যে আমার রওজা যিয়ারত করবে তার জন্য শাফায়াত ওয়াজিব
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدِ بْنِ نُوحٍ قَالَ: حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ هِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخُو عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ زَارَ قَبْرِي وَجَبَتْ لَهُ شَفَاعَتِي
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার রওজা যিয়ারত করল তার জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে গেছে।” ৭৬৪৬৪, সুনানে দারে কুতনী, ৩য় খন্ড, ৩৩৪ পৃ:; কাজী আয়্যায: শিফা শরীফ, ১ম জি: ৪৪৪ পৃ:; হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াস সুনান, ২৮তম খন্ড, ৭৬৮৯ পৃ:; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, ১৫তম খন্ড, ২৭৪ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৪র্থ খন্ড, ৫৭০ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, ২য় জি: ৫২৮ পৃ:; হাকেম তিরমিজি: নাওয়াদেরুল উসূল, ৪৮ পৃ:; হাফিজ উকায়লী কৃত: ‘আদ্ব দ্বোয়াফা’ ৪র্থ খন্ড, ১৭০ পৃ:; ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, ৩য় খন্ড, ৬৬৬ পৃ:; ইবনে আদী তাঁর কামিলে;
এই হাদিস সস্পর্কে আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (র:) বলেন,
رواه الدارقطني وغيره وصححه جماعة من أئمة الحديث -“ইমাম দারে কুতনী (র:) সহ অন্যান্য ইমামগণ ইহা বর্ণনা করেছেন, হাদিস শাস্ত্রের একদল ইমাম এই হাদিসকে ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৬৫৬৫, ইমাম মোল্লা আলী: শরহে শিফা, ২য় খন্ড, ১৫০ পৃ:;
শারিহে বুখারী আল্লামা ইমাম কাস্তালানী (র:) বলেন,
ورواه عبد الحق فى أحكامه الوسطى، وفى الصغرى وسكت عنه، وسكوته عن الحديث فيهما دليل على صحته.
-“ইমাম আব্দুল হক্ব তার ‘আহকামুল অছতী ও ছুগরা’ গ্রন্থে ইহা বর্ণনা করেছেন এবং চুপ থেকেছেন। তার এই হাদিসের উপর চুপ থাকা হাদিসটি ছহীহ্ হওয়ার প্রমাণ।” ৭৬৬৬৬, ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৩য় খন্ড, ৫৮৮ পৃ:;
আল্লামা ইমাম যুরকানী (র:) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় তদীয় কিতাবে বলেন, تحقَّقت وثبتت -“ইহা তাহকিক করলাম ও প্রমাণিত করলাম।” ৭৬৭৬৭, ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহেব, ১২তম খন্ড, ১৭৯ পৃ:;
এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল মুলাক্কিন (র:) বলেন,
وَهَذَا إسنادٌ جيدٌ، -“এই সনদ অতি-উত্তম।” ৭৬৮৬৮, আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৯৬ পৃ:;
এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা নুরুদ্দিন সানাদী (র:) বলেছেন,
رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيُّ وَغَيْرُهُ وَصَحَّحَهُ عَبْدُ الْحَقِّ -“ইমাম দারে কুতনী ও অন্যান্যরা ইহা বর্ণনা করেছেন, ইমাম আব্দুল হক্ব (র:) একে ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৬৯৬৯, হাশিয়াতুল সানাদী আলা সুনানি ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড, ২৬৮ পৃ:;
আল্লামা হাফিজ ইবনে হাজার মক্কী (র:) বলেন,
وصححه جماعة من أئمة الحديث -“হাদিস শাস্ত্রের একদল ইমাম এই হাদিসকে ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৭০৭০, যাওয়াহিরুল মুনাজ্জাম, ৪২ পৃ:;
আল্লামা শায়েখ ইউছুফ নাবহানী (র:) তদীয় গ্রন্থে বলেন,
صححه جماعة من أئمة الحديث -“হাদিস শাস্ত্রের একদল ইমাম এই হাদিসকে ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৭১৭১, শাওয়াহিদুল হক্ব, ৭৭ পৃ:;
