শবে বরাতের রোজা ও নফল নামাজের ব্যাপারে
ইমাম ইবনে মাজাহ আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজিদ কাযবিনী (র:) ওফাত ২৭৩ হিজরী, ইমাম আবু বকর বায়হাক্বী (র:) ওফাত ৪৫৮ হিজরী বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلَّالُ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ: أَنْبَأَنَا ابْنُ أَبِي سَبْرَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا نَهَارَهَا، فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا، فَيَقُولُ: أَلَا مِنْ مُسْتَغْفِرٍ لِي فَأَغْفِرَ لَهُ أَلَا مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلَا مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلَا كَذَا أَلَا كَذَا، حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ
-“হযরত আলী ইবনে আবী তালেব (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যখন শাবানের মধ্যবর্তী রাত আসে, তখন তোমরা রাতের বেলা নফল নামাজ পড় ও দিনের বেলায় রোজা রাখ। কেননা মহান আল্লাহ সূর্য অস্ত যাওয়ার পরপর পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেন: কে আছ ক্ষমা প্রার্থী? তাকে ক্ষমা করা হবে। কে আছ রিজিকের তালাশী? তাকে রিজিক দেওয়া হবে।..... এমনকি ফজরের পূর্ব পর্যন্ত ডাকতে থাকেন।” ৫৮৮৮৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, ৯৯ পৃ: হাদিস নং ১৩৮৮; ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ১৪০২ পৃ: হাদিস নং ৩৫৫৫; আমালী ইবনে বাশারানে, ৭০৩; মেসকাত শরীফ, ১১৫ পৃ: হাদিস নং ১৩০৮; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ৮২ পৃ:; ইমাম মুনজেরী: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, হাদিস নং ১৫৫০; ইমাম বায়হাক্বী: ফাদ্বায়েলে আওকাত, হাদিস নং ২৪; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ১৪১৮; কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৩৫১৭৭; মাদারে যুন্নবুয়্যাত, ১ম খন্ড; মেরকাত শরহে মেসকাত, ৩য় খন্ড, ৩৪৯ পৃ:; তাফছিরে কুরতবী, ১৬ তম খন্ড, ১০১ পৃ:; তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ২৫ তম জি: ১৪৯ পৃ:
এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে হাফিজুল হাদিস, ইমাম আবুল ফজল যায়নুদ্দিন ইরাকী (র:) বলেন,
إِذا كَانَت لَيْلَة النّصْف من شعْبَان فَقومُوا لَيْلهَا وصوموا نَهَارهَا وَإِسْنَاده ضَعِيف.
-“যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ।’ ইহার সনদ দ্বায়িফ।” ৫৮৯৮৯, হাফিজ ইরাকী: তাখরিজু আহাদিসিল এহইয়া, ১ম খন্ড, ২৪০ পৃ:;
এই হাদিস সম্পর্কে শারিহে বুখারী ইমাম বদরুদ্দিন আইনী (র:) বলেছেন:
وروى ابْن مَاجَه من رِوَايَة ابْن أبي سُبْرَة عَن إِبْرَاهِيم بن مُحَمَّد عَن مُعَاوِيَة بن عبد الله بن جَعْفَر عَن أَبِيه عَن عَليّ بن أبي طَالب، كرم الله وَجهه، قَالَ: قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: (إِذا كَانَت لَيْلَة النّصْف من شعْبَان فَقومُوا لَيْلهَا وصوموا نَهَارهَا، فَإِن الله تَعَالَى ينزل فِيهَا لغروب الشَّمْس إِلَى سَمَاء الدُّنْيَا فَيَقُول: ألاَ مَن يستغفرني فَأغْفِر لَهُ؟ أَلا من يسترزق فأرزقه؟ ألاَ من مبتلَى فأعافيه؟ ألاَ كَذَا؟ ألاَ كَذَا؟ حَتَّى يطلع الْفجْر) . وَإِسْنَاده ضَعِيف،
-“ইমাম ইবনু মাজাহ (র:) ইবনু আবী ছুবরা এর রেওয়ায়েত ইব্রাহিম ইবনু মুহাম্মদ হতে, তিনি মুয়াবিয়া ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনে জাফর হতে..... । ইহার সনদ দ্বায়িফ।” ৫৯০৯০, ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ১১তম খন্ড, ৮২ পৃ: بابُ صَوْمَ شَعْبَانَ;
