কিতাবঃ তরিকুস সালাত আ’লা ছাবিলিল ইজাজ বিল্-মাযহাবিল হানাফী
طر يق الصلوٰة على سبيل الايجاز
بالمذهب الحنفى
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী (মা.জি.আ.)
টেক্সট রেডীঃ ডা. মাসুম বিল্লাহ সানি
প্রকাশনায়ঃ আন্জুমানে কাদেরীয়া চিশতীয়া বাংলাদেশ
গ্রন্থ স্বত্ব:
লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রকাশকাল:
আগস্ট- ২০১২ ঈসায়ী
অনুবাদক:
মাওলানা ছালেহ আহমদ
সিনিয়র শিক্ষক: 
হাটহাজারী আনোয়ারুল উলুম নোমানীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা
সহযোগীতায়:
মাওলানা মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন 
সিনিয়র আরবী শিক্ষক: 
হাটহাজারী আনোয়ারুল উলুম নোমানীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা
হাদীয়া:
১২০ [একশত বিশ টাকা]  মাত্র।


সূচীপত্রঃ


নং বিষয় পৃষ্ঠা নং




০১. পূর্বাভাষ

০২. আজান অধ্যায়

০৩. আজানের হুকুমে ইমামদের মতপার্থক্য

০৪. আজানের সুন্নাত সমূহের পরিচ্ছেদ

০৫. মাতাল, মাদহুশ ও পাগলের আজান মাকরূহ হওয়ার বর্ণনায়   

০৬. শরীয়ত অনুমোদিত আজান ও ইকামতের স্থান বর্ণনায়

০৭. আজানের সময়

০৮. আজানের সময় শ্রোতাদের আবশ্যক বিষয়ের বর্ণনা

০৯. নামাজ অধ্যায়

১০. জুমার দিনের বর্ণনা

১১. জুমার দিন মুস্তাহাব বিষয়গুলোর বর্ণনা

১২. জুমার নামাজ ও উহার ফরজ সম্পর্কে বর্ণনা

১৩. জুমা ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলীর বর্ণনা

১৪. জুমা পরিশুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলীর বর্ণনা

১৫. খুতবার সুন্নাত সমূহের বর্ণনা

১৬. খুতবার মাকরূহ সমূহের বর্ণনা

১৭. জুমার নামাজে মাসবুকের হুকুম

১৮. জুমার সুন্নাতে রাতেবার বর্ণনা

১৯. সংযোজন

২০. জুমার সুনানে রাতেবার দলীল

২১. সিজদা সাহুর বর্ণনা

২২. সিজদা সাহুর কারণ সমূহের বর্ণনা

২৩. সিজদা সাহুর স্থান ও বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা

২৪. তেলাওয়াতে সিজদার বর্ণনা

২৫. কোরআন শরীফে সিজদার স্থান সমূহের বর্ণনা

২৬. নামাজরত অবস্থায় সিজদা করার বর্ণনা

২৭. সিজদা শোকরের বর্ণনা

২৮. নফল নামাজ

২৯. নফল নামাজের প্রকারভেদ

৩০. শর্তযুক্ত নফলের বর্ণনা

৩১. তারাবীর নামাজ বা রমজানের রাত্রে কিয়াম

৩২. তারাবীর রাকাতে সংখ্যার বর্ণনা

৩৩. ঈদের নামাজ সম্পর্কীয় অধ্যায়

৩৪. সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামাজের বর্ণনা

৩৫. বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ

৩৬. চাশ্তের নামাজের বর্ণনা

৩৭. রাত্রের নামাজের বর্ণনা

৩৮. তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের বর্ণনা

৩৯. পবিত্রতার নামাজের বর্ণনা

৪০. ইস্তেখারার নামাজের বর্ণনা

৪১. প্রয়োজন সমাধানে নামাজের বর্ণনা

৪২. সালাতুত্ তাসবীহের বর্ণনা

৪৩. বিতিরের পর দু’রাকাত নামাজ পড়ার বর্ণনা

৪৪. ক্বারীদের পদস্খলন তথা ভুল সম্পর্কীয় অধ্যায়




পূর্বাভাষ



التقديم


الحمدلله القائل فى كتابه الكريم فلو لانفر من كل فرقة منهم طائفة ليتفقهوا فى الدين ولينذروا قومهم .


والصلواة والسلام على رسوله القائل من يردالله به خيرا يفقهه فى الدين وحسبك به دايلا حافزا على تلقى الفقه والمسارعة الى تحصيل مباحثه وعلم الفقه والشرائع فهو الخير الكثير كما قال الله تعالىٰ من يوتى الحكمة فقد اوتى خيرا كثيرا .


فان كلّ متدين لاغنِى به عن معرفة الحلال والحرام حتى يصح دينه وكلّ متعبدلا بدّله من تصحيح عبادته حتى تسلم من الفساد ولاعذر بالجهل فى دار الاسلام فمن ثم كان طلب العلم فريضة على كلّ مسلم ومسلمة .


واذا كان الله تعالى يقول فى كتابه الكريم, قوا انفسكم واهليكم نارا, فان معناه كما قال حبرالامة (عبدالله بن مسعود) علموهم وفقهوهم – فاذا كان ذالك فمن لم يعلم الحلال والحرام فهو على شفاحفرة من النار (وعندالله العافيه) .


وكل مذاهب الائمة خير- يزيدالناس ايمانابها ان يتعرفوا اصولها وماخذ احكامها التمسك بالكتاب والسنة ومجانبة الهوى والبدعة والله ولى التوفيق والرعاية .


رتبتها للطلبة الابتدائية وسميتها ’’طريق الصلوٰة على سبيل الايجاز بالمذهب الحنفى,,


مأخوذ :  من تاليف الشيخ عبدالغنى الدمشقى الحنفى احدعلماء القرن الثالث عشر .


সমস্ত প্রশংসা সে আল্লাহ তা’য়ালার জন্যে যিনি স্বীয় মহান কিতাবে বলেন, “প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে এক দল লোক দ্বীনি এলম অন্বেষণে বের হউক যাতে তারা দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে তা নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনদেরকে শিক্ষা দিতে পারে; যাতে তারা আত্মরক্ষা করতে পারে।”


পরিপূর্ণ রহমত ও শান্তি বর্ষিত হউক তাঁর সে রাসূলের উপর যিনি বলেন, “আল্লাহ তায়ালা যার কল্যাণ জামনা করেন তাকে দ্বীনি জ্হান দান করেন”। তোমার জন্যে মজবুত দলীলরূপে ইহাই যথেষ্ট যে, তুমি এলমে ফিকহর জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ পেয়েছেন, তা সম্পর্কে আলোচনা করার, তালাশ করার তৌফিক দান করেছেন। ফিকাহ ও শরা-শরীয়ত সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা অফুরন্ত নিয়ামত ও অসীম কল্যাণের অন্তর্ভূক্ত। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যাকে হিকমত-বিজ্ঞান দান করা হয়েছে তাকে অশেষ কল্যাণ ও নিয়ামত দান করা হয়েছে”। কেননা দ্বীনদার ব্যক্তি হালাল, হারাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ব্যতীত গত্যন্তর নেই যাতে তারা দ্বীন-ধর্ম বিশুদ্ধভাবে বুঝতে পারে এবং পালন করতে পারে। প্রত্যেক আবেদের জন্যে একান্ত প্রয়োজন তার ইবাদত যেন পরিশুদ্ধ হয়, ভুলভ্রান্তি, ফ্যাসাদ থেকে নিরাপদে থাকে। মুসলিম দেশে মূর্খতা অপারগতা বলে গণ্য হবে না। এ কারণে জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা স্বীয় মহান কিতাবে বলেন, “তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের খান্দানকে আগুন থেকে রক্ষা কর।” উম্মতে মুহাম্মদির ফিক্হ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসয়ুদ (رضي الله عنه) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘‘তোমরা জ্ঞান শিক্ষা কর এবং পরিবার-পরিজনকে জ্ঞান শিক্ষা দাও।” এ ব্যাখ্যা থেকে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি হালাল-হারাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে না সে দোজখের কিনারায় উপনীত হবে। (আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নিরাপত্তা দান করুক)


প্রত্যেক মাজহাবের ইমামগণ উত্তম। কেননা লোকজন তাদের মাধ্যমে ঈমানের আধিক্য লাভ করে এবং ঈমানের উসুল ও উহার হুকুমাদি তথা বিধি-বিধানের উৎপত্তি স্থল জানতে পারে, কিতাবুল্লা, সুন্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম’কে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধরতে পারে, কু-প্রবৃত্তি, বিদায়াত আবৃত্তির কুচক্রান্ত থেকে বেঁচে থাকতে পারে। আল্লাহ তায়ালাই তৌফিকদাতা ও হেফাজতকারী। প্রাথমিক ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ইহা রচনা করেছি এবং এর নামকরণ করছি “তবিকুস সালাত আলা সবিলিল ইজাজ বিল মাজহাবিল হানাফী”। তের শতাব্দির প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন শেখ আব্দুল গনি দিমসকি হানাফী কর্তৃক রচিত কিতাব হতে ইহা চয়ন করা হয়েছে।


আজান অধ্যায়


كتاب الاذان


الاذان- اى النداء بالالفاظ المشهورة المخصوصة المتوارثة, الاعلام, التنبيه- هولوقت الصلوات المكتوبات فى كل يوم- لابأس الصلوٰة والسلام على النبى صلى الله عليه وسلم قبل الاذان وبعده وكل احيان الامكان باطلاق عموم الاية المطلقة الحاكمة بلاقيد الزمان والمكان ’’صلواعليه وسلموا تسليما‘‘ .


আজান অর্থাৎ প্রসিদ্ধ সুনির্দিষ্ট মুতাওয়াতির শব্দাবলী দ্বারা আহবান করা, সংবাদ প্রদান করা ও সতর্ক করা ও সতর্ক করা। উহা প্রত্যেক দিন ওয়াক্তিয়া ফরয নামাজের জন্যে। আজানের পূর্বাপর নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাত ও সালাম প্রেরণে কোন দোষ নেই। পবিত্র কোরআনের আয়াত ‘‘তোমরা দুরূদ ও সালাম অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পেশ কর ” কোন কাল ও সতানের সাথে শর্তারোপ ব্যতীত সাধারণ, ব্যাপকভাবে অবতরন হয়েছে বিধায় সম্ভাব্য যে কোন মুহূর্তে দুরূদ পাঠে দোষ নেই।


আজানের হুকুমে ইমামদের মতপার্থক্য



اختلاف المشائخ فى الاذان


بعضهم قالوا : إنه واجب – رُوى عن محمد رحمة الله عليه ان اهل بلدة من بلادالاسلام إذا تركوا الاذان والا قامة فانهم يجب القتال معهم-وانما يقاتل على ترك الواجب دون السنة .


وعامة مشائخنا قالوا : انهما سنتان مؤكدتان, روى أبويوسف رحمة الله عليه عن ابى حنيفة رحمة الله عليه انه قال فى قوم صلوا الظهر او العصر فى المصربجماعة من غير أذان واقامةٍ انهم اخطأوا السنة وخالفوا واثموا .


وقال السمرقندى ولكن كلامن القولين متقاربان لان السنة المؤكدة والواجب سواء – الاذان هوالاذان المعروف فيما بين الناس من غير زيادةٍ ولانقصان – وهذا قول عامة مشائخ الاحناف .


وقال عامة العلماء : يكبراربع مرات فى ابتداء الاذان, ويختم الاذان بقوله ’’لا اله الا الله‘‘ ولاترجيع فى الاذان, خلافا للشافعى رحمة الله عليه .


والاقامة مثنى كالاذان- وفى الاقامة بعدقوله ’’حىّ على الفلاح‘‘ ’’قدقامت الصلوة‘‘ مرتين خلافا لمالك رحمة الله عليه .


وبالتثويب فى اذان الفجربان يقال فيه ’’الصلوة خير من النوم‘‘ مرتين بعدقوله حىّ على الفلاح, خلافا للشافعى رحمة الله عليه فى قوله الجديد.


কতিপয় ইমাম বলেন: “নিশ্চয় ইহা ওয়াজিব”। এরা দলীল হিসাবে ইমাম মুহাম্মদের রেওয়ায়ত পেশ করেন- মুসলিম হুকুমতের অধীনস্থ কোন শহরবাসীরা আজান ও ইকামত উভয় বর্জন করলে তাদের সাথে যুদ্ধ করা ওয়াজিব হবে। যুদ্ধ করার হুকুম ওয়াজিব বর্জনে হয় সুন্নাত বর্জনে নয়। আমাদের হানাফী মাজহাবের অধিকাংশ ইমাম বলেন, নিশ্চয় আজান ও ইকামত উভয় সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। ইমাম আবু ইউসুফ (رحمة الله) ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হতে বর্ণনা করেন, তিনি এমন সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেন যারা শহরে জোহর বা আছরের নামাজ জামাত সহকারে আজান ও ইকামত ব্যতীত আদায় করেছেন অবশ্যই তারা সুন্নাতের বিপরীত কাজ করেছেন এবং তারা সুন্নাত বর্জন করার পাপে পাপী হিসাবে গণ্য হবে। ইমাম সমরকান্দি বলেন, উভয় পক্ষের কথা পরস্পর কাছাকাছি। কেননা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও ওয়াজিব এক বরাবর। আজান হল যা সর্ব সাধারণের মাঝে প্রসিদ্ধ কোন ধরনের হ্রাস বৃদ্ধি ব্যতীত; ইহা অধিকাংশ হানাফী ইমামদের মতামত। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, আজানের প্রথমে চারবার তাকবীর বলবে এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে আজান শেষ করবে। আজানে কোন ধরণের তারজী নেই। ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) এর বিপরীত। অর্থাৎ তাঁর মতে তাবজী আছে।


ইকামত আজানের ন্যায় দু’বার বলবে এবং ইকামতে হাইয়্যা আলাল ফালাহ এর পরে কাদকামতিস সালাত দুবার বলবে। ইমাম মালেক (رحمة الله) এর বিপরীত। তিনি ইহা দু’বার বলার পক্ষে নয় বরং একবার বলার পক্ষে। ফজরের আজানে তাসবির (হাইয়্যা আলাল ফালাহ) বলার পর আস্সালাতু খাইরুম্ মিনান নাওম দু’বার বলবে। ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) তাঁর নতুন মতানুসারে এর বিপরীত। অর্থাৎ তিনি ইহা বলার পক্ষপাতি নয়।


আজানে সুন্নাত সমূহের পরিচ্ছেদ


باب سنن الاذان


سنن الاذان نوعان –


(১) منها مايرجع الى نفس الاذان


(২) ومنها مايرجع الى المؤذن


(১) اما الذى يرجع الى نفس الاذان


فمنها ان ياتى بالاذان والاقامة جهرا ويرفع بهما صوته الاان الاقامة اخفض.


ومنها ان يفصل بين كلمتى الاذان بسكتة ولايفصل بين كلمتى الاقامة بل يجعلهما كلاما واحدا.


ومنها أن يُرسل فى الاذان ويحدر فى الاقامة .


ومنها ان يرتب بين كلمات الاذان والاقامة كما شرع .


ومنها ان يوالى ويتابع بين كلمات الاذان والاقامة حتى لوترك المةالات فالسنة ان يعيد الاذان .


ومنها ان ياتى بهما مستقبل القبلة الااذا انتهى الى ’’الصلوة‘‘ و الفلاح‘‘ يحول وجهه يمينا وشمالا ولايحوّل قدميه .


(২) واما الذى يرجع الى المؤذن 


فينبغى ان يكون رجلا, عاقلا, بالغا, صالحا, تقيا, عالما بالسنة وباوقات الصلوات , مواظبا على ذالك .


فان اذان الصبى العاقل صحيح من غير كراهة – واما آذان المرأة فيكره بالاجماع – واما آذان الصبى الذى لايعقل فلايجوز ويعاد .


আজানের সুন্নাত সমূহ দু’প্রকার,


(১) যা আজানের সুন্নাত


(২) যা মুয়াজ্জিনের সুন্নাত


(১) আজানের সুন্নাত যেমন- আজান ও ইকামত উচ্চস্বরে বলা। উভয়টিতে আওয়াজকে বড় ও দীর্ঘ করে বলবে তবে ইকামতে আওয়াজ একটু ছোট করবে। আজানের শব্দদ্বয়ের মধ্যে পৃথক করে একটু বিরতি করে বলবে এবং ইকামতের শব্দদ্বয়ের মধ্যে পৃথক করবে না বরং শব্দাবলী মিলায়ে বলবে।


উহা হতে আজানের শব্দগুলো থেমে থেমে বলা এবং ইকামতের শব্দগুলো দ্রুত বলা।


উহা হতে আজান ও ইকামতের শব্দগুলো তারতীব অনুযায়ী যেভাবে শরীয়তে অনুমোদিত হয়েছে ঠিক সেভাবেই বলতে হবে; আগে পরে করা যাবে না।


উহা হতে আজান ও ইকামতের শব্দাবলী বিরতিহীনভাবে একের পর এক বলতে হবে এমনকি বিরতির সাথে বললে আজান পুনরায় দেয়া সুন্নাত।


উহা হতে আজান ও ইকামতের সময় কিবলামুখী হওয়া তবে হাইয়্যা আলাস সালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময় ডান ও বাম দিকে মুখমন্ডল ফিরাবে কিন্তু পা ফিরাবে না।


(২) মুয়াজ্জিনের সুন্নাত- মুয়াজ্জিন ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞান প্রাপ্ত বয়স্ক, পুণ্যবান, খোদাভীরু, সুন্নাত সম্পর্কে জ্ঞাত, ওয়াক্ত সম্পর্কে জ্ঞাত ও যথাযথ নামাজ আদায়কারী হওয়া উচিত। সুতরাং অপ্রাপ্ত বয়স্ক বুদ্ধিমান ছেলের আজান মাকরূহ বিহীন বৈধ। তবে মহিলার আজান সবাইর ঐক্যমতে মাকরূহ। অবুঝ শিশুর আজান অবৈধ; পুনর্বার দিতে হবে।


মাতাল, মাদহুশ ও পাগলের আজান মাকরূহ হওয়ার বর্ণনায়


بيان كراهة آذان السكران والمعتوه والمجنون


ويكره آذان السكران والمعتوه والمجنون الذى لايعقل .


قال علاء الدين السمرقندى : المستحب ان يعادلانه لايقع به الإعلام ولايعتمد الصلحاء على آذانهم .


ومن السنة ان يجعل إصبعيه فى أذنيه وان ترك لايضره وان جعل يديه على اذنيه فحسن – والاحسن ان يجعل اصبعيه – وروىٰ ابويوسف رحمة الله عليه عن ابى حنيفة رحمة الله عليه انه قال ان جعل احدىٰ يديه على أذنه فحسن .


ومن السنة ان يكون المؤذن على وضوء وان ترك الوضؤ فى الاذان لايكره – وفى رواية الحسن يكره .


وامّا اذان الجنب واقامته فيكره بالاتفاق – وروىٰ الحسن عن ابى حنيفة رحمة الله عليه انه يعاد .


فالحاصل : إعادة آذان اربعة نفر :(১) آذان الجنب . (২) والمرأة (৩) آذان السكران (৪) والمعتوه الذى لايعقل. ومن السنة ان يؤذن ويقيم اذا اذن للجماعة ولوترك من غير عذريكره .


وأما اذا اذن لنفسه فلابأس بأن يؤذن قاعدا وأماالمسافر فلابأس بأن يؤذن راكبا ولايكره له ترك القيام .


মাতাল, মাদহুশ ও পাগল যার জ্ঞান নেই এ ধরণের লোকদের আজান মাকরূহ। আলাউদ্দিন সামরকান্দি বলেন, “তাদের আজান পুনর্বার দেয়া মুস্তাহাব”। কারণ ইহা দ্বারা আহবান বুঝা যায় না এবং সালেহীনগণ ওদের আজানকে গ্রাহ্য করেননি। মুয়াজ্জিন উভয় কর্ণে আঙ্গুল দিয়ে আজান দেয়া সুন্নাত। যদি তা বর্জন করে তাতে কোন ক্ষতি নেই। যদি উভয় হাত উভয় কানের উপর রাখলে, ইহা ভাল। উভয় কানের ছিদ্রে আঙ্গুল রাখা সবচেয়ে উত্তম। ইমাম আবু ইউসুফ (رحمة الله) ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হতে বর্ণনা করেছেন, ‘‘তিনি বলেন এক হাত এক কানে রাখা উত্তম।’’ মুয়াজ্জিন অজু সহকারে আজান দেয়া সুন্নাত। অজু ছাড়া আজান দিলে মাকরূহ হবে না। হাসানের রেওয়ায়তে মাকরূহ বলা হয়েছে। জুনুবী (যার উপর গোসল ফরজ হয়েছে) ব্যক্তির আজান ও ইকামত সবাইর ঐক্যমতে মাকরূহ। হাসান (رحمة الله) ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হতে রেওয়ায়ত করে বলেন আজান পুনর্বার দিতে হবে। সারকথা চার ব্যক্তির আজান মাকরূহ। (১) জুনুবী (যার উপর গোসল ফরজ) ব্যক্তির আজান (২) মহিলার আজান (৩) মাতালের আজান মাদহুশ (জ্ঞান শূন্য ব্যক্তি) এর আজান। জামাতের জন্য আজান ও ইকামত দেয়া সুন্নাত। বিনা কারণে বর্জন করলে মাকরূহ হবে। একাকী নামাজির জন্যে বসে আজান দেয়াতে কোন দোষ নেই। মুসাফির ব্যক্তি আরোহিত অবস্থায় আজান দেয়াতে কোন দোষ নেই। বসে দিলেও মাকরূহ হবে না।


শরীয়ত অনুমোদিত আজান ও ইকামতের স্থান বর্ণনায়


بيان المحل الذى شرع فيه الاذان والاقامة


المحل الذى شرع فيه هوالصلوٰت المكتوبات التى تؤدى بجماعة مستحبة او ماهو شبيه بها .


ولهذا لاآذان فى التطوعات ولااقامة- لانه لايستحب فيها الجماعة فعُلم إن كانت الصلوٰة تطوعًا تؤدى بجماعة فلا بأس .


وكذا فى الوتر لانه تطوع عندهما – وعند ابى حنيفة رحمه الله وان كان واجبا ولكنه تبع للعشاء .


وكذا لاآذان ولا اقامة فى صلوٰة العيدين ولافى صلاة الكسوف والخسوف ০ وصلاة الاستسقاء لانها من السنن . وكذا فى صلاة الجنازة لانها ليست بصلاة حقيقة وكذا الاذان فى حق النسوان والعبيد .


وكذا من لاجماعة عليهم – فاما الجمعة ففيها آذان واقامة لانها فريضة .


فاما اذا صلى الرجل وحده فى بيته يكفيه اذان الناس واقامتهم ولو ان بالاذان والاقامة فحسن .


واما فى حق المسافرين فالافضل ان يؤذنوا ويقيموا ويصلوا بالجماعة – فان صلوا بجماعة واقاموا وتركوا الاذان اجز أهم ولايكره .


واما المسافر اذا كان وحده لوترك الاذان لابأس به – ولو ترك الاقامة يكره بخلاف المقيم – اذا كان يصلى وحده فى بيته – لوترك الاذان والاقامة لابأس به – لانه اذان الناس واقامتهم يقوم مقام فعل المقيم .


واما الفوائت – فتقام بالجماعة باذان وإقامة عندنا, خلافا للشافعى رحمة الله عليه – عن محمد رحمة الله عليه انه اذا فاتت صلوت يقضى الاولىٰ باذان واقامة – والبواقى بالاقامة دون الاذان .


শরীয়ত অনুমোদিত স্থান হল দৈনিক ওয়াক্তিয়া ফরজ নামাজ যা জামাতের সাথে আদায় করল মুস্তাহাব বা অনুরূপ সময়ে জামাত সহকারে আদায় করতে হয়। এ জন্যে নফলিয়া নামাজের আজান ও ইকামত নেই। কেননা সেখানে জামাত মুস্তাহাব নয়। ইহা হতে বুঝা যায়, নফলিয়া নামাজ জামাতের সাথে হলেও কোন দোষ নেই। অনুরূপ বিতরের নামাজেও কেননা ইহা সাহেবাইনের মতে নফল। ইমাম আবু হানিফার মতে যদিও ওয়াজিব হয়, কিন্তু এশার অধীনে। অনুরূপ দু’ঈদের নামাজে, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামাজেও আজান ও ইকামত নেই। বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজেও আজান ও ইকামত নেই; কেননা এগুলো সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত। অনুরয়প জানাজার নামাজে কেননা ইহা প্রকৃতপক্ষে নামাজ নয়। অনুরূপ মহিলা ও গোলামের ক্ষেত্রেও আজান ও ইকামতের বিধান নেই। অনুরূপ যাদের জন্যে জামাত আবশ্যক নয়। জুমার নামাজে আজান ও ইকামত আবশ্যক কেননা ইহা ফরজ। যে ঘরে একাকী নামাজ পড়ে তার জন্যে জামাতের আজান ও ইকামত যথেষ্ট হবে। যদি সে আজান ও ইকামত সহকারে নামাজ আদায় করে তা উত্তম হবে। মুসাফেরদের জন্যে আজান ও ইকামত সহকারে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা সবচেয়ে উত্তম। আজান বর্জন করে ইকামত সহকারে মুসাফিররা জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলে যথেষ্ট হবে মাকরূহ হবে না। আজান বর্জন করে মুসাফির একাকী নামাজ পড়লে কোন দোষ নেই তবে ইকামত বর্জন করলে মাকরূহ হবে। মুকিমের বিপরীত- তিনি ঘরে আজান ও ইকামত ব্যতীত একাকী নামাজ আদায় করলে কোন দোষ নেই। কেননা জামাতের আজান ও ইকামত তার আজান ও ইকামতের স্থলাভিষিক্ত হবে। কাজা নামাজ আমরা হানাফীদের মতে আজান ও ইকামতের সাথে আদায় করবে। ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) এর বিপরীত। ইমাম মুহাম্মদ (رحمة الله) হতে বর্ণিত, ‘‘যদি একাধিক নামাজ কাজা হয় তাতে প্রথম ওয়াক্তের জন্যে আজান দিবে বাকীগুলো ইকামত দিয়ে আদায় করবে আজান দিয়ে নয়।


আজানের সময়


وقت الأذان


هو وقت الصلوٰت المكتوبات, حتى اذا اذن قبل اوقاتها لايجوز – عن ابى يوسف رحمة الله عليه انه قال فى صلاة الفجر اذا اذن فى النصف الاخير من الليل يجوز – وبه اخذ الشافعى رحمة الله عليه .


