দৈনন্দিন জীবনের আমল সমূহঃ ☛১. হযরত আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, এক মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের ৬টি হক রয়েছে: (ক.) কারো সাথে সাক্ষাৎ হলে সালাম দেবে। (খ.) আমন্ত্রণ করলে তা কবুল করবে। (গ.) পরামর্শ চাইলে সৎ পরামর্শ দেবে। (ঘ.) হাঁচি দিয়ে আল-হামদুলিল্লাহ পড়লে তার জবাব দেবে (ইয়ারহামুকাল্লাহ বলবে) (ঙ.) পীড়িত হলে তার কাছে গিয়ে তার খবরাখবর নেবে। (চ.) ইন্তিকাল করলে তার জানাযা নামাযে অংশগ্রহণ করবে। তথ্যসূত্রঃ ১. মুসলিম শরীফ-২১৬২ ২. বুখারী শরীফ-১২৪০ ☛২. হযরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন তোমাদের কেউ যেন কখনো দাঁড়িয়ে (পানি) পান না করে। [মুসলিম শরীফ, ২০২৬] ☛৩. হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত- রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যখন তোমাদের কেউ জুতা পরে তখন সে যেন ডান দিক থেকে শুরু করে, আর যখন খোলে তখন সে যেন বাম দিকে শুরু করে।যাতে পরার সময় উভয় পায়ের মধ্যে ডান পা প্রথমে হয় এবং খোলার সময় শেষে হয়। তথ্যসূত্রঃ ১. বুখারী শরীফ-৫৮৫৫ ২. মুসলিম-২০৯৭ ☛৪. সুরা ফাতিহা ৩ বার পড়লে আল-কুরআন ২ বার খতমের সওয়াব হয়। [তাফসীরে মাযহারী, ১ম খন্ড, পৃ:১৫] ☛৫. সুরা ইখলাস ৩ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [সহিহ বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ:৬৫০] ☛৬. সুরা ইয়াসিন ১ বার পড়লে ১০ খতম এর সওয়াব হয়। [সহিহ তিরমিযি, ২য় খন্ড, পৃ: ১১৬] ☛৭. সুরা কাফিরুন ৪ বার পড়লে খতমের সওয়াব হয়। [সহিহ তিরমিযি, ২য় খন্ড, পৃ: ১১৭] ☛৮. সুরা যিলযাল ২ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [সহিহ তিরমিযি, ২য় খন্ড, পৃ:১১৭] ☛৯. সুরা ক্বদর ৪ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [দুররে মনসুর, ৬ষ্ট খন্ড, পৃ: ৬৮০] ☛১০. আয়তুল কুরসী ৪ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [তাফসীরে মাযহারী, ২য় খন্ড, পৃ: ৩১] ☛১১. সুরা নসর ৪ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [সহিহ তিরমিযি, ২য় খন্ড, পৃ: ১১৭] ☛১২. সুরা আদিয়াত ২ বার পড়লে ১ খতমের সওয়াব হয়। [দুররে মনসুর, ৬ষ্ট খন্ড, পৃ: ৬৯৫] ☛১৩. সুরা তাকাসুর ১ বার পাঠ করলে ১০০০ আয়াত পাঠের সমান সওয়াব হয়। [বায়হাকী, মিশকাত ১ম খন্ড, পৃ: ১৯০] ☛১৪. আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি (তার) বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে একটি খেজুর পরিমাণও কিছু দান করে—আর আল্লাহতে বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণই করেন না—সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন। (অতঃপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন;) পরিশেষে তা রহমানের করতলে বৃদ্ধিলাভ ক’রে পাহাড় থেকেও বড় হয়ে যায়। যেমন তোমাদের কেউ তার অশ্ব-শাবককে লালন-পালন ক’রে থাকে।” [বুখারী ১৪১০, মুসলিম ২৩৮৯-২৩৯০ নং, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রভৃতি] ☛১৫.পবিত্রতা, তাসবিহ পাঠ, সালাত, ধৈর্য এবং কোরআনের ফযিলত: ١٣ -عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ (ﷺ) “الطَّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ،وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآنِ -أَوْ: تَمْلَأُ- مَا بَيْنَالسَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، وَالصَّلَاةُ نُورٌ، وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ،وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ، وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَك أَوْ عَلَيْك، كُلُّ النَّاسِيَغْدُو، فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا”. رَوَاهُ مُسْلِمٌ আবূ মালিক আল আশ’আরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ পবিত্রতা হল ঈমানের অংশ।“আলহামদু লিল্লা-হ” মিযানের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে দিবে এবং “সুবহানাল্লা-হ ওয়াল হামদুলিল্লা-হ” আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দিবে। “সালাত”হচ্ছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি।