আহলে বাইত নূহ নবীর কিস্তীর মত
وَعَن أبي ذرٍ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: أَلَا إِنَّ مِثْلَ أَهْلِ بَيْتِي فِيكُمْ مِثْلُ سَفِينَةِ نُوحٍ مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا هلك . رَوَاهُ أَحْمد
-“হযরত আবু যার (رضي الله عنه) বলেন, আমি নবী করিম (ﷺ) কে বলতে শুনেছি: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত, যে ইহাতে আরোহন করবে সে নাজাত পাবে আর যে আরোহন করবে না সে ধংস হবে।” ৬১১১১, মুস্তাদরাকে হাকেম, ৫ম খন্ড, ১৭৭৩ পৃ: হাদিস নং ৪৭২০; ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল: ফাদ্বাইলে সাহাবা, হাদিস নং ১৪০২; ইমাম ফাকেহী: আখবারে মক্বা, হাদিস নং ১৯০৪; ইমাম তাবারানী তাঁর ‘আওছাত’ গ্রন্থে ২য় খন্ড, ৩৩৯ পৃ:; ইমাম তাবারানী তাঁর কবিরে, ৩য় খন্ড, ৪৫ পৃ: হাদিস নং ২৬৩৬; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৩৯০০; শারিয়াতু লিল আজরী, হাদিস নং ১৭০০; মুসনাদে শিহাব কাদ্বাঈ, হাদিস নং ১৩৪৩; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিছ, ৩য় খন্ড, ২০৯ পৃ:; হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াস সুনান, হাদিস নং ১২১৬০; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কাবীর, হাদিস নং ৪১৫৩; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৩৫১৪৪; মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ৬১৮৩; তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ২৫ তম জি: ৪৪ পৃ:; তাফছিরে কবির শরিফ, ২৭ তম জি: ১৪৮ পৃ:; আশরাফ আলী থানভী: নশরুত্বিব;
ইমাম আহমদ (র:) সনদসহ এভাবে হাদিসখানা উল্লেখ করেছেন,
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، نا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْأَحْمَسِيُّ، نا مُفَضَّلُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَنَشٍ الْكِنَانِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يَقُولُ.. سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: أَلَا إِنَّ مَثَلَ أَهْلِ بَيْتِي فِيكُمْ مَثَلُ سَفِينَةِ نُوحٍ، مَنْ رَكِبَهَا نَجَا، وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا هَلَكَ.
-“খানাসিল কিনানী বলেন, আমি আবু যার (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন আমি রাসূলে পাক (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত, যে ইহাতে আরোহন করবে সে নাজাত পাবে আর যে আরোহন করবে না সে ধংস হবে।” ৬১২১২, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল: ফাদ্বাইলে সাহাবা, হাদিস নং ১৪০২;
ইমাম বাজ্জার (র:) আবু যার গেফারী (رضي الله عنه) থেকে আরেকটি সূত্রে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। যেমন,
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، وَالْجَرَّاحُ بْنُ مَخْلَدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ مَعْمَرٍ، وَاللَّفْظُ لِعَمْرٍو، قَالُوا: نا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: نَا الْحَسَنُ بْنُ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي كَمَثَلِ سَفِينَةِ نُوحٍ
-“হযরত আবু যার গেফারী (رضي الله عنه) বলেনে, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত।” ৬১৩১৩, মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৩৯০০;
এই হাদিস হযরত আবু যার গেফারী (رضي الله عنه) থেকে ইমাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে হুছাইন বাগদাদী (র:) ওফাত ৩৬০ হিজরী তদীয় কিতাবে আরেকটি সূত্রে বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الْحَمِيدِ الْوَاسِطِيُّ, حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ قَالَ: حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ حَاتِمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو هَارُونَ الْعَبْدِيُّ قَالَ: حَدَّثَنِي شَيْخٌ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مِثْلُ أَهْلِ بَيْتِي مِثْلُ سَفِينَةِ نُوحٍ
-“আবু হারুন আব্দী বলেন, আমার শায়েখ বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমি আবু যার (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন আমি রাসূলে পাক (ﷺ) কে বলতে শুনেছি: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত।” ৬১৪১৪, শারিয়াতু লিল আজরী, হাদিস নং ১৭০০;
হযরত আবু যার গিফারী (رضي الله عنه) থেকে আরেকটি সূত্র ইমাম আবুল হাছার ওয়াছেতী মালেকী ইবনে মাগাজিলী (র:) ওফাত ৪৮৩ হিজরী তদীয় কিতাকে হাদিসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন,
أخبرنا محمد بن أحمد بن عثمان، أخبرنا أبوالحسين محمد بن المظفر بن موسى بن عيسى الحافظ إذناً، حدثنا محمد بن محمد بن سليمان، حدثنا سويد، حدثنا المفضل بن عبد الله عن أبي إسحاق عن ابن المعتمر عن أبي ذر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إنما مثل أهل بيتي مثل سفينة نوح من ركب فيها نجا ومن تخلف عنها غرق
-“হযরত আবু যার গেফারী (رضي الله عنه) বলেনে, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত। যারা এর উপর আরোহন করল সে নাজাত পেল আর যে ইহা বিপরীত করল সে ডুবে মরল।” ৬১৫১৫, মানাকিবে আলী, হাদিস নং ১৭৫;
