পীর মুরিদ ও বাইয়াতঃ অলীরাও বায়াত হয়েছেন।
🖋আব্দুল কাদির জামি
🖋তফিজ উদ্দীন
আল্লাহর অলীগণের পীর-মুরিদ কারা ছিলেন জেনে নিনঃ
❏ মালেকী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম মালিক (رحمة الله) ➠ এর পীর ছিলেন ইমাম জাফর সাদেক (رحمة الله)।
❏ রসায়ন বিজ্ঞানের জনক হযরত জা’বির ইবনে হাইয়্যান (رحمة الله) ➠ এর পীর ছিলেন ইমাম জাফর সাদেক (رحمة الله)।
❏ ইমামে আজম আবু হানিফা (رحمة الله) ➠ এর পীর ছিলেন ইমাম জাফর সাদেক (رحمة الله)।
❏ বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (رحمة الله) ➠ হযরত শেখ আবু ছাইদ মাখজুমী (رحمة الله) নিকট বায়াত হয়েছেন।
❏ হযরত শাহ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (رحمة الله)
➠ হযরত আবু শাহমা আল-কাদেরী ছালে-লাহোরী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা গরীব নাওয়াজ মঈন উদ্দিন চিশতী
(رحمة الله) ➠ হযরত খাজা ওসমান হারুনী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা বখতিয়ার কাকী (رحمة الله) ➠ হযরত
খাজা মঈনউদ্দিন চিশতী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা শেখ ফরীদ (رحمة الله) ➠ হযরত খাজা
বখতিয়ার কাকী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা নিজাম উদ্দিন চিশতী (رحمة الله) ➠ হযরত খাজা শেখ ফরীদ (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা শাহ জালাল (رحمة الله) ➠ হযরত খাজা
সৈয়দ আহমদ কবীর রিফায়ী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা বায়েজীদ বোস্তামী (رحمة الله) ➠ হযরত
খাজা আবু আলী সিন্দি (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা মোজাদ্দেদ আল ফেসানী (رحمة الله) ➠
হযরত খাজা বাকী বিল্লাহ (رحمة الله) নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত খাজা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া (رحمة الله) ➠ হযরত খাজা আমীর সৈয়দ কুনান বুখারীর (رحمة الله) নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ হযরত ইমাম গাজ্জালী (رحمة الله) ➠ হযরত শেখ আবু
আলী ফারমাবাদী (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
❏ জগৎ বিখ্যাত মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী
(رحمة الله) ➠ শামস তাবরীজ (رحمة الله)'র নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
পীর আউলিয়াদের জীবনীতে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাঃ
❏ পৃথিবীতে এমন কোন অলি আল্লাহ বা পীর নেই
যিনি বায়াত গ্রহণ ছাড়া কামেল অলি হয়েছেন।
এমন কি শেখ ফরিদ উদ্দিন চিশতী (رحمة الله) ৩৬
বৎসর এবাদত বন্দেগী করেও হযরত খাজা
বখতিয়ার কাকী (رحمة الله)'র নিকট বায়াত গ্রহণ
পূর্বক ২৪ বৎসর তার খেদমত করে কামেল
অলি হয়েছেন। যদি বায়াত গ্রহণ ছাড়া চলতো
তবে তার মতো লোকের তো আর পীর ধরার
দরকার ছিল না। খোদা দর্শনের জন্য বায়াত
গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
❏ এজন্য জগত শ্রেষ্ঠ মাওলানা রুমী (رحمة الله) বলেছেন: "এক জামানা ছোহবতে বা আউলিয়া বেহতরে
আয ছদসালে তায়াত বেরিয়া"।
অর্থাৎ, কিছুকাল কোন অলির সহিত বসা ১০০
বৎসর বেরিয়া এবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
❏ তিনি আরো বলেছেন যে আমি যত বড় পুথিগত
বিদ্বান হই না কেন যে পর্যন্ত শামশের তাবরেজী
(رحمة الله)'র কম্বলের নীচে না গিয়েছি সে পর্যন্ত আমি
জ্ঞান অর্জন করতে পারি নাই। কম্বলের নিচে
