কুরআনের তাফসির ও হাদীসের আলোকে শবে বরাতের বিশেষ নামাজ ও তার ফজিলত
সংকলকঃ মোহাম্মদ নাঈম হোসাইন

লাইলাতুল বরাতের ফজিলতের বর্ণনায় নবীজি (ﷺ) ইরশাদ ফরমান : 
عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله
 عليه وسلم من صلى فيهذه الليلة مائة ركعة أرسل الله إليه مائة ملك : ثلاثون يبشرونهبالجنة ، وثلاثون ي
 صـ التفسير الكبير، ج ۲۷/ص ۲۱۱ تفسیر روحالبيان جا ۸  )

ভাষান্তর : ❝হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান যে বক্তি এই বরকতময় রজনীতে ১০০ রাকাত নামায আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য ১০০ জন ফেরেস্তা অবতরণ করবেন। তাদের মধ্য হতে ৩০ জন তাকে জান্নাতের শুভ সংবাদ জানাবেন, ৩০ জনজাহান্নামের আগুন থেকে নিরাপদ রাখবেন, ৩০ জন
দুনিয়ার বিভিন্ন বালামসিবত তথা বিপদ আপদ থেকেরক্ষা করবেন, ১০ জন ফেরেস্তা অধিক প্রবঞ্চনাকারী ভীষণ ধোঁকাবাজ শয়তানের ধোঁকা ও প্রবঞ্চনাকে প্রতিহত করবেন❞। 

➟(তাফসীরে কাশ্শাফ, খন্ড-৪র্থ, পৃষ্ঠা২৬৯, তাফসীরুল কবির, খন্ড-২৭তম, পৃষ্ঠা- ২১১,তাফসীরে রুহুল বয়ান, খন্ড-৮ম, পৃষ্ঠা-৪০৩)

روى عن مجاهد عن علي رضي الله عنه الله عليه السلام قال ياعلىمن صلى مائة ركعة في ليلة النصف من شعبان فقرأ في كل ركعةفالحة الكتاب سرة وقل هو الله احد عشر مرات قال عليه السلامياعلى ما من عبد يصلى هذه الصلاة الاقضى الله كل حاجة عليها تلك الليلة ويبعث الله سبعين ألف منك يكتبون له الخساتويمحون عنه السيئات ويرفعون له الدرجات الى رأس السنة ويبعث الله في جنات عدن سبعين ألف ملك وسيعمالة الف بيتون الله السالنوالقهور ويفرسون له من الاشجار مالاعين رأيت ولا أذن سمتولا نظر على قلب المخلوقين وان مات من ليلة قبل أن يحول حولمات شهيدا ويعطيه الله بكل حرف من قل هو الله أحد في ليلة تلكسبعين حورا. (تفسير روح البیان ج  صـ )

ভাষান্তর : প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত মুজাহিদ (রা.) থেকে
বর্ণিত তিনি আমিরুল মুমেনিন হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, ❝নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান হে আলী (رضي الله عنه)! যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখ রাত্রে ১০০ রাকাত নামায আদায় করবে, (এভাবে) প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহা একবার সূরা ইখলাস ১০ বার, আল্লাহ তায়ালা ঐ রাতে তার সব প্রয়োজন অন্বেষণ করে মিটিয়ে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করবেন। তাঁর জন্য উত্তমতা লিখে দিবেন এবং মন্দকে দূরীভূত করবেন এবং বছরের শেষ পর্যন্ত তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করবেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতে আদন দান করবেন। তথায় তাঁর জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা থাকবে। তাঁর জন্য৭ হাজার উদ্যান ও বালাখানা তৈরী করা হবে। যেখানেবৃক্ষের অনেকগুলো লতাগুল্ম থাকবে যার কোন চুক্ষু থাকবে না কিন্তু দেখবে, কান থাকবে না শুনবে সৃষ্টিগুলোর অন্তরের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হবে না, যদি সে ঐ রাতে বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগে ইন্তিকাল করে, তাহলে সে শহিদিমাউত পাবে, আল্লাহ তায়ালা রাত্রের সূরা ইখলাসের প্রত্যেকটি ঐ হরফের বিনিময়ে ৭০টি হুর দান করবেন❞। 
➟ (তাফসীরে রুহুল বয়ান , খন্ড-৮ম, পৃষ্ঠা-৪০৩)