“সদাকাহ” হচ্ছে দলীল। “ধৈর্য” হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর “আল কুরআন’ হবে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সকল মানুষই প্রত্যেক ভোরে নিজেকে আমলের বিনিময়ে বিক্রি করে। তার আমাল দ্বারা সে নিজেকে (আল্লাহর আযাব থেকে) মুক্ত করে অথবা সে তার নিজের ধ্বংস সাধন করে। তথ্যসূত্রঃ ১. সহীহ মুসলিম, তাহারাত অধ্যায়, অনুচ্ছেদঃ অজুর ফযিলত হা: ২২৩ ২. সুনানে নাসাঈ হা: ৩৯৪০ ৩. বায়হাকী সুনানে কুবরা ৭/৭৮ ৪. মুস্তাদরেক হাকেমঃ ২/১৬০ ৫. মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল ৩/১৯৯ হা:১৩০৮৮ ☛১৬.অধিক সিজদা করার ফজিলত: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এঁর খাদেম সাওবান (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ”তুমি অত্যধিক সিজদাহ করাকে অভ্যাস বানিয়ে নাও। কারণ, তুমি যে কোন সিজদাহ করবে, আল্লাহ তা’আলা তার দ্বারা তোমাকে মর্যাদায় এক ধাপ উঁচু করে দিবেন এবং তোমার থেকে একটি গুনাহ মিটিয়ে দেবেন।” তথ্যসূত্রঃ ১. রিয়াদুস সালেহীন: ১০৯ ২. মুসলিম: ৪৮৮ ৩. তিরমিযী: ৩৮৮ ৪. নাসায়ী: ১১৩৯ ৫. ইবনে মাজাহ: ১৪২৩ ৬. আহমাদ: ২১৮৬৫, ২১৯০৫, ২১৯৩৬ ☛১৭. ভালো কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময়, কোন কিছু লেখা বা পড়ার সময়, কোন কাজ শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করে। [বুখারীঃ ৫৩৭৬] ☛১৮. ভালো কিছু খাওয়া বা পান করা শেষে, কোন শোভ সংবাদ শোনা হলে, কেউ কেমন আছো জিজ্ঞেস করলে- তার জবাবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা। [ইবনে মাজাহঃ ৩৮০৫] ☛১৯. কারো হাঁচি আসলে ”আলহামদু লিল্লাহী ‘আলা কুল্লী হা-ল” বলা। [আত তিরমিযীঃ ২৭৪১] ☛২০. কোন হাঁচি দাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে শুনলে- ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। [বুখারীঃ ৬২২৪] ☛২১. আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব বা বড়ত্বের কোন কৃতিত্ব দেখলে কিংবা শুনলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা। স্বাভাবিকের মধ্যে কোন ব্যতিক্রম দেখলে কিংবা আশ্চর্য ধরণের কোন কথা শুনলে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। [বুখারীঃ ৬২১৮] ☛২২. ভালো যে কোন কিছু বেশি বা ব্যতিক্রম দেখলে ‘মা-শা আল্লাহ’ বলা। [মুসলিমঃ ৩৫০৮] ☛২৩. ভবিষ্যতে কোন কিছু করবে বললে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলা। [আল কাহাফঃ ২৩-২৪] ☛২৪. কোন বাজে কথা শুনলে কিংবা আল্লাহর আজাব ও গজবের কথা শুনলে বা মনে পড়লে “না’উজু বিল্লাহ” বলা। [বুখারীঃ ৬৩৬২] ☛২৫. কোন বিপদের কথা শুনলে কিংবা কোন খারাপ বা অশুভ সংবাদ শুনলে, কোন কিছু হারিয়ে গেলে, কোন কিছু চুরি হয়ে গেলে, কোন কষ্ট পেলে ‘ইন্না লিল্লাহ’ বলা। [মুসলিমঃ ২১২৬] ☛২৬. কথা প্রসঙ্গে কোন গুনাহর কথা বলে ফেললে, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা। [সূরা মুহাম্মদঃ ১৯] ☛২৭. উপরে উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এবং নিচে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। [বুখারীঃ ২৯৯৩] ☛২৮. নিশ্চিতভাবে না জেনে কোন বিষয়ে কিছু বললে, কথা শেষে ‘ওয়াল্লাহু আলুম’ বলা। [বুখারীঃ ৫৫৭০] ☛২৯. কেউ কিছু দিলে কিংবা কারো মাধ্যমে কোন কাজ হলে তার বদলে ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ বলা। [বুখারীঃ ৩৩৬] ☛৩০. কোন কিছু জবেহ করার সময় ‘বিসমিল্লাহী ওয়া আল্লাহু আকবর’ বলা। [মুসলিমঃ ৫০৮৮] ☛৩১. কোন বিজয় লাভ করলে কিংবা বিজয় লাভের আশায় শ্লোগান দিলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা। [বুখারীঃ ৬১০] ☛৩২. কারও উপকার করার কারণে ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ বললে তার উত্তরে কি বলতে হবে? ❏ একদা উসাইদ বিন হুযায়ের (رضي الله عنه) কোন এক প্রেক্ষিতে শুকরিয়া স্বরূপ রাসূল (ﷺ) কে বললেন, ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ বা ‘জাযাকাল্লাহু আত্বইয়াবাল জাযা’।উত্তরে তিঁনি বললেন, ‘ফা জাযাকুমুল্লাহু খায়রান’। [হাকেম হা/৬৯৭৪; ইবনে হিববান হা/৭২৭৯; ছহীহাহ হা/৩০৯৬] ❏ তাছাড়াও পরস্পরের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ বলার অভ্যাস খুবই গুরুত্ববহ।