শুধুমাত্র নবীজির রওজা যিয়ারতের নিয়তে গেলে শাফায়াত ওয়াজিব

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ بْنُ أَحْمَدَ قَالَ: نَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعِبَادِيُّ الْبَصْرِيُّ قَالَ: نَا مَسْلَمَةُ بْنُ سَالِمٍ الْجُهَنِيُّ قَالَ: حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ جَاءَنِي زَائِرًا لَا تُعْمِلُهُ حَاجَةٌ إِلَّا زِيَارَتِي، كَانَ حَقًّا عَلَيَّ أَنْ أَكُونَ لَهُ شَفِيعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ 

-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার কাছে শুধু যিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসবে অন্য কোন উদ্দেশ্যে নয়, তাহলে কেয়ামতের দিন তার জন্য শাফায়াত কারী হওয়া আমার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে।” ৭৭৯৭৯,  তাবারানী তার মুজামুল কবীরে, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৭৪ পৃষ্টা হাদিস নং ১৩১৪৯ ও আওছাতে, ৩য় খন্ড, ২৬৬ পৃ: হাদিস নং ৪৫৪৬; হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, ৩য় খন্ড, ৬৬৬ পৃ:; সুনানে দারে কুতনী, ৩য় খন্ড, ৩৩৩ পৃ:; ফতোয়ায়ে শামী, ৩য় খন্ড, ৫৪ পৃ:; কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৪র্থ খন্ড, ৫৭১ পৃ:;

এই হাদিস সম্পর্কে হাফিজ ইরাকী (র:) এর অভিমত,
قال العراقي: رواه الطبراني من حديث ابن عمر وصححه ابن السكن .. وكذا صححه عبد الحق في سكوته عنه والسبكي في رد مسألة الزيارة لابن تيمية
-“হাফিজ ইরাকী বলেন, ইমাম তাবারানী (র:) ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম ইবনে সুকান (র:) ইহাকে ছহীহ্ বলেছেন। অনুরূপভাবে ইমাম আব্দুল হাক্ব (র:) ইহার ব্যাপারে চুপ থেকে ছহীহ্ বলেছেন। ইমাম তাজউদ্দিন স্কুী (র:) ইবনে তাইমিয়ার যিয়ারতের মাসয়ালায় খন্ডন করতে গিয়ে হাদিসটিকে ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৮০৮০,  হাফিজ ইরাকী: তাখরিজু আহাদিছিল এহইয়া, ১ম খন্ড, ৩০৬ পৃ: ৪ নং হাদিস; তাখরিজু আহাদিছি এহইয়াই উলুমুদ্দিন, ৭৭২ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;

এই হাদিসের রাবী ‘সালেম, নাফে ও উবাইদুল্লাহ ইবনে উমর’ সকলেই বুখারী-মুসলীমের রাবী। বর্ণনাকারী ‘মুসলীম ইবনে সালেম জুহানী’ কে ইমাম ইবনে মাঈন (র:) বিশ্বস্ত বলেছেন।  ৭৮১৮১,  ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ২৭৩;

ইমাম আবু হাতিম ও ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান (র:) বলেছেন তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই। ইমাম ইবনে শাহিন (র:) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।  ৭৮২৮২,  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৫৩৮;

এই হাদিসের সনদে مَسْلَم بْنُ سَالِمٍ الْجُهَنِيُّ (মুসলিম ইবনে ছালিম) নামক একজন রাবী রয়েছে, যার ব্যাপারে ইমামগণের অভিমত লক্ষ্য করুন, وَثَّقَهُ ابْنُ مَعِينٍ. -“ইবনে মাঈন (র:) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।” ৭৮৩ ৮৩,  ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ২৭৩;

وذكره ابن شاهين في كتاب الثقات. -“ইবনে শাহিন (র:) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।”  ৭৮৪৮৪,  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৫৩৮;

وذكره ابنُ حِبَّان في كتاب الثقات. -“ইবনে হিব্বান (র:) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।”  ৭৮৫৮৫,  ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৫৯২৭;

وقال يعقوب بن سفيان: لا بأس به. -“ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান (র:) বলেছেন: তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই।”  ৭৮৬৮৬,  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৫৩৮;

وفي الجرح والتعديل: مسلم بن سالم، كوفي، لا بأس به. -“জারাহ ওয়া তাদিল গ্রন্থে আছে, মুসলীম ইবনে সালিম কূফী এবং তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই।”  ৭৮৭৮৭,  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৫৩৮;

অতএব, এই রাবীর রেওয়ায়েত অবশ্যই হাছান-ছহীহ্ হবে। কারণ শুধু মাত্র আবু দাউদ তার ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন এছাড়া বাকী সকল ইমামগণ তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন। হাদিসটি ‘মুসলীম ইবনে ছালিম জুহানী’ থেকে ভিন্ন আরেকটি সূত্রে সামান্য শাব্দিক ব্যবধানে ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী (র:) এভাবে বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدِ بْنُ حَيَّانَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ سُلَيْمَانَ الْهَرَوِيُّ، ثنا مُسْلِمُ بْنُ حَاتِمٍ الأَنْصَارِيُّ، ثنا مُسْلِمُ بْنُ سَالِمٍ الْجُهَنِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ يَعْنِي: الْعُمَرِيَّ حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ جَاءَنِي زَائِرًا لَمْ تَنْزِعْهُ حَاجَةٌ إِلا زِيَارَتِي، كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ أَكُونَ لَهُ شَفِيعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার কাছে শুধু যিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসবে অন্য কোন উদ্দেশ্যে নয়, তাহলে কেয়ামতের দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য শাফায়াত কারী হওয়া আমার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে।”  ৭৮৮৮৮,  ইমাম আবু নুয়াইম: তারিখে ইস্পাহান, ২য় খন্ড, ১৯০ পৃ:;

দুইটি সুত্র মিল হাদিসটি আরো শক্তিশালী হবে। ফলে হাদিসটি ছহীহ্ হওয়াতে কোন বাধা থাকবেনা।
Top