🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ০
بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
📕 কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
📗 ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১
الٓـمّٓصٓ ۚ﴿۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১. আলিফ, লা-----ম, মী-----ম, সোয়া---দ।
📗 ইরফানুল কুরআন
১. আলিফ, লা-ম, মীম, সোয়াদ। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই সম্যক অবগত।)
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২
کِتٰبٌ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ فَلَا یَکُنۡ فِیۡ صَدۡرِکَ حَرَجٌ مِّنۡہُ لِتُنۡذِرَ بِہٖ وَ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
২. হে মাহবূব, একটা কিতাব আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে, যেন আপনার মনে এটা সম্পর্কে কোন সংকোচ না থাকে; এ জন্য যে আপনি তা দ্বারা সতর্ক করবেন এবং তা মুসলমানদের জন্য উপদেশ।
📗 ইরফানুল কুরআন
২. (হে সম্মানিত হাবীব!) এটি কিতাব, (যা) আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। সুতরাং আপনার (দীপ্তিময়) অন্তরে যেন এর (বাণী প্রচারে কাফেরদের অস্বীকার ও মিথ্যাপ্রতিপন্নের চিন্তার) কারণে সংকীর্ণতা অনুভুত না হয়। (এটি তো অবতীর্ণই হয়েছে এ জন্যে যে,) আপনি যেন এর মাধ্যমে (অস্বীকারকারীদেরকে) সতর্ক করতে পারেন। আর এটি মু’মিনদের জন্যে হেদায়াত ও উপদেশ।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩
اِتَّبِعُوۡا مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩. হে লোকেরা, সেটার উপরই চলো, যা তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেটাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য হুকুমদাতাদের অনুসরণ করো না। তোমরা কম খুবই বুঝে থাকো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩. (হে লোক সকল!) তোমরা এটি (অর্থাৎ কুরআন) অনুসরণ করো, যা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং তিনি ব্যতীত (নিজেদের মনগড়া মত ও) অন্য বন্ধুদের অনুসরণ করো না। তোমরা খুব কমই উপদেশ গ্রহণ করো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪
وَ کَمۡ مِّنۡ قَرۡیَۃٍ اَہۡلَکۡنٰہَا فَجَآءَہَا بَاۡسُنَا بَیَاتًا اَوۡ ہُمۡ قَآئِلُوۡنَ ﴿۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪. কতো জনপদই আমি ধ্বংস করেছি! অতঃপর তাদের উপর আমার শাস্তি রাতের বেলায় এসেছে, অথবা যখন তারা দ্বি- প্রহরে বিশ্রামরত ছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪. আর কতোই না (এমন) জনপদ আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। অতঃপর তাদের উপর আমাদের শাস্তি নেমে এসেছিল রাতে অথবা মধ্যাহ্নে (যখন) তারা নিদ্রামগ্ন ছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫
فَمَا کَانَ دَعۡوٰىہُمۡ اِذۡ جَآءَہُمۡ بَاۡسُنَاۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اِنَّا کُنَّا ظٰلِمِیۡنَ ﴿۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫. অতঃপর তখন তাদের মুখ থেকে কিছুই বের হয় নি যখনই আমার শাস্তি তাদের উপর এসেছে, কিন্তু (তারা) এটাই বলে উঠলো, ‘আমরা যালিম ছিলাম’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫. অতঃপর যখন তাদের উপর আমাদের শাস্তি নেমে এলো, তখন তাদের ক্রন্দন এ ছাড়া (কিছুই) ছিল না যে, তারা বলতে লাগলো, ‘নিশ্চয়ই আমরা যালিম ছিলাম’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬
فَلَنَسۡـَٔلَنَّ الَّذِیۡنَ اُرۡسِلَ اِلَیۡہِمۡ وَ لَنَسۡـَٔلَنَّ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ۙ﴿۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬. অতঃপর নিশ্চয় নিশ্চয় আমার জিজ্ঞাসা করার রয়েছে তাদেরকে, যাদের নিকট রসূল গিয়েছেন এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আমার জিজ্ঞাসা করার রয়েছে রসূলগণকে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬. অতঃপর আমরা সে সকল লোককে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করবো, যাদের নিকট আমরা রাসূলগণকে প্রেরণ করেছিলাম, আর আমরা অবশ্যই রাসূলগণকেও (তাদের দাওয়াত ও প্রচারের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করবো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭
فَلَنَقُصَّنَّ عَلَیۡہِمۡ بِعِلۡمٍ وَّ مَا کُنَّا غَآئِبِیۡنَ ﴿۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭. অতঃপর অবশ্যই আমি তাদের নিকট বিবৃত করবো স্বীয় জ্ঞান সহকারে এবং আমি মোটেই অনুপস্থিত ছিলাম না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭. অতঃপর আমরা (আমাদের) অবগতি থেকে তাদের কাছে (তাদের সকলের) অবস্থাদি বর্ণনা করবো এবং আমরা তো (কোথাও) অনুপস্থিত ছিলাম না (যে তাদেরকে পর্যবেক্ষণে সক্ষম নই)।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮
وَ الۡوَزۡنُ یَوۡمَئِذِ ۣالۡحَقُّ ۚ فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮. এবং সেদিন পরিমাপ তো অবশ্যই হবে, সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮. আর সে দিন (আমলসমূহের) সঠিক ওযন করা হবে। সুতরাং যাদের (সৎকর্মের) পাল্লা ভারী হবে, তারাই সফল হবে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯
وَ مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ بِمَا کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯. এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে, তারাই হচ্ছে ওই সব লোক, যারা নিজেদের সত্তাকে ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে ওই সব সীমালঙ্ঘনের পরিণাম স্বরূপ যা আমার আয়াতসমূহের মধ্যে করতো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯. আর যাদের (সৎকর্মের) পাল্লা হালকা হবে, সেসব লোকই নিজেদের আত্মাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যেহেতু তারা আমাদের নিদর্শনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০
وَ لَقَدۡ مَکَّنّٰکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ وَ جَعَلۡنَا لَکُمۡ فِیۡہَا مَعَایِشَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০. এবং নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি আর তোমাদের জন্য ওটার মধ্যে জীবন ধারণের সামগ্রী তৈরী করেছি, তোমরা খুবই অল্প কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০. আর নিশ্চয়ই আমরা নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বের সাথে তোমাদেরকে জমিনে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং আমরা এতে তোমাদের জন্যে জীবনযাপনের উপকরণ সৃষ্টি করেছি। তবুও তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা আদায় করো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১
وَ لَقَدۡ خَلَقۡنٰکُمۡ ثُمَّ صَوَّرۡنٰکُمۡ ثُمَّ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ ٭ۖ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ لَمۡ یَکُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ ﴿۱۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১. এবং নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদের নমূনা তৈরী করেছি, তাঁরপর আমি ফিরিশতাদেরকে বলেছি, ‘আদমকে সাজদা করো’। তখন তাদের সকলেই সাজদারত হলো, কিন্তু ইবলীস; সে সাজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলো না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১. আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদেরকে (অর্থাৎ তোমাদের প্রকৃত সত্তা) সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদের আকৃতি গঠন করেছি (অর্থাৎ জীবনের রাসায়নিক ও জৈবিক সূচনা ও ক্রমবিকাশের ধাপগুলো আদম আলাইহিস সালামের দৈহিক অস্তিত্বের পূর্ণতা পর্যন্ত সম্পন্ন করেছি।) অতঃপর আমরা ফেরেশতাদেরকে বললাম, ‘আদম (আলাইহিস সালাম)-কে সেজদা করো,’ তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করলো। সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলো না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২
قَالَ مَا مَنَعَکَ اَلَّا تَسۡجُدَ اِذۡ اَمَرۡتُکَ ؕ قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ۚ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّ خَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ ﴿۱۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২. (তিনি) বললেন, “কোন বস্তু তোমাকে নিবৃত্ত করলো যে, তুমি সাজ্দা করলে না, যখন আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম?’ (সে) বললো, ‘আমি তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২. (আল্লাহ্) বললেন, ‘(হে ইবলীস!) তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিল যে তুমি সেজদা করলে না, অথচ আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম?’ সে বললো, ‘আমি তার চেয়ে উত্তম, তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো আগুন থেকে আর তাকে সৃষ্টি করেছো কাদামাটি থেকে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩
قَالَ فَاہۡبِطۡ مِنۡہَا فَمَا یَکُوۡنُ لَکَ اَنۡ تَتَکَبَّرَ فِیۡہَا فَاخۡرُجۡ اِنَّکَ مِنَ الصّٰغِرِیۡنَ ﴿۱۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩. বললেন, ‘তুমি এখান থেকে নেমে যাও’! তোমার জন্য এটা শোভা পায় না যে, এখানে থেকে অহঙ্কার করবে। সুতরাং বের হয়ে যাও! তুমি হও লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩. (আল্লাহ্) বললেন, ‘তবে তুমি এখান থেকে নেমে যাও, এখানে অহঙ্কার দেখানোর কোনও অধিকার তোমার নেই। আর (আমার সান্নিধ্য থেকে) বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি তুচ্ছ ও অপমানিতদের অন্তর্ভুক্ত।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪
قَالَ اَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۱۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪. বললো, ‘আমাকে অবকাশ দিন ওই দিন পর্যন্ত, যেদিন লোকেরা পুনরুত্থিত হবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪. সে (ইবলীস) বললো, ‘আমাকে সেদিন পর্যন্ত (বেঁচে থাকার) অবকাশ দাও, যেদিন মানুষকে (কবর থেকে) উঠানো হবে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫
قَالَ اِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ ﴿۱۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫. বললেন, ‘তোমাকে অবকাশ দেয়া হলো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫. (আল্লাহ্) বললেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি অবকাশ প্রাপ্তদের মধ্যে গণ্য’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬
قَالَ فَبِمَاۤ اَغۡوَیۡتَنِیۡ لَاَقۡعُدَنَّ لَہُمۡ صِرَاطَکَ الۡمُسۡتَقِیۡمَ ﴿ۙ۱۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬. বললো, ‘শপথ এরই যে, তুমি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছো। আমি অবশ্যই তোমার সরল পথের উপর তাদের জন্য ওঁত পেতে বসে থাকবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬. সে (ইবলীস) বললো, ‘যেহেতু তুমি আমাকে গোমরাহ্ করেছো, (আমি শপথ করছি যে,) আমিও (আদম সন্তানদেরকে গোমরাহ্ করতে) তাদের জন্যে অবশ্যই তোমার সরলপথে বসে থাকবো (যাতে তাদেরকে সত্য পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারি)।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭
ثُمَّ لَاٰتِیَنَّہُمۡ مِّنۡۢ بَیۡنِ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مِنۡ خَلۡفِہِمۡ وَ عَنۡ اَیۡمَانِہِمۡ وَ عَنۡ شَمَآئِلِہِمۡ ؕ وَ لَا تَجِدُ اَکۡثَرَہُمۡ شٰکِرِیۡنَ ﴿۱۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭. ‘অতঃপর আমি অবশ্যই তাদের নিকট আসবো- তাদের সম্মুখ, পশ্চাৎ, ডান ও বাম দিক থেকে এবং আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭. অতঃপর আমি অবশ্যই তাদের নিকট আসবো তাদের সামনের দিক থেকে, তাদের পিছন দিক থেকে, তাদের ডান দিক থেকে এবং তাদের বাম দিক থেকে। আর (ফলশ্রুতিতে) তুমি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবে না।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮
قَالَ اخۡرُجۡ مِنۡہَا مَذۡءُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا ؕ لَمَنۡ تَبِعَکَ مِنۡہُمۡ لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنۡکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮. বললেন, ‘এখান থেকে বের হয়ে যা! ধিকৃত ও বিতাড়িত অবস্থায়। অবশ্যই, তাদের মধ্যে যারা তোমার কথা মতো চলবে, আমি তোমাদের সকলের দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮. (আল্লাহ্) ইরশাদ করলেন, ‘(হে ইবলীস!) এখান থেকে লাঞ্ছিত ও অভিশপ্ত অবস্থায় বের হয়ে যাও। তাদের মধ্যে যে-ই তোমার আনুগত্য করবে, আমি অবশ্যই তোমাদের সবাইকে দিয়ে জাহান্নাম পূর্ণ করবো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯
وَ یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَ زَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ فَکُلَا مِنۡ حَیۡثُ شِئۡتُمَا وَ لَا تَقۡرَبَا ہٰذِہِ الشَّجَرَۃَ فَتَکُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯. এবং হে আদম! তুমি এবং তোমার সঙ্গিনী জান্নাতে বসবাস করো। অতঃপর তা থেকে যেখানে ইচ্ছা আহার করো এবং এ বৃক্ষের নিকটে যেও না! গেলে সীমা অতিক্রমকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯. আর হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী (উভয়ে) জান্নাতে বসবাস করো এবং তোমরা উভয়ে যেখান থেকে ইচ্ছে ভক্ষণ করো। আর (সাবধান!) এ বৃক্ষের নিকটে যেও না নচেৎ তোমরা উভয়ে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০
فَوَسۡوَسَ لَہُمَا الشَّیۡطٰنُ لِیُبۡدِیَ لَہُمَا مَا وٗرِیَ عَنۡہُمَا مِنۡ سَوۡاٰتِہِمَا وَ قَالَ مَا نَہٰکُمَا رَبُّکُمَا عَنۡ ہٰذِہِ الشَّجَرَۃِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَا مَلَکَیۡنِ اَوۡ تَکُوۡنَا مِنَ الۡخٰلِدِیۡنَ ﴿۲۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০. অতঃপর শয়তান তাদের মনে এ আশঙ্কার সঞ্চার করলো যাতে তাদের সম্মুখে অনাবৃত করে দেয় তাদের লজ্জার বস্তুগুলো, যা তাদের থেকে গোপন ছিলো এবং বললো, ‘তোমাদেরকে তোমাদের রব এ বৃক্ষ থেকে এ জন্যই নিষেধ করেছেন যে, তোমরা উভয়ে ফিরিশ্তা হয়ে যাবে অথবা চিরজীবী (হয়ে যাবে);
📗 ইরফানুল কুরআন
২০. অতঃপর শয়তান তাদের উভয়ের অন্তরে কুমন্ত্রণা দিল, যাতে তাদের (দৃষ্টিতে) লুকায়িত লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়লো। সে বলতে লাগলো, ‘(হে আদম ও হাওয়া!) তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে (ফল ভক্ষণ করতে) এ কারণে নিষেধ করেছেন যে, (এটি ভক্ষণের ফলে) তোমরা উভয়ে ফেরেশতা হয়ে যাবে (অর্থাৎ মানবীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে) অথবা তোমরা উভয়ে (এতে) স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাবে (অর্থাৎ তোমাদেরকে নৈকট্যের এ অবস্থান থেকে কখনো বঞ্চিত করা হবে না)।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২১
وَ قَاسَمَہُمَاۤ اِنِّیۡ لَکُمَا لَمِنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿ۙ۲۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
২১. এবং তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বললো, ‘আমি তোমাদের উভয়ের হিতাকাঙ্ক্ষী’।
📗 ইরফানুল কুরআন
২১. আর তাদের উভয়কে কসম খেয়ে সে বললো, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের অন্যতম’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২২
فَدَلّٰىہُمَا بِغُرُوۡرٍ ۚ فَلَمَّا ذَاقَا الشَّجَرَۃَ بَدَتۡ لَہُمَا سَوۡاٰتُہُمَا وَ طَفِقَا یَخۡصِفٰنِ عَلَیۡہِمَا مِنۡ وَّرَقِ الۡجَنَّۃِ ؕ وَ نَادٰىہُمَا رَبُّہُمَاۤ اَلَمۡ اَنۡہَکُمَا عَنۡ تِلۡکُمَا الشَّجَرَۃِ وَ اَقُلۡ لَّکُمَاۤ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ لَکُمَا عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۲۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
২২. অতঃপর সে তাদেরকে প্রতাঁরণার মাধ্যমে নামিয়ে আনলো, তাঁরপর যখন তারা ওই বৃক্ষ ফলের আস্বাদ গ্রহণ করলো, তখন তাদের সম্মুখে তাদের লজ্জার বস্তুগুলো প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং নিজেদের শরীরকে জান্নাতের পাতা দ্বারা আবৃত করতে লাগলো; আর তাদেরকে তাদের রব বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে ওই বৃক্ষ থেকে নিষেধ করি নি?’ আর একথাও কি বলি নি যে, ‘শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্র?’
📗 ইরফানুল কুরআন
২২. অতঃপর সে প্রতারণার মাধ্যমে উভয়কে (সে বৃক্ষের ফল ভক্ষণে) প্রলুব্ধ করলো; অতঃপর যখন উভয়ে বৃক্ষ (থেকে ফল) আস্বাদন করলেন, তখন উভয়ের লজ্জাস্থান উন্মোচিত হয়ে গেল এবং উভয়ে তাদের (শরীরের) উপর জান্নাতের পত্রপল্লব জড়াতে লাগলেন। তখন তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেন, ‘আমি কি তোমাদের উভয়কে এ বৃক্ষ (সমবর্তী হওয়া) থেকে নিষেধ করিনি এবং তোমাদেরকে কি এ কথা বলি(নি) যে, নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের উভয়ের প্রকাশ্য দুশমন?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৩
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৩. তারা উভয়ে আরয করলো, ‘হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি’। সুতরাং যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না করো এবং আমাদের প্রতি দয়া না করো, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৩. তারা উভয়ে আর্জি পেশ করলেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের আত্মার উপর বাড়াবাড়ি করেছি; আর যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না করো এবং আমাদের উপর অনুগ্রহ না করো, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৪
قَالَ اہۡبِطُوۡا بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ ۚ وَ لَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ مُسۡتَقَرٌّ وَّ مَتَاعٌ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۲۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৪. বললেন, ‘তোমরা নেমে যাও! তোমাদের মধ্যে একে অপরের শত্রু; এবং তোমাদের জন্য পৃথিবীতে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান এবং জীবিকা রয়েছে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৪. (আল্লাহ্) ইরশাদ করলেন, ‘তোমরা (সবাই) নিচে নেমে যাও (এবং পৃথিবীতে বসবাস করো), তোমরা একে অপরের শত্রু। আর তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বসবাসস্থল ও জীবনের উপভোগ সামগ্রী (নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে; অর্থাৎ তোমাদেরকে পৃথিবীতে বসবাস ও জীবনধারণের দূ’টি মৌলিক অধিকার প্রদান করে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। সুতরাং এর উপর তোমাদের জীবন সুসংগঠিত ও স্থিতিশীল করো)।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৫
قَالَ فِیۡہَا تَحۡیَوۡنَ وَ فِیۡہَا تَمُوۡتُوۡنَ وَ مِنۡہَا تُخۡرَجُوۡنَ ﴿۲۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৫. বললেন, ‘সেখানেই তোমরা জীবন যাপন করবে, সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং তা থেকেই তোমাদেরকে উঠানো হবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৫. (আল্লাহ্) বললেন, ‘তোমরা এতে (এ পৃথিবীতে) জীবন অতিবাহিত করবে, এতেই মৃত্যুবরণ করবে এবং (কিয়ামত দিবসে) এ থেকেই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৬
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ قَدۡ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکُمۡ لِبَاسًا یُّوَارِیۡ سَوۡاٰتِکُمۡ وَ رِیۡشًا ؕ وَ لِبَاسُ التَّقۡوٰی ۙ ذٰلِکَ خَیۡرٌ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۲۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৬. হে আদম সন্তানগণ! নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি এক পোশাক এমনই অবতাঁরণ করেছি, যা দ্বারা তোমাদের লজ্জার বস্তুগুলো গোপন করবে এবং একটি এমনও যে, তোমাদের শোভা হবে; এবং তাক্বওয়ার পোশাক- সেটাই সর্বোকৃষ্ট। এটা আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোর অন্যতম; যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৬. হে আদম সন্তান! নিশ্চয় আমরা তোমাদেরকে (এমন) পরিচ্ছদ দিয়েছি যা তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকে এবং (তোমাদেরকে) সৌন্দর্যমন্ডিত করে। আর (এ বাহ্যিক পরিচ্ছদের সাথে এক অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছদও দিয়েছি এবং এই) তাক্বওয়ার পরিচ্ছদই সর্বোত্তম। এ (বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছদগুলো) আল্লাহ্র নিদর্শন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৭
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ لَا یَفۡتِنَنَّکُمُ الشَّیۡطٰنُ کَمَاۤ اَخۡرَجَ اَبَوَیۡکُمۡ مِّنَ الۡجَنَّۃِ یَنۡزِعُ عَنۡہُمَا لِبَاسَہُمَا لِیُرِیَہُمَا سَوۡاٰتِہِمَا ؕ اِنَّہٗ یَرٰىکُمۡ ہُوَ وَ قَبِیۡلُہٗ مِنۡ حَیۡثُ لَا تَرَوۡنَہُمۡ ؕ اِنَّا جَعَلۡنَا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ لِلَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৭. হে আদম সন্তানগণ; সাবধান! তোমাদেরকে শয়তান যেন ফিত্নার মধ্যে না ফেলে যেভাবে তোমাদের মাতা-পিতাকে বেহেশ্ত থেকে বের করেছে, নামিয়ে ফেলেছে তাদের পোশাক, যাতে তাদের লজ্জার বস্তুগুলোর প্রতি তাদের দৃষ্টি পড়ে। নিশ্চয় সে নিজে এবং তাঁর দল তোমাদেরকে সেখান থেকে দেখতে পায়; যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখতে পাও না; নিশ্চয় আমি শয়তানদেরকে তাদেরই বন্ধু করেছি যারা ঈমান আনে না।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৭. হে আদম সন্তান! (সাবধান) শয়তান যেন তোমাদেরকে প্রলুব্ধ না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিল; তাদের থেকে তাদের পরিচ্ছদ খুলে দিয়েছিল, যাতে তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে প্রকাশ হয়ে পড়ে। নিশ্চয়ই সে (নিজে) এবং তার দলবল তোমাদেরকে (এমন সব স্থান থেকে) প্রত্যক্ষ করে (থাকে), যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখতে পাও না। নিশ্চয়ই আমরা শয়তানদেরকে তাদেরই বন্ধু বানিয়েছি যারা ঈমান রাখে না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৮
وَ اِذَا فَعَلُوۡا فَاحِشَۃً قَالُوۡا وَجَدۡنَا عَلَیۡہَاۤ اٰبَآءَنَا وَ اللّٰہُ اَمَرَنَا بِہَا ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَاۡمُرُ بِالۡفَحۡشَآءِ ؕ اَتَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৮. এবং যখন তারা কোন অশ্লীল আচরণ করে, তখন বলে, আমরা এর উপর আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পেয়েছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন। আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ অশ্লীল আচরণের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলছো, তোমাদের নিকট যার কোন খবর নেই’?