রাসূল রাসূল (ﷺ) বলেন কাউকে অনুগ্রহ করা হ’লে সে যদি অনুগ্রহকারীকে বলে, ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ (আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দিন) তবে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল। [তিরমিযী হা/২০৩৫; মিশকাত হা/৩০২৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৩৬৮] ❏ হযরত ওমর (رضي الله عنه) বলেন, ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ বলাতে কি কল্যাণ রয়েছে লোকেরা তা যদি জানত, তাহ’লে পরস্পরকে বেশী বেশী বলত। [ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৭০৫০] ❏ এছাড়াও কেউ ‘বারাকাল্লাহু ফীকুম’ বলে দো‘আ করলে তার জওয়াবে অনুরূপ বলবে। [নাসাঈ, সুনানুল কুবরা হা/১০১৩৫, সনদ জাইয়িদ] ☛৩৩. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ وَ أَتُوْبُ إِلَيْهِ- উচ্চারন: আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহে’। অর্থ : আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি’। এই দো‘আ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়’। [তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩ ‘দো‘আসমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা’ অনুচ্ছেদ-৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭২৭] ☛৩৪.হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَ أَغْنِنِىْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ- উচ্চারন: আল্লা-হুম্মাক্ফিনী বিলহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগ্নিনী বিফায্লিকা ‘আম্মান সিওয়া-কা। অর্থ : হে আল্লাহ! আঁপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন!রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন বলেন, এই দো‘আর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন’। [তিরমিযী, বায়হাক্বী (দা‘ওয়াতুল কাবীর), মিশকাত হা/২৪৪৯, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-৭ ; ছহীহাহ হা/২৬৬] ☛৩৫.হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ- সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী, সুব্হা-নাল্লা-হিল ‘আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বেহামদিহী’ পড়বে। অর্থ : ‘মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান’। এই দো‘আ পাঠের ফলে তার সকল গোনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’।রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই দো‘আ সম্পর্কে বলেন যে, দু’টি কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকটে খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী। তা হ’ল সুব্হা-নাল্লা-হি….। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠের ছওয়াব’ অনুচ্ছেদ-৩; বুখারী হা/৭৫৬৩ ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৮] ☛৩৬. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ أَدْخِلْنِىْ الْجَنَّةَ وَ أَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ- উচ্চারন: আল্লা-হুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা ওয়া আজিরনী মিনান্ না-র (৩ বার)। অর্থ : হে আল্লাহ তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও! [তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৪৭৮ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘আশ্রয় প্রার্থনা’ অনুচ্ছেদ-৮।] ☛৩৭. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى- উচ্চারন: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত তুক্বা ওয়াল ‘আফা-ফা ওয়াল গিণা। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি। [মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৮৪ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘সারগর্ভ দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-৯] ☛৩৮. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَ رِضَا نَفْسِهِ وَ زِنَةَ عَرْشِهِ وَ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ- উচ্চারন: সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বিহাম্দিহী ‘আদাদা খাল্ক্বিহী ওয়া রিযা নাফ্সিহী ওয়া ঝিনাতা ‘আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহ (৩ বার)। অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওযন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ। [মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০১ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়, ‘তাসবীহ ও হামদ পাঠের ছওয়াব’ অনুচ্ছেদ-৩; আবুদাঊদ হা/১৫০৩] ☛৩৯. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِيْنِكَ، اَللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ- উচ্চারন: ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূবে ছাবিবত ক্বালবী ‘আলা দ্বীনিকা, আল্লা-হুম্মা মুছারিরফাল কবুলূবে ছাররিফ ক্বুলূবানা ‘আলা ত্বোয়া-‘আতিকা। অর্থ : হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখো’। ‘হে অন্তর সমূহের রূপান্তরকারী! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও’। [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১০২ ‘ঈমান’ অধ্যায়-১, ‘তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস’ অনুচ্ছেদ-৩; মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯] ☛৪০. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُبِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ الْبُخْلِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَ عَذَابِ الْقَبْرِ- উচ্চারন: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! (১) আমি আঁপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ’তে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও (৫) কবরের আযাব হ’তে’। [বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪। ☛৪১. হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ – উচ্চারন: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল হাম্মে ওয়াল হাযানে ওয়াল ‘আজঝে ওয়াল কাসালে ওয়াল জুবনে ওয়াল বুখলে ওয়া যালা‘ইদ দায়নে ওয়া গালাবাতির রিজা-লে। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আঁপনার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ-বেদনা হ’তে, অক্ষমতা ও অলসতা হ’তে, ভীরুতা ও কৃপণতা হ’তে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের যবরদস্তি হ’তে’। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৫৮ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘আশ্রয় প্রার্থনা’ অনুচ্ছেদ-৮] ☛৪২. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে اَللهُ أَكْبَرُ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ، اَسْتَغْفِرُ اللهَ، اَسْتَغْفِرُ اللهَ- উচ্চারণ : আল্লা-হু আকবার (একবার পড়বে)। আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ (তিনবার)। অর্থ : আল্লাহ সবার চেয়ে বড়।আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৯৫৯, ৯৬১ ‘ছালাত পরবর্তী যিকর’ অনুচ্ছেদ-১৮] ☛৪৩. হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَ الْإِكْرَامِ. উচ্ছারন: আল্লা-হুম্মা আন্তাস্ সালা-মু ওয়া মিন্কাস্ সালা-মু, তাবা-রক্তা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরাম। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আঁপনিই শান্তি, আঁপনার থেকেই আসে শান্তি।বরকতময় আঁপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিক’। ‘এটুকু পড়েই ইমাম উঠে যেতে পারেন’। [মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬০] হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, وَعَنْ ثَوبَانَ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا انْصَرَفَ مِنْ صَلاَتِهِ اسْتَغْفَرَ ثَلاثَاً، وَقَالَ: «اَللهم أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَاذَا الجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ». قِيلَ لِلأَوْزَاعِيِّ – وَهُوَ أَحَدُ رُوَاةِ الحَدِيثِ -: كَيْفَ الاِسْتِغْفَارُ ؟ قَالَ: يَقُولُ: أَسْتَغْفِرُ الله، أَسْتَغْفِرُ الله . رواه مسلم সাওবান (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যখন নামায থেকে সালাম ফিরার পর ঘুরে বসতেন, তখন তিনবার ‘ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করতেন আর পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা আন্তাস সালামু অমিনকাস সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল-জালালি অল-ইকরাম। অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি শান্তিময়, তোমার নিকট থেকেই শান্তি আসে। তুমি বরকতময় হে মহিমান্বিত ও মহানুভব। এ হাদীসটির অন্যতম বর্ণনাকারী আওযায়ী (রহঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, ‘ইস্তিগফার’ কিভাবে হবে? উত্তরে তিনি বললেন, বলবে, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।’ (অর্থাৎ, আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।) তথ্যসূত্রঃ (ক.) মুসলিম: ৫৯১ (খ.) তিরমিযী: ৩০০ (গ.) আবূ দাউদ: ১৫১২ (ঘ.) ইবনু মাজাহ: ৯২৮ (ঙ.) আহমাদ: ২১৯০২ (চ.) দারেমী: ১৩৪৮ ☛৪৪. হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، لاَحَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إلاَّ بِاللهِ- اَللَّهُمَّ أَعِنِّيْ عَلَى ذِكْرِكَ وَ شُكْرِكَ وَ حُسْنِ عِبَادَتِكَ، اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ- উচ্চারন: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর; লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ (উঁচুস্বরে)। [সালাম ফিরানোর পরে রাসূল (ﷺ) এটুকু তাঁর সর্বোচ্চ স্বরে পড়তেন।মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৩] ☛৪৫. হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَّبِالْإِسْلاَمِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا- উচ্চারন: রাযীতু বিললা-হে রববাঁও ওয়া বিল ইসলা-মে দীনাঁও ওয়া বিমুহাম্মাদিন্ নাবিইয়া। অর্থ: আমি সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম আল্লাহর উপরে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামের উপরে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদের উপরে নবী হিসাবে’।রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি এই দো‘আ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে’। [আবুদাঊদ হা/১৫২৯, ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ অনুচ্ছেদ-৩৬১] ☛৪৬. হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বাক্য চারটিঃ সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর। তুমি ইচ্ছামতো এই বাক্য চারটির যে কোন বাক্য আগে পিছে বলতে পারো।(বাক্যগুলির সাজানোর ক্ষেত্রে কোন নিয়ম বা ফযিলত নেই ) [সহীহ মুসলিম ৩/১৬৮৫, নং ২১৩৭] ☛৪৭. আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আঁমি সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর বলতে এত বেশি পছন্দ করি যে, এগুলি বলা আঁমার কাছে পৃথিবীর বুকে সূর্যের নীচে যা কিছু আছে সবকিছু থেকে বেশি প্রিয়। [সহীহ মুসলিম ৪/২০৭২, নং ২৬৯৫] ☛৪৮. “সর্বশ্রেষ্ঠ দো‘আ হল, ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ (আলহামদু লিল্লাহ) “সকল প্রশংসা আল্লাহরই”।আর সর্বোত্তম যিকর হল, ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ)“আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক্ব ইলাহ নেই।” তথ্যসূত্রঃ (ক.) তিরমিযী ৫/৪৬২, নং ৩৩৮৩ (খ.) ইবনে মাজাহ্ ২/১২৪৯, নং ৩৮০০ (গ.) আল-হাকিম, ১/৫০৩ এবং সহীহ বলেছেন, আর ইমাম যাহাবী তা সমর্থন করেছেন।আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ১/৩৬২। ☛৪৯. সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’ পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলী ভরে দেয়। [সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৮০] ❏ ‘আলহামদুলিল্লাহ’র জিকির মিজানের পাল্লাকে ভারী করে দেয় এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। [তিরমিজি: ৫/৪৬২ ও ইবনে মাজাহ: ২/১২৪৯] ☛৫০. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তাসবীহ (সুবহানআল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ)-এর মাধ্যমে তোমার আল্লাহর যে মহিমা বর্ণনা কর তা মৌমাছির গুঞ্জনের শব্দ করে আরশের চার পাশে ঘুরতে থাকে।সেগুলো নিজ নিজ প্রেরকের কথা উল্ল্যেখ করতে থাকে।তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ কর না যে, আল্লাহর নিকট অনবরত উল্লেখকারী কেউ থাকুক? [সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮০৯] ☛৫১. উম্মু হানী (رضي الله عنه) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর নিকট এসে বললেনঃ হে রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন একটা আমল বলে দিন।কেননা আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে পরেছি, দুর্বল হয়ে গেছি এবং আমার দেহও ভারী হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি শতবার ‘আল্লাহু আকবার’ শতবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও শতবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পড়ো।