❏ মৃতদের জন্য পানাহার করানো


মৃতদের জন্য যদি জিবীতরা মানুষকে পানাহারের ব্যবস্থা করেন তাহলে কবরে মৃতরা ইহার দ্বারা উপকার লাভ করেন। 


❍ এ বিষয়ে নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন, 


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، أَنَّهُ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أُمَّ سَعْدٍ مَاتَتْ، فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: الْمَاءُ، قَالَ: فَحَفَرَ بِئْرًا، وَقَالَ: هَذِهِ لِأُمِّ سَعْدٍ


“হযরত সাঈদ ইবনে উবাদা (رضي الله عنه)  বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সাঈদের মাতা ইন্তেকাল করেছেন, তার জন্যে কোন ধরণের সদকা উত্তম হবে? আল্লাহর নবী (ﷺ)  বললেন: ‘পানি’। তারপর ‘বাতরা’ নামক কূপ খনন করলেন ও বললেন: ইহা সা’দের মায়ের জন্য সদকা করা হল।” 


তথ্যসূত্রঃ

・সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং ৩৬৬৪-৬৬ 

・সুনানু আবী দাউদ, হাদিস নং ১৬৮১ 

・মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ১৯১২ 

・মেরকাত শরহে মেসকাত, ৪র্থ খন্ড, ৩৫৩ পৃ: 

・মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ২২৪৫৯ ও ২৩৮৪৫ 

・তাফছিরে মাজহারী, ৯ম খন্ড, ১০৪ পৃ: 

・তাফছিরে কুরতবী, ১৭তম জি: ৯০ পৃ:


𓈃 তাবারানী ছহীহ্ সূত্রে হযরত আনাস (رضي الله عنه)  থেকে এরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। এর আরেকটি সনদ আছে:

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ، ثنا أَبُو كُرَيْبٍ، ثنا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامٍ الدَّسْتُوَائِيِّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ

-“মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ হাদ্বরামী হাদিস বর্ণনা করেছেন আবু কুরাইব থেকে, তিনি ওয়াকী থেকে, তিনি হিশাম দাসতুয়ায়ী থেকে, তিনি কাতাদা থেকে, তিনি সাঈদ ইবনে মুসাইব থেকে, তিনি সাদ ইবনে উবাদা (رضي الله عنه)  থেকে।” 

(ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৫৩৭৯)


𓈃 ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) এর সনদটি এভাবে,

 حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ: سَمِعْتُ شُعْبَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ الْحَسَنَ، يُحَدِّثُ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ:

-“হাজ্জায (رحمة الله) হাদিস বর্ণনা করেছেন- তিনি বলেন আমি শুবা (رحمة الله) থেকে শুনেছি- তিনি কাতাদা (رحمة الله) থেকে- তিনি বলেন আমি হাছান বছরী (رحمة الله) থেকে শুনেছি- তিনি হযরত সা’দ ইবনে উবাদা (رضي الله عنه)  থেকে হাদিস বর্ণনা করেন-...।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ২৩৮৪৫)


𓈃 হযরত সা’দ ইবনে উবাদা (رضي الله عنه)  থেকে তিনটি সূত্রে হাদিসটি বর্ণিত। সুনানে আবু দাউদের তাহকিকে লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানী হাদিসটিকে حسن ‘হাছান’ বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন,

قلت: وهذا إسناد رجاله ثقات رجال الشيخين؛ غير الرجل الذي لم يسم،

-“আমি (আলবানী) বলি: এই সনদের সকল বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত ও বুখারী-মুসলীমের বর্ণনাকারী, শুধুমাত্র নাম উল্লেখ বিহীন একজন রাবী ব্যতীত।” (ছহীহ্ আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৭৬) 


𓈃 সুনানু আবী দাউদের সনদে তাবেঈ এর নাম উল্লেখ না থাকলেও মুসনাদু আহমদ ও তাবারানীর সনদে তাবেঈ এর নাম ‘হাছান বছরী ও সাঈদ ইবনে মুছাইব (رحمة الله) এর নাম রয়েছে। অতএব, হাদিসটি বুখারী-মুসলীমের মতই ছহীহ্। 


