❏ হযরত হান্না মরিয়ম (عليه السلام)'র জন্মের সাথে সাথে একটি কাপড়ে মুড়িয়ে বায়তুল মােকাদ্দসে নিয়ে যান। বায়তুল মােকাদ্দসে চার হাজার খাদেম বসবাস করতেন। তাদের সরদার ছিলেন সাত কিংবা সত্তর জন আর তাদের আমীর ছিলেন হযরত যাকারিয়া (عليه السلام)। হযরত ইমরান (عليه السلام) ছিলেন বনী ইস্রাঈলের ইমাম। সুতরাং ঐ সত্তর জনের সকলেই প্রত্যেকেই হযরত মরিয়ম (عليه السلام) কে লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে চান। হযরত যাকারিয়া (عليه السلام) বলেন, যেহেতু মরিয়মের খালা আমার স্ত্রী আর খালা মায়ের মতই হয় সেহেতু তাকে পাওয়ার আমিই অধিক হকদার। তাদের মতানৈক্য নিরসনের লক্ষে সিদ্ধান্ত হল যে, লটারী দেয়া হবে। লটারীতে যার নাম আসবে সে-ই তাঁকে পাবেন।
সকল সরদার নিজ নিজ ওহী লিখা কলম নিয়ে উর্দুন নদীর তীরে একত্রিত হলেন এবং সিদ্ধান্ত হল যে, প্রত্যেক দাবীদার নিজ নিজ কলম নদীতে নিক্ষেপ করবে যার কলম ডুবে যাবে না কিংবা পানিতে ভেসে যাবে না বরং পানিতে ভেসে স্থির থাকবে তিনিই হযরত মরিয়মের দায়িত্ববার গ্রহণের যােগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আর যার কলম ডুবে যাবে কিংবা পানির স্রোতে ভেসে নিম্নদিকে যাবে তিনি তাঁকে দাবী করতে পারবে না।
অতঃপর যখন প্রত্যেকেই স্বীয় কলম নিক্ষেপ করলেন তখন সকলের কলম ডুবে গেল শুধু হযরত যাকারিয়া (عليه السلام)'র কলম পানিতে স্থির রইল। সুতরাং হযরত মরিয়ম (عليه السلام)কে লালন-পালনের দায়িত্বভার হযরত যাকারিয়া (عليه السلام)কে সােপর্দ করা হল। তিনি বায়তুল মুকাদ্দাসের পাশে হযরত মরয়ম (عليه السلام)'র জন্য একটি বালাখানা তৈরী করেন যার দরজা বায়তুল মােকাদ্দসের ভিতর দিয়ে। সেখানে শুধু হযরত যাকারিয়া (عليه السلام)ই প্রবেশ করতেন। ●৪০০
_____________________________
৪০০.[ হাকীমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী (رحمة الله), (১৩৯১হি.), তাফসীরে নঈমী, উর্দু, দিল্লী, পারা:৩য়, পৃ:৪৬০]
❏ এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,
অর্থ: তিনি (আল্লাহ) মরিয়মকে যাকারিয়া’র তত্ত্বাবধানে সমর্পণ করলেন। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৩৭]
❏ আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেছেন,
অর্থ: হে মুহাম্মদ ! আপনি তখন তাদের কাছে বিদ্যমান ছিলেন না যখন তারা নিজ নিজ কলম (লটারীর উদ্দেশ্যে নদীতে) নিক্ষেপ করেছিলেন। এ উদ্দেশ্যে যে, তাদের মধ্যে কে মরিয়মের অভিভাবক হবেন তা নির্ণয় করা। আর আপনি তখনাে তাদের পাশে ছিলেন না যখন তারা মরিয়মের অভিভাবকত্ব নিয়ে বিবাদে লিপ্ত ছিলেন।
[সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৪৪]