তিনি আরো বলেন: وابن السكن وصحيحه -“ইমাম ইবনে সুকন (র:) হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এর ছহীহ্ বলেছেন।” ৭৭২৭২, শাওয়াহিদুল হক্ব, ৭৭ পৃ:;
সুনানে দারে কুতনীর সনদে مُوسَى بْنُ هِلَالٍ الْعَبْدِيُّ (মুসা ইবনে হেলাল আব্দী) নামক একজন রাবী রয়েছে, যার সম্পর্কে ইমামগণের অভিমত গুলো লক্ষ্য করুন,
وقال ابن عدي: أرجو أنه لا بأس به. -“ইবনে আদী (র:) বলেন: নিশ্চয় তাঁর ব্যাপারে কোন অসুবিধা নেই।” ৭৭৩৭৩, হাফিজ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ৪৪৭; ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৩৭৯;
قلت: هو صالح الحديث. -“ইমাম যাহাবী (র:) বলেন, আমি বলি: তিনি হাদিসের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য।” ৭৭৪৭৪, ইমাম যাহাবী: মিযানুল এতেদাল, রাবী নং ৮৯৩৭;
আল্লামা নুরুদ্দিন ছামহুদী (র:) বলেন:
وقد روى عنه ستة منهم الإمام أحمد، ولم يكن يروي إلا عن ثقة،
-“তার থেকে ছয়জন হাদিস বর্ণনা করেছেন এর মধ্যে ইমাম আহমদ (র:) একজন। ইমাম বিশ্বস্ত রাবী ব্যতীত কারো কাছ থেকে হাদিস বর্ণনা করেননি।” ৭৭৫৭৫, আল্লামা ছামহুদী: অফাউল অফা, ২য় জিল্দ, ২০০ পৃ:;
অতএব, হাদিসটি সর্বনিম্ন হাছান অথবা ছহীহ্ হওয়ার যোগ্যতা রাখে। কারণ ইমাম আবু হাতেম তাকে না চিনলেও ইমাম ইবনে আদী (র:) তাকে চিনেন ও তাকে গ্রহণযোগ্য রাবী বলেছেন। ইমাম যাহাবী (র:) তার হাদিস গ্রহণযোগ্য বলেছেন। এ সম্পর্কে অন্যত্র আরো উল্লেখ আছে,
وَهَذَا إِسْنَاد جيد، لَكِن مُوسَى هَذَا قَالَ أَبُو حَاتِم الرَّازِيّ بعد أَن ذكر أَن جمَاعَة رووا عَنهُ: هُوَ مَجْهُول.
-“এই হাদিসের সনদ অতি-উত্তম কিন্তু মূসা সম্পর্কে আবু হাতেম রাজী (র:) বলেন: তার থেকে একদল রেওয়ায়েত করেছেন আর সে মাজহুল রাবী।” ৭৭৬৭৬, আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৯৬ পৃ:;
বাস্তবে বর্ণনাকারী অন্যান্য ইমামদের দৃষ্টিতে মাজহুল নয় বরং মারুফ। সুতরাং সনদের বিবেচনায় হাদিসটি ‘হাছান’ পর্যায়ের। তবে এই হাদিস খানা ‘মুসনাদে বাজ্জার শরীফে’ ‘দ্বায়িফ’ সনদে উল্লেখ রয়েছে। উভয় সনদ মিলিয়ে আরো শক্তিশালী হবে। এ সম্পর্কে আরেকটি রেওয়ায়েতে আছে,
وعن ابن عمر أيضا أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: من زار قبري حلّت له شفاعتي رواه البزار بسند ضعيف
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে এরূপ বর্ণিত আছে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: যারা আমার রওজা যিয়ারত করবে তার জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে যাবে। ইমাম বাজ্জার (رضي الله عنه) দুর্বল সনদে ইহা বর্ণনা করেছেন।” ৭৭৭৭৭, ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২তম খন্ড, ৩৭৯ পৃ:;
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، ثنا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، ثنا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ زَارَ قَبْرِي حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي
قَالَ الْبَزَّارُ: عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ لَمْ يُتَابَعْ عَلَى هَذَا، وَإِنَّمَا يُكْتَبُ مَا يَتَفَرَّدُ بِهِ.
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবীজি (ﷺ) বলেছেন: যারা আমার রওজা যিয়ারত করবে তাদের জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হবে।” ৭৭৮৭৮, কাশফুল আসতার আনিজ জাওয়াইদিল বাজ্জার, ২য় খন্ড, ৫৭ পৃ: