সুদের ভয়াবহ শাস্তি ও পরিণতি
ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস অ্যাপ [Download]
সুদ: ইসলামে নিষিদ্ধ ও ভয়াবহ গুনাহ
কুরআনের দৃষ্টিতে সুদ
১. সুদ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ঘোষণা
❝ হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদ যা অবশিষ্ট আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা ঈমানদার হও। আর যদি তা না করো, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ❞
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৮-২৭৯)
২. সুদখোরদের কিয়ামতের দিনের অবস্থা
❝ যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতের দিনে এমনভাবে উঠবে, যেন শয়তান তাদেরকে স্পর্শ করে উন্মাদ করে দিয়েছে। ❞
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৫)
৩. সুদ সমাজের ধ্বংসের কারণ
❝ আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করেন এবং দান-সদকাকে বৃদ্ধি করেন। আর আল্লাহ কোনো অকৃতজ্ঞ ও পাপীকে পছন্দ করেন না। ❞
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৬)
সুন্নাহর আলোকে সুদের ভয়াবহ শাস্তি
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
❝ সুদের মাত্র এক দিরহাম যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহণ করে, তবে তা ৩৬ বার ব্যভিচারের চেয়েও গুরুতর পাপ। ❞
📕 (সুনান আহমাদ: ২৮৩৯১)
❏ রাসূল (ﷺ) স্বপ্নে দেখেছেন:
❝ আমি স্বপ্নে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, যাকে নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সে উঠে আসার চেষ্টা করছে। তারপর একজন লোক এসে তার মুখে একটি পাথর প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ ব্যক্তি কে? তখন বলা হলো, সে দুনিয়াতে সুদখোর ছিল। ❞
📕 (সহিহ বুখারি: ২০৮৫)
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরও বলেছেন:
❝ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের সাক্ষী ও লেখক—এরা সবাই সমানভাবে অভিশপ্ত। ❞
📕 (সহিহ মুসলিম: ১৫৯৮)
❏ আরও বলা হয়েছে:
❝ কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুদখোরদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের ক্ষমা করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। ❞
📕 (সহিহ মুসলিম: ১৫৬৮)
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
❝ মানুষ যখন সুদ ও ঘুষ গ্রহণ করতে শুরু করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর শাস্তি নাযিল করেন। ❞
📕 (মুসনাদ আহমাদ: ১৯২৮৬)
সুদের নির্মম পরিণতি
১️. সুদ মানুষকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার মতো কঠিন অপরাধে জড়িয়ে দেয়।
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৯)
২️. সুদ মানুষের সম্পদকে ধ্বংস করে এবং জীবনে বরকত নষ্ট করে।
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৬)
৩️. সুদখোরদের জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।
❝ সুদ গ্রহণকারী জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না, যদিও তার ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়। ❞
📕 (মুসনাদ আহমাদ: ৩৮০৯)
৪️. সুদ সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য সৃষ্টি করে, যা দারিদ্র্য ও দাসত্বের কারণ হয়।
৫️. সুদখোররা কিয়ামতের দিন ভয়ানক অবস্থায় থাকবে।
📖 (সূরা আল-বাকারা: ২৭৫)
সুদ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি একটি ভয়ানক গুনাহ। কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যারা সুদ গ্রহণ করবে, তারা দুনিয়াতে ধ্বংস হবে এবং আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
❝ আমি তোমাদের জন্য সবচেয়ে ভয় পাই যে জিনিস, তা হলো সুদের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা পাপ। ❞
📕 (মুসনাদ আহমাদ: ২৩২২২)