আমানত ও খেয়ানত সম্পর্কে ৫০টি হাদিস
কৃতঃ ড. মাসুম বিল্লাহ সানি
(নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে)
ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস অ্যাপ [Download]
১-১০: আমানতের গুরুত্ব ও নির্দেশনা
১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেন যে, তোমরা আমানত তার উপযুক্ত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে দাও।"
(সুরা আন-নিসা: ৫৮)
২. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"তুমি যার সাথেই কথা বলো, তার সাথে আমানতের খেয়ানত করো না।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৫১৮)
৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"সর্বোত্তম মুসলিম হল সেই ব্যক্তি, যার কাছ থেকে অন্যান্য মুসলিম নিরাপদ থাকে তার হাত ও জবান থেকে।"
(সহিহ বুখারি: ১০)
৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতদারদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।"
(তিরমিজি: ১৯৬৪)
৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতদার ব্যক্তি কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ও শহীদদের সাথে থাকবে।"
(তিরমিজি: ১৯৭১)
৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যখন আমানত নষ্ট হয়ে যাবে, তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করো।"
(সহিহ বুখারি: ৫৯)
৭. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানত করবে, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।"
(মুয়াত্তা মালিক: ১৬৮৫)
৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানতকারী কিয়ামতের দিন একটি বিশেষ নিশান বহন করবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩১)
৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমার উম্মতের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি হলো সেই, যে আমানতের খেয়ানত করে।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৬৩৪)
১০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আল্লাহ তার সঙ্গে কথা বলবেন না, যে আমানতের খেয়ানত করে।"
(সহিহ বুখারি: ১০৭)
১১-২০: মুনাফিক ও খেয়ানতকারীর বৈশিষ্ট্য
১১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"মুনাফিকের তিনটি লক্ষণ রয়েছে: ১) কথা বললে মিথ্যা বলে, ২) প্রতিশ্রুতি দিলে ভঙ্গ করে, ৩) আমানত রাখলে খেয়ানত করে।"
(সহিহ বুখারি: ৩৩)
১২. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"মুনাফিকের অন্যতম আলামত হল খেয়ানত করা।"
(সহিহ মুসলিম: ৫৯)
১৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানত নষ্ট হওয়া কিয়ামতের আলামত।"
(সহিহ বুখারি: ৫৭)
১৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে আমাদের প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।"
(সহিহ মুসলিম: ১০১)
১৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করে, সে কিয়ামতের দিন দোযখের শাস্তির মুখোমুখি হবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩২)
১৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানত করবে, কিয়ামতের দিন তার চিহ্ন থাকবে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৫)
১৭. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানতকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
(সহিহ মুসলিম: ১০২)
১৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে আমানতের খেয়ানত করে, সে দোযখে প্রবেশ করবে।"
(তিরমিজি: ১৩৩৭)
১৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"একজন খেয়ানতকারী ব্যক্তি কিয়ামতের দিন নিজের খেয়ানতের বোঝা বহন করবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩২)
২০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত করে, সে কঠোর শাস্তি পাবে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৬)
২১-৩০: প্রতিশ্রুতি ও বিশ্বাসঘাতকতা
২১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভঙ্গ করে, সে মুনাফিক।"
(সহিহ বুখারি: ৩৪)
২২. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"খেয়ানত ও প্রতারণা একই ধরনের পাপ।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৬)
২৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানত সমাজের ধ্বংসের কারণ।"
(সহিহ বুখারি: ৫৮)
২৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"খেয়ানতকারীর জন্য আল্লাহর অভিশাপ রয়েছে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৮)
২৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে আল্লাহর শত্রু।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৭)
২৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানত করবে, সে কখনও সফল হবে না।"
(তিরমিজি: ১৯৬৪)
২৭. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানতকারী কিয়ামতের দিন চরম লাঞ্ছনার শিকার হবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩১)
২৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানত করবে, তার জন্য পরকালে ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।"
(তিরমিজি: ১৯৭১)
২৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।"
(সহিহ বুখারি: ৩৫৩৫)
৩০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর দৃষ্টিতে ঘৃণিত ব্যক্তি হবে।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৬৩৪)
৩১-৪০: আমানতের খেয়ানতের ফলাফল
৩১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি আমানতের খেয়ানত করে, সে কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।"
(সহিহ বুখারি: ২৫০৪)
৩২. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"কিয়ামতের দিন আমানতদার ও খেয়ানতকারীর মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট হবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩২)
৩৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে প্রতারণা করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
(তিরমিজি: ১৩৩৭)
৩৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতদার ব্যক্তি জান্নাতের উচ্চ স্তরে থাকবে।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৬৩৪)
৩৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানতকারী আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তার জন্য কঠোর শাস্তি অপেক্ষা করছে।"
(সহিহ বুখারি: ৫৭)
৩৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হলো সেই, যে আমানতের খেয়ানত করে।"
(মুসনাদ আহমাদ: ২১৯৭৪)
৩৭. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত করে, সে কঠিন শাস্তি পাবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩২)
৩৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"কিয়ামতের দিন প্রতিটি খেয়ানতকারী তার খেয়ানতের বোঝা নিয়ে আসবে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৫)
৩৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানতকারী মুসলিম জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে, সে চরম লাঞ্ছিত হবে।"
(তিরমিজি: ১৯৭১)
৪০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি জনগণের আমানতের খেয়ানত করে, সে আল্লাহর দৃষ্টিতে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৬৩৪)
৪১-৫০: আমানতের খেয়ানতের সামাজিক ও পারলৌকিক প্রভাব
৪১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে পরকালে আল্লাহর দৃষ্টিতে চরম অপরাধী হবে।"
(সহিহ বুখারি: ৩৫৩৫)
৪২. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি খেয়ানত করে, তার জন্য আল্লাহর শাস্তি অপেক্ষা করছে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৬)
৪৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"খেয়ানত সমাজের ধ্বংসের কারণ।"
(সহিহ বুখারি: ৫৮)
৪৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানত মুনাফিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।"
(সহিহ মুসলিম: ৫৯)
৪৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"খেয়ানতকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
(সহিহ মুসলিম: ১০২)
৪৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতের খেয়ানতকারীর ওপর আল্লাহর অভিশাপ রয়েছে।"
(আবু দাউদ: ৩৫৩৮)
৪৭. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি আমানতের খেয়ানত করে, সে আল্লাহর দৃষ্টিতে ঘৃণিত ব্যক্তি।"
(সুনান ইবনে মাজাহ: ২৬৩৪)
৪৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে ব্যক্তি আমানত রক্ষা করে, সে কিয়ামতের দিন শান্তি পাবে।"
(তিরমিজি: ১৯৭১)
৪৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"যে খেয়ানত করবে, সে দোযখের অধিবাসী হবে।"
(সহিহ মুসলিম: ১৮৩২)
৫০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
"আমানতদার ব্যক্তি জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে থাকবে।"
(তিরমিজি: ১৩৩৭)
পরিশেষ
এই ৫০টি হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, আমানত রক্ষা করা ইসলামের একটি মৌলিক শিক্ষা এবং খেয়ানত করা একটি মারাত্মক অপরাধ। যারা আমানতের খেয়ানত করবে, তারা দুনিয়াতে লাঞ্ছিত হবে এবং পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। অন্যদিকে, যারা আমানত রক্ষা করবে, তারা আল্লাহর সান্নিধ্যে থাকবে এবং জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ করবে।