📗 ইরফানুল কুরআন
২৮. আর যখন তারা কোনো অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয় (তখন) বলে, ‘আমরা আমাদের পিতৃপুরুষকে এতে (এ পথে) পেয়েছি এবং আল্লাহ্ আমাদেরকে এরই নির্দেশ দিয়েছেন’। বলে দিন, ‘আল্লাহ্ অশ্লীল কর্মকান্ডের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহ্র (সত্তার) ব্যাপারে এমন কিছু বলো, যা তোমরা নিজেরা(ও) জানো না?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২৯
قُلۡ اَمَرَ رَبِّیۡ بِالۡقِسۡطِ ۟ وَ اَقِیۡمُوۡا وُجُوۡہَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ ادۡعُوۡہُ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ؕ کَمَا بَدَاَکُمۡ تَعُوۡدُوۡنَ ﴿ؕ۲۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
২৯. আপনি বলুন, ‘আমার রব ন্যায় বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন; এবং নিজেদের চেহারা সোজা করো প্রত্যেক নামাযের সময় এবং তাঁর ঈবাদত করো শুধু তাঁরই বান্দা হয়ে; তিনি যেভাবে তোমাদেরকে প্রথমে সৃষ্টি করেছেন সেভাবেই তোমরা ফিরে আসবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
২৯. বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালক ন্যায়বিচারের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর তোমরা প্রত্যেক সেজদার সময় ও স্থানে তোমাদের চেহারা (কা’বার দিকে) স্থির করো। আর ঐকান্তিক আনুগত্যে তাঁর ইবাদত করো। যেভাবে তিনি তোমাদের (সৃষ্টি ও জীবনের) সূচনা করেছেন, সেভাবে তোমরা (তাঁর দিকে) প্রত্যাবর্তন করবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩০
فَرِیۡقًا ہَدٰی وَ فَرِیۡقًا حَقَّ عَلَیۡہِمُ الضَّلٰلَۃُ ؕ اِنَّہُمُ اتَّخَذُوا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ ﴿۳۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩০. একদলকে তিনি সৎপথ প্রদর্শন করেছেন এবং এক দলের ভ্রান্তি প্রমাণিত হয়েছে। তারা আল্লাহ্কে ছেড়ে শয়তানদেরকে তাদের অভিভাবক করেছে আর তারা এটাই মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩০. একদলকে তিনি হেদায়াত দান করেছেন এবং অপর দলের উপর (তাদের কৃতকর্মের ফলশ্রুতিতে) গোমরাহী অবধারিত হয়ে গিয়েছে। নিশ্চয়ই তারা আল্লাহ্কে ছেড়ে শয়তানদেরকে বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিল এবং তারা মনে করে যে, তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩১
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۳۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩১. হে আদম সন্তানগণ! স্বীয় সুন্দর পোশাক পরিধান করো যখন মসজিদে যাও এবং আহার করো ও পান করো আর সীমাতিক্রম করো না। নিঃসন্দেহে, সীমাতিক্রমকারীদের তিনি পছন্দ করেন না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩১. হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় শালীন পোশাক পরিধান করো। আর ভক্ষণ করো, পান করো, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩২
قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِیۡنَۃَ اللّٰہِ الَّتِیۡۤ اَخۡرَجَ لِعِبَادِہٖ وَ الطَّیِّبٰتِ مِنَ الرِّزۡقِ ؕ قُلۡ ہِیَ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا خَالِصَۃً یَّوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩২. আপনি বলুন, ‘কে নিষিদ্ধ করেছে আল্লাহ্র সেই শোভার বস্তুকে যা তিনি আপন বান্দাদের জন্য বের করেছেন এবং পবিত্র জীবিকাকে’? আপনি বলুন, ‘সেগুলো দুনিয়ার মধ্যে ঈমানদারদের জন্য আর ক্বিয়ামতের দিনে বিশেষ করে তাদেরই জন্য’। আমি এভাবে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩২. বলে দিন, ‘কে হারাম করেছে আল্লাহ্ প্রদত্ত এমন সৌন্দর্য (ও শোভানীয় বস্তু) যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পূতঃপবিত্র খাদ্যবস্তুগুলোকেও (কে হারাম করেছে)?’ বলে দিন, ‘এ সব (নিয়ামত) যা ঈমানদারদের জন্যে পার্থিব জীবনে (সাধারণভাবে বৈধ) রয়েছে, তা কিয়ামতের দিন বিশেষত (তাদেরই জন্যে) বিদ্যমান থাকবে’। এভাবে আমরা জ্ঞানীদের জন্যে আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৩
قُلۡ اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّیَ الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَ مَا بَطَنَ وَ الۡاِثۡمَ وَ الۡبَغۡیَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ اَنۡ تُشۡرِکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৩. আপনি বলুন, আমার রব তো নিষিদ্ধ করেছেন- প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীল বিষয়গুলো আর পাপ ও অসংগত সীমালংঘন এবং কোনো কিছুকে আল্লাহ্র শরীক করা- যার কোন সনদ তিনি অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা, যে সম্পর্কে তোমরা জ্ঞান রাখো না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৩. বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালক (তো) হারাম করেছেন কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়, এতে যা প্রকাশিত এবং যা লুকায়িত (সবগুলো), আর পাপ ও অন্যায্য বাড়াবাড়ি এবং তোমরা আল্লাহ্র যে অংশীদার সাব্যস্ত করো যার কোনো প্রমাণ তিনি অবতীর্ণ করেননি তা এবং (অধিকন্তু) এ যে, তোমরা আল্লাহ্র (সত্তার) ব্যাপারে এমন কথা বলো যা তোমরা নিজেরাও জানো না’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৪
وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ لَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۳۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৪. এবং প্রত্যেক গোত্রের একটা প্রতিশ্রুতি রয়েছে; সুতরাং যখন তাদের প্রতিশ্রুতি আসবে তখন এক মুহূর্ত পিছেও হবে না এবং আগেও না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর প্রত্যেক জাতির জন্যে এক (নির্ধারিত) মেয়াদ রয়েছে। অতঃপর যখন তাদের (নির্ধারিত) সময় এসে যায় তখন তারা এক মুহূর্ত(ও) না পিছনে হঠতে পারে আর না সামনে অগ্রসর হতে পারে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৫
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ اِمَّا یَاۡتِیَنَّکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَقُصُّوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِیۡ ۙ فَمَنِ اتَّقٰی وَ اَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۳۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৫. হে আদম সন্তানগণ! যদি তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে কোন রসূল আসেন, আমার নিদর্শনসমূহ পাঠ করেন, তখন যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের না আছে কোন ভয় এবং না কোন দুঃখ।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৫. হে আদম সন্তান! যদি তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে রাসূল আগমন করেন, যিনি তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন, অতঃপর যে পরহেযগারিতা অর্জন করে এবং (নিজেকে) সংশোধন করে নেয়, তবে তার না থাকবে কোনো ভয় আর সে না হবে চিন্তান্বিত ।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৬
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اسۡتَکۡبَرُوۡا عَنۡہَاۤ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۳۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৬. এবং যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপ্নন করেছে এবং সেগুলোর মোকাবেলায় অহংকার করেছে, তারা দোযখবাসী, তাদেরকে সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে এবং এর (উপর ঈমান আনয়ন করা) থেকে অবাধ্য হয়েছে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তাতে চিরকাল বসবাস করবে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৭
فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اُولٰٓئِکَ یَنَالُہُمۡ نَصِیۡبُہُمۡ مِّنَ الۡکِتٰبِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُنَا یَتَوَفَّوۡنَہُمۡ ۙ قَالُوۡۤا اَیۡنَ مَا کُنۡتُمۡ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ قَالُوۡا ضَلُّوۡا عَنَّا وَ شَہِدُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ اَنَّہُمۡ کَانُوۡا کٰفِرِیۡنَ ﴿۳۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৭. সুতরাং তাঁর চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করেছে, কিংবা তাঁর নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে? তাদের নিকট তাদের ভাগ্যের লিখন পৌছবেই যতক্ষণ না তাদের নিকট আমার প্রেরিত ফিরিশ্তারা তাদের প্রাণ হননের জন্য আসবে; তখন তাদের উদ্দেশে বলবে, ‘কোথায় রয়েছে তারা, যাদের তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করতে?’ তারা বলবে, ‘তারা আমাদের নিকট থেকে হারিয়ে গেছে’ এবং তারা নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে যে, তারা কাফির ছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৭. তঃপর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে অথবা তাঁর আয়াতগুলোকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে? এ জাতীয় লোকদের নিকট তাদের আমলনামায় লিখিত (সে) অংশ পৌঁছে যাবে; যতক্ষণ না তাদের রূহগুলো হরণ করার জন্যে তাদের নিকট আমাদের প্রেরিত (ফেরেশতাগণ) আগমন করবে, (অতঃপর তাদেরকে) বলবে, ‘এখন সে সব (মিথ্যা উপাস্য) কোথায়, যাদেরকে তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত উপাসনা করতে?’ তারা (প্রতিউত্তরে) বলবে, ‘তারা আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে (অর্থাৎ এখন তারা কিভাবে দৃশ্যমান হতে পারে!)’। আর তারা তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে (এ) সাক্ষ্য দিবে যে, নিশ্চয়ই তারা কাফের ছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৮
قَالَ ادۡخُلُوۡا فِیۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ فِی النَّارِ ؕ کُلَّمَا دَخَلَتۡ اُمَّۃٌ لَّعَنَتۡ اُخۡتَہَا ؕ حَتّٰۤی اِذَا ادَّارَکُوۡا فِیۡہَا جَمِیۡعًا ۙ قَالَتۡ اُخۡرٰىہُمۡ لِاُوۡلٰىہُمۡ رَبَّنَا ہٰۤؤُلَآءِ اَضَلُّوۡنَا فَاٰتِہِمۡ عَذَابًا ضِعۡفًا مِّنَ النَّارِ ۬ؕ قَالَ لِکُلٍّ ضِعۡفٌ وَّ لٰکِنۡ لَّا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৮. আল্লাহ্ তাদেরকে বলবেন, ‘তোমাদের পূর্বে জিন্ ও মানুষের যেই অন্যান্য দল আগুনের মধ্যে প্রবেশ করেছে তাদের মধ্যে যাও! যখনই একটা দল প্রবেশ করবে, তখন অপর দলকে অভিসম্পাত করবে; অবশেষে, যখন সবাই ওটাতে গিয়ে পড়বে তখন তাদের পরবর্তীগণ পূর্ববর্তীগন সম্পর্কে বলবে, ‘হে আমাদের রব! এরাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিলো। সুতরাং তাদেরকে আগুনের দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করো’। (আল্লাহ্) বলবেন, ‘সবার জন্য দ্বিগুণ রয়েছে, কিন্তু তোমরা অবগত নও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৮. আল্লাহ্ বলবেন, ‘জ্বিন ও মানবের মাঝে যারা তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে, তোমরা সে (জাহান্নামী) দলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দোযখে প্রবেশ করো’। যখনই কোনো দল (দোযখে) প্রবেশ করবে, তারা নিজেদের অনুরূপ অন্য দলকে অভিসম্পাত করবে, যতক্ষণ না তাতে সবগুলো (দল) একত্রিত হবে, তাদের পরবর্তীরা নিজেদের পূর্ববর্তীদের ব্যাপারে বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! এ সব লোকেরাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, সুতরাং তাদেরকে দোযখে দ্বিগুণ শাস্তি দিন’। তিনি বলবেন, ‘প্রত্যেকের জন্যে দ্বিগুণ, কিন্তু তোমরা তা জানো না’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৩৯
وَ قَالَتۡ اُوۡلٰىہُمۡ لِاُخۡرٰىہُمۡ فَمَا کَانَ لَکُمۡ عَلَیۡنَا مِنۡ فَضۡلٍ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡسِبُوۡنَ ﴿۳۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৩৯. এবং তাদের পূর্ববর্তীগণ পরবর্তীদেরকে বলবে, ‘তোমরা আমাদের চেয়ে কিছুতেই শ্রেষ্ঠ ছিলে না’। সুতরাং তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের বদলাস্বরূপ শাস্তি ভোগ করো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর তাদের পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবে, ‘আমাদের উপর তোমাদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কাজেই (এখন) তোমরা(ও) তোমাদের উপার্জিত কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করো’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪০
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اسۡتَکۡبَرُوۡا عَنۡہَا لَا تُفَتَّحُ لَہُمۡ اَبۡوَابُ السَّمَآءِ وَ لَا یَدۡخُلُوۡنَ الۡجَنَّۃَ حَتّٰی یَلِجَ الۡجَمَلُ فِیۡ سَمِّ الۡخِیَاطِ ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪০. ওই সব লোক, যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং সেগুলোর মোকাবেলায় অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আসমানের দরজাগুলো খোলা হবে না এবং না তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে যতক্ষণ সূচের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করবে না আর অপরাধীদেরকে আমি এরূপে প্রতিফল দিয়ে থাকি।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪০. নিশ্চয়ই যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে এবং সেগুলোর অবাধ্য হয়েছে, তাদের জন্যে না আসমানের (অনুগ্রহ ও গ্রহণযোগ্যতার) দরোজা খোলা হবে আর না তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে, যতক্ষণ না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে (অর্থাৎ যেভাবে এরূপ হওয়া অসম্ভব সেভাবে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাও অসম্ভব)। আর আমরা অপরাধীদেরকে এভাবেই শাস্তি দেই।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪১
لَہُمۡ مِّنۡ جَہَنَّمَ مِہَادٌ وَّ مِنۡ فَوۡقِہِمۡ غَوَاشٍ ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪১. তাদের জন্য আগুনই বিছানা এবং আগুনই উপরের আচ্ছাদন; আর যালিমদেরকে আমি এভাবেই প্রতিফল দিয়ে থাকি।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪১. আর তাদের জন্যে রয়েছে দোযখের (আগুনের) বিছানা এবং তাদের উপর (এরই) আচ্ছাদন থাকবে। আর আমরা যালিমদেরকে এভাবেই শাস্তি দেই।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪২
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَاۤ ۫ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۴۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪২. এবং ওই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং সাধ্য মতো সৎকাজ করেছে, আমি কাউকেও তাঁর সাধ্যতীত ভার অর্পণ করি না। তারা জান্নাতবাসী, তারা সেটার মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪২. আর যারা ঈমান আনে এবং অবিরত নেক আমল করে, আমরা কোনো ব্যক্তিকে তার সাধ্যের বাইরে বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেই না। এরাই জান্নাতের অধিকারী, তারা তাতে চিরকাল থাকবে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৩
وَ نَزَعۡنَا مَا فِیۡ صُدُوۡرِہِمۡ مِّنۡ غِلٍّ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ ۚ وَ قَالُوا الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ ہَدٰىنَا لِہٰذَا ۟ وَ مَا کُنَّا لِنَہۡتَدِیَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ ہَدٰىنَا اللّٰہُ ۚ لَقَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُ رَبِّنَا بِالۡحَقِّ ؕ وَ نُوۡدُوۡۤا اَنۡ تِلۡکُمُ الۡجَنَّۃُ اُوۡرِثۡتُمُوۡہَا بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৩. এবং আমি তাদের বক্ষ থেকে হিংসা বিদ্বেষকে টেনে বের করে নিয়েছি; তাদের জন্য নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে এবং বলবে, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই, যিনি আমাদেরকে এটার পথ দেখিয়েছেন; এবং আমরা পথ পেতাম না যদি আল্লাহ্ না দেখাতেন। নিঃসন্দেহে, আমাদের রবের রসূলগণ সত্য বাণী এনেছেন। এবং ঘোষণা হলো, ‘এ জান্নাত তোমরা ‘উত্তরাধিকার’ (স্বরূপ) পেয়েছো তোমাদের কৃতকর্ম গুলোর প্রতিদান (হিসেবে)।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর (দুনিয়াতে একে অপরের জন্যে) তাদের অন্তরে যে (হিংসা ও) বিদ্বেষ ছিল, আমরা তা বের করে (দূরীভুত করে) দেবো; তাদের (প্রাসাদসমূহের) তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত থাকবে; আর তারা বলবে, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্যে, যিনি আমাদেরকে এ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। আর আমরা (এ মাকাম পর্যন্ত কখনো) পথ পেতাম না, যদি আল্লাহ্ আমাদেরকে হেদায়াত না দিতেন। নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালকের রাসূলগণ সত্য (বার্তা) নিয়ে এসেছিলেন।’ আর (সে দিন) আহ্বান করা হবে, ‘তোমাদেরকে এমন জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, সে (নেক) আমলের কারণে যা তোমরা করতে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৪
وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ اَصۡحٰبَ النَّارِ اَنۡ قَدۡ وَجَدۡنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَہَلۡ وَجَدۡتُّمۡ مَّا وَعَدَ رَبُّکُمۡ حَقًّا ؕ قَالُوۡا نَعَمۡ ۚ فَاَذَّنَ مُؤَذِّنٌۢ بَیۡنَہُمۡ اَنۡ لَّعۡنَۃُ اللّٰہِ عَلَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৪. এবং জান্নাতীবাসীগণ দোযখ বাসীদেরকে ডেকে বলবে, ‘যে সত্য প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে আমাদের রব দিয়েছিলেন তা তো আমরা পেয়েছি। সুতরাং তোমরাও কি পেয়েছো যা তোমাদের প্রতিপালক সত্য প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দিয়েছিলেন?’ তারা বলবে, ‘হাঁ’ এবং মধ্যখানে ঘোষণাকারী ঘোষণা করে দিলো, ‘আল্লাহ্র লা’নত যালিমদের উপর;
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর জান্নাতের অধিবাসীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবে, ‘আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে অঙ্গীকার করেছিলেন, আমরা তো তা বাস্তবিকই সত্য পেয়েছি। অতএব, তোমাদের প্রতিপালক (তোমাদের সাথে) যে অঙ্গীকার করেছিলেন, তোমরা(ও) কি তা সত্য পাওনি?’ তারা বলবে, ‘হ্যাঁ’, অতঃপর তাদের মাঝে এক ঘোষক আহ্বান করবে, ‘যালিমদের উপর আল্লাহ্র অভিসম্পাত।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৫
الَّذِیۡنَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ یَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ۚ وَ ہُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ کٰفِرُوۡنَ ﴿ۘ۴۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৫. যারা আল্লাহ্র পথে বাধা দেয়, তাঁতে বক্রতা অনুসন্ধান করে এবং পরকালকে অস্বীকার করে ‘।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৫. (এরা তারাই) যারা আল্লাহ্র পথে (লোকদেরকে) বাধা দিতো, তাতে কুটিলতা অন্বেষণ করতো এবং তারা পরকালের অস্বীকারকারী ছিল।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৬
وَ بَیۡنَہُمَا حِجَابٌ ۚ وَ عَلَی الۡاَعۡرَافِ رِجَالٌ یَّعۡرِفُوۡنَ کُلًّۢا بِسِیۡمٰہُمۡ ۚ وَ نَادَوۡا اَصۡحٰبَ الۡجَنَّۃِ اَنۡ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ ۟ لَمۡ یَدۡخُلُوۡہَا وَ ہُمۡ یَطۡمَعُوۡنَ ﴿۴۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৬. এবং জান্নাত ও দোযখের মধ্যখানে একটা পর্দা আছে; এবং ‘আ’রাফ’ এ কিছু লোক থাকবে, যারা উভয় দললে তাদের চিহ্নগুলো দ্বারা চিনবে এবং তারা জান্নাতবাসীদেরকে সম্বোধন করে বলবে, ‘শাস্তি (বর্ষিত) হোক তোমাদের উপর’। এরা জান্নাতে প্রবেশ করে নি, অথচ সেটার আকাঙ্খা রাখে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর (জান্নাতী ও জাহান্নামী) উভয়দলের মাঝে একটি পর্দা (অর্থাৎ প্রাচীর) রয়েছে। আর আ’রাফের (অর্থাৎ এ প্রাচীরের) উপর কিছু পুরুষ থাকবে যারা সবাইকে তাদের চিহ্নের মাধ্যমে চিনবে এবং জান্নাতের অধিবাসীদের ডেকে বলবে, ‘তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক’। সে সকল (আ’রাফবাসীরা স্বয়ং এখনো) জান্নাতে প্রবেশ করেনি, তবে তারা (এর) বাসনা করবে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৭
وَ اِذَا صُرِفَتۡ اَبۡصَارُہُمۡ تِلۡقَآءَ اَصۡحٰبِ النَّارِ ۙ قَالُوۡا رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا مَعَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৭. এবং যখন তাদের দৃষ্টি দোযখবাসীদের প্রতি ফিরবে (তখন তারা) বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে যালিমদের সঙ্গী করো না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর যখন তাদের দৃষ্টিসমূহ দোযখীদের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে, তখন তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের সাথে (একত্রিত) করো না’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৮
وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ الۡاَعۡرَافِ رِجَالًا یَّعۡرِفُوۡنَہُمۡ بِسِیۡمٰہُمۡ قَالُوۡا مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡکُمۡ جَمۡعُکُمۡ وَ مَا کُنۡتُمۡ تَسۡتَکۡبِرُوۡنَ ﴿۴۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৮. এবং আ’রাফবাসীগণ কিছু সংখ্যক লোককে, যাদেরকে তাদের চিহ্নসমূহ দ্বারা চিনবে, সম্বোধন করে বলবে, ‘তোমাদের কি কাজে আসলো তোমাদের দল এবং যে অহঙ্কার তোমরা করতে’?
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর আ’রাফবাসী (সে দোযখী) পুরুষদেরকে ডাকবে, যাদেরকে তারা তাদের চিহ্নগুলোর দ্বারা চিনে থাকবে, (তাদেরকে) বলবে, ‘না তোমাদের দলবল তোমাদের কাজে আসতে পারে আর না (সে) অহঙ্কার (তোমাদেরকে বাঁচাতে পারে), যা তোমরা করতে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৪৯
اَہٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ اَقۡسَمۡتُمۡ لَا یَنَالُہُمُ اللّٰہُ بِرَحۡمَۃٍ ؕ اُدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡکُمۡ وَ لَاۤ اَنۡتُمۡ تَحۡزَنُوۡنَ ﴿۴۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৪৯. এরা কি ওই সব লোক, যাদের সম্বন্ধে তোমরা শপথ করে বলতে, ‘আল্লাহ্ তাদের প্রতি তাঁর কোন দয়াই প্রদর্শন করবেন না?’ তাদেরকেই বলা হলো, ‘জান্নাতে প্রবেশ করো! তোমাদের না আছে কোন ভয়, না আছে কোন দুঃখ’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৪৯. তারাই কি সেসব লোক যাদের ব্যাপারে (তাদের কপর্দকহীন অবস্থা দেখে) তোমরা কসম করতে যে, ‘আল্লাহ্ তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহের মাধ্যমে (কখনো) সৌভাগ্যবান করবেন না?’ (শুনে নাও! এখন তাদেরকেই বলা হচ্ছেঃ) ‘তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করো, না তোমাদের কোনো ভয় থাকবে আর না তোমরা চিন্তান্বিত হবে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫০
وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ النَّارِ اَصۡحٰبَ الۡجَنَّۃِ اَنۡ اَفِیۡضُوۡا عَلَیۡنَا مِنَ الۡمَآءِ اَوۡ مِمَّا رَزَقَکُمُ اللّٰہُ ؕ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ حَرَّمَہُمَا عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿ۙ۵۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫০. এবং দোযখবাসীরা জান্নাতবাসীদেরকে সম্বোধন করে বলবে, ‘আমাদেরকে তোমাদের পানির কিছু ছিটে-ফোটা দাও, অথবা ওই খাদ্য থেকে, যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রদান করেছেন’। বলবে ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ এ দু’টিকে কাফিরদের উপর হারাম করেছেন;
📗 ইরফানুল কুরআন
৫০. আর দোযখের অধিবাসীরা জান্নাতের অধিবাসীদেরকে ডেকে বলবে, ‘আমাদেরকে অনুগ্রহ করো (জান্নাতের) কিছু পানি প্রদান করে অথবা তা থেকে যা (রিযিক হিসেবে) আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রদান করেছেন’। তারা বলবে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এ দুটো (নিয়ামত)ই কাফেরদের জন্যে হারাম করে দিয়েছেন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫১
الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا دِیۡنَہُمۡ لَہۡوًا وَّ لَعِبًا وَّ غَرَّتۡہُمُ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا ۚ فَالۡیَوۡمَ نَنۡسٰہُمۡ کَمَا نَسُوۡا لِقَآءَ یَوۡمِہِمۡ ہٰذَا ۙ وَ مَا کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۵۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫১. যারা তাদের দ্বীনকে ক্রীড়া কৌতুক বানিয়ে নিয়েছে এবং পার্থিব জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে। সুতরাং আজ আমি তাদেরকে পরিত্যাগ করবো যেমনি তারা এ দিনের সাক্ষাতের ধারণা পরিত্যাগের করেছিলো এবং যেমনি আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫১. যারা তাদের ধর্মকে তামাশা ও খেলাধুলা বানিয়ে নিয়েছিল এবং তাদেরকে দুনিয়ার জীবন প্রতারিত করে রেখেছিল।’ আজ আমরা তাদেরকে ভুলে যাবো যেভাবে তারা (আমাদের সাথে) তাদের এ দিনের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিল এবং যেভাবে তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫২
وَ لَقَدۡ جِئۡنٰہُمۡ بِکِتٰبٍ فَصَّلۡنٰہُ عَلٰی عِلۡمٍ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃً لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫২. এবং নিঃসন্দেহে আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব নিয়ে এসেছি, যাকে আমি এক মহাজ্ঞান দ্বারা বিস্তারিতভাবে সুবিন্যস্ত করেছি হিদায়ত ও রহমত ঈমানদারদের জন্য।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫২. আর নিশ্চয়ই আমরা তাদের নিকট আনয়ন করেছি কিতাব (কুরআন) যা আমরা (আমাদের) মহাজ্ঞান (-এর ভিত্তি) অনুসারে (সুস্পষ্ট করে ও) বিশদভাবে বর্ণনা করেছি; ঈমানদারদের জন্যে এটি হেদায়াত ও রহমত।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৩
ہَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا تَاۡوِیۡلَہٗ ؕ یَوۡمَ یَاۡتِیۡ تَاۡوِیۡلُہٗ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ نَسُوۡہُ مِنۡ قَبۡلُ قَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُ رَبِّنَا بِالۡحَقِّ ۚ فَہَلۡ لَّنَا مِنۡ شُفَعَآءَ فَیَشۡفَعُوۡا لَنَاۤ اَوۡ نُرَدُّ فَنَعۡمَلَ غَیۡرَ الَّذِیۡ کُنَّا نَعۡمَلُ ؕ قَدۡ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۵۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৩. তারা কিসের পথ দেখছে? কিন্তু সেটারই যে, এ কিতাবের বর্ণিত পরিনাম সম্মুখে আসবে। যেদিন ওটার বর্ণিত পরিণাম সংঘটিত হবে, সেদিন বলে উঠবে ওই সব লোক, যারা ওটার কথা পূর্বে ভুলে গিয়েছিলো, ‘নিশ্চয় আমাদের রবের রসূলগণ সত্য বাণী নিয়ে এসেছিলেন; সুতরাং আমাদের কি কোন সুপারিশকারী আছে, যারা আমাদের পক্ষে সুপারিশ করবে? অথবা আমাদেরকে কি পুনরায় ফিরে যেতে দেওয়া হবে, যেন আমরা পূর্বের কৃতকর্মের বিপরীত কাজ করি? নিঃসন্দেহে তারা নিজেদের প্রাণকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে এবং তাদের নিকট হারিয়ে গেছে যা অপবাদ তারা রচনা করতো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৩. তারা কেবল (বর্ণিত বিষয়ে) তাদের পরিণতির অপেক্ষা করছে। যেদিন সে (বিষয়ের) পরিণতি সামনে আসবে যারা ইতিপূর্বে তা ভুলে গিয়েছিল তারা বলবে, ‘নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালকের রাসূল সত্য (বিষয়) নিয়ে আগমন করেছিলেন। সুতরাং (আজ) আমাদের কি কোনো সুপারিশকারী আছে, যারা আমাদের জন্যে সুপারিশ করবে? অথবা আমাদেরকে কি (পুনরায় দুনিয়াতে) ফিরিয়ে দেয়া হবে, যাতে আমরা (পূর্বে) যা আমল করতাম (এবার) তার বিপরীত আমল করতে পারি?’ নিশ্চয়ই তারা নিজেরা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তারা যা উদ্ভাবন করতো তাদের থেকে সেসব (মিথ্যা ও বানোয়াট বিষয়) বিলীন হয়ে গেছে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৪
اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ ۟ یُغۡشِی الَّیۡلَ النَّہَارَ یَطۡلُبُہٗ حَثِیۡثًا ۙ وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ وَ النُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِہٖ ؕ اَلَا لَہُ الۡخَلۡقُ وَ الۡاَمۡرُ ؕ تَبٰرَکَ اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۵۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৪. নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ্, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশের উপরে ইস্তিওয়া ফরমান (‘সমাসীন’ হন), যেমনি তাঁর জন্য শোভা পায়; রাত দিনকে একটাকে অপরটা দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, যাতে সেটার পেছনে দ্রুত সংলগ্ন হয়ে আসে এবং সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন, সবই তাঁর নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য। শুনো! তাঁরই হাতে রয়েছে সৃষ্টি করা এবং নির্দেশ দেওয়া। আল্লাহ্ বড়ই বরকতময়, যিনি রব সমগ্র সৃষ্টি জগতের।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৪. নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী (এবং এর মধ্যস্থিত সৃষ্টিজগতকে) ছয়টি সময়সীমায় (অর্থাৎ ছয়টি পর্যায়কালে) সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর (তাঁর মর্যাদা অনুসারে) আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন (অর্থাৎ এ বিশ্বজগতে স্বীয় সার্বভৌম শাসন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন)। তিনিই রাত্রি দ্বারা দিবসকে আচ্ছাদিত করেন, (এ অবস্থায় যে, দিন ও রাত) একে অপরকে দ্রুততার সাথে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চাঁদ এবং তারকারাজি (সবকিছু) তাঁরই নির্দেশে (একটি নিয়মের) বশীভুত। সাবধান! (প্রত্যেক বস্তুর) সৃষ্টি, পরিকল্পনা, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের নিয়ম পরিচালনা তাঁরই কাজ। আল্লাহ্ বড়ই বরকতময়, যিনি সমগ্র জগতকে (পর্যায়ক্রমে) লালনপালনকারী।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৫
اُدۡعُوۡا رَبَّکُمۡ تَضَرُّعًا وَّ خُفۡیَۃً ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿ۚ۵۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৫. স্বীয় রবের দরবারে দো’আ প্রার্থনা করো বিনীতভাবে এবং গোপনে। নিশ্চয় সীমাতিক্রমকারীগণ তাঁর নিকট পছন্দনীয় নয়।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৫. তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট (অত্যন্ত) বিনীতভাবে এবং সংগোপনে (উভয় পন্থায়) প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৬
وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا وَ ادۡعُوۡہُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۵۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৬. এবং যমীনের মধ্যে ফ্যাসাদ ছড়িয়ো না তাঁতে শাস্তি প্রতিষ্ঠার পর এবং তাঁর নিকট দো’আ প্রার্থনা করো ভীত ও আশাবাদী হয়ে। নিশ্চয় আল্লাহ্র দয়া সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৬. আর সুশৃঙ্খল হয়ে যাওয়ার পর (অর্থাৎ রাষ্ট্রে জীবনধারার পরিবেশ সংস্কারের পর) ভু-পৃষ্ঠে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। আর (তাঁর শাস্তিকে) ভয় করে এবং (তাঁর রহমতের) আশা করে তাঁর নিকট দু’আ করতে থাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্র অনুগ্রহ পূণ্যবানদের (অর্থাৎ আত্মিক উৎকর্ষতা অর্জনকারীদের) নিকটবর্তী।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৭
وَ ہُوَ الَّذِیۡ یُرۡسِلُ الرِّیٰحَ بُشۡرًۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَقَلَّتۡ سَحَابًا ثِقَالًا سُقۡنٰہُ لِبَلَدٍ مَّیِّتٍ فَاَنۡزَلۡنَا بِہِ الۡمَآءَ فَاَخۡرَجۡنَا بِہٖ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ ؕ کَذٰلِکَ نُخۡرِجُ الۡمَوۡتٰی لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۵۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৭. এবং তিনিই হন, যিনি বায়ুসমূহ প্রেরণ করেন তাঁর দয়ার প্রাক্কালে সুসংবাদ শুনানোর জন্য; শেষ পর্যন্ত, যখন সেগুলো ভারী বাদল বহন করে নিয়ে আসে তখন আমি সেটাকে কোন নির্জীব শহরের দিকে চালনা করি; অতঃপর তা থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তাঁরপর তা দ্বারা বিভিন্ন প্রকারের ফল উৎপন্ন করি। অনুরূপভাবে, আমি মৃতদেরকে বের করবো; যাতে তোমরা উপদেশ মান্যকরো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর তিনিই স্বীয় রহমতের (অর্থাৎ বৃষ্টির) পূর্বে বায়ুকে সুসংবাদ হিসেবে প্রেরণ করেন। অবশেষে যখন এ (বাতাস) ভারী মেঘমালাকে বহন করে নিয়ে আসে তখন আমরা একে (এ মেঘমালাকে) কোনো মৃত (অর্থাৎ শুষ্ক ও অনুর্বর) ভু-খন্ডের দিকে প্রেরণ করি। অতঃপর আমরা এ (মেঘমালা) থেকে বারিধারা বর্ষণ করি, এরপর আমরা এর দ্বারা (ভুমি থেকে) সকল প্রকারের ফলাদি উৎপন্ন করি। এভাবে আমরা (কিয়ামতের দিন) মৃতদেরকে (কবর) থেকে উত্তোলন করবো, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৮
وَ الۡبَلَدُ الطَّیِّبُ یَخۡرُجُ نَبَاتُہٗ بِاِذۡنِ رَبِّہٖ ۚ وَ الَّذِیۡ خَبُثَ لَا یَخۡرُجُ اِلَّا نَکِدًا ؕ کَذٰلِکَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّشۡکُرُوۡنَ ﴿۵۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৮. এবং যা উৎকৃষ্ট জমি হয়, সেটার সবুজজাত (ফসল) আল্লাহ্র নির্দেশেই উৎপন্ন হয় এবং যা নিকৃষ্ট, সেটার মধ্যে উৎপন্ন হয় না, কিন্তু অল্প, অতিকষ্টের বিনিময়ে। আমি এরূপে বিভিন্নভাবে নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করি তাদের জন্য, যারা অকৃতজ্ঞ।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর উৎকৃষ্ট (অর্থাৎ উর্বর) ভুমিতে আল্লাহ্র নির্দেশে (প্রচুর পরিমাণে) ফসলাদি উৎপন্ন হয়, তবে যে (ভুমি) নিকৃষ্ট তাতে যৎসামান্য জঞ্জাল ব্যতীত অন্য কিছুই উৎপন্ন হয় না। এভাবে আমরা (আমাদের) আয়াতসমূহ (অর্থাৎ প্রমাণ ও নিদর্শনসমূহ) সেসব লোকদের জন্যে বারবার বর্ণনা করি, যারা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৫৯
لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖ فَقَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۵۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৫৯. নিশ্চয় আমি নূহকে তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি, অতঃপর সে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর মহা দিনের শাস্তির আশঙ্কা করেছি’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৫৯. নিশ্চয়ই আমরা নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের কোনো উপাস্য নেই। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের উপর এক ভয়ঙ্কর দিবসের শাস্তির আশঙ্কা করছি।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬০
قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِہٖۤ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬০. তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানগণ বললো, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাকে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে দেখছি’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬০. তাঁর সম্প্রদায়ের সরদার ও নেতৃস্থানীয়রা বললো, ‘(হে নূহ!) নিশ্চয়ই আমরা তোমাকে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে (নিমজ্জিত) দেখছি’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬১
قَالَ یٰقَوۡمِ لَیۡسَ بِیۡ ضَلٰلَۃٌ وَّ لٰکِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬১. বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার মধ্যে কোন ভ্রান্তি নেই, আমি তো সৃষ্টি জগৎগুলোর রবের রসূল।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬১. তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার মধ্যে কোনো গোমরাহী নেই, কিন্তু (প্রকৃত সত্য হলো) আমি সমগ্র জগতের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রাসূল (হিসেবে প্রেরিত হয়েছি)।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬২
اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنۡصَحُ لَکُمۡ وَ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬২. তোমাদের নিকট আপন রবের বাণীসমূহ পৌছাচ্ছি এবং তোমাদের কল্যাণ কামনা করছি, আর আমি আল্লাহ্র নিকট থেকে ওই জ্ঞান রাখি, যা তোমরা রাখো না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬২. আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিপালকের বার্তাসমূহ পৌঁছে দিচ্ছি এবং তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি। আর আমি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জানো না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৩
اَوَ عَجِبۡتُمۡ اَنۡ جَآءَکُمۡ ذِکۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ مِّنۡکُمۡ لِیُنۡذِرَکُمۡ وَ لِتَتَّقُوۡا وَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۶۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৩. এবং তোমাদের কি এর উপর বিস্ময় হয়েছে যে, ‘তোমাদের নিকট তোমাদের রবের নিকট থেকে একটা উপদেশ এসেছে তোমাদের মধ্য থেকে এজন পুরুষের মাধ্যমে, যাতে তিনি তোমাদেরকে সতর্ক করেন এবং তোমরা ভয় করো আর যাতে তোমাদের উপর দয়া হয়?’
