে জাহান্নামের অগ্নিতে, আর তা হবে প্রবেশের কতোই না নিকৃষ্ট স্থান!
وَ اُتۡبِعُوۡا فِیۡ ہٰذِہٖ لَعۡنَۃً وَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ بِئۡسَ الرِّفۡدُ الۡمَرۡفُوۡدُ ﴿۹۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং এ জগতে অভিশাপ তাদের পেছনে পড়লো এবং ক্বিয়ামতের দিনে। কতই নিকৃষ্ট পুরস্কার, যা তারা লাভ করেছে!
📕ইরফানুল কুরআন:
৯৯. আর এ দুনিয়াতে তাদের পশ্চাতে অভিসম্পাত যুক্ত করে দেয়া হয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেও (যুক্ত করে দেয়া হবে)। কতোই না নিকৃষ্ট প্রতিদান যা তাদেরকে দেয়া হবে।
ذٰلِکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡقُرٰی نَقُصُّہٗ عَلَیۡکَ مِنۡہَا قَآئِمٌ وَّ حَصِیۡدٌ ﴿۱۰۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এ হচ্ছে বস্তিগুলোর সংবাদ, যা আমি আপনাকে শুনাচ্ছি; সেগুলোর মধ্যে কতেক এখনো দণ্ডায়মান এবং কতেক নির্মুল হয়ে গেছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০০. (হে সম্মানিত রাসূল! সেসব) জনপদের কিছু অবস্থা, যা আমরা আপনাকে শুনাচ্ছি, এর মধ্যে কিছু বিদ্যমান রয়েছে আর (কিছু) বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
وَ مَا ظَلَمۡنٰہُمۡ وَ لٰکِنۡ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَمَاۤ اَغۡنَتۡ عَنۡہُمۡ اٰلِہَتُہُمُ الَّتِیۡ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ لَّمَّا جَآءَ اَمۡرُ رَبِّکَ ؕ وَ مَا زَادُوۡہُمۡ غَیۡرَ تَتۡبِیۡبٍ ﴿۱۰۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি তাদের প্রতি যুল্ম করি নি; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুল্ম করেছে। অতঃপর তাদের উপাস্যগুলো, যে গুলোকে তারা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করতো, তাদের কোন কাজে আসে নি যখন আপনার রবের নির্দেশ আসলো; আর ওইগুলোর কারণে তাদের ধ্বংস ব্যতীত অন্য কিছু বৃদ্ধি পায় নি।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০১. আর আমরা তাদের উপর যুলুম করিনি, বরং তারা (নিজেরাই) নিজেদের উপর যুলুম করেছিল। সুতরাং তাদের ভ্রান্ত উপাস্যগুলো তাদের কোনো কাজে আসলো না, আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের উপাসনা তারা করতো; যখন আপনার প্রতিপালকের (শাস্তির) নির্দেশ আসলো। আর সেসব (দেবতা) তো কেবল তাদের ধ্বংস ও বিনাশই বৃদ্ধি করলো।
وَ کَذٰلِکَ اَخۡذُ رَبِّکَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰی وَ ہِیَ ظَالِمَۃٌ ؕ اِنَّ اَخۡذَہٗۤ اَلِیۡمٌ شَدِیۡدٌ ﴿۱۰۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অনুরূপই তোমার রবের পাকড়াও, যখন বস্তিগুলোকে পাকড়াও করেন তাদের যুল্মের কারণে। নিশ্চয় তার পাকড়াও বেদনাদায়ক, কঠিন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০২. আর আপনার প্রতিপালকের পাকড়াও এরূপই হয়ে থাকে, তিনি জনপদগুলোকে পাকড়াও করেন যখন তারা সীমালঙ্ঘনকারী (হয়ে পড়ে)। নিশ্চয়ই তাঁর পাকড়াও যন্ত্রণাদায়ক (এবং) কঠিন হয়ে থাকে।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّمَنۡ خَافَ عَذَابَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ ذٰلِکَ یَوۡمٌ مَّجۡمُوۡعٌ ۙ لَّہُ النَّاسُ وَ ذٰلِکَ یَوۡمٌ مَّشۡہُوۡدٌ ﴿۱۰۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
