ভূমিকা
ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ (সংকলিত ফতোয়া) গুলো বিভিন্ন কিতাবের বঙ্গানুবাদ থেকে এক এক করে সংকলন করে এখানে গুটি কয়েকটি ফতোয়া একত্র করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ এটা পরবর্তীতে আরও আপডেট হবে। এর জন্য যেসব বই থেকে সাহায্য নেয়া হয়েছে তার মধ্যে দাওয়াতে ইসলামীর "ফয়যানে সুন্নত" অন্যতম। এছাড়াও আ'লা হযরতের অন্যান্য কিতাব থেকে প্রশ্নোত্তর নেয়া হয়েছে। কোন ভুল-ত্রুটি পেলে এডমিন বরাবর জানাবেন।
-ডা. মাসুম বিল্লাহ সানি
ফাতাওয়া-এ রযভীয়ার সংক্ষিপ্ত বিষয়সূচি
-মাওলানা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন রেজভি
আমি এখানে ফাতাওয়া-এ রযভীয়ার ৩০ খণ্ডের বিষয়বস্তুর উপর একটা সংক্ষিপ্ত আলোচনার পেশ করেছি। বিশ্বকোষধর্মী এ ফিকহগ্রন্থের সর্বমোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২১,৫৬৫; জিজ্ঞাসিত ফাতওয়ার সমাধান ৬,৮৪৭টি এবং বিশ্লেষণধর্মী পুস্তকের সংখ্যা ২০৬। এটা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাতওয়া গ্রন্থ।
পাকিস্তানের প্রখ্যাত লেখক ও গবেষক ড. মুহাম্মদ মসউদ আহমদ --যিনি ইমাম আহমদ রেযার জীবন ও কর্মের নানা দিকের উপর প্রায় ৪০ বছর অধিককাল গবেষণায় রত থেকে ইমাম আহমদ রেযা উপর শতাধিক প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা করেন এবং সে সাথে ‘দাইরা-ই-মা‘আরিফ-ই-ইমাম রেযা’ নামে ১৫ খণ্ডের ইমাম আহমদ রেযার জীবনী বিশ্বকোষের খচড়া করে যান।
-- তিনি ইমাম আহমদ রেযার জ্ঞানগত যোগ্যতার উপর মন্তব্য করতে গিয়ে একস্থানে লিখেছেন যে, ‘ইমাম আহমদ রেযার চিন্তাধারার প্রত্যেক দিক গবেষণা ও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। যার এক একটি দিক লেখার জন্য আলাদা আলাদা প্রবন্ধ লেখা দরকার। ইমাম আহমদ রেযার উপর গবেষণা করতে গিয়ে আমার কাছে এমন অনুভব হচ্ছে যে,এখনও আমরা তাঁর জ্ঞানসমুদ্রের তীরেও বেয়ে উঠতে পারিনি, সমুদ্রে ঝাপ মারা ও সাতারানো তো দুরের কথা।"
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া(১ম খণ্ড)
• ভূমিকা
(خطبة الکتاب)
• ফাত্ওয়া প্রদানের বিধান (رسم المفتی)
• অধ্যায়:পবিত্রতা (کتاب الطهارة)
• ওযূর বিবরণ
( باب الوضو)
• ওযূ ভঙ্গকারী বিষয়
( فصل فی نواقص الوضوء)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২য় খণ্ড)
• পানির বর্ণনা
(باب المیاه)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (৩য় খণ্ড)
• পানির বর্ণনা [২য় খণ্ডের অবশিষ্ট অংশ]
(باب المیاه)
• কুপের বর্ণনা
(فصل فی البٸر)
• তায়াম্মুমের বর্ণনা [৪র্থ খণ্ডে সমাপ্য]
(باب التیمم)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (৪র্থ খণ্ড)
• তায়াম্মুমের বর্ণনা
(باب التیمم)
• মোজার উপর মাসাহ
( مسح حفین)
• হায়যের বর্ণনা
(باب الحیض)
• অপারগ ব্যক্তির বর্ণনা
( باب المعذور )
• অপবিত্রতার বর্ণনা
( باب الانجاس)
• ইস্তিনজার বর্ণনা
(باب الاستنجاء)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (৫ম খণ্ড)
• অধ্যায়: সালাত
(کتاب الصلوة)
• সালাতের ওয়াক্তসমূহ
(باب الاوقات)
• সালাতর স্থান
(فصل فی اماکن الصلوة)
• আযান ও ইকামত
(باب الاذان والاقامة)
ফাতাওয়া-ই-রেযভীয়া (৬ষ্ঠ খণ্ড)
• সালাতেরর পূর্ব শর্তসমূহ
(باب شروط الصلوة)
• সালাতের রুকনসমূহ (باب صفةالصلوة)
• ক্বিরাত
(باب القراءة)
• ইমামত
(باب الامامة)
ফাতাওয়া-ই রযভীয়া (৭ম খণ্ড)
• জামা‘আত
(باب الجماعة)
• মাসবূকের সালাত
(فصل فی السبوق)
• ইমাম নামাযে স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করা
( فصل الاستخلاف)
• সালাত ভঙ্গকারী বিষয়
(باب مفسدات الصلوة)
• সালাতের মাকরূহ
(باب مکروهات الصلوة)
• বিতির ও নফল
(باب الوتروالنوافل )
ফাতাওয়া-ই রযভীয়া (৮ম খণ্ড)
• মসজিদের বিধান
( باب احکام المساجد)
• ফরয নামায
(باب ادراک الفریضة)
• কাযা নামায
(باب قضاء الفواٸت)
• সহূ সাজদা
(باب سجود السهو)
• তিলাওয়াতে সাজদা
( باب سجود التلاوة)
• মুসাফিরের নামায
(باب صلوةالمسافر)
• জুম‘আর নামায
(باب الجمعة)
• দুই ঈদের নামায
(باب العیدین)
• বৃষ্টি প্রার্থনার নামায
(باب الاستسقاء)
ফাতাওয়া-ই রযভীয়া (৯ম খণ্ড)
• জানাযার নামায
(باب الجناٸز)
• মৃত্যুর পূর্বের অবস্থা ও আহকাম
( احکام واحوال قرب موت)
• মৃত্যুর পূর্বের অবস্থা ও আহকাম
(احکام واحوال بعد موت)
• মৃতের গোসল
(غسل میت)
• মৃতের কাফন
(کفن میت)
• কফিন নিয়ে যাওয়া
(جنازه لے جانا)
• জানাযার নামায
(نمازجنازه)
• জানাযার ইমামত
(امامت نماز جنازه)
• জানাযার নামায আদায়
(نمازجنازه کی اداٸگی)
• জানাযা নামাযের স্থান
(موضع نمازجنازه)
• জানাযার নামায বারংবার পড়া
(تکرارنمازجنازه)
• মৃতের দাফন
(دفن میت)
• শোক প্রকাশ ইত্যাদি
(تعزیت وغیره)
• দাফনের স্থান
(جاٸے دفن)
• কবর ও কবরস্থানের বিধান
(احکام قبورومقابر)
• ফাতিহা ও ইসালে সওয়াব
(فاتحه وایصال ثواب)
• কবর যিয়ারত
(زیارت قبور)
• মৃতের ভোজ
(دعوت میت)
ফাতাওয়া-ই রযভীয়া (১০ম খণ্ড)
• অধ্যায়:যাকাত
(کتاب الزکوة)
• অধ্যায়: রোযা
(کتاب الصوم)
• চাঁদ দেখা
(باب رٶیةالهلال)
• রোযা ভঙ্গের কারণ
(باب مفسدات الصوم)
• কাযা ও কাফ্ফারাহ
(باب القضاء والکفارة)
• ফিদয়া
(باب الفدیة)
• রোযার মাকরূহ
(مکروهات صوم)
• সেহেরী ও ইফতার
(سحروافطار)
• অধ্যায়: হজ্ব
(کتاب الحج)
• হজ্বের শর্তসমূহ
(باب شراٸط الحج)
• হজ্বর ত্রুটি-বিচ্যুতি
(باب الجنایات فی الحج)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১১তম খণ্ড)
• অধ্যায়: বিবাহ
(کتاب النکاح)
• যাদের বিবাহ করা হারাম ( باب المحرمات)
• অভিভাবক
(باب الولی)
• কুফূ বা সমতা
(باب الکفاٸة)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১২তম খণ্ড)
• মহর
(باب المهر)
• যৌতুক
(باب الجهاز)
• কাফিরের বিবাহ
(باب نکاح الکافر)
• বৈবাহিক জীবন (باب المعاشرة)
• পালাবন্টন
(باب القسم)
• দ্বিতীয় বিবাহ
(باب النکاح الثانی)
• অধ্যায়:তালাক
(کتاب الطلاق)
• পরোক্ষ তালাক
(باب الکناية)
• তাফভিয তালাক
(باب تفویض الطلاق)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৩তম খণ্ড)
• তা'লীক তালাক
(باب تعلیق الطلاق)
• ঈ'লা
(باب الایلاء)
• খুলা
(باب الخلع)
• যিহার
• (باب الظهار)
• ইদ্দাত
(باب العدة)
• শোক পালন
(باب الحداد)
• নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী
(باب زوجة مفقود الخبر)
• নসব প্রমাণ
(باب النسب)
• শিশু লালন-পালন
(باب الخضانة)
• খোরপোশ
(باب النفقة)
• শপথ
• (کتاب الایمان)
• মানত
(باب النذر)
• কাফ্ফারা
(باب الکفارة)
• দন্ডবিধি ও শাস্তি
(کتاب الحدود والتعزیر)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৪তম খণ্ড)
• অধ্যায়: যুদ্ধ -১ম ভাগ
(کتاب السیر-١ )
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৫তম খণ্ড)
• অধ্যায়: যুদ্ধ -২ ভাগ
(کتاب السیر-٢)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৬তম খ.)
• অধ্যায়: অংশীদারিত্ব
( کتاب الشرکة)
• অধ্যায়: ওয়াকফ
(کتاب الوقف)
• ওয়াকফের ব্যয়ক্ষেত্র
( فصل مصارف وقف)
• মসজিদের বিধান
(باب المسجد)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৭তম খ.)
• অধ্যায়: ক্রয়-বিক্রয়
( کتاب البیوع)
• প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ
(ایجاب وقبول)
• ইচ্ছাধিকারের শর্তারোপ
(خیار شرط)
• নির্দিষ্টকরণের শর্তারোপ
(خیار تعین)
• শর্তহীন ক্রয়-বিক্রয়
(بیع مطلق)
• ফাসিদ ও বাতিল বিক্রি
(باب البیع الباطل والفاسد)
• মাকরূহ ক্রয় বিক্রয়
(باب البیع المکروه)
• অর্থহীন বিক্রি
(باب بیع الفضولی)
• একালা
(باب الاقالة)
• মুরাবাহা
(باب المرابحة)
• বিক্রিত বস্তু ও মূল্যে অধিকার
(باب التصرف فی المبیع والثمن)
• ঋণ
(باب القرض)
• সুদ
(باب الربوا)
• ইসতিহক্বাক
(باب الاستحقاق)
• বায় সলম
(باب بیع السلم)
• ইস্তিসনা‘আ
(باب الاستصناع)
• বায় সরফ
(باب الصرف)
• তলজীয়্যাহ
(باب بیع التلجیة)
• বায় ওফা
(باب بیع الوفاء)
• বিবিধ ক্রয়-বিক্রয়
(باب متفرقات البیع)
• অধ্যায়: জামানত
(کتاب الکفالة)
• অধ্যায়: হাওয়ালা
(کتاب الحوالة)
ফতোয়া-ই রযভীয়া(১৮তম খ.)
• অধ্যায়: সাক্ষ্যদান (کتاب الشهادة)
• অধ্যায়: বিচার ও দাবি
(کتاب القضاءوالدعاوی)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া(১৯ খ.)
• অধ্যায়:ওকালত(প্রতিনিধিত্ব (کتاب الوکالة)
• অধ্যায়: স্বীকারোক্তি
(کتاب الاقرار)
• অধ্যায়: আপস-মীমাংসা ( کتاب الصلح)
• অধ্যায়: মুদারিবা
(کتاب المضاربة)
• অধ্যায়:আমানাত
(کتاب الامانات)
• অধ্যায়:'আরিয়ত বা ধার (کتاب العاریة)
• অধ্যায়: হিবা বা দান
( کتاب الهبة)
• অধ্যায়: ইজারা
(کتاب الاجارة)
• অধ্যায়: বাধ্যকরণ
(کتابالاکراه)
• অধ্যায়: হাজার
(کتاب الحجر)
• অধ্যায়: আত্মসাৎ
( کتاب الغصب)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া(২০খ.)
• অধ্যায়: শুফ'আ
(کتاب الشفعة)
• অধ্যায়:ভাগ বণ্টন
(کتاب القسمة)
• অধ্যায়:মুযারাআত
(کتاب المزارعة)
• অধ্যায়: জবাই
(کتاب الذباٸح)
• অধ্যায়: শিকার
(کتاب الصید)
• অধ্যায়: কুরবানি
(کتاب الاضحیة)
• আকীকাহ
(باب العقیقة)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২১খ.)
• অধ্যায়: অবৈধ ও বৈধ (১ম)
(کتاب الحظر والاباحة)
• আকিদা ও সিয়র
(اعتقادیاد و سیر)
• তাবাররুক ও তাওয়াসসুল
(تبرک وتوسل)
• তাসাওউফ ও তরিকত
(تصوف وطریقت)
• পানীয় ও খাদ্য
(شرب وطعام)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২২খ.)