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৩. তোমরা কি এ বিষয়ে বিস্মিত যে, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদেরই একজন পুরুষের (জবানের) মাধ্যমে তোমাদের প্রতি উপদেশ এসেছে; যাতে তিনি তোমাদেরকে (আল্লাহ্র শাস্তির ব্যাপারে) সতর্ক করেন, তোমরা পরহেযগারিতা অর্জন করো এবং যাতে তোমাদের উপর অনুগ্রহ করা হয়?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৪
فَکَذَّبُوۡہُ فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ وَ اَغۡرَقۡنَا الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا عَمِیۡنَ ﴿۶۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৪. অতঃপর তারা তাকে অস্বীকার করেছে। তাঁরপর আমি তাকে ও যারা তাঁর সাথে কিশ্তীতে ছিলো তাদেরকে রক্ষা করেছি; এবং আহার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের নিমজ্জিত করেছি। নিশ্চয় তারা ছিলো এক অন্ধ সম্প্রদায়।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৪. অতঃপর সেসব লোক তাঁকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করলো। সুতরাং আমরা তাঁকে এবং তাঁর সাথে যারা নৌকায় ছিল তাদেরকে উদ্ধার করলাম; আর সেসব লোককে ডুবিয়ে দিলাম, যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। নিশ্চয়ই তারা ছিল (অন্তর্দৃষ্টিহীন) অন্ধ সম্প্রদায়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৫
وَ اِلٰی عَادٍ اَخَاہُمۡ ہُوۡدًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اَفَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۶۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৫. এবং ‘আদ’এর প্রতি তাদের ভ্রাতৃ সম্পর্ক থেকে হূদকে প্রেরণ করেছি। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো! তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই। তবে, তোমাদের কি ভয় নেই?’
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৫. আর আমরা ’আদ (সম্প্রদায়)-এর প্রতি তাদের (জ্ঞাতি) ভাই হূদ (আলাইহিস সালাম)-কে (প্রেরণ করেছিলাম)। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো; তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। তোমরা কি পরহেযগার হবে না?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৬
قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖۤ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡ سَفَاہَۃٍ وَّ اِنَّا لَنَظُنُّکَ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۶۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৬. তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানগণ বললো, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাকে নির্বোধ মনে করি এবং নিশ্চয় আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদীদের মধ্য গণ্য করি’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৬. তাঁর সম্প্রদায়ের সরদার ও নেতৃস্থানীয়রা, যারা কুফরী করছিল (অর্থাৎ সত্যের আহ্বানের বিরোধীতা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিল), তারা বললো, ‘(হে হূদ!) নিশ্চয়ই আমরা তোমাকে নির্বুদ্ধিতায় (নিমজ্জিত) দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা ধারণা করছি নিশ্চয়ই তুমি মিথ্যাবাদীদের একজন’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৭
قَالَ یٰقَوۡمِ لَیۡسَ بِیۡ سَفَاہَۃٌ وَّ لٰکِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৭. বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়, নির্বোধ হবার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি তো বিশ্ব-প্রতিপালকের রসূল।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৭. তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার মধ্যে কোনো নির্বুদ্ধিতা নেই, কিন্তু (প্রকৃত সত্য হলো) আমি সমগ্র জগতের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) রাসূল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৮
اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنَا لَکُمۡ نَاصِحٌ اَمِیۡنٌ ﴿۶۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৮. তোমাদেরকে আমার রবের বাণীসমূহ পৌছাচ্ছি এবং আমি তোমাদের একজন বিশ্বস্ত হিতাকাঙ্কী।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৮.আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিপালকের বার্তাসমূহ পৌঁছে দিচ্ছি আর আমি তোমাদের বিশ্বস্ত হিতাকাঙ্ক্ষী।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৬৯
اَوَ عَجِبۡتُمۡ اَنۡ جَآءَکُمۡ ذِکۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ مِّنۡکُمۡ لِیُنۡذِرَکُمۡ ؕ وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ جَعَلَکُمۡ خُلَفَآءَ مِنۡۢ بَعۡدِ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّ زَادَکُمۡ فِی الۡخَلۡقِ بَصۜۡطَۃً ۚ فَاذۡکُرُوۡۤا اٰلَآءَ اللّٰہِ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۶۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৬৯. এবং তোমাদের কি এটার উপর বিস্ময় হয়েছে যে, তোমাদের কাছে তোমাদের রবের নিক থেকে একটা উপদেশ এসেছে তোমাদের মধ্য থেকে একজন পুরুষের মাধ্যমে এ জন্য যে, তোমাদেরকে সতর্ক করবে? এবং স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করেছেনে এবং তোমাদের গড়নের মধ্যে প্রশস্ততা বৃদ্ধি করেছেন। সুতরাং আল্লাহ্র নি’মাতগুলো স্মরন করো, যাতে তোমাদের মঙ্গল হয়’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৬৯. তোমরা কি এ বিষয়ে বিস্মিত যে, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদেরই একজন পুরুষের (জবানের) মাধ্যমে তোমাদের প্রতি উপদেশ এসেছে, যাতে তিনি তোমাদেরকে (আল্লাহ্র শাস্তির ব্যাপারে) সতর্ক করেন? আর স্মরণ করো, যখন তিনি নূহের সম্প্রদায়ের পর তোমাদেরকে (পৃথিবীতে) স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদের সৃষ্টিতে (গঠন-উচ্চতা ও) শক্তিতে অধিকতর সমৃদ্ধ করেছেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র নিয়ামতগুলোকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পারো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭০
قَالُوۡۤا اَجِئۡتَنَا لِنَعۡبُدَ اللّٰہَ وَحۡدَہٗ وَ نَذَرَ مَا کَانَ یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا ۚ فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۷۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭০. (তারা) বললো, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এ উদ্দেশ্যে এসেছো যে, আমরা এক আল্লাহ্রই ইবাদত করবো এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণ যাদের ইবাদত করতো তাদেরকে ছেড়ে দেবো? সুতরাং নিয়ে এসো (সেটা) যার প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে দিচ্ছো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭০. তারা বলতে লাগলো, ‘তুমি কি আমাদের নিকট (এ জন্যে) এসেছো, যাতে আমরা কেবল এক আল্লাহ্র ইবাদত করি এবং সে সব (উপাস্য) পরিহার করি, আমাদের পূর্বপুরুষগণ যেগুলোর উপাসনা করতো? সুতরাং তুমি আমাদের নিকট (শাস্তিস্বরূপ) তা নিয়ে আসো যার সতর্কবাণী তুমি আমাদেরকে শুনাচ্ছো, যদি তুমি সত্যবাদী লোকদের অন্তর্ভুক্ত হও।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭১
قَالَ قَدۡ وَقَعَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ رِجۡسٌ وَّ غَضَبٌ ؕ اَتُجَادِلُوۡنَنِیۡ فِیۡۤ اَسۡمَآءٍ سَمَّیۡتُمُوۡہَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّا نَزَّلَ اللّٰہُ بِہَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ فَانۡتَظِرُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿۷۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭১. বললো, ‘নিশ্চয় তোমাদের উপর তোমাদের রবের শাস্তি এবং ক্রোধ পতিত হয়ে গেছে; তবে কি তোমরা আমার সাথে শুধু ওই সব নাম সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছো যেগুলো তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষ রচনা করে রেখেছো, আল্লাহ্ সেগুলোর কোন সনদ অবতাঁরণ করেন নি? সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭১. তিনি বললেন, ‘অবশ্যই তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে শাস্তি ও ক্রোধ অনিবার্য হয়ে গিয়েছে। তোমরা কি আমার সাথে সেসব (মূর্তির) নামের ব্যাপারে ঝগড়া করছো, যা তোমরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষগণ (নিজেরাই কল্পনানুসারে) রেখেছো এবং যার কোনো প্রমাণ আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেননি? সুতরাং তোমরা (শাস্তির) অপেক্ষা করো, আমি(ও) তোমাদের সাথে অপেক্ষমান।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭২
فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ قَطَعۡنَا دَابِرَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ مَا کَانُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۷۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭২. অতঃপর আমি তাকে এবং তাঁর সঙ্গীদেরকে স্বীয় এক মহা দয়া পূর্বক উদ্ধার করেছি এবং যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতো তাদেরকে নির্মূল করেছি আর তারা ঈমান আনয়নকারী ছিলো না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭২. অতঃপর আমরা তাঁকে এবং তাঁর সাথের লোকদেরকে আমাদের অনুগ্রহ দ্বারা উদ্ধার করলাম এবং ওই লোকদের শিকড় কেটে দিলাম, যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। আর তারা কখনোই ঈমানদার ছিল না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৩
وَ اِلٰی ثَمُوۡدَ اَخَاہُمۡ صٰلِحًا ۘ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ ؕ ہٰذِہٖ نَاقَۃُ اللّٰہِ لَکُمۡ اٰیَۃً فَذَرُوۡہَا تَاۡکُلۡ فِیۡۤ اَرۡضِ اللّٰہِ وَ لَا تَمَسُّوۡہَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۷۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৩. এবং ‘সামূদ’ (সম্প্রদায়) এর প্রতি তাদের ভ্রাতৃ সম্পর্ক থেকে ‘সালিহ’-কে প্রেরণ করেছি। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো, যিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই। নিশ্চয়, তোমাদের কাছে তোমাদের রবের নিকট থেকে উজ্জ্বল নিদর্শন এসেছে, এটা ‘আল্লাহ্র উট্নী’, তোমাদের জন্য নিদর্শন। সুতরাং ওটাকে ছেড়ে দাও, যাতে আল্লাহ্র যমীনের মধ্যে চরে খায় এবং সেটার গায়ে মন্দভাবে হাত লাগাবে না, যার ফলে তোমাদের উপর বেদনাদায়ক শাস্তি আসবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৩. আর সামূদ (সম্প্রদায়)-এর প্রতি তাদের (জ্ঞাতি) ভাই সালেহ্ (আলাইহিস সালাম)-কে (প্রেরণ করেছিলাম)। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো; তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এক সমুজ্জ্বল প্রমাণ আগমন করেছে। আল্লাহ্র এ উটনী তোমাদের জন্যে নিদর্শন। সুতরাং তোমরা একে ছেড়ে দাও যেন আল্লাহ্র পৃথিবীতে (স্বাধীনভাবে) চড়ে বেড়ায় এবং অনিষ্টের (সংকল্পে) একে স্পর্শ করো না, নচেৎ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পাকড়াও করবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৪
وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ جَعَلَکُمۡ خُلَفَآءَ مِنۡۢ بَعۡدِ عَادٍ وَّ بَوَّاَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ تَتَّخِذُوۡنَ مِنۡ سُہُوۡلِہَا قُصُوۡرًا وَّ تَنۡحِتُوۡنَ الۡجِبَالَ بُیُوۡتًا ۚ فَاذۡکُرُوۡۤا اٰلَآءَ اللّٰہِ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۷۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৪. এবং স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদেরকে ‘আদ (সম্প্রদায়) এর স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং রাজ্যের মধ্যে স্থান দিয়েছেন- নরম জমিতে প্রাসাদ তৈরী করছো এবং পাহাড় কেটে বাসগৃহ নির্মাণ করছো। সুতরাং আল্লাহ্র অনুগ্রহগুলোকে স্মরণ করো; এবং পৃথিবীতে ফ্যাসাদকারী হয়ে বিচরণ করো না।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৪. আর স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদেরকে ’আদ (সম্প্রদায়)-এর পর (পৃথিবীতে) উত্তরাধিকারী করেছেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিষ্ঠত করেছেন যে, তোমরা এর নরম (প্রশস্ত) এলাকায় প্রাসাদ নির্মাণ করো এবং পাহাড় কেটে (তাতে) গৃহ নির্মাণ করো। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র (সে) নিয়ামতগুলোকে স্মরণ করো এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৫
قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لِلَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِمَنۡ اٰمَنَ مِنۡہُمۡ اَتَعۡلَمُوۡنَ اَنَّ صٰلِحًا مُّرۡسَلٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قَالُوۡۤا اِنَّا بِمَاۤ اُرۡسِلَ بِہٖ مُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۷۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৫. তাঁর সম্প্রদায়ের মধ্যে দাম্ভিকগণ দুর্বল মুসলমানদেরকে বললো, ‘তোমরা কি জানো যে, সালিহ তাঁর রবের রসূল? (তারা) বললো, ‘যা কিছু নিয়ে তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে আমরা তাঁর উপর ঈমান রাখি’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৫. তাঁর সম্প্রদায়ের অহঙ্কারী ও অবাধ্য নেতৃস্থানীয় সরদারেরা তাদের মধ্যকার ঈমানদার গরীব ও অবহেলিত লোকদেরকে বললো, ‘তোমাদের কি বিশ্বাস হয় যে, সালেহ (আলাইহিস সালাম)-কে সত্যিই তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে?’ তারা বললো, ‘নিশ্চয়ই, যা কিছু দিয়ে তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে আমরা সেসব কিছুর উপর ঈমান আনয়নকারী’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৬
قَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡۤا اِنَّا بِالَّذِیۡۤ اٰمَنۡتُمۡ بِہٖ کٰفِرُوۡنَ ﴿۷۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৬. দাম্ভিকরা বললো, ‘তোমরা যার উপর ঈমান আনছো আমরা তা বিশ্বাস করি না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৬. অহঙ্কারী লোকেরা বলতে লাগলো, ‘নিশ্চয়ই যার উপর (অর্থাৎ যে বিষয়ের উপর) তোমরা ঈমান আনয়ন করেছো, আমরা তার কঠোর অস্বীকারকারী’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৭
فَعَقَرُوا النَّاقَۃَ وَ عَتَوۡا عَنۡ اَمۡرِ رَبِّہِمۡ وَ قَالُوۡا یٰصٰلِحُ ائۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۷۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৭. অতঃপর তারা উট্নীর গোছগুলো কেটে ফেললো এবং আপন রবের নির্দেশের প্রতি অবাধ্যতা প্রদর্শন করলো আর বললো, ‘হে সালিহ! আমাদের উপর নিয়ে এসো যেটার তুমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছো যদি তুমি রসূল হও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৭. অতঃপর তারা উটনীটিকে (পা কেটে দিয়ে) হত্যা করলো, তাদের প্রতিপালকের নির্দেশের অবাধ্য হলো এবং বলতে লাগলো, ‘হে সালেহ! আমাদেরকে যার (অর্থাৎ যে শাস্তির) ভয় দেখাচ্ছো তা আমাদের কাছে নিয়ে এসো, যদি তুমি (বাস্তবিকই) রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকো’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৮
فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿۷۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৮. অতঃপর তাদেরকে ভূমিকম্প পেয়ে বসলো। ফলে, প্রভাতে তারা তাদের ঘরগুলোর মধ্যে অধোঃমুখে পতিত অবস্থায় রয়ে গেলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৮. সুতরাং তাদেরকে ভয়ানক (শাস্তি) ভুমিকম্প এসে পাকড়াও করলো, অতঃপর তারা (ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে) প্রভাতে তাদের গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৭৯
فَتَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰقَوۡمِ لَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ رِسَالَۃَ رَبِّیۡ وَ نَصَحۡتُ لَکُمۡ وَ لٰکِنۡ لَّا تُحِبُّوۡنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿۷۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৭৯. অতঃপর সালিহ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো এবং বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়, নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট আমার রবের ‘রিসালাত’ পৌছিয়ে দিয়েছি এবং তোমাদের মঙ্গল কামনা করেছি; কিন্তু তোমরা হিতাকাঙ্খীদের কল্যাণ পছন্দই করো না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৭৯. অতঃপর (সালেহ্ আলাইহিস সালাম) তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং উপদেশ(ও) প্রদান করেছিলাম অথচ তোমরা পরামর্শদাতাদের পছন্দ(ই) করো না।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮০
وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖۤ اَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ مَا سَبَقَکُمۡ بِہَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۸۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮০. এবং লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে আপন সম্প্রদায়কে বললো, ‘তোমরা কি ওই নির্লজ্জ কাজ করছো, যা তোমাদের পুর্বে বিশ্বের মধ্যে কেউ করে নি?’
📗 ইরফানুল কুরআন
৮০. আর (এভাবে আমরা) লূত (আলাইহিস সালাম)-কেও (প্রেরণ করেছিলাম), যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা কি (এমন) অশ্লীলতায় লিপ্ত রয়েছো যা তোমাদের পূর্বে জগতবাসীদের মধ্য থেকে কেউই করেনি?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮১
اِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ شَہۡوَۃً مِّنۡ دُوۡنِ النِّسَآءِ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ مُّسۡرِفُوۡنَ ﴿۸۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮১. তোমরা তো পুরুষদের নিকট কাম তৃপ্তির উদ্দেশ্যে গমন করছো নারীদেরকে ছেড়ে; বরং তোমরা সীমালঙ্ঘন করে গেছো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮১. নিশ্চয়ই তোমরা কুপ্রবৃত্তির বাসনা চরিতার্থ করার জন্যে নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষদের কাছে গমন করছো। সত্যিই তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮২
وَ مَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اَخۡرِجُوۡہُمۡ مِّنۡ قَرۡیَتِکُمۡ ۚ اِنَّہُمۡ اُنَاسٌ یَّتَطَہَّرُوۡنَ ﴿۸۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮২. এবং তাঁর সম্প্রদায়ের কোন উত্তরই ছিলো না, কিন্তু এ কথাই বলা যে, ‘তাদেরকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও! এসব লোক তো পবিত্রতা চায়’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮২. আর তাঁর সম্প্রদায়ের এ ছাড়া কোনো উত্তর ছিল না যে, তারা বলতে লাগলো, ‘তাদেরকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও, নিশ্চয়ই এ সকল লোক অত্যধিক পূতঃপবিত্র সাজতে চায়’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৩
فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ اَہۡلَہٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَہٗ ۫ۖ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۸۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৩. এবং আমি তাকে এবং তাঁর পরিবার পরিজনকে রক্ষা করেছি, কিন্তু তাঁর স্ত্রী; সে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৩. অতঃপর আমরা তাঁকে (অর্থাৎ লূত আলাইহিস সালামকে) এবং তাঁর পরিবারকে উদ্ধার করলাম, তবে তাঁর স্ত্রীকে ব্যতীত; সে শাস্তিতে নিমজ্জিতদের মধ্যে রয়ে গিয়েছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৪
وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ مَّطَرًا ؕ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۸۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৪. এবং আমি তাদের উপর এক (প্রকার) বৃষ্টি বর্ষণ করেছি। সুতরাং দেখো অপরাধীদের কী পরিণাম হলো!
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৪. আর আমরা তাদের উপর (প্রস্তরের) বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। সুতরাং লক্ষ্য করুন, অপরাধীদের পরিণতি কেমন হয়েছিল!
