"বলা হয়ে থাকে যে, "উট যখন তার মালিকের প্রেমে মাতাল হয় তখন ৪০ দিন পর্যন্ত ঘাস ইত্যাদি খাওয়া ছেড়ে দেয়। যখন তার মাহবুবের স্মরণ আসে তখন সে সঙ্গীহীন হয়ে নিজের খাহেশাত তরক করে, দ্বিগুন ভারী বোঝা বহন করে।"
ওহে মানব! তোমরা যারা আল্লাহর মহব্বতের দাবি কর; তোমরা কি কখনো আল্লাহর সন্তষ্টির লক্ষ্যে নিজের খাহেশাত তরক করেছ, কখনো নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছ?
☛ মুকাশাফাতুল ক্বুলুব।
"যে আল্লাহকে মহাব্ব্ত করার দাবি করে অথচ পার্থিব কোনো কষ্টের সম্মুখীন হলে অভিযোগ করে সে মিথ্যাবাদী।"
☛ মুকাশাফাতুল ক্বুলুব।
"যার উপর তাওহীদ প্রবল সে সমস্ত বস্তুকে আল্লাহর ইচ্ছায় হয় বলে বিশ্বাস করে। তাই কোনো ব্যক্তির দ্বারা তার ক্ষতি হলে সে ক্রোধান্বিত হয় না।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
"যে ব্যক্তি ৩টি বিষয়ের দাবি করে এবং নিজেকে ৩টি বিষয় থেকে হিফাজত না রাখে, তার এই দাবি সম্পূর্ণ বাতিল।
(১) যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকিরের স্বাদ পাওয়ার দাবি করে কিন্তু দুনিয়ার প্রতি মহব্বত রাখে।
(২) যে ব্যক্তি নিজের আমলের মধ্যে ইখলাছের দাবি করে। পাশাপাশি মানুষ কাছ থেকে নিজের ইজ্জত-সাম্মান কামনা করে।
(৩) যে ব্যক্তি নিজের প্রতি-পালকের মহব্বতের দাবি করে কিন্তু নিজের নফসকে লাঞ্চিত করে না।
☛ মুকাশাফাতুল ক্বুলুব।
১) যখন সাহাবায়ে কিরামগণের জীবন চরিত আলোচনা করা হয় তখন সংযত থাকবেন।
২) যখন তাকদীরের কথা বলা হয় তখন নীরব থাকবেন।
৩) যখন আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের বিষয়ে আলোচনা করা হয় তখনও নিরব থাকবেন।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
মুসলমান ধৈর্য দ্বারা ”সারা বছর রোযা ও সারা রাত্রি নামায পড়ার মর্যাদা লাভ করে।”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
ধৈর্যশীল সেই “যাকে অবজ্ঞা করা হয় কিন্তু সেই প্রত্যুত্তরে অবজ্ঞা করে না “
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
”যে তার ধর্মের মঙ্গলের জন্য সংসারকে ত্যাগ করে, সে ব্যাক্তি শ্রেষ্ঠ দাতা”
* এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
রিয়াজত পূর্ণ হবে নাঃ
”যার ক্রোধ নেই সে নিজের আত্মার রিয়াজত বা আত্মোন্নতির জন্য পরিশ্রমে অক্ষম। কেননা রিয়াজত পূর্ণ হয় না যে পর্যন্ত ক্রোধ, লোভ ও লালসার প্রাধন্য লাভ না করা যায় এবং প্রবৃত্তি ঘৃণিত লোভের দিকে অনুরক্ত হলে যে পর্যন্ত তার উপর ক্রোধ না হয়। তখন ক্রোধ না করা অন্যায়। বুদ্ধি ও ধর্মের ইশারায় যে ক্রোধ জন্মে তা-ই উত্তম।”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন
“বাহ্যিক প্রকাশই আন্তরিক অবস্থার নিদর্শন”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন
কুফর এর চারটি অঙ্গ আছেঃ
১ ক্রোধ
২ প্রবৃত্তি
৩ লোভ এবং
৪ নির্বুদ্ধিতা।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
মুসলমানের চিহ্নঃ
ধর্মে তার শক্তি থাকবে।
সহজ বিষয়ে সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবে।
নিশ্চিত বিষয়ে ঈমান আনবে।
সংযমের জ্ঞন রাখবে।
দয়ার ক্ষেত্রে বুদ্ধিমান হবে।
মানুষের হক আদায় করবে।
ধন সম্পদের ক্ষেত্রে অন্য পন্থা অবলম্বন করবে।
ক্ষুধার সময় ধৈর্য ধারন করবে।
ক্ষমতার সময় উপকার করবে।
বন্ধুত্বের ভার বহন করবে।
বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করবে।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
❏ দোযখের অগ্নীর মধ্যে অপমান
যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে অন্যায়ভাবে অপমান করার জন্য কোন কথার ইশারা করে, আল্লাহ তা’য়ালা রোজ কিয়ামতে তজ্জন্য তাকে দোযখের অগ্নীর মধ্যে অপমান করবে।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
❏ অমুক রমনীর আঁচল দীর্ঘ”
হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা) এর এই কথা গীবতরূপে গন্য হওয়ায় তাঁকে ঐ রমনীর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে হলো। এবং রাসুল (দ) তাঁকে বললেন, থুথু ফেল। থুথু ফেললে দেখা গেল যে, “তার মধ্যে কালো রক্ত জমাট হয়ে আছে।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
এই স্টেইটম্যান্ট থেকে আপনাদের গীবতের অবস্থা নির্ণয় করুন।
❏ তোমার উদ্দেশ্য তাকে সংশোদন করা।
তুমি যখনই কোন মুসলমান ব্যক্তির ত্রুটির বিষয় প্রমানসহ জানতে পার, তাকে গোপনে উপদেশ দাও।
অতপর, তুুমি তার সাথে এমন ভাব দেথাবে না যে, তার গুপ্ত দোষ জানার জন্য তুমি আনন্দিত হয়েছ। এরূপ ভাবও দেখাবে না যে, সে যেন তোমাকে সম্মান করে এবং তুমি তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখছ; বরং তোমার উদ্দেশ্য থাকবে শুধু তাকে সংশোদন করা।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
❏ শয়তান রাগান্বিত হবে এবং তোমা থেকে চলে যাবে।
তোমার মনে যখন কোন মুসলমান সম্বন্ধে মন্দ ধারণার উদয় হয়, তখনই তা দূরীভূত করে দিয়ে তার জন্য দোয়া করবে। তাতে শয়তান রাগান্বিত হবে এবং তোমা থেকে চলে যাবে।
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
❏ উপহাসের কারনে তোমার আত্মা হেয় ও অসম্মানিত হয়”
উপহাসের দ্বারাও গীবত হয়। তদ্দরা তোমার উদ্দেশ্য থাকে, ”অন্যকে লোকের নিকট হেয় ও অপমানিত করা”।
অপরদিকে, এই উপহাসের কারনে ❏ তোমার আত্মা আল্লাহ, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর নবীগণের নিকট হেয় ও অসম্মানিত হয়”।
{"এক দিরহাম সুদ আল্লাহর নিকট ৩৬ বার ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক পাপ। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বড় সুদ হলো মুসলমানের সম্মান নষ্ট করা। আর পরনিন্দা তথা গীবতের মাধ্যমেই তা করা হয়।}
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
আল্লাহর বান্দারা পার্থিব বিষয় বস্তুর দিকে তাকায় এবং এর মধ্য থেকে শ্রেষ্ট জিনিস আবিস্কার করে। তারা সুন্দর দিকে যায়।
কিন্তু যারা মনের দাস, তারা পারে না। তারা সত্য দেখে না। তারা তাদের সৃষ্ট ভ্রান্তিকে পবিত্র গণ্য করে এবং এসব ভ্রান্তি দ্বারা মানুষকে কুলষিত করে। কিন্তু তারা জানেনা যে, তারাই আসলে প্রতারিত হচ্ছে।
☛ ইমাম আল-গাজালী (রা)
শরীর সম্বন্ধনীয় গীবতঃ
তুমি যদি কারো সম্পর্কে বল যে, 'সে ঢেঙ্গা, সে খাট, সে কালো, বা তার সম্পর্কে এমন কথা বল, যা শুনলে মনেকষ্ট পায়, তবে তা গীবত বা পর-নিন্দারূপে গন্য হবে।"
"এক দিরহাম সুদ আল্লাহর নিকট ৩৬ বার ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক পাপ। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বড় সুদ হলো মুসলমানের সম্মান নষ্ট করা। আর পরনিন্দা তথা গীবতের মাধ্যমেই তা করা হয়।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
আল্লাহকে ভালবাসিলে তাঁহার এবাদতের ও যিকির-ফিকিরের প্রতি ঝুঁকাইবার জন্য হৃদয়ের উপর চাপ দেওয়ার প্রয়োজন হইত না, হৃদয় আপনা-আপনিই সেদিকে ঝুঁকিয়া পড়িত।
☛ কিমিয়ায়ে সাআদাত।
”চল্লিশজন হুর আকাশে উড়ছে”
মারিফাতী লোকের শাস্তি!