এই হাদিস সম্পর্কে বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, সর্বপ্রথম বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার, ইমাম ইবনু রজব হাম্বলী (র:) বলেছেন,
ففي سنن ابن ماجه بإسناد ضعيف عن علي عن النبي صلى الله عليه وسلم: "إذا كان ليلة نصف شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها فإن الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس إلى السماء الدنيا فيقول: ألا مستغفر فأغفر له ألا مسترزق فأرزقه ألا مبتلي فأعافيه ألا كذا ألا كذا حتى يطلع الفجر"
-“সুনানু ইবনে মাজাহ’র মধ্যে হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে দ্বায়িফ সনদে রয়েছে: যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ।’... ।” ৫৯১৯১, ইমাম ইবনু রাজব: লাতাইফুল মাআরিফ, ১ম খন্ড, ১৩৬ পৃ:;
শারিহে বুখারী ইমাম শিহাবুদ্দিন কাস্তালানী (র:) বলেছেন,
وفي سنن ابن ماجه، بإسناد ضعيف، عن علي مرفوعا: "إذا كان ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارا، فإن الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس إلى سماء الدنيا، فيقول: ألا مستغفر فأغفر له، ألا مسترزق فأرزقه، ألا مبتلى
-“সুনানু ইবনে মাজাহ’র মধ্যে হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে দ্বায়িফ সনদে মারফূ রুপে রয়েছে: যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ।’... ।” ৫৯২৯২, ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৩য় খন্ড, ৩০০ পৃ:;
প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ ইমাম আব্দুল বাক্বী যুরকানী (র:) তদীয় কিতাবে বলেছেন,
وفي سنن ابن ماجه بإسناد ضعيف كما جزم به المنذري والعراقي مُبَيِّنًا وَجْهَ ضعفه، لكن ليس فيه كذاب ولا وَضَّاعٌ وله شواهد تدل على ثبوت أصله، عن علي أمير المؤمنين "مرفوعا" عن النبي صلى الله عليه وسلم: إذا كان" كذا في النسخ،..
-“সুনানু ইবনে মাজাহ’র মধ্যে দ্বায়িফ সনদে মারফূ রুপে রয়েছে। যেমনটা ইমাম মুনজেরী (র:) ও ইমাম ইরাকী (র:) দৃঢ়তার সাথে ইহাকে স্পষ্ট করেছেন এবং ইহাকে দ্বায়িফ বলেছেন। কেননা ইহার মধ্যে কোন মিথ্যাবাদী ও মিথ্যা হাদিস বর্ণনাকারী নেই, বরং ইহার বহু শাওয়াহিদ বা সাক্ষ্য রয়েছে যার দ্বারা ইহার ভিত্তি সাব্যস্থ হয়। আমিরুল মু’মেনীন হযরত আলী (رضي الله عنه) হযরত রাসূলে আকরাম (ﷺ) থেকে মারফূ রুপে বর্ণনা করেন, যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ।” ৫৯৩৯৩, ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহেব, ১০ম খন্ড, ৫৬১ পৃ:;
হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (র:) বলেছেন,
إذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها وإسناده ضعيف
-“যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। ইহার সনদ দ্বাায়িফ।” ৫৯৪৯৪, ইমাম গাজ্জালী: এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন;
এ বিষয়ে প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ ইমাম বুছিরী (র:) বলেছেন,
قال في الزوائد: إسناده ضعيف، لضعف ابن أبي بسرة، واسمه أبو بكر بن عبد الله بن محمد أبي بسرة.
-“জাওয়াইদ গ্রন্থে গ্রন্থকার বলেছেন: এর সনদ দ্বায়িফ । ইবনে আবী ছাবরা এর দুর্বলতার কারণে। তার মূল নাম হল, আবু বকর ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আবী ছাবরা।” ৫৯৫৯৫, আহাদিসুল কুদসিয়া, হাদিস নং ৭৩;
লা-মাজহাবী কাজী শাওকানী তদীয় গ্রন্থে হাদিসটিকে
إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا نَهَارَهَا ضَعِيفٌ.