নিশ্চয় তাঁতে নিদর্শন রয়েছে তারই জন্য, যে পরকালের শাস্তিকে ভয় করে; এটা ওই দিন, যাতে সমস্ত মানুষ একত্রিত হবে এবং ওই দিন হাযির হবারই।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৩. অবশ্যই এতে (অর্থাৎ এসব ঘটনাবলীতে) তার জন্যে নিদর্শন রয়েছে যে পরকালের শাস্তিকে ভয় করে। এটি (কিয়ামতের) সেই দিন, যেদিন সমস্ত মানুষকে একত্রিত করা হবে। আর এটিই এমন দিন, যেদিন সকলকে উপস্থিত করা হবে।
وَ مَا نُؤَخِّرُہٗۤ اِلَّا لِاَجَلٍ مَّعۡدُوۡدٍ ﴿۱۰۴﴾ؕ
📗কানযুল ঈমান:
এবং আমি সেটাকে পেছনে হটাই না, কিন্তু গোনা কিছু সময়ের জন্য।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৪. আর আমরা একে বিলম্বিত করছি না, নিদির্ষ্ট সময় ব্যতীত (যা পূর্ব থেকেই নির্ধারিত)।
یَوۡمَ یَاۡتِ لَا تَکَلَّمُ نَفۡسٌ اِلَّا بِاِذۡنِہٖ ۚ فَمِنۡہُمۡ شَقِیٌّ وَّ سَعِیۡدٌ ﴿۱۰۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
যখন ওই দিন আসবে তখন আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত কেউ কথা বলবে না; অতঃপর তাদের মধ্যে কেউ হতভাগা এবং কেউ ভাগ্যবান।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৫. যখন সেদিন আসবে, কোনো ব্যক্তিই তাঁর অনুমতি ব্যতীত কথা বলতে পারবে না। অতঃপর তাদের মধ্যে কতিপয় হবে দুর্ভাগ্যবান এবং কতিপয় সৌভাগ্যবান।
فَاَمَّا الَّذِیۡنَ شَقُوۡا فَفِی النَّارِ لَہُمۡ فِیۡہَا زَفِیۡرٌ وَّ شَہِیۡقٌ ﴿۱۰۶﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
অতঃপর ওই সব লোক, যারা হতভাগা, তারা তো দোযখের মধ্যে যাবে, তারা সেখানে গাধার মত চিৎকার করবে;
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৬. সুতরাং যারা দুর্ভাগ্যবান হবে তারা জাহান্নামে (পড়ে) থাকবে। তাদের নিয়তিতে সেখানে থাকবে চিৎকার ও আর্তনাদ।
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ فَعَّالٌ لِّمَا یُرِیۡدُ ﴿۱۰۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
তারা সেখানে থাকবে যতদিন পর্যন্ত আসমান ও যমীন থাকবে; কিন্তু যতটুকু আপনার রব ইছা করেন; নিশ্চয় আপনার রব যখন যা চান করেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৭. তারা তাতে চিরকাল থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত টিকে থাকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী (যা সে সময় বিদ্যমান থাকবে); তবে তা ব্যতীত যা আপনার প্রতিপালক চান। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক যা ইচ্ছা সম্পাদন করে থাকেন।
وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ سُعِدُوۡا فَفِی الۡجَنَّۃِ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ عَطَآءً غَیۡرَ مَجۡذُوۡذٍ ﴿۱۰۸﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ওই সব লোক, যারা ভাগ্যবান হয়েছে, তারা জান্নাতের মধ্যে থাকবে, সর্বদা সেখানে থাকবে যতদিন পর্যন্ত আসমান ও যমীন থাকবে; কিন্তু যতটুকু আপনার রব ইচ্ছা করেন। এটা এমন এক দান, যা কখনো শেষ হবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৮. আর যারা সৌভাগ্যবান হবে তারা থাকবে জান্নাতে, তাতে তারা চিরকাল অবস্থান করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত টিকে থাকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী (যা সে সময় বিদ্যমান থাকবে); তবে তা ব্যতীত যা আপনার প্রতিপালক চান। এটি হবে এমন প্রতিদান যা কখনো বিচ্ছিন্ন হবে না।