একজন মারিফতী লোক বলেন, "কাশফেরর দ্বারা আমার এমন ইলম হয় যে, 'চল্লিশজন হুর আকাশে উড়ছে। তাদের শরীরে সোনা-রুপার পোশাক ও অলংকার যা হতে ঝংকারের শব্দ হয়।
’আমি তাদের প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করেছি’।
তখন আমাকে চল্লিশ দিন পর্যন্ত এ সাজা দেওয়া হয়েছে যে, “ তারপর আমি এমন হুর দেখতে পেলাম যারা পূর্বে র হুরগণ থেকে আরো সুন্দরী।
আমাকে বলা হলো ’তাদের দিকে দেখ’।
’আমি চুক্ষ বন্ধ করে ফেলেছি।’
সাজদায় পড়ে আরয করলাম,
‘আয় আল্লাহ! আমি তোমাকে ছাড়া অন্য সমস্ত কিছু থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, ইহা আমার দরকার নেই। আমি এভাবে আহাজারি করছিলাম। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তাদের কে আমার নিকট থেকে দুর করে দিয়েছেন।
☛ মহব্বত-এ এলাহী।
"মানুষ তাই পছন্দ করে যা তার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
গুরুজী ! “আমাকে মুমিন ও মুনাফাকিরে পার্থক্য বলুন”
”মুমিনের তাওয়াজ্জু সর্বদা নামায ও রোযার দিকে থাকে। অপরদিকে মুনাফিকের নজর পশুর মতন ‘খাওয়া ও পান করার দিকে থাকে”
অর্থাৎ ইবাদাত-বন্দেগীর চেয়ে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি তার আকর্ষণ বেশী।
☛ মুকাশাফাতুল কুলুব।
গুরুজী ! “আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ইবাদাতে স্বাদ পাই না।”
”সম্ভবত তুমি এমন কোনো ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দিয়েছে, যে আল্লাহকে ভয় করে না”
☛ মুকাশাফাতুল ক্বুলুব।
"শরিয়াত ও তদসম্পর্কিত বিদ্যার উদ্দেশ্য আল্লাহর উপাসনা ও খেদমত করা এবং অন্যান্য বিদ্যার উদ্দেশ্য শরীয়াতের খেদমত করা। যে এই উদ্দেশ্যে পৌঁছাতে পারে না, সে ক্ষতির মধ্যে থাকে।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
"যার উপর তাওহীদ প্রবল সে সমস্ত বস্তুকে আল্লাহর ইচ্ছায় হয় বলে বিশ্বাস করে। তাই কোনো ব্যক্তির দ্বারা তার ক্ষতি হলে সে ক্রোধান্বিত হয় না।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।
”যে ব্যাক্তি অধিক কথা বলে , তার অধিক দোষত্রুটি ঘটে, এবং লজ্জা কমে যায়, পরহেজগারী হ্রাস পায়”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
গুরুজী! শুনেছি, “যে ব্যক্তি নাম, যশ ও খ্যতি ভালোবাসে সে আখেরাতের স্বাদ পায় না?”
“তুুমি ঠিকই শুনেছ।”
গুরুজী ! ‘আমাকে কিছু উপদেশ দিন’
”যদি পার, অন্যের পরিচয় নিবে; কিন্তু তোমার পরিচয় যেন কেউ না লয়। তোমার পথ চলার সময় যেন অন্য কেউ তোমার সঙ্গে না চলে। তুমি জিজ্ঞেস করলে যেন অন্য কেউ তোমাকে জিজ্ঞেস না করে।”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
”যে ব্যক্তি তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস সংসার থেকে গ্রহণ করে, আল্লাহ তার অন্তর চক্ষুকে অন্ধ করে দেন”
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
”যে ব্যক্তি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, ‘আল্লাহর সৃষ্টি নৈপুণ্যে কোন শরীক নেই, সে অন্যের নিকট থেকে সতকর্তা অবলম্বন করে না”
[কথাটি খুবই খুবই কঠিন, এত কঠিন যে, ওজন করতে গিয়ে আকল হয়রান হয়ে যেতে পারে]
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
"কুমন্ত্রণা থেকে শয়তানকে নিবারন করা এবং স্বাভাবিক প্রবৃত্তিকে নির্মূল করা মানব শক্তির বহির্ভূত। তবে প্রবৃত্তিকে দমন করার শক্তি তার আয়ত্তাধীন করে দেওয়া হয়েছে।"
☛ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন।