সৃষ্টি জগতে প্রিয় নবীজি (ﷺ) প্রথম নবী
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَمْزَةَ، ثَنَا أَبُو الْجُمَاهِرِ، ثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كُنْتُ أَوَّل النَّبِيِّينَ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ
-“হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: আমি সৃষ্টি জগতে প্রথম নবী এবং প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।” ৬৪০৪০, তাফছিরে বাগভী, ৩য় খন্ড, ৬১১ পৃ: সূরা আহযাবের ৭-৯ এর ব্যাখ্যায়; তাফছিরে ছালাভী, ৮ম খন্ড, ১০ পৃ:; তাফছিরে ইবনে আবী হাতেম, হাদিস নং ১৭৫৯৪; তাফছিরে দুর্রে মানছুর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫৭০ পৃ:; তাফছিরে ইবনে কাছির, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৩৮২ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১০ম খন্ড, ৪৩৯ পৃ:; ইমাম আবু নুয়াইম তাঁর দালায়েলুন্নবুয়াত, ৬১ পৃ: হাদিস নং ৩; ইমাম তাবারানী তাঁর মুসনাদে শামিঈন-এ, হাদিস নং ২৬৬২; কাজী আয়্যায: শিফা শরীফ, ১ম জি: ২৬৬ পৃ:; হাফিজ ইবনে কাছির: আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ২য় খন্ড, ৬২৭ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: খাছায়েছুল কোবরা, ১ম খন্ড, ২১ পৃ:; শরফুল মোস্তফা, ১ম খন্ড, ২৮৮ পৃ:; উইনুল আছার, ১ম খন্ড, ৯৭ পৃ:; হাফিজ ইবনে কাছির: ‘সিরাতে নববিয়্যা’ ১ম খন্ড, ২৮৯ পৃ:; ইমতাউল আছমা, ৩য় খন্ড, ১৭০ পৃ:; ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১ম খন্ড, ৬৮ পৃ:; ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল কিতাবু দ্বোয়াফায়, ৪র্থ খন্ড, ৪১৭ পৃ:;
এই হাদিসের সনদে سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَزْدِيُّ (সাঈদ ইবনে বাশির আবু আব্দুর রহমান আযদী) নামক রাবী রয়েছে, তার ব্যাপারে কেউ কেউ সমালোচনা করলেও ইমামদের অনেকেই তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন ও তার উপর নির্ভর করেছেন। যেমন লক্ষ্য করুন:-
وقال أبو بكر البزار هو عندنا صالح ليس به بأس. -“ইমাম আবু বকর বাজ্জার (র:) বলেন: সে আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই।” ৬৪১৪১, ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, ৪র্থ খন্ড, ৮ পৃ:; ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৯১০;
وقال مَرْوَانُ الطَّاطَرِيّ: سَمِعْتُ سُفْيَانَ بْنَ عُيَيْنَةَ عَلَى جمرة العقبة يقول: حدثنا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، وَكَانَ حَافِظًا.
-“মারওয়ান তাতারী বলেন, আমি সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (র:) কে ‘জামরায়ে আকাবায়’ বলতে শুনেছি: আমাদেরকে সাঈদ ইবনে বাশির হাদিস বর্ণনা করেছেন আর সে একজন হাফিজ ছিলেন।” ৬৪২৪২, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৪র্থ খন্ড, ৩৭৩ পৃ:; ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২২৪৩;
وقال دحيم: يوثقونه، كَانَ حَافِظًا. -“ইমাম দুহাইম (র:) বলেন: তাকে বিশ্বস্ত বলা হয় সে একজন হাফিজ ছিলেন।” ৬৪৩৪৩, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৪র্থ খন্ড, ৩৭৩ পৃ:; ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২২৪৩;
ذكره ابن شاهين في الثقات -“ইমাম ইবনে শাহিন (র:) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।” ৬৪৪৪৪, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৯১০;
قال شعبة بن الحجاج: هو مأمون خذوا عنه. -“ইমাম শুবা ইবনে হাজ্জায (র:) বলেছেন: সে গ্রহণযোগ্য তোমরা তার থেকে হাদিস গ্রহণ কর।” ৬৪৫৪৫, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৯১০; ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২২৪৩;
وذكره الحاكم في الثقات وخرج حديثه في مستدركه -“ইমাম হাকেম (র:) তাকে বিশ্বস্তদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন এবং তার ‘মুস্তাদরাক’ গ্রন্থে তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।” ৬৪৬৪৬, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৯১০;
ذكره ابن خلفون في الثقات -“ইমাম ইবনে খালিফুন (র:) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।” ৬৪৭৪৭, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৯১০;
অতএব, এই হাদিস নিরর্ভরযোগ্য ও ছহীহ। সুতরাং আল্লাহর রাসূল (ﷺ) সৃষ্টির প্রথম মানুষ। এর সমর্থনে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,
رَوَى قَتَادَةُ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى وَإِذْ أَخَذْنَا مِنَ النَّبِيِّينَ مِيثَاقَهُمْ وَمِنْكَ وَمِنْ نُوحٍ قَالَ: كُنْتُ أَوَّلَهُمْ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ
-“হযরত কাতাদা বর্ণনা করেছেন হাছান বছরী (র:) থেকে, তিনি আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে এই আয়াত “ইজ আখযনা মিছাকাহুম..” তিনি বলেন: সৃষ্টির মধ্যে আমিই ছিলাম তাঁদের প্রথম, আর প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।” ৬৪৮৪৮, তারিখে ইবনে আসাকির, তাফছিরে কুরতবী, ১৪তম খন্ড, ১২৭ পৃ:; তাফছিরে ইবনে আবী হাতেম, হাদিস নং ১৭৫৯৫;
অতএব, সাঈদ ইবনে বাশির এর রেওয়ায়েত সর্বনিম্ন স্তর হবে ‘হাছান’। কেননা একদল ইমাম ‘সাঈদ ইবনে বাশির’ বিশ্বস্ত বলেছেন। এর সমর্থনে আরো রেওয়ায়েত রয়েছে যেমন আল্লামা ইমাম আজলুনী (র:), ইমাম ছাখাবী (র:) ও আল্লামা কাজী শাওকানী তার ‘ফাওয়াইদে মজমুয়া’ কিতাবে বলেন: وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ مَيْسَرَةَ الْفَخْرِ -“হযরত মিছার আল ফিখরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হাদিস এ ব্যাপারে শাহিদ বা সাক্ষ্য রয়েছে।” ৬৪৯৪৯, ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৩২৭ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ১১৮ পৃ:; ফাওয়াইদুল মজমুয়া, ৩০৭ পৃ:;