মৃত ব্যক্তির উছিলার হাদিস
حَدَّثَنَا طَاهِرُ بْنُ عِيسَى الْمُقْرِئُ الْمِصْرِيُّ، ثنا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ، ثنا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ رَوْحِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الْخَطْمِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ عَمِّهِ عُثْمَانَ بْنِ حُنَيْفٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا كَانَ يَخْتَلِفُ إِلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فِي حَاجَتِهِ وَكَانَ عُثْمَانُ لَا يَلْتَفِتُ إِلَيْهِ وَلَا يَنْظُرُ فِي حَاجَتِهِ، فَلَقِيَ ابْنَ حُنَيْفٍ فَشَكَا ذَلِكَ إِلَيْهِ، فَقَالَ لَهُ عُثْمَانُ بْنُ حُنَيْفٍ: ائْتِ الْمِيضَأَةَ فَتَوَضَّأْ، ثُمَّ ائْتِ الْمَسْجِدَ، فَصَلِّ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ وَقُلِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا نَبِيِّ الرَّحْمَةِ: يَا مُحَمَّدُ إِنِّي أَتَوَجَّهُ بِكَ إِلَى رَبِّكَ فَيَقْضِي لِي حَاجَتِي،
-“আবু উমামা ইবনে ছাহেল ইবনে হুনাইফ তাঁর চাচা থেকে বর্ণনা করেন, একদা এক ব্যক্তি হযরত উছমান (رضي الله عنه) এর কাছে আসলেন ও তাঁর সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন, কিন্তু উছমান (رضي الله عنه) কে হাজত পূরণের জন্য দেখা পাচ্ছেন না। অত:পর ঐ লোকটি হযরত উছমান ইবনে হুনাইফ (رضي الله عنه) এর সাথে মিলিত হলেন ও বিস্তারিত বললেন।
অত:পর উছমান ইবনে হুনাইফ (رضي الله عنه) তাকে বললেন: তুমি উত্তমরূপে অজু কর ও মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় কর। অত:পর এভাবে দোয়া কর: হে আল্লাহ! আমাদের নবী ও রহমতের নবী ( ﷺ) এর উছিলায় আপনার দিকে মোতাওয়াজ্জু হচ্ছি ও প্রার্থনা করছি। ওহে মুহাম্মদ ( ﷺ)! আমি আপনার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি মোতাওয়াজ্জু হয়েছি আমার হাজত পূরণের জন্য।” ৪৬৪৬, ইমাম তাবারানী: আদ্-দোয়া, হাদিস নং ১০৫০; ইমাম তাবারানী: মু’জামুছ ছাগীর, হাদিস নং ৫০৮; ইমাম তাবারানী: মু’জামুল কবীর, হাদিস নং ৮৩১০; ইমাম মুনজেরী: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, ১ম খন্ড, ২৮২ পৃ:; এনহাজুল হাজাত, নশরুত্তিব; অফাউল অফা, ৪র্থ জি: ২২২ পৃ:; ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ৩৬৬৮;
এই হাদিস সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস, ইমাম মুনজেরী ( رَحْمَةُ الله عليه) তদীয় কিতাবে বলেন: وَالْحَدِيثُ صَحِيحٌ -“এই হাদিস ছহীহ্।” ৪৭৪৭, তারগীব, ১ম খন্ড, ২৮২ পৃ:;
ইমাম হায়ছামী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: وَقَدْ قَالَ الطَّبَرَانِيُّ: وَالْحَدِيثُ صَحِيحٌ
-“অবশ্যই ইমাম তাবারানী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: এই হাদিস ছহীহ্।” ৪৮৪৮, ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ৩৬৬৮;
এই হাদিসের সনদে شَبِيبِ بْنِ سَعِيدٍ (ছাবীব ইবনে সাঈদ) নামক একজন রাবী রয়েছে। যার সম্পর্কে লা-মাজহাবীরা অযথা বাক-বিতন্ডা করার অপচেষ্টা করে। অথচ তিনি একজন নির্ভরযোগ্য রাবী। যেমন ইমামগণের বক্তব্য লক্ষ্য করুন,
