🌱নফসের জন্য কোন ইচ্ছা ত্যাগ এক বৎসরের ইবাদত থেকে উত্তম
হযরত সায়্যিদুনা আবূ সুলাইমান দারানী (রহ.) বলেন: “নফসের ইচ্ছা গুলো থেকে কোন একটি ইচ্ছাকে পরিত্যাগ করা নফসের জন্য এক বৎসরের রোযা ও এক বৎসরের রাতের ইবাদত থেকেও অধিক উত্তম।”
(জাযবুল কুলূব, ২য় খন্ড, ৩৩৬ পৃষ্ঠা)
🌱 অসহনীয় চুলকানী
হযরত সায়্যিদুনা মুজাহিদ (رضى الله تعا عنه) বলেন: “আল্লাহ্ তাআলা কোন কোন দোযখীকে এমন চুলকানীতে আক্রান্ত করবেন, চুলকাতে চুলকাতে তাদের মাংস খসে পড়বে, এমনকি তাদের হাড়গুলো প্রকাশ পেয়ে যাবে। তারপর আহ্বান শোনা যাবে, ‘বলো, এ কষ্ট কেমন লাগছে? তারা বলবে, ‘অত্যন্ত মারাত্নক ও অসহনীয়।’ তারপর তাদেরকে বলা হবে: “দুনিয়ায় তোমরা মুসলমানদেরকে যে (জুলুম) নির্যাতন করতে, এটা তারই শাস্তি।”
(ইত্তেহাফুছ সাদাআতুল মুত্তাকীন, ৭ম খন্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা)
🌱 আল্লাহর পক্ষ থেকে অবকাশ, নিয়ামতের শোকর আদায়
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যখন তোমরা কোন বান্দাকে দেখো যে, আল্লাহ্ তাকে (নেয়ামতসমূহ) দান করেছেন আর সে গুনাহের উপর প্রতিষ্ঠিত, তবে (বুঝবে) এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবকাশ বা সুযোগ প্রদান। অতঃপর এ আয়াতে কারীমা তিলাওয়াত ফরমালেন:
فَلَمَّانَسُوۡا مَا ذُكِّرُوۡا بِهٖ فَتَحۡنَا عَلَيۡهِمۡ اَبۡوَابَ كُلِّ شَىۡءٍ ؕ حَتّٰٓى اِذَا فَرِحُوۡا بِمَاۤ اُوۡتُوۡۤا اَخَذۡنٰهُمۡ بَغۡتَةً فَاِذَا هُمۡ مُّبۡلِسُوۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ:
অতঃপর যখন তারা বিস্মৃত হল সেসব উপদেশ যেগুলো তাদেরকে দেয়া হয়েছিল, তখন আমি তাদের জন্য প্রতিটি বস্তুর দ্বারগুলো উন্মুক্ত করে দিয়েছি, এমনকি যখন তারা আনন্দিত হল সেটার উপর, যা তারা পেয়েছিলো তখন আমি হঠাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম, এখন তারা নিরাশ হয়ে রয়ে গেলো। (পারা-৭ম, সূরা- আল আন্‘আম, আয়াত নং- ৪৪) (মুসনাদে ইমাম আহমদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১২২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৭৩১৩)
🌱 গুনাহ্কে ভাল মনে করা কুফর
প্রখ্যাত মুফাসসির মুফ্তি আহমদ ইয়ার খান (রহ.) এ আয়াতে কারীমার ভিত্তিতে বলেন: “জানা গেল, সকল আযাবের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন আযাব হল অন্তরের কঠোরতা। কারণ এজন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শিক্ষার প্রভাব হৃদয়ে বিস্তার করতে পারে না। এ আয়াতে করীমা হতে এটাও জানা গেল, গুনাহ্ ও অবাধ্যতা সত্ত্বেও দুনিয়াবী প্রকাশ্য আরাম-আয়েশ অর্জিত হওয়ার অন্তরালে রয়েছে আল্লাহর গযব ও আযাব। কেননা এর কারণে মানুষ আরো বেশি উদাসীন হয়ে গুনাহের প্রতি সাহসী হয়ে উঠে। বরং অনেক সময় এমনও মনে করে যে, গুনাহ্ ভাল বস্তু, অন্যথায় আমার এসব নেয়ামত অর্জিত হতো না, এরকম মনে করাটা কুফর। (অর্থাৎ- গুনাহকে গুনাহ্ হিসাবে মেনে নেয়া ফরয, এটাকে জেনে বুঝে ভাল বলা অথবা উত্তম মনে করা কুফরি)
এটাও জানা গেল, নেক্কারদের উপর প্রকাশ্য মুসিবত আসাটা আল্লাহ্ তাআলার রহমতের মাধ্যম রয়েছে। কেননা এর মাধ্যমে সালিহ (অর্থাৎ- নেককার) এর পদমর্যাদা বৃদ্ধি পায়।(নূরুল ইরফান, ২১০ পৃষ্ঠ)
🌱 চল্লিশ দিনের নামায কবুল হয় না
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে হারামের একটি মাত্র লোকমা খেল, তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করা হবে না এবং তার দোয়া চল্লিশ দিন পর্যন্ত কবুল হবেনা।
(ফিরদাওসুল্ আখবার, ৪র্থ খন্ড, ২৪৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৬২৬৩)
হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী (রহ.) বলেন: “যাকে আল্লাহ্ দুনিয়াতে রুজিতে প্রাচুর্য্য, বাধ্য সন্তানের ন্যায় নেয়ামত, মাল-সম্পদ, উত্তম স্বাস্থ্য, ইজ্জত-সম্মানের পদ, মন্ত্রী বা রাষ্ট্র প্রধানের পদ অথবা শাসন ক্ষমতা ইত্যাদির মাধ্যমে সম্পদশালী করেন, কিন্তু তার মাঝে যদি এই ভয় না হয়, আরাম-আয়েশ আল্লাহর গোপন রহস্য। তবে বুঝতে হবে এ ধরণের ব্যক্তি আল্লাহর গোপন রহস্য থেকে উদাসীন।”
(তামবীহুল মুগতাররীন, ৫৪ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম যাহবী (রহ.) কর্তৃক রচিত “কিতাবুল কাবাইর”-এর মধ্যে আল্লাহর গোপন রহস্যের ব্যাপারে ভয় না করাকে কবীরা গুনাহ্ সমূহের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।
🌱যে আমানতদার ও ওয়াদা পালনকারী নয় তার দ্বীন-ঈমান নেই
হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর (ﷺ) আমাদেরকে এটা ব্যতীত খুব কমই (অন্য) ওয়াজ করতেন, যাতে তিনি বলতেন, "যে আমানতদার নয়, তার ঈমান নেই, যে ব্যক্তি ওয়াদা পালনকারী নয়, তার দ্বীন নেই।"
(ইমাম বায়হাকীঃ শুআবুল ইমান)