হযরত উমর (رضي الله عنه) এর নেকী আকাশের তারার সমান

 وَعَن عَائِشَة قَالَتْ: بَيْنَا رَأْسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حجري لَيْلَةٍ ضَاحِيَةٍ إِذْ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ يَكُونُ لِأَحَدٍ مِنَ الْحَسَنَاتِ عَدَدُ نُجُومِ السَّمَاءِ؟ قَالَ: نَعَمْ عُمَرُ . قُلْتُ: فَأَيْنَ حَسَنَاتُ أَبِي بَكْرٍ؟ قَالَ: إِنَّمَا جَمِيعُ حَسَنَاتِ عُمَرَ كَحَسَنَةٍ وَاحِدَةٍ مِنْ حَسَنَاتِ أَبِي بَكْرٍ رَوَاهُ رزين

-“হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, একদা এক চাঁদনী রাতে যখন রাসূল (ﷺ)’র মাথা মোবারক আমার কোলে ছিল, তখন আমি বললাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আকাশে যতগুলো নক্ষত্র আছে ততগুলো নেকী কারো আছে কি? প্রিয় নবীজি (ﷺ) বললেন: হ্যাঁ! হযরত উমরের নেকী এই পরিমাণ। আমি বললাম, তবে আবু বকরের নেকী কোথায়? রাসূল (ﷺ) বললেন: উমরের সমস্থ নেকী আবু বকরের একটি নেকীর সমান।”  

৫৮৩৮৩,  মেসকাত শরীফ, ৫৬০ পৃ: হাদিস নং ৬০৬৮; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১তম খন্ড, ২১৭ পৃ:; ইমাম আকবুল হাছান রজিন: তাজরিদ ফি জামঈ বাইনাছ ছিহাহ; শরহে ত্বাবী, ১২তম খন্ড, ৩৮৭২ পৃ:, হাদিস নং ৬০৬৮; জামেউল অছুল, হাদিস নং ৬৪৬৬;

‘রাজিন’ কিতাবটি লিখেছেন أَبِي الْحَسَنِ رَزِينِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْعَبْدَرِيِّ، ইমাম আবীল হাছান রাজিন ইবনে মুয়াবিয়া আব্দারী (র:) এর লিখিত, যিনি হেরেম শরীফের মালেকী মাজহাবের ইমাম ছিলেন। তিনি ৫৩৫ হিজরীতে মক্কায় ইন্তেকাল করেন। তিনি একজন বড় মাপের ইমাম ও মুছাদ্দিছ ছিলেন। ‘রাজিন’ কিতাবটির মূল নাম হলো:كِتَاب التَّجْرِيد فِي الْجَمْعِ بَيْنَ الصِّحَاحِ (কিতাবুত তাজরিদ ফি জাময়ি বাইনা ছিহাহ্)। লেখকের নামে ইহাকে সংক্ষেপে ‘রাজিন’ বলা হয়।  ৫৮৪৮৪,  মেরকাত; সিয়ারে আ’লামী নুবালা

হাদিসটি সনদ সহকারে খতিবে বাগদাদী (র:) তার তারিখে ও ইবনে আসাকির (র:) স্বীয় তারিখে এভাবে উল্লেখ করেছেন:

أَخْبَرَنَا أَخُو الْخَلالِ، مِنْ أَصْلِ كِتَابِهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الْقَاسِمِ بُرَيْهُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ بُرَيْهٍ الْبَغْدَادِيُّ الْبَيِّعُ بِجُرْجَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُحَمَّدٍ الصَّفَّارُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنْصُورٍ الرَّمَادِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَعْمَرُ بْنُ رَاشِدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَتْ لَيْلَتِي مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا ضَمَّنِي وَإِيَّاهُ الْفِرَاشُ نَظَرْتُ إِلَى السَّمَاءِ، فَرَأَيْتُ النُّجُومَ مُشْتَبِكَةً، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي هَذِهِ الدُّنْيَا رَجُلٌ لَهُ حَسَنَاتٌ بِعَدَدِ نُجُومِ السَّمَاءِ؟ فَقَالَ: نَعَمْ قُلْتُ: مَنْ؟ قَالَ: عُمَرُ، وَإِنَّهُ لَحَسَنَةٌ مِنْ حَسَنَاتِ أَبِيكِ

-“হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, এক রাতে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমার কাছে ছিল। যখন রাত্র গভীর হল ও আকাশে কোন আবরণ ছিলনা ফলে আমি আকাশের দিকে তাকালাম। অত:পর দেখলাম তারকারাজী আকাশে বিন্যস্ত অবস্থায়। ফলে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই পৃথিবীতে এমন কেউ কি আছে যার নেকী সমূহ আকাশের তারকার সমতুল্য ? প্রিয় নবীজি (ﷺ) বললেন: হ্যাঁ। আমি বললাম: কে ? প্রিয় নবীজি (ﷺ) বললেন: উমর (رضي الله عنه)। আর নিশ্চয় তার সকল নেকী সমূহ তোমার পিতার একটি নেকীর মতই।”  

৫৮৫৮৫,  খতিবে বাগদাদী: তারিখে বাগদাদ, ৭ম খন্ড, ৬৪৩ পৃ: ৩৫৩১ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; ইবনে আসাকির: তারিখে দামেস্ক, ৩০তম খন্ড, ১২৪ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাসনুয়া, ৩য় খন্ড, ৩৭৮ পৃ:; ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৩৫৩১ নং রাবীর ব্যাখ্যায়;

এই হাদিস সম্পর্কে খতিবে বাগদাদী (র:) বলেন:
وَفِي كِتَابِهِ بِهَذَا الإِسْنَادِ عِدَّةُ أَحَادِيثَ مُنْكَرَةُ الْمُتُونِ جِدًّا -“এই কিতাবের এই হাদিসটি ত্রুটিপূর্ণ, হাদিস সমূহের মতন স্পষ্ট আপত্তিজনক।”  ৫৮৬৮৬,  তারিখে বাগদাদ, ৭ম খন্ড, ৬৪৩ পৃ: ৩৫৩১ নং রাবীর ব্যাখ্যায়;

ইহার সনদে بريه بن محمد بن بريه أبو القاسم (বারদাহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে বারদাহ আবুল কাশেম) নামক সমালোচিত রাবী রয়েছে। তাই এই হাদিস দ্বায়িফ সনদের।
Top