আল্লামা ইসমাইল হক্কী (رحمة الله) প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী থেকে বর্ণনা করেন :

عن الحسن البصري انه قال حدثني ثلاثون من اصحبا النبي صلىالله عليه وسلم ان من صلى هذه الصلواة في هذه الليلة نظر الله اليهسبعين نظرة وقضى الله له بكل نظرة سيعين حاجه ادناها المغفرة (البيان ج/ صـ )

ভাষান্তর : হযরত হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, আমার নিকট ৩০ জন সাহাবী হাদিস বর্ণনা করেছেনযে, নিশ্চয় যে ব্যক্তি এই রাতে (শাবানের ১৫ তারিখের রাত্রিতে) নামায আদায় করবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর দিকে ৭০ বার দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন। প্রতিটি দৃষ্টিতেআল্লাহ তায়ালা তার ৭০টি হাজাত তথা প্রয়োজন মিটাবেন। তম্মধ্যে নিম্নস্তরের হাজত হলো তাঁকে ক্ষমা করা হবে। ➟(তাফসীরে রুহল বয়ান, খন্ড-৮ম, পৃষ্ঠা-৪০৩)

আল্লামা জালাল উদ্দিন আবদুর রহমান বিন আবু বকর সুয়ুতী (رحمة الله) বায়হাকী শরীফের সূত্রে হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন :
عن علي قال : رأيت رسول الله
 صلى الله عليه و سلم ليلة النصفمن شعبان قام فصلى أربع عشرة ركعة ثم جلس بعد الفراغ فقرأ بأمالقرآن أربع عشرة مرة وقل هو الله أحد أربع عشرة مرة وقل أعوذبرب الفلق أربع عشرة مرة وقل أعوذ برب الناس أربع عشرة مرةو آية الكرسي مرة لقد جاءكم رسول من أنفسكم عزيز عليه ما عنتمحريص عليكم بالمؤمنين رءوف رحيم (التوبة )١٢٨ مرة فلما فرغصلاته سألته عما رأيت من صنيعه ؟ قال : " من صنع مثل الذيرأيت كان له ثواب عشرين حجة مبرورة وصيام عشرين سنة مقبولةفإذا أصبح في ذلك اليوم صائما كان له كصيام سنتين سنة ماضيةوسنة مستقبلة (الدر المنثور في التفسير الماثور ج/صـ ٧٤٢)

ভাষান্তর : ❝আমিরুল মুমেনীন শেরেখোদা হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলে করিম (ﷺ) কে শাবান মাসের ১৫ তারিখের রজনীতে কিয়ামুললায়ল করতে দেখেছি। সে রাতে নবীজি (ﷺ)  ১৪রাকাত নামায আদায় করতেন, নামাযের শেষে বসে ১৪বার সূরা ফাতেহা, ১৪ বার সূরা ইখলাস, ১৪ বার সূরাফালাক, ১৪ বার সূরা নাস, ১ বার আয়াতুল কুরসি, ১বার লাকৄদ জাআকুম রাসূলুম মিন আনফুসিকুম সূরা তাওবার ১২৮ নং আয়াত তেলাওয়াত করেছেন। নবীজি (ﷺ) নামায থেকে রিবত হওয়ার পর যা করেছেন সে বিষয়ে জানার জন্য আরজ করলে নবীজি (ﷺ) ইরশাদ ফরমান, আমাকে যা করতে দেখেছ অনুরূপ যদি কেউ ঐ রজনীতে করেন, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ২০ টি কবুলকৃত হজ্বের সাওয়াব তাঁর আমলনামায় লিখে দিবেন এবং ২০ বছরের রোজার সাওয়াবও দান করবেন। আর যদি ঐ দিন অর্থাৎ ১৫ শাবান দিনের বেলা রোজা পালন করেন তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে অতীতের ৬০ বছর এবং ভবিষ্যতের ৬০ বছরের রোজার সাওয়াব দান করবেন❞। 

➟(আদদুররুল মনসুর, খন্ড-৫ম, পৃষ্ঠা-৭৪২, বায়হাকি, শুয়াবুল ঈমান, হাদিস নং -৩৫৫৯ )


Top