فَلَا تَکُ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّمَّا یَعۡبُدُ ہٰۤؤُلَآءِ ؕ مَا یَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُہُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ وَ اِنَّا لَمُوَفُّوۡہُمۡ نَصِیۡبَہُمۡ غَیۡرَ مَنۡقُوۡصٍ ﴿۱۰۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং, হে শ্রোতা! ধোকায় পড়ো না তা দ্বারা, যার এ কাফিরগণ পূজা করছে; এরা তেমনি পূজা করে যেমন পূর্বে তাদের পিতৃপুরুষরা পূজা করতো। আর নিশ্চয় আমি তাদের অংশ তাদেরকে পুরোপুরিভাবেই দেবো, যাতে কম করা হবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১০৯. অতঃপর (হে শ্রবণকারী!) তুমি এসবের ব্যাপারে কোনোই সন্দেহে পতিত হয়ো না, যাদের উপাসনা এ লোকেরা করে। তারা (কোনো প্রমাণ ও অন্তর্দৃষ্টির উপর ভিত্তি করে) উপাসনা করে না, তবে (কেবল এ কারণে করে) যেহেতু এরপূর্বে তাদের পিতৃপুরুষেরা উপাসনা করে আসছে। আর নিশ্চয়ই আমরা তাদেরকে তাদের (শাস্তির) প্রাপ্য পুরোপুরি দেবো, যাতে কোনো কম করা হবে না।
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ فَاخۡتُلِفَ فِیۡہِ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّہُمۡ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ مُرِیۡبٍ ﴿۱۱۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। অতঃপর তাঁতে মতবিরোধ ঘটেছে। যদি আপনার রবের একটা সিদ্ধান্ত পূর্বে না নেওয়া হতো, তবে তখনই তাদের মীমাংসা করে দেয়া হতো আর নিশ্চয় তারা সেটার দিক থেকে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১০. আর নিশ্চয়ই আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে দিয়েছিলাম কিতাব। অতঃপর তাতে মতবিরোধ দেখা দিল। আর যদি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একটি বার্তা পূর্বে প্রকাশিত না হতো, তবে তাদের মাঝে অবশ্যই ফায়সালা করে দেয়া হতো। আর তারা অবশ্যই এ (কুরআনের) ব্যাপারে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে।
وَ اِنَّ کُلًّا لَّمَّا لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۱۱﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং নিশ্চয় যত রয়েছে একেক জনকে আপনার রব তার কর্মফল পুরোপুরি প্রদান করবেন। তিনি তাদের কার্যাদি সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১১. নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক তাদের সকলকে তাদের কর্মের পুরোপুরি প্রতিদান দেবেন। তারা যা কিছু করছে, অবশ্যই তিনি সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
فَاسۡتَقِمۡ کَمَاۤ اُمِرۡتَ وَ مَنۡ تَابَ مَعَکَ وَ لَا تَطۡغَوۡا ؕ اِنَّہٗ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۱۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং স্থির থাকুন যেমন আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে; এবং যে আপনার সাথে প্রত্যাবর্তন করেছে (তারাও স্থির থাকুক) এবং হে লোকেরা! অবাধ্যতা প্রদর্শন করো না। নিশ্চয় তিনি তোমাদের কাজ দেখছেন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১২. অতঃপর আপনি অটল থাকুন যেমনটি আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর সেও (যেন অটল থাকে) যে আপনার সাথে (আল্লাহর দিকে) প্রত্যাবর্তন করেছে। আর (হে মানুষ!) তোমরা সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই তোমরা যা কিছু করছো তা তিনি ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ করছেন।