হাদিসটি আরেকটি সূত্রে ইমাম তাবারানী (র:) বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، ثنا الْحَسَنُ بْنُ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي الصَّهْبَاءِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي مَثَلُ سَفِينَةِ نُوحٍ، مَنْ رَكِبَ فِيهَا نَجَا، وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا غَرِقَ
-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত। যারা এর উপর আরোহন করল সে নাজাত পেল আর যে ইহা বিপরীত করল সে ডুবে মরল।” ৬১৬১৬, ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ২৬৩৮; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৫১৪২; আমালী ইবনে বাশরানে, হাদিস নং ১৫৪৯; মুসনাদে শিহাব কাদ্বাঈ, হাদিস নং ১৩৪২;
এই হাদিস ইমাম আবু বিশর মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে হাম্বাদ আদ-দোলাভী রাজী (র:) ওফাত ৩১০ হিজরী তদীয় কিতাবে আরেকটি সূত্রে বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنِي رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ قَالَ:، ثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ أَبُو سَعِيدٍ الْجُعْفِيُّ قَالَ:، ثَنَا عَبْدُ الْكَرِيمِ بْنُ هِلَالٍ الْجُعْفِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ أَسْلَمَ الْمَكِّيَّ قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو الطُّفَيْلِ عَامِرُ بْنُ وَاثِلَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي مَثَلُ سَفِينَةِ نُوحٍ مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَرَكَهَا غَرِقَ
-“আবু তুফায়েল আমের ইবনে অছিলা (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত। যার এর উপর আরোহন করল সে নাজাত পেল আর যে ইহা বিপরীত করল সে ডুবে মরল।” ৬১৭১৭, ইমাম দোলাভী: আল কুনা ওয়াল আসমা, হাদিস নং ৪১৯;
হাদিসটি আরেকজন সাহাবী থেকেও বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ رَبِيعَةَ الْكِلَابِيُّ قَالَ: نا أَبِي قَالَ: نا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي حَمَّادٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ الصَّائِغِ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّمَا مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي مَثَلُ سَفِينَةِ نُوحٍ، مَنْ رَكِبَهَا نَجَا، وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا غَرِقَ.
-“হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূলে করিম (ﷺ) কে বলতে শুনেছি: নিশ্চয় তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত। যার এর উপর আরোহন করল সে নাজাত পেল আর যে ইহা বিপরীত করল সে ডুবে মরল।” ৬১৮১৮, ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৫৮৭০; তারতিবুল আমালী, হাদিস নং ৭৫২;
আল্লামা ইবনে মাগাজালী (র:) ওফাত ৪৮৩ হিজরী আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেন,
أخبرنا محمد بن أحمد بن عثمان، أخبرنا أبو الحسين محمد بن المظفر بن موسى بن عيسى الحافظ إذناً، حدثنا محمد بن محمد بن سليمان الباغندي، حدثنا سويد، حدثنا عمر بن ثابت عن موسى بن عبيدة عن إياس بن سلمة بن الأكوع عن أبيه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: مثل أهل بيتي مثل سفينة نوح من ركبها نجا.
-“ইয়াছ ইবনে ছালামা ইবনে আকুয়া তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের মাঝে আমার আহলে বাইতের মেছাল হল নূহ নবীর কিস্তীর মত। যারা এর উপর আরোহন করল সে নাজাত পেল।” ৬১৯১৯, মানাকিবে আলী, হাদিস নং ১৭৪;
এই হাদিস সম্পর্কে নাছিরুদ্দিন আলবানী বলেন,
روي من حديث عبد الله بن عباس، وعبد الله بن الزبير، وأبي ذر، وأبي سعيد الخدري، وأنس بن مالك.
-“এই হাদিস আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه), আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (رضي الله عنه), আবু যার (رضي الله عنه), আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) ও আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে।” ৬২০২০, আলবানী: সিলসিলায়ে আহাদিসুদ দায়িফা, হাদিস নং ৪৫০৩;
এই হাদিস সম্পর্কে তাফছিরে কবীর শরীফ ও মু’জামুল আওছাতের হাশিয়ায় ‘দ্বায়িফ’ উল্লেখ আছে। তবে দ্বায়িফ হলেও ইহা হাদিসে রাসূল (ﷺ) হিসেবে একাধিক সনদে বর্ণিত রয়েছে। লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানী বলেছেন:-
ضعيف روي من حديث عبد الله بن عباس، وعبد الله بن الزبير، وأبي ذر، وأبي سعيد الخدري، وأنس بن مالك.
-“দ্বায়িফ, হাদিসটি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর, আবু যার, আবী ছাঈদ খুদরী ও আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে।” ৬২১২১, ছিলছিলায়ে জয়ীফা, হাদিস নং ৪৫০৩;
নাছিরুদ্দিন আলবানী আরো বলেছেন:-
وقد ورد في ذلك أحد عشر حديثاً عن طريق أهل السنة -“অবশ্যই আহলে সুন্নাত এর সূত্রে এ বিষয়ে ১১টি রেওয়ায়েত উল্লেখ রয়েছে।” সকলেই অবগত আছেন, কোন বিষয়ে ১১টি দুর্বল রেওয়ায়েত থাকলে ইহা নিশ্চিৎ আরো শক্তিশালী হয়ে হাছান লি’গাইরিহী পর্যায়ে পৌছে যায়।