والصحيح عن عبدالله بن مسعود رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم فعليكم بأذان ابن أم مكتوم .


আজানের সময় ওয়াক্তিয়া ফরজ নামাজের সময়; এমনকি ওয়াক্তিয়া নামাজের সময় হওয়ার পূর্বে আজান দিলে উহা বৈধ হবে না। ইমাম আবু ইউসুফ (رحمة الله) হতে বর্ণিত, ‘‘তিনি বলেন ফজরের নামাজের জন্যে রাতের শেষার্ধে আজান দিলে বৈধ হবে। ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) এ মত পোষণ করেছেন। বিশুদ্ধ মত হল যা হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসয়ুদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তোমাদের হযরত উম্মে মাকতুমের আজান আবশ্যক। (উম্মে মাকতুম ফজর আরম্ভ হওয়ার পরই আজান দিতেন)



আজানের সময় শ্রোতাদের আবশ্যক বিষয়ের বর্ণনা


بيان مايجب على السامعين عندالأذان


يجب عليهم الاجابة – على ما رُوى عن النبى صلى الله عليه وسلم انه قال اربع من الجفاء وذكر من جملتها ومن سمع الاذان والاقامة ولم يجب .


والاجابة ان يقول مثل ماقاله المؤذن الافى قوله ’’حى على الصلوٰة‘‘ ’’حى على الفلاح‘‘ فانه يقول مكان ذلك لاحول ولاقوة إلا بالله العلى العظيم .


لان اعادة ذلك تشبه المحاكاة والاستهزاء .


وكذا اذا قال المؤذن ’’الصلوٰة خير من النوم‘‘ فلايقول السامع مثله لانه يشبه المحاكاة ولكن يقول صدَقتَ وبالحق نطقتَ وبَررتَ (تتمه ) .


يستحب ان يقال عند سماع الاولىٰ من الشهادة ’’صلى الله عليكَ يا رسول الله‘‘ وعند الثانية منها ’’قرّةُ عينى بك يارسول الله‘‘ ثم يقول اللهم مَتعنِى بالسمع والبصر بعد وضع ظفرَى الابها مين على العينين (شامى) .


وكذا ينبغى ان لايتكلم فى حال الاذان والاقامة ولايقرأ القرآن – ولو أن فى قرأة القرآن سمعَ الاذان ينبغى ان يقطع القرآءة ويستمع الاذان ويجيب .


وكذا لايشتغل بشيئ من الاعمال سِوَى الاجابة .


ثم دعا المجيب والمؤذن بالوسيلة بعد الصلوات على النبى صلى الله عليه وسلم عقيب الإجابة – عن ابن عمر رضى الله تعالى عنهما عن النبى صلى الله عليه وسلم اذا سمعتم المؤذن فتقولوا مثل مايقول ثم صلوا علىّ صلاةً فانه من صلى علىّ صلوة صلى الله عليه بها عشرا وارجوان اكون اناهو فمن سأل لى الوسيلة حلّت له الشفاعة اى حلّت له شفاعتى .


قال مولانا التهانوى ومن آداب الدعاء رفعُ الايدى كما ذكر فى فتاواه .


ويقول اللهم ربّ هذه الدعوة التامة والصلاة القائمة آتِ محمدن الوسيلة والفيلة وبلغه درجة الوسيلة عندك وابعثه مقاما محمودا الذى وعدته انك لاتخلف الميعاد .


وارزقنا واجعلنا فى شفاعته يوم القيامة انك لاتخلف الميعاد برحمتك يا ارحم الرحمين – والله اعلم (امداد الفتاح) .


শ্রোতাদের উপর আজানের প্রতি উত্তর দেয়া ওয়াজিব। নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসের মর্মানুসারে যে, তিনি বলেন; ‘‘চারটি বিষয় জুলুমের অন্তর্ভূক্ত তন্মধ্যে আজান ও ইকামতের আওয়াজ শুনার পর উত্তর না দেয়াকেও উলে­খ করা হয়েছে। উত্তর হল মুয়াজ্জিন যেরূপ বলে সেরূপ বলা তবে হাইয়্যা আলাস সালাত ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ এর স্থানে লা-হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীয়ীল আজিম বলবে। কেননা এগুলো হুবহু বললে হাসি ঠাট্টা, রসিকতার সাদৃশ্য হয়ে যায়। অনুরূপ মুয়াজ্জিন আস সালাতু খাইরুম মিনান্ নাওম বললে শ্রোতা সেরূপ বলবে না কেননা ইহাও দেখতে তার মোকাবিলা করার মত বুঝায়। তবে এর প্রতি উত্তরে صدقت وبالحق نطقت وبررت বলবে। (তাতিম্মা)


শাহাদতের বাক্য প্রথম শ্রবণে শ্রোতা বলবে صلى الله عليك يا رسول الله ও দ্বিতীয় শ্রবণে قرة عينى بك يا رسول الله অত:পর اللهم متعنى بالسمع والبصر দোয়াটি উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলের নখ উভয় চোখে রাখার পর পড়বে। (সামী)


অনুরূপ আজান ও ইকামত অবস্থায় কথা না বলা ও কোরআন তেলাওয়াত না করা উচিত হবে। কোরআন পড়া অবস্থায় আজান শুনলে কোরআন পাঠ বন্ধ করে আজান শোনা ও উত্তর দেয়া উচিত হবে। অনুরূপ আজানের উত্তর ব্যতীত অন্য কোন কাজে ব্যস্ত হবে না।


অতঃপর মুয়াজ্জিন ও শ্রোতা উত্তর দেয়ার পর পর নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করে উসিলার জন্যে দোয়া করবে। হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রেওয়ায়ত করেন, তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে বলতে শুনবে, তোমরাও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ বলবে। অত:পর আমার উপর (একবার হবেনা) দুরূদ পড়বে ; কেনান যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা ইহার পরিবর্তে তাকে দশবার রহমত করবে। আমি আশা করছি, আমি সে ব্যক্তি হব যে আমার উসিলার জন্যে প্রার্থনা করবে ; তার জন্যে আমার সুপারিশ নির্ধারিত হয়ে যাবে। মাওলানা তানবী বলেছেন, দোয়ার আদাবের মধ্যে হাত উত্তোলন করা একটি আদব। এভাবে তার ফতোয়ায় উলে­খ করেছেন। দোয়ায় বলবে হে আল্লাহ ! এ পরিপূর্ণ আহবান ও সদ্য প্রতিষ্ঠিতব্য নামাজের তুমিই প্রভু। আপনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উসিলা ও ফজিলত প্রদান করুন এবং আপনার নিকট তাঁকে উসিলার মর্যাদা প্রদান করুন। আপনি তাঁকে প্রশংসিত স্থানে অবস্তানের সুযোগ দান করুন যা প্রদান করার প্রতিশ্র“তি তাঁকে দিয়েছেন। আপনি কখনো প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেন না। আমাদেরকে তাঁর সুপারিশ নসিব করুন। কিয়ামত দিবসে আমাদেরকে তাঁর সুপারিশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করুন। আপনি কখনো ওয়াদা খেলাফ করেন না ; আপনার রহমতে, হে অত্যন্ত রহমতকারী। আল্লাহ তায়ালাই জ্ঞাত। (ইমদাদুল ফাতাহ) 



নামাজ অধ্যায়



كتاب الصلوٰة


اعلم يا بنىّ ! 


أنّ بعدَ إسباغ الوضوء .


اذا اردتّ الى الصلوٰة ان يتوجه المصلى الى القبلة وهى الكعبة المكرمة اينما كان بجميع بدنه قاصدا بقلبه فعل الصلاة التى يريدها من فريضة اونافلة- ويجعل له سترة يصلى اليهاصلوٰة المفترض , إن كان اماما أومنفردًا يكبر تكبيرة الاحرام قائلا ’’الله اكبر‘‘ , ناظرا ببصره الى محل سجوده .


يرفع يديه عندالتكبير الى حيال اذنيه .


يضع يديه على تحت السرة اليمنى على كفه اليسرى .


يسن ان يقرأ دعاء الاستفتاح وهو ’’سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولآإله غيرك ‘‘.


ثم يقول : أعوذبا الله من الشيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم , ويقر أسورة الفاتحة, ثم يقر أما تيسّر من القرآن- يركع مكبرا واضعا يديه على ركبتيه مفرقا اصابعه ويطمئن فى ركوعه, ويقول : سبحن ربى العظيم يكرّرُها ثلاثا ويستحب اكثر – ويرفع راسه من الركوع قائلا ’’سمع الله لمن حمده‘‘ وان كان اماما او منفرداويقول حال قيامه‘‘ ربنا ولك الحمد حمدا اكثيرًا‘‘ .


ويستحب ان يضع كل منهم يديه كما فعل فى قيامه قبل الركوع, ويسجد مكبراو اضعا ركبتيه قبل يديه اذا تيسرله ذلك, فان شق عليه قدم يديه قبل ركبتيه مستقبلا باصابع رجليه ويديه القبلة ضاما أصابع يديه ويكون على أعضائه السبعة الجبهة مع الانف واليدين والركبتين وبطون اصابع الرجلين – ويقول سبحان ربى الاعلى ويكرر ذلك ثلاثا او اكثر.


يرفع راسه مكبر اويفرش قدمه اليسرى – ويجلس عليها وينصب رجله اليمنى ويضع يديه على فخذيه وركبتيه ويطمئن فى هذا الجلوس .


يسجد السجدة الثانية مكبرا ويفعل فيها كما فعل فى السجدة الاولىٰ .


يرفع راسه مكبرا ويجلس جلسة خفيفة وتسمى جلسة الاستراحة وهى مستحبة وان تركها فلاحرج عليه وليس فيها ذكر ولادعاء .


ثم ينهض قائما الى الركعة الثانية معتمدا على ركبتيه إن تيسّر له ذلك وان شق عليه إعتمد على الارض, ثم يقرأ الفاتحة وماتيسرله من القرآن بعد الفاتحة, ثم يفعل كما فعل فى الركعة الاولىٰ .


اذا كانت الصلوٰة ثنائية اى ركعتين كصلاة الفجر والجمعة والعيد جلس بعد رفعه من السجدة الثانية ناصبا رجله اليمنىٰ مفترشا رجله اليسرىٰ واضعايده اليمنىٰ على فخذه اليمنىٰ قابضا اصابعه كلها .


ان قبض الخنصر والبنصر من يده وحلق ابهامها مع الوسطى واشار بالسبابة الى شهادة التوحيد فحسن .


ويضع يده اليسرىٰ على فخذه اليسرىٰ وركبته – ثم يقرأ التشهد فى هذا الجلوس وهو ’’التحيات لله والصلوٰة والطيبات السلام عليك ايها النبى ورحمة الله وبركاته السلام علينا وعلى عبادالله الصالحين اشهدان لااله الا الله واشهدان محمدا عبده ورسوله‘‘ .


ثم يقول اللهم صل على محمد وعلى آل سيدنا محمد كما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى آل ابراهيم انك حميد مجيد , ثم يدعو بماثورة سواء كانت الصلوٰة فريضة او نافلة ثم يسلم عن يمينه وشما له قائلا السلام عليكم ورحمة الله , السلام عليكم ورحمة الله .


ان كانت الصلوٰة ثلاثية كالمغرب اورباعية كالظهر والعصر والعشاء قرأ التشهد المذكور آنفا, ثم نهض قائما معتمدا على ركبتيه قائلا ’’الله اكبر‘‘ – ويضعهما اى يديه كما تقدم ويقرأ الفاتحة فقط , ثم يستشهد مع الصلوٰة على النبى صلى الله عليه وسلم بعد الثالثة من المغرب وبعد الرابعة من الظهر والعصر والعشاء كما تقدم ذلك فى الصلوة الثنائية ثم يسلم عن يمينه وشماله وأما اذا كانت الصلوة النافلة او السنن رباعية يقراء قراءة الفاتحة ثم قراءة القرآن على الترتيب ماتيسر من القرآن فى كل ركعة والقعدة الاولىٰ بعد الركعتين اى التشهد صلى بماشاء ركعات من النوافل.


ويستغفر الله ثلاثا ويسبح الله ثلاثا وثلاثين ويحمده مثل ذلك ويكبره مثل ذالك ويقول بعد تمام المائة لااله الاالله وحده لاشريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير ويقرأ آية الكرسى وقل هوالله احدالخ, وقل أعوذ برب الفلق الخ , وقل اهوذ برب الناس الخ , بعد كل صلوة ويستحب تكرار هذه السور الثلاث ثلاث مرات بعد صلوة الفجر وصلاة المغرب لورودالاحاديث بها عن النبى صلى الله عليه وسلم وكل الاذكار سنة .


ويقول ’’اللهم انت السلام ومنك السلام تباركت ياذالجلال والاكرام اللهم لامانع لما اعطيت ولا معطى لما منعت ولاراد لما قضيت ولاينفع ذالجد منك الجد لاحول ولاقوة الا بالله لا اله الا الله ولانعبد الا اياه له النعمة وله الفضل وله الثناء الحسن, اللهم ثبت قلبى على دينك يا مقلب القلوب برحمتك يا ارحم الرحمين .


الاذكار الواردة بعد السلام من الصلوة :


 (১) استغفر الله ثلاثا- رواه مسلم. 


(২) اللهم انت السلام ومنك السلام تباركت يا ذالجلال والاكرام (رواه مسلم). 


(৩) اللهم اعنى على ذكرك وشكرك وحسن عبادتك (رواه ابوداؤد والنسائى) .


 (৪) اللهم اجرنى من النار سبع مرات بعد صلوٰة الفجر وصلاة المغرب (رواه ابوداؤد) .


 (৫) قراءة آية الكرسى الله لااله الاهو الحى القيوم الى هو العلى العظيم .

জেনে রাখ, হে প্রিয় বৎস! নিশ্চয় পরিপূর্ণ অজু করার পর তুমি নামাজ আদায় করার ইচ্ছা করলে কিবলামুখী হবে। উহা হল মর্যাদাবান কাবা শরীফ। সে (নামাজী) যেখানে হউক না কেন পূর্ণাঙ্গ শরীরে, অন্তরে দৃঢ় সংকল্প সহকারে উদ্দেশ্য করে ফরজ বা নফল নামাজ আদায় করার ইচ্ছা করলে তার জন্যে একটি সুতরা নির্ধারণ করবে, যাকে সামনে রেখে নামাজ আদায় করবে। ফরজ নামাজ আদায়কারী ইমাম হউক কিংবা একাকী হউক সিজদার স্থানের দিকে দৃষ্টি রেখে তাকবরে তাহরিমা পড়ে আল্লাহু আকবর বলবে; তাকবীরে তাহরিমা বলার সময় উভয় হাত উভয় কানের লতি বরাবর উত্তোলন করবে। অত:পর ডান হাত বাম হাতের কবজির উপর স্থাপন করে উভয় হাত নাভির নীচে রাখবে। নামাজ প্রারম্ভের দোয়া পাঠ করা সুন্নাত। উহা হল ‘‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবা রাক্সমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা’’। অত:পর আয়ুজু বিল্লাহি মিনাস সায়তোয়ানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম বলে ক্রমান্বয়ে সূরা ফাতেহা ও কোরআন থেকে যে কোন সহজ সূরা পাঠ করবে। এরপর তাকবীর বলে রুকু করবে এবং উভয় হাতের আঙ্গুল প্রশস্ত অবস্থায় উভয় হাঁটুর উপর রাখবে। স্থিরতার সাথে রুকু করবে এবং রুকুতে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম তিনবার বলবে। তিনবারের অধিক বলা মুস্তাহাব। রুকু থেকে সামিয়্যাল্লাহু লিমান হামিদা বলে মাথা উত্তোলন করবে। ইমাম ও একাকী উভয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদু হামদান কাসীরান বলবে। ইমাম ও একাকী প্রত্যেকে রুকুর পূর্বের ন্যায় হাত রাখা মুস্তাহাব এবং তাকবীর বলে সিজদায় যাবে; সম্ভব হলে হাঁটুদ্বয় হস্তদ্বয়ের পূর্বে রাখবে। যদি ইহা কষ্টকর হয় হস্তদ্বয় পূর্বে রাখতে পারবে। হাত, পা উভয়ের আঙ্গুল সমূহ কিবলামুখী রাখবে এবং হাতের আঙ্গুলগুলো মিলায়ে রাখবে। সপ্তাঙ্গ ললাট, নাক, হস্তদ্বয়, হাঁটুদ্বয় ও পায়ের আঙ্গুলীর পেট দ্বারা সিজদারত হবে এবং সিজদায় সুবহানা রাব্বিয়ল আ’লা তিনবার বা তার অধিক বলবে। তাকবীর পাঠরত অবস্থায় সিজদা থেকে মাথা উত্তোলন করবে এবং বাম পা বিছায়ে বসবে, ডান পা দন্ডায়মান রাখবে। উভয় হাত উরুদ্বয় ও হাঁটুদ্বয়ের উপর রাখবে এবং স্থিরতার সাথে বৈঠক করবে। দ্বিতীয় সিজদা তাকবীর বলে করবে এবং এতে প্রথম সিজদার ন্যায় করবে। তাকবীর বলে মাথা উত্তোলন করবে এবং একটু বসবে। ইহা ইস্তেরাহার বৈঠক বলা হয়। ইহা মুস্তাহাব। ইহা বর্জন করলে কোন দোষ নেই। এ বৈঠকে কোন জিকির ও দোয়া নেই। অত:পর উভয় হাঁটুতে ভর করে যদি সহজ হয় অন্যথায় জমিতে ভর করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অত:পর ক্রমান্বয়ে সূরা ফাতেহা ও কোরআন থেকে সহজতর যে সূরা পাঠ করবে। অত:পর প্রথম রাকাতের অনুরূপ দ্বিতীয় রাকাতেও করবে। নামাজ দু’রাকাত বিশিষ্ট হলে যেমন- ফজর, জুমা ও ঈদের নামাজ; দ্বিতীয় সিজদার পর ডান পা দন্ডায়মান করে বাম পা বিছায়ে হস্তদ্বয় উরুদ্বয়ের উপর আঙ্গুল মিলায়ে রাখাবস্থায় বসবে। কনিষ্ঠ ও পার্শ্ববতী আঙ্গুল মিলায়ে রেখে মধ্য আঙ্গুল ও বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা বৃত্ত করে তর্জনী দ্বারা শাহাদতুত তৌহিদের ইশারা করা উত্তম। বাম হাত বাম উরু ও হাঁটুর উপর রাখবে। অত:পর এ বৈঠকে তাশাহহুদ পাঠ করবে। তাশাহ্হুদ হল, আত্তাহিয়্যাতু লিল­হি ওয়াস্ সালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যেবাতু আস্সলামু আলাইকা আইয়্যূহান নবীয়্যু ওয়া রাহমতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আস্সালামু আলাইনা ওয়া আ’লা ইবাদিল লাহিস ছালেহীন আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।


অত:পর বলবে আল্লাহুম্মা সালি­ আলা মুহাম্মাদিন ওয়াআলা আলে সাইয়্যেদেনা মুহাম্মদিন কামা ছাল্লাইতা আলা সাইয়্যেদেনা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলে ইব্রাহিম ইন্নাকা হামিদুম মজিদ। অত:পর দোয়ায়ে মাছুরা পড়ে ফরজ নামাজ হউক কিংবা নফল নামাজ হউক ডানে বামে আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমতুল্লাহি বলে সালাম পেশ করে নামাজ শেষ করবে। নামাজ তিন রাকাত বিশিষ্ট যেমন- মাগরিব বা চার রাকাত বিশিষ্ট যেমন- জোহর, আছর ও ইশা হলে দু’রাকাতের পর মধ্যখানে উলে­খিত তাশাহহুদ পড়বে অত:পর হাঁটুদ্বয়ে ভর দিয়ে আল্লাহু আকবর বলে দাঁড়িয়ে যাবে। উপরের বর্ণনা অনুযায়ী উভয় হাত রাখবে এবং শুধু সূরা ফাতেহা পাঠ করবে। অত:পর মাগরিবের তৃতীয় রাকাতের পর জোহর, আছর ও ইশার চতুর্থ রাকাতের পর নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ শরীফ সহকারে তাশাহহুদ পড়বে যেভাবে দু’রাকাত বিশিষ্ট নামাজে উপরে বর্ণিত হয়েছে। আর নামাজ নফল কিংবা চার রাকাত বিশিষ্ট সুন্নাত হলে তাতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর কোরআন শরীফ হতে প্রত্যেক রাকাতে সহজতর সূরা তেলাওয়াত করবে এবং দু’রাকাত পর প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পড়বে। অনুরূপভাবে যা ইচ্ছা নফল নামাজ আদায় করতে পারবে। অত:পর ইস্তেগফার পড়বে তিন বার সোবহানাল্লাহ পড়বে ৩৩ বার, আলহামদু লিল্লাহ ৩৩ বার ও আল্লাহু আকবর ৩৪ বার, তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর মিলে একশত বার পূর্ণ হওয়ার পর ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শরীকা লাহু লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুলে­ সাইয়ীন কদির’’ পড়বে। অত:পর ক্রমান্বয়ে আয়াতুল কুরসি, ‘‘কুল হুয়াল লাহু আহাদ আল্লাহুস সামাদ লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহদ,’’ ‘‘কুল আয়ুজু বিরাব্বিল ফলক মিন র্সারিমা হালক ওয়ামিন সাররি গাসেকীন ইজা ওয়াকব, ওয়ামিন সাররিন নাফ্ফাসাতে পিল উকাদ ওয়ামিন সাররি হাসেদীন ইজা হাসাদ’’, ‘‘কুল আয়ুজু বিরাব্বির নাস মালিকিন নাস ইলাহিন নাস মিন সাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস আল্লাজি ইউওয়াসবিসু ফি সুদুরিন নাস মিনাল জিন্নাতে ওয়ান্নাস’’ প্রত্যেক নামাজের পর পড়বে। উলে­খিত তিনটি সূরা ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার করে তেলাওয়াত করা মুস্তাহাব। কেননা এ সম্পর্কে হাদীসে বর্নিত হয়েছে। প্রত্যেক জিকির সুন্নাত। এরপর বলবে ‘‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়াজাল জালালে ওয়াল ইকরাম’’, ‘‘আল্লাহুম্মা লা-মানেয়া লেমা আতাইতা ওয়ালা মুতেয়া লেমা মানাতা ওয়ালা রাদ্দা লেমা কজাইতা ওয়ালা ইয়ানফায়ু জাল জদ্দে মিনকাল জাদ্দু লা-হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়ালা নাবুদু ইল্লা ইয়্যাহু লাহুন, নি’মাতু ওয়া লাহুল ফজলু ওয়ালাহুস সানায়ুল হাসানু’’, আল্লাহুম্মা সাব্বিত কল্বী আলা দ্বিনেকা ইয়া মুকাল্লেবল কুলুব বিরাহমতিকা ইয়া আবহামর রাহিমীন।’’


নামাজের পর বর্ণিত জিকির সমূহের বর্ণনা:


(১) আস্তগফিরুল্লাহ ৩ বার। (মুসলিম শরীফ)


(২) আল্লাহুম্মা আন্তাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া জাল জালালে ওয়াল ইকরাম। (মুসলিম শরীফ)


(৩) আল্লাহুম্মা আনী আলা জিকরেকা ওয়া সুক্রিকা ওয়া হুসনে ইবাদতিকা। (আবু দাউদ ও নাসায়ী শরীফ)


(৪) আল্লাহুম্মা আর্জিনী মিনান নারে ৭ বার ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর। (আবু দাউদ শরীফ)


(৫) আয়াতুল কুরসি পঠন ‘‘আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম থেকে হুয়াল আলিয়্যুল আজিম পর্যন্ত।


জুমার দিনের বর্ণনা


بيان يوم الجمعة


ان يوم الجمعة خير أيام الاسبوع – فعن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال خير يوم طلعت فيه الشمس يوم الجمعة, فيه خلق آدم عليه السلام, وفيه ادخل الجنة, فيه اخرج منها ولاتقوم الساعة الا فى يوم الجمعة – مسلم شريف وابوداؤد شريف وغيرهما وصححه الترمذى .


عن أبى لبانة البدرى رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال سيدالايام يوم الجمعة واعظمها عندالله واعظم عندالله من يوم الفطر, ويوم الاضحىٰ – فيه خمس خلال – خلق الله عزوجل فيه آدم عليه السلام واهبط الله تعالى فيه آدم الى الارض, وفيه توفى الله تعالى آدم وفيه ساعة لايسأل العبد فيها شيأ الااتاه الله تعالى اياه مالم يسأل حراما وفيه تقوم الساعة, ما من ملك مقرب ولاسماء ولاارض ولارياح ولاجبال ولابحر الاوهن يشفقن من يوم الجمعة (رواه احمد وابن ماجه قال العراقى اسناده حسن) .


অবশ্যই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোত্তম দিন জুমার দিন। হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সূর্যোদয় হয় এমন দিনগুলোতে জুমার দিন উত্তম। এদিনে হযরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করা হয়েছে, জান্নাতে দাখিল করা হয়েছে এবং জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। এদিনেই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম, আবু দাউদ শরীফ ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ, ইমাম তিরমিজি (رحمة الله) এ হাদীস বিশুদ্ধ বলে মত প্রকাশ করেছেন)।


হযরত আবু লুবানা আলবদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিন সকল দিনের সর্দার। আল্লাহ তায়ালার নিকট জুমার দিনই সবচেয়ে বড় দিন। আল্লাহ তায়ালার নিকট ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন হতে বড় এ দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)কে সৃষ্টি করেছেন, আদম (আ.)কে পৃথিবীতে অবতরণ করেছেন এবং এ দিনে তাঁকে মৃত্যু দান করেছেন। এ দিনে এমন একটি সময় বিদ্যমান, যাতে বান্দা বৈধ যে কোন কিছু প্রার্থনা করলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন। তবে অবৈধ প্রার্থনা নয়। এ দিনে কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। এমন কোন নৈকট্যবান ফেরেশতা, আসমান, জমিন, হাওয়া, পাহাড়, সাগর কিছুই নেই যারা জুমার দিনকে ভয় করে না। (আহমদ, ইবনু মাজা শরীফ, ইরাকী বলেন এর সনদ হাসন)


জুমার দিন মুস্তাহাব বিষয়গুলোর বর্ণনা


بيان مايستحب يوم الجمعة


ويستحب يوم الجمعة امور.