• অধ্যায় : অবৈধ ও বৈধ (২য়)
(کتاب الحظر والاباحة)
• পাত্র ও অলংকার
(ظر وف و زیورات)
• পোশাক ও সাজ-সজ্জা
(لباس ووضع و قطع)
• দেখা এবং স্পর্শ করা
(دیکهنا وچهونا)
• সালাম - সম্ভাষণ ও নবীবংশের সম্মান
(سلام تحیت وتعظیم ساد ات)
• দাড়ি, মুণ্ডন ও খাটো করা, খতনা ও হাজামত
(ڈاڑھی،حلق وقصر،ختنه وحجامت)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়্যাহ(২৩খণ্ড)
• অধ্যায়: অবৈধ ও বৈধ (৩য়)
(کتاب الحظر والاباحة)
• নামায ও পবিত্রতা
(نمازوطهارت)
• রোযা,যাকাত ও হজ্ব
(روزه وزکوة وحج)
• জানাযা,কবর ও ওলীগণের মাযার যিয়ারত
(جناٸز وزیارت قبور و مزارات اولیاء)
• ইসালে সওয়াব,সাদকা,দান ও ভিক্ষা
(ایصال ثواب وصدقه وخیرات وسوال)
• যিকর ও দোয়া
(ذکر ودعا)
• বিবাহ ও তালাক
(نکاح وطلاق)
• বংশ
(نسب)
• রসম ও রেওয়াজ
(رسم ورواج)
• শাস্তি ও তা'যিরাত
(حدود وتعزیرات)
• শিষ্টাচার
(اداب)
• সাজ-সজ্জা
(زینت)
• আয়- উপার্জন
(کسب وحصول مال)
• শিক্ষার্জন ও শিক্ষাদান
(علم وتعلم)
• সভা-সমাবেশ
(مجالس ومحافل)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৪খ.)
• অধ্যায়: অবৈধ ও বৈধ (৪র্থ)
(کتاب الحظر والاباحة)
• খেলাধুলা
(لهو ولعب)
• সৎকর্মের আদেশ ও অসৎকর্মের নিষেধ
(امر بالمعروف ونهی عن المنکر)
• রোগ এবং চিকিৎসা
(بیمار وعلاج معالجه)
• সাহচর্য ও লেনদেন এবং বন্ধুত্ব ও শত্রুতা
(صحبت وموالات ومحبت)
• অত্যাচার, মুসলমানকে কষ্ট দেয়া, সম্পর্কচ্ছেদ
(ظلم وایذاٸے مسلم وهجران وقطع تعلق)
• মিথ্যা, গীবত, প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ
(جوٹ وغیبت وبدعہدی وغیرہ)
• দাবী,বিচার,সাক্ষ্য
(دعوی وقضاء وشهادت)
• সুন্দর আচরণ ও বান্দার হক
(حسن سلوک وحقوق العباد)
• শোক,বিলাপ, অধৈয্য, ভীত
(سوگ ونوحه وجزع وفزع)
• তাজিয়া মিছিল এবং তৎসংশ্লিষ্ট কুপ্রথা
(تعزیه اور اس سے متعلقہ بدعات)
• অন্যের সাদৃশ্যকরণ
(تشبه بالغیر)
• হুক্কা ও পান
(حقه وپان)
• ছবি
(تصویر)
• জন্তু লালন,লড়ানো ও ওদের প্রতি দয়া বা অত্যাচার
(جانوروں کا پالنا،لڑانا اور
ان پررحم وظلم)
• নাম রাখা
(نام رکھنے کا بیان)
• চিঠিপত্র
(خط و کتابت)
• রাজনীতি
(سیاسیات)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৫খ.)
• অধ্যায় : ঋণ
(کتاب المداینات)
• অধ্যায় : পানীয়
(کتاب الاشربة)
• অধ্যায় : বন্ধক
(کتاب الرهن)
• বন্টন
( باب القسم )
• অধ্যায় : ওসীয়ত
(کتاب الوصایا)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৬খ.)
• অধ্যায় : ফরায়েজ
(کتاب الفراٸض)
• অধ্যায় : বিবিধ (১ম ভাগ)
(کتاب الشتی : اول)
• ইতিহাস,সালেহিনদের স্মরণ ও ঘটনা
(تاریخ وتذکره وحکایات صالحین)
• তাফসির ও উলুমে কুরআন
(فواٸدتفسیریه وعلوم قران)
• মাহফিল ও মজলিস
(محافل ومجالس)
• তাসাওউফ ও তরিকত এবং বায়আত, পীর-মুরিদির আদব
(تصوف وطریقت واداب بیعت پیرمریدی)
• আওরাদ,ওযীফা ও আমল
(اوراد ووظاٸف وعملیات)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৭খ.)
• অধ্যায় : বিবিধ (২য় ভাগ)
(کتاب الشتی: ثانی)
• ফওয়ায়িদে হাদিসিয়্যা
(فواٸد حدیثیه)
• ফওয়ায়িদে ফিকহিয়্যা
(فواٸد فقهیه)
• দর্শন, পদার্থ, বিজ্ঞান ও নুজূম
(فلسفه وطبعیات وساٸنس ونجوم)
• মুনাযেরা ও ভ্রান্ত মতবাদের খণ্ডন
(مناظرہ و ردبد مذ ھبا ں)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৮খণ্ড)
• অধ্যায় : বিবিধ (৩য় ভাগ)
(کتاب الشتی :ثالث)
• আযান, নামায, মসজিদ
(اذان، نماز، مساجد)
• ফযায়েল ও মনাকিব
(فضاٸل و مناقب)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (২৯খণ্ড)
• অধ্যায় : বিবিধ (৪র্থ ভাগ)
کتاب الشتی(حصه رابع)
• আরূয ও কাওয়াফি
(عروض وقوافی)
• শিক্ষা ও শিক্ষাদান
(علم وتعلیم)
• যুবান ও বয়ান
(زبان وبیان)
• ওয়ায ও তাবলীগ
(وعظ وبیان)
• জীববিদ্যা
(علم الحیوان)
• শরীরতত্ত্ব
(تشریح ابدان)
• ইলমে হরূফ ও গণিত
(علم حروف وریاضی)
• বান্দার হক
(حقوق العباد)
• অভিধান
(لغت)
• স্বপ্ন
( خواب )
• ভাড়া
(اجاره)
• আকাইদ,কালাম, দীনিয়াত
(عقاٸد وکلام و دینیات)
ফাতাওয়া-এ রযভীয়া (৩০খণ্ড)
• অধ্যায় : বিবিধ (৫ম ভাগ)
کتاب الشتی: خامس)
• আলেম ও সূফিগণের উক্তির ব্যাখা
(شرح کلام علماء وصوفیاء)
• তাজভীদ ও কিরাত
(تجوید وقرات)
• কুরআনের লিপি
(رسم القران)
• মহাকাশ, সময়বিদ্যা ও পঞ্জিকা
(تشریح افلاک وعلم توقیت و تقویم)
• নবী করিম ﷺ 'র সিরাত, ফযিলত ও খাসায়েস
(سیرت وفضاٸل وخصاٸص سید المرسلین ﷺ)
সহায়ক পুস্তক-পুস্তিকা
১. প্রফেসর মজিদ উল্লাহ কাদেরী : ফাতাওয়া-এ রযভীয়া কা মাওযূয়াতি জায়েযাহ্, মাসিক কারী , দিল্লী।
২. ড. মসউদ আহমদ : ‘সরতাজুল ফোক্বাহা’, এদারা-ই মাসউদিয়া, করাচি, (১৯৯৬)।
৩. ইসলামী বিশ্বকোষ : ইফাবা কর্তৃক প্রকাশিত, ১৩তম খণ্ড, ফিক্বহ ও ফাতাওয়া দ্রষ্টব্য।
৪. মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন : ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী : জীবন ও কর্ম, (১৯৯৮) , চট্টগ্রাম।
হালাল পশুর অংঙ্গ-প্রতঙ্গের বিধান
উত্তর:- এই ধরনের একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমার আকা আলা হযরত ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) বলেন:
হালাল পশুর সব অংশই হালাল কিন্তু কিছু অংশ আছে যা খাওয়া হারাম অথবা মাকরূহ হওয়ার কারণে নিষেধ। সেগুলো হল :
(১) রগের রক্ত, (২) পিত্ত, (৩) মূত্রথলি,
(৪, ৫) পুংলিঙ্গ ও স্ত্রী লিঙ্গ, (৬) অন্ডকোষ,
(৭) জোড়া, শরীরের গাঁট, (৮) হারাম মজ্জা,
(৯) ঘাড়ের দো পাট্টা যা কাঁধ পর্যন্ত টানা থাকে,
(১০) কলিজার রক্ত, (১১) তিলির রক্ত,
(১২) মাংসের রক্ত যা যবেহ করার পর মাংস থেকে বের হয়,
(১৩) হৃদপিন্ডের রক্ত, (১৪) পিত্ত অর্থাৎ ঐ হলদে পানি যা পিত্তের মধ্যে থাকে,
(১৫) নাকের আর্দ্রতা যা ভেড়া মধ্যে অধিক হারে হয়ে থাকে,
(১৬) পায়খানার স্থান, (১৭) পাকস্থলি, (১৮) নাড়িভূড়ি,
(১৯) বীর্য, (২০) ঐ বীর্য যা রক্ত হয়ে গেছে,
(২১) বীর্য যা মাংসের টুকরা হয়ে গেছে,
(২২) ঐ বীর্য যা পূর্ণ জানোয়ার হয়ে গেছে এবং মৃত অবস্থায় বের হয়েছে অথবা জবেহ করা ছাড়া মারা গেছে।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, ২০তম খন্ড, ২৪০, ২৪১ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন:- জবেহকৃত পশুর হাড্ডি খাওয়া যাবে কি?
উত্তর:- জ্বী হ্যাঁ । সায়্যিদী আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) বলেন: “জবেহকৃত হালাল পশুর হাড্ডি খাওয়া কোনভাবে নিষেধ নয়। যদি খাওয়াতে কোন ক্ষতি না হয়।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, নতুন সংস্করণ, ২০তম খন্ড, ৩৪০ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন:- যে মাংস কোন অবস্থাতেই সিদ্ধ হয় না তার প্রতিকার কি?
উত্তর:- এটার কোন প্রতিকার নেই। আমার আকা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله)বলেন: হিজড়া যাতে নর-মাদী উভয়ের আলামত থাকে, উভয় (স্থান) থেকে একই রকম প্রস্রাব আসে, কোন প্রাধান্যের কারণ নেই, সেটার মাংস যেভাবেই রান্না করা হোক, রান্না হয় না। এমনিতে শরয়ী জবেহর মাধ্যমে এটা হালাল হয়ে যাবে। যদি কেউ কাঁচা মাংস খেতে চান তবে খেতে পারেন। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, নতুন সংস্করণ, ২০তম খন্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত)
প্রশ্ন: উপহারের ব্যাপারে কি আ’লা হযরত (رحمة الله) ও কোন দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন?
উত্তর: আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله)বলেন: “আমি বলছি, তাদের উদাহরণ গ্রাম্য ও পেশাজীবি ও অন্যান্যদের চৌধুরীদের ন্যায়, যাদের নিজেদের অধীনস্থদের উপর একচ্ছত্র শাসন ও শ্রেষ্ঠত্ব থাকে।” কেননা ঐসব চৌধুরীদের ক্ষতির ভয় কিংবা প্রচলিত নিয়মের কারণে তারা হাদিয়া (অর্থাৎ-উপহার) পেয়ে থাকে।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, ১৯তম খন্ড, ৪৪৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন: অফিসার থেকে তাঁর অধীনস্থ ব্যক্তি উপহার গ্রহণ করতে পারবে কি পারবে না?