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৫
وَ اِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاہُمۡ شُعَیۡبًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَ الۡمِیۡزَانَ وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَہُمۡ وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿ۚ۸۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৫. এবং মাদ্য়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভ্রাতৃ সম্পর্ক থেকে শো’আয়বকে প্রেরণ করেছি। বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই। নিশ্চয় তোমাদের কাছে তোমাদের রবের নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। সুতরাং (তোমরা) মাপ ও ওজন পরিপূর্ণভাবে করো এবং লোকদের পণ্যসমূহ কম দিও না আর যমীনের মধ্যে শৃংখলা প্রতিষ্ঠার পর ফ্যাসাদ ছড়িয়ো না; এটা তোমাদের জন্য কল্যাণই, যদি ঈমান আনো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৫. আর মাদইয়ানে (আমরা প্রেরণ করেছিলাম) তাদের (জ্ঞাতি) ভাই শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-কে। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো; তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে সমুজ্জ্বল প্রমাণ। সুতরাং তোমরা পরিমাপ ও ওযন পূর্ণ মাত্রায় দাও, মানুষকে তাদের প্রাপ্য পণ্য কমিয়ে দিও না এবং পৃথিবীতে (জীবন ধারণের পরিবেশ) সংস্কার হয়ে যাওয়ার পর বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। তা তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা (আল্লাহ্র এ বার্তা) মান্য করো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৬
وَ لَا تَقۡعُدُوۡا بِکُلِّ صِرَاطٍ تُوۡعِدُوۡنَ وَ تَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ مَنۡ اٰمَنَ بِہٖ وَ تَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ۚ وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ کُنۡتُمۡ قَلِیۡلًا فَکَثَّرَکُمۡ ۪ وَ انۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৬. এবং প্রত্যেক পথের উপর এভাবে বসো না যে, পথিকদেরকে ভয় প্রদর্শন করবে, আল্লাহ্র পথে তাদেরকে বাধা দেবে যারা তাঁর উপর ঈমান এনেছে এবং সেটার মধ্যে বক্রতা অনুসন্ধান করবে। আর স্মরণ করো, যখন তোমরা সংখ্যায় কম ছিলে, আল্লাহ্ তখন তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন; এবং দেখো, ফ্যাসাদকারীদের পরিণাম কীরূপ হয়েছে!
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৬. আর তোমরা প্রতিটি রাস্তায় অবস্থান নিও না (এ দাওয়াত)-এর উপর ঈমান আনয়নকারী ব্যক্তিকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে, (তাকে) আল্লাহ্র পথে বাধা দিতে এবং (তাকে সত্য দ্বীন থেকে ধর্মদ্রোহী ও বীতশ্রদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এ দাওয়াত)-এর মধ্যে কুটিলতা অন্বেষণ করতে। আর (আল্লাহ্র অনুগ্রহ) স্মরণ করো, যখন তোমরা সংখ্যায় স্বল্প ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে আধিক্যতা দান করেছেন। আর লক্ষ্য করো, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কেমন হয়েছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৭
وَ اِنۡ کَانَ طَآئِفَۃٌ مِّنۡکُمۡ اٰمَنُوۡا بِالَّذِیۡۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖ وَ طَآئِفَۃٌ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا فَاصۡبِرُوۡا حَتّٰی یَحۡکُمَ اللّٰہُ بَیۡنَنَا ۚ وَ ہُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۸۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৭. এবং যদি তোমাদের মধ্যে একটা দল সেটার উপর ঈমান আনে, যা নিয়ে আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে, আর একটা দল তা মানে নি, তবে ধৈর্যধারণ করে থাকো, যতক্ষণ না আল্লাহ্ আমাদের মধ্যে মীমাংসা করবেন এবং আল্লাহ্র মীমাংসা সবচেয়ে উত্তম।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৭. আর যদি তোমাদের মধ্যে কোনো এক দল এতে (এই দ্বীনে) ঈমান আনয়ন করে যা সহকারে আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অন্য দল এতে ঈমান আনয়ন না করে, তবে (হে ঈমানদারগণ!) ধৈর্যধারণ করো, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্ আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দেন। আর তিনি সবচেয়ে উত্তম ফায়সালাকারী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৮
قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لَنُخۡرِجَنَّکَ یٰشُعَیۡبُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَکَ مِنۡ قَرۡیَتِنَاۤ اَوۡ لَتَعُوۡدُنَّ فِیۡ مِلَّتِنَا ؕ قَالَ اَوَ لَوۡ کُنَّا کٰرِہِیۡنَ ﴿۟۸۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৮. তাঁর সম্প্রদায়ের দাম্ভিক প্রধানগণ বললো, ‘হে শো’আয়ব! শপথ ( এ কথার উপর) যে, আমরা তোমাকে এবং তোমার সাথী মুসলমানদেরকে আমাদের জনপদ থেকে বের করে দেবো অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে এসে যাও’। বললো, ‘যদিও আমরা ঘৃণা করি তবুও কি?
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৮.তাঁর সম্প্রদায়ের অবাধ্য ও অহঙ্কারী সরদার ও নেতৃস্থানীয়রা বললো, ‘হে শুয়াইব! আমরা তোমাকে এবং তোমার সাথে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে আমাদের জনপদ থেকে যেভাবেই হোক বের করে দেবো নতুবা তোমাদেরকে আমাদের ধর্মবিশ্বাসে ফিরে আসতে হবে।’ শুয়াইব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘যদিও আমরা (তোমাদের ধর্মবিশ্বাসে ফিরে যেতে) অপছন্দ করি?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৮৯
قَدِ افۡتَرَیۡنَا عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اِنۡ عُدۡنَا فِیۡ مِلَّتِکُمۡ بَعۡدَ اِذۡ نَجّٰنَا اللّٰہُ مِنۡہَا ؕ وَ مَا یَکُوۡنُ لَنَاۤ اَنۡ نَّعُوۡدَ فِیۡہَاۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ رَبُّنَا ؕ وَسِعَ رَبُّنَا کُلَّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ؕ عَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡنَا ؕ رَبَّنَا افۡتَحۡ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَ قَوۡمِنَا بِالۡحَقِّ وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡفٰتِحِیۡنَ ﴿۸۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৮৯. অবশ্যই আমরা তো আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করবো যদি তোমাদের দ্বীনে এসে যাই এরপর যে, আল্লাহ্ আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন এবং আমাদের মধ্যে কারো কাজ নয় যে, তোমাদের ধর্মে আসবো, কিন্তু আল্লাহ্ চাইলে, যিনি আমাদের রব। আমাদের রবের জ্ঞান সব কিছুকে আয়ত্ব করে আছে। আমরা আল্লাহ্রই উপর নির্ভর করেছি। হে আমাদের রব! আমাদের এবং আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ন্যায্য ফয়সালা করে দাও এবং তোমার ফয়সালাই সর্বাপেক্ষা উত্তম।
📗 ইরফানুল কুরআন
৮৯.তবে নিশ্চিতভাবে আমরা আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করবো যদি আল্লাহ্ আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করার পর আমরা তোমাদের ধর্মবিশ্বাসে ফিরে যাই। আর আমাদের জন্যে কখনো (সমীচিন) হবে না যে, আমরা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র ইচ্ছা ব্যতীত তাতে (অর্থাৎ সে ধর্মবিশ্বাসে) ফিরে যাই। আমাদের প্রতিপালক স্বীয় জ্ঞান দ্বারা সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন; আমরা আল্লাহ্রই উপর ভরসা করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এবং আমাদের (প্রতিপক্ষ) সম্প্রদায়ের মাঝে সত্য সহকারে ফায়সালা করে দাও। আর তুমি সবচেয়ে উত্তম ফায়সালাকারী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯০
وَ قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لَئِنِ اتَّبَعۡتُمۡ شُعَیۡبًا اِنَّکُمۡ اِذًا لَّخٰسِرُوۡنَ ﴿۹۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯০. এবং তাঁর সম্প্রদায়ের কাফির প্রধানগণ বললো, ‘যদি তোমরা শো’আয়বের অনুসারী হও তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে থাকবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯০. আর তাঁর সম্প্রদায়ের কুফরীতে (এবং অস্বীকারে) লিপ্ত সরদার ও নেতৃস্থানীয়রা বললো, ‘(হে মানুষেরা!) যদি তোমরা শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-এঁর আনুগত্য করো, তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯১
فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۚۖۛ۹۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯১. অতঃপর তাদেরকে ভূমিকম্প পেয়ে বসলো। ফলে, প্রভাতে তারা আপন আপন ঘরে অধোমুখে পতিত অবস্থায় রয়ে গেলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯১. অতঃপর (শাস্তিস্বরূপ) তাদেরকে ভয়ঙ্কর ভুমিকম্প গ্রাস করলো, সুতরাং তারা প্রভাতে (ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে) নিজেদের গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯২
الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا شُعَیۡبًا کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ۚۛ اَلَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا شُعَیۡبًا کَانُوۡا ہُمُ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۹۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯২. শো’আয়বকে অস্বীকারীগণ যেন ওই সব ঘরের মধ্যে কখনো বসবাসই করেনি; শো’আয়বকে অস্বীকারকারীরাই ধ্বংসে পতিত হলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯২. যারা শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-কে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল (তারা এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হলো যে,) যেন তারা এতে (এ জনপদে কখনো) বসবাসই করেনি। যে সকল লোক শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-কে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল (প্রকৃতপক্ষে) তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৩
فَتَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰقَوۡمِ لَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ نَصَحۡتُ لَکُمۡ ۚ فَکَیۡفَ اٰسٰی عَلٰی قَوۡمٍ کٰفِرِیۡنَ ﴿۹۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৩. অতঃপর শো’আয়ব তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো এবং বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের নিকট আমার রবের (প্রেরিত) বাণী পৌছিয়েছি এবং তোমাদের মঙ্গলের জন্য উপদেশ দিয়েছি; সুতরাং (আমি) কি করে সমবেদনা প্রকাশ করি কাফিরদের জন্য?’
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৩. তখন (শুয়াইব আলাইহিস সালাম) তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেলেন এবং বলতে লাগলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং আমি তোমাদেরকে উপদেশ(ও) প্রদান করেছিলাম। তবে কেন আমি কাফের সম্প্রদায়ের (ধ্বংস হওয়ার) কারণে আফসোস করবো?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৪
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا فِیۡ قَرۡیَۃٍ مِّنۡ نَّبِیٍّ اِلَّاۤ اَخَذۡنَاۤ اَہۡلَہَا بِالۡبَاۡسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ لَعَلَّہُمۡ یَضَّرَّعُوۡنَ ﴿۹۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৪. এবং আমি কোন জনপদের মধ্যে কোন নবীকে প্রেরন করিনি, কিন্তু (করলে) সেটার অধিবাসীদেরকে অভাব-অনটন ও দুঃখ-কষ্টের মধ্যে লিপ্ত করেছি, যতে তারা কোন প্রকারে আহাজারি করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৪. আর আমরা যে জনপদেই কোনো রাসূল প্রেরণ করেছি, (নবীকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করা ও বাধা দেওয়ার কারণে) এর বাসিন্দাদেরকে কঠোরতা ও সংকীর্ণতা এবং কষ্ট ও ভোগান্তিতে গ্রাস করেছি; যাতে তারা নম্র ও বিনয়ী হয়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৫
ثُمَّ بَدَّلۡنَا مَکَانَ السَّیِّئَۃِ الۡحَسَنَۃَ حَتّٰی عَفَوۡا وَّ قَالُوۡا قَدۡ مَسَّ اٰبَآءَنَا الضَّرَّآءُ وَ السَّرَّآءُ فَاَخَذۡنٰہُمۡ بَغۡتَۃً وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۹۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৫. অতঃপর আমি অকল্যাণের স্থানকে কল্যাণে বদলে দিয়েছি; অবশেষে তারা প্রাচুর্যের অধিকারী হয়ে গেলো আর বললো, ‘নিশ্চয় আমাদের পূর্ব পুরুষদের নিকটও দুঃখ আর সুখ পৌছেছিলো’। অতঃপর আমি তাদেরকে আকস্মিকভাবে তাদের অজ্ঞাতসারে পাকড়াও করেছি।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৫. পরবর্তীতে আমরা (তাদের) দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছি, যতক্ষণ না তারা (সব দিক থেকে) যথেষ্ট অগ্রগতি সাধন করে আর (অকৃতজ্ঞতাবশত) বলতে থাকে, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিও (একইভাবে) দুর্দশা ও প্রশান্তি নেমে আসতো’। সুতরাং আমরা তাদেরকে (এ নিয়ামত অস্বীকারের কারণে) অকস্মাৎ পাকড়াও করলাম এবং তারা (এর) কিছুই বুঝতেও পারলো না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৬
وَ لَوۡ اَنَّ اَہۡلَ الۡقُرٰۤی اٰمَنُوۡا وَ اتَّقَوۡا لَفَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ بَرَکٰتٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ وَ لٰکِنۡ کَذَّبُوۡا فَاَخَذۡنٰہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۹۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৬. এবং যদি জনপদগুলোর অধিবাসিগণ ঈমান আনতো আর ভয় করতো, তবে অবশ্যই আমি তাদের জন্য আসমান ও যমীন থেকে বরকতসমূহের দ্বার উন্মুক্ত করে দিতাম; কিন্তু তারা তো অস্বীকার করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করেছি।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৬. আর যদি (এ সকল) জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনতো এবং খোদাভীতি অবলম্বন করতো, তবে আমরা তাদের জন্যে আসমান ও পৃথিবীর কল্যাণসমূহ খুলে দিতাম। কিন্তু তারা (সত্যকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমরা তাদেরকে তাদের সম্পাদিত (সে মন্দ) আমলগুলোর কারণে (শাস্তি দিয়ে) পাকড়াও করলাম।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৭
اَفَاَمِنَ اَہۡلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا بَیَاتًا وَّ ہُمۡ نَآئِمُوۡنَ ﴿ؕ۹۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৭. তবে কি জনপদসমূহের অধিবাসীরা এ ভয় করে না যে, তাদের উপর আমার শাস্তি রাতে আসবে যখন তারা নিদ্রারিত থাকবে?
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৭. তবে কি জনপদের অধিবাসীরা এ বিষয় থেকে শঙ্কামুক্ত হয়ে গিয়েছে যে, আমাদের শাস্তি রাতের বেলায় (উদাসীন তন্দ্র্রা ও) ঘুমন্ত অবস্থায় (পুনরায়) তাদেরকে পাকড়াও করতে পারে?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৮
اَوَ اَمِنَ اَہۡلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا ضُحًی وَّ ہُمۡ یَلۡعَبُوۡنَ ﴿۹۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৮. অথবা জনপদের অধিবাসীরা কি ভয় করেনা যে, তাদের উপর আমার শাস্তি পূর্বাহ্নে আসবে যখন তারা খেলায় মগ্ন থাকবে?
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৮. অথবা জনপদের অধিবাসীরা কি এ বিষয় থেকে শঙ্কামুক্ত রয়েছে যে, তাদেরকে দিনের বেলায় আমাদের শাস্তি (পুনরায়) পাকড়াও করতে পারে, যখন (তারা সম্পূর্ণরূপে দুনিয়ার ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে) খেলাধুলায় নিমজ্জিত থাকে?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ৯৯
اَفَاَمِنُوۡا مَکۡرَ اللّٰہِ ۚ فَلَا یَاۡمَنُ مَکۡرَ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۹۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
৯৯. তারা কি আল্লাহ্র গোপন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বে-খবর হয়ে রয়েছে? সুতরাং আল্লাহ্র গোপন ব্যবস্থাপনা থেকে কেউ নির্ভীক হয় না, কিন্তু হয় ক্ষতিগ্রস্তরা।
📗 ইরফানুল কুরআন
৯৯. তারা কি আল্লাহ্র গোপন পরিকল্পনা থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছে? বস্তুত আল্লাহ্র গোপন পরিকল্পনা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় ব্যতীত কেউই নিঃশঙ্ক হয় না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০০
اَوَ لَمۡ یَہۡدِ لِلَّذِیۡنَ یَرِثُوۡنَ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ اَہۡلِہَاۤ اَنۡ لَّوۡ نَشَآءُ اَصَبۡنٰہُمۡ بِذُنُوۡبِہِمۡ ۚ وَ نَطۡبَعُ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَہُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০০. এবং ওই সব লোক, যারা যমীনের মালিকদের পর সেটার উত্তরাধিকারী হয়েছে, তারা কি এতটুকুও হিদায়তও লাভ করে নি যে, আমি চাইলে তাদের নিকট তাদের পাপের দরুন বিপদ পৌছাই? এবং আমি তাদের অন্তরগুলোর উপর মোহর করে দিই, যাতে তারা কিছুই শুনতে না পায়।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০০. তবে কি (এ বিষয়টিও) এসব লোকদেরকে (চেতনা জাগ্রত ও) হেদায়াত দান করে না, যারা পৃথিবীর (এককালের) অধিবাসীদের (ধ্বংসের) পর উত্তরাধিকারী হয়; যদি আমরা চাই তবে, তাদের পাপের কারণে তাদেরকে(ও) শাস্তি দেবো এবং (মন্দ আমলের কারণে) আমরা তাদের অন্তরসমূহকে মোহরাঙ্কিত করে দেবো, সুতরাং তারা (সত্য) শুনতে (এবং অনুধাবনও করতে) পারবে না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০১
تِلۡکَ الۡقُرٰی نَقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآئِہَا ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ یَطۡبَعُ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০১. এসব হচ্ছে কতগুলো জনপদ, যেগুলোর কিছু বৃতান্ত আমি আপনাকে শুনাচ্ছি; এবং নিশ্চয় তাদের নিকট তাদের রসুল স্পষ্ট প্রমাণসমূহ নিয়ে এসেছেন। অতঃপর তারা এর উপযোগী হয় নি যে, তারা সেটার উপর ঈমান আনবে যাকে প্রথমে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো। আল্লাহ্ এভাবে কাফিরদের হৃদয়গুলোর উপর মোহর করে দেন।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০১. এগুলো ঐসব জনপদ, যেগুলোর সংবাদ আপনাকে শুনাচ্ছি। আর নিশ্চয়ই তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিলেন, কিন্তু (এরপরও) যাঁকে তারা পূর্বে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতো তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করতে নিষ্ক্রিয় থেকে যেতো। এভাবে আল্লাহ্ কাফেরদের অন্তর মোহরাঙ্কিত করে দেন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০২
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ وَ اِنۡ وَّجَدۡنَاۤ اَکۡثَرَہُمۡ لَفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০২. এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশকে আমি প্রতিশ্রুতি পালনকারী পাই নি আর অবশ্যই তাদের মধ্যে অধিকাংশকে হুকুম অমান্যকারীই পেয়েছি।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০২. আর আমরা তাদের অধিকাংশ লোকের মাঝে অঙ্গীকার (-এর পূর্ণতা) পাইনি বরং তাদের অধিকাংশ লোককে পেয়েছি নাফরমান।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৩
ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ مُّوۡسٰی بِاٰیٰتِنَاۤ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ فَظَلَمُوۡا بِہَا ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০৩. অতঃপর আমি মূসাকে তাদের পর আমার নিদর্শনসমূহ সহকারে ফির’আউন ও তাঁর রাজন্যবর্গের প্রতি প্রেরণ করেছি; অতঃপর তারা সেই নিদর্শনগুলোর প্রতি অবিচার করেছে। সুতরাং দেখো, কী পরিণাম হয়েছে ফ্যাসাদকারীদের!
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৩. অতঃপর আমরা তাদের পর মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে আমার নিদর্শনাবলী সহ ফেরাউন এবং তার (দরবারের) সরদারদের নিকট প্রেরণ করলাম, তখন তারা (এ প্রমাণাদি ও অলৌকিক বিষয়গুলো)-এর সাথে যুলুম করেছিল। অতঃপর আপনি লক্ষ্য করুন, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কেমন হয়েছিল!
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৪
وَ قَالَ مُوۡسٰی یٰفِرۡعَوۡنُ اِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾ۙ
📕 কানযুল ঈমান
১০৪. এবং মূসা বললো, ‘হে ফির’আউন! আমি বিশ্বে প্রতিপালকের রসূল।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৪. আর মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে ফেরাউন! নিশ্চয়ই আমি সমগ্র জগতের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রাসূল (হিসেবে আগমন করেছি)।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৫
حَقِیۡقٌ عَلٰۤی اَنۡ لَّاۤ اَقُوۡلَ عَلَی اللّٰہِ اِلَّا الۡحَقَّ ؕ قَدۡ جِئۡتُکُمۡ بِبَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَرۡسِلۡ مَعِیَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿۱۰۵﴾ؕ
📕 কানযুল ঈমান
১০৫. আমার জন্য এটাই শোভা পায় যে, আল্লাহ্ সম্বন্ধে শুধু সত্য কথাই বলবো। আমি তোমাদের সবার নিকট তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি; সুতরাং বনী ইস্রাঈলকে আমার সাথে ছেড়ে দাও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৫. এটিই আমার জন্যে শোভনীয় যে, আল্লাহ্র ব্যাপারে সত্য কথা ব্যতীত (কিছুই) না বলি। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের প্রতিপালকের (পক্ষ) থেকে তোমাদের প্রতি সুষ্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলকে (তোমার দাসত্ব থেকে মুক্ত করে) আমার সাথে প্রেরণ করো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৬
قَالَ اِنۡ کُنۡتَ جِئۡتَ بِاٰیَۃٍ فَاۡتِ بِہَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۰۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০৬. (ফির’আউন) বললো, ‘যদি তুমি কোন নিদর্শন নিয়ে এসে থাকো, তা’হলে নিয়ে এসো! যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৬. সে (ফেরাউন) বললো,‘ যদি তুমি কোনো নিদর্শন নিয়ে এসে থাকো, তবে তা (সামনে) পেশ করো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৭
فَاَلۡقٰی عَصَاہُ فَاِذَا ہِیَ ثُعۡبَانٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۰۷﴾ۚۖ
📕 কানযুল ঈমান
১০৭. অতঃপর মূসা আপন লাঠি নিক্ষেপ করলো। সেটা তৎক্ষণাৎ একটা অজগররূপে আত্নপ্রকাশ করলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৭. অতঃপর মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর লাঠি (নিচে) নিক্ষেপ করলেন এবং তখনই তা জলজ্যান্ত অজগরে পরিণত হলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৮
وَّ نَزَعَ یَدَہٗ فَاِذَا ہِیَ بَیۡضَآءُ لِلنّٰظِرِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১০৮. এবং আপন হাত বগল এ ঢুকিয়ে বের করলো। তখন তা দর্শকদের সামনে ঝলমল করতে লাগলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৮. আর নিজের হাত (জামার আস্তিনের অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে) বের করলেন, তখন তা(ও) দর্শকদের জন্যে (সমুজ্জ্বল) শুভ্রতায় পরিণত হলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১০৯
قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِ فِرۡعَوۡنَ اِنَّ ہٰذَا لَسٰحِرٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۰۹﴾ۙ
📕 কানযুল ঈমান
১০৯. ফির’আউন সম্প্রদায়ের প্রধানগণ বললো, ‘এতো একজন জ্ঞানী যাদুকর;
📗 ইরফানুল কুরআন
১০৯. ফেরাউনের সম্প্রদায়ের সরদারেরা বললো, ‘নিশ্চয়ই সে বড় (কোনো) অভিজ্ঞ যাদুকর’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১০
یُّرِیۡدُ اَنۡ یُّخۡرِجَکُمۡ مِّنۡ اَرۡضِکُمۡ ۚ فَمَا ذَا تَاۡمُرُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১০. তোমাদেরকে বহিষ্কার করতে চায় তোমাদের দেশ থেকে; সুতরাং তোমাদের কি পরামর্শ?’
📗 ইরফানুল কুরআন
১১০. ‘(হে লোকসকল!) সে তোমাদেরকে তোমাদের রাজ্য থেকে বের করে দিতে চায়, সুতরাং তোমরা কী পরামর্শ দিচ্ছো?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১১
قَالُوۡۤا اَرۡجِہۡ وَ اَخَاہُ وَ اَرۡسِلۡ فِی الۡمَدَآئِنِ حٰشِرِیۡنَ ﴿۱۱۱﴾ۙ
📕 কানযুল ঈমান
১১১. (তারা) বললো, ‘তাকে এবং তাঁর ভাইকে অবকাশ নিতে দাও এবং শহরে শহরে লোক সংগ্রহকারীদেরকে পাঠিয়ে দাও;
📗 ইরফানুল কুরআন
১১১. তারা বললো, ‘(কিছু সময়ের জন্যে) মূসা এবং তাঁর ভাইকে (এ বিষয়ে) অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে (যাদুকরদের খোঁজে) সংগ্রাহক প্রেরণ করুন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১২
یَاۡتُوۡکَ بِکُلِّ سٰحِرٍ عَلِیۡمٍ ﴿۱۱۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১২. যেন (তারা) প্রত্যেক জ্ঞানী যাদুকরকে তোমার নিকট নিয়ে আসে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১২. তারা আপনার নিকট সকল অভিজ্ঞ যাদুকরকে নিয়ে আসবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৩
وَ جَآءَ السَّحَرَۃُ فِرۡعَوۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ لَنَا لَاَجۡرًا اِنۡ کُنَّا نَحۡنُ الۡغٰلِبِیۡنَ ﴿۱۱۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১৩. এবং যাদুকরগণ ফির’আউনের নিকট এলো। বললো, ‘নিশ্চয় আমরা কিছু পুরস্কার পাবো তো, যদি আমরা বিজয়ী হই’!
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৩. আর যাদুকরেরা ফেরাউনের নিকট আসলো এবং বললো, ‘আমাদের জন্যে অবশ্যই কিছু পুরস্কার থাকা চাই যদি আমরা বিজয়ী হই।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৪
قَالَ نَعَمۡ وَ اِنَّکُمۡ لَمِنَ الۡمُقَرَّبِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১৪. (সে) বললো, ‘হাঁ, এবং তখন তোমরা আমার সান্নিধ্যপ্রাপ্ত হয়ে যাবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৪. ফেরাউন বললো, ‘হ্যাঁ! আর অবশ্যই (সাধারণ পুরস্কার কেনো? এক্ষেত্রে) তোমরা (আমার সভাসদদের) নিকটতমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৫
قَالُوۡا یٰمُوۡسٰۤی اِمَّاۤ اَنۡ تُلۡقِیَ وَ اِمَّاۤ اَنۡ نَّکُوۡنَ نَحۡنُ الۡمُلۡقِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১৫. (তারা) বললো, ‘হে মূসা! হয় তো আপনি নিক্ষেপ করুন, নতুবা আমরাই নিক্ষেপকারী হবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৫. (যাদুকরেরা) বললো, ‘হে মূসা! হয় তুমি (তোমার সরঞ্জাম) নিক্ষেপ করো অথবা আমরাই (প্রথমে) নিক্ষেপ করি’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৬
قَالَ اَلۡقُوۡا ۚ فَلَمَّاۤ اَلۡقَوۡا سَحَرُوۡۤا اَعۡیُنَ النَّاسِ وَ اسۡتَرۡہَبُوۡہُمۡ وَ جَآءُوۡ بِسِحۡرٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۱۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১১৬. (তিনি) বললেন, ‘তোমরাই নিক্ষেপ করো’। যখন তারা নিক্ষেপ করলো, তখন ( তারা) লোকদের চোখে যাদু করলো এবং তাদেরকে আতঙ্কিত করলো আর বড় যাদু আনলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৬. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরাই (প্রথমে) নিক্ষেপ করো’। অতএব যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠিগুলো ভূমিতে) নিক্ষেপ করলো, (তখন তারা) মানুষের দৃষ্টিতে ইন্দ্রজাল বুনলো এবং তাদেরকে আতংকিত করলো এবং তারা অত্যন্ত কার্যকর যাদু (সামনে) নিয়ে এলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৭
وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اَنۡ اَلۡقِ عَصَاکَ ۚ فَاِذَا ہِیَ تَلۡقَفُ مَا یَاۡفِکُوۡنَ ﴿۱۱۷﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১১৭. এবং আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম, ‘তুমি আপন লাঠি নিক্ষেপ করো’। সুতরাং তৎক্ষণাৎ তা তাদের অলীক সৃষ্টিগুলোকে গ্রাস করতে লাগলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৭. আর আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘(এখন) আপনি আপনার লাঠি নিক্ষেপ করুন’। তখন তা তৎক্ষণাৎ সেসব বস্তুকে গিলে ফেলতে লাগলো, যেগুলো তারা প্রতারণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৮
فَوَقَعَ الۡحَقُّ وَ بَطَلَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۱۸﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১১৮. ফলে, সত্য প্রমাণিত হলো এবং তাদের কাজ মিথ্যা প্রতিপন্ন হলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৮. অতঃপর সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল এবং যা কিছু তারা করছিল (সবকিছু) বাতিল প্রমাণিত হলো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১১৯
فَغُلِبُوۡا ہُنَالِکَ وَ انۡقَلَبُوۡا صٰغِرِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১১৯. অতঃপর এখানে তারা পরাভূত হলো ও লাঞ্ছিত হয়ে ফিরলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১১৯. সুতরাং তারা (অর্থাৎ ফেরাউনের প্রতিনিধিরা) ঘটনাস্থলেই পরাস্ত হলো এবং অপমানিত হয়ে ফিরে গেল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২০
وَ اُلۡقِیَ السَّحَرَۃُ سٰجِدِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾ۚۖ
📕 কানযুল ঈমান
১২০. এবং যাদুকরদেরকে সাজদায় পতিত করা হলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২০. আর (সমস্ত) যাদুকরেরা সেজদায় লুটিয়ে পড়লো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২১
قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۲۱﴾ۙ
📕 কানযুল ঈমান
১২১. (তারা) বললো, ‘আমরা ঈমান আনলাম (সমগ্র) জগতের রবের উপর;
📗 ইরফানুল কুরআন
১২১. তারা বলে উঠলো, ‘আমরা বিশ্ব জগতের (প্রকৃত) প্রতিপালকে বিশ্বাস স্থাপন করলাম,
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২২
رَبِّ مُوۡسٰی وَ ہٰرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২২. যিনি রব মূসা ও হারূনের’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২২. (যিনি) মূসা ও হারুন (আলাইহিমাস সালাম)-এঁর প্রতিপালক।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৩
قَالَ فِرۡعَوۡنُ اٰمَنۡتُمۡ بِہٖ قَبۡلَ اَنۡ اٰذَنَ لَکُمۡ ۚ اِنَّ ہٰذَا لَمَکۡرٌ مَّکَرۡتُمُوۡہُ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ لِتُخۡرِجُوۡا مِنۡہَاۤ اَہۡلَہَا ۚ فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৩. ফির’আউন বললো, ‘আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়ার পূর্বেই কি তোমরা তাঁর উপর ঈমান নিয়ে এসেছো? এ’তো মহা চক্রান্ত, যা তোমরা সবাই শহরের মধ্যে বিস্তৃত করেছো, যাতে শহরবাসীদেরকে তা থেকে বের করে দিতে পারো। সুতরাং এখনই জেনে নেবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৩. ফেরাউন বলতে লাগলো, ‘আমি অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা (কি) তাঁর প্রতি ঈমান আনলে? নিশ্চয়ই এটি একটি প্রতারণা, যা তোমরা (সকলে আমার সাথে) এ শহরে করেছো, যাতে এ (রাজ্য) থেকে এর (ক্বিবতী) বাসিন্দাদেরকে বের করে নিয়ে যেতে পারো। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই (এর পরিণতি) অবগত হবে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৪
لَاُقَطِّعَنَّ اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ ثُمَّ لَاُصَلِّبَنَّکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۲۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৪. শপথ (করে বলছি) যে, আমি তোমাদের এক দিকের হাত এবং অপর দিকের পা কেটে ফেলবো; অতঃপর তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৪. অবশ্যই আমি তোমাদের হাত ও পা একটি অপরটির বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলবো, অতঃপর অবশ্য অবশ্যই তোমাদের সবাইকে শুলে চড়াবো।'
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৫
قَالُوۡۤا اِنَّاۤ اِلٰی رَبِّنَا مُنۡقَلِبُوۡنَ ﴿۱۲۵﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১২৫. (তারা) বললো, ‘আমরা আপন রবের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৫. তারা বললো, ‘নিশ্চয়ই আমরা আমাদের প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৬
وَ مَا تَنۡقِمُ مِنَّاۤ اِلَّاۤ اَنۡ اٰمَنَّا بِاٰیٰتِ رَبِّنَا لَمَّا جَآءَتۡنَا ؕ رَبَّنَاۤ اَفۡرِغۡ عَلَیۡنَا صَبۡرًا وَّ تَوَفَّنَا مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۱۲۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৬. এবং তোমার নিকট আমাদের কি মন্দ লেগেছে? এটাই নয় কি যে, আমরা আমাদের রবের নিদর্শনগুলোর উপর ঈমান এনেছি, যখন সেগুলো আমাদের নিকট এসেছে? হে আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দাও এবং আমাদেরকে মুসলমানরূপে উঠাও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৬. আর আমাদের কোন্ কাজ তোমার কাছে মন্দ লেগেছে? কেবল এ যে, আমাদের প্রতিপালকের (সত্য) নিদর্শনাবলী যখন আমাদের নিকট এসেছে তখন আমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উপর ধৈর্যের ঝরনাধারা খুলে দাও এবং আমাদেরকে (ধৈর্যশীল) মুসলমান হিসেবে (দুনিয়া থেকে) উঠিয়ে নাও।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৭
وَ قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِ فِرۡعَوۡنَ اَتَذَرُ مُوۡسٰی وَ قَوۡمَہٗ لِیُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ یَذَرَکَ وَ اٰلِہَتَکَ ؕ قَالَ سَنُقَتِّلُ اَبۡنَآءَہُمۡ وَ نَسۡتَحۡیٖ نِسَآءَہُمۡ ۚ وَ اِنَّا فَوۡقَہُمۡ قٰہِرُوۡنَ ﴿۱۲۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৭. এবং ফির’আউনের সম্প্রদায়ের প্রধানগণ বললো, ‘তুমি কি মূসা ও তাঁর সম্প্রদায়কে এ জন্যই ছেড়ে দিচ্ছো যে, তারা যমীনে ফ্যাসাদ ছড়াবে এবং মূসা তোমাকে ও তোমার স্থাপিত দেবতাগুলোকে বর্জন করবে? (সে) বললো, ‘এখন আমরা তাদের পুত্রদেরকে হত্যা করবো এবং তাদের কন্যাদেরকে জীবিত রাখবো। আর আমরা নিশ্চয় তাদের উপর প্রতাপশালী’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৭. আর ফেরাউন-সম্প্রদায়ের সরদারেরা (ফেরাউনকে) বললো, ‘তুমি কি মূসা এবং তাঁর (বিপ্লবী) সম্প্রদায়কে রাজ্যে বিপর্যয় ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে ছেড়ে দেবে? আর (তখন) সে (কি) তোমাকে এবং তোমার উপাস্যদেরকে ছেড়ে দেবে?’ সে বললো, ‘(না) আমরা এখন তাদের পুত্রদেরকে হত্যা করবো (যাতে তাদের পুরুষদের সংখ্যাধিক্যের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়) এবং তাদের নারীদেরকে জীবিত রেখে দেবো (যাতে তারা পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে)। আর নিশ্চয়ই আমরা তাদের উপর প্রভাবশালী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৮
قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِاللّٰہِ وَ اصۡبِرُوۡا ۚ اِنَّ الۡاَرۡضَ لِلّٰہِ ۟ۙ یُوۡرِثُہَا مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۲۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৮. মূসা তাঁর সম্প্রদায়কে বললো, ‘আল্লার সাহায্য প্রার্থনা করো এবং ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয় যমীনের মালিক আল্লাহ্; স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে চান উত্তরাধিকারী করেন এবং শেষ ময়দান পরহেয্গারদের হাতে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৮. মূসা (আলাইহিসি সালাম) তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহ্র নিকট সাহায্য প্রার্থনা করো এবং ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয়ই জমিন আল্লাহ্র, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান এর উত্তরাধিকারী করেন। আর উত্তম পরিণতি পরহেযগারদের জন্যেই।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১২৯
قَالُوۡۤا اُوۡذِیۡنَا مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَاۡتِیَنَا وَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جِئۡتَنَا ؕ قَالَ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّہۡلِکَ عَدُوَّکُمۡ وَ یَسۡتَخۡلِفَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَیَنۡظُرَ کَیۡفَ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১২৯. (তারা) বললো, ‘আমরা নির্যাতিত হয়েছি আপনি আসার পূর্বে এবং আপনার শুভাগমনের পরে।’ বললো, ‘শীঘ্রই তোমাদের রব তোমাদের শত্রুদেরকে ধ্বংস করবেন এবং তাঁর স্থলে যমীনের মালিক তোমাদেরকে করবেন। অতঃপর দেখবেন (তোমরা) কেমন কাজ করো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১২৯. লোকেরা বলতে লাগলো, ‘(হে মূসা আলাইহিস সালাম!) আমাদেরকে তো আমাদের নিকট আপনার আগমনের পূর্বে এবং আপনার আগমনের পরেও কষ্ট দেয়া হয়েছিল। (উভয় অবস্থাতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমাদের মুসিবত কখন দূর হবে?)’ মূসা (আলাইহিস সালাম তাঁর সম্প্রদায়কে শান্তনা দিতে গিয়ে) বললেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক শীঘ্রই তোমাদের শত্রুকে ধ্বংস করে দেবেন এবং (এরপর) পৃথিবীতে (শাসন ক্ষমতায়) তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করবেন। অতঃপর তিনি দেখবেন যে, তোমরা (শাসনক্ষমতায় এসে) কীরূপ কর্মকান্ড করো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩০
وَ لَقَدۡ اَخَذۡنَاۤ اٰلَ فِرۡعَوۡنَ بِالسِّنِیۡنَ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۱۳۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩০. এবং নিশ্চয় আমি ফিরা’আউনের অনুসারীদেরকে বছরগুলোর দুর্ভিক্ষ এবং ফলফসলের ক্ষতি দ্বারা পাকড়াও করেছি; যাতে তারা উপদেশ মান্য করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩০. অতঃপর আমরা ফেরাউনের লোকদেরকে বছরের পর বছর (দুর্ভিক্ষে) এবং ফলমূলের ঘাটতির (শাস্তি) দ্বারা পাকড়াও করে রেখেছিলাম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩১
فَاِذَا جَآءَتۡہُمُ الۡحَسَنَۃُ قَالُوۡا لَنَا ہٰذِہٖ ۚ وَ اِنۡ تُصِبۡہُمۡ سَیِّئَۃٌ یَّطَّیَّرُوۡا بِمُوۡسٰی وَ مَنۡ مَّعَہٗ ؕ اَلَاۤ اِنَّمَا طٰٓئِرُہُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩১. অতঃপর যখন তারা কোন কল্যাণ লাভ করতো, তখন বলতো, ‘এটা আমাদের প্রাপ্য’; আর যখন কোন অকল্যাণ পৌছতো তখন মূসা ও তাঁর সঙ্গীদেরকে অমঙ্গলের জন্য দায়ী করতো; শুনে নাও! তাদের অদৃষ্টের অশুভ পরিণাম তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে; কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশই অবগত নয়।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩১. অতঃপর যখন তাদের নিকট প্রশান্তি পৌঁছতো তখন তারা বলতো, ‘এটি আমাদের নিজেদের জন্যে।’ আর যদি তাদের উপর অশান্তি আপতিত হতো, তারা একে মূসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর (ঈমানদার) সাথীদের সাথে অশুভ লক্ষণ হিসেবে যুক্ত করতো। সাবধান! তাদের শুভাশুভ (অর্থাৎ আমলের মন্দ পরিণতি) তো আল্লাহ্রই নিকট। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩২
وَ قَالُوۡا مَہۡمَا تَاۡتِنَا بِہٖ مِنۡ اٰیَۃٍ لِّتَسۡحَرَنَا بِہَا ۙ فَمَا نَحۡنُ لَکَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩২. এবং (তারা) বললো, ‘তুমি যে কোন নিদর্শনই নিয়ে আমাদের নিকট আসবে না কেন, যাতে আমাদের উপর তা দ্বারা যাদু করতে পারো, আমরা কোন প্রকারেই তোমার উপর ঈমান আনয়নকারী নই’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩২. আর তারা (অর্থাৎ ফেরাউনের লোকেরা অহঙ্কারবশত) বলতে লাগলো, ‘(হে মূসা!) আমাদের উপর ইন্দ্রজাল বিস্তারে তুমি যে নিদর্শনই আমাদের কাছে নিয়ে আসো না কেনো, তবুও আমরা তোমার উপর ঈমান আনয়ন করবো না।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৩
فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمُ الطُّوۡفَانَ وَ الۡجَرَادَ وَ الۡقُمَّلَ وَ الضَّفَادِعَ وَ الدَّمَ اٰیٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ ۟ فَاسۡتَکۡبَرُوۡا وَ کَانُوۡا قَوۡمًا مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۳۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৩. অতঃপর আমি প্রেরণ করেছি তাদের উপর প্লাবন, পঙ্গপাল, ঘুণ (অথবা উকূন বা ক্ষুদ্র কীট বিশেষ), ব্যাঙ এবং রক্ত। পৃথক পৃথক নিদর্শনসমূহ; তবুও তারা অহংকার করলো এবং তারা অপরাধী সম্প্রদায় ছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৩. অতঃপর আমরা তাদের উপর (শাস্তিস্বরূপ) ঝড়, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত (এবং আরো কতোই না) স্বতন্ত্র নিদর্শনাবলী প্রেরণ করেছিলাম। এরপর(ও) তারা অহঙ্কার ও অবাধ্যতায় লিপ্ত হতে থাকলো আর তারা ছিল (জঘন্য) অপরাধী সম্প্রদায়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৪
وَ لَمَّا وَقَعَ عَلَیۡہِمُ الرِّجۡزُ قَالُوۡا یٰمُوۡسَی ادۡعُ لَنَا رَبَّکَ بِمَا عَہِدَ عِنۡدَکَ ۚ لَئِنۡ کَشَفۡتَ عَنَّا الرِّجۡزَ لَنُؤۡمِنَنَّ لَکَ وَ لَنُرۡسِلَنَّ مَعَکَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿۱۳۴﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১৩৪. এবং যখন তাদের উপর শাস্তি আসতো, (তখন তারা) বলতো, ‘হে মূসা! আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা করো! তোমার সাথে তাঁর যে অঙ্গীকার রয়েছে তদনুযায়ী। নিশ্চয়, যদি তুমি আমাদের উপর থেকে শাস্তি অপসারিত করে নাও, তবে আমরা অবশ্যই তোমার উপর ঈমান আনবো এবং বনী ইস্রাঈলকে তোমার সাথে যেতে দেবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৪. আর যখন তাদের উপর (কোনো) শাস্তি আপতিত হতো, তখন তারা বলতো, ‘হে মূসা! আপনার প্রতিপালকের নিকট আপনার সাথে (তাঁর) অঙ্গীকারের মাধ্যমে আমাদের জন্যে দোয়া করুন। যদি আপনি আমাদের নিকট থেকে সে শাস্তি দূরীভুত করে দেন, তবে আমরা অবশ্যই আপনার উপর ঈমান আনয়ন করবো এবং বনী ইসরাঈলকে (মুক্ত করে) আপনার সাথে প্রেরণ করবো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৫
فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُمُ الرِّجۡزَ اِلٰۤی اَجَلٍ ہُمۡ بٰلِغُوۡہُ اِذَا ہُمۡ یَنۡکُثُوۡنَ ﴿۱۳۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৫. অতঃপর যখনই আমি তাদের উপর থেকে শাস্তি অপসারিত করতাম এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, যে পর্যন্ত তাদের পৌছার রয়েছে, তখনই তারা ফিরে যেতো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৫. অতঃপর যখনই আমরা তাদের থেকে শাস্তি তুলে নিতাম নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্যে যে মেয়াদ তারা প্রায় সম্পন্ন করতো, তখনই তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৬
فَانۡتَقَمۡنَا مِنۡہُمۡ فَاَغۡرَقۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ بِاَنَّہُمۡ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا عَنۡہَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৬. সুতরাং আমি তাদের নিকট থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। অতঃপর তাদেরকে সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছি, এ জন্য যে, (তারা) আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতো এবং সেগুলো সম্পর্কে অনবগত ছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৬. অতঃপর আমরা তাদের উপর (সকল নাফরমানী এবং অঙ্গীকার ভঙ্গের) প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম, এ জন্যে যে, তারা আমাদের আয়াতসমূহকে (একের পর এক) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। আর তারা তা থেকে (সম্পূর্ণরূপে) উদাসীন ছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৭
وَ اَوۡرَثۡنَا الۡقَوۡمَ الَّذِیۡنَ کَانُوۡا یُسۡتَضۡعَفُوۡنَ مَشَارِقَ الۡاَرۡضِ وَ مَغَارِبَہَا الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا ؕ وَ تَمَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ الۡحُسۡنٰی عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ۬ۙ بِمَا صَبَرُوۡا ؕ وَ دَمَّرۡنَا مَا کَانَ یَصۡنَعُ فِرۡعَوۡنُ وَ قَوۡمُہٗ وَ مَا کَانُوۡا یَعۡرِشُوۡنَ ﴿۱۳۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৭. এবং আমি ওই সম্প্রদায়কে, যাদেরকে দমিয়ে রাখা হয়েছিলো, ওই ভূ-খণ্ডের পূর্ব পশ্চিমের মালিক করেছি, যা’তে আমি বরকত রেখেছি; এবং তোমার রবের উত্তম প্রতিশ্রুতি বনী ইস্রাঈলের উপর পূর্ণ হয়েছে; তাদের ধৈর্যের প্রতিদান স্বরূপ; আর আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যা কিছু ফির’আউন ও তাঁর সম্প্রদায় গড়তো এবং যেসব প্রাসাদ তারা নির্মাণ করতো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৭. আর আমরা দুর্বল ও নিপীড়িত (বনী ইসরাঈল) সম্প্রদায়কে এ পৃথিবীতে পূর্ব ও পাশ্চাত্যের (অর্থাৎ মিসর ও সিরিয়ার) উত্তরাধিকারী করেছিলাম, যাতে আমরা রেখেছিলাম কল্যাণ। আর (এভাবে) বনী ইসরাঈলের উপর আপনার প্রতিপালকের শুভ অঙ্গীকার পূর্ণ হলো, এ জন্যে যে, তারা (ফেরাউনের নির্যাতনের উপর) ধৈর্যধারণ করেছিল। আর আমরা (সে সুরম্য প্রাসাদগুলোকে) ধ্বংস ও বরবাদ করে দিলাম, যা ফেরাউন ও তার সম্প্রদায় নির্মাণ করে রেখেছিল এবং ওইসব অট্টালিকাসমূহ (ও বাগানও), যেগুলো তারা সমুন্নত করতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৮
وَ جٰوَزۡنَا بِبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡبَحۡرَ فَاَتَوۡا عَلٰی قَوۡمٍ یَّعۡکُفُوۡنَ عَلٰۤی اَصۡنَامٍ لَّہُمۡ ۚ قَالُوۡا یٰمُوۡسَی اجۡعَلۡ لَّنَاۤ اِلٰـہًا کَمَا لَہُمۡ اٰلِـہَۃٌ ؕ قَالَ اِنَّکُمۡ قَوۡمٌ تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۱۳۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৮. এবং আমি বনী-ইস্রাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে দিয়েছি; অতঃপর তাদের এমন এক সম্প্রদায়ের আগমন ঘটলো, যারা আপন আপন প্রতিমার সামনে আসন পেতে বসেছিলো। বললো, ‘হে মূসা! আমাদের জন্য একটা এমন খোদা বানিয়ে দাও, যেমন তাদের জন্য এতগুলো খোদা রয়েছে’। বললো, ‘তোমরা নিশ্চয় একটা মূর্খ সম্প্রদায়।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৮. আর আমরা বনী ইসরাঈলকে সমুদ্র (অর্থাৎ লোহিত সাগর) পার করে দিলাম, সেখানে তারা এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট গিয়ে পৌঁছলো যারা (উপাসনার জন্যে) তাদের মূর্তিসমূহের চারপাশে আসন পেতে বসে থাকতো। (বনী ইসরাঈলের লোকেরা) বলতে লাগলো, ‘হে মূসা! আমাদের জন্যেও তাদের উপাস্যের মতো উপাস্য বানিয়ে দিন।’ মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা তো নিরেট মূর্খ সম্প্রদায়’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৩৯
اِنَّ ہٰۤؤُلَآءِ مُتَبَّرٌ مَّا ہُمۡ فِیۡہِ وَ بٰطِلٌ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۳۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৩৯. এ অবস্থা তো ধ্বংস হবারই, যার মধ্যে এসব লোক রয়েছে এবং (তারা) যা কিছু করছে তা নিরেট ভ্রান্ত।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৩৯. নিঃসন্দেহে এসব লোক যেসবের (পূজার) মাঝে (ফেঁসে) রয়েছে তা ধ্বংসশীল। আর যা কিছু তারা করছে তা (সম্পূর্ণ) মিথ্যা।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪০
قَالَ اَغَیۡرَ اللّٰہِ اَبۡغِیۡکُمۡ اِلٰـہًا وَّ ہُوَ فَضَّلَکُمۡ عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۴۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪০. (তিনি আরো) বললেন, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের জন্য কী অন্য কোন খোদা খুজবো? অথচ তিনি তোমাদেরকে গোটা যুগের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪০. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি কি তোমাদের জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য অন্বেষণ করবো। অথচ তিনিই (অর্থাৎ আল্লাহ্ই) তোমাদেরকে সমগ্র জগতের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪১
وَ اِذۡ اَنۡجَیۡنٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ یَسُوۡمُوۡنَکُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ ۚ یُقَتِّلُوۡنَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ یَسۡتَحۡیُوۡنَ نِسَآءَکُمۡ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکُمۡ بَلَآءٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَظِیۡمٌ ﴿۱۴۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪১. এবং স্মরণ করো, যখন আমি তোমাদেরকে ফির’আউনের অনুসারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি, যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিতো; তোমাদের পূত্র সন্তানদেরকে হত্যা করতো এবং তোমাদের কন্যাদেরকে জীবিত রাখতো। আর সেটার মধ্যে তোমাদের রবের মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪১. আর স্মরণ করো (সে সময়ের কথা), যখন আমরা তোমাদেরকে ফেরাউনের দল থেকে উদ্ধার করেছিলাম, যারা তোমাদেরকে খুবই কঠিন শাস্তি দিতো, তারা তোমাদের পুত্রদেরকে হত্যা করতো এবং তোমাদের কন্যাদেরকে জীবিত ছেড়ে দিতো। আর এতে ছিল তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে মহা পরীক্ষা।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪২
وَ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰی ثَلٰثِیۡنَ لَیۡلَۃً وَّ اَتۡمَمۡنٰہَا بِعَشۡرٍ فَتَمَّ مِیۡقَاتُ رَبِّہٖۤ اَرۡبَعِیۡنَ لَیۡلَۃً ۚ وَ قَالَ مُوۡسٰی لِاَخِیۡہِ ہٰرُوۡنَ اخۡلُفۡنِیۡ فِیۡ قَوۡمِیۡ وَ اَصۡلِحۡ وَ لَا تَتَّبِعۡ سَبِیۡلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۴۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪২. এবং আমি মূসার সাথে ত্রিশ রাতের ওয়াদা করেছি এবং সেগুলোর মধ্যে আরো দশটা বৃদ্ধি করে পূর্ণ করেছি; সুতরাং তাঁর রবের ওয়াদা পূর্ণ চল্লিশ রাতেরই হলো; এবং মূসা তাঁর ভাই হারূনকে বললো, ‘আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে আমার প্রতিনিধিরূপে থাকবে এবং সংশোধন করবে, আর ফ্যাসাদসৃষ্টিকারীদের পথকে দখল দিও না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪২. আর আমরা মূসা (আলাইহিসি সালাম)-কে ত্রিশ রাত্রির অঙ্গীকার করেছিলাম এবং এর সাথে (আরো) দশ (রাত্রি) মিলিয়ে তা পূর্ণ করলাম। সুতরাং তাঁর প্রতিপালকের (নির্ধারিত) মেয়াদ চল্লিশ রাত্রিতে পূর্ণ হয়ে গেল। আর মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর ভাই হারুন (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন, ‘তুমি (এ সময়) আমার সম্প্রদায়ের মাঝে আমার স্থলাভিষিক্ত হয়ে (তাদেরকে) পরিশুদ্ধ করতে থাকো এবং বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না। (অর্থাৎ তাদেরকে এ পথে চলতে দিও না)।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৩
