ইলিম অর্জন কর যদিও চীনে হয়

أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، أخبرنا أَبُو الْحَسَنِ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عُقْبَةَ الشَّيْبَانِيُّ، حدثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ عَفَّانَ، وَأَخْبَرَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ الْأَصْبَهَانِيُّ، أخبرنا أَبُو سَعِيدِ بْنُ زِيَادٍ، حدثنا جَعْفَرُ بْنُ عَامِرٍ الْعَسْكَرِيُّ، قَالَا: حدثنا الْحَسَنُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبُو عَاتِكَةَ الْبَصْرِيُّ ، وَفِي رِوَايَةِ أَبِي عَبْدِ اللهِ حدثنا أَبُو عَاتِكَةَ الْبَصْرِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اطْلُبُوا الْعِلْمَ وَلَوْ بِالصِّينِ، فَإِنَّ طَلَبَ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ 

-“হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেন: এলম অর্জন কর যদিও চীনে হয়। কেননা সকল মুসলমানের জন্য এলেম অর্জন করা ফরজ।”  ৩৩৭৩৭,  ইমাম বায়হাক্বী: শুয়ায়েবুল ঈমান, ২য় খন্ড, ৭২৪ পৃ: হাদিস নং ১৫৪৩; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৯৫; ইমাম বায়হাক্বী: আল মাদখাল, হাদিস নং ৩২৫; জামেউল বায়ানুল ইলমে ওয়া ফাদ্বলিহী, হাদিস নং ২০; ইমাম ইবনে আদী তাঁর ‘কামিল’ গ্রন্থে, ৪৯৬৩ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৪০২ পৃ:; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, ১০ খন্ড, ৬০ পৃ: হাদিস নং ২৮৬৯৭; খতিবে বোগদাদী তাঁর ‘তারিখে’ ১০ম খন্ড, ৪৯৭ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিছ, ১ম খন্ড, ৪৬৩ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ১৯২৫; ইমাম উকাইলি তাঁর ‘কিতাবুদ দ্বোয়াফায়’ ১ম খন্ড, ২৩০ পৃ:; ইমাম আবু নুয়াইম: তারিখে ইছবাহানে, ২য় খন্ড, ১২৪ পৃ:;

এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন:
 هَذَا حَدِيثٌ مَتْنُهُ مَشْهُورٌ، وَإِسْنَادُهُ ضَعِيفٌ -“এই হাদিসের মতন মশহুর বা সু-পরিচিত আর সনদ ‘দ্বায়িফ’।”  ৩৩৮৩৮,  ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, ২য় ন্ড, ৭২৪ পৃ:;

এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে ইমাম মানাভী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,
عَن أنس بن مَالك قَالَ الْبَيْهَقِيّ مَتنه مَشْهُور وَأَسَانِيده ضَعِيفَة وَقَالَ غَيره يرتقي بِمَجْمُوع طرقه إِلَى الْحسن
-“হযরত আনাস ইবনু মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: এই হাদিসের মতন মশহুর বা সু-পরিচিত আর সনদ ‘দ্বায়িফ’। অন্যান্য ইমামগণ বলেছেন, সকল রেওয়ায়েত একত্রিত হয়ে ইহার মর্যাদা হাছান এর স্তরে পৌছবে।”  ৩৩৯৩৯,  ইমাম মানাভী: আত তাইছির বি’শারহি জামেইছ ছাগীর, ১ম খন্ড, ১৬৪ পৃ:;