উত্তর: গ্রহণ করতে পারবে। আমার আকা আ’লা হযরত, ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) এর জারীকৃত এ মোবারক ফতোওয়াটি যদি কমপক্ষে তিনবার মনোযোগ সহকারে পড়ে বা শুনে নেয়া হয় তাহলেان شاء الله عز وجل উপহার ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে বুঝে আসবে যে, কে কার কার থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবে ও কার কার থেকে পারবে না।
আমার আক্বা আ’লা হযরত (رحمة الله) বলেন "যে ব্যক্তি নিজে, চাই শাসকের পক্ষ থেকে কোন ধরনের শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হোক, যে কারণে মানুষের উপর তার কিছুটা ক্ষমতা থাকে, যদিও সে নিজের জন্য তাদের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে না, চাপ প্রয়োগ করে না যদিও সে কোন অকাট্য সিদ্ধান্ত বরং অকাট্য নয়, এমন সিদ্ধান্ত দেয়ার ব্যাপারে পূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী নন।
নামাযীর সামনে দিয়ে গমন করা মারাত্মক গুনাহ্
(১) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যদি কেউ জানত যে, আপন নামাযী ভাইয়ের সামনে দিয়ে আড়াল হয়ে গমন করার মধ্যে কী (রকম গুনাহ) রয়েছে, তাহলে সে এক কদম চলা থেকে এক শত বছর দাঁড়িয়ে থাকাটা উত্তম মনে করত।” (সুনানে ইবনে মাযাহঃ ১ম খন্ড, ৫০৬ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ১৪৬)
(২) হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মালিক (رحمة الله) বলেন: হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার (رحمة الله) বলেছেন: নামাযীর সামনে দিয়ে গমনকারী যদি জানত, এতে তার কী ধরনের গুনাহ রয়েছে, তাহলে সে মাটিতে ধসে যাওয়াকে গমন করা থেকে উত্তম মনে করত। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, ১ম খন্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ৩৭১)
নামাযীর সামনে দিয়ে গমনকারী ব্যক্তি নিঃসন্দেহে গুনাহগার। কিন্তু নামায আদায়কারী ব্যক্তির নামাযে এর কারণে কোন পার্থক্য সৃষ্টি হবে না। (ফতােওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ২৫৪ পৃষ্ঠা)
সৈয়দ আহমদ বেরলভী সম্পর্কে আলা হজরত (رحمة الله) এর ফতোয়া
মাস’আলা ৯০- প্রশ্নকারী সায়্যিদ মুহাম্মাদ সাজ্জাদ হুসাইন সাহেব, গ্রাম শীশগড়হ, পোস্ট অফিস- বারেইলি, তারিখ-২৯ মুহাররামুল হারাম ১৩৩৭ হিজরি।
১ নং প্রশ্ন- যাইদ “সিদ্দিকীউল ওয়ারেসি” উপাধি থাকা সত্ত্বেও ইসমাইল দেহলভীকে “হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাইল সাহেব শহীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি” লেখে।
২ নং প্রশ্ন-বকর নিজেকে “চিশতী”, “হাইদারী” দাবী করে, এবং নিম্নবর্ণিত আকিদা পোষণ করে অর্থাৎ, যে মুসলমান হযরত পীরানে পীর জনাব শাইখ সায়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু এর গিয়ারভি শরীফ নির্ধারিত করে উনার পবিত্র রূহে সওয়াব পাঠায়, এমন ব্যাক্তির ব্যাপারে যাইদ বলে যে, ১১তম তারিখকে নির্দিষ্ট করা গর্হিত । রজব মাসের ব্যাপারে যাইদ লেখে যে, এই মাসের নফল ইবাদতসমূহ, নামায, রোযা ও অন্যান্য ইবাদতের ব্যাপারে বড় বড় সওয়াবের অনেক রিওয়ায়াত আছে, এগুলোর মদ্ধে কোনটিই সহীহ নয়। এবং এ কথা একেবারেই ভুল এবং সনদহীন যে, নূহ আলাইহিস সালামকে রজব মাসে কিশতি বানানোর হুকুম দেয়া হয়েছে। শা’বান মাসে হালুয়া রান্না করা অথবা তের তারিখে আরাফাহ করা, ঈদের দিন খানা বন্টন করা নিষিদ্ধ। মুহাররম মাসে খিচুড়ি অথবা শরবত নির্দিষ্টভাবে রান্না করা ও পান করানো ও ঈমামগণের নামে শিরনী দেয়া এবং আল্লাহর ওয়াস্তে মানুষকে খাওয়ানো অত্যন্ত জঘন্য বিদ’আত। সফর মাসে কোন বিশেষ সওয়াব বা বরকত এর আশা করা মূর্খতা। সায়্যিদ আহমাদ রায় বারেইলি কে নেক বুযুর্গ, বরং ওলী মনে করে। সুতরাং, এমন লোকদের বিষয়ে উলামায়ে হক এর মতামত কি, তাদের আসল মাযহাব কি ? এবং উপরোল্লেখিত বিষয়ের হাকিকত বিস্তারিতভাবে লেখা হোক।
জবাব ১- বর্ণিত অবস্তায় যাইদ গোমরাহ, বদদ্বীন, নজদী ইসমাইলি। এবং ফুকাহায়ে কিরামের হুকুম অনুযায়ী তাঁর উপর কুফর এর হুকুম জরুরী। যার বিস্তারিত “আল কাউকাবাতুশ শিহাবিয়্যাহ ফি আবিল ওয়াহ্যাবিয়্যাহ” দ্বারা স্পষ্ট। এবং আল্লাহ তাআলাই অধিক জ্ঞাত।
জবাব ২- বকরকে সতর্ক ওয়াহ্যাবী মনে হচ্ছে, গিয়ারভী শরীফকে গর্হিত, শা’বানের হালুয়া, তের তারিখের আরাফাহ, ঈদের খাওয়াকে ঢালাওভাবে শরীয়তের নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত নিষিদ্ধ, মুহাররম শরীফের খিচুড়িকে, পবিত্র ঈমামগণের নামে প্রস্তুতকৃত শরবত এর বণ্টনকে ঢালাওভাবে মন্দ বিদ’আত আখ্যা দেয়া ওয়াহ্যাবিয়াতের আলামত। এবং, ওয়াহ্যাবী গোমরাহ ও বদদ্বীন। রজবের আমলের হাদীসসমূহকে সহীহ না বলা বড় চালাকি। মুহাদ্দিসগণের “সহীহ” পরিভাষা এখানে নিষ্প্রয়োজন, আমলের ফযিলতের ক্ষেত্রে “যয়ীফ হাদীস” গ্রহণযোগ্য হবার ওপর ঐক্যমত সাব্যস্ত। রজবে কিশতি বানানো হয়নি বরং কিশতি চলতে আরম্ভ করলো এবং শত্রুদের ওপর গযব আর বন্ধুদের ওপর “এবং আমি নূহকে আরোহণ করিয়েছি তক্তা ও আলপিন ওয়ালার ওপর, যাতে করে আমার দৃষ্টির সামনে থেকেই তা বয়ে যায়, ইহা এর বিনিময়ে যার সাথে কুফর করা হয়েছিল” অনুগ্রহ এ মাসেই হয়েছিল। এটা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু আনহুম এবং অন্যান্যদের হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সফর ও আশুরার ব্যাপারে তাঁর বক্তব্যকে ফিরিয়ে না দেয়া হোক, যদিও, দ্বিতীয় বিষয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। যদি “সিরাতে মুস্তাকীম” এর বাতিল কথাগুলোকে বাতিল, কুফরী কথাগুলোকে কুফরী, ইসমাইল দেহলভীকে গোমরাহ, বদদ্বীন মনে করে তাহলে সে ওয়াহ্যাবিয়্যাত থেকে মুক্ত। তো, সায়্যিদ আহমাদকে শুধু বুযুর্গ মনে করলে ওয়াহ্যাবি হবে না, নতুবা “সত্য, আমি জ্ঞানীদের জন্য আলামত প্রকাশ করে দিয়েছি, যতটুকু আমাদের রব আমাদেরকে হিদায়াত করেছেন, আমাদের পরওয়ারদেগার তাদের এ সমস্ত কথা হতে পবিত্র”। এবং আল্লাহ তাআলা অধিক জ্ঞাত”। [▪ ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া]
◾আ’লা হযরত মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত ইমাম আহমদ রেজাখাঁন আলাইহির রহমত তদীয় ‘ ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া’ ১৪ তম খণ্ডে ৩৯৬ পৃষ্ঠায় সৈয়দ আহমদ বেরলভীর পরিচয় দিতে লিখেন-
بالآخر جاہ طلبے وملک گیری کے مشہور میں وسکھوں سے مشہور بہڑ اور عار فرار من الرجف کے بعد افغانوں کے موذی کش تلوار سے راہ فنا دیکھی علیہ ما عالیہ
)جب ہندی وہابیہ کے امام واسکے پیرکے موت ان کی سب یاوہ گویکوں اور پیشینگوئیوں کی مبطل ہوئی الخ
ভাবার্থ: আ’লা হযরত মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত বলেন- সর্বশেষ কথা হলো, খ্যাতি অর্জন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার নেশায় শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার পর থেকে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে যুদ্ধ থেকে পলায়নের পথে আফগান মুসলমানদের বিষাক্ত তরবারির আঘাতে তাদের সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হয়ে গেল। অতঃপর লিখেন- যখন হিন্দুস্তানের ওহাবিদের নেতা (ইসমাইল দেহলভী) ও তার পীর সৈয়দ আহমদ বেরলভীর অকাল মৃত্যুতে তাদের সকল ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে গেল।
◾আ’লা হযরত আহমদ রেজাখাঁন আলাইহির রহমত তদীয় ‘ ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া’ নামক কিতাবের ১৫ তম খণ্ডে ১৯৪ পৃষ্ঠায় সৈয়দ আহমদ বেরলভীর পরিচয় দিতে গিয়ে উল্লেখ করেন-
غالبا اصل مقصود اپنے پیر رائے بریلے سید احمد کو کہ نواب امیر خان کے یہاں سواروں میں نوکر اور بیچارے نرے جاھل سادہ لوح تہے نبی بنایا تہا الخ۔
ভাবার্থ: আর বাস্তবতা হলো- তাদের মূল উদ্দেশ্য তাদের পীর রায় বেরেলীর সৈয়দ আহমদকে যিনি নবাব আমীর খাঁনের অশ্বারোহী কর্মচারী ছিল এবং বেচারা শুধুমাত্র মূর্খ ও সাধাসিধে লোক ছিল। তাকে (সৈয়দ আহমদকে) নবী বানানোর অপচেষ্টা ছিল।
◾আ’লা হযরত মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত তদীয় ‘ ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া’ নামক কিতাবের ১৫ তম খণ্ডে ১৯৬ পৃষ্ঠায় সৈয়দ আহমদের পরিচয় দিতে গিয়ে আরো উল্লেখ করেন-
پیرجی کی مہر کاکندہ اسمہ احمد قرار پایا تہا- خطبوں میں پیرجی کے نام کے ساتہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم کہنا شروع ہوگیا تھا مگر قہر الٰہی سے مجبور ہیں غیبی کوڑےنے سب بنے کہیل بگاردئے پٹہانوں کے خنجور موذی کش نے پنے اور ما پچہاڑدئے جی کی جی ہی میں رہی بات نہ ہونے پائے وحی وعصمت کی کرامات نہ ہونے پائی
-ভাবার্থ: পীরজীর সীল মোহরে ‘ইসমে আহমদ’ তার নাম আহমদ অঙ্কিত ছিল। খুতবাসমূহের মধ্যে পীরজী সৈয়দ আহমদ বেরলভীর নামের পরে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলা শুরু হয়ে গিয়েছিল কিন্তু আল্লাহর গজবে অপারগ হয়েছিল।
◾ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া’ নামক কিতাবের ১৪ তম খণ্ডে ৩৯৬, ১৫ তম খণ্ডে ১৯৪ পৃষ্ঠা ,১৫ তম খণ্ডে ১৯৬ পৃষ্ঠা , আলোকপাতের পর আলা হজরত (رحمة الله) সৈয়দ আহমদ বেরলবী এর ব্যপারে ওনার সর্বশেষ ফতোয়া পেশ করেন ।
◾ফতোয়ায়ে রেজভীয়ার ২৯ নং খন্ডের ২৩৬ পৃষ্ঠায় ৯১ নং ফতোয়ায় রয়েছে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব। তন্মধ্যে একটি প্রশ্ন হলো-বকর নামে জনৈক ব্যক্তি নিজেকে চিশতিয়া তরিকার অনুসারী দাবি করে অথচ সৈয়দ আহমদ বেরলভী সম্পর্কে নিন্মোক্ত বিশ্বাস রাখে–
سید احمد رائے بریلوی کو نیک بزرگ بلکہ ولی خانتاہے۔ پس کیا فرماتے ہیں علمائے دین ایسے شخص کے حق میں کران کا اصل مذھب کیاہے?
অর্থাৎ সৈয়দ আহমদ রায় বেরলভীকে নেক বুযুর্গ এমনকি ওলী মনে করে। তাহলে উলামায়ে দ্বীন ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে কি বলবেন। তার আসল মাযহাব কী?
◾আ’লা হযরত (رحمة الله) এর উত্তরে লিখেছেন,
-اگر صراط مستقیم کے کلمات باطلہ کو باطل کفریہ کو کفریہ۔ اسماعیل دہلوی کو گمرہ بددین جانتا ہے وہابیت سے جداہے۔ تو سید احمد کو صرف بزرگ جاننے سے وہابی نہ ہوگا
অর্থাৎ সে যদি সিরাতে মুস্তাকিম কিতাবের বাতিল কথাকে বাতিল, কুফুরিকে কুফুরি, ইসমাইল দেহলভীকে গোমরাহ ও বদদ্বীন মনে করে ওহাবিয়াত থেকে পৃথক থাকে তাহলে সৈয়দ আহমদ বেরলভীকে বুযুর্গ (মুরুব্বী/নেতা) মনে করলে সে ওহাবী হবে না ।
মাওলা আলী (রা.)'র মদ্যপান সম্পৰ্কে ইমামে আহলে সুন্নাত আ'লা হযরত (রহঃ)'র ফাতওয়া
জিজ্ঞাসাঃ শেরে খোদা মাওলা আলী আলাইহিস সালামার মদপান ও নামাজে সুরা ভুল পড়া সংক্ৰান্ত এক প্ৰশ্নের জবাবে ফাতওয়ায়ে রেজভীয়ার দশম খন্ডের ৮৪ নং পৃষ্ঠার (১২ খন্ডের সেটের) ২৭ নং মাসআলার জবাবে লিখা রয়েছে যে,
سوال; ایک شخص نے بیان کیا کہ حضرت علی کرم اللہ وجہہ نے آنحضرت صلی اللہ علیہ وسلم کے وقت میں شراب پی اور حالت نشہ میں نماز میں سورہ غلط پڑھی ۔
الجواب; ہاں نشہ ہمیشہ ہر شریعت میں حرام رہا ہے, امیر المومنین سیدنا مولا علی کرم اللہ تعالی وجہہ الکریم کی نسبت امر مذکور کا بیان کرنے والا اگر اس سے شان اقدس مرتضوی پر طعن چاہتا ہے تو خارجی ناصبی مردود جہنمی ہے۔ ورنہ بلا ضرورت شرعیہ عوام کو پریشان کرنے والا سفیہ احمق بدعقل بے ادب ہے۔
প্ৰশ্নঃ এক ব্যক্তি বললো যে, মাওলা আলী আলাইহিস সালাম রাসুলে পাকের জামানায় শরাব পান করে নেশাগ্ৰস্হ অবস্হায় কিরাত ভুল পড়েছেন।এই মাসআলার হুকুম কী?
জবাবঃ নেশাদ্ৰব্য সবসময় সকল শরীয়তেই হারাম ছিল।আমীরুল মো'মিনীন সাইয়্যিদীনা মাওলা আলী আলাইহিস সালামার প্ৰতি উক্ত বিষয়ের বৰ্ণনাকারী যদি তার বৰ্ণনা দ্বারা পবিত্ৰ শানে মুরতাদ্বাভীতে অপবাদ দিতে চায,তাহলে তিনি খারেজী,নাসেবী ও মরদুদ জাহান্নামী হবেন।
আর যদি শরীয়তের প্ৰয়োজন বিহীন উহা বয়ান করেন তবে তিনি সাধারন মানূষকে পেরেশানকারী বেউকুপ,আহমক্ব,বদ আকল ও বে আদব বলে গণ্য হবেন।
[তথ্যসূত্রঃ ফাতওয়ায়ে রেজভীয়ার দশম খন্ডের ৮৪ নং পৃষ্ঠার (১২ খন্ডের সেটের) ২৭ নং মাসআলা]
প্রশ্নঃ দাইয়ুস কাকে বলে?
যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের স্ত্রী ও মাহরিমদেরকে বেপর্দা হওয়া থেকে বারণ করে না, সেই “দাইয়্যুস”।
▪প্রিয় নবী, হুযুর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! ইরশাদ করেন: “তিন ব্যক্তি কখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না; দাইয়্যুস এবং পুরুষ সূলভ আকৃতি ধারণকারী মহিলা আর মদ্য পানে অভ্যস্থ ব্যক্তি।” (মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ৪র্থ খন্ড, ৫৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৭৭২২)
পুরুষের ন্যায় চুল কর্তনকারী এবং পুরুষ সূলভ পোশাক পরিধানকারীরা বর্ণিত হাদীসে পাক থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। ছোট মেয়েদেরকে ছেলেদের মতো চুল কাটানো এবং তাদেরকে ছেলে সূলভ কাপড় এবং ক্যাপ ইত্যাদি পরিধান করানো ব্যক্তিরাও সতর্কতা অবলম্বন করুন, যেন ছোট মেয়েরা এই সময় থেকেই নিজেকে পুরুষ থেকে আলাদা মনে করে আর বুদ্ধি হওয়ার পর এবং বালিগা (প্রাপ্ত বয়স্কা) হওয়ার পর যেন নিজের অভ্যাস ও চালচলনকে শরীয়াতানুযায়ী পরিচালিত করতে কষ্টের সম্মুখীন হতে না হয়।
▪হাদীসে পাকে এটা বলা হয়েছে যে: “কখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না”
তা দ্বারা দীর্ঘদিন যাবত জান্নাতে প্রবেশ হওয়া থেকে বঞ্চিত থাকাই উদ্দেশ্য। কেননা, যে মুসলমান নিজের গুনাহের কারণে مَعَاذَ الله عَزَّوَجَل (আল্লাহর পানাহ!) জাহান্নামে যাবে, সে অবশেষে জান্নাতে অবশ্যই প্রবেশ করবে। কিন্তু এটা স্মরণ রাখবেন! এক মুহুর্তের কোটি ভাগের এক ভাগও জাহান্নামের আগুন সহ্য করা যাবে না। তাই আমাদেরকে প্রত্যেক গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সদা সর্বদা চেষ্টা ও জান্নাতুল ফিরদাউসে বিনা হিসাবে প্রবেশের দোয়া করা উচিত।
▪ দাইয্যুসের ব্যাপারে হযরত আল্লামা আলাউদ্দিন হাসকাফী (রহঃ) বলেন: “দাইয়্যুস সেই ব্যক্তি, যে নিজের স্ত্রী অথবা অন্য কোন মাহারিমের প্রতি যথাযথ শরয়ী বিধান প্রয়োগ করে না।” (দুররে মুখতার, ৬ষ্ট খন্ড, ১১৩ পৃষ্ঠা)
জানা গেলো, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের স্ত্রী, মা, বোন এবং যুবতি মেয়ে ইত্যাদিকে অলি-গলিতে, বাজার সমূহে, শপিং সেন্টারগুলোতে এবং পার্ক সমূহে বেপর্দা ভাবে ঘুরে বেড়াতে, অপরিচিত প্রতিবেশীদের, না-মাহরাম আত্মীয়দের, না-মাহরাম চাকর, পাহারাদার এবং ড্রাইভারের সাথে সংকোচহীন এবং বেপর্দা হওয়া থেকে বাধা প্রদান করে না, তারাই দাইয়্যুস। আর তারা জান্নাত থেকে বঞ্চিত এবং জাহান্নামের ভাগীদার।
▪ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দীদে দ্বীন ও মিল্লাত, ইমাম আহমদ রযা খাঁন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: “দাইয়্যুস ব্যক্তি খুবই মারাত্মক পর্যায়ের ফাসিক এবং প্রকাশ্য ফাসিকের (ফাসিকে মুলিন) পিছনে নামায আদায় করা মাকরূহে তাহরিমী। তাকে ইমাম বানানো বৈধ নয় এবং তার পিছনে নামায আদায় করা গুনাহ এবং আদায় করলে পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া সংকলিত, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫৮৩ পৃষ্ঠা)
কারো শিশু কন্যাকে কোলে নেয়া কেমন?
প্রশ্নঃ কারো শিশু কন্যাকে কোলে নেয়া কেমন? যদি তাকে মেয়ে বানিয়ে নেয়া হয় তবে কি যুবতি হওয়ার পর মুখে ডাকা পিতার সাথে পর্দা করার মাসয়ালা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
উত্তর:- যদি শিশু কন্যাকে নিতেই হয় তবে সহজতা এর মধ্যেই যে, মাহারামা অর্থাৎ আপন ভাতিজী অথবা ভাগ্নিকে নিন, যেন দুধের সম্পর্ক স্থাপন না হলেও বালিগা হওয়ার পর একত্রে থাকতে পারেন, কিন্তু বালিগা হওয়ার পর পরিবারের না-মাহরাম যেমন; আপন চাচা, মামা যারা তাকে লালিত পালিত করেছে, তাদের বালিগ সন্তানের সাথে (যখন সেখানে দুধভাই না হয়) পর্দা করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। যদি পালিত মেয়ে না-মাহরাম হয় তবে বালিগা হওয়া বরং বালিগার নিকটবর্তী হলেও তাকে পালনকারী না-মাহরাম পিতা নিজের সাথে রাখবেন না। যেমনিভাবে;
ইমামে আহলে সুন্নত আ’লা হযরত (রহঃ) “ফতোওয়ায়ে রযবীয়া” এর ১৩তম খন্ডের ৪১২ পৃষ্ঠায় বলেন: “মেয়ে বালিগা বা বালিগার নিকটবর্তী হলে, যতক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে না হয় তাকে অবশ্যই তার পিতার নিকট থাকা উচিত, এমনকি ৯ বছরের পর আপন মা থেকে মেয়েকে নিয়ে নিবে এবং সে তার পিতার নিকট থাকবে। কিন্তু অপরিচিত কারো নিকট থাকবে না (অর্থাৎ যাদের সাথে সবসময়ের জন্য বিয়ে হারাম নয়) তার নিকট থাকা কোন ভাবেই বৈধ হতে পারে না। শুধু মেয়ে বানিয়ে নেয়াতে মেয়ে হয়ে যায় না।”
[ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ্- ১৩ তম খন্ড, ৪১২ পৃষ্টা]
ফুকাহায়ে কিরাম (রহঃ) বলেন: “মুশথাত (এমন যুবতী যারা বালিগা হওয়ার নিকটবর্তী) এর বয়স হলো কমপক্ষে ৯ বছর।” (রদ্দুল মুহতার, ৪র্থ খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
প্রশ্নঃ- বংশীয় মাহরামের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি অন্তর্ভূক্ত?
উত্তর:- বংশীয় মাহরামের মধ্যে চার প্রকারের লোক অন্তর্ভূক্ত;
(১) আপন সন্তানাদী (অর্থাৎ ছেলে মেয়ে) এবং নিজের ছেলের ছেলে (অর্থাৎ নাতি-নাতনি) এমনিভাবে নিম্নপর্যায় পর্যন্ত,
(২) নিজের মা-বাবা এবং নিজের মা-বাবার পিতা-মাতা (অর্থাৎ দাদা-দাদী, নানা-নানি) উঁচ্চ পর্যায় পর্যন্ত,
(৩) নিজের মা-বাবার সন্তানাদি (অর্থাৎ ভাই-বোন চাই তারা আপন ভাই-বোন হোক বা সৎ ভাই-বোন অর্থাৎ বৈপিত্রিয় অথবা বৈমাত্রিয় ভাই-বোন) এবং এমনিভাবে মা-বাবার সন্তানের সন্তানাদী (অর্থাৎ ভাতিজা-ভাতিজী, ভাগ্নে-ভাগ্নী তার আপন ভাই বোনের হোক বা সৎ ভাই বোনের) এভাবে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত।
(৪) আপন দাদা-দাদী, নানানানীর সন্তানাদী (অর্থাৎ চাচা, ফুফী, মামা, খালা এই সম্পর্ক আপন হোক বা সৎ) তবে চাচা, ফুফী, মামা, খালার সন্তানেরা মাহরাম নয়।” [ফতোওয়ায়ে রজভিয়্যাহ্, ১১তম খন্ড, ৪৬৪ পৃষ্ঠা]
মুখের দূর্গন্ধ সম্পর্কে অবগত হওয়ার পদ্ধতি
যদি মুখে দূর্গন্ধ হয় তাহলে যতবার মিসওয়াক ও কুলি দ্বারা সেই দূর্গন্ধ দূর করা সম্ভব ততবার কুলি ইত্যাদি করে তা দূর করা আবশ্যক। এর জন্য কোন সীমা নির্ধারণ নেই। দূর্গন্ধযুক্ত গাঢ় হুক্কা পানকারীদের তা অবশ্যই স্মরণ রাখা উচিত। এর চেয়ে আরো বেশি স্মরণ রাখতে হবে তাদেরকে যারা সিগারেট পান করে যেহেতু তার দূর্গন্ধ তামাকের চেয়ে আরো অনেক বেশি ও দূর্গন্ধ বেশীক্ষণ স্থায়ী। আর এই সমস্ত কথা আরো বেশি মনে রাখতে হবে ঐ সমস্ত তামাক ভক্ষণকারীদেরকে, যারা ধোঁয়ার পরিবর্তে সরাসরি তামাক পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খায়। আর নিজের মুখ দূর্গন্ধে ভরে রাখে। এই সকল ব্যক্তিরা ততক্ষণ পর্যন্ত মিসওয়াক ও কুলি করবে যতক্ষণ না মুখ পরিপূর্ণ পরিস্কার হয়ে যায় এবং গন্ধের নাম নিশানাও না থাকে। আর (গন্ধ আছে কি না) তা পরীক্ষা এইভাবে করুন, হাত নিজ মুখের কাছে নিয়ে গিয়ে মুখ খুলে কন্ঠনালী থেকে জোরে জোরে তিনবার হাতে শ্বাস নিন এবং তা সাথে সাথে শুকে নিন। এছাড়া তার ভিতরের দূর্গন্ধ নিজের খুব কমই অনুভুত হয়। আর যদি মুখে দূর্গন্ধ হয় তবে মসজিদে যাওয়া হারাম, নামাযে শরীক হওয়া নিষিদ্ধ। আল্লাহ্ই হেদায়েতদানকারী। [ফতোওয়ায়ে রযভীয়্যা, ১ম খন্ড, ৬২৩ পৃষ্ঠা]
মিসওয়াক করার পদ্ধতি
১. দাঁতের প্রস্থে মিসওয়াক করুন।
২. যখনই মিসওয়াক করবেন কমপক্ষে তিনবার করবেন, প্রতিবারই মিসওয়াক ধুয়ে নিন।
৩. মিসওয়াক ডান হাতে এইভাবে ধরবেন যেন কনিষ্ঠা আঙ্গুল নিচে, মাঝখানের তিন আঙ্গুল উপরে এবং বৃদ্ধাআঙ্গুল মিসওয়াকের মাথায় থাকে। প্রথমে ডানদিকের উপরের দাঁত সমূহে, তারপর বাম দিকের উপরের দাঁত সমূহে, অতঃপর ডানদিকের নিচের অংশে, তারপর বামদিকের নিচের দাঁত সমূহে মিসওয়াক করুন।
৪. মুষ্টিবদ্ধ করে মিসওয়াক করলে অর্শ্বরোগ হওয়ার আশংকা থাকে।
৫. মিসওয়াক সুন্নাতে কাবলিয়া (অর্থাৎ মিসওয়াক অযুর পূর্বেকার সুন্নাত, অযুর মধ্যকার সুন্নাত নয়, সুতরাং অযু শুরু করার পূর্বে মিসওয়াক করুন অতঃপর তিনবার করে উভয় হাত ধুয়ে নিন এবং পদ্ধতি অনুযায়ী অযু সম্পন্ন করুন) তবে মিসওয়াক করা তখনই সুন্নাতে মুয়াক্কাদা যখন মুখে দুর্গন্ধ থাকে। (ফতোয়ায়ে রযভীয়া, ১ম খন্ড, ৮৩৭ পৃষ্ঠা)
কবরে পানি ছিটানো
আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: দাফনের পর কবরে পানি ছিটানো মাসনুন তথা সুন্নাত। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর মুবারকের উপর পানি ছিটানো হয়েছিল। হযরত বিলাল ইবনে রাবাহ মাথা মুবারক থেকে পানি ছিটানো শুরু করেছেন এবং কদম মুবারকে সমাপ্ত করেছেন। তিনি আরো বলেন: কিছু লোক আপন প্রিয়জনের কবরে উদ্দেশ্যহীন প্রথাগতভাবে পানি ছিঁটিয়ে থাকে, এটা নাজায়েয। (তবে রোপনকৃত চারা বা গাছে পানি দেয়ার উদ্দেশ্যে ছিটালে জায়েয। অন্যথায়) এটা অপচয়। [ফতোয়ায়ে রযবীয়া,৯/৩৭৩]
জাম'আতে নামাজ পড়ার উপকারিতা
আ'লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মওলানা শাহ আহমদ রযা খান (رحمة الله) বলেন: বাহরুর রাইক ও “কুনিয়া” কিতাবে রয়েছে, যদি আযান শুনে দুখুলে মসজিদ (অর্থাৎ মসজিদে প্রবেশের জন্য)! ইকামতের অপেক্ষা করে, তবে গুনাহগার হবে। (ফতওয়ায়ে রযবীয়াহ, ৭ম খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা। আল বাহরু রাইক, ১ম খন্ড, ৬০৪ পৃষ্ঠা)
আমার আক্বা আ’লা হযরত (رحمة الله) বলেন: “জামাআতের মধ্যে বরকত রয়েছে আর দোয়ায়ে مجمع المسلمين اقرب بقبول
(অর্থাৎ- মুসলমানদের সমাবেশে দোয়া করাটা কবুল হওয়ার খুবই কাছাকাছি)
ওলামায়ে কিরামগণ বলেন: যেখানে ৪০ জন নেককারমুসলমান একত্রিত হয়, তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই আল্লাহ্ তাআলার ওলী থাকেন।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, খন্ড-২৪, ১৮৪ পৃষ্ঠা, তাফসীরে শরহে জামি সগীর, হাদীস নং-৭১৪, ১ম খন্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা দারুল হাদীস, মিশর ব্যাখ্যায় বর্ণিত)
নামাযে কাপড় তথা চাদর, রুমাল ও নাড়াচাড়ার বিধান
নামাযে ‘সদল’ বা কাপড় তথা চাদর বা রুমাল ঝুলিয়ে দেয়া মাকরূহে তাহরীমি। যেমন মাথা বা কাঁধের উপর চাদর, রুমাল, শাল ইত্যাদি এমনভাবে রাখা যে, উভয় প্রান্ত সরাসরি ঝুলতে থাকে। তবে যদি এক প্রান্ত এক কাধেঁর উপর রাখা হয় এবং অপর প্রান্ত ঝুলতে থাকে তাহলে অসুবিধা নেই। আজকাল দেখা যায়, কোন কোন নামাযী ও ইমাম মাথা বা কাধেঁর উপর এমনভাবে রুমাল ঝুলিয়ে রাখে যা রুকু অবস্থায় গলা, মাথা ও কাধেঁর উভয় প্রান্তে সরাসরি লটকে ও ঝুলে থাকে। এভাবে নামায পড়া মাকরূহ। এটা পাগড়ী বা আমামা নয় বরং নামাযের প্রতি অবহেলা। তাছাড়া নামায অবস্থায় বার বার নড়াছড়া করা বা নামাযে আস্তিন, রুমাল বা চাদর বারবার উপরের দিকে এমনভাবে কুড়িয়ে নেয়া যাতে হাতের কুনুইগুলো প্রকাশ পায় তখনও নামায মাকরূহ হবে। এটা নামাযের প্রতি চরম অবহেলা ও অবজ্ঞা। নামাযের প্রতি অবশ্যই যত্নবান ও আন্তরিক হতে হবে নতুবা অবশ্যই গুনাহগার হবে।
[ফাতহুল ক্বদীর, বাহরুর রায়িক এবং ফতোয়ায়ে রযভীয়া: ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪১৬ ও ৪২৩]
মুখে দূর্গন্ধ বিশিষ্ট লোকের মসজিদে উপস্থিত হওয়া
প্রশ্ন: মুখের দূর্গন্ধ বিশিষ্ট লোকের মসজিদে উপস্থিত হওয়া ক্ষমাযোগ্য। তাহলে কাঁচা পিয়াজ বিশিষ্ট আচার, চাটনি ইত্যাদি বা এমন কাবাব সমুচা যাতে পিয়াজ রসুন ভালভাবে রান্না করে দেয়া হয় না, যার কারণে ওগুলোর গন্ধ ছড়ায়, বা ঐ (শস্যদানার) রুটি যেখানে কাঁচা রসুন দেয়া হয় এই ধরণের খাবার জামাআতের কিছুক্ষণ পূর্বে এই নিয়্যতে খেল, যেন মুখ দূর্গন্ধ হয়ে যায়, যার কারণে জামাআত ওয়াজীবই হবে না! তার হুকুম কি?