(১) ألاكثار من الصلوٰة على النبى صلى الله عليه وسلم ليلة الجمعة ويومها – فعن اوس بن اوس رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان من افضل ايامكم يوم الجمعة – فيه خلق آدم وفيه قبض وفيه النفخة وفيه الصعقة, فاكثروا علىّ من الصلوة فيه فان صلاتكم معروضة على – قالوا يا رسول الله ! وكيف تعرضُ عليك وقدارمتَ اى بليتَ فقال ان الله عزّوجل حرم على الارض ان تأكل اجساد الانبياء (رواه الخمسة الا الترمذى) .


(২) وتستحب قرأة سورة الكهف يوم الجمعة اوليلها- فعن ابى سعيد الخدرى رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال من قرأسورة الكهف فى يوم الجمعة اضاء له من النور ما بين الجمعتين (رواه النسائى والبيهقى والحاكم) .


(৩) يستحب الغسل والتطيّب ولبس اجمل الثياب – فعن ابى سعيد رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال على كل مسلم الغسل يوم الجمعة , ويلبس من صالح ثيابه وان كان طيب مس منه (رواه احمد والشيخان) .


জুমার দিন কতগুলো বিষয় মুস্তাহাব-


(১) জুমার দিন রাতে ও দিনে অধিকহারে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করা। হযরত আউস বিন আউস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন জুমার দিন। এদিনে হযরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করা হয়েছে ও মৃত্যু দেয়া হয়েছে। এদিনে শিঙ্ঘায় ফুৎকার দেয়া হবে ও কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং এদিনে তোমরা আমার উপর অধিকহারে দুরূদ শরীফ পাঠ কর কেননা তোমাদের দুরূদ শরীফ আমার কাছে পেশ করা হয়। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে আপনার উপর দুরূদ শরীফ পেশ করা হবে? অথচ আপনি মৃত্যুবরণ করে মাটির সাথে মিশে যাবেন। এর উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা নবীদের শরীর গ্রাস করা মাটির জন্যে হারাম করে দিয়েছেন। (তিরমিজি ব্যতীত সিহাসিত্তার পাঁচটি কিতাব এ হাদীস রেওয়ায়ত করেছেন)


(২) জুমার দিন দিনে বা রাতে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করা। হযরত আবু সাঈদ খুদুরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, নিশ্চয় নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করবে তাকে দু’জুমার মধ্যবর্তী সময় একটি নূরের মাধ্যমে আলোকিত করা হবে। (নাসায়ী, বায়হাকী ও হাকেম)


(৩) গোসল করা, আতর দেয়া ও সুন্দর কাপড় পরিধান করা। হযরত আবু সাঈদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জুমার দিন প্রত্যেক মুসলমানের উপর গোসল করা আবশ্যক, সুন্দর কাপড় পরিধান করা, যদি সুগন্ধি থাকে তা ব্যবহার করা। (আহমদ, বুখারী ও মুসলিম শরীফ)


জুমার নামাজ ও উহার ফরজ সম্পর্কে বর্ণনা


بيان صلواة الجمعة وفرضيتها


وهى قرض عين مستقل يكفر جاحدها لذلك .


صلوة الجمعة ركعتان – فقدروى عن عمر بن الخطاب رضى الله عنه انه قال صلاة الجمعة ركعتان تمام غير قصر على لسان نبيكم صلى الله عليه وسلم (رواه احمد والنسائى وابن ماجه باسناد حسن) .


وهى ليست بدلا عن الظهر غير انها اذا فاتت فرض عليه ان يصليها اربعا ظهرا وقد ثبتت فرضيتها بالكتاب والسنة والاجماع – والجمعة فرض آكد من الظهر .


أما الكتاب فقوله تعالىٰ ’’يا ايها الذين امنوا اذا نودى للصلاة من يوم الجمعة فاسعو الى ذكر الله‘‘ الخ .


وأما السنة فمنها حديث عمر رضى الله عنه (المتقدم) .


ولما روى عن ابن مسعود رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال لقوم يتخلفون عن الجمعة هممت ان أمررَ جلايصلى بالناس ثم أحرق على رجال يتخلفون عن الجمعة بيوتهم (رواه احمد ومسلم) .


وعن أبى الجعد الضمرى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من ترك ثلاث جمع تهاونًا طبع الله على قلبه (رواه الخمسة) .


জুমার নামাজ ফরজে আইন, স্বাধীন এ কারণে এর অস্বীকারকারী কাফের হয়। জুমার নামাজ দু’রাকাত যেমন- হযরত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভাষায় জুমার নামাজ দু’রাকাত পরিপূর্ণ কছর নয়। (আহমদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজা হাসান সনদে রেওয়ায়ত করেছেন)


ইহা জোহরের পরিবর্তে নয় হ্যাঁ তবে উহার ফরজ ছুটে গেলে ঐ ব্যক্তি চার রাকাত জোহর আদায় করা ফরজ। জুমার ফরজিয়ত কিতাবুল্লাহ, সুন্নাতে রাসূলুল্লাহ ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। জুমা জোহরের চেয়ে অধিক তাকিদের সাথে ফরজ হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণী- “হে ঈমানদারগণ যখন জুমার দিন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয় তখন নামাজের জন্য চেষ্টা কর।’’ হুজুর সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী- হযরত ওমর বিন খাত্তা (رضي الله عنه) এর উপরে বর্ণিত হাদীস। হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন সে সম্প্রদায় সম্পর্কে যারা জুমার নামাজে উপস্থিত হয় না আমার ইচ্ছা হয় কোন এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে যে, তিনি লোকদেরকে নামাজ পড়াবে আর এদিকে আমি জুমাতে অনুপস্থিত ব্যক্তিদেরকে তাদের ঘর-বাড়িসহ জালিয়ে দিই। (আহমদ ও মুসলিম শরীফ)


হযরত আবুল জা’দ্ আজজমিরি (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি উপর্যপুরি তিন জুমা বর্জন করে আল্লাহ তায়ালা তার আত্মাকে ধ্বংস করে দেয় অর্থাৎ ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। (সিহাসিত্তার পাঁচটিতে ইহা বর্ণিত) 


জুমা ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলীর বর্ণনা


بيان شروط وجوب الجمعة


شروط وجوب الجمعة سبعة : تجب صلاة الجمعة على المسلم , الحر, البالغ, العاقل, القادر على السعى اليها, الخالى من الاعذار المبيحة للتخلف عنها ومن الاعذار المبيحة لعدم حضور الجماعة .


(১) المرأة (২) والصبى فلاتجب عليهم الجمعة .


(৩) والمريض الذى يشق عليه الذهاب الى الجمعة اويخاف لايادة المرض اوتاخر الشفاء ويلحق به من يقوم بتمريضه – اذا كان لايمكن الاستغناء عنه وذلك لماروى عن طارق بن شهاب رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال, الجمعة حق واجب على كل مسلم فى جماعة الااربعة- عبد مملوك او امرأة اوصبى او مريض (رواه ابوداؤد) وقال النووى صحيح على شرط المسلم .


(৪) المسافر وان كان نازلا وقت اقامتها- فعن عبدالله بن عمر رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ليس على مسافر جمعة (رواه الطبرانى) .


وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يسافر فلايصلى الجمعة فى سفره – وكان فى حجة الوداع بعرفة يوم الجمعة فصلى الظهر والعصر جمع تقديم ولم يصلى جمعة – كذلك فعل الخلفاء وغيرهم من الصحابة رضى الله عنهم. 


(৫) المدين المعسر الذى يخاف الحبس .


(৬) والمختفى من حاكم طالم- فعن ابن عباس رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم قال , من سمع النداء فلم يجبه فلاصلاة له الامن عذر, قالوا : يا رسول الله وما العذر؟ قال خوف اومرض (رواه ابوداؤد باسناد صحيح ) .


وكل هؤلاء لاجمعة عليهم وانمايجب عليهم ان يصلوا الظهر – ومن صلى منهم الجمعة, صحت منه وسقطت عنه فريضة الظهر .


(فائده) وكانت النساء تحضر الجمعة فى المسجد على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم وتصليها معه – ثم منعهن فى عهد عمر بن الخطاب رضى الله عنه بافسادهن .


জুমা ওয়াজিব হওয়ার জন্যে শর্ত সাতটি। জুমা ওয়াজিব মুসলমান, স্বাধীন, প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞানী, মুকিম, জুমা পর্যন্ত যাওয়ার সক্ষম ব্যক্তি, এমন ওজর মুক্ত ব্যক্তি যাহা জুমা বর্জন করাকে বৈধ করে দেয়। এমন অপারগতাও থাকে না যা জমাতে উপস্থিত না হওয়াকে বৈধ করে দেয়। যেমন- (১) মহিলা (২) শিশু সুতরাং তাদের উপর জুমা ওয়াজিব নয়। 


(৩) এমন অসুস্থ ব্যক্তি যার জুমার নামাজের জন্য যাওয়া কষ্টকর হয় বা অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা হয় বা আরোগ্যতা লাভে বিলম্ব হওয়ার আশংকা থাকে বা চিকিৎসক তার নিকট চিকিৎসা করার জন্যে আসবে যা ছাড়া তার বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যা হযরত তারেক বিন শিহাব কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের মর্ম হতে বুঝা যায়, নবী করিম (ﷺ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, জুমা এমন সত্য বিষয় যা প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামাতের সাথে ওয়াজিব। তবে চার জনের জন্যে নয়- অধীন গোলাম, মহিলা, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (আবু দাউদ শরীফ) ইমাম নববী (رحمة الله) বলেন, মুসলিমের শর্ত মোতাবেক শুদ্ধ। 


(৪) মুসাফির যদিও ইকামতের সময় অবতরণ করেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন মুসাফিরের জন্য জুমা নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সফর করতেন সফরে জুমা পড়তেন না। হজ্জতুল বিদায় জুমার দিন আরাফাত ময়দানে ক্রমান্বয়ে জোহর ও আসরের নামাজ একত্রিত করে আদায় করেছেন জুমা আদায় করেননি। অনুরূপ খোলাফায়ে কেরামগণ ও অন্যান্য সাহাবাগণও করেছেন। 


(৫) সংকটাপন্ন ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি জুমায় আগমন করলে বন্দী হওয়ার আশংকা থাকলে।


(৬) জালেম হাকিম হতে আত্মগোপনকারী ব্যক্তি। হযরত ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত নিশ্চয় নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আজান শুনার পর জওয়াব দেয় না (মসজিদে যায় না) তার কোন নামাজ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ওজর সম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতীত। সাহাবারা আরজ করলেন হে আল্লাহর রাসূল! ওজর কি? উত্তরে বললেন, ভয় ও রোগ। (আবু দাউদ বিশুদ্ধ সনদে রেওয়ায়ত করেছেন) উলে­খিত সকল লোকদের জন্যে জুমা ওয়াজিব নয় জোহরের নামাজ ওয়াজিব। তথাপিও জুমা আদায় করলে পরিশুদ্ধ হবে এবং জোহরের নামাজের ফরজিয়ত রহিত হবে।


উপকারিতা: হুজুর (ﷺ) এর সময় মহিলারা জুমা আদায় করার জন্যে মসজিদে উপস্থিত হতেন এবং তাঁর সাথে জুমা আদায় করতেন। পরবর্তীতে হযরত ওমর (رضي الله عنه) এর খেলাফতকালে তাদের ফসাদের কারণে আগমন করতে নিষেধ করলেন।


জুমা পরিশুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলীর বর্ণনা


بيان شروط صحة صلاة الجمعة


شروط لصحة صلاة الجمعة ستة اشياء – نذكرها .


(১) إيقاعها فى وقت الظهر وهو من زوال الشمس حتى يصير ظل كل شئ مثله بعدظل الإستواء .


وذلك لماروى عن انس رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يصلى الجمعة اذا زالت الشمس (رواه احمد والبخارى وابوداؤد والبيهقى) .


وعن سلمة بن الاكوع رضى الله عنه قال كنا نصلى مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الجمعة اذا زالت الشمس ثم نرجع نتتبع الفئ أى الظل (رواه أحمد و مسلم ) .


(২) الجماعة فيها فلاتصح صلاتها فرادى – وذلك لماروى عن طارق بن شهاب إن النبى صلى الله عليه وسلم قال الجمعة حق واجب على كل مسلم فى جماعة (رواه أبوداؤد) .


(৩) وتصح صلاة الجمعة بثلاثة غير الامام حيث ان الثلاثة جماعة ولايشترط فيها غير الجماعة .


(৪) إتحاد الجمعة بحيث تقام فى مكان واحد الأ اذا تعددت الجمعة لعذر – كضيق المكان او لخشية فتنة تحدث بين فئتين بينهما نزاع, لايشترط إتحاد الجمعة لصحة صلاتها وان كان هو الأفضل .


(৫) أن يكون البلد مصرا أوفناءه – وأن يكون امام الجمعة ولىُ الامر اونائبه وان اذن ولى الامر باقامة الجمعة عند بناء المسجد جازتْ صلاة الجمعة فيه ولايلزم اذن لكل جمعة – واما صلاة الجمعة فى المصر والقرية على السواء صحيح – فعن ابن عباس رضى الله عنهما ان اول جمعة فى الاسلام بعد جمعة جمعة فى مسجد رسول الله صلى الله عليه وسلم بالمدينة لجمعة جمعت بجوائى (اى قرية من قرى البحرين) رواه البخارى و ابوداؤد).


وعن ابن عمر رضى الله عنهما انه كان يرى اهل المياه بين مكة والمدينة يجمعون فلا يعتب عليهم (رواه عبد الرزاق بسند صحيح) .


(৬) الخطبتان – وللخطبة شروط – المذكورة فيما يلى فلاتصح الخطبة إذا اختل احد شروطها .


(১) تقدمها على الصلوٰة – وهذا هو الماثور عن الرسول صلى الله عليه وسلم وخلفائه ومجمع عليه لاخلاف بين المسلمين فيه .


(২) النيّة , فلو خطب بغير النية لم يعتد بها .


(৩) ان تكون باللغة العربية , فان عجز عن العربية يكفى ان تكون الاية بالعربية , قال بعضهم : تجوز الخطبة بغير العربية ولو انه لقادر عليها سواء كان القوم عربا او غيرهم , كما ذكره عبد القادر الرحباوى .


(৪) ان تكون فى الوقت, فلو خطب قبله وصلى فيه لم تصح وقد علمت تحديد الوقت كما بيناه .


(৫) الجهر فى الخطبتين , بحث يسمع العدد الذى تجب عليه الجمعة , فعن جابر بن عبد الله رضى الله عنهما قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا خطب احمرت عيناه وعلاصوته واشتد غضبه حتى كانه منذر جيش (رواه مسلم والنسائى) .


(৬) الموالاة بين الخطبتين, ويشترط الموالاة بين الخطبتين والصلاة بحيث لايفصل بينهما بفاصل طويل .


(৭) القيام فيهما , فعن ابن عمر رضى الله عنهما قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخطب خطبتين كان يجلس اذا صعد على المنبر حتى يفرغ المؤذن ثم يقوم فيخطب ثم يجلس فلايتكلم ثم يقوم فيخطب – القيام فى الخطبة سنة لافرض .


(৮) الجلوس بين الخطبتين بقدر الطمأنية سنة .


(৯) ان يكون الخطيب طاهرا من الحدث والنجاسة ومستور العورة فى الخطبتين – فلو احدث اثناء الخطبة قطع الخطبة حتى يسبغ الوضؤ وذلك سنة لماروى عن عمر بن الخطاب رضى الله عنه انه كان يخطب على المنبر اذا أحس من نفسه بريح خرجت منه فقال ايها الناس انى قد ميلتُ يعنى ترددت بين ان اخافكم فى الله وبين ان أخاف الله فيكم فكانىّ ان أخاف الله فيكم احب الىّ الا انى قد احدثت وها آنذا أنزل لإعيد الوضوء (عيون الاخبار) .


(১০) ان يكون الخطيب ممن تجب عليه الجمعة بنفسه (سنة) ولاتجزى عندالشافعية والحنابلة خطبة عبد مملوك او مسافر ولونوى مدة ينقطع بها السفر اذا كان العدد لايتم الابالخطيب واما اذا كان العدد تامامن غير الخطيب فلا يشترط ذلك .


الخطبة لهاركن واحد, وهو مطلق الذكر فيتحقق ولو بتحميدة أو تسبيحة وتهليلة الاانه يكره الاقتصار عليها وذلك لقوله تعالى ’’فاسعو إلى ذكر الله وذروالبيع‘‘ .


وذكر الله المقصود فى الاية هوالخطبة وماسوى ذلك فهو سنة – وقال المالكية ركن الخطبة ان يكون مشتملة على تبشير وتحذير واماسوى ذلك فانه سنة وعند الشافعية والحنابلة للخطبة اركان .


الصلوٰة على النبى صلى الله عليه وسلم فى كل من الخطبتين وذلك لقوله تعالى يا ايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما, ولموا ظبة الرسول صلى الله عليه وسلم على الصلوة على نفسه فى خطبة – الوصية بالتقوى فى كل من الخطبتين ولو بغير لفظها فيكفى ’’أطيعوا الله‘‘ حيث ان هذا هوالمقصود من الخطبة .


قرآة آية من القرآن فى احداهما وكونها فى الاولىٰ – 


الدعاء للمؤمنين والمؤمنات خصوصا فى الخطبة الثانية – عن سمرة بن جندب رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يستغفر للمؤمنين والمؤمنات كل جمعة (رواه البزار والطبرانى فى الكبير) وكل ذلك عند الحنفية سنن .


জুমা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত ছয়টি। নিম্নে উহার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে- 


১) জোহরের সময় উহা আদায় করা। উহা সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়া থেকে প্রত্যেক বস্তুর মূল ছায়া ব্যতীত উহার দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত। যা হযরত আনাস (رضي الله عنه) এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। নিশ্চয় নবী করিম (ﷺ) সূর্য ঢলে পড়ার পর জুমা আদায় করতেন। (আহমদ, বুখারী, আবু দাউদ ও বাইহাকী)


হযরত সালমা বিন আকওয়া (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, সূর্য ঢলে পড়ার পর আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে জুমার নামাজ আদায় করতাম। অত:পর নামাজ শেষে বাড়ি ফিরার সময় ছায়া আমাদের পিছনে থাকত। (আহমদ ও মুসলিম শরীফ)


২) জুমার জন্য জামাত শর্ত: সুতরাং উহা একাকীত্বভাবে শুদ্ধ হবে না। ইহা হযরত তারেক বিন শিহাব হতে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন জুমা সত্য ওয়াজিব ইহা প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাতের সাথে ওয়াজিব (ফরজ)। (আবু দাউদ শরীফ)


৩) ইমাম ব্যতীত তিনজন মুকতাদী হওয়া শর্ত, কেননা তিনজনকে জামাত বুঝায়; জামাত বিহীন জুমা শর্ত নয়।


৪) জুমার জামাত এক জায়গাতে হওয়া; তবে কোন কারণ বশত: যেমন- জায়গা সংকুলান না হওয়া বা এমন দু’দলের লোকজন যাদের মাঝে সংঘাত বিদ্যমান আছে; উভয় দল একই স্থানে একত্রিত হলে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ার বা সংঘাত সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে; এমতাবস্থায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য এক জায়গায় হওয়া শর্ত নয়, যদিও তা উত্তম।


৫) শহর কিংবা শহর সংলগ্ন স্থান হওয়া এবং জুমার ইমাম আমির কিংবা আমিরের প্রতিনিধি বা তার প্রতিনিধি হওয়া। আমির বা তার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে যদি মসজিদ নির্মাণ করার সময় জুমা পড়ার অনুমতি প্রদান করা হয় তাহলে সে মসজিদে জুমা জায়েজ হবে। প্রত্যেক জুমার জন্য আলাদাভাবে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। জুমার নামাজ শহরে ও গ্রামে কোন ভেদাভেদ ছাড়া জায়েজ। হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, ইসলামে প্রথম জুমা যা মদিনা শরীফে নবী করিম (ﷺ) এর মসজিদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বাহরাইনের জাওয়ী নামক গ্রামে কায়েম হয়। (বুখারী ও আবু দাউদ শরীফ)


হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী এলাকায় পানির অধিকারীরা জুমা জায়েজ করতে দেখা গিয়েছে; এতে তাদেরকে বাধা দেয়া হয়নি মন্দও বলা হয়নি। (আবদুর রাজ্জাক পরিশুদ্ধ সনদে রেওয়ায়ত করেছেন) 


৬) দু’খুতবা- খুতবার জন্যে নিম্নে বর্ণিত শর্তাবলীর যে কোন শর্তবিহীন খুতবা শুদ্ধ হবে না।


শর্তাবলী:


১) খুতবা নামাজের পূর্বে দেয়া; এরূপ নবী করিম (ﷺ) খোলাফায়ে রাশেদীন থেকে বর্ণিত এবং এতে সকল মুসলমানের ঐক্যমত কারো দ্বিমত নেই।


২) নিয়ত: সুতরাং নিয়তবিহীন খুতবা গ্রহণযোগ্য নয়।


৩) খুতবা আরবী ভাষায় দিতে হবে। যদি কেউ আরবী ভাষায় খুতবা দিতে অপারগ হয় কোরআন শরীফের আয়াত তেলাওয়াত করলে আদায় হয়ে যাবে। 


কতিপয় ইমামদের মতে অনারবীতেও বৈধ হবে যদিও আরবী বলতে সক্ষম হয়; মুসলি­গণ আরবী হউক কিংবা অনারবী। আবদুল কাদের আর রহবারী এরূপ বর্ণনা করেছেন।


৪) জুমার সময় হতে হবে; তাই কেউ সময়ের পূর্বে খুতবা পাঠ করলে এবং নামাজ সময় হওয়ার পর আদায় করলে বৈধ হবে না। উপরের বর্ণনা থেকে সময়ের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানা গিয়েছে।


৫) উভয় খুতবা উচ্চ স্বরে পাঠ করা; যাতে উপস্থিত সকল মুসলি­ শুনতে পায় যাদের উপর জুমা ওয়াজিব হয়েছে।


হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খুতবা দানকালে তাঁর চক্ষুদ্বয় লাল হয়ে যেত, আওয়াজ বড় হয়ে যেত এবং রাগ বৃদ্ধি পেত, এমন মনে হত যে, তিনি কোন সৈন্য দলকে ভীতি প্রদর্শন করাচ্ছেন। (মুসলিম ও নাসায়ী শরীফ)


৬) উভয় খুতবা বিরতিহীনভাবে পড়া; যাতে খুতবা ও নামাজের মাঝখানে দীর্ঘ ব্যবধান না হয়।


৭) উভয় খুতবাতে দন্ডায়মান হওয়া; হযরত ইবনু ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দু’টি খুতবা পাঠ করতেন; যখন মিম্বরে আরোহণ করতেন মুয়াজ্জিন আজান শেষ করা পর্যন্ত বসতেন অত:পর দাঁড়াতেন ও খুতবা দিতেন তারপর বসতেন কোন কিছু বলতেন না এরপর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় খুতবা দিতেন। খুতবার সময় দাঁড়ানো সুন্নাত, ফরজ নয়। 


৮) উভয় খুতবার মাঝখানে প্রশান্তি পরিমাণ বসা সুন্নাত।


৯) খতিব উভয় খুতবায় হাদস ও নাজাসত থেকে পবিত্র হওয়া এবং সতর ঢাকা; খুতবা পাঠ করা অবস্থায় হাদস যুক্ত হলে খুতবা বন্ধ করে অজু করবে, ইহা সুন্নাত। কেননা হযরত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, তিনি মিম্বরে খুতবা পাঠ করতেন যখন তাঁর অনুভব হয় যে স্বীয় শরীর হতে হাওয়া বের হয়েছে তখন তিনি উপস্তিত জনতার উদ্দেশ্যে বলতেন, আমি ইতস্তত করছি যে, তোমাদেরকে আল্লাহ তায়ালার ভয় প্রদর্শন করাব এবং আমিও আল্লাহকে তোমাদের সম্মুখে ভয় করব। আমার নিকট অতি প্রিয় বিষয় হল, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহকে ভয় করব কিন্তু আমি হাদস যুক্ত হয়েছি তাই এখন পুনরায় অজু করার জন্য ভয় প্রদর্শনকারী অবতীর্ণ হয়েছে। (উয়ুনুল আখবার)


১০) খতিব এমন ব্যক্তি হওয়া যার উপর জুমা ওয়াজিব হয়েছে। শাফেয়ী ও হাম্বলী কোন মাজহাবে অন্যের অধীনস্থ গোলাম বা মুসাফিরের খুতবা যথেষ্ট নয়।


খুতবার রুকন একটি, তা হল সাধারণত জিকির; ইহা বাস্তবায়ন হবে হামদ দ্বারা হউক কিংবা তাসবীহ, তাহলীল দ্বারা হউক তবে ইহার উপর সংক্ষিপ্তাকারে সম্পন্ন করা মাকরূহ। ইহা এ জন্যে- আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা আল্লাহ তায়ালার জিকিরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা কর এবং ক্রয়-বিক্রয বর্জন কর। আয়াতের উদ্দেশ্যে হল আল্লাহ তায়ালার জিকির আর তা হল খুতবা। তাছাড়া অন্যান্যগুলো সুন্নাত। মালেকীদের মতে খুতবার রুকন হল- সুসংবাদ ও ভীতি প্রদর্শন সম্বলিত খুতবা প্রদান করা; এ ছাড়া বাকী অংশ সুন্নাত। শাফেয়ী ও হানাবিলাদের মতে খুতবার কয়েকটি রুকন আছে। যেমন- দুনো খুতবার মধ্যে নবী (ﷺ) এর উপর দরূদ পঠন। ইহা এ জন্যে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদার লোক তোমরা নবী (ﷺ) এর প্রতি অতি সম্মানের সাথে দরূদ ও সালাম প্রেরণ কর। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও খুতবা প্রদানকালে নিজের উপর দরূদ পাঠ করাকে কখনো বর্জন করেননি।


সরাসরি তাকওয়া শব্দ উলে­খ না করে হলেও উভয় খুতবায় খোদাভীতির উপদেশ দেয়া। যেমন এভাবে বলা, ‘‘আল্লাহর আনুগত্য কর’’। কেননা ইহাই খুতবার মৌলিক উদ্দেশ্য। যে কোন খুতবায় কোরআন শরীফের আয়াত পাঠ করা; উহা প্রথম খুতবায় হওয়া এবং বিশেষত দ্বিতীয় খুতবায় মুসলমান নর-নারীর জন্যে দোয়া করা। সামুরা বিন জুনদাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) প্রত্যেক জুমায় মুমিন নর-নারীদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। (বাজার ও তাবরানি কবির নামক কিতাবে) এ সবগুলো হানাফীদের মতে সুন্নাত।


খুতবার সুন্নাত সমূহের বর্ণনা


بيان سنن الخطبة


(১) ان يجلس قبل الخطبة على المنبرونحوه ويقبل بوجهه على الناس- فعن عبدالله بن مسعود رضى الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استوى على المنبر استقبلناه بوجوهنا (رواه الترمذى) .