وَ لَمَّا جَآءَ مُوۡسٰی لِمِیۡقَاتِنَا وَ کَلَّمَہٗ رَبُّہٗ ۙ قَالَ رَبِّ اَرِنِیۡۤ اَنۡظُرۡ اِلَیۡکَ ؕ قَالَ لَنۡ تَرٰىنِیۡ وَ لٰکِنِ انۡظُرۡ اِلَی الۡجَبَلِ فَاِنِ اسۡتَقَرَّ مَکَانَہٗ فَسَوۡفَ تَرٰىنِیۡ ۚ فَلَمَّا تَجَلّٰی رَبُّہٗ لِلۡجَبَلِ جَعَلَہٗ دَکًّا وَّ خَرَّ مُوۡسٰی صَعِقًا ۚ فَلَمَّاۤ اَفَاقَ قَالَ سُبۡحٰنَکَ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَ اَنَا اَوَّلُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۴۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৩. এবং যখন মূসা আমার ওয়াদার পর হাযির হলো এবং তাঁর সাথে তাঁর রব কথা বললেন, (তখন) আরয করলেন, ‘হে আমার রব! আমাকে আপন দর্শন দাও! আমি তোমাকে দেখবো’। (তিনি) বললেন, ‘তুমি আমাকে কখনো দেখতে পারবে না; বরং এ পাহাড়ের প্রতি দেখো। এটা যদি স্বস্থানে স্থির থাকে, তবে তুমি অবিলম্বে আমাকে দেখে নেবে’। অতঃপর যখন তাঁর রব পাহাড়ের উপর আপন নূর বিচ্ছুরিত করলেন, তখন তা সেটাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিলো, আর মূসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গেলো। অতঃপর যখন জ্ঞান ফিরে এলো (তখন) বললো, ‘পবিত্রতা তোমার, আমি তোমারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করলাম এবং আমি সবার মধ্যে প্রথম মুসলমান।’
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৩. আর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) আমাদের (নির্ধারিত) সময়ে হাযির হলেন এবং তাঁর প্রতিপালক তাঁর সাথে কথা বললেন, তখন (আল্লাহ্র বাণী ও স্বরের স্বাদ পেয়ে তাঁর দর্শনের আকাঙ্ক্ষী হলেন এবং) আর্জি পেশ করতে লাগলেন, ‘হে প্রতিপালক! আমাকে (তোমার সৌন্দর্য) দেখাও যাতে আমি তোমার দর্শন লাভ করতে পারি।’ আল্লাহ্ বললেন, ‘তুমি কোনোভাবেই আমাকে (সরাসরি) দেখতে পারবে না, তবে পাহাড়ের দিকে দৃষ্টি দাও, অতঃপর যদি তা নিজ স্থানে স্থির থাকে, তবে অচিরেই তুমি আমার সৌন্দর্য দর্শন করবে।’ অতঃপর যখন তাঁর প্রতিপালক পাহাড়ের উপর (নিজের সৌন্দর্যের) বিচ্ছুরণ ঘটালেন, তখন তা (ঔজ্জ্বল্যের প্রচন্ডতায়) একে চুর্ণবিচূর্ণ করে দিলো এবং মূসা (আলাইহিস সালাম) বেহুঁশ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন। অতঃপর যখন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন তখন আর্জি পেশ করলেন, ‘তোমার সত্তা পূতঃপবিত্র; আমি তোমার সমীপে তওবা করছি এবং আমি সর্বপ্রথম ঈমান আনয়নকারী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৪
قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اِنِّی اصۡطَفَیۡتُکَ عَلَی النَّاسِ بِرِسٰلٰتِیۡ وَ بِکَلَامِیۡ ۫ۖ فَخُذۡ مَاۤ اٰتَیۡتُکَ وَ کُنۡ مِّنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۴۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৪. (তিনি) বললেন, ‘হে মূসা! আমি তোমাকে লোকদের থেকে মনোনীত করে নিয়েছি স্বীয় রিসালাত (এর বাণী সমূহ) এবং স্বীয় বাক্যালাপ করে যা আমি তোমাকে দান করেছি এবং কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৪. (আল্লাহ্) বললেন, ‘হে মূসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে আমার বার্তাসমূহ এবং কথোপকথনের মাধ্যমে মানুষের উপর মহিমান্বিত ও নির্বাচিত করেছি। সুতরাং আমি তোমাকে যা কিছু প্রদান করেছি তা গ্রহণ করো এবং কৃতজ্ঞতা আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৫
وَ کَتَبۡنَا لَہٗ فِی الۡاَلۡوَاحِ مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ مَّوۡعِظَۃً وَّ تَفۡصِیۡلًا لِّکُلِّ شَیۡءٍ ۚ فَخُذۡہَا بِقُوَّۃٍ وَّ اۡمُرۡ قَوۡمَکَ یَاۡخُذُوۡا بِاَحۡسَنِہَا ؕ سَاُورِیۡکُمۡ دَارَ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۴۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৫. এবং আমি তাঁর জন্য ফলকসমূহে লিখে দিয়েছি প্রত্যেক কিছুর উপদেশ আর প্রত্যেক জিনিষের বিশদ বিবরণ; (এবং বললেন, ‘হে মূসা!) সেটা শক্তভাবে ধরো এবং স্বীয় সম্প্রদায়কে নির্দেশ দাও যেন সেটার উত্তম কথাগুলো গ্রহণ করে নেয়। শীঘ্রি আমি তোমাদেরকে দেখাবো নির্দেশ অমান্যকারীদের ঘর।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৫. আর আমরা তাঁর জন্যে (তাওরাতের) ফলকসমূহে প্রত্যেক বিষয়ের উপদেশ ও সবকিছুর বিস্তারিত বর্ণনা লিখে দিয়েছিলাম। ‘সুতরাং একে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করে রাখো এবং তোমার সম্প্রদায়কে(ও) এর উৎকৃষ্ট বিষয়গুলো গ্রহণ করার নির্দেশ দাও। আমি অচিরেই তোমাদেরকে নাফরমানদের বাসস্থান প্রদর্শন করবো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৬
سَاَصۡرِفُ عَنۡ اٰیٰتِیَ الَّذِیۡنَ یَتَکَبَّرُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ وَ اِنۡ یَّرَوۡا کُلَّ اٰیَۃٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡا بِہَا ۚ وَ اِنۡ یَّرَوۡا سَبِیۡلَ الرُّشۡدِ لَا یَتَّخِذُوۡہُ سَبِیۡلًا ۚ وَ اِنۡ یَّرَوۡا سَبِیۡلَ الۡغَیِّ یَتَّخِذُوۡہُ سَبِیۡلًا ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا عَنۡہَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۴۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৬. এবং আমি আমার নিদর্শনসমূহ থেকে তাদের ফিরিয়ে দেবো, যারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে নিজেদের অহঙ্কার প্রকাশ করতে চায় আর যদি তারা সমস্ত নিদর্শনও দেখে নেয় তবুও তারা সেগুলোর উপর ঈমান আনবে না; এবং যদি হিদায়তের পথও দেখে নেয় তবুও তাঁতে চলা পছন্দ করবে না আর ভ্রান্তির পথ দেখলে সেটা দিয়ে চলার জন্য উপস্থিত হয়ে যাবে। এটা এ কারণে যে, তারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং সেগুলো সম্বন্ধে গাফিল হয়ে থাকে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৬. আমি আমার আয়াতসমূহ (বুঝা এবং গ্রহণ করা) থেকে সেসব লোককে বিরত রাখবো, যারা পৃথিবীতে অন্যায় অহঙ্কার করে। আর যদি তারা সমস্ত নিদর্শন দেখে (তবুও) এগুলোর উপর ঈমান আনয়ন করবে না, যদি তারা হেদায়াতের পথ দেখে (তখনও) একে (তাদের) পথ বানাবে না এবং যদি তারা গোমরাহীর পথ দেখে (তখন) একে নিজেদের পথের ন্যায় আলিঙ্গন করবে। তা এ জন্যে যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে এবং এ থেকে অন্যমনস্ক হয়ে আছে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৭
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ لِقَآءِ الۡاٰخِرَۃِ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ ؕ ہَلۡ یُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৭. এবং যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও আখিরাতের সাক্ষাতকে অস্বীকার করলো তাদের সমস্ত কৃতকর্ম নিষ্ফল হয়ে গেলো। তারা কী প্রতিফল পাবে? কিন্তু তাই (পাবে), যা তারা করতো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৭. আর যেসব লোক আমাদের আয়াতসমূহকে এবং পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে, তাদের কর্মকান্ড ধ্বংস হয়েছে। তারা যা কিছু করতো তা ব্যতীত তাদের আর কী প্রতিদান মিলবে?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৮
وَ اتَّخَذَ قَوۡمُ مُوۡسٰی مِنۡۢ بَعۡدِہٖ مِنۡ حُلِیِّہِمۡ عِجۡلًا جَسَدًا لَّہٗ خُوَارٌ ؕ اَلَمۡ یَرَوۡا اَنَّہٗ لَا یُکَلِّمُہُمۡ وَ لَا یَہۡدِیۡہِمۡ سَبِیۡلًا ۘ اِتَّخَذُوۡہُ وَ کَانُوۡا ظٰلِمِیۡنَ ﴿۱۴۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৮. এবং মূসার পর তাঁর সম্প্রদায় তাদের অলংকারাদি দ্বারা এক গো-বৎস গড়ে বসলো, এক প্রাণহীন দেহ, গাভীর মতো আওয়াজ করতো। তারা কি দেখলো না যে, তা তাদের সাথে না কথা বলছে এবং না তাদেরকে কোন পথ দেখাচ্ছে? তারা সেটাকে গ্রহণ করেছে আর তারা ছিলো যালিম।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৮. আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায় তাঁর (তূর পর্বতে গমনের) পর তাদের অলঙ্কারাজি দিয়ে একটি বাছুরের অবয়ব বানালো, যার স্বর ছিল গাভীর স্বরের ন্যায়। তারা কি দেখেনি যে, এটি না তাদের সাথে কথা বলতে পারতো আর না তাদেরকে পথও দেখাতে পারতো? তারা একেই (উপাস্য) বানিয়ে নিল আর তারা ছিল যালিম।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৪৯
وَ لَمَّا سُقِطَ فِیۡۤ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ رَاَوۡا اَنَّہُمۡ قَدۡ ضَلُّوۡا ۙ قَالُوۡا لَئِنۡ لَّمۡ یَرۡحَمۡنَا رَبُّنَا وَ یَغۡفِرۡ لَنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۱۴۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৪৯. এবং যখন তারা অনুতপ্ত হলো এবং বুঝতে পারল যে, তারা বিপথগামী হয়েছে; তখন বললো, ‘যদি আমাদের রব আমাদের উপর দয়া না করেন এবং আমাদেরকে ক্ষমা না করেন, তবে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৪৯. আর যখন তারা তাদের কৃতকর্মের জন্যে গভীরভাবে লজ্জিত হলো এবং অনুধাবন করলো যে, তারা বাস্তবিকই গোমরাহ্ হয়ে গিয়েছে (তখন) তারা বলতে লাগলো, ‘যদি আমাদের প্রতিপালক আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন এবং আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫০
وَ لَمَّا رَجَعَ مُوۡسٰۤی اِلٰی قَوۡمِہٖ غَضۡبَانَ اَسِفًا ۙ قَالَ بِئۡسَمَا خَلَفۡتُمُوۡنِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِیۡ ۚ اَعَجِلۡتُمۡ اَمۡرَ رَبِّکُمۡ ۚ وَ اَلۡقَی الۡاَلۡوَاحَ وَ اَخَذَ بِرَاۡسِ اَخِیۡہِ یَجُرُّہٗۤ اِلَیۡہِ ؕ قَالَ ابۡنَ اُمَّ اِنَّ الۡقَوۡمَ اسۡتَضۡعَفُوۡنِیۡ وَ کَادُوۡا یَقۡتُلُوۡنَنِیۡ ۫ۖ فَلَا تُشۡمِتۡ بِیَ الۡاَعۡدَآءَ وَ لَا تَجۡعَلۡنِیۡ مَعَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۵۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫০. এবং যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়ের নিকট প্রত্যাবর্তন করলো রাগে পরিপূর্ণ ও ক্ষুব্ধাবস্থায়, বললো, ‘তোমরা আমার পরে আমার কতই নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্ব করেছো! তোমরা কি তোমাদের রবের নির্দেশের পূর্বে ত্বরা করলে?’ এবং ফলকগুলো ফেলে দিলো আর আপন ভাইয়ের মাথার চুল ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলো। বললো, ‘হে আমার সহোদর! সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাকে দুর্বল মনে করেছে এবং আমাকে হত্যা করার উপক্রম হয়েছিলো। সুতরাং তুমি আমার উপর শত্রুদেরকে হাসিয়ো না এবং আমাকে যালিমদের অন্তুর্ভুক্ত করো না’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫০. আর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট চরম মর্মবেদনা ও ক্রোধভরে ফিরে আসলেন, তখন বলতে লাগলেন, ‘তোমরা আমার (চলে যাওয়ার) পর আমার অনুপস্থিতিতে খুবই নিকৃষ্ট কাজ করেছো। তোমরা কি তোমাদের প্রতিপালকের নির্দেশের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করেছো?’ এবং (মূসা আলাইহিস সালাম তাওরাতের) ফলকগুলো নিচে রেখে দিলেন এবং তাঁর ভাইয়ের মাথা ধরে নিজের দিকে টানলেন, (তখন) হারুন (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সহোদর! নিশ্চয়ই এ সম্প্রদায় আমাকে দুর্বল মনে করেছিল এবং (আমি নিষেধ করলে) আমাকে প্রায় হত্যাই করে ফেলেছিল। সুতরাং আপনি শত্রুদেরকে আমাকে নিয়ে উপহাস করার সুযোগ দেবেন না এবং আমাকে এ যালিম সম্প্রদায়ের (দলের) অন্তর্ভুক্ত করবেন না।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫১
قَالَ رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِاَخِیۡ وَ اَدۡخِلۡنَا فِیۡ رَحۡمَتِکَ ۫ۖ وَ اَنۡتَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۱۵۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫১. (হযরত মূসা) আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করো এবং আমাদেরকে তোমার দয়ার মধ্যে আশ্রয় দাও আর তুমিই সর্বাধিক দয়াময়।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫১. (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে তোমার রহমতের (আলিঙ্গনের) মাঝে প্রবেশ করাও। আর তুমি সবচেয়ে বড় অনুগ্রহকারী।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫২
اِنَّ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوا الۡعِجۡلَ سَیَنَالُہُمۡ غَضَبٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ ذِلَّۃٌ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُفۡتَرِیۡنَ ﴿۱۵۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫২. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা গো-বৎসকে গ্রহণ করে বসেছে, অবিলম্বে তাদের উপর রবের ক্রোধ ও লাঞ্ছনা আপতিত হবে পার্থিব জীবনে; এবং আমি এভাবে প্রতিফল দিয়ে থাকি মিথ্যা রচনাকারীদেরকে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫২. নিশ্চয়ই যে সব লোক বাছুরকে (উপাস্য) বানিয়ে নিয়েছে, তাদের প্রতিপালকের ক্রোধ তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার সাথে পকড়াও করবে। আমরা এভাবে মিথ্যা উদ্ভাবনকারীদেরকে শাস্তি দেই।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৩
وَ الَّذِیۡنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ ثُمَّ تَابُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِہَا وَ اٰمَنُوۡۤا ۫ اِنَّ رَبَّکَ مِنۡۢ بَعۡدِہَا لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۵۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৩. এবং যারা অসৎ কার্যাদি করেছে এবং সেগুলোর পরে তাওবা করেছে ও ঈমান এনেছে;
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৩. আর যে সব লোক মন্দ কাজ করেছে, অতঃপর তওবা করে নিয়েছে এবং ঈমান আনয়ন করেছে; (তবে) এরপর নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৪
وَ لَمَّا سَکَتَ عَنۡ مُّوۡسَی الۡغَضَبُ اَخَذَ الۡاَلۡوَاحَ ۚۖ وَ فِیۡ نُسۡخَتِہَا ہُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّلَّذِیۡنَ ہُمۡ لِرَبِّہِمۡ یَرۡہَبُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৪. এবং মূসার ক্রোধ প্রশমিত হলো তখন তিনি ফলকগুলো তুলে নিলেন আর সেগুলোর লিখিত বিষয়াদির মধ্যে হিদায়ত ও রহমত রয়েছে ওই সব লোকের জন্য, যারা আপন রবকে ভয় করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৪. আর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর ক্রোধ প্রশমিত হলো, তখন তিনি ফলকগুলো তুলে নিলেন, আর এগুলোর (এ ফলকগুলোর) খোদাই-লিপিতে ওইসব লোকদের জন্যে হেদায়াত এবং রহমত (উল্লেখিত) ছিল যারা তাদের প্রতিপালককে অত্যধিক ভয় করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৫
وَ اخۡتَارَ مُوۡسٰی قَوۡمَہٗ سَبۡعِیۡنَ رَجُلًا لِّمِیۡقَاتِنَا ۚ فَلَمَّاۤ اَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ قَالَ رَبِّ لَوۡ شِئۡتَ اَہۡلَکۡتَہُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ وَ اِیَّایَ ؕ اَتُہۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ السُّفَہَآءُ مِنَّا ۚ اِنۡ ہِیَ اِلَّا فِتۡنَتُکَ ؕ تُضِلُّ بِہَا مَنۡ تَشَآءُ وَ تَہۡدِیۡ مَنۡ تَشَآءُ ؕ اَنۡتَ وَلِیُّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا وَ ارۡحَمۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡغٰفِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৫. এবং মূসা আপন সম্প্রদায় থেকে সত্তরজন লোক্কে আমার প্রতিশ্রুতির জন্য মনোনীত করলো। অতঃপর যখন তাদেরকে ভুমিকম্প পেয়ে বসলো, তখন মূসা আরয করলো, ‘হে আমার রব! তুমি ইচ্ছা করলে তো পুর্বেই তাদেরকে ও আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারতে; তুমি কি আমাদেরকে ওই কাজের জন্য ধ্বংস করবে, যা আমাদের নির্বোধ লোকেরা করেছে? ওটা তো নয়, কিন্তু তোমার পরীক্ষা করা। তুমি তা দ্বারা বিপথগামী করো যাকে চাও এবং সৎপথে পরিচালিত করো যাকে ইচ্ছা করো। তুমি আমাদের মুনিব; সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করো এবইং আমাদের উপর দয়া করো। আর তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৫. আর মূসা (আলাইহিস সালাম ক্ষমার জন্যে আমাদের সমীপে উপস্থিত হতে) তাঁর সম্প্রদায়ের সত্তর জন পুরুষকে আমাদের দেয়া নির্ধারিত সময়ের জন্যে বাছাই করলেন। অতঃপর (নিজ সম্প্রদায়কে মন্দ কাজে বাধা না দেয়ার শাস্তি হিসেবে) যখন তাদেরকে ভয়ানক ভুমিকম্প পেয়ে বসলো, তখন (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে প্রতিপালক! যদি তুমি চাইতে, তবে তো এরপূর্বেই এদেরকে এবং আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারতে। তুমি কি আমাদেরকে সে (ভুলের) কারণে ধ্বংস করে দেবে, যা আমাদের মধ্যে নির্বোধ লোকেরা করেছে? এ তো কেবল তোমার পরীক্ষা। এর মাধ্যমে যাকে চাও গোমরাহ্ করো আর যাকে চাও হেদায়াত দাও। তুমিই আমাদের অভিভাবক, তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও, আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করো। আর তুমিই সবচেয়ে বড় ক্ষমাশীল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৬
وَ اکۡتُبۡ لَنَا فِیۡ ہٰذِہِ الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِنَّا ہُدۡنَاۤ اِلَیۡکَ ؕ قَالَ عَذَابِیۡۤ اُصِیۡبُ بِہٖ مَنۡ اَشَآءُ ۚ وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ کُلَّ شَیۡءٍ ؕ فَسَاَکۡتُبُہَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ بِاٰیٰتِنَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۵۶﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
১৫৬. আর আমাদের জন্য এ দুনিয়ায় কল্যাণ লিপিবদ্ধ করো এবং আখিরাতে, নিশ্চয় আমরা তোমার প্রতি প্রত্যাবর্তন করেছি।’ বললেন, ‘আমার শাস্তি আমি যাকে চাই দিয়ে থাকি, আর আমার দয়া প্রতিটি বস্তুকে ঘিরে রয়েছে; সুতরাং অবিলম্বে আমি নি’মাতসমূহ তাদের জন্যই লিপিবদ্ধ করে দেবো, যারা ভয় করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার নিদর্শনসমুহের উপর ঈমান আনে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৬. আর তুমি আমাদের জন্যে কল্যাণ লিখে দাও এ দুনিয়ার (জীবনের) মাঝে এবং পরকালেও। নিশ্চয়ই আমরা তোমার দিকে ফিরে এসেছি এবং সম্পূর্ণরূপে তোমার দিকে ঝুঁকে পড়েছি।’ (আল্লাহ্) বললেন, ‘আমি যাকে চাই তার উপর আমার শাস্তি আরোপ করি এবং আমার রহমত সকল কিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছে। সুতরাং আমি অচিরেই তা তাদের জন্যে লিখে দেবো যারা পরহেযগারীতা অবলম্বনকারী ও নিয়মিত যাকাত দানকারী এবং এরাই আমাদের আয়াতসমূহে বিশ্বাস রাখে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৭
اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَہٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَہُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہٰہُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُحِلُّ لَہُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیۡہِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَ یَضَعُ عَنۡہُمۡ اِصۡرَہُمۡ وَ الۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِہٖ وَ عَزَّرُوۡہُ وَ نَصَرُوۡہُ وَ اتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَہٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৭. ওই সব লোক, যারা দাসত্ব করবে এ পড়াবিহীন অদৃশ্যের সংবাদদাতা রসূলের, যাঁকে লিপিবদ্ধ পাবে নিজেদের নিকট তাওরীত ও ইন্জীলের মধ্যে; তিনি তাদেরকে সৎকর্মের নির্দেশ দেবেন এবং অসৎ কাজে বাধা দেবেন, আর পবিত্র বস্তুগুলো তাদের জন্য হালাল করবেন এবং অপবিত্র বস্তুসমূহ তাদের উপর হারাম করবেন; আর তাদের উপর থেকে ওই কঠিন কষ্টের বোঝা ও গলার শৃংখল যা তাদের উপর ছিলো, নামিয়ে অপসারিত করবেন। সুতরাং ওই সব লোক, যারা তাঁর উপর ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং ওই নূরের অনুসরণ করে, যা তাঁর সাথে অবতীর্ণ হয়েছে তারাই সফলকাম হয়েছে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৭. (এরা ওইসব লোক) যারা ওই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর আনুগত্য করে যিনি ‘উম্মী’ (উপাধিপ্রাপ্ত) নবী (অর্থাৎ দুনিয়াতে কোনো ব্যক্তির নিকট শিক্ষা লাভ করা ব্যতিরেকেই আল্লাহ্র পক্ষ থেকে মানুষকে অদৃশ্যের সংবাদ দেন এবং আর্থ-সামাজিক বিষয়ের জ্ঞান ও সূক্ষ্ম গোপন বিষয়াদি অবগত করেন), যাঁর (বৈশিষ্ট্য ও পরিপূর্ণতার) উল্লেখ তারা তাঁদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জিলে পায়, যিনি তাদেরকে উত্তম বিষয়ের নির্দেশ দেন এবং মন্দ বিষয়ে নিষেধ করেন, তাদের জন্যে পবিত্র বস্তুগুলোকে হালাল করেন, অপবিত্র বস্তুগুলোকে হারাম করেন এবং তাদের থেকে তাদের (নাফরমানীর কারণে চাপিয়ে দেয়া) ভারী বোঝা ও (বন্দীত্বের) শৃঙ্খল অপসারণ করেন (এবং তাদেরকে মুক্তির নিয়ামতের মাধ্যমে সৌভাগ্যবান করেন)। অতঃপর যারা (এ মহিমান্বিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর উপর ঈমান আনয়ন করবে, তাঁকে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করবে, তাঁকে (দ্বীনে) সাহায্য ও সহায়তা করবে এবং তাঁর সাথে অবতীর্ণ এ (কুরআনের) আলোর আনুগত্য করবে, তারাই সফলকাম।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৮
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنِّیۡ رَسُوۡلُ اللّٰہِ اِلَیۡکُمۡ جَمِیۡعَۨا الَّذِیۡ لَہٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ۪ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہِ النَّبِیِّ الۡاُمِّیِّ الَّذِیۡ یُؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ کَلِمٰتِہٖ وَ اتَّبِعُوۡہُ لَعَلَّکُمۡ تَہۡتَدُوۡنَ ﴿۱۵۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৮. আপনি বলুন, ‘হে মানবকুল! আমি তোমাদের সবার প্রতি ওই আল্লাহ্র রসূল যে, আসমান ও যমীনের বাদশাহী একমাত্র তাঁরই; তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই; তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান; সুতরাং ঈমান আনো আল্লাহ্ এবং তাঁর পড়া-বিহীন, অদৃশ্যের সংবাদদাতা রসূলের উপর, যিনি আল্লাহ্ ও তাঁর বাণীসমূহের উপর ঈমান আনেন এবং তাঁরই গোলামী করো, তবেই তোমরা পথ পাবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৮. বলে দিন, ‘হে মানবসমাজ! আমি তোমাদের সকলের প্রতি ওই আল্লাহ্র রাসূল (হয়ে আগমন করেছি) যিনি সমগ্র আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান।’ সুতরাং তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর উপর ঈমান আনয়ন করো, যিনি ‘উম্মী’ উপাধিবিশিষ্ট মর্যাদার অধিকারী নবী (অর্থাৎ তিনি আল্লাহ্ ব্যতীত কারো নিকট থেকে কোনো কিছুই শিখেননি, কিন্তু সমগ্র সৃষ্টি জগতের চেয়ে অধিক জ্ঞান রাখেন এবং কাফের ও মুশরিকদের সমাজে যৌবনে পদার্পণ করা সত্তেও মাতৃগর্ভ থেকে ভুমিষ্ট শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ ও পূতঃপবিত্র), যিনি আল্লাহ্র প্রতি এবং তাঁর (অবতীর্ণ সমস্ত) বাণীর প্রতি ঈমান রাখেন। আর তোমরা তাঁরই আনুগত্য করো, যাতে তোমরা হেদায়াত লাভ করতে পারো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৫৯
وَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰۤی اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৫৯. এবং মূসার সম্প্রদায় থেকে এমন এক দল রয়েছে, যারা সত্য পথের সন্ধান দেয় এবং তা দ্বারা ন্যায় বিচার করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৫৯. আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়ের মধ্যে একদল (এমনও ছিল), যারা সত্যের পথ দেখাতো এবং সে অনুসারেই ন্যায়বিচার (নির্ভর ফায়সালা) করতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬০
وَ قَطَّعۡنٰہُمُ اثۡنَتَیۡ عَشۡرَۃَ اَسۡبَاطًا اُمَمًا ؕ وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اِذِ اسۡتَسۡقٰىہُ قَوۡمُہٗۤ اَنِ اضۡرِبۡ بِّعَصَاکَ الۡحَجَرَ ۚ فَانۡۢبَجَسَتۡ مِنۡہُ اثۡنَتَا عَشۡرَۃَ عَیۡنًا ؕ قَدۡ عَلِمَ کُلُّ اُنَاسٍ مَّشۡرَبَہُمۡ ؕ وَ ظَلَّلۡنَا عَلَیۡہِمُ الۡغَمَامَ وَ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡہِمُ الۡمَنَّ وَ السَّلۡوٰی ؕ کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ ؕ وَ مَا ظَلَمُوۡنَا وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۶۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬০. এবং আমি তাদেরকে বারটা গোত্রে, তথা দলে বিভক্ত করেছি আর আমি ওহী প্রেরণ করেছি মূসার প্রতি, যখন তাঁর নিকট তাঁর সম্প্রদায় পানি চেয়েছে, ‘এ পাথরের উপর লাঠি দ্বারা আঘাত করো’। অতঃপর তা থেকে বারটা প্রস্রবণ ফেটে বের হলো। প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ ঘাট চিনে নিলো; এবং আমি তাদের উপর মেঘকে ছায়া বিস্তারকারী করেছি, আর তাদের উপর ‘মান্ন্ ও সাল্ওয়া’ অবতাঁরণ করেছি। ‘খাও! আমার প্রদত্ত পবিত্র বস্তুসমূহ’। এবং তারা আমার কোন ক্ষতি করে নি, কিন্তু নিজেদের আত্নারই ক্ষতি করছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬০. আর আমরা তাদেরকে পৃথক পৃথকভাবে বারোটি দলে বিভক্ত করলাম। আর যখন তাঁর নিকট তাঁর সম্প্রদায় পানি প্রার্থনা করলো, আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর প্রতি (এ) প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি লাঠি দ্বারা প্রস্তরে আঘাত করো’, তখন তা থেকে বারোটি ঝরনাধারা প্রবাহিত হলো। অতঃপর প্রত্যেক দল তাদের পানস্থান চিনে নিল। আর আমরা তাদের উপর মেঘমালার ছায়া সম্প্রসারিত করলাম এবং তাদের জন্যে মান্না এবং সালওয়া অবতীর্ণ করলাম (এবং তাদেরকে বললাম), ‘আমরা তোমাদেরকে যে পবিত্র রিযিক দান করেছি তা থেকে খাও।’ (কিন্তু নাফরমানী করে এবং নিয়ামতের অকৃতজ্ঞ হয়ে) তারা আমাদের প্রতি যুলুম করেনি বরং নিজেদের আত্মার প্রতিই যুলুম করেছে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬১