অথচ জনাব আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব তিনার ‘হাদিসের নামে জালিয়াতী’ বইয়ের ৪৫০ পৃষ্টায় লিখে দিলেন- “অধিকাংশ মুহাদ্দিছ ইহাকে জাল হাদিস বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ একে অত্যান্ত দুর্বল হাদিস বলে উল্লেখ করেছেন।”
প্রিয় পাঠক! আপনারাই বলুন, ইহা কি ইমামদের নামে জালিয়াতী নয়?
এদিকে কওমীদের গুরু জনাব আব্দুল মালেক সাহেব তিনার ‘প্রচলিত ভুল’ বইয়ের প্রথম প্রকাশের ১৬৪ পৃষ্টায় বলেছেন-
“বাক্যটি ব্যাপকভাবে হাদীস হিসেবে বলা হয়ে থাকে। প্রকৃত পক্ষে এটি পরবর্তী কারো বাণী।”
লক্ষ্য করুন, ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম মানাভী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ফায়ছালা মোতাবেক ইহা দুর্বল সনদের হাদিসে রাসূল (ﷺ), তারপরেও জনাব আব্দুল মালেক কওমী তিনি এটি মানতে নারাজ! কি হাস্যকর বিষয়।
সনদ পর্যালোচনা: এই হাদিসের সনদেأبو عاتكة البصري  طَرِيفُ بْنُ سَلْمَانَ (তারিফ ইবনে সালমান আবুল আতিকা আল বাছরী) নামক একজন রাবী আছে যার ব্যাপারে ইমামগণ দুর্বল বলে আখ্যা দিয়েছেন, কিন্তু কেউ মিথ্যাবাদী বলেননি। যেমন নিচের বর্ণনা গুলো লক্ষ্য করুনন:-
وقَال البُخارِيُّ: منكر الحديث. -“ইমাম বুখারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে মুনকারুল হাদিস।” ৩৪০৪০, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৭৪৫৮; হাফিজ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ২১৪৪;

 وَقَال النَّسَائي: ليس بثقة. -“ইমাম নাসাঈ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলে: সে বিশ্বস্ত নয়।” ৩৪১৪১,  ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৭৪৫৮; হাফিজ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ২১৪৪;

 وَقَال الدَّارَقُطْنِيُّ: ضعيف. -“ইমাম দারে কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে দুর্বল।” ৩৪২৪২, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৭৪৫৮; হাফিজ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ২১৪৪;

 روى له التِّرْمِذِيّ حديثا واحدا -“ইমাম তিরমিজি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার থেকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন।” ৩৪৩৪৩,  ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৭৪৫৮; হাফিজ ইবনে কাছির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ২১৪৪;
 
وَقَالَ أَبُو حَاتِم الرَّازِيّ ضعيف الحديث. -“ইমাম আবু হাতিম রাজী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে দুর্বল।” ৩৪৪৪৪,  ইমাম ইবনে আবী হাতেম: জারাহ ওয়া তাদিল, রাবী নং ২১৬৯;

 قال ابن عدي: منكر الحديث، -“ইমাম ইবনে আদী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে মুনকারুল হাদিস।”  ৩৪৫৪৫,  ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল, রাবী নং ৯৬৩;

অতএব, এই রাবীর বর্ণিত রেওয়ায়েত দ্বায়িফ পর্যায়ের হবে তবে বাতিল নয়। এই হাদিসের সনদে আরেকজন রাবী রয়েছে তার নাম الْحَسَنُ بْنُ عَطِيَّةَ، (হাছান ইবনে আতিয়্যা), তার ব্যাপারে হাফিজুল হাদিস, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
وَالْحسن بْن عَطِيَّة ضَعِيف قلت الْحَسن روى عَنْهُ الْبُخَاريّ فِي التَّارِيخ وَأَبُو زرْعَة وروى لَهُ التِّرْمِذِيّ وَضَعفه الْأزْدِيّ والْحَدِيث أَخْرَجَهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإيِمَان وَابْن عَبْد الْبر فِي كتاب الْعلم
-“হাছান ইবনে আতিয়্যা’ দ্বায়িফ , আমি বলি: ইমাম বুখারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর তারিখের কিতাবে ‘হাছান’ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম আবু যুরাআ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিজি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং আজদী তাকে দ্বায়িফ বলেছেন। ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর শুয়াইবুল ঈমানে এবং ইবনে আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর কিতাবুল ইলমে তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।”  ৩৪৬৪৬,  ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাছনুয়া ফি আহাদিছিল মাওজুআ, ১ম খন্ড, ১৭৫ পৃ:;

ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন: وقال أبو حاتم: صدوق. -“ইমাম আবু হাতিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে সত্যবাদী বলেছেন।”  ৩৪৭৪৭, ইমাম যাহাবী: মিযানুল এতেদাল, রাবী নং ১৮৮৮; ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১২৪৫;