(২) ان تكون الخطبة على منبر او موضع ليسمع الناس, فقد كان منبر رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاث درجات من خشب يخطب عليه .


(৩) ان يشغل يده اليسرى بسيف او عصا, لماروى عن الحكم بن حزن رضى الله عنه قال شهدت الجمعة مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فقام متوكئا على عصا اوقوس (رواه ابوداؤد) .


وقال براء بن عازب رضى الله تعالى عنه انه كان اذاخطب يعتمد على عنزة له اى عود برأسه حديدة –


(৪) الاذان بين يدى الخطيب : عن سائب بن يزيد رضى الله عنه قال النداء يوم الجمعة اوله اذا جلس الامام على المنبر على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم .


(৫) ان ياتى بالشهادتين فيها – لماروى عن ابى هريرة رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال الخطبة التى ليس فيها شهادة كاليد الجذ ماء (رواه احمد) .


وعن ابن مسعود رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان اذا تشهد قال الحمد لله نستعينه ونستغفره ونعوذبالله من شرور أنفسنا من يهدالله فلا مضل له ومن يضلله فلا هادى له واشهد أن لآ اله الا الله وأن محمدا عبده ورسوله (رواه أبودؤد) .


ويكره ان يسلم الخطيب اذا صعد على المنبر .


১) মিম্বর বা অনুরূপ কোন কিছুর উপর খুতবা প্রদানের পূর্বে উপস্থিত লোকজনের সম্মুখীন হয়ে বসা। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসয়ুদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন মিম্বরে উপবিষ্ট হতেন আমরা তাঁর সম্মুখীন হয়ে বসতাম। (তিরমিজি শরীফ)


২) খুতবা মিম্বরের উপর বা এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে দেয়া যাতে লোকজন শুনতে পায়। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মিম্বর তিন স্তর বিশিষ্ট ছিল গাছ দ্বারা নির্মিত যার উপর তিনি খুতবা প্রদান করতেন।


৩) খুতবা প্রদানকালে বাম হাতে লাঠি কিংবা তলোয়ার থাকা। হযরত হাকম বিন হুজন (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে জুমার নামাজে উপস্থিত হয়েছিলাম; তিনি লাঠির উপর ঠেক দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অথবা ধনুকের উপর। (আবু দাউদ শরীফ)


হযরত বাররা বিন আজেব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন; অবশ্যই হযরত (ﷺ) যখন খুতবা দিতেন তাঁর আনাজা লাঠি যার মাথায় লোহা লাগানো ছিল। (আবু দাউদ শরীফ)


৪) খতিবের সামনে আজান দেয়া; যেমন হযরত সায়িব বিন ইয়াজিদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জুমার দিনের আজান, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সময়ে ইমাম যখন মিম্বরে বসতেন তখন প্রথম আজান দেয়া হত।


৫) খুতবায় শাহদতাইন পাঠ করা; কেননা হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেন, যে খুতবায় শাহাদত থাকবে না উহা আঙ্গুলবিহীন হাত তুল্য। (ইমাম আহমদ রেওয়ায়ত করেন)


হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত অবশ্যই নবী (ﷺ) যখন তাশাহ্হুদ পড়তেন তিনি বলতেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্যে আমরা তাঁরই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁরই থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আমরা তাঁর নিকট আমাদের আত্মার অপকর্ম থেকে আশ্রয় চাই। যাকে আল্লাহ তায়ালা হেদায়ত করেন তাকে গোমরাহ করার ক্ষমতা কারো নেই। তিনি যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়ত করার ক্ষমতা কারো নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই নিশ্চয় হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) তার বান্দা ও রাসূল। (আবু দাউদ শরীফ)

খতিব মিম্বরে উঠার পর সালাম দেয়া মাকরূহ।


খুতবার মাকরূহ সমূহের বর্ণনা


بيان مكروهات الخطبة


أما مكروهات الخطبة فهى ترك سنة من السنن واستدبار القوم حال الخطبة ورفعُ اليدين حال الدعاء .


খুতবার মাকরূহগুলো যে কোন সুন্নাত পদ্ধতি বর্জন করা। খুতবা প্রদানকালে মুসলি­দের পিছনে রাখা এবং দোয়া করার সময় হাত উত্তোলন করা।


জুমার নামাজে মাসবুকের হুকুম


بيان حكم المسبوق فى صلاة الجمعة


من فاتته الركعة الاولىٰ مع الامام وادرك الثانية مع الامام اتمهاجمعة- وان لم يدرك الركعة الثانية اتمهاظهرا, من ادرك الامام فى اى جزء من صلاته فقدادرك الجمعة ولو فى تشهد سجود السهو على الصحيح .


যে ব্যক্তি জুমার নামাজে ইমামকে প্রথম রাকাতে না পেয়ে দ্বিতীয় রাকাতে পায় সে জুমা পরিপূর্ণ করবে। দ্বিতীয় রাকাতে না পেলে জোহর আদায় করবে। এ ব্যাপারে বিশুদ্ধ রায়- যে ব্যক্তি ইমামকে তার নামাজের যে কোন অংশে পেল সে জুমায় পেল; যদিও তিনি সিজদা সাহু তাশাহ্হুদে প্রাপ্ত হউক না কেন।


জুমার সুন্নাতে রাতেবার বর্ণনা


بيان سنة راتبة الجمعة


يسن صلاة اربع ركعات قبل الجمعة وأربع بعدها بان الثمان مؤكدة .


وقال الشافعى رحمة الله عليه المؤكدة منها ركعتان قبلها وركعتان بعدها


وقال الحنابلة, المؤكدة ركعتان قبلها فقط , وقال المالكية, هى مندوبة .


واذا دخل المصلى والخطيب على المنبر فصل ركعتين خفيفتين .


জুমার নামাজের পূর্বে চার রাকাত ও পরে চার রাকাত এ আট রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) বলেন, জুমার পূর্বাপর দু’রাকাত করে চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। হাম্বলীগণ বলেন, শুধু জুমার পূর্বে দু’রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। মালেকীরা বলেন, এগুলো মনদুব। খতিব মিম্বরে থাকা অবস্থায় মুসলি­ মসজিদে প্রবেশ করলে হালকা করে দু’রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।


সংযোজন


ضميمة


قهل المنابر العالية بدعة منكرة ؟


إعلم أن النبى صلى الله عليه وسلم قال : ايها الناس انما صنعت هذا لتاتمو او لتعلموٰ صلاتى (رواه البخارى) .


لقدكان النبى صلى الله عليه وسلم يخطب الناس بجوار جذع النخل يستنداليه, وكان ثلاث درجات, الى ان زادفيه مروان ست درجات وجدد اكثر من مرة بعد احتراق المسجد .


وكان لامرآء مصر فضل كبير فى تجديد المنابر واستمر الناس يخطبون على هذه المنابر بدرجاتها التسع دون ان ينكر عليهم احد, وحاول الخليفة العباس سنة ১৬০ هجرى ان يعيد المنبر كما كان على عهد الرسول الله صلى الله عليه وسلم , فنصحه الامام مالك رحمه الله بعدم التغيرفيه , ولوكانت المنابر الجديدة بدعة وضلالة ماكان للامام رحمة الله عليه ان يقرّها وينهى الخليفة عن تغييرها لقد اتخذ الرسول صلى الله عليه وسلم المنبر من اجل المصلحة, ولم يكتف بالخطبة عليه بل استعمله للصلوة ليكون بارزاوظاهرا لمن يصلون خلفه .


كما يقول سهل بن سعد الساعدى رضى الله عنه رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى عليها وكبر وهو عليها ثم ركع وهو عليها ثم نزل القهقرى فسجد فى اصل المنبر ثم عاد (رواه البخارى) .


وقال المؤرخون : انّ الزيادة فى درجاته كانت بسبب كثرة الناس وحاجتهم الى سماع الخطبة حيث كان يُستعان على ذلك بارتفاع مكان الخطيب .


ومن هنا نعلم ان كل مايؤدى الى خير عام, ولايصادم نصّا صريحا ولاحكما مقرار لاينبغى ان نبادر بالانكار عليه ووصفه ببدعة الضلالة المؤدية الى النار وهل كان المسلمون طوال هذه القرون على جهل بدينهم , وفيهم ائمة كبار حين اقرّوا ارتفاع المَنَا برفوق ماكان عليه المنبر النبوى صلى الله عليه وسلم ؟


ان درجات المنبر لم يرد فى تجديدها قول من النبى صلى الله عليه وسلم حتى نلزم به ونعصى عند مخالفته .


فالا مريدور على المصلحة واذا وجدت المصلحة فثمّ شرع الله تعالي كما قال المحققون .


ان درجات المنابر فى ايامنا الحاضرة تساوى قليلها بكثيرها لوجود مكبرات الصوت التى وفرت على الخطيب كثيرا من الجهد , ومكنت من الاستماع الى الخطبة عدد كبير من المسلمين – فهل نحكم على هذه المكبرات بانها بدعة وضلالة فى النار .


وهى تؤدى الفرض الذى من اجله امر رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يقام له المنبر .


ان الدين يحتاج الى من يفهمه على وجهه الصحيح وليست العبرة بالمنابر ودرجاتها الصامتة .


انما العبرة بمايلقى من فوقها من علم يجيب ان يرقى عشرات الدرجات فى الصدق والاجادة والاتقان .


بينه فضيلة الشيخ عطبة صقر فى فتاويه .


সুউচ্চ মিম্বর নির্মাণ করা কি বিদায়াতে মুনকিরা? জেনে রাখ! অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) বলেন, হে লোকেরা আমি ইহা তৈরী করেছি যাতে তোমরা পরপূর্ণতার সাতে নামাজ আদায় করতে পার এবং নামাজ শিক্ষা করতে পার। (বুখারী শরীফ)


অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) খেজুর গাছের এক খুঁটির পার্শ্বে দাঁড়িয়ে উহার সাথে ঠেক লাগিয়ে খুতবা দিতেন, যখন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে খুতবা দেয়া কষ্টকর হয় তখন মিম্বর তৈরী করার নির্দেশ প্রদান করেন; তাই তিন তাক বিশিষ্ট মিম্বর তৈরী করা হয়। (যার উপর দাঁড়িয়ে তিনি খুতবা দিতেন) মারওয়ানের যুগ পর্যন্ত উহা তিন তলা বিশিষ্ট ছিল। মারওয়ান উহাকে নতুন করে ছয় তাক বিশিষ্ট করেন, মসজিদ পুড়ে যাওয়ার পর কয়েকবার নতুন করে তৈরী করা হয়। মিশরীয় শাসকদের জন্যে নতুন করে মিম্বর তৈরী করা একটা মহৎ ফজিলতের কাজ ছিল। এ নতুন নির্মিত নয় তাক বিশিষ্ট মিম্বরে খলিফা আব্বাসের যুগ পর্যন্ত লোকেরা খুতবা দিয়ে আসছিলেন; কেউ কোন ধরণের খারাপ মন্তব্য করেননি। খলিফা আব্বাস একশ ষাট হিজরীতে উহা পরিবর্তন করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর যুগের নিয়মে তিন তাক করে তৈরী করেন। অত:পর ইমাম মালেক (رضي الله عنه) পুনরায় পরিবর্তন না করার উপদেশ দেন। যদি নতুন করে মিম্বর তৈরী করা বিদায়াতে দালালা হত ইমাম মালেক (رحمة الله) উহাকে ঠিক রাখার পরামর্শ দিতেন না বরং শাসকদেরকে তা পরিবর্তন করতে নিষেধ করতেন। অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বর ধর্মীয় সুবিধার কৌশল হিসাবে নির্মাণ করেছিলেন, উহাকে শুধু খুতবার জন্যে সীমিত করেননি বরং উহাকে নামাজের জন্যে ব্যবহার করেছেন যাতে পিছনে নামাজীর জন্য সুস্পষ্টভাবে দেখতে ও শুনতে সুবিধা হয়। যেমন হযরত সাহাল বিন সায়াদ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে উহার উপর নামাজ আদায় কাতে দেখেছি। তিনি উহার উপর তাকবীর বলেছেন অত:পর তিনি উহার উপর রুকু করেছেন। পরে পিছনের দিকে সরে যায় এবং মিম্বরের উপর সিজদা করেন অত:পর ফিরে আসেন। (বুখারী শরীফ) পরবর্তী ফকিহগণ বলেন সিঁড়ির ধাপ বৃদ্ধিকরণ শ্র“তার আধিক্যতা ও তাদের খুতবা শ্রবণের প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছিল যাতে মঞ্চ উঁচু হওয়াতে শ্রবণে সাহায্য হয়। ইহা হতে আমরা এ বিধান জানতে পারি যে, প্রত্যেক এমন বিয় যা সর্ব সাধারণের কল্যাণ বয়ে আনে এবং ইহা কোন সুস্পষ্ট নাস ও কোন নির্ধারিত বিধানের পরিপন্থী হয় না সে বিষয়কে অস্বীকার করাতে এবং উহাকে বেদায়াতে দালালাহ বা পথভ্রষ্টতা যা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়, আখ্যা দেয়ার জন্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া উচিত নয়; প্রাচীন যুগ ধরে মুসলমানগণ তাদের বিধান সম্পর্কে কি অজ্ঞ ছিল? অথচ তাদের মধ্যে বড় বড় ইমামগণও ছিলেন যখন নবী করিম (ﷺ) এর সময়কালে যে মিম্বর ছিল তার চেয়ে উঁচু মিম্বর তৈয়ার হচ্ছিল। অবশ্যই মিম্বরের ধাপ নতুন করণ সম্পর্কে কোন কাওলী হাদিস নবী করিম (ﷺ) হতে ওয়ারিদ হয়নি; যা আমাদের জন্য অবশ্যই করণীয় এবং উহার বিপরীত করাতে পাপী বলে গণ্য হব। াতএব হুকুম জন কল্যাণের দিকেই ধাবিত হবে; যেখানেই জন কল্যাণ ও সংশোধনী পাওয়া যায় সেখানেই আল্লাহর বিধান; এভাবে মুহাক্কেকীন ওলামায়ে কেরামগণ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমান যুগে সিঁড়ির ধাপ কম-বেশীর কোন তারতম্য নেই; আওয়াজ বৃদ্ধি করণের যন্ত্র মাইক ব্যবহার হওয়ার কারণে যা অধিকাংশ খতিবকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং বহু সংখ্যক লোক এক সাথে খুতবা শুনার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই বলে আমরা কি এসব আওয়াজ বৃদ্ধি করার যন্ত্র মাইককে বিদয়াতে দালালা যা জাহান্নামে নিয়ে যাবে বলে ফতওয়া দিব? অথচ উহা এমন একটি ফরজ বিষয় আদায় করতে সহায়তা করছে যার উদ্দেশ্যে নবী করিম (ﷺ) মিম্বর তৈরী করার হুকুম দিয়েছিলেন। নিঃসন্দেহে ধর্ম এমন ব্যক্তিবর্গের মুখাপেক্ষী যারা সঠিক অর্থে দ্বীন বুঝে; মূলত: মিম্বর কিংবা উহার ধাপ সমূহের উচ্চতার কোন জাতিগত বৈশিষ্ট্য নেই। মূলত: উহার বিশেষ বৈশিষ্ট্য উহার উপর থেকে যে আবশ্যিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের বৃষ্টি বর্ষণ করা হয় এতে, তাই উহা সত্যিকার অর্থে খুবই মজবুত ও উত্তম; দশ ধাপ বিশিষ্ট হলেও তা সমীচীন, অতিরিক্ত নয়। এসব কথা সম্মানিত শেখ হযরত উতবা সকর তার ফতোয়াতে উলে­খ করেছেন।


জুমার সুনানে রাতেবার দলীল


دلائل سنن الراتبة للجمعة


فان قيل قال ابن تيمية المتوفى ৭৪৯- ২৮ ذوالقعده لاثبوت السنن قبل الجمعة فانه كان يوذن بعد الزوال فى الحال ثم ياتى النبى صلى الله عليه وسلم بمجرد سماع الاذان وياخذ فى الخطبة بمجرد دخوله المسجد ثم يشرع فى صلوة الجمعة .


فاوجيب : 


ان سفيان الثودى وابن المبادك وامام الترمذى ذهبوا الى قول ابن مسعود رضى الله تعالى عنه فروى عن عبد الله بن مسعود انه كان يصلى قبل الجمعة اربعا وبعد اربعا وفى الاتحاف فهذا المرفوع يدل على اربعة قبل الجمعة واما بعد الجمعة فلابى حنيفة رواية مسلم وراية الباب مرفوعة وعمل ابن مسعود جامع الترمذى وعن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من اغثل ثم اتى الجمعة فصلى ما قدرله ثم انصت حتى يفرع من حطبته ثم يصلى معه عفوله ما بينه وبين الجمعة الاخرى وفضل ثلاثة ايام رواه المسلم كما رواه الترمذى وابوداؤد.


وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من كان منكم مصليا بعد الجمعة فليصلى اربعا رواه الجماعة الا البخارى .


وعن ابى عبد الرحمن السلمى رضى الله عنه قال كان عبد الله رضى الله تعالى عنه يا مرنا ان نصلى قبل الجمعة اربعا وبعدها اربعا رواه مصنف عبد الرزاق واسناده صحيح رواه الطبرانى فى المعجم الكبير وعن جبلة بن سحين عن على رضى الله عنه انه قال من كان مصليا بعد الجمعة فليصلى ستا رواه الضحاوى واسناره صحيح –


وبه قال حدثنا احمد بن محمد ابنا عمربن عيسى ابنا ابوشعيب السمان ابنا ابو اسما عيل الفارسى قال رئيت سفيان ومسعرا وابا حنيفة ومالك بن مسعود وزائد يصلون بعد الجمعة ستاركعتين واربعا مناقب ابى حنيفة , صـ২১৯ .


যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, ইবনু তাইমিয়া মৃত ৭৪৯ হিজরী ২৮ই জুলকাদা এর বর্ণনা মোতাবেক জুমার পূর্বে সুন্নাত নামাজের কোন প্রমাণ নেই। কেননা সূর্য ঢলার পর আজান দেয়া হত। এরপর আজান শুনার সাথে সাথে নবী করিম (ﷺ) তশরীফ নিয়ে আসতেন এবং মসজিদে প্রবেশ করে খুতবা আরম্ভ করে দিতেন; খুতবা শেষে জুমার নামাজ আরম্ভ করে দিতেন।


উত্তর:-


হযরত সুফিয়ান আস্ সোরী, ইবনুল মোবারক ও ইমাম তিরমিজি (رحمة الله) প্রমুখ হযরাতে কেরাম ইবনু মাসয়ুদ (رضي الله عنه)কে অনুসরণ করেছেন যে তিনি জুমার পূর্বে ও পরে চার রাকাত করে আদায় করতেন। ইত্তেহাফ নামক কিতাবে বলেছেন ইহা মারফু হাদীস যা জুমার পূর্বাপরে চার রাকাতের প্রমাণ বহন করছেন। হযরত আবু হানিফা (رحمة الله) হতে রেওয়ায়তকৃত যা মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে এবং মারফু পদ্ধতিতে বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী হযরত ইবনু মাসয়ুদ (رضي الله عنه) আমল করেছেন। (তিরমিজি শরীফ)


হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি নবী করিম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন; যে ব্যক্তি গোসল করে জুমা মসজিদে আগমন করেন এবং সম্ভব পরিমাণ নামাজ আদায় করেন অত:পর খতিব সাহেব খুতবা শেষ করা পর্যন্ত নীরব থাকেন এরপর জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন তাকে উক্ত জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের। ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন যেমন ইমাম তিরমিজি ও আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন। তার অন্য বর্ণনাসূত্রে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্য হতে কেহ যদি জুমার পর নামাজ আদায় করতে চায় সে যেন চার রাকাত আদায় করেন। ইমাম বুখারী ব্যতীত মুহাদ্দেসীন কেরামের এক জামাত উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। হযরত আবু আবদুর রহমান সোলাহাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) আমাদেরকে জুমার পূর্বে চার রাকাত পরে চার রাকাত আদায় করার নির্দেশ দিতেন। উক্ত হাদীস মুসান্নিফ আবদুর রাজ্জাক বর্ণনা করেন এবং এর সনদ সহীহ বলেছেন। ইমাম তাবরানি মুজামুল কবিরে বর্ণনা করেছেন। হযরত জবলা বিন সহিম হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, অবশ্যই তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমার পূর্বে নামাজ আদায করতে ইচ্ছা করে সে যেন ছয় রাকাত আদায় করে। ইমাম তহাবী বলেন, এর সনদ সহীহ। তিনি বলেন, আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন আহমদ বিন মুহাম্মদ, তিনি বলেন আমাদেরকে খবর দিয়েছেন আবু শোয়াইব আসসেমান তিনি বলেন, আমাদেরকে খবর দিয়েছেন আবু ইসমাইল আল ফার্সী, তিনি বলেন আমি সুফিয়ান, মুসয়ির, আবু হানিফা, মালেক বিন মাসউল ও জায়েদ প্রমুখকে দেখেছি তাঁরা সবাই জুমার পরে দু’রাকাত ও চার রাকাত আদায় করতেন। মুনাকেবে আবু হানিফা ২১৯ পৃষ্ঠা


সিজদা সাহুর বর্ণনা


بيان سجود السهو


حكم سجود السهو : سجود السهو واجب عندنا مطلقا – يأثم تاركه ولاتبطل صلاته ويستثنى سجود السهو فى صلاة الجمعة والعيدين – فالاولىٰ فيهما ترك سجود السهو .


وقد ثبت ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يسهو فى الصلاة وصح عنه انه قال – إنما انا بشر أنسى كما تنسون فاذا نسيتُ قذكّرونى (رواه البخارى عن ابن مسعود) .


সিজদা সাহুর হুকুম: আমরা হানাফীদের মতে সাধারণত সিজদা সাহু ওয়াজিব। তা বর্জনকারী গুনাহগার হবে, নামাজ বাতিল হবে না। জুমা ও দু’ঈদের নামাজে সিজদা সাহু নেই, তাই সে দুনো জামাতে সাহুর জন্য সিজদা বর্জন করা উত্তম। প্রমাণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামাজে সাহু হত; তাঁর থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত, তিনি বলেন; নিশ্চয় আমি মানুষ, আমার ভুল হয় যেমন তোমাদের ভুল হয়; সুতরাং আমি ভুল করলে স্মরণ করায়ে দিবে। (বুখারী শরীফ, ইবনে মাসয়ুদ থেকে বর্ণিত)



সিজদা সাহুর কারণ সমূহের বর্ণনা


بيان اسباب سجود السهو


أولا, اذا سلم قبل إتمام الصلاة ثم تذكّر أنه لم يتم الصلوة ولم يطل الفصل, متى تكلم فسدت صلاته عندنا وعليه ان يستأنف صلاة اخرى .


ثانيا:- إذا زاد فى الصلوٰة ركعة كاملة ولم يجلس الجلسة الاخيرة تبطل صلاته – اما اذا جلس الجلسة الاخيرة ضمّ الى الزائدة ركعة لتشفع له صلاته وتكونانا له نفلا ويسجد للسهو وتصح صلاته .


وسواء كانت الزيادة ركعة أوسجودا اوركوعا اوجلوسا بقدر تشهد أو غير ذلك .


فعن إبن مسعود رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم صلى الظهر خمسا, فقيل, فقيل له, اُزيد فى الصلاة ؟ فقال وماذالك ؟ فقالوا صليت خمسافسجد سجدتين بعدماسلم (رواه الجماعة ).


ثالثا : نسيان واجب من واجبات الصلاة كالتشهد الاول والقنوت اوقرأة الفاتحة أوضم سورة الى الفاتحة فى الركعتين الاوليين من الفرض – وكذا الواجب كالوتر او آخر القيام الى الركعة الثالثة كمن زاد فى التشهد الاول الصلاة على النبى واله – فيجب فيها سجود السهو .


فمن سهى عن القعود الاول وتذكّر قبل ان يتم قيامه بحيث ادنى من حال الركوع فعليه ان يعود الى الجلوس ولا سهو عليه .


وان أتم قيامه أوكان الى القيام اقرب منه إلى الجلوس فلا يعود الى الجلوس وان عاد عامدا عالما بطلت صلاته . 


فعن المغيرة بن شعبة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اذا قام أحدكم من الركعتين فلم يستتم قائما فليجلس وان استتم قائما فلا يجلس وسجد سجدتى السهو (رواه ابوداؤد ابن ماجه) .