অতএব, এই হাদিস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, মৃত ব্যক্তির জন্য যেকোন সদকা করে ইহার সওয়াব তার আত্বার মাগফিরাতের জন্য দান করা রাসূলে পাক (ﷺ)  কর্তৃক অনুমোদিত। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফেরাতের জন্য যদি পানি সদকা করলে মৃত ব্যক্তি উপকৃত হয়, তাহলে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য সদকা করলে নিশ্চয় তারা আরও বেশী উপকৃত হবেন।


এমনকি স্বয়ং রাসূলে করিম (ﷺ)  মৃতের বাড়িতে গিয়েছেন ও খাবার পরিবেশনে অংশগ্রহণ করেছেন। হালাল খাদ্য গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রিয় নবীজি (ﷺ)  সমর্থন করেছেন। যেমনঃ 


❍ ছহীহ্ হাদিসে আছে,


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، أَخْبَرَنَا عَاصِمُ بْنُ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رَجُلٍ، مِنَ الْأَنْصَارِ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جَنَازَةٍ، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى الْقَبْرِ يُوصِي الْحَافِرَ: أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رِجْلَيْهِ، أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رَأْسِهِ، فَلَمَّا رَجَعَ اسْتَقْبَلَهُ دَاعِي امْرَأَةٍ فَجَاءَ وَجِيءَ بِالطَّعَامِ فَوَضَعَ يَدَهُ، ثُمَّ وَضَعَ الْقَوْمُ، فَأَكَلُوا، فَنَظَرَ آبَاؤُنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلُوكُ لُقْمَةً فِي فَمِهِ، ثُمَّ قَالَ: أَجِدُ لَحْمَ شَاةٍ أُخِذَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ أَهْلِهَا، فَأَرْسَلَتِ الْمَرْأَةُ، قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي أَرْسَلْتُ إِلَى الْبَقِيعِ يَشْتَرِي لِي شَاةً، فَلَمْ أَجِدْ فَأَرْسَلْتُ إِلَى جَارٍ لِي قَدِ اشْتَرَى شَاةً، أَنْ أَرْسِلْ إِلَيَّ بِهَا بِثَمَنِهَا، فَلَمْ يُوجَدْ، فَأَرْسَلْتُ إِلَى امْرَأَتِهِ فَأَرْسَلَتْ إِلَيَّ بِهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَطْعِمِيهِ الْأُسَارَى


“জনৈক আনসার সাহাবী (رضي الله عنه)  থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: একদা আমরা রাসূলে পাক (ﷺ)  এর সাথে এক ব্যক্তির জানাযায় শরীক হলাম। এ সময় আমি দেখতে পাই যে, রাসূল (ﷺ)  কবরের কাছে দাঁড়িয়ে যারা কবর খুরছিল তাদের বলেন: পায়ের দিকে প্রশস্ত কর, মাথার দিকে চওড়া কর। এরপর তিনি সেখোন থেকে ফিরার পর জনৈক মহিলার আহবানকারী নবী পাক (ﷺ)  কে ডাকার জন্য সেখানে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে গেলেন ও তাঁর জন্য খাদ্য উপস্থিত করা হয়। নবী করিম (ﷺ)  খেতে শুরু করলে অন্যরাও খেতে শুরু করেন। তখন আমাদের মুরুব্বিরা লক্ষ্য করেন যে, রাসূল (ﷺ)  এক লোকমা মুখে দিয়ে তা শুধু চিবাচ্ছেন কিন্তু তা গিলছেন না। এ সময় তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে, এ গোস্ত এমন এক বকরীর যা তার মালিকের বিনা অনুমতিতে নেওয়া হয়েছে। তখন সে মহিলা বলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি জনৈক ব্যক্তিকে বকরী খরিদ করার জন্য বাকী নামক বাজারে পাঠিয়ে ছিলাম। সেখানে বকরী পাওয়া যায়নি। এরপর আমি আমার প্রতিবেশী যিনি একটি বকরী খরিদ করেন, তাকে বলি যে, তিনি যেন তার বকরীটি ক্রয় মূল্যে আমাকে প্রদান করেন। কিন্তু তাকেও বাড়ি পাওয়া যায়নি। তখন আমি তার স্ত্রীর নিকট লোক পাঠাই, যিনি আমাকে বকরীটি দিয়েছেন। তখন রাসূলে পাক (ﷺ)  বলেন, এ গোস্ত বন্দিদের খাইয়ে দাও।” 