وَ اِذۡ قِیۡلَ لَہُمُ اسۡکُنُوۡا ہٰذِہِ الۡقَرۡیَۃَ وَ کُلُوۡا مِنۡہَا حَیۡثُ شِئۡتُمۡ وَ قُوۡلُوۡا حِطَّۃٌ وَّ ادۡخُلُوا الۡبَابَ سُجَّدًا نَّغۡفِرۡ لَکُمۡ خَطِیۡٓـٰٔتِکُمۡ ؕ سَنَزِیۡدُ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۶۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬১. এবং স্মরণ করো! যখন তাদেরকে বলা হলো, ‘এ শহরে বসবাস করো এবং এর মধ্যে যেখানে ইচ্ছা আহার করো আর বলো, ‘গুনাহ্ ঝরে যাক’! এবং দরজায় সাজ্দাবনত হয়ে প্রবেশ করো। আমি তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেবো। অবিলম্বে সৎকর্মপরায়ণদেরকে অধিক দান করবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬১. আর (স্মরণ করুন) যখন তাদেরকে বলা হলো, এ শহরে (অর্থাৎ জেরুজালেমের বাইতুল মাক্বদিস অথবা জেরিকোর আরিহায়) বসবাস করো, তোমরা সেখান থেকে যেমনটি চাও, খাও এবং (মুখে) বলতে থাকো, ‘(আমাদের গোনাহ) ক্ষমা করে দিন,’ আর (শহরের) দরজায় সেজদাবনত অবস্থায় প্রবেশ করো, (তাহলে) আমরা তোমাদের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবো। অচিরেই আমরা নেক্কারদেরকে আরো অধিক দান করবো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬২
فَبَدَّلَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡہُمۡ قَوۡلًا غَیۡرَ الَّذِیۡ قِیۡلَ لَہُمۡ فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوۡا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۶۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬২. অতঃপর তাদের মধ্যে যালিমগণ বাক্য বদলে দিলো সেটারই বিপরীত, যা বলার জন্য তাদের প্রতি নির্দেশ ছিলো। সুতরাং আমি তাদের উপর আসমান থেকে শাস্তি প্রেরণ করলাম তাদের যুল্মের বদলাস্বরূপ।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬২. অতঃপর তাদেরকে যা বলা হয়েছিল তাদের মধ্যে যালিমেরা তা অন্য কথা দিয়ে পরিবর্তন করে ফেললো। সুতরাং তারা যুলুমে লিপ্ত থাকায় আমরা তাদের উপর আসমান থেকে শাস্তি প্রেরণ করলাম।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৩
وَ سۡـَٔلۡہُمۡ عَنِ الۡقَرۡیَۃِ الَّتِیۡ کَانَتۡ حَاضِرَۃَ الۡبَحۡرِ ۘ اِذۡ یَعۡدُوۡنَ فِی السَّبۡتِ اِذۡ تَاۡتِیۡہِمۡ حِیۡتَانُہُمۡ یَوۡمَ سَبۡتِہِمۡ شُرَّعًا وَّ یَوۡمَ لَا یَسۡبِتُوۡنَ ۙ لَا تَاۡتِیۡہِمۡ ۚۛ کَذٰلِکَ ۚۛ نَبۡلُوۡہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۱۶۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৩. এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন ওই জনপদের অবস্থা, যা সমুদ্রতীরে অবস্থিত ছিলো, যখন তারা শনিবার সম্বন্ধে সীমালঙ্ঘন করতো; যখন শনিবারে তাদের মাছগুলো পানির উপর সাতাঁর কেটে তাদের সামনে আসতো; এবং যেদিন শনিবার হতো না সেদিন আসতো না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করতাম, তাদের নির্দেশ অমান্য করার কারণে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৩. আর আপনি তাদেরকে ঐ জনপদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন যা সমুদ্রের কিনারায় অবস্থিত ছিল, যখন সেসব লোক শনিবার দিবসের (অর্থাৎ সাবাতের) ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করতো। (এটি সে সময়ে হয়েছিল) যখন তাদের (মহিমান্বিত) শনিবারে পানির (উপরিভাগে তাদের সম্মুখে) সকল দিক থেকে মৎস্যগুলো সহজে দৃশ্যমান হতো; আর (অবশিষ্ট) যে দিনগুলোকে তারা শনিবারের মতো উদযাপন করতো না তখন তাদের নিকট (মৎসসমূহ) আসতো না। এভাবে আমরা তাদেরকে পরীক্ষা করতাম, যেহেতু তারা নাফরমান ছিল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৪
وَ اِذۡ قَالَتۡ اُمَّۃٌ مِّنۡہُمۡ لِمَ تَعِظُوۡنَ قَوۡمَۨا ۙ اللّٰہُ مُہۡلِکُہُمۡ اَوۡ مُعَذِّبُہُمۡ عَذَابًا شَدِیۡدًا ؕ قَالُوۡا مَعۡذِرَۃً اِلٰی رَبِّکُمۡ وَ لَعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۶۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৪. এবং যখন তাদের মধ্য থেকে একদল বললো, ‘কেন সদুপদেশ দিচ্ছো ওই সব লোককে, যাদেরকে আল্লাহ্ ধ্বংসাকারী কিংবা কঠোর শাস্তিদাতা?’ তারা বললো, ‘তোমাদের রবের নিকট ওযররূপে পেশ করার জন্য এবং হয় তো তাদের ভয় হবে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৪. যখন তাদের একদল (ধর্মপ্রচারের দায়িত্বে থাকা লোকদেরকে) বললো, ‘তোমরা সেসব লোকদেরকে কেন উপদেশ দিচ্ছো, যাদেরকে আল্লাহ্ ধ্বংস করে দেবেন অথবা যাদেরকে তিনি কঠিন শাস্তি দেবেন?’ তখন তারা উত্তর দিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের সমীপে (নিজেদের) অযুহাত পেশ করার জন্যে এবং এ জন্যে(ও) যে, হয়তো তারা পরহেযগার হবে’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৫
فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖۤ اَنۡجَیۡنَا الَّذِیۡنَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ السُّوۡٓءِ وَ اَخَذۡنَا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا بِعَذَابٍۭ بَئِیۡسٍۭ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۱۶۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৫. অতঃপর যখন তারা ভুলে গেলো যে উপদেশ তাদেরকে দেওয়া হয়েছিলো, তখন আমি উদ্ধার করেছি ওই সব লোককে, যারা অসৎকর্ম থেকে নিবৃত্ত করতো এবং যালিমদেরকে মহা শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছি তাদের নির্দেশ অমান্য করার বদলাস্বরূপ।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৫. অতঃপর যখন তারা সেসব) ভুলে গেল যার উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল, (তখন) যারা মন্দ কাজে নিষেধ করতো, (অর্থাৎ কি কি করা যাবে না তার দায়িত্ব পালন করতো) আমরা তাদেরকে মুক্তি দিলাম। আর (বাকি) যারা (প্রত্যক্ষভাবে অথবা পরোক্ষভাবে) অত্যাচার করতো, নাফরমানীর কারণে আমরা তাদেরকে জঘন্যতম শাস্তির মাধ্যমে পাকড়াও করলাম।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৬
فَلَمَّا عَتَوۡا عَنۡ مَّا نُہُوۡا عَنۡہُ قُلۡنَا لَہُمۡ کُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ ﴿۱۶۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৬. অতঃপর যখন তারা নিষেধসূচক হুকুমের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করলো, তখন আমি তাদের উদ্দেশে বললাম ‘হীন বানর হয়ে যাও!’
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৬. অতঃপর যখন তারা সেসব বিষয়ে (নিষেধাজ্ঞার) অবাধ্য হলো, যা তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল (তখন) তাদেরকে আমরা নির্দেশ দিলাম, ‘তোমরা লাঞ্ছিত ও অপদস্ত বানরে পরিণত হও।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৭
وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکَ لَیَبۡعَثَنَّ عَلَیۡہِمۡ اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ یَّسُوۡمُہُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ ؕ اِنَّ رَبَّکَ لَسَرِیۡعُ الۡعِقَابِ ۚۖ وَ اِنَّہٗ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۶۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৭. এবং যখন আপনার রব নির্দেশ শুনিয়ে দিলেন যে, অবশ্যই তিনি ক্বিয়ামতের দিন পর্যন্ত তাদের এমন সব লোককে প্রেরণ করতে থাকবেন, যারা তাদেরকে কঠিন শাস্তি ভোগাতে থাকবে। নিঃসন্দেহে, আপনার রব শীঘ্রই শাস্তিদাতা এবং নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৭. আর (সে সময়ের কথাও স্মরণ করুন), যখন আপনার প্রতিপালক (ইহুদীদেরকে এ) নির্দেশ শুনালেন যে, (আল্লাহ্) তাদের উপর কিয়ামত দিবস পর্যন্ত এমন (কোনো না কোনো) ব্যক্তিকে অবশ্যই কর্তৃত্বশীল করে দিতে থাকবেন, যারা তাদেরকে অশুভ দুর্দশায় ফেলতেই থাকবে। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি প্রদানকারী। আর নিশ্চয়ই তিনি বড়ই ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু(ও)।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৮
وَ قَطَّعۡنٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اُمَمًا ۚ مِنۡہُمُ الصّٰلِحُوۡنَ وَ مِنۡہُمۡ دُوۡنَ ذٰلِکَ ۫ وَ بَلَوۡنٰہُمۡ بِالۡحَسَنٰتِ وَ السَّیِّاٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۱۶۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৮. এবং তাদেরকে আমি দুনিয়ায় বিভক্ত করেছি দলে দলে। তাদের মধ্যে কতেক সৎকর্মপরায়ণ এবং কতেক অন্যরূপ। আর আমি তাদেরকে মঙ্গল ও অমঙ্গল দ্বারা পরীক্ষা করেছি, যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৮. আর আমরা তাদেরকে ভু-পৃষ্ঠে বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত করে (ছড়িয়ে) দিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে কেউ নেক্কার এবং তাদের(ই) মধ্যে কেউ কেউ তাদের থেকে ভিন্ন (বদকার)ও। আর আমরা তাদেরকে নিয়ামতরাজি ও দুর্ভোগে (উভয় পন্থায়) পরীক্ষা করেছিলাম, যাতে তারা (আল্লাহ্র দিকে) প্রত্যাবর্তন করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৬৯
فَخَلَفَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ خَلۡفٌ وَّرِثُوا الۡکِتٰبَ یَاۡخُذُوۡنَ عَرَضَ ہٰذَا الۡاَدۡنٰی وَ یَقُوۡلُوۡنَ سَیُغۡفَرُ لَنَا ۚ وَ اِنۡ یَّاۡتِہِمۡ عَرَضٌ مِّثۡلُہٗ یَاۡخُذُوۡہُ ؕ اَلَمۡ یُؤۡخَذۡ عَلَیۡہِمۡ مِّیۡثَاقُ الۡکِتٰبِ اَنۡ لَّا یَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ اِلَّا الۡحَقَّ وَ دَرَسُوۡا مَا فِیۡہِ ؕ وَ الدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৬৯. অতঃপর তাদের স্থলে তাদের পরে, ওই অযোগ্য উত্ত- পুরুষ এসেছে, যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে; (তারা) এ দুনিয়ার সামগ্রী গ্রহণ করে এবং বলে, ‘এখন আমাদেরকে ক্ষমা করা হবে’ আর যদি অনুরূপ সামগ্রী তাদের নিকট আরো আসে তবে তারা তাও গ্রহণ করে। তাদের নিকট থেকে কি কিতাবের মধ্যে এ মর্মে অঙ্গীকার নেয়া হয় নি যে, তারা আল্লাহ্র দিকে সম্পৃক্ত করবে না, কিন্তু সত্যকে? এবং তারা তা পড়েছে; আর নিশ্চয় পরকালীন ঘরই শ্রেয় খোদাভীরুদের জন্য। সুতরাং তোমাদের কি বিবেক নেই?
📗 ইরফানুল কুরআন
১৬৯. অতঃপর তাদের পর অযোগ্য লোকেরা (তাদের) স্থলাভিষিক্ত হলো, যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছিল। এ সব উত্তরাধিকারীরা এ (দুনিয়ার) তুচ্ছ ধনসম্পদ (ঘুষ হিসেবে) গ্রহণ করে এবং বলে, ‘অচিরেই আমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে’, অথচ যদি এমনতর ধনসম্পদ তাদের নিকট আরো আসে (তবে) তাও নিয়ে নেবে। তাদের থেকে কি (আল্লাহ্র) কিতাবের অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহ্র ব্যাপারে সত্য (বিষয়) ব্যতীত আর কিছু বলবে না? আর তারা (সবকিছু) পাঠ করেছিল, যা তাতে (বিবৃত) ছিল। আর পরকালের আবাস এমন লোকদের জন্যে উত্তম, যারা পরহেযগারীতা অবলম্বন করে। তোমরা কি বুঝো না?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭০
وَ الَّذِیۡنَ یُمَسِّکُوۡنَ بِالۡکِتٰبِ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّا لَا نُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُصۡلِحِیۡنَ ﴿۱۷۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭০. এবং ওই সব লোক, যারা কিতাবকে দৃঢ়ভাবে ধারন করে এবং তারা নামায ক্বায়েম রেখেছে- আমি সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করি না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭০. আর যেসব লোক (আল্লাহ্র) কিতাবকে সুদৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরে থাকে এবং (নিয়মানুবর্তী হয়ে) নামায কায়েম রাখে, (তবে) নিশ্চয়ই আমরা সংশোধনকারীদের প্রতিদান নষ্ট করি না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭১
وَ اِذۡ نَتَقۡنَا الۡجَبَلَ فَوۡقَہُمۡ کَاَنَّہٗ ظُلَّۃٌ وَّ ظَنُّوۡۤا اَنَّہٗ وَاقِعٌۢ بِہِمۡ ۚ خُذُوۡا مَاۤ اٰتَیۡنٰکُمۡ بِقُوَّۃٍ وَّ اذۡکُرُوۡا مَا فِیۡہِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭১. এবং যখন আমি পর্বতকে তাদের ঊর্ধ্বে স্থাপন করেছি, ওটা ছিলো যেন এক ছায়াদানকারী এবং তারা মনে করলো যে, ওটা তাদের উপর পতিত হবে; ‘গ্রহণ করো দৃঢ়ভাবে যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছি এবং স্মরণ করো যা তাঁতে রয়েছে, যাতে তোমরা তাক্বওয়ার অধিকারী হও’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭১. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আমরা তাদের উপর (এমনভাবে) পাহাড়কে তুলে ধরলাম যেন এটি (একটি) শামিয়ানা; আর তারা (এ) ধারণা করতে লাগলো যে, এটি তাদের উপর পতিত হবে। (সুতরাং আমরা তাদেরকে বললাম, ‘ভয় করো না, বরং) তোমরা এটি (এ কিতাব কার্যত) মজবুতভাবে আকড়ে ধরে রাখো, যা আমরা তোমাদেরকে প্রদান করেছি। আর ঐসব (বিধিবিধান খুব ভালোভাবে) স্মরণ রাখো যা এতে (উল্লেখ) রয়েছে, যাতে তোমরা (শাস্তি থেকে) রক্ষা পাও।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭২
وَ اِذۡ اَخَذَ رَبُّکَ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اٰدَمَ مِنۡ ظُہُوۡرِہِمۡ ذُرِّیَّتَہُمۡ وَ اَشۡہَدَہُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ ۚ اَلَسۡتُ بِرَبِّکُمۡ ؕ قَالُوۡا بَلٰی ۚۛ شَہِدۡنَا ۚۛ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اِنَّا کُنَّا عَنۡ ہٰذَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۷۲﴾ۙ
📕 কানযুল ঈমান
১৭২. আর হে মাহবূব, স্মরণ করুন! যখন আপনার রব আদম সন্তানদের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরগণকে বের করেছেন এবং তাদের নিজেদের উপর নিজেদেরকে সাক্ষী করেছেন- ‘আমি কি তোমাদের রব নই’? সবাই বললো, ‘কেন নন? (নিশ্চয়) আমরা সাক্ষী হলাম’। (এ স্বীকৃতি গ্রহণ এ জন্য) যে, তোমরা যেন ক্বিয়ামতের দিন না বলো- ‘আমরা তো সে বিষয়ে অবগত ছিলাম না;’
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭২. আর (স্মরণ করুন!) যখন আপনার প্রতিপালক আদম সন্তানদের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরদেরকে বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের জন্যে সাক্ষী বানালেন (এবং বললেন), ‘আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?’ তারা (সকলে) বলে উঠলো, ‘কেন নয়! (তুমিই আমাদের প্রতিপালক!)’। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যাতে কিয়ামতের দিন এ কথা (না) বলো যে, ‘আমরা এ অঙ্গীকার সম্পর্কে উদাসীন ছিলাম’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৩
اَوۡ تَقُوۡلُوۡۤا اِنَّمَاۤ اَشۡرَکَ اٰبَآؤُنَا مِنۡ قَبۡلُ وَ کُنَّا ذُرِّیَّۃً مِّنۡۢ بَعۡدِہِمۡ ۚ اَفَتُہۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ ﴿۱۷۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৩. কিংবা তোমরা যেন একথা না বলো- ‘শির্ক তো পূর্বে আমাদের পূর্ব-পুরুষগণ করেছে; ;আর আমরা তো তাদের পরবর্তী বংশধর ছিলাম; তবে কি তুমি আমাদেরকে ওই কৃতকর্মের কারণে ধ্বংস করবে, যা বাতিল পন্থীগণ করেছে’?
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৩. অথবা (এমন যেন না হয় যে) তোমরা বলতে শুরু করো, ‘অংশীদার তো কেবল আমাদের পিতৃপুরুষেরা পূর্বে সাব্যস্ত করেছিল। আর আমরা তো তাদের পর (তাদের) সন্তান ছিলাম (আমরা অপরাধী নই, প্রকৃত অপরাধী তো তারা)। তুমি কি আমাদেরকে এ (গোনাহের) কারণে ধ্বংস করে দেবে, যা বাতিলেরা সম্পন্ন করতো?’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৪
وَ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ وَ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۱۷۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৪. এবং আমি নিদর্শনসমূহ বিভিন্ন ভঙ্গিতে বর্ণনা করি আর এজন্য যে, কখনো তারা ফিরে আসবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৪. আর এভাবে আমরা আয়াতসমূহকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি যাতে তারা (সত্যের দিকে) প্রত্যাবর্তন করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৫
وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ الَّذِیۡۤ اٰتَیۡنٰہُ اٰیٰتِنَا فَانۡسَلَخَ مِنۡہَا فَاَتۡبَعَہُ الشَّیۡطٰنُ فَکَانَ مِنَ الۡغٰوِیۡنَ ﴿۱۷۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৫. এবং হে মাহবূব! তাদেরকে ওই ব্যক্তির বৃত্তান্ত শুনান, যাকে আমি আমার নিদর্শনাদি দিয়েছি, অতঃপর সে ওইগুলো থেকে পরিষ্কারভাবে বের হয়ে গেছে। তখন শয়তান তাঁর পেছনে লাগলো অতঃপর সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৫. আর আপনি তাদেরকে সে ব্যক্তির ঘটনা(ও) শুনিয়ে দিন, যাকে আমরা আমাদের নিদর্শনাবলী দিয়েছিলাম, অতঃপর সে তা (অর্থাৎ জ্ঞান ও উপদেশ) থেকে বের হয়ে গেল এবং শয়তান তার পশ্চাতে লেগে গেল, তখন সে গোমরাহ্দের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৬
وَ لَوۡ شِئۡنَا لَرَفَعۡنٰہُ بِہَا وَ لٰکِنَّہٗۤ اَخۡلَدَ اِلَی الۡاَرۡضِ وَ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ ۚ فَمَثَلُہٗ کَمَثَلِ الۡکَلۡبِ ۚ اِنۡ تَحۡمِلۡ عَلَیۡہِ یَلۡہَثۡ اَوۡ تَتۡرُکۡہُ یَلۡہَثۡ ؕ ذٰلِکَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَاقۡصُصِ الۡقَصَصَ لَعَلَّہُمۡ یَتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۱۷۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৬. এবং আমি ইচ্ছা করলে নিদর্শনসমূহের কারণে তাকে উঠিয়ে নিতাম; কিন্তু সে তো যমীনকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে এব স্বীয় কু-প্রবৃত্তির অনুসারী হয়েছে; সুতরাং তাঁর অবস্থা কুকুরের ন্যায়-তুমি তাঁর উপর হামলা করলে সেটা জিহবা বের করে দেয় এবং ছেড়ে দিলেও জিহ্বা বের করে দেয়। এ অবস্থা হচ্ছে তাদেরই, যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আপনি উপদেশ শুনান, যাতে তারা চিন্তা করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৬. আর যদি আমরা চাইতাম, তবে তাকে (এ আয়াতসমূহের জ্ঞান ও আমল)-এর মাধ্যমে সমুন্নত করতাম। কিন্তু সে (নিজে) পার্থিব জীবনের (তুচ্ছতার) দিকে ঝুঁকে গেল এবং নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করলো। (এখন) তাঁর দৃষ্টান্ত এক কুকুরের ন্যায়, যদি তুমি এর সাথে কঠোর আচরণ করো, তবে সে জিহ্বা বের করে দেয় অথবা যদি তুমি তাকে ছেড়ে দাও, (তবুও) জিহ্বা বের করে রাখে। এটি সেসব লোকদের দৃষ্টান্ত, যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আপনি এ ঘটনাবলী (লোকজনের কাছে) বর্ণনা করুন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৭
سَآءَ مَثَلَاۨ الۡقَوۡمُ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اَنۡفُسَہُمۡ کَانُوۡا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۷۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৭. কতোই মন্দ উপমা তাদের, যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং নিজেদেরই আত্নার ক্ষতি করছিলো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৭. দৃষ্টান্তের দিক থেকে সে সম্প্রদায় খুবই নিকৃষ্ট, যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে আর (প্রকৃতপক্ষে) তারা নিজেদের আত্মার উপরই যুলুম করছে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৮
مَنۡ یَّہۡدِ اللّٰہُ فَہُوَ الۡمُہۡتَدِیۡ ۚ وَ مَنۡ یُّضۡلِلۡ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۱۷۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৮. আল্লাহ্ যাকে পথ দেখান সে-ই পথের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে; আর যাদেরকে বিপথগামী করেন, তবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৮. যাকে আল্লাহ্ হেদায়াত দান করেন, তিনিই হেদায়াতপ্রাপ্ত। আর যাদেরকে তিনি গোমরাহ্ করেন, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৭৯
وَ لَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَہَنَّمَ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۫ۖ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ ہُمۡ اَضَلُّ ؕ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ ﴿۱۷۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৭৯. এবং নিশ্চয় আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি বহু জিন্ ও মানবকে; তারা এমনসব হৃদয় ধারণ করে, যেগুলোর মধ্যে বোধ-শক্তি নেই, তাদের এমনসব চক্ষু রয়েছে, যেগুলো দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের এমনসব কান রয়েছে, যেগুলো দ্বারা তারা শুনে না; তারা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় বরং সেগুলো অপেক্ষাও অধিক ভ্রান্ত; তারাই আলস্যের মধ্যে পড়ে রয়েছে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৭৯. আর নিশ্চয়ই আমরা জাহান্নামের জন্যে বহু (সংখ্যক) জ্বিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছি। তাদের রয়েছে অন্তর, (আর মস্তিস্ক, কিন্তু) তারা এর দ্বারা (সত্যকে) বুঝতে পারে না। তাদের রয়েছে চক্ষুসমূহ, (কিন্তু) তারা এর দ্বারা (সত্যকে) দেখতে পারে না এবং তাদের রয়েছে কানও, (কিন্তু) তারা এর দ্বারা শুনতে পারে না। তারা চতুষ্পদ প্রাণীর ন্যায়, বরং (এরচেয়েও) অধিক গোমরাহ্। এ লোকেরাই উদাসীন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮০
وَ لِلّٰہِ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی فَادۡعُوۡہُ بِہَا ۪ وَ ذَرُوا الَّذِیۡنَ یُلۡحِدُوۡنَ فِیۡۤ اَسۡمَآئِہٖ ؕ سَیُجۡزَوۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۸۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮০. এবং আল্লাহ্রই রয়েছে বহু উত্তম নাম; সুতরাং তোমরা তাকে ওই সব নামে ডাকো; এবং ওই সব লোককে বর্জন করো, যারা তাঁর নামগুলোর মধ্যে সত্যের সীমা থেকে বেরিয়ে যায়। এবং তারা শীঘ্রই তাদের কৃতকর্মের ফল পাবে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮০. আর সুন্দরতম নামসমূহ তো কেবলমাত্র আল্লাহ্রই। সুতরাং তাঁকে এ সকল নামের মাধ্যমে আহ্বান করো এবং ওইসব লোকদেরকে ছেড়ে দাও, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে সত্য থেকে বিপথগামী। অচিরেই তাদেরকে তাদের (মন্দ আমলের) শাস্তি দেয়া হবে, যাতে তারা লিপ্ত হতো।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮১
وَ مِمَّنۡ خَلَقۡنَاۤ اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۸۱﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮১. এবং আমার সৃষ্টদের মধ্যে একটি দল এমন রয়েছে, যারা ন্যায়ভাবে পথ দেখায় এবং সেটার উপর ন্যায় বিচার করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮১. আর যাদেরকে আমরা সৃষ্টি করেছি, তাদের মাঝে থেকে একদল (এমন লোকও) রয়েছে, যারা অন্যদেরকে সত্যের পথ দেখায় এবং এর মাধ্যমেই ন্যায় নির্ভর ফায়সালা করে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮২
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا سَنَسۡتَدۡرِجُہُمۡ مِّنۡ حَیۡثُ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۲﴾ۚۖ
📕 কানযুল ঈমান
১৮২. এবং যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, শিগগির আমি তাদেরকে ক্রমে ক্রমে শাস্তির দিকে নিয়ে যাবো, যেখান থেকে খবরও হবে না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮২. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে, আমরা অচিরেই তাদেরকে ক্রমান্বয়ে এমন পন্থায় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবো যে, তারা জানবেও না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৩
وَ اُمۡلِیۡ لَہُمۡ ؕ۟ اِنَّ کَیۡدِیۡ مَتِیۡنٌ ﴿۱۸۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৩. এবং আমি তাদেরকে সময় সুযোগ দেবো; নিশ্চয় আমার গোপন কৌশল অত্যন্ত পাকা।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৩. আর আমি তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আমার পাকড়াও বড়ই মজবুত।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৪
اَوَ لَمۡ یَتَفَکَّرُوۡا ٜ مَا بِصَاحِبِہِمۡ مِّنۡ جِنَّۃٍ ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۸۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৪. তারা কি চিন্তা করে না যে, তাদের সঙ্গেকার পথপ্রদর্শকের সাথে উন্মাদনার কোন সম্পর্ক নেই? তিনি তো এক স্পষ্ট সাবধানকারী।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৪. তারা কি চিন্তা করেনি যে, তাদেরকে (নিজ) সাহচর্যের মর্যাদায় অনুগ্রহকারী রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর সাথে উন্মাদনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি তো (নাফরমানদেরকে) কেবল সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৫
اَوَ لَمۡ یَنۡظُرُوۡا فِیۡ مَلَکُوۡتِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ مِنۡ شَیۡءٍ ۙ وَّ اَنۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ قَدِ اقۡتَرَبَ اَجَلُہُمۡ ۚ فَبِاَیِّ حَدِیۡثٍۭ بَعۡدَہٗ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৫. তারা কি লক্ষ্য করে নি আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্বের মধ্যে এবং যে বস্তু আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন তাঁর মধ্যে আর এটার মধ্যেও যে, সম্ভবতঃ তাদের প্রতিশ্রুতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে? সুতরাং এরপর আর কোন কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে?