رابعا : اذاشك فى الصلوة ولم يدركَمْ صلى, ثلاثا اواربعا مثلا بنى على اليقين وهو الاقل واكمل صلاته وسجد سجدتين للسهو – عن ابى سعيد الخدرى رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذاشك احدكم فى صلاته فلم يدركم صلى ثلاثا ام أربعا فليطرح الشك وليبن على ما استيقن ثم يسجد سجد تين قبل أن يسلم فان كان صلى خمسا شفعت له صلاته – وإن كان صلى اتماما لاربع كانتا ترغيما للشيطان (رواه احمد ومسلم) .


প্রথম: নামাজ পরিপূর্ণ হওয়ার পূর্বে সালাম ফিরায়ে নেয় অত:পর স্মরণ হয় যে সে নামাজ পূর্ণ করেনি এবং বিরতি দীর্ঘায়িত না হয়। যখন (সালামের পর) কথোপকথন করবে হানাফীদের মতে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে এবং তার উপর নতুন করে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব হবে।


দ্বিতীয়: শেষ বৈঠক না করে নামাজে পূর্ণ এক রাকাত অতিরিক্ত আদায় করলে তার নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদি শেষ বৈঠকে বসে থাকে তাহলে অতিরিক্ত রাকাতের সাথে আরো এক রাকাত মিলায়ে নিবে যাতে উহা দু’রাকাত পূর্ণ হয় এবং উক্ত দু’রাকাত তার জন্যে নফল হবে, সাহুর জন্যে সিজদা করবে, তার নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে। অতিরিক্ত রাকাত পূর্ণ এক রাকাত হউক কিংবা সিজদা করুক বা তাশাহ্হুদ পরিমাণ বসুক যা করুক না কেন এতে কোন তারতম্য নেই। হযরত ইবনে মাসয়ুদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে নবী করিম (ﷺ) জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত আদায় করেন; অত:পর কেউ আরজ করলেন, নামাজ কি বৃদ্ধি হয়েছে? তখন হুজুর (ﷺ) বললেন, কি হয়েছে? জওয়াবে সাহাবারা বললেন, আপনি পাঁচ রাকাত আদায় করেছেন। অত:পর তিনি সালাম ফিরায়ে দু’টি সিজদা করলেন। (অসংখ্য রাবরা ইহা বর্ণনা করেছেন) 


তৃতীয়: নামাজের ওয়াজিব সমূহ থেকে ভুলে কোন ওয়াজিব বর্জন করা যেমন- প্রথম তাশাহ্হুদ, দোয়ায়ে কুনুত বা সূরা ফাতেহা পাঠ বা ফাতেহার সাথে সূরা মিলানো ফরজের প্রথম দু’রাকাতে, অনুরূপভাবে বিতির নামাজে প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদের সাথে দুরূদ শরীফ পাঠ করাতে তৃতীয় রাকাতের কিয়াম পিছনের কারণে সিজদা সাহু ওয়াজিব হবে। যে ব্যক্তি প্রথম বৈঠক করতে ভুলে যায় এবং তা পূর্ণরূপে দাঁড়ানোর পূর্বে স্মরণ হলে; আর তা রুকুর চেয়েও নিম্ন অবস্থায় থাকলে পুনরায় বসে যাবে, এতে তাকে সিজদা সাহু দিতে হবে না। যদি পুরাপুরি দাঁড়িয়ে যায় বা কিয়ামের দিক অধিক হয় তাহলে বসার দিকে ফিরে আসবে না। যদি তা জানা সত্তে¡ও ইচ্ছাকৃতভাবে ফিরে আসে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। (ফরজ হতে ওয়াজিবের দিকে ফিরে আসার কারণে) যেমন- হযরত মুগিরা বিন সো’বা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ দু’রাকাত শেষে দাঁড়িয়ে গেলে, এমতাবস্থায় সে পুরাপুরি না দাঁড়ালে বসে যাবে আর পুরাপুরি দাঁড়ালে বসবে না; সাহুর জন্যে সিজদা আদায় করবে। (আবু দাউদ ও ইবনু মাজা শরীফ)


চতুর্থ: কারো নামাজে সন্দেহ হলে; সে জানে না তিন রাকাত পড়েছে না কি চার রাকাত পড়েছে, এ পরিস্থিতিতে নিশ্চিত সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নামাজ আদায় করবে। ভুলের জন্য সিজদা সাহু দিবে। সন্দেহের মধ্যে কম সংখ্যাটি হল নিশ্চিত সংখ্যা। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কারো নামাজে সন্দেহ হলে; সে নিশ্চিতভাবে জানে না, তিন রাকাত পড়েছে না কি চার রাকাত পড়েছে সে যেন তার সন্দেহকে দূর করে নিঃসন্দেহের উপর নামাজকে ভিত্তি করে আদায় করবে। অতঃপর সালাম ফিরানোর পূর্বে সিজদা সাহু আদায় করবে। যদি সে পাঁচ রাকাত পড়ে তার নামাজ জোড়া হয়ে যাবে আর যদি পূর্ণ চার রাকাত পড়ে তাহলে উক্ত দু’টি সিজদা সাহু দ্বারা শয়তানকে লজ্জিত করা হবে। (আহমদ ও মুসলিম শরীফ)


সিজদা সাহুর স্থান ও বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা


بيان محل سجود السهو وصفته


محله بعد السلام .


وصفته أن يسجد سجدتين بعد ان يسلم عن يمينه ويتشهد بعد هما وجوبا ويسلم كذلك .


وأذا اسها المامومُ حال أقتدائه بالامام فليس عليه سجود للسهو إذ ان الامام يحمل عنه السهو .


عن عمربن الخطاب رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ليس على من خلف الامام سهو, فان سها الامام فعليه وعلى من خلفه (رواه الترمذى) .


সিজদা সাহুর স্থান সালাম ফিরানোর পর। এর সিফাত হচ্ছে ডান দিকে সালাম ফিরানোর পর দু’টি সিজদা করা। এ সিজদার পর তাশাহ্হুদ পাঠ করা ওয়াজিব। অনুরূপভাবে সালাম ফিরানো ওয়াজিব। মুক্তাদি ইমামের পিছনে ইকতেদা অবস্থায় সাহু করলে তাতে তার জন্যে সিজদা সাহু দিতে হবে না। কেননা ইমাম তার সাহু উত্তোলন করে নেয়। হযরত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, ইমামের পিছনে নামাজ আদায়কারীর উপর সিজদা সাহু নেই। যদি ইমাম সাহু করে তাতে ইমাম ও মুক্তাদি উভয়ের উপর সিজদা সাহু ওয়াজিব হবে। (তিরমিযী শরীফ)


তেলাওয়াতে সিজদার বর্ণনা


بيان سجود التلاوة


هى واجبة عندنا .


وشروطها :- يشترط لها مايشترط للصلاة من الطهارة وستر العورة وأستقبال القبلة – (وشرطه شروط سجود الصلوة) .


ولها ركن واحد وهو السجود وهو ركن عند الجميع .


دليل مشروعيتها :- عن ابن عمر رضى الله تعالى عنهما قال كان النبى صلى الله عليه وسلم يقرأ القرآن فيقرا السورة فيها السجدة فيسجد ونسجد معه حتى مايجد بعضنا موضعا لمكان جبهته (متفق عليه) .


وعن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا قرأ إبن آدم السجدة فسجد , اعتزل الشيطان يبكى يقول ياويلة امر بالسجود فسجد فله الجنة وامرتُ بالسجود فعصيتُ فلى النار (رواه مسلم وابن ماجه) .


هيئات السجود وقول سبحان ربى الاعلى ثلاثا الجلوس بعده باطميئنان وبغير تشهد سنة .


عن عائشة رضى الله عنها قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول فى سجود القرآن سجد وجهى للذى خلقه وشق سمعه وبصره بحوله وقوته فتبارك الله احسن الخالقين (وصححه الترمذى) 


المواضع التى يطلب فيها السجود: عند تلاوة القرآن اوسماعها هى اربعة عشر عندنا – وعند الشافعية خمسة عشر موضعا .


তেলাওয়াতে সিজদা হানাফীদের মতে ওয়াজিব। 


তেলাওয়াতে সিজদার শর্তাবলী- সে সকল বিষয় উহার শর্ত যাহা নামাজের জন্য শর্ত। যেমন- তাহারত, চতর ঢাকা ও কিবলামুখী হওয়া। এর শর্তাবলী নামাজের শর্তের অনুরূপ। এর রুকন একটি। উহা হল সিজদা। সবাইর ঐক্যমতে উহা রুকন।


এর শরীয়ত ভিত্তিক হওয়ার দলীল- হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোরআন তেলাওয়াত করতেন তাতে এমন সূরাও পাঠ করতেন যাতে তেলাওয়াতে সিজদার আয়াত আছে। তখন তিনি সিজদা দিতেন আমরাও তাঁর সাথে সিজদা করতাম এমন কি আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ললাট রাখার স্থানও পেত না। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)


হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, যখন আদম সন্তান সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করে অত:পর সিজদা করে তখন শয়তান ক্রন্দনরত অবস্থায় সেখান থেকে সরে যায় এবং বলতে থাকে হায় আমার ধ্বংস। সিজদার জন্যে হুকুম করেছেন তাই তারা সিজদা করেছে। অতএব জান্নাত তাদের জন্যে। আমাকে সিজদার হুকুম দেয়া হয়েছিল আমি তা অমান্য করেছি তাই দোযখ আমার জন্যে। (মুসলিম ও ইবনু মাজা শরীফ)


সিজদার অবস্থান- সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা তিন বার পাঠ করা এবং সিজদার পর স্থিরতার সাথে তাশাহ্হুদ বিহীন বসা সুন্নাত। হযরত আয়শা ছিদ্দিকা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল্লুাহ (ﷺ) কোরআন তেলাওয়াতের সিজদায় বলতেন, আমার চেহারা সে আত্মাকে সিজদা করেছেন যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। তারই শক্তিতে উহার চক্ষু, কর্ণ ফুটিয়েছে। অতএব অতি বরকতময় আল্লাহ তায়ালা। তিনি অতি সুন্দর স্রষ্টা সকল স্রষ্টার চেয়ে! (রূপক অর্থে স্রষ্টা) (ইমাম তিরমিজি ইহাকে সহী বলেছেন)


কোরআন তেলাওয়াতের সময় বা শ্রবণের সময় যে সকল স্থানে সিজদা তালাশ করা হবে- হানাফীদের মতে তার স্থান চৌদ্দটি, শাফেয়ীদের মতে পনরটি।


কোরআন শরীফে সিজদার স্থান সমূহের বর্ণনা


بيان مواضع السجود فى القرآن


(১) سورة اعراف – ان الذين ----- وله يسجدون 


(২) سورة رعد – ولله يسجد ----- بالغدو والآصال


(৩) سورة نحل – والله يسجد ----- وهو لايستكبرون


(৪) سورة اسراء – قال امنوابه ------ للأذقان سجدًا


(৫) سورة مريم – اذا تتلى ------ سجدا وبكيا


(৬) سورة حج – الم تر ان الله ---- ان الله يفعل مايشاء


(৭) سورة فرقان – واذا قيل لهم ---- وزادهم نفورا


(৮) سورة نحل – ان يسجدو الله ---- وما تعلنون 


(৯) سورة سجدة – انما يؤمن بايآاتنا --- وهم لايستكبرن


(১০) سورة ص – وظن داؤد فتناه ---- واناب


وقال الشافعية والحنابلة لايطلب عندها السجود وليست هى من مواضع السجود .


শাফেয়ী ও হাম্বলীরা বলেন, সূরা ছোয়াদে আয়াতে সিজদা তালাশ করা যাবে না। কেননা এতে আয়াতে সিজদার স্থান নেই।


سورة حج – يا ايها الذين امنوا ---- لعلكم تفلحون


قال الحنفية والمالكية : لم يعتبر هذه من مواضع السجود .


হানফীরা ও মালেকীরা বলেন, সূরা হজ্ব আয়াতে সিজদার স্থান হিসাবে গণ্য নয়।


(১১) سورة فصلت – ومن آياته الليل --- اياه تعبدون .


(১২) سورة نجم – فاسجدوا واعبدوا .


قال المالكية: ليست اية النجم من مواضع السجود .


মালেকীরা বলেন, আয়াতুন নজম তেলাওয়াতে সিজদার স্থান নয়।


(১৩) سورة الانشقاق – واذا قرئ عليهم --- لايسجدون .


قال المالكية: ليست من مواضع السجود اية الانشقاق  .


মালেকীরা বলেন, আয়াতুল ইনসিকাক তেলাওয়াতে সিজদার স্থান নয়।


নামাজরত অবস্থায় সিজদা করার বর্ণনা


(১৪) سورة علق – واسجد واقترب .


بيان السجود فى الصلوٰة


يجوز للامام والمنفرد ان يقرأ آية السجدة فى الصلوة الجهرية والسرية ويسجد متى قرأها – ويتابع المأموم إمامَهُ فى السجود ولايسجد لقراءة نفسه بل يسجد بعد الفراغ من الصلوٰة .


عن ابى رافع رضى الله عنه قال صليت مع ابى هريرة رضى الله عنه صلاة العتمة او قال صلاة العشاء فقرأ ’’اذا السمآء انشقت‘‘ فسجد فيها – فقلت يا ابا هريرة ماهذه السجدة ؟ فقال سجدت فيها خلف ابى القاسم صلى الله عليه وسلم فلا از ال اسجدها حتى القاه . (متفق عليه) .


وعن ابن عمر رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم سجد فى الركعة الاولىٰ من الظهر فرأى اصحابه انه قرأ آلم تنزيل السجدة . (رواه احمد وابوداؤد) .


ইমাম, মুনফারিদ সবার জন্যে নামাজে আয়াতে সিজদা প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তেলাওয়াত করা জায়েজ এবং সিজদা প্রদান করবে যখন আয়াতে সিজদা তেলাওয়াত করবে, এতে মুক্তাদিরাও তাদের ইমামের অনুসরণ করে সিজদা আদায় করবে। একাকীত্ব নামাজ পড়ারত অবস্থায় সিজদা দিবে না বরং নামাজ শেষে উহা আদায় করবে। হযরত আবু রাফে (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) এর সাথে আতমা কিংবা এশার নামাজ আদায় করছি; তিনি اذا السماء النشقت আয়াতটি পাঠ করলেন এবং এতে সিজদা করলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আবু হুরাইরা ইহা কিসের সিজদা? তিনি উত্তরে বলেন, আমি এতে হযরত আবুল কাসেম (ﷺ) এর পিছনে সিজদা করেছি। তখন থেকে এ পর্যন্ত সর্বদা সিজদা করে আসছি। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)


হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) জোহরের প্রথম রাকাতে সিজদা করেন তখন তাঁর সাহাবায়ে কেরামগণ দেখলেন তিনি آلم تنزيل السجدة তিলাওয়াত করেছেন। (আহমদ ও আবু দাউদ শরীফ)


সিজদা শোকরের বর্ণনা


بيان سجدة الشكر


سجدة الشكر مكروهة عند ابى حنيفة – وقالا اى محمد وابو يسوف رحمة الله عليهما فى احدى الرواتين عنه هى اى سجدة الشكر قربة يُثاب عليها هى سجدة كسجدة التلاوة تستحب عند تجدد نعمة – او اندفاع نقمة ولاتكون الاخارج الصلاة وان نواها ضمن ركوع الصلاة اوسجودها اجزأه.


عن ابى بكر رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان اذا اتاه امرٌ يسرّه اوبشربه خرّساجدا شكرا لله تعالىٰ (رواه اصحاب السنن) .


وقال المالكية – سجدة الشكر مكروهة وانما تستحب عند حدوث نعمة او إندفاع نقمة صلاة ركعتين كما فعل سعدبن أبى وقاص عند مافتح الله على يديه البيت الابيض قصر كسرىٰ نوشروان حيث صلى ركعتين شكرًا لله .


ইমাম আবু হানিফার মতে সিজদা শোকর মাকরূহ। সাহেবাইন (رحمة الله) বলেছেন, তাঁর দু’ রেওয়ায়তের মধ্য হতে এক রেওয়ায়তের মতে সিজদা শোকর দ্বারা নৈকট্য লাভ করা যায়, উহাতে সওয়াব পাওয়া যায়। ইহা তেলাওয়াতে সিজদার মত। কোন নতুন নিয়ামত প্রাপ্তির জন্যে কিংবা কোন বিপদ মুক্ত হওয়ার দরুণ আল্লাহর শোকরিয়া জ্ঞাপনার্থে যে সিজদা করা হয়। উহা নামাজের বাইরে হয়। যদি নামাজের রুকু কিংবা সিজদা আদায় করার সময় উহা আদায় করার নিয়্যত করে তাতেও আদায় হয়ে যাবে।


হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত অবশ্যই নবী (ﷺ) এর নিকট যখন কোন সহজ বিধান আসত বা উহার সুসংবাদ অবতীর্ণ হত তিনি আল্লাহ তায়ালার দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত। (আসহাবুস সুনান)


মালেকীরা বলেন, সিজদা শোকর মাকরূহ। কোন নতুন নিয়ামত হস্তগত হলে বা কোন বিপদ-আপদ দূরীভূত হওয়ার জন্য দু’রাকাত নামাজই মুস্তাহাব হয়। যেমন হযরত সায়াদ বিন আবী ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) এর হাতে বাইতুল আবিয়াদ, পারস্যের রাজ প্রাসাদ জয় হওয়ার দরুণ দু’রাকাত শোকরিয়ার নামাজ আদায় করেছেন।


নফল নামাজ


صلوٰة التطوع


صلاة التطوع هى ما يطلب فعله من المكلف زيادة على المفر وضة طلبا غير جازم وقدشرع التطوع ليكون جبرا لماعسىٰ ان يكون قدوقع فى الفرائض من نقص – ولما فى الصلاة من فضيلة ليست لسائر العبادات فكماروى ابوداؤد عن ابى هريرة رضى الله عنه .


নফল নামাজ- এমন নামাজ যা মুকলি­ফ থেকে ফরজের অতিরিক্ত হিসাবে চাওয়া হয় দৃঢ়কল্পে নয় বরং ইচ্ছাকৃতভাবে। অবশ্যই নফল নামাজ বিধিসম্মত হয়েছে ফরজ নামাজে সাধিত ত্র“টি বিচ্যুতির সম্পূরক হিসাবে যা ফরজ আদায়ের ক্ষেত্রে হয়ে যায় এবং দ্বিতীয়ত নামাজে যে ফজিলত রয়েছে তা অন্য কোন ইবাদতে নেই। যেমন- আবু দাউদ (رحمة الله) হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন।


নফল নামাজের প্রকারভেদ


اقسام التطوع


ينقسم التطوع الى نوعين (১) تطوع مطلق . (২) تطوع مقيد .


(১) التطوع المطلق :- التطوع المطلق يقتصر فيه على نية الصلاة فاذاشرع فى تطوع ولم ينو عددا فله ان يسلم من ركعتين او اكثر .


(২) التطوع المقيد:- التطوع المقيد ينقسم الى ماشرع تبعا للفرائض ويسمىّ السنن الراتبة أو إلى ماهو مقيد بوقت كسنة الضحى والوتر وغيرهما .


وتنقسم السنن الرواتب الى قسمين (১) مؤكدة (২) غير مؤكدة .


فالمؤ كدة منها ماكان يصليه النبى المصطفىٰ صلى الله عليه وسلم كثيرا ويتركه قليلا – واما غير المؤكدة ماكان يصليه قليلا ويتركه كثيراً .


فالمؤكدة من الرواتب اثنا عشر ركعة – ركعتان قبل الفجر واربع ركعات قبل الظهر- وركعتان بعده – وركعتان بعد المغرب – وركعتان بعد العشاء – واما غير هذه فهى سنة مستحبة .


(১) سنة الفجر وهى مؤكدة – تصلى قبل الفرض وهى اقوىٰ الرواتب تاكيدا – لاتجوز صلاتها قاعدا بدون عذر .


(২) سنة الظهر – وعدد ركعاتها اربع قبلها وركعتان بعدها وذالك لماروى عن عبدالله بن شقيق قال سألت عائشة رضى الله عنها عن صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم – قالت كان يصلى قبل الظهر اربعا واثنتين بعدها (رواه احمد ومسلم وغيرهما) .


(৩) سنة العصر – وهى اربع ركعات ان شاء ركعتان غير مؤكدة .


(৪) سنة المغرب – ان المؤكدة هى ركعتان بعد المغرب وقال الشافعية والحنابلة – كذالك يسن صلاة ركعتين قبل المغرب وهذا لاتجوز عند الحنفية .


(৫) سنة العشاء – لاخلاف بأن المؤكدة هى ركعتان بعدها ولكن الخلاف فى عدد ركعات راتبتها غير المؤكدة – قال الحنفية تسنُ صلاة اربع قبلها واربع بعدها وقال الشافعية يسن صلاة ركعتين قبلها وركعتين بعدها – اما المالكية فقالوا ان السنن الرواتب كلها مندوبة ما عداصلاة الصبح فهى رغبة .


নফল নামাজ দু’ভাগে বিভক্ত: (১) সাধারণ নফল (২) শর্তযুক্ত নফল।


১) সাধারণ নফল: সাধারণ নফল, নামাজের নিয়তের উপরই সীমিত। অতএব একউ রাকাতের সংখ্যার নিয়ত বিহীন নফল আরম্ভ করে সে প্রত্যেক দু’রাকাতে সালাম ফিরাবে এবং এর অধিকও পড়তে পারবে। 


২) শর্তযুক্ত নফল: শর্তযুক্ত নফল এক প্রকার ফরজ নামাজের আনুগত্য হিসাবে যা ফরজের পূর্বাপরে পড়া হয় এগুলোকে সুনানুর রাতেবা বলা হয়। দ্বিতীয় প্রকার যা সময়ের সাথে সংযুক্ত যেমন- সুন্নাতের দোহা, বিতির ও অন্যান্য নফল নামাজ।


সুনানুর রাওয়াতিব দু’ভাগে বিভক্ত হয়- (১) মুয়াক্কাদা (২) গাইরে মুয়াক্কাদা। অতএব মুয়াক্কাদা সে সকল সুন্নাত যা নবী (ﷺ) অধিকাংশ সময় পড়তেন কখনো কখনো ছেড়ে দিতেন। গাইরে মুয়াক্কাদা যা অধিকাংশ সময় ছেড়ে দিতেন এবং কম সময় পড়তেন।


সুনানে মুয়াক্কাদায়ে রাওয়াতেবা বার রাকাত। ফজরের পূর্বে দু’রাকাত, জোহরের পূর্বে চার রাকাত, পরে দু’রাকাত এবং মাগরিবের পর দু’রাকা, এশার নামাজের পর দু’রাকাত। এছাড়া অন্যান্য সকল সুন্নাতে মুস্তাহাব। 


১) ফজরের সুন্নাত: ইহা সুনানে রাওয়াতেবার মধ্যে অধিক তাকিদকৃত সুন্নাত যা ফজরের পূর্বে পড়া হয়। ওজরবিহীন সুন্নাত নামাজ বসে আদায় জায়েজ নয়।


২) জোহরের সুন্নাত: উহার সংখ্যা পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত ইহা হযরত আব্দুল্লাহ বিন সাকিক (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তিনি বলেন, আমি উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়শা ছিদ্দিকাহ (رضي الله عنه) এর নিকট রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি উত্তরে বলেন, জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত পড়তেন। (আহমদ, মুসলিম শরীফ ও অন্যান্য কিতাব)


৩) আসরের সুন্নাত: উহা চার রাকাত গাইরে মুয়াক্কাদা, ইচ্ছা করলে দু’রাকাতও পড়তে পারে।


৪) মাগরিবের সুন্নাত: অবশ্যই মাগরিবের পর দু’রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। শাফেয়ী ও হাম্বলীরা বলেন, অনুরূপ মাগরিবের পূর্বেও দু’রাকাত সুন্নাত; ইহা হানাফীদের মতে বৈধ নয়।


৫) এশার সুন্নাত: এশার পর দু’রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এতে কোন মতভেদ নেই। কিন্তু সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদার রাকাতের সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। হানফীরা বরেন, এশার পূর্বে চার রাকাত ও পরে চার রাকাত সুন্নাত। শাফেয়ীগণ বলেন, পূর্বাপর দু’রাকাত করে চার রাকাত সুন্নাত। মালেকীগণ বলেন, ফজরের দু’রাকাত ছাড়া বাকী সব সুন্নাতে রাওয়াতেব মনদুব। ফজরের সুন্নাতের প্রতি তাকিদ বেশী করা হয়েছে বিধায় উহার হুকুম ভিন্ন।


শর্তযুক্ত নফলের বর্ণনা


بيان التطوع المقيد


الوتر :- ان الوتر مطلوب فى كل مذاهب الاان درجة الطلب اقوىٰ عند ابى حنيفة رحمة الله عليه وهو واجب – الواجب هو فرض عملى, لا اعتقادى, بحيث لايكفر منكره . ووقت صلاته من بعد صلاة العشاء ويمتدّ الى الفجر – وذلك لحديث عمروبن العاص رضى الله عنه .


ولما روى عن عبد الله بن مسعود الانصارى رضى الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يؤتر أوّل الليل وأوسطهُ وآخره (رواه احمد بسند صحيح) .


الوتو ثلاث ركعات كصلاة المغرب تشهدين بتسليمة ويسن القنوت فى الوتر- الافضل ان يدعو بالصيغة الواردة عن عبد الله بن مسعود رضى الله عنه .


وهى ’’اللهم إنا نستعينك ونشتهدبك ونستغفرك ونؤمن بك ونتوكل عليك ونثنى عليك الخير كله ونشكرك ولانكفرك ونخلع ونترك من يفجرك اللهم اياك نعبد ولك نصلى ونسجدو اليك نسعى ونحفد ونرجو رحمتك ونخشىٰ عذابك ان عذابك الجد بالكفار ملحقٌ وصلى الله على محمد النبى واله واصحابه وسلم .


ووقته بعد القراءة وقبل الركوع من الركعة الاخيرة – يرفع يديه كتكبير الاحرام- ثم يعود ويدعو بالدعاء المذكور ثم يركع وذلك لماروى عن انس رضى الله عنه قد سئل عن القنوت فقال بعدالفراغ من القراءة .


