মৃতকে জীবিত করা 

❏ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত ঈসা (عليه السلام) চারজন মৃতকে জীবিত করেছিলেন। 
১. আযর, যিনি তাঁর বন্ধু ছিলেন,
২. এক বৃদ্ধার ছেলে, 
৩. মহারের চুঙ্গীর ছেলে ও
৪. হযরত নুহ (عليه السلام)'র ছেলে সামকে যিনি চার হাজার ছয় শত বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। হযরত সাম ব্যতীত বাকী তিনজন অনেক জীবিত ছিলেন এবং তাদের সংসার ও করেছিলেন। 

 ঘটনা হল- 

❏ প্রথম ব্যক্তি আযর তাঁর বন্ধু ছিল। যখন সে অসুস্থ হয়ে পড়ল তখন তার বােন হযরত ঈসা (عليه السلام) কে সংবাদ দিল যে, আপনার বন্ধু মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে কিন্তু তখন তিনি তিন দিনের দূরত্বে অবস্থান করছিলেন। তিন দিনি পর তিনি সেখানে পৌঁছে জানতে পারলেন যে, বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে আজ তিন দিন হয়ে গেল। তিনি তার বােনকে বললেন, আমাকে বন্ধুর কবরে নিয়ে যাও। তিনি কবরে গিয়ে দোয়া করলে আল্লাহর হুকুমে এবং তাঁর নির্দেশে বন্ধু কবর থেকে জীবিত উঠে গেল। সে দীর্ঘ দিন জীবিত ছিল তাঁর থেকে সন্তান-সন্ততিও জন্মগ্রহণ করেছে। 

দ্বিতীয় ঘটনা-  

❏ বৃদ্ধার ছেলের ঘটনা হল লােকেরা বৃদ্ধার ছেলের জানাযা নিয়ে যাচ্ছিল আর বৃদ্ধ আঝোর নয়নে কান্নাকাটি করতেছে। বৃদ্ধার কান্না দেখে হযরত ঈসা (عليه السلام)’র দয়া আসল। তিনি আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন সাথে সাথে বৃদ্ধার ছেলের জানাযার খাটের উপর উঠে বসে গেল এবং বহণকারীগণের কাঁধের উপর থেকে নীচে নেমে গেল। অনেক দিন বেঁচে ছিল, সন্তান-সন্ততিও হয়েছিল তার। 

তৃতীয় ঘটনা- 

❏ মুহারের চুঙ্গী ছিল হাকেমের পক্ষে জনগণ থেকে কর আদায়কারী। তার কন্যা মরে যাওয়ার একদিন পর হযরত ঈসা (عليه السلام) দোয়া করলে সে জীবিত হয়ে যায়। সেও অনেক বছর জীবিত ছিল সংসার করেছে সন্তান-সন্ততি হয়েছে। 

চতুর্থ ঘটনা- 
❏ সাম ইবনে নুহ (عليه السلام)’র ঘটনা। কেউ কেউ মনে করত হযরত ঈসা (عليه السلام) যাদেরকে জীবিত করেছিলেন মুলত তারা মৃত ছিলনা। হয়তাে মৃত্যুর কাছাকাছি কিংবা রােগে-শােকে মৃতের ন্যায় হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি অনেক পুরাতন একটি কবরস্থানে গেলেন যেখানে চার হাজার ছয়শত বছর পূর্বে মত হ্যরত নুহ (عليه السلام)'র পুত্র সাম’র কবর ছিল। তিনি আল্লাহর দরবারে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা সাম কে জীবিত করে দেন। তিনি যখন দোয়া করছিলেন তখন সাম কবরে শুনতে পান যে, কে যেন বলতেছেন (عليه السلام) অর্থাৎ রুহুল্লাহ তথা ঈসা (عليه السلام)'র কথা মান্য কর। এটা শ্রবণ মাত্র তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং মনে করলেন কিয়ামত এসে গিয়েছে। এই ভয়ে তার মাথার অর্ধেক চুল সাদা হয়ে গেল। অথচ নুহ (عليه السلام)'র যুগে মানুষের চুল সাদা হতনা। তিনি উঠে জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামত কি সংঘটিত হয়েছে? 

উত্তরে ঈসা (عليه السلام) বললেন, না, বরং আমি তােমাকে ইসমে আজম দিয়ে জীবিত করেছি। তখন তিনি ঈসা (عليه السلام)'র নিকট আবেদন করলেন যেন পুনরায় তাকে কবরে পাঠিয়ে দেন যাতে দ্বিতীয়বার মৃত্যু যন্ত্রণা ভােগে করতে হয়। তখন সাথে সাথে তিনি পুণরায় মৃত্যু বরণ করেন। ●৪০৪
_____________________________
৪০৪.[আল্লামা মাহমুদ আলুসী (رحمة الله), তাফসীরে রূহুল মায়ানী, আরবী, বৈরুত, খণ্ড:৩য়, পৃ:১৬৯ ও মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী (رحمة الله) (১৩৯১হি.), তাফসীরে নঈমী, উর্দু, খণ্ড:৩য়, পারা:৩য়, পৃ:৫১৬]
Top