যাওয়া মানে বায়াত গ্রহণ করা।
❏ "সিয়ারুল আসরার" কিতাবে হযরত বড়পীর (رحمة الله)
লিখেছেন-"কলব জিন্দা করার জন্য পীর বা
আহলুত তালকীন অন্বেষণ করা ফরয।
❏ হযরত মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি (رحمة الله) বলেছেন-
"আল ফেকাউ লে ছালাহির জাহেরে আল তাসাউফ
লে এছলাছির বাতেনে"।
❏ অর্থাৎ ফেকাহ শাস্ত্র মানুষের শরীয়তকে শুদ্ধ করে
আর তাসাউফ মানুষের অন্তরকে পরিস্কার করে।
❏ মাওলানা রুমী (رحمة الله) বলেছেন- "কোনবীয়ে ওয়াক্ত
খেসাশত আয় মুরিদ তাকে নুরে নবী আমাপদীদ"
❏ তিনি আরো বলেছেন:
"খোদ-ব-খোদ কামেল না-শোদ মাওলানায়ে রুম
তা-গোলামে শামসের তাবরেজী না-শোদ"
অর্থাৎ আমি কখনো নিজে কামেল হতে পারি নাই
যতক্ষণ না আমি শামশের তাবরেজীর গোলাম
হয়েছি।
❏ হযরত হাফেজ সিরাজী (رحمة الله) বলেছেন- "বকোয়ে এশক সানেহ বে-দলীল রাহকদম কেমান বখশ
নমুদাম ছদ এহতেশাম না-শোদ"
অর্থাৎ পথ প্রদর্শক পীর ছাড়া এশকের গলীতে পা রেখো না কারণ আমি শত চেষ্টা করেও কিছুই হইনি।
❏ হযরত ইমাম আবু হানিফার (رحمة الله) পীর-ও-মুরশিদ হযরত সাইয়্যেদুনা ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব (رحمة الله) এর একটা ঘটনাঃ
একবার ইমামুস সাদিস হযরত সাইয়্যেদুনা ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব (رحمة الله) তার মুরীদ ও খলীফা হযরত ইমাম আবূ হানীফা (رحمة الله)কে জিজ্ঞাসা করলেন- বুদ্ধিমান কে?
জবাবে হযরত ইমাম আবূ হানীফা (رحمة الله) বললেন, যে ব্যক্তি সৎ-অসৎ এবং ভালো-মন্দ যাচাই-বাছাই করতে পারে সে হলো বুদ্ধিমান।
হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব (رحمة الله) বললেন, এটা জীব জন্তুও করতে পারে। সে বুঝে কে তাকে ঘাস দেয় এবং কে তাকে আঘাত করে, কে তার সাথে মন্দ ব্যবহার করে। তখন হযরত ইমাম আবূ হানীফা (رحمة الله) সবিনয়ে উনার কাছে জানতে চাইলেন, তাহলে প্রকৃত বুদ্ধিমান কে ইয়া সায়্যেদী?
তখন হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব (رحمة الله) বললেন, যে ব্যক্তি দুটি ভালো কাজের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে তার মধ্যে সর্বোত্তম ভালো কাজটি করে এবং দুইটি মন্দ কাজের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে তার মধ্যে যেটি অধিক মন্দ কাজ সেটি আগে ছেড়ে দেয়। সেই ব্যক্তিই হলো প্রকৃত বুদ্ধিমান। সুবহানাল্লাহ!
❏ হাফেজ (رحمة الله) বহুকাল নিজে নিজে বহু চেষ্টা করেও কিছুই হাছেল করতে পারেননি। অবশেষে পীরের ওছিলায় দুই বৎসর সাধনায় মারফতের অশেষ দান লাভ করেন। এলমে জাহের ও এলমে বাতেন
উভয়ের মধ্যে এরুপ সমন্ধ যেমন একটি দেহ ও অপরটি রুহ। রুহ ছাড়া যেমন দেহ বাচে না তেমনি
দেহ ছাড়া রুহ থাকে না।
❏ "একভি আগর তরকহো তুজছে হাবীব! তো উঠে শাহেশর মে আমা বে নছীব"
অর্থাৎ শরীয়ত এ মারেফত এই দুইটি এলমের
একটিও যদি ত্যাগ কর তবে কেয়ামতের দিন অন্ধ
হয়ে উঠবে।
-মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (رحمة الله)
❏ "খোদাকে পাওয়ার ইচ্ছা থাকলে কোনো কামেল
পীরের তালাশ করে নাও, কেননা, কামেল পীরের সাহায্য ব্যতিরেকে জীবনভর পরিশ্রম
করলেও আল্লাহর সন্ধান পাবে না।"
_____শেখ ফরিদ (رحمة الله)
❏ বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (رحمة الله)
সাহেব মার্তৃ গর্ভে থেকে ১৮ পারা কোরআন শরীফে হাফেজ হয়ে দুনিয়াতে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। জাহেরী এলেমও শিক্ষা করেছেন।