وَقَال أبو زُرْعَة: لا بأس به. -“ইমাম আবু যুরাআ ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: তার ব্যাপারে কোন অসুবিধা নেই।” ৪৯৪৯, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৬৯০;
وَقَال أَبُو حاتم : وهو صالح الحديث لا بأس به. -“ইমাম আবু হাতিম ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: সে হাদিস বর্ণনায় নেক ও তার ব্যাপারে কোন অসুবিধা নেই।” ৫০৫০, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৬৯০;
وَقَال النَّسَائي: ليس به بأس. -“ইমাম নাসাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: তার ব্যাপারে কোন অসুবিধা নেই।” ৫১৫১, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৬৯০;
وذكره ابنُ حِبَّان في كتاب الثقات -“ইমাম ইবনে হিব্বান ( رَحْمَةُ الله عليه) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।” ৫২৫২, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৬৯০;
روى له الْبُخَارِيّ، وأبو داود فِي "الناسخ والمنسوخ"، والنَّسَائي.
-“ইমাম বূখারী, আবু দাউদ, ও নাসাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه) ‘নাছিখ-মানছুখে’ তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।”৫৩৫৩, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৬৯০;
قال عَلِيّ ابْن المديني: ثقة، -“ইমাম আলী ইবনে মাদিনী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: সে বিশ্বস্ত।” ৫৪৫৪, মউছুআতুল আকওয়াল, রাবী নং ১৬০৯;
وقال الدارقطني في كتاب الجرح والتعديل: شبيب بن سعيد ثقة.
-“ইমাম দারে কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه) তাঁর “জারহ্ ওয়া তা’দিল” কিতাবে বলেন: ‘ছাবিব ইবনে সাঈদ’ বিশ্বস্ত।” ৫৫৫৫, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৩৪৩;
ولما ذكره ابن خلفون في الثقات قال: وثقه الذهلي وابن المديني وغيرهما
-“ইমাম ইবনে খালিফুন ( رَحْمَةُ الله عليه) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। ইমাম যাহ্লী, ইবনে মাদানী ও অন্যান্য ইমামগণ তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।” ৫৬৫৬, ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৩৪৩;
وقال الطبراني في الأوسط ثقة. -“ইমাম তাবারানী ( رَحْمَةُ الله عليه) তাঁর ‘আওছাত’ গ্রন্থে তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।” ৫৭৫৭, ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৫৩৪;
قال الحاكم: قلت للدارقطني شبيب بن سعيد؟ قال ثقة. -“ইমাম হাকেম ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: ইমাম দারে কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه) কে ‘ছাবীব ইবনে সঈদ’ সম্পর্কে বললাম: তিনি বলেন: সে বিশ্বস্ত।” ৫৮৫৮, মউছুআতুল আকওয়াল, রাবী নং ১৬০৯;
বলুন! এতজন ইমাম شَبِيب بْن سَعِيدٍ “ছাবীব ইবনে সাঈদ” বিশস্ত রাবী বলার পরও নেশাগ্রস্থ লোক ব্যতীত কেউ তাকে ‘দ্বায়িফ রাবী’ বলতে পারেনা। অতএব, প্রমাণিত হল, রাসূলে পাক ( ﷺ) এর ওফাতের পরেও সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) তাঁর উছিলায় দোয়া করা জায়েয জানতেন। উছমান ইবনে হুনাইফ (رضي الله عنه) প্রিয় নবীজি ( ﷺ) এর বিশিষ্ট সাহাবী ছিলেন। আর আমরা সকলেই জানি জান্নাতী দল হল তারাই যারা রাসূল ( ﷺ) ও তাঁর সাহাবীদের অনুসরণ করেন।