তথ্যসূত্রঃ

・সুনানু আবী দাউদ, হাদিস নং ৩৩৩২ بَابٌ فِي اجْتِنَابِ الشُّبُهَاتِ, ই: ফা: হাদিস নং ৩২৯৯ 

・ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ১০৮২৫ بَابُ كَرَاهِيَةِ مُبَايَعَةِ مَنْ أَكْثَرُ مَالِهِ مِنَ الرِّبَا أَوْ ثَمَنِ الْمُحَرَّمِ 

・মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ৫৯৪২ 

・কাজী শাওকানী: নাইলুল আওতার, হাদিস নং ২৪৩৪ 

・ইমাম যায়লায়ী: নাছবুর রায়া, ৪র্থ খন্ড, ১৬৮ পৃ: 

・তাহতাবী শরীফ, ৬১৭ পৃ: 

・ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবীর, ২য় খন্ড, ২৯৬ পৃ:


𓈃 এই হাদিসের সনদ সম্পর্কে ইমাম যায়লায়ী (رحمة الله) বলেছেন,

وَهَذَا سَنَدُ الصَّحِيحِ، -“এই সনদ ছহীহ্।” (ইমাম যায়লায়ী: নাছবুর রায়া, ৪র্থ খন্ড, ১৬৮ পৃ:)


𓈃 হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله) এই সনদ সম্পর্কে বলেন, إسْنَادُهُ صَحِيحٌ -“ইহার সনদ ছহীহ্।” (ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবীর, ২য় খন্ড, ২৯৬ পৃ:)


𓈃 হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনু মুলাক্কিন (رحمة الله) বলেছেন, إسْنَادُهُ صَحِيحٌ 

-“ইহার সনদ ছহীহ্।” (ইবনু মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৫ম খন্ড, ২৯৬ পৃ:)


𓈃 এই হাদিস সম্পর্কে লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানী বলেছেন,

وهذا سند صحيح كما قال الحافظ فى التلخيص -

“এই সনদ ছহীহ্ যেমনটি হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله) তার ‘তালখিছ’ গ্রন্থে বলেছেন।” (আলবানী: ইরইয়াউল গালিল, ৩য় খন্ড, ১৯৬ পৃ:) 


এই হাদিস দ্বারা সরাসরি প্রমাণিত হয়, স্বয়ং আল্লাহর রাসূল (ﷺ)  নিজেই মৃত ব্যক্তির আহল-বর্গের নিকট থেকে খাবার গ্রহণ করেছেন এবং সাহাবীরাসহ লোকেরা ইহা খাবার গ্রহণ করেছেন এতে রাসূলে পাক (ﷺ)  নিষেধ করেননি। এই হাদিস দ্বারা আরো প্রমাণিত হয়, মৃত ব্যক্তির বাড়িতে যিয়াফতের দাওয়াত গ্রহণ করা রাসূল (ﷺ)  এর সুন্নাত এবং ঐ যিয়াফতে খাবার গ্রহণ করাও আল্লাহর রাসূল (ﷺ)  ও সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাত। সুতরাং ‘ফেলে রাসূল’ তথা আল্লাহর রাসূল (ﷺ)  এর পবিত্র কর্ম দ্বারাই যিয়াফত গ্রহণ করা প্রমাণিত হল। এ বিষয়ে আরেকটি আছার/হাদিস উল্লেখ করা যায়। 