🖋উত্তর: এ রকম করা জায়েজ নেই। যেমন-যেখানে ইশার জামাআত প্রথম ওয়াক্তেই আদায় করা হয়, সেখানে মাগরিবের নামাযের পর এমন আচার বা সালাদ খাবেন না যাতে কাঁচা মূলা, বা কাঁচা পিয়াজ বা কাঁচা রসুন থাকে। কেননা, এতে দ্রুত মুখ পরিস্কার করে মসজিদে যাওয়াও কষ্টকর। তবে হ্যাঁ, দ্রুত মুখ পরিস্কার করা যদি সম্ভব হয় বা অন্য কোন কারণে মসজিদের উপস্থিতি রহিত হয় যেমন-মহিলা, বা নামাযের এখনো যথেষ্ট দেরী আছে, নামাযের সময় আসার পূর্বে গন্ধ চলে যাবে তাহলে খাওয়াতে কোন ক্ষতি নেই। আ‘লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খাঁন (রহঃ) বর্ণনা করেন: কাঁচা পিয়াজ, রসুন খাওয়া নিঃসন্দেহে জায়েয (হালাল)। কিন্তু তা খেয়ে গন্ধ না যাওয়া পর্যন্ত মসজিদে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু যে সমস্ত হুক্কা এমন গাঢ় যে, আল্লাহ্ তাআলার পানাহ! দূর্গন্ধ বেশীক্ষণ অবশিষ্ট থাকে, জামাআতের সময় কুলি করলেও পুরোপুরি দূর্গন্ধ যায় না। তাহলে জামাআতের পূর্বে তা পান করা শরীয়াত মতে জায়িয নেই। যেহেতু তা জামাআত ছেড়ে দেয়া বা সিজদা তরক করা বা দূর্গন্ধ নিয়ে মসজিদে প্রবেশের কারণ বলে গণ্য হচ্ছে। আর এই দুটি কাজই নাজায়িজ ও নিষিদ্ধ। আর (এটা শরয়ী নিময় যে) প্রত্যেক মুবাহ কাজ (তথা ঐ সমস্ত কাজ যা মূলত জায়েজ) যদি নিষিদ্ধ কাজের দিকে ধাবিত করে এমন কাজ করা নিষেধ ও অবৈধ।
[ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৫তম খন্ড, ৯৪ পৃষ্ঠা]
দূর্গন্ধযুক্ত মলম লাগিয়ে মসজিদে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাঃ
ইমাম আ‘লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খাঁন (রহঃ) বর্ণনা করেন: “যার শরীরের দূর্গন্ধের কারণে (অপরাপর) নামাযীদের কষ্ট হয় যেমন; মুখ থেকে দূর্গন্ধ বের হওয়া, বগল থেকে দূর্গন্ধ ছড়ানো, ঘা, খোশপাঁচড়ার কারণে গন্ধক মালিশ করা বা অন্য কোন দূর্গন্ধযুক্ত মলম বা লোশন লাগায় তাকেও মসজিদে আসতে নিষেধ করেছেন।”
[ফতওয়ায়ে রজভীয়া, ৮ম খন্ড, ৭২ পৃষ্ঠা]
ইস্তিন্জাখানা মসজিদ থেকে কতটুকু দূরে হওয়া উচিত?
আ‘লা হযরত (রহঃ) এর দরবারে প্রশ্ন করা হয়: নামাযীদের জন্য ইস্তিঞ্জাখানা মসজিদ থেকে কতটুকু দূরে তৈরী করা উচিৎ? এর উত্তরে আমার ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খাঁন (রহঃ) বলেন: মসজিদকে দূর্গন্ধ থেকে রক্ষা করা ওয়াজীব। এজন্য মসজিদে কেরোসিন তেল জ্বালানো হারাম। মসজিদে দিয়াশলাই (অর্থাৎ দূর্গন্ধযুক্ত বারুদ বিশিষ্ট ম্যাচের কাঠি) জ্বালানো হারাম। এমনকি হাদীস পাকে বর্ণিত রয়েছে:
"মসজিদে কাঁচা মাংস নিয়ে যাওয়া জায়েজ নেই।" (ইবনে মাজাহ্, ১ম খন্ড, ৪১৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ৭৪৮)
অথচ কাঁচা মাংসের দূর্গন্ধ খুবই হালকা। অতএব যেখান থেকে মসজিদে দূর্গন্ধ পৌঁছে সেখান পর্যন্ত টয়লেট, প্রস্রাবখানা তৈরী করাতে নিষেধ করা হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ১৬তম খন্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)
মুসলমানের ব্যাপারে বিনা কারণে কু-ধারণা পােষণ করা
ইহা হারাম ও জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত কাজ। কু-ধারণা পােষণ করার ব্যাপারে কুরআনে পাক ও হাদীস শরীফে তিরস্কার করা হয়েছে।
যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
يا يها الذ ين امنوا جتنبوا كثير امن الظن ان بعض الظن اثم
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তােমরা বহুবিধ অনুমান থেকে বিরত থাকো। নিশ্চয়ই কোনাে কোনাে অনুমানে গুনাহ হয়ে। যায়। (পারা- ২৬, সুরা-হুজুরাত, আয়াত-১২)
হাদীসে পাকে বর্ণিত আছে: “কু-ধারণা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা কুধারণা চরম মিথ্যা কথা” (সহীহ বুখারী শরীফ, খন্ড ৬ষ্ঠ, ১৬৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৫১৪৩)
আ'লা হযরত ফতােওয়ায়ে রযবীয়া শরীফে উদ্ধৃত করেন, হযরত সায়্যিদুনা ঈসা রুহুল্লাহ (عليه السلام) এক ব্যক্তিকে চুরি করতে দেখে বললেন: “তুমি কি চুরি করনি?" সে বলল: “আল্লাহর শপথ! আমি চুরি করিনি।” এটা শুনে তিনি (عليه السلام) বললেন: “সত্যিই তুমি চুরি করনি। আমার চোখ ধোঁকা খেয়েছে।” [আ'লা হযরতঃ ফতােওয়ায়ে রযবীয়া]
খারাপ ধারণা অপবিত্র মন থেকে আসে
মুসলমানের ব্যাপারে খারাপ ধারণা করা হারাম। আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) বর্ণনা করেন, “খারাপ ধারণা অপবিত্র মন থেকে সৃষ্টি হয়।” (ফতোওয়া রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ৪০০ পৃষ্ঠা)
কাফনের জন্য তিনটি অমূল্য উপহার
(১) যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরয ও সুন্নাত ইত্যাদি) নামাযের পর আহাদ নামা পাঠ করে, ফিরিস্তারা তা লিখে মােহর রাগিয়ে কিয়ামত দিবসের জন্য উঠিয়ে রাখেন। যখন আল্লাহ তাআলা ঐ বান্দাকে কবর থেকে উঠাবেন, ফিরিস্তারা তার সেই দলীল সাথে নিয়ে আসবে আর আহ্বান করা হবে: চুক্তিওয়ালা (পাঠক) কোথায়? অতঃপর তাকে ঐ চুক্তিনামা দেওয়া হবে। ইমাম হাকীম তিরমিযী (رحمة الله) তা বর্ণনা করে বলেছেন: ইমাম তাউছের (رحمة الله) অছিয়ত অনুযায়ী এই আহাদ নামা! তাঁর কাফনে লিখে দেওয়া হয়। (দুররুল মনছুর, ৫ম খন্ড, ৫৪২ পৃষ্ঠা)
ইমাম ফকিহ ইবনে আজিল (رحمة الله) এই আহাদনামার ব্যাপারে বলেন: যখন এই আহাদনামা লিখে কবরে দেওয়া হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তাকে মুনকার-নকীরের প্রশ্ন এবং কবরের আযাব থেকে মুক্তি দেয়। আহাদনামাটি হল:
اللهم فا طر السموت ولارض عا لم الغيب والشهادة الر حمن الر حيم انى اعهد اليك فى هذ ه الحيا ة الد نيا با نك انت الله الذ ى لا اله الا انت وحدك لا شر يك لك وان محمد اعبدك ورسولك فلا تكلنى الى نفسى فا نك ان تكلنى الى نفسى تقر بنى من الشر وتبا عد نى من الخير وانى لا اثق الا بر حمتك فا جعل رحمتك لى عهد اعند ك تؤد يه الى يوم القيمة انك لاتخلف الميعاد
(দুররুল মনছুর, ৫ম খন্ড, ৫৪২ পৃষ্ঠা) ।।
(২) এই দোয়া যে মৃত ব্যক্তির কাফনের কাপড়ে লিখে দেওয়া হয়, আল্লাহ তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত তার কবরের আযাব তুলে নিবেন। ঐ দোয়াটি নিম্নরূপ:
اللهم انى اسألك يا عالم السر يا عظيم الخطر يا خالق البسر يا موقع الظفر يامعروف الا ثر يا ذاالطول والمن يا كا شف الضر والمحن يا اله الاو لين والا خر ين فر ج عنى همو هى و اكشف عنى غمو هى وصل اللهم على سيد نا محمد و سلم
(ফতােওয়ায়ে রযবীয়া, ফতােওয়ায়ে কুবরা থেকে সংকলিত, ১ম খন্ড, ১১০ পৃষ্ঠা)
(৩) যে ব্যক্তি এই দোয়া কোন কাগজের উপর লিখে কাফনের নীচে বুকের উপর রেখে দেয় তার কবরের আযাব হবে না, সে মুনকার, নকীরও দেখবেনা, দোয়াটি নিম্নরূপ:
ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻛﺒﺮلا اله الا ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺣﺪﻩ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﻭﻟﻪ ﺍﻟﺤمد ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﺣﻮﻝ ﻭﻻ ﻗﻮﺓ ﺍﻻ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﻠﻲ ﺍﻟﻌﻈﻴﻢ
(ফতােওয়ায়ে রযবীয়া, ফতওয়ায়ে কুবরা থেকে সংকলিত, ৯ম খন্ড, ১০৮ পৃষ্ঠা)
মাদানী ফুল: উত্তম হল, এই (আহাদ নামা বা শাজরা) কাগজ মৃত ব্যক্তির মুখের সামনে কিবলার দিকে (কবরের ভিতরের দেওয়ালে) তাক বানিয়ে রাখুন। (বাহারে শরীয়াত, ৪র্থ অংশ, ১৬৪ পৃষ্ঠা)
উত্তম হল, এই (আহাদ নামা বা শাজরা) কাগজ মৃত ব্যক্তির মুখের সামনে কিবলার দিকে (কবরের ভিতরের দেওয়ালে) তাক বানিয়ে রাখুন। (বাহারে শরীয়াত, ৪র্থ অংশ, ১৬৪ পৃষ্ঠা)
পান আহারকারীরা মনােযােগ দিন
আমার আকা আ'লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, হযরত আল্লামা মাওলানা ইমাম আহমদ রযা খান رحمة اللّٰه تعالىٰ عليه বলেন: বেশি পরিমাণে পান খাওয়াতে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা বিশেষতঃ যখন দাঁতগুলােতে ফাঁক হয়, অভিজ্ঞতা অনুসারে জানা যায় যে, সুপারীর ক্ষুদ্র অংশ ও পানের প্রচুর ছােট ছােট টুকরা এভাবে মুখের চতুর্পাশ্বে ও কিনারায় অবস্থান করে থাকে (অর্থাৎ- মুখের কোণাগুলােতে ও দাঁতের ফাঁক গুলােতে ঢুকে যায়) তখন তিনবার নয় বরং দশবার কুলি করলেও এগুলাে পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কারের জন্য যথেষ্ট হয় না।
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “আমার উপর অধিক হারে দরূদে পাক পাঠ করাে, নিঃসন্দেহে এটা তােমাদের জন্য পবিত্রতা।” (আবু ইয়ালা)
খিলাল এগুলােকে বের করতে পারে না, মিসওয়াকও না। শুধুমাত্র কুলি ব্যতীত। কেননা পানি ফাঁকগুলােতে প্রবেশ করিয়ে ঝাকুনি (নাড়াচাড়া) দেয়াতে তা জমে থাকা ক্ষুদ্র অংশগুলােকে ক্রমান্বয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এটারও কোন সীমা নির্ধারণ হতে পারে না এবং এরূপ পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার করার ব্যাপারেও ভীষণ তাগিদ রয়েছে। বিভিন্ন হাদীসে ইরশাদ হয়েছে যে, যখন বান্দা নামাযের জন্য দন্ডায়মান হয়, (তখন) ফিরিশতা তার মুখের উপর নিজের মুখ রাখেন, সে যা পড়ে (তা) তার মুখ থেকে বের হয়ে ফিরিশতার মুখে যায়, ঐ সময় যদি খাদ্যের কোন বস্তু তার দাঁতগুলােতে থাকে, (তখন) ফিরিশতার তা দ্বারা এরূপ কষ্ট হয়, যা অন্য কোন বস্তু দ্বারা হয় না।”