‘হাছান ইবনে আতিয়া’ ছাড়াও ভিন্ন আরেকটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সর্বোপরি এই হাদিস ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর বর্ণনা অনুযায়ী দ্বায়িফ বা দুর্বল হবে কিন্তু মওজু বা জাল নয়। আর সকলেই অবগত আছেন আমল ও উৎসাহ প্রদানের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিসই যথেষ্ঠ। ‘আবুল আতিকা’ ছাড়াও হাদিসটি আরেকটি সূত্রে বর্ণিত আছে,
وَأَخْبَرَنَا أَحْمَدُ نا مَسْلَمَةُ، نا يَعْقُوبُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الْعَسْقَلَانِيُّ، ثنا يُوسُفُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْفِرْيَابِيُّ بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ ثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اطْلُبُوا الْعِلْمَ وَلَوْ بِالصِّينِ فَإِنَّ طَلَبَ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
-“আহমদ- মাসলামাহ- ইয়াকুব ইবনে ইসহাক্ব- ইব্রাহিম আসকালানী- ইউছুফ ইবনে মুহাম্মদ ফিরইয়াবী বি’বাইতিল মাকদিছ- সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ- যুহুরী- হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেন: এলম অর্জন কর যদিও চীনে হয়। কেননা সকল মুসলমানের জন্য এলেম অর্জন করা ফরজ।”  ৩৪৮৪৮, জামেউল বায়ানুল ইলমে ওয়া ফাদ্বলিহী, হাদিস নং ২৯; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ১৯২৬; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ২৮৬৯৭;

এই হাদিসের সনদে আরেকজন রাবী রয়েছে তার নাম يَعْقُوبُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الْعَسْقَلَانِيُّ। তার ব্যাপারে হাফিজুল হাদিস, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
وَذكر لَهُ جمَاعَة من الشُّيُوخ وَقَالَ كتبت عَنْهُ وَاخْتلف فِيهِ أهل الحَدِيث فبعضهم يُضعفهُ وَبَعْضهمْ يوثقه ورأيتهم يكتبونَ عَنْهُ فكتبَت عَنْهُم وَهُوَ عِنْدِي صَالح جَائِز الحَدِيث
-“একদল শায়েখ তার ব্যাপারে বলেছেন আমরা তার বর্ণিত হাদিস লিখি। হাদিসের ইমামগণের মাঝে তার ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন। কেউ কেউ তাকে দ্বায়িফ বলেছেন এবং কেউ কেউ তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন এবং তার থেকে হাদিস লিখেছেন। আমার কাছে সে হাদিস বর্ণনায় গ্রহণযোগ্য ও জায়েযুল হাদিস।”  ৩৪৯৪৯, ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাছনুয়া ফি আহাদিছিল মাওজুআ, ১ম খন্ড, ১৭৫ পৃ:;

অতএব, উক্ত রেওয়ায়েতটি হাছান পর্যায়ের কিন্তু মাওজু বা জাল হাদিস নয়। তাই আমল বা উৎসাহ প্রদানের জন্য এরূপ হাদিসই যথেষ্ঠ। এ সম্পর্কে হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে ভিন্ন আরেকটি রেওয়ায়েত রয়েছে,
رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ عَبد اللَّهِ مُحَمد بْنُ كِرَامٍ، وحدث بن كِرَامٍ عَنْهُ أَيضًا عَنِ الْفَضْلِ بْنِ مُوسَى عَنْ مُحَمد بْنِ عَمْرو، عَن أَبِي سَلَمَةَ، عَن أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وسَلَّم قَال: اطْلُبُوا الْعِلْمَ وَلَوْ بِالصِّينِ، فَإِنَّ طَلَبَهُ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ.
-“হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেন: এলম অর্জন কর যদিও চীনে হয়। কেননা সকল মুসলমানের জন্য এলেম অর্জন করা ফরজ।”  ৩৫০৫০,  ইবনে আদী: আল কামিল ফি দোয়াফাই রিজাল, ১ম খন্ড, ২৯২ পৃ:;

হাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: وهو ضعيف من الوجهين، 
-“এই দু’টি সূত্রই দ্বায়িফ ।” ৩৫১৫১,  ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ১২৫;