❍ ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী (رحمة الله) ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (رحمة الله) বর্ণনা করেন,


حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ مَالِكٍ، ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ، ثنا أَبِي، ثنا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، ثنا الْأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ: قَالَ طَاوُسٌ: إِنَّ الْمَوْتَى يُفْتَنُونَ فِي قُبُورِهِمْ سَبْعًا، فَكَانُوا يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يُطْعَمَ عَنْهُمْ تِلْكَ الْأَيَّامِ


“হরত সুফিয়ান ছাওরী (رحمة الله) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন হযরত তাঊস (رحمة الله) বলেছেন, নিশ্চয় মৃত ব্যক্তি দাফনের পর ৭দিন মসিবতে থাকেন। সাহাবায়ে কেরাম এই ৭দিন মৃতদের জন্য লোকদের খাওয়ানো উত্তম মনে করতেন।” 


তথ্যসূত্রঃ

・ইমাম আবু নুয়াইম: হিলিয়াতুল আউলিয়া, ৪র্থ খন্ড, ১১ পৃ: 

・ইমাম ছিয়তী: আল হাভী লিল ফাতওয়া, ২য় খন্ড, ২১৬ পৃ: 

・ইমাম ছিয়তী: আদ দিয়াযু আলা ছহীহ্ মুসলীম, ২য় খন্ড, ৪৯১ পৃ: 

・ইমাম ছিয়তী: তাফছিরে দূর্রে মানছুর, ৫ম খন্ড, ৩৮ পৃ:

・ইমাম আসকালানী: মাতালিবুল আলিয়া, ৫ম খন্ড, ৩৩০ পৃ: হাদিস নং ৮৩৪


এই রেওয়ায়েতের সনদ ছহীহ্। 


𓈃 এই হাদিস উল্লেখ করে হাফিজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رحمة الله) বলেছেন, 

إِسْنَاده صَحِيح وَله حكم الرّفْع -“ইহার সনদ ছহীহ এবং ইহার হুকুম মারফূ।” (ইমাম ছিয়তী: আদ দিয়াযু আলা ছহীহ্ মুসলীম, ২য় খন্ড, ৪৯১ পৃ:) 


𓈃 হযরত তাঊস (رحمة الله) একজন প্রখ্যাত তাবেঈ, যিনি ৫০০ সাহাবীকে দেখেছেন। তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, মৃতদের জন্য খাবার খাওয়ানো সাহাবীগণ পছন্দ করতেন। ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رحمة الله) হাদিসের হুকুম মারফূ বলেছেন। 


𓈃 হাফিজুল হাদিস ইমাম আব্দুর রহমান জালালুদ্দিন ছিয়তী (رحمة الله) আরো বলেছেন,

وَأَخْرَجَهَا ابْنُ جُرَيْجٍ فِي مُصَنَّفِهِ بِالْإِسْنَادِ إِلَى عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، وَهُوَ أَكْبَرُ مِنْ طَاوُسٍ فِي التَّابِعِينَ، بَلْ قِيلَ: إِنَّهُ صَحَابِيٌّ،

-“ইমাম ইবনু যুরাইজ (رحمة الله) তার মুছান্নাফ গ্রন্থে ‘উবাইদ ইবনু উমাইর’ থেকে ইহা বর্ণনা করেছেন। আর তিনি তাবেঈ তাউস (رحمة الله) থেকেও বড়, বরং কেউ কেউ বলেছেন: সে সাহাবী।” (ইমাম ছিয়তী: আল হাভী লিল ফাতওয়া, ২য় খন্ড, ২১৫ পৃ:) 


𓈃 ‘উবাইদ ইবনু ইমাইর’ সম্পর্কে ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন,

وذكر البخاريّ أنّ عبيد بن عمير رأى النبيّ صلّى اللَّه عليه وآله وسلّم. وقال مسلّم: ولد على عهد النبي صلّى اللَّه عليه وآله وسلّم.