وَ لَا تَرۡکَنُوۡۤا اِلَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا فَتَمَسَّکُمُ النَّارُ ۙ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ اَوۡلِیَآءَ ثُمَّ لَا تُنۡصَرُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং যালিমদের প্রতি ঝুকে পড়ো না। পড়লে তোমাদেরকে আগুন স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নেই। অতঃপর তোমরা সাহায্য পাবে না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৩. আর তোমরা সেসব লোকদের দিকে ঝুঁকে পড়ো না যারা যুলুম করছে, নতুবা তোমাদেরকে (জাহান্নামের) আগুন এসে স্পর্শ করবে। আর তোমাদের জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সাহায্যকারী হবে না। অতঃপর তোমাদেরকে সাহায্যও করা হবে না।
وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ طَرَفَیِ النَّہَارِ وَ زُلَفًا مِّنَ الَّیۡلِ ؕ اِنَّ الۡحَسَنٰتِ یُذۡہِبۡنَ السَّیِّاٰتِ ؕ ذٰلِکَ ذِکۡرٰی لِلذّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾ۚ
📗কানযুল ঈমান:
এবং নামায প্রতিষ্ঠিত রাখো দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে। নিশ্চয় সৎকাজগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেয় অসৎ কাজগুলোকে। এটা উপদেশ মান্যকারীদের জন্য উপদেশ।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৪. আর আপনি দিবসের উভয় প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে নামায কায়েম করুন। নিশ্চয়ই সৎকর্ম অসৎ কর্মকে মিটিয়ে দেয়। এ হচ্ছে উপদেশ, যে উপদেশ গ্রহণ করে তার জন্যে।
وَ اصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং ধৈর্যধারণ করো। কারণ, আল্লাহ্হ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৫. আর আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।
فَلَوۡ لَا کَانَ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اُولُوۡا بَقِیَّۃٍ یَّنۡہَوۡنَ عَنِ الۡفَسَادِ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّنۡ اَنۡجَیۡنَا مِنۡہُمۡ ۚ وَ اتَّبَعَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مَاۤ اُتۡرِفُوۡا فِیۡہِ وَ کَانُوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۱۶﴾
📗কানযুল ঈমান:
সুতরাং কেন হয় নি তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্যে এমন সব লোক, যাদের মধ্যে মঙ্গলের কিছু অংশ লেগেই থাকতো, যারা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ছড়াতে বাধা দিতো? হ্যাঁ, তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ছিলো তারাই, যাদেরকে আমি রক্ষা করেছি। এবং যালিমগণ ভোগ-বিলাসের পেছনে পড়ে রইলো যা তাদেরকে দেওয়া হয়েছে এবং তারা পাপী ছিলো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৬. সুতরাং তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মাঝে এমন মর্যাদাসম্পন্ন ও উচ্চতর নৈতিকতার অধিকারী লোক কেন হয়নি, যারা লোকজনকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে প্রতিহত করতো; সামান্য কিছু লোক ব্যতীত যাদেরকে আমরা নাজাত দিয়েছি? আর যালিমেরা আরাম-আয়েশ (-এর এ পথই) অনুসরণ করেছে, যাতে তারা পড়ে রইলো। আর তারা ছিল (স্বভাবজাত) অপরাধী।
وَ مَا کَانَ رَبُّکَ لِیُہۡلِکَ الۡقُرٰی بِظُلۡمٍ وَّ اَہۡلُہَا مُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۱۷﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনার রব এরূপ নন যে, তিনি বস্তিগুলোকে বিনা কারণে ধ্বংস করবেন অথচ সেগুলোর অধিবাসীরা হয় ভালো।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৭. আর আপনার প্রতিপালক এমন নন যে, তিনি জনপদগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন, যখন এর অধিবাসীরা সৎকর্মশীল।
وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَجَعَلَ النَّاسَ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّ لَا یَزَالُوۡنَ مُخۡتَلِفِیۡنَ ﴿۱۱۸﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