 ইমাম ছাখাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আরো উল্লেখ করেন: 
وقال البزار: إنه روي عن أنس بأسانيد واهية، -“ইমাম বাজ্জার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: নিশ্চয় এই হাদিস হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে একাধিক দুর্বল সনদে বর্ণিত আছে।”  ৩৫২৫২, ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ৬৬০ নং হাদিসের ব্যাখ্যাায়; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১৬৬৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;

মাওলানা কাজী শাওকানী বলেন: وأسانيده ضعيفة، -“এই হাদিসের সকল সনদ দুর্বল।”  ৩৫৩৫৩,  ফাওয়াইদুল মাজমুয়া, ১নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;

সুতরাং এই হাদিসকে ভিত্তিহীন বা জাল বলার কোন রাস্তা নেই যেহেতু এর গ্রহণযোগ্য সনদ রয়েছে। 
الضَّعِيفُ غَيْرُ الْمَوْضُوعِ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ -“ফাজায়েলের ক্ষেত্রে গাইরে মওজু দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা জায়েয।”  ৩৫৪৫৪,  ফাতহুল কাদীর, রুহুল বয়ান

হিজরী ১১শ শতাব্দির মোজাদ্দেদ, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, وَالضَّعِيفُ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ اتِّفَاقًا 
-“সর্ব-সম্মতিক্রমে ফাজায়েলের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা জায়েয।”  ৩৫৫৫৫,  মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, ৪৩৪ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;

আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় ‘তাফছিরে রুহুল বয়ান’ কিতাবে উল্লেখ করেন: 
 قد صح عن العلماء تجويز الاخذ بالحديث الضعيف فى العمليات 
-“আলিমগণের পক্ষ হতে ইহা ছহীহ্ যে, আমলের ক্ষেত্রে দ্বায়িফ হাদিস গ্রহণ করা জায়েয।”  ৩৫৬৫৬, তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৭ম খন্ড, ২৬৩ পৃ:; তাফছিরে জালালাইন, ৩৫৭ পৃ: ১৩ নং হাশিয়া:;

আল্লামা মুফতী আমিমুল ইহছান মোজাদ্দেদী আল-বরকতী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: “আল্লাহর নবী (ﷺ) এর নাম শুনে অঙ্গুলী চুম্বনের হাদিস গুলো মারফূ ছহীহ্ নয়, দ্বায়িফ হাদিস পাওয়া যায়। ফজিলতের জন্য আমলের বেলায় দ্বায়িফ হাদিসের উপর আমল করা মুস্তাহাব।” (ফতোয়ায়ে বরকতীয়া)। হানাফী মাজহাবের ফোকাহাদের অভিমত:
قَالَ أَبُو مُحَمَّدِ بْنُ حَزْمٍ: جَمِيعُ الْحَنَفِيَّةِ مُجْمِعُونَ عَلَى أَنَّ مَذْهَبِ أَبِي حَنِيفَةَ أَنَّ ضَعِيفَ الْحَدِيثِ أَوْلَى عِنْدَهُ مِنَ الْقِيَاسِ وَالرَّأْيِ. 
-“আবু মুহাম্মদ ইবনে হাজম বলেছেন: সকল হানাফীরা ঐক্যমত পোষন করেছেন যে, ইমামে আজম আবু হানিফা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর মাজহাব হল: নিশ্চয় দ্বায়িফ হাদিস তার কাছে কিয়াস ও রায় হতেও উত্তম।”  ৩৫৭৫৭,  ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, ৩য় খন্ড, ৯৯০ পৃ: ৪৪৫ নং রাবীর ব্যাখ্যায়;

হিজরী নবম শতাব্দির মুজাদ্দেদ আল্লামা ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,
 وَيُعْمَلُ بِالضَّعِيفِ أَيْضًا فِي الْأَحْكَامِ، إِذَا كَانَ فِيهِ احْتِيَاطٌ.-“দ্বায়িফ হাদিসও আহকামের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য যখন সাবধানতা অবলম্বন করা হবে।”  ৩৫৮৫৮,  ইমাম ছিয়তী: তাদরিবুর রাবী, ১ম খন্ড, ৩৫১ পৃ:;
Top