-“যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। ইহার সনদ দ্বাায়িফ।” ৫৯৬৯৬, ফাওয়াইদুল মাজমুয়া, ১ম খন্ড, ৫১ পৃ:;
তাজকেরাতুল মাওজুয়াত গ্রন্থে আছে,
إذا كان ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها ضعيف
-“যখন শাবানের মধ্য রজনী আসে তখন রাতের বেলায় নফল বন্দেগী কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। ইহার সনদ দ্বাায়িফ।” ৫৯৭৯৭, তাজকেরাতুল মাওজুয়াত;
স্বয়ং আব্দুর রহমান মুবারকপুরী বলেছেন: أنَّهُ ضَعِيفٌ جَدًّا -“নিশ্চয় ইহা স্পষ্ট দ্বায়িফ ।” ৫৯৮৯৮, তুহফাতুল আহওয়াজী, ৩য় খন্ড, ৩৬৮ পৃ:;
অতএব, পূর্বসূরী মুহাদ্দিছীনে কেরামের দৃষ্টিতে এই হাদিসটি দ্বায়িফ সনদের। তবে ইহা মাওজু বা ভিত্তিহীন নয়। এই হাদিসের সনদে ابْنُ أَبِي سَبْرَةَ (ইবনু আবী ছাবরা) নামক রাবী রয়েছে। যার মূল নাম হল:
أَبُو بَكْرٍ بنُ عَبْدِ اللهِ بنِ مُحَمَّدِ بنِ أَبِي سَبْرَةَ بنِ أَبِي رُهْمٍ القُرَشِيُّ (আবু বকর ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আবী ছাবরা ইবনে আবী রুহম কুরেশী)। তার সম্পর্কে হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী (র:) উল্লেখ করেছেন,
وكان كثير الحديث وليس بحجة وقال الآجري عن أبي داود مفتي أهل المدينة وقال ابن المديني كان ضعيفا في الحديث وقال الجوزجاني يضعف حديثه وقال البخاري ضعيف
-“তার প্রচুর হাদিস রয়েছে কিন্তু হুজ্জত হবেনা। ইমাম আবু দাউদ (র:) বলেছেন: সে মদিনাবাসীর মুফতী ছিলেন। ইবনে মাদানী (র:) বলেছেন: সে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম যুযাজানী (র:) তাকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল বলেছেন। ইমাম বুখারী (র:) বলেছেন: সে দ্বায়িফ ।” ৫৯৯৯৯, ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ১৩৮;
হাফিজুল হাদিস ইমাদুদ্দিন ইবনে কাছির (র:) উল্লেখ করেন,
وقال أحمد بن سعد بن أبي مريم عن ابن معين: ليس بشيء. وقال عباس (ومعاوية بن صالح): سألت ابن معين عنه، فقال: ليس حديثُه بشيء وقال الغَلَابيُّ عن ابن معين: ضعيف.
-“আহমদ ইবনে সাঈদ ইবনে আবী মারিয়াম ইমাম ইবনে মাঈন (র:) হতে বর্ণনা করেন, তার বর্ণনা কিছুই নয়। আব্বাস বলেন, আমি ইবনে মাঈন (র:) কে তার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি বলেছেন: তার বর্ণিত হাদিস কিছুই নয়। ইবনে মাঈন (র:) থেকে গালাবী বলেন, সে দ্বায়িফ ।” ৬০০৬০০ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহে ওয়া তাদিল, রাবী নং ১৮৫৬;
হাফিজুল হাদিস ইমাম শামছুদ্দিন যাহাবী (র:) বলেন:
الفَقِيْهُ الكَبِيْرُ، قَاضِي العِرَاقِ، وَهُوَ ضَعِيْفُ الحَدِيْثِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِه.
-“তিনি বড় মাপের ফকিহ্ ও ইরাকের কাজী বা বিচারক ছিলেন। তার হিফজের কারণে সে দ্বায়িফ ছিল।” ৬০১১, ইমাম যাহাবী: সিয়ারু আলামী নুবালা, রাবী নং ১১৬;
শুধুমাত্র ইমাম আহমদ (র:) তাকে কিজবের অভিযোগ দিয়েছেন, অন্য কোন ইমাম এরুপ অভিযোগ দেননি। অতএব, এই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর দ্বায়িফ হবে। তবে এই হাদিসটি সম্পর্কে আল্লামা শায়খ আব্দুল হক্ব মোহাদ্দেছ দেহলবী (র:) ‘বিশুদ্ধ হাদিস’ বলে দাবি করেছেন। (মাদারেজুন্নবুয়্যাত)
সর্বোপরি হাদিসটি দ্বায়িফ ধরলেও সর্বসম্মতিক্রমে ফাজায়েলের ক্ষেত্রে ‘দ্বায়িফ’ হাদিস গ্রহণযোগ্য। কেননা ইহার একাধিক শাওয়াহেদ রয়েছে। ইমামে আজম আবু হানিফা (رضي الله عنه) ও হানাফী ফোকাহাদের অভিমত হল:-
قَالَ أَبُو مُحَمَّدِ بْنُ حَزْمٍ: جَمِيعُ الْحَنَفِيَّةِ مُجْمِعُونَ عَلَى أَنَّ مَذْهَبِ أَبِي حَنِيفَةَ أَنَّ ضَعِيفَ الْحَدِيثِ أَوْلَى عِنْدَهُ مِنَ الْقِيَاسِ وَالرَّأْيِ
-“আবু মুহাম্মদ ইবনে হাজম বলেছেন: সকল হানাফীরা ঐক্যমত পোষন করেছেন যে, ইমামে আজম আবু হানিফা (র:) এর মাজহাব হল: নিশ্চয় দ্বায়িফ হাদিস তার কাছে কিয়াস ও রায় হতেও উত্তম।” ৬০২২, তারিখুল ইসলাম, ৩য় খন্ড, ৯৯০ পৃ: ৪৪৫ নং রাবীর ব্যাখ্যায়;
আল্লামা কামালুদ্দিন ইবনুল হুমাম (র:) বলেন,
الضَّعِيفُ غَيْرُ الْمَوْضُوعِ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ
-“ফাজায়েলের আমলের ক্ষেত্রে গাইরে মওজু দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা জায়েয।” ৬০৩৩, ইবনুল হুমাম: ফাতহুল কাদীর, ১ম খন্ড, ৩৪৯ পৃ:;
হিজরী ১১শ শতাব্দির মোজাদ্দেদ, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (র:) বলেন, وَالضَّعِيفُ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ اتِّفَاقًا
-“সর্ব-সম্মতিক্রমে ফাজায়েলের আমলের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিস আমল করা জায়েয।” ৬০৪৪, ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, ৪৩৪ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (র:) তদীয় ‘তাফছিরে রুহুল বয়ান’ কিতাবে উল্লেখ করেন:
قد صح عن العلماء تجويز الاخذ بالحديث الضعيف فى العمليات
-“আলিমগণের পক্ষ হতে ইহা ছহীহ্ যে, আমলের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিস গ্রহণ করা জায়েয।” ৬০৫৫, তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৭ম খন্ড, ২৬৩ পৃ:; তাফছিরে জালালাইন, ৩৫৭ পৃ: ১৩ নং হাশিয়া:
আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (র:) আরো বলেন,
أَجْمَعُوا عَلَى جَوَازِ الْعَمَلِ بِالْحَدِيثِ الضَّعِيفِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ،
-“ইজমা হয়েছে যে, ফাজায়েলের আমলের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা জায়েয।” ৬০৬৬, ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১৭৩ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
তিনি অন্যত্র আরো বলেন,
وَالضَّعِيفُ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ اتِّفَاقًا -“সকল ওলামাগণ এই বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন যে, দ্বায়িফ সনদের হাদিসের উপরে আমল করা মুস্তাহাব।” ৬০৭৭, মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফূআ ফি আখবারিল মাওদ্বুআত, ৩১৫ পৃ. হা/৪৩৪;
হিজরী নবম শতাব্দির মোজাদ্দেদ, হাফিজুল হাদিস, আল্লামা ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (র:) বলেন
وَيُعْمَلُ بِالضَّعِيفِ أَيْضًا فِي الْأَحْكَامِ، إِذَا كَانَ فِيهِ احْتِيَاطٌ.
-“দ্বায়িফ হাদিসও আহকামের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য যখন সাবধানতা অবলম্বন করা হবে।” ৬০৮৮, ইমাম ছিয়তী: তাদরিবুর রাবী, ১ম খন্ড, ৩৫১ পৃ:;
আল্লামা মুফতী আমিমুল ইহছান মোজাদ্দেদী আলবরকতী (র:) বলেন: “আল্লাহর নবী (ﷺ) এর নাম শুনে অঙ্গুলী চুম্বনের হাদিস গুলো মরফূ ছহীহ্ নয়, দ্বায়িফ হাদিস পাওয়া যায়। ফজিলতের জন্য আমলের বেলায় দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা মুস্তাহাব।” (ফতোয়ায়ে বরকতীয়া)