এবং আপনার রব ইচ্ছা করলে সমস্ত মানুষকে একই উম্মত (জাতি) করতে পারতেন এবং তারা সর্বদা মতভেদেই থাকবে;
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৮. আর যদি আপনার প্রতিপালক চাইতেন তবে সকল মানুষকে একই জাতি করে দিতেন (তবে তিনি জোরপূর্বক এমনটি করেননি, বরং সকলকে ধর্ম বাছাই করার স্বাধীনতা দিয়েছেন।) আর (এখন) এ সকল লোক সর্বদা মতবিরোধ করতেই থাকবে,
اِلَّا مَنۡ رَّحِمَ رَبُّکَ ؕ وَ لِذٰلِکَ خَلَقَہُمۡ ؕ وَ تَمَّتۡ کَلِمَۃُ رَبِّکَ لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾
📗কানযুল ঈমান:
কিন্তু যাদের উপর আপনার রব দয়া করেছেন এবং মানুষকে এ জন্যই সৃষ্টি করেছেন। এবং আপনার রবের এ’কথা চূড়ান্ত হয়েছে, ‘নিশ্চয় নিশ্চয় জাহান্নাম পূর্ণ করবো জিন ও মানুষ উভয়কে সম্মিলিত করে।
📕ইরফানুল কুরআন:
১১৯. সেসব লোক ব্যতীত, যার উপর আপনার প্রতিপালক অনুগ্রহ করেছেন এবং এ জন্যেই তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর আপনার প্রতিপালকের বাণী পূর্ণ হয়ে গিয়েছে: ‘নিশ্চয়ই আমি সকল (মিথ্যাবাদী) জ্বিন এবং মানুষ দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবো’।
وَ کُلًّا نَّقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِہٖ فُؤَادَکَ ۚ وَ جَآءَکَ فِیۡ ہٰذِہِ الۡحَقُّ وَ مَوۡعِظَۃٌ وَّ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং সব কিছু আমি আপনাকে রসূলগণের সংবাদই শুনাচ্ছি, যা দ্বারা আমি আপনার হৃদয়কে দৃঢ় করবো এবং এ সূরায় আপনার নিকট সত্য এসেছে এবং মুসলমানদের জন্য উপদেশ ও নসীহত।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২০. আর আমরা রাসূলগণের সকল বৃত্তান্ত আপনাকে শুনাচ্ছি, যার মাধ্যমে আমরা আপনার (পবিত্রতম) অন্তরকে সুদৃঢ় করি। আর এতে (এ সূরায়) আপনার নিকট এসেছে সত্য এবং ঈমানদারগণের জন্যে উপদেশ ও সাবধানবাণী।
وَ قُلۡ لِّلَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ ؕ اِنَّا عٰمِلُوۡنَ ﴿۱۲۱﴾ۙ
📗কানযুল ঈমান:
এবং কাফিরদেরকে বলুন, ‘তোমরা আপন জায়গায় কাজ করে যাও, আমিও আমার কাজ করে যাচ্ছি।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২১. আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না তাদেরকে বলে দিন, ‘তোমরা তোমাদের অবস্থানে আমল করতে থাকো (আর) আমরা (আমাদের অবস্থানে) আমল করছি।
وَ انۡتَظِرُوۡا ۚ اِنَّا مُنۡتَظِرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং অপেক্ষা করো, আমরাও অপেক্ষা করছি’।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২২. আর তোমরা অপেক্ষা করো, আমরা(ও) অপেক্ষা করছি।’
وَ لِلّٰہِ غَیۡبُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُ الۡاَمۡرُ کُلُّہٗ فَاعۡبُدۡہُ وَ تَوَکَّلۡ عَلَیۡہِ ؕ وَ مَا رَبُّکَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾
📗কানযুল ঈমান:
এবং আল্লাহরই জন্য আসমানসমূহ ও যমীনের অদৃশ্য বিষয়াদি আর তারই দিকে সমস্ত কাজের প্রত্যাবর্তন; সুতরাং তারই বন্দেগী করো এবং তারই উপর ভরসা রাখো। আর তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে আপনার রব অনবহিত নন।
📕ইরফানুল কুরআন:
১২৩. আর আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীতে (সকল) অদৃশ্য আল্লাহরই জন্যে, আর তাঁরই নিকট সকল কর্মকান্ড প্রত্যানীত হবে। সুতরাং তাঁর ইবাদত করতে থাকো এবং তাঁরই উপর ভরসা রাখো। আর তোমরা সবাই যা কিছু করো তোমাদের প্রতিপালক তা সম্পর্কে উদাসীন নন।