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৫. তারা কি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের প্রতি এবং (এছাড়াও তাতে) যা কিছুই আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি দৃষ্টি দেয়নি? আর (তারা কি ভেবে দেখেনি,) হতে পারে স্পষ্টতই তাদের (মৃত্যুর) নির্ধারিত সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছে? সুতরাং এরপর তারা কোন্ বিষয়ের উপর ঈমান আনয়ন করবে?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৬
مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَا ہَادِیَ لَہٗ ؕ وَ یَذَرُہُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۸۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৬. আল্লাহ্ যাকে বিপথগামী করেন, তার কোন পথ প্রদর্শনকারী নেই এবং তাদেরকে ছেড়ে দেন যেন তারা নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৬. আল্লাহ্ যাকে গোমরাহ করেন তার জন্যে (কোনো) পথপ্রদর্শক নেই। আর তিনি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় ছেড়ে দেন, যাতে তারা (আরো) বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৭
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ السَّاعَۃِ اَیَّانَ مُرۡسٰہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَا عِلۡمُہَا عِنۡدَ رَبِّیۡ ۚ لَا یُجَلِّیۡہَا لِوَقۡتِہَاۤ اِلَّا ہُوَ ؕۘؔ ثَقُلَتۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ لَا تَاۡتِیۡکُمۡ اِلَّا بَغۡتَۃً ؕ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ کَاَنَّکَ حَفِیٌّ عَنۡہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَا عِلۡمُہَا عِنۡدَ اللّٰہِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৭. (তারা) আপনাকে ক্বিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে যে, তা কখন সংঘটিত হবে। আপনি বলুন, ‘সেটার জ্ঞান তো আমার রবের নিকট রয়েছে। সেটাকে তিনিই সেটার নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করবেন; তা গুরুতর হয়ে আছে আসমনাসমূহ ও যমীনের মধ্যে; তোমাদের উপর আসবে না, কিন্তু আকস্মিকভাবে’। আপনাকে এভাবে জিজ্ঞাসা করছে যেন আপনি সেটাকে খুব ভালভাবে অনুসন্ধান করে রেখেছেন। আপনি বলুন, ‘সেটার জ্ঞান তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে;’ কিন্তু অনেক লোক জানে না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৭. এ সকল (কাফের) আপনার নিকট কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, ‘এটি কখন সংঘটিত হবে?’ বলে দিন, ‘এর জ্ঞান তো কেবল আমার প্রতিপালকের নিকট। কেবল তিনিই (আল্লাহ্) যথাসময়ে তা প্রকাশ করবেন। এটি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর (অধিবাসীদের) উপর (প্রতিকূলতা ও তীব্রতায়) ভয়ংকর ঘটনা (মনে) হবে। এটি তোমাদের উপর অকস্মাৎ (দৈবদুর্বিপাকের ন্যায়) আগমন করবে।’ এরা আপনার নিকট (এমনভাবে) প্রশ্ন করে, যেন আপনি এর অনুসন্ধানে লেগে আছেন! বলে দিন, ‘এর জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্র নিকট রয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ লোক (এ প্রকৃত সত্য) জানে না’।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৮
قُلۡ لَّاۤ اَمۡلِکُ لِنَفۡسِیۡ نَفۡعًا وَّ لَا ضَرًّا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ کُنۡتُ اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ لَاسۡتَکۡثَرۡتُ مِنَ الۡخَیۡرِۚۖۛ وَ مَا مَسَّنِیَ السُّوۡٓءُ ۚۛ اِنۡ اَنَا اِلَّا نَذِیۡرٌ وَّ بَشِیۡرٌ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۸۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৮. আপনি বলুন, ‘আমি আমার নিজের ভাল-মন্দের খোদ-মুখতাঁর (স্বাধীন) নই, কিন্তু আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন এবং যদি আমি অদৃশ্যকে জেনে নিতাম, তবে এমনই হতো যেন, আমি প্রভূত কল্যাণই সংগ্রহ করে নিয়েছি এবং আমাকে কোন অনিষ্টই স্পর্শ করে নি। আমি তো এ ভয় ও খুশীর সংবাদদাতা হই তাদেরকেই, যারা ঈমান রাখে’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৮. আপনি (তাদেরকে এও) বলে দিন, ‘আল্লাহ্ যতটুকু চান তা ব্যতীত আমার নিজের লাভ-ক্ষতির কোনো নিয়ন্ত্রণ আমার নেই। আর (এভাবে আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদান ব্যতীত) যদি আমি নিজে গায়েবের জ্ঞান রাখতাম তবে আমি নিজ থেকে অনেক কল্যাণ (এবং বিজয়) লাভ করতাম। আর আমাকে (কোনো ক্ষেত্রেই) কোনো কঠিন অবস্থা (এবং কষ্টও) স্পর্শ করতো না। আমি তো (আমার রিসালাতের পদমর্যাদার কারণে) কেবল ঈমানদারদের জন্যে সতর্ককারী এবং সুসংবাদদাতা।’*
* সতর্কতা ও সুসংবাদও গায়েবের বিষয়াদির মধ্যে গণ্য, যা আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামকে অবগত করেন। কেননা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে এমন গায়েবের বিষয়ে অবগত করা ব্যতীত, না নবুয়্যত ও রেসালাত প্রমাণিত হয় এবং না এ দায়িত্ব আদায় হতে পারে। এ জন্যে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের) শানে ইরশাদ করা হয়েছে, “আর এ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) অদৃশ্য অবগত করণে কখনো কৃপণ নন।” (তাকবীর, ২৪:৮১) কুরআনুল কারীমের এ বাণী অনুসারে, অদৃশ্য অবগত করার ক্ষেত্রে কৃপণ না হওয়া তখনই সম্ভব হতে পারে, যদি বারী তা’আলা পরিপূর্ণ প্রাচুর্যসহ হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামকে জ্ঞান দান করেন ও গায়েবের সংবাদসমূহ অবগত করেন। যদি আদৌ ইলমে গায়েব (অর্থাৎ অদৃশ্যের জ্ঞান) প্রদানই করা না হয়, তবে হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের গায়েবের সংবাদ প্রদান করা কীরূপ এবং তাঁর কৃপণ না হওয়ার কী উদ্দেশ্য? সুতরাং জানা গেল যে, হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহী ওয়াসাল্লামের গায়েব অবগত হওয়া অবশ্যই অমূলক নয়। বরং লাভ-ক্ষতির উপর নিজ থেকে ক্ষমতাবান ও মালিক হওয়া এবং সত্তাগতভাবে ‘আলিমুল গাইব’ হওয়া অমূলক। কেননা এ অধিকার কেবল আল্লাহ্রই।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৮৯
ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ وَّ جَعَلَ مِنۡہَا زَوۡجَہَا لِیَسۡکُنَ اِلَیۡہَا ۚ فَلَمَّا تَغَشّٰہَا حَمَلَتۡ حَمۡلًا خَفِیۡفًا فَمَرَّتۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّاۤ اَثۡقَلَتۡ دَّعَوَا اللّٰہَ رَبَّہُمَا لَئِنۡ اٰتَیۡتَنَا صَالِحًا لَّنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۸۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৮৯. তিনিই, যিনি তোমাদেরকে একটা মাত্র ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন, এবং সেটা থেকেই তাঁর সঙ্গীনী সৃষ্টি করেছেন যেন তাঁর নিকট থেকে শান্তি পায়। অতঃপর যখন পুরুষ তাকে ছেয়ে ফেলেছে, তখন সে এক লঘু গর্ভধারণ করেছে এবং সেটা নিয়েই সে চলাফেরা করেছে। অতঃপর যখন গর্ভ ভারী হয়ে পড়লো, তখন তারা উভয়ে আপন রবের নিকট প্রার্থনা করলো, ‘অবশ্যই যদি তুমি আমাদেরকে যেমনি চাই তেমনি সন্তান দান করো, তবে আমরা নিঃসন্দেহে কৃতজ্ঞ হবো’।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৮৯. আর তিনিই (আল্লাহ্), তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক সত্তা থেকে এবং এ থেকেই সৃষ্টি করেছেন তাঁর সঙ্গিনী, যাতে তিনি তাঁর নিকট প্রশান্তি লাভ করেন। অতঃপর যখন পুরুষ তাকে (অর্থাৎ নারীকে) আচ্ছাদিত করে তখন সে হালকা বোঝা নিয়ে গর্ভবর্তী হয়। অতঃপর সে তা নিয়ে চলাফেরা করে। এরপর যখন তা ভারী হয় তখন উভয়ে তাদের প্রতিপালকের নিকট দু’আ করে, ‘যদি তুমি আমাদেরকে সৎ ও সুস্থ সন্তান দান করো, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞতা আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯০
فَلَمَّاۤ اٰتٰہُمَا صَالِحًا جَعَلَا لَہٗ شُرَکَآءَ فِیۡمَاۤ اٰتٰہُمَا ۚ فَتَعٰلَی اللّٰہُ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۹۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯০. অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে যেমনই উচিত তেমনি সন্তান দান করলেন, তখন তারা তাঁর দানের মধ্যে তাঁর শরীক দাঁড় করালো; কিন্তু, তাদের শির্ক হতে আল্লাহ্ বহু ঊর্ধ্বে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯০. অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে সৎ ও সুস্থ সন্তান দান করেন, তখন উভয়ে তাদেরকে যা দেয়া হয় তাতে (অর্থাৎ সন্তানে) অংশীদার স্থাপন করতে শুরু করে। কিন্তু তারা যে অংশীদার সাব্যস্ত করে তা থেকে আল্লাহ্ সমুন্নত ও মহান।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯১
اَیُشۡرِکُوۡنَ مَا لَا یَخۡلُقُ شَیۡئًا وَّ ہُمۡ یُخۡلَقُوۡنَ ﴿۱۹۱﴾۫ۖ
📕 কানযুল ঈমান
১৯১. তারা কি এমন বস্তুকে শরীক করেছে, যা কিছুই সৃষ্টি করেনি? এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট;
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯১. তারা কি এমন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করে, যা কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না বরং তারা (নিজেরাই) সৃষ্ট?
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯২
وَ لَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ لَہُمۡ نَصۡرًا وَّ لَاۤ اَنۡفُسَہُمۡ یَنۡصُرُوۡنَ ﴿۱۹۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯২. আর তারা না তাদেরকে কোন সাহায্য করতে পারে এবং না নিজেরা নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯২. আর না তারা এদেরকে (এ মুশরিকদেরকে) সাহায্য করার সক্ষমতা রাখে আর না নিজেরা নিজেদেরকেই সাহায্য করতে পারে।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৩
وَ اِنۡ تَدۡعُوۡہُمۡ اِلَی الۡہُدٰی لَا یَتَّبِعُوۡکُمۡ ؕ سَوَآءٌ عَلَیۡکُمۡ اَدَعَوۡتُمُوۡہُمۡ اَمۡ اَنۡتُمۡ صَامِتُوۡنَ ﴿۱۹۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৩. এবং যদি তোমরা তাদেরকে সৎপথের দিকে আহ্বান করো তব্র তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না; তোমাদের পক্ষে উভয়ই সমান- চাই তাদেরকে আহ্বান করো কিংবা চুপ থাকো।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৩. আর যদি তোমরা তাদেরকে হেদায়াতের (পথের) দিকে আহ্বান করো, তবে তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না। তোমরা তাদেরকে (সত্য ও হেদায়াতের দিকে) আহ্বান করো অথবা চুপ থাকো তোমাদের জন্যে উভয়ই সমান ।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৪
اِنَّ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ عِبَادٌ اَمۡثَالُکُمۡ فَادۡعُوۡہُمۡ فَلۡیَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۹۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৪. নিশ্চয় যাদের তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত উপাসনা করছো, তারা তমাদের মতো বান্দা’ সুতরাং তোমরা তাদেরকে আহ্বান করো, অতঃপর তারা তোমাদের ডাকে সাড়া দিক, যদি তোমরা সত্যবাদী হও!
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৪. নিশ্চয়ই তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত যেসবের উপাসনা করো সেসব (মূর্তি)ও তোমাদের মতোই (আল্লাহ্র) দাস। অতঃপর যখন তোমরা তাদেরকে আহ্বান করো, তারা তোমাদের জবাব দিক; যদি তোমরা (তাদেরকে উপাস্য বানানোর ক্ষেত্রে) সত্যবাদী হও।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৫
اَلَہُمۡ اَرۡجُلٌ یَّمۡشُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اَیۡدٍ یَّبۡطِشُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ یُّبۡصِرُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اٰذَانٌ یَّسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ قُلِ ادۡعُوۡا شُرَکَآءَکُمۡ ثُمَّ کِیۡدُوۡنِ فَلَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۱۹۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৫. তাদের কি পা আছে, যা দ্বারা তারা চলাফেরা করে? কিংবা তাদের কি হাত আছে, যা দিয়ে তারা ধরে? কিংবা তাদের কি চোখ আছে, যা দিয়ে তারা দেখে? কিংবা তাদের কি কান আছে, যা দিয়ে তারা শোনে? আপনি বলুন, ‘তোমারা তোমাদের শরীকদের ডাকো আর (তখন) আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করো এবং আমাকে অবকাশ দিও না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৫. তাদের কি পা রয়েছে যা দ্বারা তারা চলতে পারে; অথবা তাদের কি হাত রয়েছে যা দ্বারা তারা ধরতে পারে; অথবা তাদের কি চোখ রয়েছে যা দ্বারা তারা দেখতে পায়; অথবা তাদের কি কান রয়েছে যা দ্বারা তারা শুনতে পায়? আপনি বলে দিন, ‘(হে কাফেরেরা!) তোমরা তোমাদের (মিথ্যা) অংশীদারদেরকে (আমার বিনাশের জন্যে) আহ্বান করো। অতঃপর আমার উপর (তোমাদের) চক্রান্ত বাস্তবায়ন করো এবং আমাকে কোনো অবকাশ দিও না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৬
اِنَّ وَلِیِّ ۦَ اللّٰہُ الَّذِیۡ نَزَّلَ الۡکِتٰبَ ۫ۖ وَ ہُوَ یَتَوَلَّی الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۹۶﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৬. নিশ্চয় আমার অভিভাবক আল্লাহ্, যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনি সৎকর্মপরায়নদেরকে ভালবাসেন।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৬. নিশ্চয়ই আমার সাহায্যকারী আল্লাহ্, যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনিই সৎকর্মশীলদেরকেও সাহায্য ও রক্ষা করেন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৭
وَ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ لَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ نَصۡرَکُمۡ وَ لَاۤ اَنۡفُسَہُمۡ یَنۡصُرُوۡنَ ﴿۱۹۷﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৭. এবং তিনি ব্যতীত যাদের উপাসনা করছো, তারা তোমাদের সাহায্য করতে পারে না; এবং না তারা পারে নিজেদের সাহায্য করতে।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৭. আর তোমরা তাঁকে ব্যতীত যেসবের পূজা করো সেসব (মূর্তি) না তোমাদেরকে সাহায্য করায় কোনো ক্ষমতা রাখে আর না নিজেরা নিজেদেরকেই সাহায্য করতে পারে।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৮
وَ اِنۡ تَدۡعُوۡہُمۡ اِلَی الۡہُدٰی لَا یَسۡمَعُوۡا ؕ وَ تَرٰىہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ وَ ہُمۡ لَا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۱۹۸﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৮. এবং যদি তোমরা তাদেরকে সৎপথের দিকে আবান করো তবে তারা শুনবে না, আর তুমি তাদেরকে দেখতে পাবে যে, তারা তোমার দিকে তাকিয়ে আছে এবং তারা কিছুই দেখে না।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৮. আর যদি তোমরা তাদেরকে হেদায়াতের দিকে আহ্বান করো, তবে তারা শুনতে(ও) পারবে না। আর আপনি এগুলোকে (এ মূর্তিগুলোকে) দেখবেন (এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে) যেন আপনার দিকে তাকিয়ে আছে; অথচ এগুলো (কিছুই) দেখে না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ১৯৯
خُذِ الۡعَفۡوَ وَ اۡمُرۡ بِالۡعُرۡفِ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۱۹۹﴾
📕 কানযুল ঈমান
১৯৯. হে মাহবুব! ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন করুন, সৎকর্মের নির্দেশ দিন এবং মূর্খদের দিক থেকে মুক ফিরিয়ে নিন।
📗 ইরফানুল কুরআন
১৯৯. (হে সম্মানিত হাবীব!) আপনি সহনশীলতা অবলম্বন করুন এবং সৎকাজের নির্দেশ দিতে থাকুন, আর অজ্ঞদের থেকে দূরে থাকার নীতি গ্রহণ করুন।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০০
وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۰۰﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০০. এবং হে শ্রোতা! যদি শয়তান তোমাকে কোন খোচা দেয়, তবে আল্লাহ্র আশ্রয় চাও। নিঃসন্দেহে তিনি শ্রোতা, জ্ঞাতা।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০০. আর (হে মানবসমাজ! এসবের বিপরীতে) যদি শয়তানের দিক থেকে কোনো কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০১
اِنَّ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا اِذَا مَسَّہُمۡ طٰٓئِفٌ مِّنَ الشَّیۡطٰنِ تَذَکَّرُوۡا فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰۱﴾ۚ
📕 কানযুল ঈমান
২০১. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা তাক্বওয়ার অধিকারী হয়, যখনই তাদেরকে কোন শয়তানী খেয়ালের ছোয়া স্পর্শ করে, তখন তারা সাবধান হয়ে যায়; তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০১. নিশ্চয়ই যারা পরহেযগারীতা অবলম্বন করেছে, যখন শয়তানের দিক থেকে তাদেরকে কোনো খেয়ালও স্পর্শ করে, (তবে তারা শয়তানের ধোঁকা ও শত্রুতা এবং আল্লাহ্র আদেশ ও নিষেধ) স্মরণ করতে শুরু করে; সুতরাং তখনই তাদের (অন্তর্দৃষ্টির) চক্ষু খুলে যায়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০২
وَ اِخۡوَانُہُمۡ یَمُدُّوۡنَہُمۡ فِی الۡغَیِّ ثُمَّ لَا یُقۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰۲﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০২. এবং ওই সব লোক, যারা শয়তানের ভাই; শয়তান তাদের ভ্রান্তির মধ্যে টেনে নেয় অতঃপর তারা (এ বিষয়ে) ত্রুটি করে না।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০২. আর (যারা) এসব শয়তানের ভাই, তারা তাদেরকে (নিজেদের কুমন্ত্রণার মাধ্যমে) গোমরাহীর দিকেই টেনে নেয়। অতঃপর তাতে তারা (ফিতনাবাজী ও ধ্বংসযজ্ঞে) কোনো ত্রুটি করে না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০৩
وَ اِذَا لَمۡ تَاۡتِہِمۡ بِاٰیَۃٍ قَالُوۡا لَوۡ لَا اجۡتَبَیۡتَہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَاۤ اَتَّبِعُ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ مِنۡ رَّبِّیۡ ۚ ہٰذَا بَصَآئِرُ مِنۡ رَّبِّکُمۡ وَ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۰۳﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০৩. এবং হে মাহবূব! আপনি যখন তাদের নিকট কোন নিদর্শন উপস্থিত করেন না, তখন তারা বলে, ‘আপনি হৃদয় থেকে কেন একটা গড়ে নেন নি?’ আপনি বলুন, ‘আমি তো সেটারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি আমার রবের নিকট থেকে ‘ওহী’ আসে। এটা তোমাদের রবের নিকট থেকে চোখ খুলে দেওয়া এবং হিদায়ত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০৩. আর যখন আপনি তাদের নিকট কোনো নিদর্শন নিয়ে না আসেন (তখন) তারা বলে, ‘আপনি এটি নিজের পক্ষ থেকে কেন বানিয়ে নিয়ে আসেননি’? বলে দিন, ‘আমি তো কেবল আনুগত্য করি যা (নির্দেশ) আমার প্রতিপালকের নিকট থেকে আমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়। এ (কুরআন) তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অকাট্য দলিল (সমাহার) এবং ঈমানদার লোকদের জন্যে হেদায়াত ও রহমত।’
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০৪
وَ اِذَا قُرِیٴَ الۡقُرۡاٰنُ فَاسۡتَمِعُوۡا لَہٗ وَ اَنۡصِتُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۲۰۴﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০৪. আর যখন ক্বোরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে সেটা শ্রবণ করো এবং নিশ্চুপ থাকো, যাতে তোমাদের উপর দয়া হয়।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০৪. আর যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করো এবং নীরবতা অবলম্বন করো, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০৫
وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّ خِیۡفَۃً وَّ دُوۡنَ الۡجَہۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ وَ لَا تَکُنۡ مِّنَ الۡغٰفِلِیۡنَ ﴿۲۰۵﴾
📕 কানযুল ঈমান
২০৫. এবং আপন রবকে নিজের অন্তরে স্মরণ করুন সবিনয়ে (কান্না) ও ভয় সহকারে এবং মুখ থেকে অনুচ্চস্বরে, প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায়; এবং উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০৫. আর আপনার প্রতিপালককে আপনার অন্তরে স্মরণ করুন, কাকুতি-মিনতি করে, ভীত ও অনুতপ্ত হয়ে এবং অনুচ্চস্বরে; সকাল-সন্ধায় (সত্য সত্তার স্মরণ জারী রাখুন) আর উদাসীনদের অন্তর্ভূক্ত হবেন না।
🕋 আল আরাফ আয়াত নং : ২০৬
اِنَّ الَّذِیۡنَ عِنۡدَ رَبِّکَ لَا یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ عَنۡ عِبَادَتِہٖ وَ یُسَبِّحُوۡنَہٗ وَ لَہٗ یَسۡجُدُوۡنَ ﴿۲۰۶﴾ٛ
📕 কানযুল ঈমান
২০৬. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা তোমার রবের সান্নিধ্যে রয়েছে, তারা অহঙ্কারে তাঁর ইবাদতে বিমুখ হয় না; এবং তাঁরই পবিত্রতা ঘোষণা করে আর তাকেই সাজদা করে।
📗 ইরফানুল কুরআন
২০৬. নিশ্চয়ই (নৈকট্যবান ফেরেশতাগণের) যারা তোমার প্রতিপালকের সমীপে রয়েছে, তারা (কখনো) তাঁর ইবাদত করা থেকে অহংকারে অবাধ্য হয় না, (সর্বদা) তাঁর তাসবীহ পাঠ করতে থাকে এবং তাঁর সমীপে সেজদাবনত থাকে।