খাতামুল মুরসালীন, শফীউল মুনিবীন, রাহমাতুল্লিল আলামীন صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: যখন তােমাদের কেউ রাতে নামাযের জন্য দাঁড়াও, তবে (তার) উচিত যে, মিসওয়াক করে নেয়া। কেননা যখন সে নিজের নামাযের মধ্যে কিরাত (আদায়) করে, তখন ফিরিশতা নিজের মুখ তার মুখের উপর রাখে এবং যে বস্তু তার মুখ থেকে বের হয়, তা ফিরিশতার মুখে প্রবেশ করে। (কানযুল উম্মাল, ৯ম খন্ড, ৩১৯পৃষ্ঠা)
"তাবরানী কাবীরের" মধ্যে হযরত সায়্যিদুনা আবু আইয়ুব আনসারী رضى الله تعالى عنه থেকে বর্ণনা করেন, উভয় ফিরিশতার জন্য এর চেয়ে অধিক কোন বিষয় ভারী নয় যে, তারা নিজেদের সাথীকে নামায পড়তে দেখে অথচ তার দাঁতগুলােতে খাদ্যাংশ আটকে থাকে। (মু'জামুল কাবীর, ৪র্থ খন্ড, ১৭০৭ পৃষ্ঠা। ফতােওয়ায়ে রযবীয়া, ১ম খন্ড, ৬২৪-৬২৫ পৃষ্ঠা, রযা ফাউন্ডেশন, মারকাযুল আউলিয়া, লাহাের)
খাবারের পূর্বে ফল খাওয়া উচিতঃ
আমাদের দেশে ফলমূল খাওয়ার পরে খাবারের প্রচলন রয়েছে। অথচ হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ গাযালী رحمة اللّٰه تعالىٰ عليه বলেন: “যদি ফল থাকে তবে তা প্রথমে পেশ করা উচিত। কারণ ডাক্তারী মতে তা আগে খাওয়া অত্যাধিক উপযােগী। এটা তাড়াতাড়ি হজম হয়। তাই এটাকে পাকস্থলীর নিচু অংশে থাকা উচিত আর কুরআনে পাক থেকেও ফল পূর্বে থাকার ব্যাপারে জানা যায়। যেমন- আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে:
وَفَاکِہَۃٍ مِّمَّا یَتَخَیَّرُوۡنَ ﴿ۙ۲۰﴾
وَلَحۡمِ طَیۡرٍ مِّمَّا یَشۡتَہُوۡنَ ﴿ؕ۲۱﴾
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং ফলমুল যা তারা পছন্দ করবে, এবং পক্ষীমাংস (থাকবে), যা তারা চাইবে। (পারা- ২৭, সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত- ২০,২১)
আমার আক্বা আ’লা হযরত মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান رحمة اللّٰه تعالىٰ عليه বর্ণনা উদ্ধৃত করেন, “খাওয়ার আগে তরমুজ খাওয়াতে (তা) পেটকে ভালভাবে ধুয়ে দেয় আর রােগ মূল থেকে নিঃশেষ করে দেয়।” (ফতােওয়ায়ে রযবীয়া নতুন সংস্করণ, ৫ম খন্ড, ৪৪৬ পৃষ্ঠা)
যাকাত না দেয়ার শাস্তি
আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله)কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত আযাবের দৃশ্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,যার সারাংশ: যে সোনা-চান্দির যাকাত দেয়া হবে না, কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তা দ্বারা তাদের কপাল, পাঁজর, পিঠে দাগ দেয়া হবে। তাদের মাথা, স্তনের উপর জাহান্নামের গরম পাথর রাখা হবে যে, বুক ফেটে কাঁধ দিয়ে বের হয়ে যাবে আর কাঁধের হাড়ের উপর রাখা হলে, হাড় ভেঙ্গে বুক দিয়ে বেরিয়ে আসবে। পিঠ ভেঙ্গে পাঁজর দিয়ে বের হবে। মাথার পিছনের অংশ ভেঙ্গে কপাল দিয়ে উত্থিত হবে। যে সম্পদের যাকাত দেয়া হবে না, কিয়ামতের দিন তা প্রাচীন দুষ্ট রক্তপায়ী বড় অজগর হয়ে তার পিছু নেবে। সে হাতে বাধা দেবে, সেটা ঐ হাত চিবিয়ে নেবে। অতঃপর গলায় পেচিয়ে শৃঙ্খল হয়ে যাবে।তার মুখ নিজের মুখে নিয়ে চিবাতে থাকবে, (আর বলবে যে,) আমি হলাম তোর সম্পদ, আমি হলাম তোর ধন ভান্ডার। এরপর তার সমস্ত শরীর চিবিয়ে ফেলবে।আল্লাহ্ তাআলার পানাহ! (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, নতুন সংস্করণ, ১০ম খন্ড, ১৫৩ পৃষ্ঠা)
আমার আক্বা আ’লা হযরত (رحمة الله) যাকাত অনাদায়কারীদেরকে কিয়ামতের শাস্তির ব্যাপারে ভয় দেখিয়ে বুঝিয়ে বলেন: হে প্রিয়! আল্লাহ্ তাআলা ও রাসুল (ﷺ) এর বাণীকে এমনিতেই হাসি-ঠাট্টা মনে করছ কিংবা (কিয়ামতের একদিন অর্থাৎ) পঞ্চাশ হাজার বছর সময়ের এ বেদনাদায়ক) মুসিবত সহ্য করা সহজ মনে করছ! দুনিয়ার আগুনে এক আধ পয়সা গরম করে শরীরের উপর রেখে দেখ, এরপর কোথায় এ হালকা গরম, আর কোথায় ঐ রাগের আগুন! কোথায় এ একটি পয়সা, আর কোথায় সারাজীবনের জমানো সম্পদ! কোথায় এ এক মিনিটের দেরী, আর কোথায় ঐ হাজার দিন বছরের মুসিবত!
কোথায় এ সামান্য দাগ, আর কোথায় ঐ হাড় ভেঙ্গে বের হওয়া শাস্তি। আল্লাহ্ তাআলা মুসলমানদের হিদায়াত দান করুন। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, নতুন সংস্করণ, ১০ম খন্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা)
হুসাইন বিন মনছুর কি انا الحق বলেছিলেন?
হযরত সায়্যিদুনা হুসাইন বিন মনছুর হাল্লাজ (رحمة الله) এর ব্যাপারে প্রসিদ্ধি একটি ঘটনা রয়েছে, তিনি নাকি আনাল হক্ব অর্থাৎ-আমি হক (খোদা)” বলেছিলেন। এ ভুল ধারণাকে খন্ডন করে আমার আক্বা, আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) বলেন: “হযরত সায়্যিদুনা হুসাইন বিন মানসূর হাল্লাজ (رحمة الله) যাঁকে সাধারণ মানুষ “মানসূর” বলে থাকে, মানসূর হল তাঁর পিতার নাম আর তাঁর পবিত্র নাম হল হুসাইন। তিনি তাঁর যুগের যুগশ্রেষ্ঠ ওলীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাঁর এক বোন বেলায়ত ও মারিফাতের মর্যাদায় তাঁর চেয়ে অতি উচ্চ স্তরে ছিলেন।তিনি শেষ রাতে জঙ্গলে চলে যেতেন এবং আল্লাহ্ তাআলার স্মরণে বিভোর হয়ে যেতেন। একদিন তাঁর ঘুম ভাঙ্গলে বোনকে না পেয়ে ঘরের সবখানে খোঁজ করলেন।খোঁজ করে না পেয়ে তাঁর মনে কুমন্ত্রণা আসল। পরবর্তী রাতে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘুমের ভান করে জেগে রইলেন।তাঁর বোন নিজের সময়মত উঠে জঙ্গলের দিকে চলতে লাগলেন, তিনিও আস্তে আস্তে পিছু নিলেন।দেখতে লাগলেন, আসমান থেকে স্বর্ণের শিকল দিয়ে ইয়াক্বুতের পাত্র অবতীর্ণ হল আর পবিত্র মুখ বরাবর আসল, তিনি পান করতে লাগলেন। তিনি (হুসাইন বিন মনছুর) ধৈর্য ধরতে পারলেন না, জান্নাতের এ নেয়ামত (আমি) পাব না, অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলে উঠলেন, “বোন! তোমাকে আল্লাহ্ তাআলার শপথ! সামান্য পরিমাণ আমার জন্য রেখো।তার (বোন) এক ঢোক রাখলেন। তিনি তা পান করলেন। তা পান করতেই প্রতিটি লতা-পাতা প্রতিটি জায়গা, প্রতিটি অনু-কণা থেকে তার কানে এ আওয়াজ আসতে লাগল যে, “এটার হকদার অধিক কে, যে আমার পথে জীবন দেবে? তিনি বলতে শুরু করলেন, انا الحق ”অর্থাৎ নিশ্চয় আমি সবচেয়ে বেশি হকদার।” লোকেরা শুনে মনে করল, انا الحق অর্থাৎ-(আমি হক), (লোকেরা) তাঁকে খোদা দাবীদার মনে করল, আর এটা (অর্থাৎ-খোদায়ীত্বের দাবী) হল কুফরী।
মুসলমান হয়ে যে কুফরী করে, সে মুরতাদ হয়ে যায়, আর মুরতাদের শাস্তি হল মৃত্যুদন্ড। (সহীহ বুখারী, ২য় খন্ড, ৩১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩০১৭-এ রয়েছে)
প্রিয় আক্বা, উভয় জাহানের দাতা, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে নিজ ধর্ম পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করো।” (ফতোওয়া রযবীয়া, ২৬ খন্ড, ৪০০ পৃষ্ঠা)
গুনাহের কারণে ভূমিকম্প আসে
সরকারে আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, ওয়ালিয়্যে নেয়ামত, আযীমুল বরকত, আযীমুল মরতাবাত, পরওয়ানায়ে শময়ে রিসালাত, মুজাদ্দিদে দ্বীনো মিল্লাত, হামিয়ে সুন্নাত, মাহিয়ে বিদআত, পীরে তরিকত, হযরত আল্লামা মাওলানা ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) বলেন: “(ভূমিকম্পের) আসল কারণ হল মানুষের গুনাহ। ”(ফতোওয়া রযবীয়া, ২৭তম খন্ড, ৯৩ পৃষ্ঠা)
হস্তমৈথুন করার শাস্তি
পুরুষ বা মহিলা যে কেউ হস্ত মৈথুন করা হারাম। এমন ব্যক্তির উপর হাদীসে পাকের মধ্যে লানত করা হয়েছে। ফকিহ আবুল লাইছ সমরকন্দি (رحمة الله عليه) বর্ণনাকৃত এক হাদীসে পাকের মধ্যে ৭ জন গুনাহগার ব্যক্তির শাস্তির কথা এসেছে তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে হস্ত মৈথুনকারী বর্ণিত আছে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা তার (হস্ত মৈথুনকারী) প্রতি রহমতের দৃষ্টি দিবেন না এবং তাকে পবিত্রও করবেন না বরং তাকে সরাসরি জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার হুকুম প্রদান করা হবে। (তামবিহুল গাফিলীন , ১৩৭ পৃষ্ঠা)
আ’লা হযরত , ইমাম আহমদ রযা (رحمة الله عليه) এর এক প্রশ্নোত্তরে বলেনঃ ‘‘(হস্ত মৈথুনকারী) গুনাহগার , বারবার করলে কবীরা গুনাহকারী ,ফাসিক। তিনি আরাে বলেন : কোন হস্ত মৈথুনকারী যদি তাওবা ব্যতিত মৃত্যু বরণ করে , তবে সে কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় উঠবে যে তার দু'হাত গর্ভবতী হবে। যার কারণে কিয়ামতের ময়দানে লােকদের বিশাল সমাবেশের সামনে তাকে! লজ্জিত হতে হবে। ’’ (ফতওয়ায়ে রযবিয়্যা, ২২ তম খন্ড , ২৪৪ পৃষ্ঠা)
তিন পয়সার শাস্তি
আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান رحمة الله عليه ঋণ পরিশোধে অলসতাকারী, মিথ্যা বাহানা উপস্থাপনকারী ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি رحمة الله عليه বলেন: যায়েদ পাপী, কবীরা গুনাহ সম্পাদনকারী, জালিম, মিথ্যুক এবং শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। তার জন্য এর চেয়ে বেশি আর কি (খারাপ) উপাধী হতে পারে। যদি সে এ অবস্থায় মারা যায় এবং মানুষের ঋণ তার উপর বাকী থাকে, তবে তার (যায়েদ) সমস্ত নেকী কর্জদাতাকে কর্জের বিনিময় স্বরূপ দিয়ে দেওয়া হবে। কিভাবে দেওয়া হবে, এটাও শুনে নিন। অর্থাৎ প্রায় তিন পয়সার কর্জের বিনিময়ে সাতশত জামাআত সহকারে আদায়কৃত নামায দিয়ে দিতে হবে। যখন এই ঋণ আত্মসাৎকারীর কোন নেকী বাকী থাকবে না, ঋণদাতার গুনাহকে ঋণ গ্রহীতার মাথার উপর বোঝাই করে দেওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৫তম খন্ড, ৬৯ পৃষ্ঠা)
রমযান মাসে সময় অতিবাহিত করার জন্য