-“ইমাম বুখারী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন, নিশ্চয় ‘উবাইদ ইবনু উমাইর’ রাসূলে আকরাম (ﷺ)  কে দেখেছেন। ইমাম মুসলীম (رحمة الله) বলেছেন, সে নবী করিম (ﷺ)  এর যুগেই জন্মগ্রহণ করেছে।” (ইমাম আসকালানী: আল ইছাবা, রাবী নং ৬২৫৮) 


𓈃 ইমাম মুগলতাঈ (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন,

وفي كتاب الصحابة لأبي موسى المديني: يقال رأى النبي صلى الله عليه وسلم وقيل: ولد في زمانه، قاله أبو أحمد الحافظ.

-“ইমাম আবু মূসা মাদিনী (رحمة الله) এর ‘কিতাবুস সাহাবা’ গ্রন্থে রয়েছে, বলা হয় সে রাসূলে পাক (ﷺ)  কে দেখেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, সে রাসূলে পাক (ﷺ)  এর যুগেই জন্মগ্রহণ করেছে। ইমাম আবু আহমদ হাফিজ (رحمة الله) অনররূপ বলেছেন।” (ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবিল কামাল, রাবী নং ৩৫৩১) 


𓈃 ইমাম মিযযী (رحمة الله) বলেছেন, 

قال مُسْلِم بْن الْحَجَّاج: ولد فِي زمان النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم. وَقَال غيره: رأى النَّبِي صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وسَلَّمَ.

-“ইমাম মুসলীম ইবনু হাজ্জায (رحمة الله) বলেছেন, সে রাসূলে পাক (ﷺ)  এর জামানায় জন্মগ্রহণ করেছে। ইমাম মুসলীম ব্যতীত অন্যরা বলেছেন, সে রাসূলে পাক (ﷺ)  কে দেখেছেন।” (ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৩৭৩০) 


সুতরাং ‘উবাইদ ইবনু উমাইর’ সাহাবী হওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ আমিরুল মু’মিনীন ফিল হাদিস ইমাম বুখারী (رحمة الله) নিজেই বলেছেন, সে রাসূলে পাক (ﷺ)  কে দেখেছেন। অতএব, সাহাবী ও তাবেঈর আমল থেকে প্রমাণিত হল, এরুপ আমল করা মুস্তাহাব-সুন্নাহ। যেমনটা 


𓈃 ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رحمة الله) বলেছেন,

وَهُوَ اسْتِحْبَابُ الْإِطْعَامِ عَنِ الْمَوْتَى مُدَّةَ سَبْعَةِ أَيَّامٍ، -“মৃত ব্যক্তির জন্য সাতদিন খাবার পরিবেশন করা মুস্তাহাব।” (ইমাম ছিয়তী: আল হাভী লিল ফাতওয়া, ২য় খন্ড, ২২৩ পৃ:)


𓈃 শারিহে বুখারী ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে হাদিসটি এভাবে উল্লেখ করেছেন,

وقد روى عن مجاهد: أن الموتى كانوا يفتنون في قبورهم سبعا فكانوا يستحبون أن يطعم عنهم تلك الأيام.

-“নিশ্চয় হযরত মুজাহিদ (رحمة الله) হতে বর্ণত, নিশ্চয় মৃত ব্যক্তি দাফনের পর ৭ দিন মসিবতে থাকেন। সাহাবায়ে কেরাম এই ৭ দিন মৃতদের জন্য লোকদের খাওয়ানো উত্তম মনে করতেন।” (ইবনে রজব হাম্বলী: আহওয়ালুল কুবুর, ১ম খন্ড, ১৬ পৃ:)


মৃতদের জন্য খাবার খাওয়ানো সাহাবীগণ পছন্দ করত। অতএব, মৃত ব্যক্তির জন্য ৭ দিন খাবার পরিবেশন করা সুন্নাতে সাহাবা ও মুস্তাহাব।

Top