فائدة : وكذا يشرع القنوت جهر او عند النوازل فى الصبح فى دبرصلاة اذا قال سمع الله لمن حمده من الركعة الاخيره – وعند الشافعية والحنابلة- فى الصلوات الخمس عند النوازل اى فى الظهر والعصر والمغرب والعشاء والصبح فى دبر كل صلاة .


বিতির: অবশ্যই বিতির নামাজের চাহিদা প্রত্যেক মাজহাবে বিদ্যমান। তবে হানাফি মাজহাবে উহার চাহিদা সবচেয়ে বেশী। ইমাম আবু হানিফার মতে উহা ওয়াজিব। ওয়াজিব হচ্ছে আমলি ফরজ, ইতেকাদী ফরজ নয়। তাই উহার অস্বীকারকারী কাফির বলে গণ্য হবে না। এ নামাজের সময় এশার পর থেকে ফজরের সময় পর্যন্ত; যা হযরত আমর বিন আছ (رضي الله عنه) এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসয়ুদ আল আনচারী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিতির নামাজ রাতের প্রথম ভাগে, মধ্যভাগে এবং শেষভাগে আদায় করতেন। (বিশুদ্ধ সনদে আহমদ রেওয়ায়ত করেন)


বিতির নামাজ তিন রাকাত মাগরিবের ন্যায় এক সালাম, দু’তাশাহ্হুদের সাথে এবং উহাতে কুনুত পাঠ করা সুন্নাত। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসয়ুদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত বিতির নামাজে দোয়া কুনুত পাঠ করা উত্তম। উহা হচ্ছে- হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, তোমার পক্ষ হতে হেদায়ত চাই, তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি, তোমাকে বিশ্বাস করি, তোমারই ভরসা করি, তোমার সকল কল্যাণ বর্ণনা করি, তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, তোমাকে অস্বীকার করি না, তোমার াবাধ্যকারীদের থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমার জন্যে নামাজ পড়ি, তোমাকেই সিজদা করি, তোমারই নৈকট্য লাভের চেষ্টা করি, তোমার আনুগত্যের উৎসাহী হয়েছি, তোমার রহমতের আশাবাদী হয়েছি, তোমার শাস্তির ভয় করি, তোমার কঠিন শাস্তির কাফেরগণই উপযোগী। হে আল্লাহ! হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কিরাম প্রত্যেকের উপর শান্তি বর্ষণ করুন। এর সময় ক্বেরাত পাঠ করার পর শেষ রাকাতে রুকু করার পূর্বে; তাকবরে তাহরিমার ন্যায় উভয় হাত উত্তোলন করবে। অত:পর পুনরায় হাত বেঁধে উপরে উলে­খিত দোয়া পড়বে। দোয়া শেষে রুকু করবে, ইহা হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদীস দ্বারা বুঝা যায়। যেমন তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)কে দোয়া কুনুত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ক্বেরাত শেষে। 


উপকারীতা: অনুরূপ ফজরের নামাজে দ্বিতীয় রাকাতে রুকু হতে সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা বলে দাঁড়ানো অবস্থায় কুনুতে নাযেলা উচ্চস্বরে পড়ার বিধান শরীয়ত মোতাবেক। ইমাম শাফেয়ী ও হাম্বলীগণের নিকট পঞ্জেগানা নামাজের প্রত্যেক ওয়াক্তে শেষ রাকাতে কুনুতে নাযেলা পড়া শরীয়ত সম্মত বিধান।


তারাবীর নামাজ বা রমজানের রাত্রে কিয়াম


صلاة التراويح اوقيام رمضان


صلوٰة التراويح سنة للرجال والنساء تؤدى بعد صلاة العشاء وقبل الوتر ركعتين ركعتين – ويجوز ان تؤدى بعده ولكنه خلاف الافضل – ويستمرو قتها الى آخر الليل .


নর-নারী উভয়ের জন্যে তারাবীর নামাজ সুন্নাত। ইহা এশার নামাজের পর বিতির নামাজের পূর্বে দু’রাকাত করে আদায করতে হয়। বিতিরের পরেও জায়েজ তবে, আফজলিয়াতের খেলাপ। ইহার সময় শেষ রাত্রি পর্যন্ত বহাল থাকে।


তারাবীর রাকাতে সংখ্যার বর্ণনা


بيان عدد ركعات التراويه


وهذا الذى بيّنه عمرُ بن الخطاب رضى الله عنه بفعله عند ماجمع الناس أخبرا فى المسجد – ووافقه الصحابة على ذلك ولم يكن لهم مخالف ممن بعدهم من الخلفاء الراشدين وقد قال النبى صلى الله عليه وسلم عليكم بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدى عُضُّوا عليها بالنواجذ (ابوداؤد شريف) .


عن عبدالله بن عباس رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة سوى الوتررواه البغوى ابن ابى شيبة – طبرانى فى الكبير – بيهقى, عبدا بن حميد كان الناس يقومون فى زمان عمر ابن الخطاب رضى الله عنه فى رمضان بثلث وعشرين ركعة رواه مالك عن يزيد بن رمان عن سائب ابن يزيد قال كنا نقوم فى عهد عمر بعشرين ركعة والوتر – رواه البيهقى باسناد صحيح فى المعرفة عن ابى ابن كعب رضى الله عنه ان عمر بن الخطاب رضى الله عنه امره ان يصلى بالليل فى رمضان قال ان الناس يصومون النهار ولا يحتسبون ان يقرء فلو قرأت عليهم بالليل قال ياامبر المؤمنين هذا شئ لم يكن فقال قد علمت ولكنه حسَنُ فصلى بهم عشرين ركعة (رواه ابن منيع ) .


عن ابى عبد الرحمن سلمى ان على بن ابى طالب رضى الله عنه دعا القرّاء فى رمضان وامر رجلا يصلى بالناس خمس ترويحات عشرين ركعة وكان علىّ يوتربهم (رواه البيهقى فى سننه ) .


وايضًا عن ابى الحسناء ان على بن ابى طالب امر رجلا يصلى باالناس خمس ترويحات عشرين ركعة (رواه البيهقى) وتسن الجماعة فيها كما تصلى فرادى. 


فعن عائشة رضى الله عنها قالت صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فى المسجد فصلى بصلاته ناس كثير, ثم صلى من القابلة فكثروا, ثم اجتمعوا من الليلة الثالثة فلم يخرج اليهم – فلما اصبح قال قد رأيت صنيعكم فلم يمنعنى من الخروج اليكم الاانى خشيت ان تفرض عليكم وذلك فى رمضان (اخرجه الستة الا الترمذى) .


তারাবী নামাজের রাকাত সম্পর্কে হযরত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, মসজিদে লোকজন একত্রিত হয়ে নামাজ পড়তে দেখে স্বীয় মতামত পেশ করেছিলেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণ এতে তাকে সমর্থন করেছিলেন, পরবর্তীতে তাঁদের মধ্য হতে ও খোলাফায়ে রাশেদীনের কেউ কাজে ও বক্তব্যে বিরোধিতা করেন নি। অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন তোমাদের উপর আমার সুন্নাত ও আমার খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত আবশ্যক। তোমরা তা মজবুত করে বড় দাঁত দ্বারা কামড়ায়ে ধর। (আবু দাউদ শরীফ)


হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম (ﷺ) রমজান মাসে বিতির ছাড়া বিশ রাকাত পড়তেন। বগবী, ইবনু আবি শাইবা, তাবরানি কবিরে, বাইহাকী ও আবদু বিন হামিদ বর্ণনা করেন। হযরত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) এর খেলাফতকালে লোকেরা রমজান মাসে তেইশ রাকাত কিয়ামে লাইল করতেন। হযরত মালেক ইয়াজিদ বিন রুমান হতে তিনি সায়েব বিন ইয়াজিদ হতে, তিনি বলেন আমরা হযরত ওমর (رضي الله عنه) এর সময় বিশ রাকাত ও বিতিরের সাথে কিয়াম করতাম। ইমাম বাইহাকী ইহা বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেছেন। মারেফাহ নামক কিতাবে উবাই বিন কাব রা.) হতে বর্ণিত ওমর বিন খাত্তাব (رضي الله عنه) তাঁকে রমজানের রাতে কিয়াম করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অবশ্যই লোকজন দিনে রোজা রাখেন তারা তেলাওয়াত করে সাওয়াব অর্জন করছে না। আপনি যদি রাত্রে তাদের তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। তখন তিনি আরজ করেন, হে আমীরুল মুমেনীন ইহা এমন বিষয় যা নবী যুগে ছিল না। তিনি বলেন আমি সে বিষয়ে অবগত আছি কিন্তু ইহা উত্তম। অত:পর তিনি তাঁদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত আদায় করেছেন। (ইবনু মানি রেওয়ায়েত করেন)


হযরত আবদুর রহমান সলমি (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত অবশ্যই আলী বিন আবু তালেব (رضي الله عنه) রমজানে ক্বারীদের আহবান করলেন এবং লোকজনদের নিয়ে পাঁচ তারাবীহায় বিশ রাকাত তারাবী পড়ানোর জন্যে এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন এবং হযরত আলী (رضي الله عنه) তাঁদেরকে নিয়ে বিতির পড়তেন। (বাইহাকী সুনানে বর্ণনা করেছেন)


আবুল হাসানা হতেও অনুরূপ বর্ণিত যে, তিনি বলেন, হযরত আলী বিন আবু তালেব (رضي الله عنه) এক ব্যক্তিকে লোকজনদের নিয়ে পাঁচ তারবিহায় বিশ রাকাত পড়ার জন্য হুকুম দিয়েছেন। (বাইহাকী শরীফ)


এতে জামাত সুন্নাত যেমন একাকী পড়া সুন্নাত। হযরত আয়শা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে নামাজ পড়েন তখন তার পিছনে অনেক লোক নামাজ পড়েছেন অত:পর পরদিন অনুরূপ আরো বেশী লোকের জমায়েত হয় অত:পর তৃতীয় দিনেও লোক জমায়েত হয় কিন্তু নবী (ﷺ) তশরীফ নেননি। যখন সকাল হয় তিনি বলেন, অবশ্যই আমি তোমাদের অবস্থা দেখেছি কিন্তু আমাকে তোমাদের দিকে যেতে বাধা দিয়েছে শুধুমাত্র তোমাদের উপর তা ফরজ হয়ে যাওয়ার ভয়ই। ইহা ছিল রমজান মাস। (তিরিমিজি ব্যতীত সিহাসিত্তার সকলই বর্ণনা করেছেন)



ঈদের নামাজ সম্পর্কীয় অধ্যায়


باب صلاة العيدين 


صلاة العيدين واجبة فان خطبتها سنة فى العيد – لقوله تعالى فصل لربك وانحر – المرادهى صلاة عيد الاضحىٰ ’’قدافلح من تزكى واذكراسم ربه فصلى‘‘ المرادبه صلاة عيد الفطر .


ولمواظمة الرسول صلى الله عليه وسلم وخلفاءه من بعده على صلاتهم .


وقد شرعت فى السنة الاولىٰ وقيل الثانية من الهجرة وهى ركعتان – ووقتها بعد ارتفاع الشمس رمح اورمحين يقدر بثلث ساعة ويمتد الى الزوال .


عن ابن عباس رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم صلى يوم العيد ركعتين , لم يصل قبلهما ولا بعدهما (رواه الجماعة) .


وعن جندب قال كان النبى صلى الله عليه وسلم يصلى بنا الفطر والشمس عى قيدر محين – والأضحىٰ على قيد رمح (اخرجه احمد بن حسن البناء) .


التكبير يكون فى الاولىٰ ثلاثا بعد تكبيرة الاحرام وقبل القراءة وفى الثانية ثلاثا بعد القرآن وقبل الركوع – يسن رفع يديه عند كل تكبيرة من تكبيرات الزوائد – ويستحب ان يفصل بينهما بقول ’’سبحان الله والحمدلله ولا اله الا الله والله اكبر‘‘ .


الافضل ان يكون التكبير سرا فى حال خروجه الى صلاة العيدين – ولايسن لها الاذان بل ينادى لها (الصلوة جامعة) .


وللعيدين سنة – ان يخطب الامام بعد صلاة العيد خطبتين وخطبة الجمعة مقدمة لانها شرط تكون قبل الصلوة واما خطبتى العيدين سنة فلذا تاخرها عن الصلاة .


ومنها أن خطبتى الجمعة تستفتح بالحمدلله واما خطبتى العيدين فانها تسفتح بالتكبير .


ومنها يسن التكبير فى العيدين وايام التشريق الثلاثة التى تلى عيد الاضحىٰ وهو الحادى عشروالثانى عشر والثالث عشر من شهر ذى الحجة .


ان التكبير فى عيد الفطر يبدأ من وقت الخروج للصلاة الى ابتداء الخطبة ويندب ان يكون سرا اوجهرا لقوله تعالى ’’ولتكملوا العدة ولتكبروا الله‘‘.


ويسن الغسل للعيدين ويندب لبس اجمل الثياب والتطيب روى الحاكم عن الحسن بن على بن ابى طالب رضى الله عنهما قال امرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ان نلبس اجود مانجد وان نتطيب باجود مانجد ويندب لمن جاء الى المصلى من طريق ان يرجع من أخر .


رواه البخارى عن جابر ورواه احمد ومسلم والترمذى عن ابى هريرة رضى الله عنه المبادرة بالخروج الى المصلى بعد صلوة الصبح فى مسجد حيه الا الامام فانه يندب له تاخير الخروج – ويجوز صلاتها فى المسجد ولكن اداءها فى المصلى خارج البلد افضل مالم يكن هناك عذركمطر ونحوه حيث ان الرسول صلى الله عليه وسلم كان يصلى العيدين فى المصلى ولم يصل العيد بمسجده الامرة واحدة لعذر المطر (رواه ابوداؤد وابن ماجه والحاكم عن ابى هريرة رضى الله عنه) .


يندب ان يأكل قبل خروجه الى المصلى فى صلاة عيد الفطر وان يكون الماكول تمرا – وان يكون وترا دون الاضحى .


ويندب ان يظهر البشاشة والفرح فى وجه من يلقاه من المؤمنين وان يكثر من عمل البروالاحسان بحسب طاقته – تستحب التهنئة بالعيد – فعن جبيربن نفير قال كان اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا التقوايوم العيد يقول بعضهم لبعض – تقبل الله مناومنك .


উভয় ঈদের নামাজ ওয়াজিব খুতবা সুন্নাত। কেননা আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘‘তোমার প্রতিপালকের জন্যে নামাজ আদায় কর ও কুরবানী কর’’। এ আয়াতে সালাত দ্বারা উদ্দেশ্য ঈদুল আজহার নামাজ। ‘‘যে ব্যক্তি পবিত্র করেছে স্বীয় আত্মাকে ও তাঁর প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে অত:পর নামাজ আদায় করে, সে সফলকাম হয়’’। এ আয়াতে সালাত দ্বারা ঈদুল ফিতরের নামাজ উদ্দেশ্য। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর খলিফাগণ তাঁর পরে আদায় করার দরুন এর সুন্নাত প্রমাণিত হয়। হিজরী সনের প্রথম বৎসর এর বিধান নাযিল হয়, কারো কারো মতে দ্বিতীয় সনে। ইহা দু’ রাকাত ও এর সময় সূর্য উদয়ের পর এক তীর বা দু’ তীর হওয়ার পর থেকে আরম্ভ হয় ঘন্টার এক তৃতীয়াংশ সমতুল্য পশ্চিম দিকে সূর্য ঢলার পূর্ব পর্যন্ত সময় থাকে। যেমন হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত নবী ঈদের দিন দু’রাকাত নামাজ আদায় করেন এর পূর্বে ও পরে কোন নামাজ পড়েন নি। (অনেক লোকই এ হাদীস রেওয়ায়ত করেন)


হযরত জুনদব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; নবী করিম (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতেন সূর্য যখন দু’ তীর পরিমাণ উঁচু হত। কোরবানী ঈদের নামাজ পড়তেন যখন সূর্য এক তীর পরিমাণ উঁচু হত। (আহমদ বিন হাসানুল বিনা রেওয়ায়ত করেন)


তাকবীরে তাহরিমার পর ক্বেরাতের পূর্বে প্রথম রাকাতে তিনটি তাকবীর বলতেন, দ্বিতীয় রাকাতে ক্বেরাতের পর রুকুর পূর্বে তিনটি তাকবীর বলতেন। অতিরিক্ত তাকবীর গুলোর সময় হাত উত্তোলন করা সুন্নাত। দু’তাকবীরের মাঝখানে ‘‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদু লিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর’’ বলে বিরতি নেয়া মুস্তাহাব। ঈদের নামাজের জন্য যাওয়ার পথে তাকবীর চুপে চুপে বলা উত্তম। উহার জন্য আজান দেয়া সুন্নাত নয় বরঙ আসসালাতু জামেয়াতুন বলার নিয়ম আছে।


উভয় ঈদের জন্যে ইমাম সাহেব ঈদের নামাজের পর দু’ খুতবা দেয়া সুন্নাত। জুমার খুতবা নামাজের পূর্বে দেয়া হয় কেননা উহা শর্ত তাই নামাজের পূর্বে দেয়া সুন্নাত বা যুক্তিসংগত। দু’ঈদের খুতবা সুন্নাত বিধায় উহা নামাজের পরে দেয়া যুক্তিযুকত। জুমার দুনো খুতবা আল্লাহ তায়ালার হামদ দ্বারা আরম্ভ করা সুন্নাত ও ঈদের উভয় খুতবা তাকবীর দ্বারা আরম্ভ করা সুন্নাত। ঈদের নামাজে ও তাশরীকের তিন দিন অর্থাৎ কোরবানী ঈদের পর এগার, বার ও তের তারিখ জিলহজ্ব মাসের তাকবীর বলা সুন্নাত। ঈদুল পিতরের তাকবীর নামাজে জন্য বরে হওয়ার সময় থেকে খুতবা শুরু করা পর্যন্ত উচ্চস্বরে বা চুপে চুপে পাঠ করা নুদব। আল্লাহ তায়ালার বাণী “ওয়ালে তুকমেলুল ইদ্দতা ওয়ালে তুকাব্বেরুল্লাহা” দ্বারা প্রমাণিত। উভয় ঈদের জন্য গোসল করা সুন্নাত, উত্তম কাপড় পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা মানদুব। হাকেম হযরত হাসান বিন আলী বিন আবু তালেব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে সাধ্যমত উত্তম কাপড় পরিধান করতে ও ভাল আতর ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ঈদের ময়দানে যে পথ দিয়ে গিয়েছে উহার ভিন্ন পথ দিয়ে আসা মানদুব। ইমাম বুখারী জাবের (رضي الله عنه) থেকে, আহমদ মুসলিম ও তিরমিজি আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন। ফজরের নামাজ মসজিদে আদায় করার পর ঈদগাহে তাড়াতাড়ি গমন করা তবে ইমাম সাহেব দেরীতে গমন করা মনদুব। ঈদের নামাজ মসজিদে পড়া জায়েজ তবে খোলা ময়দানে শহরের বাইরে কোন অপারগতা না থাকলে উত্তম। যেমন বৃষ্টি ও এ জাতীয় অন্যান্য সমস্যা। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঈদগাহতে ঈদের নামাজ পড়তেন মসজিদে পড়তেন না হ্যাঁ তবে একবার বৃষ্টির কারণে মসজিদে পড়েছেন। (আবু দাউদ, ইবনু মাজা, হাকেম হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণনা করেছেন)


ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে ঈদগাহে গমনের পূর্বে কিছু খাওয়া মনদুর এবং উহা খেজুর ও বেজোড় হওয়া নুদব কোরবানী ঈদে নয়। মুমিনের সাথে সাক্ষাত হলে আনন্দ ও খুশি মুখে সাক্ষাত করা ও সাধ্যানুযায়ী সাওয়াবের কাজ করা, দান করা ও শুভ সংবাদ দেয়া মুস্তাহাব। যেমন হযরত জুবাইর বিন নুফাইর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবাগণ ঈদের দিন পরস্পর সাক্ষাত হলে বলতেন, আল্লাহ তায়ালা আমাদের ও তোমাদের থেকে কবুল করুক।


সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামাজের বর্ণনা


بيان صلوٰة الكسوف والخسوف


اذا انكسف الشمس , او انخسف القمر, تسن صلوٰة ركعتين تاكيدا فى حق الرجال كهئية النفل لكسوف والا فضل ان تصلى جماعة بامام الجمعة اومامور السلطان بلا اذان والااقامة ولاجهر ولاخطبة وان كانت الجماعة ليست شرطا فيها بل ينادى لها ’’الصلوٰة جامعة‘‘ .


وتسن تطويلهما ركعوعهما من قيام واحد وركوع واحد وسجود كهئية النفل ثم يدعو الامام جالسا مستقبل القبلة ان شاء اوقائما مستقبل الناس وهو احسن – ودليلها لما روى عن النعمان بن بشير رضى الله عنه قال صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فى الكسوف نحو صلاتكم يركع ويسجد ركعتين ركعتين ويسأل الله حتى تجلت الشمس .


وفى حديث قبيصة الهلالى ان النبى صلى الله عليه وسلم قال اذا رأيتم ذلك فصلوها كما حدث صلوٰة صليتموها من المكتوبة كالظهر والعصر, فاذا رايتموهما فافز عوا الى الصلوٰة (رواه الشيخان) .


رواه احمد والنسائى وذلك فى صلوة الخسوف انه يجهر بالقرآة حيث انها تقع فى الليل .


وان لم تحضر الامام صلوها فرادى كاالظلمة والهائلة نهارا والريح الشديدة والفزع – ولاتشرع فيها الجماعة ولايسن ايقاعها فى الجامع .


যখন চন্দ্র, সূর্য গ্রহন হয় তখন দু’রাকাত নফল নামাজ বিশেষ করে পুরুষের জন্যে সুন্নাত। জুমার ইমামের সাথে জামাত সহকারে অথবা বাদশাহর অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাথে আজান, ইকামত, খুতবা ও উচ্চস্বরে ক্বেরাত বিহীন পড়া উত্তম। যদিও এতে জামাত শর্ত নয় তবুও “নামাজ অনুষ্ঠিত” হচ্ছে বলে ঘোষণা করবে।


এতে রুকু, সিজদা, কিয়াম দীর্ঘায়িত করে নফল নামাজের নিয়মে প্রত্যেক রাকাতে একটি করে রুকু একবার কিয়ামের সাথে পড়া সুন্নাত। অত:পর ইমাম কেবলামুখী হয়ে বসে দোয়া করবে। যদি ইচ্ছা করে মুসলি­দের সম্মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে দোয়া করবে, ইহা উত্তম। এর দলীল নোমান বিন বশিরের (رضي الله عنه) বর্ণিত হাদীস তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে সূর্য গ্রহনের নামাজ পড়েছেন; তোমাদের নামাজের ন্যায় রুকু ও সিজদার সাথে দু’রাকাত, দু’রাকাত করে এবং আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা করেন সূর্য পরিস্কার হওয়া পর্যন্ত। হযরত কুবাইচা আল হেলালী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদীস নবী করিম (ﷺ) বলেন যখন তোমরা ইহা দেখবে তখন সে নামাজ পড়বে যেমন নতুন নামাজের হুকুম হল যা তোমরা আদায় করছ নির্ধারিত সময়ের নামাজের ন্যায় যেমন জোহর ও আসরের নামাজ। অত:পর তোমরা উভয়কে গ্রহণ অবস্থায় দেখবে নামাজের মাধ্যমে এর প্রতিকার করবে। (বুখারী ও মুসলিম রেওয়ায়ত করেন)


ইমাম আহমদ ও নাসায়ী বর্ণনা করেন চন্দ্র গ্রহনের নামাজে ক্বেরাত উচ্চস্বরে পড়বে কেননা উহা রাত্রে হয়ে থাকে। ইমাম উপস্থিত না হলে লোকজন একাকী পড়বে যেমন অতিরিক্ত অন্ধকারের সময় এবং দিনের অধিক ভীতির সময়, জোরদার হাওয়া প্রবহনের সময় ও ভয়ের সময়। এতে জামাত মাকরূহ নয় জায়েজ, মসজিদেও সুন্নাত নয়।


বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ



باب صلاة الاستسقاء


الاستسقاء هوطلب سقى الماء من الله تعالى عند حصول الجذب وانقطاع المطروهى مندوبة – له صلوة من غير جماعة وله استغفار لايكبر تكبيرات الزوائد فى الصلوة الاانه يبدل التكبير الذى فى خطبة العيدين بالاستغفارهنا . 


ويندب ان تكون الخطبتان على الارض لا على المنبر – ويستحب اخراج الدواب والشيوخ الكبار والاطفال – ويندب ان يستقبل الامام القبلة – ويقوم رافعايديه والناس قعود مستقبلين القبلة – ويدعوالله بدعاء الاستسقاء – يقول اللهم اسقناغيثا مغيثا هنيئا مرئيا مريعا غدقا عاجلا مجللا سحّا طبقادائما (رواه ابن ماجه وابو عوانة) ما اشبهه سرا وجهرا.


او


الحمدلله رب العلمين الرحمن الرحيم مالك يوم الدين لااله الاالله يفعل مايريد – اللهم لااله الا انت, انت الغنى ونحن الفقراء انزل علينا الغيثَ – واجعل ما انزلته علينا قوة وبلاغا الى حين-


او


اللهم أسقنا ولاتجعلنا من القانطين – اللهم ان العباد والبلاد والبهائم والخلق من الاواء والجهد والضنك مالانشكوه الااليك – اللهم أنبت لنا الزرع واذرلنا الضرع واسقنا من بركات السماء وأنبت لنا من بركات الارض- اللهم ادفع عنا الجهدو الجوع والعزى واكشف عنا من البلاء مالايكشفه غيرك – اللهم انا نستغفرك انك كنت غفارا فأرسل السماءَ علينا مدرارا ويستحب ان يخرجوا مشاة فى ثياب خلقة متذللين متواضعين, خاشعين لله –


ومعهم الصبيان والشيوخ والعجائز , والدواب ويبعدون الرضع عن امهاتهم ليكثر الصياح – فيكون ذلك أدعى لرحمة الله تعالى ثم يصلى بهم صلاة الاستسقاء –


ويستحب قبل ذلك التوبة وردالمظالم والتصديق ومصالحة الاعداء وصوم ثلاثة ايام –


وان تأخر السقى سن تكرار الصلوٰة على الصفة المتقدمة حتى يأتى الغيث .