এছাড়া এ ধরণের বহু মূর্খলোকও দেখা যায়, তারা যদিও রোযা রেখে নেয়, কিন্তু ওইসব বেচারার সময় কাটে না। সুতরাং তারাও রমযানের মর্যাদাকে একদিকে রেখে দিয়ে হারাম ও নাজায়িয কাজের আশ্রয় নিয়ে সময় ‘কাটায়’। আর এভাবে রমযান শরীফে দাবা, তাস, লুডু, গান-বাদ্য, ইত্যাদিতে কিছু লোক বেশি মাত্রায় জড়িয়ে পড়ে।মনে রাখবেন, যদিও দাবা ও তাস ইত্যাদির উপর কোন ধরণের বাজি কিংবা শর্ত না লাগানো হয় তবুও এ খেলা অবৈধ; বরং তাসের মধ্যে যেহেতু প্রাণীর ছবিও থাকে, সেহেতু আ’লা হযরত رحمة الله عليه জুয়া ছাড়া তাস খেলাকেও হারাম লিখেছেন। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৪তম খন্ড, ১৪১ পৃষ্ঠা)
তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা
মসজিদে ঘুমানো অবস্থায় গোসল ফরয হয়ে গেলে যেখানেই ছিলো সেখানেই তাড়াতাড়ি তায়াম্মুম করে নেবে। এটিই বাঁচার একমাত্র উপায়।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংগ্রহীত) , ৩য় খন্ড, ৪৭৯ পৃষ্ঠা)
অতঃপর তাড়াতাড়ি মসজিদের বাইরে চলে আসবে, বের হতে দেরী করা হারাম। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৫২ পৃষ্ঠা)
সময় যদি এতই সংকীর্ণ থাকে যে, অযু বা গোসল করতে গেলে নামায কাযা হয়ে যাবে। তাহলে তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নেবে। অতঃপর অযু বা গোসল করে নামায পুনরায় আদায় করা আবশ্যক।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংগ্রহীত) , ৩য় খন্ড, ৩০৭ পৃষ্ঠা)
হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم একবার আযান দিয়েছিলেন
রাসুলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সফরে একবার আযান দিয়েছিলেন এবং কালিমায়ে শাহাদাত এভাবে বলেন:
اَشْهَدُاَنِّىْ رَسُوْلُ اللهِ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি আল্লাহর রাসুল।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ৩৭৫ পৃষ্ঠা। তুহফাতুল মুহতাজ, ১ম খন্ড, ২০৯ পৃষ্ঠা)
দুঃশ্চিন্তা দূর করার উপায়
“হে আলী! আমি তোমাকে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় পাচ্ছি নিজের ঘরের কোন অধিবাসীকে কানে আযান দিতে বল। আযান দুঃশ্চিন্তা ও দুঃখ প্রতিরোধকারী। (জামেউল হাদীস লিস সুয়ূতী, ১৫তম খন্ড, ৩৩৯ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬০১৭)
এই বর্ণনাটি লিপিবদ্ধ করার পর আ’লা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন:
মাওলা আলী کَرَّمَ اللہُ تَعَالٰی وَجۡہَہُ الۡکَرِیۡم এবং মাওলা আলী পর্যন্ত এই হাদীসের যতজন বর্ণনাকারী আছে সকলে বলেন:
فَجَرَّبْتُهُ فَوَجَدْتُهُ كَذٰ لِكَ
আমরা এর ব্যাপারে পরীক্ষা চালাই আর এটিকে ঐ রকম পেয়েছি।
(মিরকাতুল মাফাতিহ, ২য় খন্ড, ৩৩১ পৃষ্ঠা, জামেউল হাদীস, ১৫তম খন্ড, ৩৩৯ পৃষ্ঠা, হাদীস-৬০১৭, ফতোওয়ায়ে রযবীয়া শরীফে ৫ম খন্ডের, ৬৬৮ পৃষ্ঠা)
আজান-ইকামাতের আদব ও গুরুত্ব
মসজিদের বাহিরে কিবলামূখী হয়ে কানে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে উচ্চ আওয়াজে আযান দিতে হবে, তবে শক্তির অধিক আওয়াজ উঁচু করা মাকরূহ। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৬৮-৩৬৯ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা)
আযানে কানে আঙ্গুল প্রবেশ করানো সুন্নাত এবং মুস্তাহাব। কিন্তু (আঙ্গুল) হেলানো এবং ঘুরানো অনর্থক কাজ। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ৩৭৩ পৃষ্ঠা)
আমার আক্বা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন:
যখন বাচ্চা ভূমিষ্ট হয়। তাড়াতাড়ি ডান কানে আযান বাম কানে তাকবীর বলবে যেন শয়তানের ক্ষতি এবং উম্মুস সিবয়ান থেকে বাঁচতে পারে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৪তম খন্ড, ৪৫২ পৃষ্ঠা)
মলফুজাতে আ’লা হযরত ৪১৭ পৃষ্ঠা থেকে ৪১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে: (মৃগী রোগ) অনেক খারাপ বিপদ। আর যদি বাচ্চাদের হয় তবে এটিকে উম্মুস সিবায়ন বলা হয়, বড়দের হলে মৃগী রোগ বলে।
মুক্তাদীদের উচিত, খুতবার আযানের উত্তর কখনো না দেয়া, এটাই সতর্কতা অবলম্বন। অবশ্য যদি এই আযানের উত্তর অথবা (দুই খুতবার মাঝখানে) দোয়া মনে মনে করে, মুখ দ্বারা মোটেই উচ্চারণ না করে তবে কোন অসুবিধা নেই। আর ইমাম অর্থাৎ খতীব সাহেব যদি মুখ দ্বারা আযানের উত্তর দেয় বা দোয়া করেন তবে তা নিঃসন্দেহে জায়িয। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৮ম খন্ড, ৩৩০-৩০১ পৃষ্ঠা)
ইকামাত মসজিদের ভিতরে ইমামের ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে দেয়া উত্তম। যদি ঠিক পিছনে সুযোগ পাওয়া না যায় তবে ইমামের ডান দিক থেকে দেয়া উচিত। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া হতে সংগৃহীত, ৫ম খন্ড, ৩৭২ পৃষ্ঠা)
আযান দেয়ার ১১টি মুস্তাহাব স্থান
(১) (সন্তান ভূমিষ্ট হলে) সন্তানের (২) দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির (৩) মৃগী রোগীর (৪) রাগান্বিত ও বদমেযাজী ব্যক্তির এবং (৫) বদমেযাজী জন্তুর কানে আযান দেওয়া (৬) তুমুল যুদ্ধ চলাকালীন সময় (৭) কোথাও আগুন লাগলে (৮) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর (৯) জ্বিন অত্যাচার করলে (বা যাকে জ্বিনে ধরেছে) (১০) জঙ্গলে রাস্তা ভুলে গেলে এবং কোন পথ প্রদর্শনকারী না থাকলে এ সময়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৬৬ পৃষ্ঠা। রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৬২ পৃষ্ঠা) এমনকি (১১) মহামারী রোগ আসাকালীন সময়ে আযান দেওয়া মুস্তাহাব।
(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৬৬ পৃষ্ঠা। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৩৭০ পৃষ্ঠা)
মসজিদের ভিতরে আযান দেয়া সুন্নাত পরিপন্থী
আজকাল অধিকাংশ মসজিদের ভিতরেই আযান দেয়ার প্রথা চালু রয়েছে যা সুন্নাত পরিপন্থী। “আলমগিরী” ও অন্যান্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছে: আযান মসজিদের বাহিরেই দিতে হবে মসজিদের ভিতর আযান দিবেন না। (ফতোওয়ায়ে আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা)
আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “একটি বারের জন্যও এ কথার প্রমাণ নেই যে, হুযুর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم মসজিদের ভিতর আযান প্রদান করিয়েছেন।” সায়্যিদী আলা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ আরো বলেন: মসজিদের ভিতর আযান দেয়া- মসজিদ ও আল্লাহ্ তাআলার দরবারের সাথে বেয়াদবী করা। মসজিদের প্রাঙ্গনের নিচে যেখানে জুতা রাখা হয় ঐ স্থানটি মসজিদের বাহিরের হয়ে থাকে, সেখানে আযান দেয়া বিনা দ্বিধায় সুন্নাত। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৪১১, ৪১২, ৪০৮ পৃষ্ঠা)
১০০ শহীদের সাওয়াব অর্জন করুন
সায়্যিদী আলা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: সুন্নাতকে জীবিত করা তো ওলামায়ে কিরামদের বিশেষ দায়িত্ব এবং যে মুসলমানের পক্ষে করা সম্ভব তার জন্য এটা সাধারণ হুকুম। প্রত্যেক শহরের মুসলমানদের উচিত হচ্ছে যে, আপন শহরে বা কমপক্ষে নিজ নিজ মসজিদ সমূহে (আযান ও জুমার দ্বিতীয় আযান মসজিদের বাহিরে দেয়ার) এ সুন্নাতকে জীবিত করা এবং শত শত শহীদের সাওয়াব অর্জন করা। রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর বাণী হচ্ছে: “যে ফিৎনা-ফ্যাসাদের যুগে আমার সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরবে সে একশত শহীদের সাওয়াব লাভ করবে।” (আয যুহুদুল কবীর লিল বায়হাকী, ১১৮ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২০৭। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ৪০৩ পৃষ্ঠা)
আযানের পূর্বে এই দরূদে পাকগুলো পড়ুন
আযান ও ইকামাতের পূর্বে بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ পড়ে দরূদ ও সালামের এ চারটি বচন পড়ে নিন।
اَلصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلَیْكَ یَارَسُوْلَ الله وَعَلٰی اٰلِكَ وَاَصْحٰبِكَ یَا حَبِیْبَ الله
اَلصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلَیْكَ یَا نَبِیَّ الله وَعَلٰی اٰلِكَ وَاَصْحٰبِكَ یَانُوْرَ الله
ইমামে আহলে সুন্নাত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “দরূদ শরীফ ইকামাতের পূর্বে পড়াতে কোন অসুবিধা নেই কিন্তু (তারও) ইকামাতের মধ্যে বিরতি দেয়া চাই অথবা দরূদ শরীফের শব্দ যেন ইকামাতের শব্দ থেকে কিছুটা নিম্নস্বরে বলা হয়, যাতে করে তা যে স্বতন্ত্র তা বুঝা যায় এবং সর্বসাধারণ যেন দরূদ শরীফকে ইকামাতের অংশ মনে না করে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা)
আজান বিষয়ক কিছু প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: আযানের মধ্যে حَیَّ عَلَی الصَّلٰوۃ (অর্থ-নামাযের দিকে এসো) এবং حَیَّ عَلَی الفَلَاح (অর্থ-কল্যাণের দিকে এসো) এ বাক্যগুলো শুনে যদি কৌতুক করে কেউ বলে: এসো সিনেমা ঘরের দিকে, নতুবা টিকিট শেষ হয়ে যাবে।
উত্তর: কুফরী। কেননা এটি আযানের উপহাস করা হয়েছে। যে (ব্যক্তি) আযানের সাথে উপহাস করেছে সে কাফির। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা)
আ'লা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর খিদমতে প্রশ্ন করা হয়: জনাব! এই মাসআলা সম্পর্কে আপনার কি মতামত? যে, মসজিদের মুয়াজ্জিনের আযান শুনার সাথে সাথে যায়েদ নামক এক ব্যক্তি এরকম উপহাস করলো। অর্থাৎ-حَیَّ عَلَی الصَّلٰوۃ শুনে কৌতুক করে (ভাইয়্যা মারো ডান্ডা) এই ধরণের কোন বাক্য বললো। এ ধরণের বাক্য দ্বারা যায়েদের মুরতাদ হওয়া এবং বিবাহ ভেঙ্গে যাওয়া সাব্যস্ত হবে কিনা? আর যায়েদের বিবাহ বিনষ্ট হয়েছে কিনা?
জবাব: আযানের সাথে উপহাস করা অবশ্যই কুফরী। যদি আযানের সাথেই সে উপহাস করলো। তবে নিঃসন্দেহে সে কাফির হয়ে গিয়েছে। তার স্ত্রী তার বিবাহ বন্ধন হতে বের হয়ে গিয়েছে। যদি সে পুনরায় মুসলমান হয় এবং তার স্ত্রীর সাথে পূনঃবিবাহ করে তখন তার সাথে এক বিছানায় শয়ন করা এবং সঙ্গম করা হালাল হবে। অন্যথায় তা যেনা হবে। আর যদি পুনঃইসলাম ও বিবাহ ছাড়া মহিলা তার সাথে এক বিছানায় শয়ন করে এবং সঙ্গম করতে রাজী হয়ে যায় তখন সে (মহিলা) ব্যভিচারিনী হিসেবে গণ্য হবে। আর যদি যায়েদের আযানের সাথে উপহাস করা উদ্দেশ্য না হয়। বরং স্বয়ং মুয়াজ্জিনের সাথে উপহাস করা উদ্দেশ্য হয়। যেহেতু মুয়াজ্জিন ভুলভাবে আযানের শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এজন্য সে মুয়াজ্জিনের সাথে কৌতুক করেছে, তবে এ অবস্থায় যায়েদ কাফির হবে না আর তার বিবাহও নষ্ট হবে না। তবে তাকে পুনঃইসলাম কবুল করা ও বিবাহ নবায়নের হুকুম দেয়া হবে। وَ اللهُ تَعَالٰی اَعْلَمُ (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২১তম খন্ড, ২১৫ পৃষ্ঠা)
নামায আদায় করার সময় যদি মাকরূহ ওয়াক্ত এসে যায় তখন?
সূর্যাস্তের কমপক্ষে ২০ মিনিট পূর্বে আসরের নামাযের সালাম ফিরিয়ে নেয়া উচিত। যেমন- আমার আক্বা, আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “আসরের নামায যতই দেরীতে পড়া হয় ততই উত্তম তবে মাকরূহ সময় আসার পূর্বেই যেন আদায় করে নেয়া হয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া শরীফ, নতুন ৫ম খন্ড, ১৫৬ পৃষ্ঠা)
অতঃপর সে যদি সতর্কতা অবলম্বন করে এবং নামায দীর্ঘায়িত করে এবং নামায দীর্ঘায়িত করার ফলে নামাযের মধ্যভাগে মাকরূহ ওয়াক্ত এসে যায় তারপরেও কোন অসুবিধা নেই, নামায হয়ে যাবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া শরীফ, (নতুন) ৫ম খন্ড, ১৩৯ পৃষ্ঠা)
সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!!
যার বিশুদ্ধভাবে অক্ষরসমূহ উচ্চারিত হয় না, তার জন্য কিছুদিন অনুশীলন (বিশুদ্ধভাবে পাঠের প্রশিক্ষণ নেয়া) যথেষ্ট নয় বরং সেগুলো শিক্ষা করার জন্য যতদিন প্রয়োজন রাতদিন পূর্ণ প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক। যদি বিশুদ্ধভাবে পড়তে পারে এমন লোকের পিছনে নামায আদায় করা সম্ভব হয় তাহলে তাঁর পিছনে নামায আদায় করা ফরয। অথবা সে যেন নামাযে ঐ আয়াতগুলো পড়ে, যেগুলোর অক্ষরসমূহ সে বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে পারে। আর এ দুটো নিয়মে নামায আদায় করা সম্ভব না হলে প্রচেষ্টাকালীন সময়ে নিজের নামায হয়ে যাবে। আজকাল বহুলোক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে যে, না তারা বিশুদ্ধভাবে কুরআন পড়তে পারে, না শিখার জন্য চেষ্টা করছে। মনে রাখবেন, এভাবে তাদের নামায সমূহ বিনষ্ট হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় অংশ, ১১৬ পৃষ্ঠা)
যে ব্যক্তি রাতদিন চেষ্টা করছে কিন্তু শিখতে পারছে না, যেমন-কিছু লোক এমনই রয়েছে, যাদের মুখ থেকে বিশুদ্ধভাবে অক্ষরসমূহ উচ্চারিত হয় না;তাদের জন্য রাতদিন শিখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা আবশ্যক। প্রচেষ্টকালীন সময়ে তিনি মাযূর (অপারগ) হিসাবে গণ্য হবেন, তার নামায হয়ে যাবে কিন্তু সে কখনো বিশুদ্ধ তিলাওয়াতকারীদের ইমাম হতে পারবে না। হ্যাঁ, যেসব অক্ষরের উচ্চারণ তার বিশুদ্ধ নয়, অনুরূপভাবে সেসব অক্ষরের উচ্চারণ অন্যান্যদেরও বিশুদ্ধ নয়, প্রশিক্ষণকালীন সময়ে সে ঐ সমস্ত লোকের ইমামতি করতে পারবে। আর যদি নিজে চেষ্টাই না করে তাহলে তার নিজের নামাযই তো হচ্ছে না, সুতরাং তার পিছনে অন্যান্যদের নামায কিভাবে শুদ্ধ হবে? (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৫৪ পৃষ্ঠা)
সুন্নাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা
যে ইসলামী ভাই ফরযের আগের সুন্নাত কিংবা পরের সুন্নাত পড়ে আসা-যাওয়া ও কথাবার্তার মধ্যে লিপ্ত হয়ে যায়, সে যেন আ’লা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর এই ফতোয়া থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। যেমন- একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন:
“আগের সুন্নাত সমূহের জন্য উত্তম হচ্ছে, ওয়াক্তের শুরুর সময়ে আদায় করা, তবে শর্ত হচ্ছে, ফরয ও সুন্নাতের মধ্যভাগে কোন কথাবার্তা না বলা কিংবা নামাযের পরিপন্থি কোন কাজ না করা। আর পরের সুন্নাত আদায়ের ক্ষেত্রে মুস্তাহাব হচ্ছে, ফরযের সাথে মিলিয়ে পড়া। কিন্তু ঘরে ফিরে এসে পড়াতে যে সময়টুকু ব্যয় হয় তাতে অসুবিধা নেই, তবে অহেতুক কাজে সময় নষ্ট না করা উচিত। কেননা এরূপ করলে তা আগের পরের সুন্নাত উভয়টার সাওয়াবকে নষ্ট করে দেয়। এমনকি সেটাকে সুন্নাত পদ্ধতি থেকে বের করে দেয়।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, নতুন সংস্করণ খন্ড ৫ম, ১৩৯ পৃষ্ঠা)
ইকামাতের পর ইমাম সাহেব ঘোষণা করবেন
আপনারা নিজেদের পায়ের গোড়ালী, গর্দান এবং কাঁধকে আপনার পার্শ্ববর্তী ভাইয়ের পায়ের গোড়ালী, গর্দান এবং কাঁধের সাথে সোজা এক বরাবর করে কাতার সোজা করে নিন। দুই জনের মাঝখানে জায়গা খালি রাখা গুনাহ্। একজনের কাঁধ অপর জনের কাঁধকে স্পর্শ করে রাখাটা ওয়াজীব। কাতার সোজা রাখা ওয়াজীব এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সামনের কাতার কোণায় কোণায় পূর্ণ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত জেনে বুঝে পিছনের কাতারে নামায শুরু করে দেয়া মানে ওয়াজীব বর্জন করা, যা হারাম এবং গুনাহ্। ১৫ বছরের ছোট না-বালিগ (অপ্রাপ্তবয়স্ক) বাচ্চাদেরকে কাতারে দাঁড় করাবেন না, তাদেরকে কাতারের এক কোণায়ও পাঠাবেন না। ছোট বাচ্চাদের কাতার সবার শেষে তৈরী করবেন। (বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন: ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ২১৯ থেকে ২২৫ পৃষ্ঠা)
ইমানহারা হয়ে মৃত্যুবরণ করার আশঙ্কা
ইফতার মাহফিল, দাওয়াত (ইছালে সাওয়াবের মাহফিল বা ওরস সমূহ) ও না’ত ইত্যাদি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কারণে মসজিদের ফরয নামায সমূহের প্রথম জামাআত বর্জন করার অনুমতি শরীয়াতে নেই। যেসব লোক ঘর বা হল রুমে বা বাংলোর কম্পাউন্ড ইত্যাদিতে তারাবীহ এর জামাআতের ব্যবস্থা করে অথচ পাশেই মসজিদ রয়েছে তবে তাদের উপর ওয়াজীব হচ্ছে যে, সর্বপ্রথম ফরয নামায জামাআতে ঊলা অর্থাৎ প্রথম জামাআতের সাথে আদায় করা। যে সব লোক শরীয়াত অনুমোদিত কোন কারণ ব্যতীত শারীরিকভাবে সামর্থ থাকা সত্ত্বেও ফরয নামায মসজিদের প্রথম জামাআতের সাথে আদায় করে না তাদের ভয় করা উচিত। কেননা,
মদীনার তাজেদার, রাসূলদের সরদার, হুযুরে আনওয়ার صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যার এটা পছন্দ হয় যে, কাল কিয়ামাতের ময়দানে আল্লাহ্ তাআলার সাথে মুসলমান অবস্থায় সাক্ষাত করবে, তবে সে যেন এ পাঁচ ওয়াক্ত নামায (জামাআতের সাথে) সেখানে নিয়মিত আদায় করে, যেখানে আযান দেয়া হয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা তোমাদের নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর জন্য সুনানে হুদা বৈধ করেছেন আর এই (জামাআত সহকারে) নামায আদায় করাও সুনানে হুদা। আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নাত ছেড়ে দাও তবে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।” (মুসলিম শরীফ, ১ম খন্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)
এ হাদীসে পাক থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, জামাআতে ঊলা নিয়মিত আদায়কারীর মৃত্যু ঈমানের সাথে হবে আর যে ব্যক্তি শরয়ী অপরাগতা ব্যতীত মসজিদের প্রথম জামাআত বর্জন করে তার জন্য আল্লাহ্র পানাহ্! কুফরির উপর মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যারা শুধুমাত্র অলসতার কারণে পূর্ণ জামাআতে অংশগ্রহণ করে না তারা মনোযোগ দিন! আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ্ আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “বাহরুর রা-ইক” এর মধ্যে রয়েছে: কনিয়াহ এর মধ্যে রয়েছে, যদি আযান শুনার পর মসজিদে প্রবেশ করার জন্য ইকামাতের অপেক্ষা করতে থাকে তবে গুনাহগার হবে।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা। আল বাহরুর রাইক, খন্ড ১ম, পৃষ্ঠা ৬০৪)
ফতোওয়ায়ে রযবীয়া শরীফের একই পৃষ্ঠায় এটাও রয়েছে: “যে ব্যক্তি আযান শুনে ঘরের মধ্যে ইকামাতের জন্য অপেক্ষা করে তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য হবে না।” (আল বাহরুর রাইক, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪৫১)
তিলাওয়াতে সিজদার মাসআলা
(১) সিজদার আয়াত পড়া বা শুনার দ্বারা সিজদা ওয়াজীব হয়ে যায়। পড়ার ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, এতটুকু আওয়াজে পড়া যেন কোন অক্ষমতা বা প্রতিবন্ধকতা না থাকলে নিজে শুনতে পায়। শ্রবণকারীর জন্য এটি আবশ্যক নয় যে, ইচ্ছাকৃত ভাবে শ্রবণ করুক বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে, উভয় অবস্থায় তার উপর সিজদা ওয়াজীব হয়ে যায়। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা)
(২) যে কোন ভাষায় সিজদার আয়াতের অনুবাদ পাঠকারী এবং শ্রবণকারী উভয়ের উপর সিজদা ওয়াজীব হয়ে যায়। শ্রবণকারী এটা বুঝতে পারুক বা না পারুক যে, আয়াতে সিজদার অনুবাদ পাঠ করা হয়েছে। অবশ্য এটা জরুরী যে, তার জানা না থাকলে জানিয়ে দেয়া যে, এটা সিজদার আয়াতের তরজুমা ছিলো। আর (সিজদার) আয়াত পড়া হলে এটা জরুরী নয় যে, শ্রবণকারীকে আয়াতে সিজদা সম্পর্কে অবগত করিয়ে দেয়া। (আলমগিরী, খন্ড ১ম, ১৩৩ পৃষ্ঠা)
(৩) সিজদা ওয়াজীব হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ আয়াতটি পড়া আবশ্যক কিন্তু পরবর্তী ওলামাগণের رَحِمَہُمُ اللہُ تَعَالٰی মতে, যে শব্দটিতে সিজদার মূল অংশটি পাওয়া যায় তার সাথে পূর্বের বা পরের কোন শব্দ মিলিয়ে পাঠ করলে তিলাওয়াতে সিজদা ওয়াজীব হয়ে যাবে।তাই সাবধানতা হলো, উভয় অবস্থায় তিলাওয়াতে সিজদা করা। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৮ম খন্ড, ২২৩, ২৩৩ পৃষ্ঠা)
নামাযীর সামনে দিনে অতিক্রম করা মারাত্মক গুনাহ
হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মালিক رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন;হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বলেন: “নামাযীর সামনে চলাচলকারী যদি জানতো যে এর মধ্যে কি পরিমাণ গুনাহ্ রয়েছে তবে সে জমিনে ধসে যাওয়াকে অতিক্রম করা থেকে উত্তম মনে করতো। (মুআত্তায়ে ইমাম মালিক, ১ম খন্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৭১)
(নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী অবশ্যই গুনাহগার হবে এতে নামাযীর কোন গুনাহ্ হবে না বা নিজের নামাযের কোন ক্ষতি হবে না।) (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ২৫৪ পৃষ্ঠা)
শরীয়াতের দৃষ্টিতে সফরের দূরত্ব
যে ব্যক্তি সাড়ে ৫৭ মাইল (প্রায় ৯২ কিলোমিটার) দূরত্বে যাওয়ার ইচ্ছায় আপন স্থায়ী বাসস্থান যেমন শহর বা গ্রাম থেকে রাওয়ানা হয়ে পড়ে, তাকে শরীয়াতের দৃষ্টিতে মুসাফির বলা হয়। (সার সংক্ষেপ-ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৮ম খন্ড, ২৭০ পৃষ্ঠা)