ইসতেসকা বলা হয় পানি সংগ্রহ করা, দু:সাধ্য হওয়ার সময় ও বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পানি প্রার্থনা করাকে, ইহা মনদুব। এ নামাজের জামাত নেই, ইহা দ্বারা মাগফিরাত কামনা করা হয়। এ নামাজে অতিরিক্ত তাকবীর নেই তবে সেখানে খুতবা দেয়ার সময় ঈদের খুতবার তাকবীরগুলো জমিনের উপর দাঁড়িয়ে দিবে মিম্বরের উপর নয়। এতে চতুষ্পদ জন্তু, আবাল বৃদ্ধ, শিশু সবাই যাওয়া মুস্তাহাব। ইমাম কিবামুখী হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত উত্তোলন করবে লোকজন বসা অবস্থায় কিবলামুখী হয়ে হাত উত্তোলন করে বৃষ্টির জন্য দোয়া করবে এবং বলবে হে আল্লাহ! আমাদের এমন বৃষ্টির পানি দান করুন যা আমাদের জন্য উপকার হয় আমাদের ক্ষেতখোলা তরুতাজা হয়, অতিশয় অদিক বৃষ্টি হয় যা সারা দেশে অবিরাম বর্ষণ করে, সর্বদা আমাদের অনুকুলে চাহিদা মোতাবেক হয়। অনুরূপ অন্যান্য দোয়া উচ্চস্বরে ও চুপে চুপে করবে। (ইবনু মাজা ও আবু আওয়ানা রেওয়ায়ত করেন) 


অথবা- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্যে যিনি সারা বিশ্বের প্রতিপালক, অতি দয়ালু পরম করুণাময় বিচার দিনের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই তিনি যা ইচ্ছা তা করেন। হে আল্লাহ! তুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তুমি ধনী আমরা গরীব। আমাদের জন্য বৃষ্টি বর্ষণ করুন এবং আমাদের উপর যা অবতীর্ণ করবেন তা যেন অতিশয় জীবিকা পৌঁছায় বা জীবিকা বহনকারী হয়।


অথবা- হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টির পানি দান করুন, নৈরাশ্যদের অন্তর্ভূক্ত কর না। হে আল্লাহ! নিশ্চয় তোমার বান্দা, তোমার দেশ, তোমার জীব-জন্তু তোমার সৃষ্টি বহু কষ্টে দুঃখে দুর্বল কাতর হয়ে আছে যার অভিযোগ একমাত্র তোমার নিকটই করি। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য শস্য ফসল উৎপন্ন করুন, স্তনে দুধ ভর্তি করুন, আকাশের বরকাত দিয়ে পিপাসা মিটিয়ে দিন, জমিনের বরকাত বৃদ্ধি করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের থেকে দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভিক্ষ দূরীভূত করুন, আমাদের থেকে এমন সংকট, মুসিবত দূর করে দিন যা আপনি ছাড়া কেউ দূর করতে সক্ষম নয়। হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল। আকাশকে আমাদের জন্যে বর্ষণ মুখর করুন। আল্লাহর জন্য ভীত, কোমল, অপমানিত অবস্থায় পুরাতন কাপড় পরিহিত পায়দল চলে বের হওয়া মুস্তাহাব। তাদের সাথে শিশুরা, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা ও চতুষ্পদ জন্তু থাকবে এবং নবজাতক শিশুদেরকে তাদের মাতাদের থেকে দূরে রাখবে যেন ক্রন্দন অধিক হয় ইহা বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত অধিক ধাবিত করে। অত:পর তাদেরকে নিয়ে ইস্তেসকার নামাজ আদায় রকবে। এ সবের পূর্বে তাওবা করে নেয়া, জুলুম করে নেয়া মাল ফিরায়ে দেয়া, শত্র“দের মুয়ামালা নিষ্পত্তি করে নেয়া এবং তিন দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। যদি বৃষ্টি বর্ষণে দেরী হয় তাহলে উপরোক্ত নিয়মে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত নামাজ বার বার পড়বে।


চাশ্তের নামাজের বর্ণনা


بيان صلواة الضحىٰ


ومن التطوع صلوٰة الضحىٰ – وهى سنة ويبتدئ وقتها من إرتفاع الشمس قدررمح الى زوالها – والافضل ان تؤدى بعد ربع النهار .


وأقلها ركعتين واكثر هاثمان ركعات اوست عشرة ركعة- فعن انس رضى الله عنه قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى الضحىٰ اثنتى عشرة ركعة بنى الله تعالىٰ له قصرا فى الجنة من ذهب (رواه الترمذى) .


وعن انس رضى الله عنه قال رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى سفر صلى سبحة الضحىٰ ثمانى ركعات فلما انصرف قال انى صليت صلواة رغبة ورهبة (رواه احمد والحاكم) .


চাশ্তের নামাজ এক প্রকার নফল নামাজ। ইহা সুন্নাত। ইহার সময় বর্শা নিক্ষেপের পরিমাণ সূর্য উঁচু হওয়া থেকে পশ্চিম দিকে ঢলে যাওযা পর্যন্ত দিনের এক চতুর্থাংশে আদায় করে নেয়া উত্তম। এর নিম্ন সংখ্যা দু’রাকাত ও অধিক আট বা ষোল রাকাত। যেমন হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি চাশতের বার রাকাত নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে স্বর্ণ দ্বারা একখানা বালাখানা তৈয়ার করবে। (তিরমিজি শরীফ)


হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে সফর অবস্থায় চাশতের আট রাকাত নামাজ আদায় করতে দেখেছি। নামাজ শেষে তিনি বলেন ভীতি ও আকৃষ্টের নামাজ আদায় করেছি। (আহমদ ও হাকেম)


রাত্রের নামাজের বর্ণনা


بيان صلوٰة اليل


ويندب صلوٰة الليل – وقتها يبدأ من بعد العشاء الى الفجر – وليس لها عدد مخصوص ولاحد معين – عن سمرة بن جندب رضى الله عنه قال أمرنا رسولُ الله صلى الله عليه وسلم أن نصلى من الليل ماقل اوكثر ونجعل آخر ذلك وترا (رواه الطبرانى والبزار) .


عن ابن عباس رضى الله عنهما قال امرنا رسولُ الله صلى الله عليه وسلم بصلاة الليل ورغب فيها حتى قال عليكم بصلوٰة الليل –


والافضل ان يكون فى الثلث الآخير من الليل – فعن ابى هريرة رضى الله عنه إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ينزل ربنا عزّ وجلّ كل ليلة الى سماء الدنيا حين يبقىٰ ثلث الليل الاخير – فيقول من يدعونى فاستجيب له من يسألنى فأعطيه من يستغفرنى فاغفرله (رواه الجماعة) 


রাত্রের নামাজ মনদুব। উহার সময় এশার নামাজের পর থেকে ফজর পর্যন্ত। উহার জন্যে সুনির্দিষ্ট কোন সংখ্যা কিংবা সীমারেখা নেই। হযরত সামুরা বিন জুনদাব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে হুকুম করেছেন যে কম বেশী যতটুকু সম্ভব রাত্রের নামাজ পড়ার জন্য এবং শেষে বিতির পড়ার জন্য। (তাবরানী ও বাজ্জার)


হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে রাতের নামাজের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সে ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করেছেন। এমন কি তিনি বলেন, তোমাদের উপর রাতের নামাজ আবশ্যক। এ নামাজ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আমাদের প্রভু আজ্জা ওয়াজাল্লা প্রত্যেক রাত্রে পৃথিবীর আকাশের প্রতি মনোনিবেশ করেন যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকী থাকে। অত:পর তিনি বলেন, যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাকে সাড়া দিই, যে আমার থেকে চাই আমি তাকে দান করি, যে আমার থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাকে আমি ক্ষমা করে দিই। (অনেক রাবী রেওয়ায়ত করেছেন)


তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের বর্ণনা


بيان صلوٰة تحية المسجد


ومن التطوع تحية المسجد وهى ركعتان فى غير وقت الكراهة وذالك لمارُوى عن أبى قتادة رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال إذاجآء أحدُكم المسجد فليصل سجدتين قبل ان يجلس (رواه الجماعة)


أما إذا دخل المسجد بعد خروج الخطيب على المنبر فلايصليهما وذالك لماروى عن عبدالله بن عمر رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم قال إذا دخل احدكم المسجد والامام يخطب فلا صلوٰة ولاكلام حتى يفرغ الامام (رواه الطبرانى) 


ويحصل ثوابها ان نواها – ولمن لم يتمكن من صلاتها ان كان وقت نكروها فأن يقول اربع مرات – سبحان الله والحمدلله ولا اله الا الله والله اكبر – وارجو ان شاء الله سقطت فعلها قبل الجلوس .


তাহিয়াতুল মসজিদের নামাজ নফল নামাজের অন্তর্ভূক্ত। ইহা দু’রাকাত নামাজ মাকরূহ ওয়াক্ত বিহীন যে কোন সময় পড়া যাবে। উহা হযরত আবু কতাদা (رضي الله عنه) এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকাত নামাজ আদায় করে। (অনেকেই ইহা রেওয়ায়ত করেন)


আর যদি খতিব মিম্বরে আরোহন করার পর মসজিদে দাখিল হয় তাহলে পড়বে না। ইহা হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আবদুল্লাহ বিন ওমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেন, ইমাম খুতবা দানকালে তোমাদের কেউ মসজিদে দাখিল হলে খুতবা শেষ না করা পর্যন্ত কোন নামাজ, কোন কথাবার্তা নেই। (তাবরানী রেওয়ায়ত করেন)


সে নিয়্যত দ্বারা উহার সওয়াব হাসিল করতে পারবে। যে ব্যক্তি মাকরূহ সময়ের কারণে উহার নামাজ আদায় করতে না পারে তাহলে সে চার বার কলিমা তামজিদ ‘‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদু লিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর’’ পড়লে বসার পূর্বে তাতে উহার সওয়াব লাভ করার আশা করা যায়।


পবিত্রতার নামাজের বর্ণনা


بيان سنة الطهارة


يندب صلوة ركعتين بعد الطهارة – والافضل أن يؤدى قبل ان تجف اعضاء الوضوء ولاتؤدى فى أوقات الكراهة – وذلك لماروى عن عقبة بن عامر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما احد يتوضا فيحسن الوضؤ ويصلى ركعتين يقبل بقلبه ووجهه عليهما الاوجبت له الجنة (رواه مسلم وابودؤد) .


পবিত্রতা অর্জনের পর দু’রাকাত নামাজ আদায় করা মনদুব। অজুর অঙ্গসমূহ শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে উহা আদায় করা উত্তম। মাকরূহ সময়ে উহা আদায় করবে না। যেমন হযরত ওকবা বিন আমের (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন তোমাদের মধ্যে যে কেউ যতœসহকারে অযু করে দু’রাকাত নামাজ একনিষ্ঠ অন্তরে ধ্যানের সাথে আদায় করে তার জন্য বেহেশত আবশ্যক হয়ে যাবে। (আবু দাউদ ও মুসরিম শরীফ)


ইস্তেখারার নামাজের বর্ণনা


بيان صلوٰة الاستخارة


ومن المندوب ركعتا الإستخارة – فيندب لمن أرادأمرا من الامور المباحة والتبس عليه وجه الخير فيه ان يصلى ركعتين يقرأ بماشاء بعدالفاتحة – ثم يحمدالله ويصلى على نبيه صلى الله عليه وسلم – ثم يدعو بالدعاء الماثور الآتى .


فعن جابر رضى الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعلمنا الاستخارة فى الامور كلها كما يعلمنا السورة من القرآن يقول فليركع ركعتين من غير الفريضة ثم ليقل اللهم انى استخيرك بعلمك واستقدرك بقدرتك- وأسئلك من فضلك العظيم – فانك تقدر والااقدر وتعلم ولا اعلم وانت علام الغيوب اللهم ان كنت تعلم انّ هذالامر (ويسمى حاجته). خير لى فى دينى ومعاشى وعاقبة أمرى او عاجل امرى وآجله فاقدره لى ويسرّه لى ثم بارك لى فيه وإن كنتَ تعلم ان هذا الامر شرلى فى دينى وماشى وعاقبة امرى اوقال عاجل امرى وآجله – فاصرفه عنّى واصر فنى عنه- واقدر لى الخير حيث كان ثم ارض به (رواه الجماعة سوى المسلم) .


মনদুব নামাজের এক প্রকার ইস্তেখারার নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি বৈধ বিষয়ের যে কোন বিষয় করার উদ্দেশ্য করলে এবং এতে সে ভাল দিক তালাশ করতে ইচ্ছুক হলে দু’রাকাত নামাজ আদায় করা মনদুব হবে। এতে ফাতেহার পর ইচছানুপাতে যে কোন সূরা পড়তে পারবে। অত:পর আল্লাহ তায়ালার হামদ আদায় করে দুরূদ শরীফ পাঠ করবে। এরপর নিম্নে বর্ণিত দোয়ায়ে মাসূরা পাঠ করবে। হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে প্রত্যেক বিষয়ে ইস্তেখারা শিক্ষা দিতেন যেভাবে আমাদেরকে কোরআনে পাকের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন ফরজ ব্যতীত দু’রাকাত নামাজ আদায় কর। অত:পর বল হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমারই জ্ঞানের মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করছি। তোমার ক্ষমতার মাধ্যমে তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তোমার মহান বদান্য থেকে প্রার্থনা করছি। কেননা তুমি সক্ষম আমি অক্ষম, তুমি জ্ঞাত আমি অজ্ঞাত, তুমি অদৃশ্য বিষয়ে অত্যধিক জ্ঞাত। যদি তোমার জানা থাকে অবশ্যই এ বিষয়ে (স্বীয় প্রয়োজন উলে­খ করবে আমার দ্বীন সম্পর্কে এবং ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে বা তাৎক্ষনিক বা পরবর্তীতে আমার জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে তা হলে উহা আমার জন্যে সহজ করে দিন ও তা পালন করার ক্ষমতা দান করুন। অত:পর এতে আমার জন্যে বরকত দান করুন।


আর যদি তোমার জ্ঞানে থাকে যে উহাতে আমার অমঙ্গল, অকল্যাণ নিহিত আছে আমার ইহকালীন বা পরকালীন, তাৎক্ষনিক বা পরবর্তীতে তাহলে আমার থেকে উহা সরিয়ে দিন ও আমাকে উহা হতে দূরে রাখুন এবং আমার কল্যাণ যেখানে নিহিত সেখানে যাওয়ার তৌফিক দান করুন এবং এতে সন্তুষ্ট থাকার ক্ষমতা দান করুন। (মুসলিম ব্যতীত সবাই রেওয়ায়ত করেন)


প্রয়োজন সমাধানে নামাজের বর্ণনা


بيان صلوٰة الحاجة


عن عبدالله بن أبى أوفى قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من كانت له الى الله حاجة أو الى أحد من بنى آدم- فليتوضأ وليحسن الوضؤ ثم ليصل ركعتين – ثم ليثن على الله تعالى وليصل على النبى صلى الله عليه وسلم ثم ليقل لا اله الا الله الحليم الكريم – سبحان الله رب العرش العظيم الحمدلله رب العلمين اسئلك موجبات رحمتك وعزائم مغفرتك والغنيمة من كل بر والسلامة من كل اثم لاتدَع لى ذنبا الاغفرتّه ولاهما الافرّجته ولاحاجة هى لك رضى إلا قضيتها ي ارحم الراحمين (رواه الترمذى) .


عن ابى الدرداء رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال من توضأ فاسبغ الوضؤ ثم صلى ركعتين يتمهما اعطاه الله ماسأل معجلا أومؤخرا  (رواه أحمد بسند صحيح) .


হযরত আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, কোন ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার প্রতি বা কোন বান্দার প্রতি কোন প্রকার প্রয়োজনের মুখাপেক্ষী হয় সে যেন উত্তম অজু করে দু’রাকাত নামাজ আদায় করেন। অত:পর আল্লাহ তায়ালার হামদ ছানা পাঠ করে নবী করিম (ﷺ) এর উপর দরূদ শরীফ প্রেরণ করে বলবে, ‘‘ধৈর্য্যশীল, দানশীল আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। সকল প্রকারের অপারগতা, দুর্বলতা হতে পবিত্র, মহান আরশের মালিক আল্লাহ তায়ালা। সমস্ত প্রশংসা সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্যে, আমি তোমার আবশ্যকীয় রহমত, অবধারিত ক্ষমা, প্রত্যেক পূণ্যময় কর্মের অমুখাপেক্ষী ও পাপকর্ম হতে নিরাময়ের দোহায় দিয়ে তোমার নিকট এ প্রার্থনা করছি যে, আমার কোন অপরাধ ক্ষমা ব্যতীত ছেড়ে দিবেন না, কোন দু:খ দুশ্চিন্তার নিষ্কৃতি প্রদান করা বিহীন রেখে দিবেন না এবং এমন প্রয়োজনীয় বিষয় যাতে তোমার সন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে তা পূরণ করা ব্যতীত রেখে দিবেন না, হে সকল অনুগ্রহ পরায়ণগণের সর্বাধিক অনুগ্রহশীল’’। (তিরমিজি শরীফ)


হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অতি উত্তম অজু করে দু’রাকাত নামাজ যতœসহকারে আদায় করেন আল্লাহ তায়ালা তার প্রার্থনা অনুপাতে তাৎক্ষনিক বা পরবর্তীতে দান করবেন। (আহমদ বিশুদ্ধ সনদে রেওয়ায়ত করেছেন)


সালাতুত্ তাসবীহের বর্ণনা


بيان صلوٰة التسبيح


تستحب صلوٰة التسبيح ولو فى العمر مرة لماروى عن عكرمة عن إبن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم للعباس بن عبد المطلب يا عباس ياعماه الآ اعطيك ألآ أمنحُك الا احبوك (اخصك) الا افعل بك عشرخصال إذأنت فعلت ذلك غفرالله لك ذنبك أوله وآخره, قديمه وحديثه وخطاءه وعمده وصغيره وكبيره وسره وعلانية عشر خصال الخ .


أن تصلى اربع ركعات, تقر أفى كل ركعة فاتحة الكتاب وسورة فاذا فرغت من القرآن فى اوّل ركعة فقل وانت قائم سبحان الله والحمدلله ولا اله الا الله والله اكبر خمس عشرة ثم تركع فتقول وانت راكع عشرا ثم ترفع رأسك من الركوع فتقولها عشرا ثم تهوى ساجدا فتقول وانت ساجد عشرا ثم ترفع راسك من السجود فتقو لها عشرا ثم اتسجد فتقولها عشرا ثم ترفع رأسك من السجود فتقولها عشرًا – ثم تسجد فتقولها عشرا – ثم ترفع راسك من السجود فتقولها عشرا فذلك خمس وسبعون فى كل ركعة تفعل ذلك فى أربع ركعات – وان استطعت أن تصليها فى كل يوم مرة فافعل فان لم تستطع ففى كل جمعة مرة – فان لم تفعل ففى كل سنة مرة – فان لم تفعل ففى عمرك مرة (رواه ابوداؤد وابن ماجه وابن خزيمة فى صحيحه والطبرانى) .


كيفية اخرىٰ لصلوة التسبيح .


يسبح قبل القرأة عشرا وبعد القرأة خمس عشر فيكون مجموع مايسبح بالقيام خمسا وعشرين تسبيحة ثم بفية الاركان عشر اعشرا – ويكون مجموع ماسبح فى صلوٰة التسابيح ثلثمائة تسبيحة فى كل ركعة خمسا وسبعون تسبيحة .


واذا شكّ فى العدد اثناء الصلوٰة بنى على اليقين وهو الاقل (والله ورسوله اعلم) .


জীবনে একবার হলেও সালাতুত্ তাসবীহের নামাজ মুস্তাহাব। যেমন হযরত ইকরামা হতে বর্ণিত তিনি হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত আব্বাস বিন আবদুল মোত্তালিবকে বলেছেন, হে আব্বাস! হে আমার চাচা! আমি কি আপনাকে এমন বিষয় জানিয়ে দিব? আমি কি আপনাকে সাহায্য করব? আমি কি আপনাকে বিশেষ করে জানাব? আমি কি আপনাকে এমন দশটি বিষয়ের ব্যাপারে বলে দেব? যা আপনি অবলম্বন করলে আল্লাহ তায়ালা আপনার পূর্বাপর নতুন, পুরাতন, ভুলবশত, ইচ্ছাকৃত, ছোট, বড়, গোপনে প্রকাশ্যে কৃত সকল পাপ দূরীভূত করে দিবেন। সে দশটি বিষয় যথাক্রমে, আপনি চার রাকাত নামাজ আদায় করবেন, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহা এবং অন্য একটি সূরা পাঠ করে প্রথম রাকাতে দাঁড়ানো অবস্থায় ‘‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদু রিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর’ পনর বার পড়বে। এরপর রুকু করবে ও রুকু অবস্থায় দশবার পড়বে। অত:পর রুকু থেকে মাথা উত্তোলন করে দাঁড়ানো অবস্থায় দশবার পড়বে। এরপর সিজদায় যাবে এবং সিজদারত অবস্থায় দশবার পড়বে। অত:পর সিজদা হতে মাথা উত্তোলন করে বসাবস্থায় দশবার পড়বে। এরপর দ্বিতীয় সিজদায় যাবে, এতেও দশবার পড়বে এবং সিজদা থেকে উঠেও দশবার পড়বে। উলে­খিত তাসবীহগুলো যোগ করলে পঁচাত্তর বার হয়। এ দোয়াটি চার রাকাত নামাজের প্রত্যেক রাকাতে এভাবে পড়তে হবে। যদি সম্ভব হয় প্রতিদিন একবার পড়বে। সম্ভব না হলে সপ্তাহে জুমার দিন একবার পড়বে। ইহাও সম্ভব না হলে বৎসরে একবার পড়বে। ইহাও সম্ভব না হলে জীবনে হলেও একবার পড়বে। (আবু দাউদ, ইবনু মাজা, ইবনু খজিমা স্বীয় সহীতে ও তাবরানী)


সালাতুত্ তাসবীহ আদায়ের দ্বিতীয় নিয়ম:


ক্বিরাত পাঠের পূর্বে তাসবীহ দশবার পাঠ করবে। ক্বিরাতের পরে পনর বার এভাবে দাঁড়ানো অবস্থায় মোট পঁচি বার এবং পরবর্তী আরকান সমূহে দশবার করে পাঠ করবে। সুতরাং সালাতুত্ তাসবীতে মোট তিনশ বার তাসবীহ প্রত্যেক রাকাতে পঁচাত্তর বার করে পাঠ করা হবে। নামাজরত অবস্থায় সন্দেহ হলে নিম্ন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে অবশিষ্টগুলো পাঠ করবে। (আল্লাহ তায়ালাই সর্বজ্ঞাত)


বিতিরের পর দু’রাকাত নামাজ পড়ার বর্ণনা


بيان الصلوٰة بعد الوتر ركعتين


ثبتت بروايات صحيحة انه صلى الله عليه وسلم كان يصلى بعد الوتر ركعتين. 


وفى صحيح مسلم عن عائشة رضى الله عنها انه صلى الله عليه وسلم كان يصلى ثلاث عشر ركعة يصلى ثمان ركعات ثم يوتر ثم يصلى ركعتين وهو جالس . 


وفى مسند الامام أحمد رحمة الله عليه روى عن ام سلمة انها قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصلى بعد الوتر ركعتين خفيفتين وهو جالس.


ابو أمامة يروى كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصلى ركعتين بعدالوتر وهو جالس .


يقرأ فيهما باذا زلزلت الارض الخ – وقل ياايها الكافرون الخ – وروى هذا المعنى ايضاجماعة من الصحابة غير من ذكرنا وظاهره معارض بحديث اجعلوا ’’اخر صلاتكم بالليل وترا‘‘ .


قال جماهير العلماء صلاها لبيان الجواز, ليعلم ان بعد الوتر يجوز صلوة النوافل – وان الوتر لايقطع صلوة النوافل – وعلى هذا يكون قوله اجعلوا آخر صلاتكم بالليل وترا – مبنيا على الاستحباب وهذه الصلوٰة ملحقة ومشفوعة بالوتر – وجارية مجرى سنة الوتر لاسيما على مذهب بوجوب الوتر .


ان صلوٰة المغرب وترالنهار مشفوعة من السنة بركعتين كذلك وترالليل ايضا مشفوع من السنة بركعتين (والله ورسوله اعلم هذا ماظهر لى والعلم عندالله) .


বিশুদ্ধ বহু রেওয়ায়ত দ্বারা প্রমাণিত অবশ্যই নবী করিম (ﷺ) বিতিরের পর দু’রাকাত নামাজ আদায় করতেন। সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আয়শা ছিদ্দিকা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত নবী করিম (ﷺ) তের রাকাত আদায় করতেন; প্রথমে আট রাকাত পড়তেন এরপর বিতির পড়তেন অত:পর দু’রাকাত বসা অবস্থায় পড়তেন। মুসনাদে ইমাম আহমদে হযরত উম্মে সালমা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিতিরের পর দু’রাকাত হালকাভাবে বসা অবস্থায় আদায় করতেন।


অনুরূপ হযরত আবু উমামাহ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিতিরের পর বসা অবস্থায় দু’রাকাত আদায় করতেন। উভয় রাকাতে প্রথমে ‘‘ইজাজুল জিলাতিল আরদু’’ দ্বিতীয় রাকাতে ‘‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরুন’’ পড়তেন। এ মর্মানুসারে হযরাত সাহাবায়ে কেরামের (رضي الله عنه) এক জামাতও আমাদের উলে­খ ব্যতীত বর্ণনা করেছেন। তবে এ সকল হাদীস প্রকাশ্যভাবে ‘‘তোমরা বিতিরকে রাতের শেষ নামাজ কর’’ হাদীসের সাথে বৈপরীত্য হয়েছে। জমহুর উলামায়ে কেরাম উহা বয়ানে জাওয়াজের জন্য পড়েছেন বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। যাতে বুঝা যায় বিতির নামাজের পরও নফল নামাজ জায়েজ আছে। বিতির নামাজ নফল নামাজকে বিচ্ছিন্ন করে না বরং উহার বৈধতা বিদ্যমান থাকে। সুতরাং এ ভিত্তিতে তাঁর (ﷺ) এর উক্তি ‘‘বিতিরকে রাতের নামাজের পরিসমাপ্তি কর’’ মুস্তাহাবের অর্থে ধরে নেয়া হবে। এ নামাজ বিতির নামাজের সাথে যুক্ত ও জোড়া নামাজ। এ নামাজ বিতির নামাজের সুন্নাতের স্থলাভিষিক্ত হবে বিশেষ করে যে মজহাব মতে বিতির ওয়াজিব। অবশ্যই মাগরিবের নামাজ দিনের বিতির জোড়া দু’রাকাত সুন্নাত অনুরূপ। রাতের বিতিরও দু’রাকাত সুন্নাতের সাথে জোড়া হয়েছে। (আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) অধিক জ্ঞাত ইহা আমার বুঝে যা আসছে, বাস্তব জ্ঞান আল্লাহর নিকট)


ক্বারীদের পদস্খলন তথা ভুল সম্পর্কীয় অধ্যায়


فصل فى بيان زَلّة القارى


زَلّة ماخوذة من زل فى مشيه فى الطريق – الاصل فيه انه ان لم يكن مثله فى القرآن والمعنى بعيدا متغيرا فاحشا تفسد صلوٰته كما اذا قرأ ’’هذا الغبار‘‘ مكان ’’هذا الغراب‘‘ وكذا اذالم يكن مثله فى القرآن ولا معنى له كما اذا قرأ ’’يوم تبلى السرائل مكان ’’السرائر‘‘ وان كان مثله فى القرآن والمعنى بعيد ولم يكن متغيرا فاحشا تفسد نحو ’’انا كنا غافلين‘‘ مكان ’’فاعلين‘‘ وهو الاحوط.


وقال بعضهم لاتفسد لعموم البلوى وهو قول ابى يوسف رحمةالله عليه وان لم يكن مثله فى القرآن ولكن لايتغيربه المعنى نحو قيامين مكان قوانين فالخلاف على العكس تفسد عند ابى يوسف رحمة الله عليه ولاتفسد عندهما –


ولايقاس مسائل زلة القارى بعضها على بعض الابعلم كامل فى اللغة – اى فى اللغة العربية والمعانى ونحو ذلك . وان بدل حرفا مكان حرف الاصل فيه ان كان بينهما قرب المخرج او كانا من مخرج واحد لاتفسد كما اذا قرأ فلاكهر بالكاف مكان فلا تقهر.


امّا اذاقرأ مكان الذال ظاء اومكان الضاد, ظاء او على القلب كما اذا قُرء ’’ المغظوب بمكان المغضوب‘‘ و ’’ظعف الحيوة‘‘ مكان ضعف تفسد صلاته على رأى اكثر الائمة .


وذكر فى الذخيرة اذا لم يكن بين الحرفين اتحاد فى المخرج ولاقربة الاانه فيه بلوىٰ عامة نحوان يأتى الذال مكان الضاد اويأتى بالزاء المحض مكان الذال او الظاء مكان الضاد لاتفسد عند بعض المشائخ .


وان كانت الكلمة بحرف البدل توجد فى القرآن نحو ان قُرء ’’تالمون‘‘ مكان ’’تعلمون‘‘ لاتفسد .


واما فى قطع الكلمة بان اراد ان يقول الحمدلله فقال الُ فانقطع ثم قال حمدلله – فقد كان الامام شمس الائمة الحلو انى يفتى بالفساد وعامة المشائخ قالوا : لاتفسد لعموم البلوى .


واما الوقف فلا يوجب فساد الصلوٰة ايضا لعموم البلوى عند عامة علمائنا.


وعند بعض العلماء تفسد نحوان يقرأ ’’لااله‘‘ ووقف وابتدأ ’’الاهو‘‘ اوقرأ ’’ولقد وصينا الذين اوتوا الكتاب من قبلكم‘‘ ووقف وابتدأ ’’واياكم ان اتقوا الله‘‘ – اوقرأ ويخرجون الرسول ووقف وابتدأ ’’واياكم ان تؤمنوا بالله ربكم‘‘ الى غير ذلك .


ولو وصل حرفا بكلمة من كلمة اخرىٰ بان قرأ ’’ايا كنعبد واياك نستعين‘‘ – أوقرأ ’’كالكوثر‘‘ اوقرأ ’’اذا جاء نصر الله‘‘ بوسل همزة جآء بنون نصرالله – وما اشبه ذلك لاتفسد على قول العامة .


وعلى قول بعض المشائخ تفسد وبعض المشائخ ان علم ان القرآن كيف هو – ان الكاف من الكلمة الاولىٰ لا من الثانية- الا انه جرى على لسانه هذا لاتفسد وان كان فى اعتقاده ان القرآن كذلك تفسد.


وذكر فى ’’الملقط‘‘ ولو قرأ الهمدلله بالهاء – اوقرأ ’’كل هوالله احد‘‘ بالكاف ولايقدر على غيره – وكذا لوقرأ ’’الخمدلله‘‘ بالخاء المعجمة تجوز صلاته.


فذكر محمد بن الفضل فى فتاواه ان الترك ليس فى لغاتهم حاء وانما فى لغتهم خاء – فاذا اقرأ تُركِى مكان الحاء خاء لم تفسد صلاته لانه لايمكنه اقامة الحاء الابمشقة فصارت هذه لغة – وكذلك فى كل اعجمى لايمكنه اقامته حرف الابمشقة وجهه – ولوقرأ ’’قل اهوذ‘‘ بالدال اوقرأ ’’فساء صباح المنذرين‘‘ بكسر الذال لاتفسد – ولوقرأ الالثغ باللام مكان الرب لاتفسد .


وعن ابى حنيفة رحمة الله عليه فيمن قرأ ’’واذا بتلى ابراهيم ربه‘‘ بضم الميم وفتح الباء – وقرأ ’’الخالق البارى المصور‘‘ بفتح الواؤ- ’’وهو يطعم ولايطعم‘‘ بفتح العين فى الاوّل وكسرها فى الثانى لاتفسد .


وان زادحرفا ان لم يتغير المعنى لاتفسد – وان غير المعنى نحو ان يقرأ ’’وانك لمن المرسلين‘‘ بزيادة الواؤ ’’وان سعيكم لشتى‘‘ بزيادة الواؤ قالوا تفسد صلاته لانه جعل جواب القسم قسما كذا ذكره قاضيخان وغيره .


وينبغى ان لاتفسد لانه ليس بتغير فاحش – وذكر فى زلة القارى للشيخ الامام حسام الدين ابى سعيد .


ولوقرأ ’’الله السمد‘‘ بالسين لاتفسد لانه لغة فيها وهذا اختيار نجم الدين النسفى – ومن اختيار بعض المتاخرين من عدم الفساد فيما اذا كان الخرج قربا – كما فى الذخيرة – ولان السمد بالسين هو السمد (السيد) فلا تفسد بالشك ولوقرأ ’’عتى‘‘ مكان ’’حتى‘‘ لاتفسد – ولو قال سمع الله لمل حمده يرجى انه لاتفسد .


ولوقرأ ’’يدع اليتيم‘‘ بتسكين الدال اوضم الدال وترك التشديد لاتفسد لقرب المخرج وحكمه حكم الالثغ وعموم البلوى وفيه نظر, وحكمه اليه قاضيخان بالفساد فى تسكين الدال بخلاف ترك التشديد فانه لايتغير المعنى.


وان قرأ ’’ان الذين امنو وعملوالصالحات‘‘ ووقف وقرأ ’’اولئك اصحب الجحيم‘‘ لاتفسد لان الكلام الثانى مبتدأ به غير متصل بالاول فلا يتعين الحكم بالضد .


ولو لم يقف ووصل عامة المشائخ تفسد – لان هذا ليس بقرآن لانعه اخبار بخلاف ما اخبرالله تعالى ليس بذكر ولو اعتقده يكون كفرا- وجعل قاضيخان هذا الاصح وصاحب الخلاصة الصحيح .


وعن عبدالله بن مبارك وابى حفص الكبير ومحمد بن المقاتل انه لا تفسد لان فيه ضرورة سبق اللسان وقال قاضيخان الصحيح هوالاول – ولوقرآ ’’ان الله برئ من المشركين ورسوله‘‘ بكسر اللام لاتفسد عند المتأخرين- واما عند المتقدين فذكر قاضيخان فيه الفساد – لان اعتقاده كفر لكن ذكر فى الكشاف انه قراءة – والجر على رسوله على القسم او على الجوار .


ولو قرأ ’’انا كنا منذرين‘‘ بفتح الذال تفسدقطعا عندالجمهور واما عند غيرهم فلا تفسد قطعا ولاظنا (حليه) .


وذكر فى الفتاوىٰ قاضى خان- ولوقرأ ’’يدع اليتيم‘‘ بتسكين الدال تفسد – وكذا لوقرأ يتخلون بالتاء مكان يدخلون تفسد لانه عكس المراد.


ولو قرأ ’’اناخلقنا‘‘ مكان ’’جعلنا‘‘ او قرأ ’’اياك نعبد‘‘ بغير التشديد لاتفسد عندا لمتأخرين والصحيح انها تفسد اتفاقا .


ولوقرأ ’’ما اضترر تم‘‘ بالتاء مكان ’’ما اضطررتم‘‘ بالتاء مكان ’’ما اضطررتم‘‘ لاتفسد لان الطاء بدلا عن التاء .


ولو قرأ ’’ما اضترزتم‘‘ بالزاء اوبالظاء اوبالذال تفسد لبع الفاحش.


ولو قرأ ’’الا من ختف الختفة‘‘ بالتاء فيهما تفسد لعدم المعنى .


ولو قرأ ’’فهل عصيتم‘‘ بالصاد لاتفسد لان السين والصاد قريب المخرج.


ولو قرأ ’’الشيتان‘‘  بالتاء لاتفسد .


ولو قرأ ’’قل هو الله احت‘‘ بالتاء تفسد لعدم المعنى .


ولوقرألاى ’’اللهم صل على محمد‘‘ بالسين لاتفسد لصحة كونه من السلوان وعلى بمعنى الباء اى سَلنا بمحمد صلى الله عيه وسلم من غيره من أمور الدنيا (صغيرى)


ولوقرأ ’’ماودعك‘‘ بترك التشدين لاتفسد لانه بمعنى الترك ولوترك التشديد بالرب تفسد لعدم المعنى .


ولو قرأ ’’الم يجعل كيدهم فى تظليل‘‘ بالظاء تفسد لفساد المعنى ههنا .


ولوقرأ بالذال لاتفسد لبعد الفاحش فى الاوّل وصحة المعنى فى الثانى (كبيريى) .


ولو قال ’’حمالة الحتب‘‘ بالتاء تفسد وقد تقدم .


ولوقرآ من الجنة والناس بفتح الجيم لاتفسد .


فقط والله اعلم .


تمت والله اعلم


بوقت ليلة السبت  فى عشر ساعات وار بعين دفيقة من شهر ২৬ ربيع الاوّل الشريف ১৪৩১ هجرى .


زلة শব্দটি রাস্তায় চলার পথে পদস্খলন অর্থ হতে নির্গত হয়েছে। এ ব্যাপারে মূল নিয়ম হচ্ছে- যদি কেউ এমন ক্বিরাত পাঠ করে যার সমতুল্য শব্দ কোরআন শরীফে নেই এবং অর্থের দিক দিয়েও কোন ধরণের সমাঞ্জস্য নেই বরং খুবই বখাতে পরিবর্তন তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। যেমন- কেউ ফাসেদ হবে না। যেমন- فلاتقهر এর স্থানে كاف দ্বারা পরিবর্তন করে فلا تكهر উচ্চারণ করা। আর যদি ذال এর স্থানে ظاء বা ضاد এর স্থানে ظاء কিংবা এর বিপরীত পাঠ করে যেমন- المغضوب এর স্থানে المغظوب পাঠ করলে এবং ظعف الحيوة পাঠ করা ضعف এর স্থানে; এতে অধিকাংশ ইমামের মতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। الذخيرة নামক গ্রন্থে উলে­খ করা হয়েছে যদি উভয় হরফের মাখরাজ ভিন্ন না হয় এবং পরস্পর নিকটবর্তী মাখরাজেরও না হয় তবে এ জাতীয় ভুল ব্যাপকভাবে হয়ে থাকলে যেমন- ضاد এর স্থানে ذال নিয়ে আসে বা ذال এর স্থানে زاء নিয়ে আসা বা ضاد এর স্থানে ظاء নিয়ে আসা; কতিপয় ইমামদের মতে নামাজ ফাসেদ হবে না। যদি শব্দের পরিবর্তিত বর্ণ কোরআনের মধ্যে পাওয়া যায় যেমন- تعلمون এর স্থানে تالمون পড়া হয় নামাজ ফাসেদ হবে না। শব্দকে বিচ্ছিন্ন করাতে যেমন- কেউ الحمدلله পাঠ করতে গিয়ে ال বলে স্তব্ধ হয়ে যায় পরবর্তীতে বলে حمدلله এ জাতীয় ভুলের ব্যাপারে ইমাম শামসুল আয়িম্মা আল হালওয়ানী (رحمة الله) এর মতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে অধিকাংশ মশায়েখের মতে এ জাতীয় ঘটনা ব্যাপকহারে পাওয়া যাওয়ার দরুণ ফাসেদ হবে না। ওয়াকফ করা এতে আমাদের ওলামাদের মতে এ জাতীয় ভুল ব্যাপক হওয়ার কারণে নামাজ ফাসেদ হবে না।


কতিপয় ওলামাদের মতে ফাসেদ হয়ে যাবে। যেমন- لااله পাঠ করে থেমে যাওযা এবং পরবর্তীতে الاهو বলা বা ’’ولقد وصينا الذين اوتوا الكتاب من قبلكم‘‘ পড়ে থেমে যাওয়া পরবর্তীতে واياكم ان اتقوا الله থেকে আরম্ভ করা অনুরূপ ويحرجون الرسول বলে থেমে যাওয়া এবং পরবর্তীতে واياكم ان تومنوا بالله ربكم থেকে আরম্ভ করা এ জাতীয় আরো অন্যান্য। কেউ এক শব্দের বর্ণকে অন্য শব্দের সাথে মিলায়ে পড়লে যেমন- ’’اياكنعبد واياك نستعين‘‘ (كاف বর্ণকে نون এর সাথে মিলায়ে) বা كالكوثر বা ’’اذاجاء نصرالله‘‘ جاءএর همزه কে نصرالله এর نون এর সাথে মিলায়ে পড়লে এ জাতীয় আরো অন্যান্যগুলো পাঠ করলে অধিকাংশ ইমামের মতে নামাজ ভঙ্গ হবে না। কতিপয় ইমামদের মতে ভঙ্গ হয়ে যাবে। কোন কোন ইমামের মতে যদি তেলাওয়াতকারী জানে কোরআনে كاف টি কিভাবে? অবশ্যই كاف টি প্রথম শব্দের সাথে, দ্বিতীয় শব্দের সাথে নয়; ইহা জানা সত্তে¡ও তার মুখ দিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে এরকম উচ্চারিত হয়ে গিয়েছে তাহলে নামাজ ভঙ্গ হবে না। তার বিশ্বাস যদি সেভাবে হয় যেভাবে তিনি পাঠ করেছেন তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। الملقط গ্রন্থে বর্ণিত, যদি الهمدلله - هاء হাওয়াজের সাথে বা كاف ’’كل هوالله احد‘‘ এর সাথে পড়ে, সে এছাড়া অন্যাবে পড়তে সক্ষম নয়; অনুরূপভাবে خاء ’’الخمد لله‘‘ মুজমার সাথে পাঠ করে তার নামাজ জায়েজ হবে।


মুহাম্মদ বিন ফদল (رحمة الله) তাঁর ফতাওয়া কিতাবে উলে­খ করেন যে তাদের অভিধান মতে বর্জনকৃত বর্ণ حاء নয় বরং উহা خاء মুজমই। অতএব বর্জনকৃত حاء এর স্থলে خاء পাঠ করাতে নামাজ ফাসেদ হবে ন্ াকেননা حاء উচ্চারণ করা কষ্টকর ব্যাপার; তাই তাদের লুগাত মোতাবিক হবে। অনুরূপভাবে প্রত্যেক অনারবী ভাষায় কোন বর্ণ উচ্চারণ কষ্ট বিহীন না হয় যেমন- ’’قل اهود‘‘ কে دال এর সাথে পাঠ করে কিংবা ’’فساء مباح المنذرين‘‘ আয়াতে ذال কে জ্বেরের সাথে পাঠ করলেও ফাসেদ হবে না। الرب এর স্থানে الالثغ পাঠ করলেও ফাসেদ হবে না।


হযরত ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হতে বর্ণিত আছে সে ব্যক্তির ব্যাপারে যে ’’واذا بتلى ابراهيم ربه‘‘ আয়াতে ابراهيم এর মিমে পেশের সাথে এবং ربه এর باء তে জবর যোগে ’’الخالق البارى المصور‘‘ আয়াতে المصود এর واؤ তে জবর যোগে ’’وهو يطعم ولايطعم‘‘ আয়াতে প্রথম يطعم এর عين এ জবর যোগে ও দ্বিতীয় এর عين এ জ্বের যোগে পাঠ করে নামাজ ফাসেদ হবে না। কোন হরফ অতিরিক্ত পড়ার দরুণ অর্থের পরিবর্তন না হলে নামাজ ফাসেদ হবে না। অর্থ পরিবর্তন হলে যেমন- ’’وانك لمن المرسلين‘‘ এ واؤ বৃদ্ধি করে واؤ ’’وان سعيكم لشتى‘‘  বৃদ্ধি করে পড়লে তাঁরা নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে বলে মত ব্যক্ত করেছেন। কেননা এতে পাঠক শপথের প্রতি উত্তর বাক্যকে শপথ বাক্যের পরিণত করেছে। অনুরূপ ফতাওয়া কাদিখান ও অন্যান্যরা উলে­খ করেছেন এতে ফাসেদ না হওয়াই উচিত কেননা বখাটে পরিবর্তন হয়নি। শেখ ইমাম হুসামুদ্দিন আবু সাঈদ ‘‘ক্বারীর পদস্খলন’’ অধ্যায় উলে­খ করেছেন কেউ سين ’’الله السمد‘‘ এর সাথে পড়লে নামাজ ফাসেদ হবে না। কারণ উহাতে তাদের ভাষা। (অর্থাৎ সে শব্দের উচ্চারণের ক্ষেত্রে) ইহা হযরত নজমুদ্দিন নাসফিরও অভিমত। পরবর্তী কতিপয় ইমামগণের ইখতিয়ারকৃত মাতানুসারে এমন জায়গায় ফাসেদ হবে না যাতে নিকটবর্তী মাখরাজ হয়ে থাকে যেমন জখিরা কিতাবেও উলে­খ আছে। কেননা السمد শব্দ سين এর সাথে এর অর্থ السيد (সরদার) অতএব নামাজ সন্দেহের কারণে ফাসেদ হবেনা। حتى এর স্থানে حتى পাঠ করলে নামাজ ফাসেদ হবে না। ’’سمع الله لمل حمده‘‘ বললে আশা করা যায় ফাসেদ হবে না। ’’يدع اليتيم‘‘ এ دال বর্ণে সাকিনের সাথে বা دال এ তাশদীদ বিহীন পেশের সাথে পাঠ করলে নিকটবর্তী মাখরাজ হওয়ার কারণে ফাসেদ হবে না। উহার হুকুম الثغ এর হুকুমের ন্যায়। عموم بلوى এর কারণে এ মাসয়ালাতে সূ² বিষয় রয়েছে। হযরত কাদিখান (رحمة الله) এতে নামাজ ফাসেদ হওয়ার হুকুম প্রদান করেছেন। دال বর্ণ সাকিন পড়ার বেলায় تشديد বর্জন করার বিপরীত; কেননা تشديد বর্জন করাতে অর্থের পরিবর্তন হয় না। কেউ ان الذين امنوا وعملوا الصالحات পর্যন্ত পড়ে ওয়াকফ করে এর পর اولئك اصجاب الجحيم পাঠ করে এতেও নামাজ ফাসেদ হবে না। কেননা দ্বিতীয় কালাম (বাক্য) যেখান থেকে শুরু করা গিয়াছে সেখান থেকে আরম্ভ হয়েছে প্রথমের সাথে সংযুক্ত নয়। অতএব বিপরীতের দ্বারা হুকুম নির্দিষ্ট হবে না। ওয়াকফ না করে সংযুক্ত করলে অধিকাংশের মতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। কারণ ইহা কোরআন নয় বরং খবর যা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে দেয়া খবরের বিপরীত। ইহা জিকির নয়; যদি কেউ উহাকে জিকির বলে বিশ্বাস করে কাফের হয়ে যাবে। কাদিখান প্রণেতা ইহাকে বিশুদ্ধ বলেছেন ও খোলাসার প্রণেতা শুদ্ধ বলেছেন। আবদুল্লাহ বিন মোবারক, আবু হাফস কবির ও মুহাম্মদ বিন মোকাতেল প্রত্যেকের মতে ফাসেদ হবে না। কেননা এতে অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেক সময় মানুষের মুখ দিয়ে চলে আসে। কাদিখান প্রণেতা বলেন, প্রথমটি বিশুদ্ধ মত। কেউ رسوله ’’ان الله برئ من المشركين ورسوله‘‘ শব্দের لام অক্ষরে জ্বেরের সাথে পড়ে পরবর্তী ইমামগণের মতে নামাজ ফাসেদ হবে না কিন্তু পূর্ববর্তী ইমামগণ যেন কাজীখান প্রণেতা এতে ফাসেদ হওয়ার মত পোষণ করেন। কেননা এর ইতেকাদ (বিশ্বাস) কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। কাশ্শাফ প্রণেতা উলে­খ করেছেন ইহাও এক প্রকার কিরাত অর্থাৎ رسوله শব্দের জ্বের শপথের উপর ভিত্তি করে বা পার্শ্ববর্তীর অনুসরণের ভিত্তিতে পাঠ করা যায়। (আতফ হওয়ার কারণে নয়) اناكنا منذرين আয়াতে ذال বর্ণ জ্বর যোগে পাঠ করা হলে জামহুর ইমামগণের মতে ফাসেদ হয়ে যাবে অন্যান্যদের মতে নিঃসন্দেহে ও সন্দেহর ভিত্তিতে ফাসেদ হবে না। (হুলিয়া) 


ফতাওয়া কাজীখানে উলে­খ করা হয়েছে ’’يدع اليتيم‘‘ এ دال কে সাকিন যোগে পড়া হলে ফাসেদ হবে। অনুরূপভাবে يدخلون এর স্থানে دال ’’يتخلون‘‘  কে تاء দ্বারা পরিবর্তন করে পড়লে ফাসেদ হয়ে যাবে কেননা এতে উদ্দেশ্যের বিপরীত হয়।


’’جعلنا‘‘ এর স্থানে ’’انا خلقنا‘‘ বা ’’اياك نعبد‘‘ তাশদীদ বিহীন পরবর্তী ইমামগণের মতে নামাজ ফাসেদ হবে না। বিশুদ্ধ মতানুসারে সকলের ঐক্যমতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। ’’ما اضطررتم‘‘ এর تاء ’’ما اضتررتم‘‘ এর সাথে পড়লে নামাজ ফাসেদ হবে না। কেননা طاء বর্ণটি تاء বর্ণ হতে পরিবর্তন হয়ে এসেছে।


ذاء ’’ما اضتررتم‘‘ এর সাথে বা ظاء এর সাথে বা ذال এর সাথে পাঠ করলে ফাসেদ হয়ে যাবে বখাটে ভুলের কারণে। ’’الا من ختف الحتفة‘‘ উভয় শব্দে تاء যুক্ত করে পাঠ করে র্থ বিহীন হওয়ার কারণে এতেও ফাসেদ হয়ে যাবে। صاد ’’فهل عصيتم‘‘ যোগে নামাজ ফাসেদ হবে না কেননা سين ও صاد হল কাছাকাছি মাখরাজের। ’’شيتان‘‘ কে تاء যুক্ত করে পাঠ করলে ফাসেদ হবে না। تاء ’’قل هو الله احت‘‘ যুক্ত করে পাঠ করলে অর্থ বিহীন হওয়ার কারণে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। سين ’’اللهم صل على محمد‘‘ যুক্ত করে পাঠ করলে ফাসেদ হবে না। سلوان শব্দ থেকে নির্গত হওয়ার কারণে শুদ্ধ হবে; এমতাবস্থায় على শব্দটি باء এর অর্থে হবে। তখন সম্পূর্ণ বাক্যের অর্থ হবে سلنا بمحمد صلى الله عليه وسلم পার্থিব ব্যাপারে ব্যতীত অন্যান্য ব্যাপারে আমাদেরকে তাঁর সাথে জড়িয়ে দিন।


’’ماودعك‘‘ কে তাশদীদ বিহীন পড়লে ফাসেদ হবে না। কেননা এর অর্থ ছেড়ে দেয়া। رب শব্দতে তাশদীদ বিহীন পাঠ করা হলে অর্থ বিহীন হওয়ার কারণে ফাসেদ হয়ে যাবে। ظاء ’’الم يجعل كيدهم فى تظلل‘‘ এর সাথে পাঠ করলে অর্থ ফাসেদ হওয়ার কারণে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। ذال এর সাথে পাঠ করলে ফাসেদ হবে না। প্রথমটিতে অত্যন্ত ফাহেস অর্থ হওয়ার দরুণ দ্বিতীয়টিতে অর্থ শুদ্ধ হওয়ার দরুণ। (কবিরী) ’’حمالة الحتب‘‘ কে تاء এর সাথে পড়লে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। এর কারণ উপরে বলা হয়েছে। ’’من الجنة والناس‘‘ কে جيم এ জবরের সাথে পাঠ করলে নামাজ ফাসেদ হবে না। 


আল্লাহ তায়ালাই প্রকৃত রহস্য জ্ঞাত।


কল্যাণ কামনা করে শেষ করলাম।



সমাপ্ত




Top