তা জিনপোষ ও লাগামসহ একশ ঘোড়া আল্লাহর পথে (জিহাদে) দান করার চেয়ে উত্তম, একশ উটের চেয়ে উত্তম এবং একশ গোলাম আজাদ করার চেয়ে উত্তম। [সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮১০] ☛৫২. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে وَعَنْ أَبي مَالِكٍ الأَشعَرِي رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «الطُّهُورُ شَطْرُ الإِيمانِ، وَالحَمْدُ للهِ تَمْلأُ المِيزَانَ، وَسُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ للهِ تَمْلآنِ – أَوْ تَمْلأُ – مَا بَيْنَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ». رواه مسلم আবূ মালেক আশআরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “পবিত্রতা অর্ধেক ঈমান।আর ‘আলহামদু লিল্লাহ’ (কিয়ামতে নেকীর) দাঁড়িপাল্লাকে ভরে দেবে এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লাহ’ আসমান ও যমীনের মধ্যস্থিত শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়।” তথ্যসূত্রঃ (ক.) মুসলিম: ২২৩ (খ.) তিরমিযী: ৩৫১৭ (গ.) ইবনু মাজাহ: ২৮০ (ঘ.) আহমাদ: ২৩৯৫, ২২৪০১ (ঙ.) দারেমী: ৬৫৩ ☛৫৩. আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা যখন জান্নাতের বাগান সমূহে যাবে বা তা অতিক্রম করবে তখন তৃপ্তির সাথে বিচরণ ও ভক্ষন করবে।আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল, জান্নাতের বাগান সমূহ কি? তিঁনি বললেনঃ মসজিদসমূহ।আমি বললামঃ বিচরণ ও ভক্ষন কি? তিনি বললেনঃ সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার। [সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৩২, নং ৩৫০৯] ❏ এছাড়াও ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه), সালমান ফারসী (رضي الله عنه), আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) ও ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্নীত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যে এ বাক্য চারটির প্রতিটি বাক্য একবার বললে জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপন করা হয়। [ইমাম মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪০৭-৪০৮, মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৮-৯০] ☛৫৪. আবু যার ও আয়েশা (رضي الله عنه) বর্নীত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলির প্রত্যেক বাক্য একবার যিকর করা একবার আল্লাহর ওয়াস্তে দান করার সমতুল্য। [সহীহ মুসলিম ১/৪৯৮ নং ৭২০; ২/৬৯৭ নং ১০০৬] ☛৫৫. আবু সালমা (رضي الله عنه) থেকে বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলি কিয়ামতের দিন বান্দার আমল নামায় সবচেয়ে বেশি ভারী হবে। তথ্যসূত্রঃ (ক.) নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/৫০ (খ.) মুসনাদ আহমদ ৩/৪৪৩, ৪/২৩৭, ৫/৩৬৫ (গ.) তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর ২২/ ৩৪৮ (ঘ.) মাযমাউয যাওয়াইদ ১/৪৯, ১০/৮৮ ☛৫৬. হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ গাছের ঢালে ঝাঁকি দিলে যেমন পাতাগুলি ঝরে যায় অনুরুপভাবে এই যিকরগুলি বললে বান্দার গুনাহ ঝরে যায়। [মুসনাদ আহমদ ৩/১৫২, আত তারগীব ২/৪১৮] ☛৫৭. আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) ও আবু সাঈদ (رضي الله عنه) উভয়ে নবীয়ে আকরাম (ﷺ) থেকে বর্ননা করেছেন, “আল্লাহ এই চারটি বাক্যকে বেছে পছন্দ করে নিয়েছেন। এই বাক্যগুলির যে কোন একটি বাক্য একবার বললে আল্লাহ ২০ টি সওয়াব প্রদান করতেন এবং ২০টি গুনাহ ক্ষমা করবেন। আর এভাবে যে বেশি বেশি যিকর করবে সে মুনাফিকী থেকে মুক্তি লাভ করবে”। [নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১০] ☛৫৮. আবদুল্লাহ ইবনে উমার বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই চারটি বাক্য যিকরকারী প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি অক্ষরের জন্য ১০টি করে সাওয়াব লাভ করবেন। [তাবারানী, আল-মুজমুল আউসাত ৬/৩০৯] ☛৫৯. হযরত ফাতিমা (رضي الله عنه) নিজের হাতে যাঁতা ঘুরিয়ে ও সংসারের সকল কর্ম একা করতে কষ্ট পেতেন।হযরত আলী (رضي الله عنه) তাঁকে পরামর্শ দেন যে, তোমার আব্বার নিকট যুদ্ধলব্ধ একটি দাসী চাও, যে তোমাকে সংসার কর্মে সাহায্য করবে। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এঁর সাথে দেখা করতে এসে তাঁকে না পেয়ে ফিরে যান। রাত্রে তাঁরা বিছানায় শুয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁদের কাছে আসেন। তিনি বলেন, “আঁমার আসহাবে সুফফার দরিদ্র সাহাবীগনকে বাদ দিয়ে তোমাকে কোন দাসী দিতে পারব না।তবে দাসীর চেয়েও উত্তম বিষয় তোমাদেরকে শিখিয়ে দিচ্ছি।তোমরা যখন বিছানায় শুয়ে পড়বে তখন ৩৩ বার সুবহানআল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবর বলবে। তথ্যসূত্রঃ (ক.) সহীহ বুখারী ৩/১১৩৩, ৩/১৩৫৮, ৫/২০৫১, ৫/২৩২৯, নং- ২৯৪৫, ৩৫০২, ৫০৪৬, ৫৯৫৯ (খ.) সহীহ মুসলিম ৪/২০৯১, নং ২৭২৭ ❏ হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে سُبْحَانَ اللهِ، اَلْحَمْدُ ِللهِ، اَللهُ أَكْبَرُ، لآ إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ- সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)।আলহাম্দুলিল্লা-হ (৩৩ বার)। আল্লাহু-আকবার (৩৩ বার)। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ; লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর (১ বার)। অথবা আল্লা-হু আকবার (৩৪ বার)। অর্থ : পবিত্রতাময় আল্লাহ। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য একক আল্লাহ ব্যতীত; তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। [মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৬, ৯৬৭, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘ছালাত পরবর্তী যিকর’ অনুচ্ছেদ-১৮] ❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর উক্ত দো‘আ পাঠ করবে, তার সকল গোনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’। [মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৭] ❏ অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি আয়েশা ও ফাতেমা (رضي الله عنه)-কে বলেন, তোমরা এ দো‘আটি প্রত্যেক ছালাতের শেষে এবং শয়নকালে পড়বে। এটাই তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চাইতে উত্তম হবে’। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৭-৮৮ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘সকালে, সন্ধ্যায় ও শয়নকালে কি দো‘আ পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ- ৬] ❏ হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে وَعَنْ كَعْبِ بنِ عُجْرَةَ رضي الله عنه، عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مُعَقِّبَاتٌ لاَ يَخِيبُ قَائِلُهُنَّ ـ أَوْ فَاعِلُهُنَّ ـ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ مَكْتُوبَةٍ: ثَلاَثٌ وَثَلاَثُونَ تَسْبِيحَةً. وَثَلاَثٌ وثَلاَثُونَ تَحْمِيدَةً، وَأَرْبَعٌ وَثَلاَثُونَ تَكْبِيرَةً» . رواه مسلم কা‘ব ইবনে উজরাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “নামাযান্তে কিছু বাক্য রয়েছে বা কিছু কর্ম রয়েছে, সেগুলি যে পড়বে বা (পাঠ) করবে, সে আদৌ ব্যর্থ হবে না। তা হচ্ছে প্রত্যেক ফরয নামায বাদ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া।” তথ্যসূত্রঃ (ক.) মুসলিম: ৫৯৬ (খ.) তিরমিযী: ৩৪১২ (গ.) নাসায়ী ১৩৪৯ ❏ হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ فُقَراءَ المُهَاجِرِينَ أَتَوْا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالُوا: ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثورِ بِالدَّرَجَاتِ العُلَى، وَالنَّعِيمِ المُقِيمِ، يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَلَهُمْ فَضْلٌ مِنْ أَمْوَالٍ، يَحُجُّونَ، وَيَعْتَمِرُونَ، وَيُجَاهِدُونَ، وَيَتَصَدَّقُونَ . فَقَالَ: «أَلاَ أُعَلِّمُكُمْ شَيْئاً تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ، وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ، وَلاَ يَكُونُ أَحَدٌ أَفْضَلَ مِنْكُمْ إِلاَّ مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ؟» قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: تُسَبِّحُونَ، وَتَحْمَدُونَ، وَتُكَبِّرُونَ، خَلْفَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاثاً وَثَلاثِينَ». قَالَ أَبُو صَالِحٍ الرَّاوِي عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، لَمَّا سُئِلَ عَنْ كَيْفِيَّةِ ذِكْرِهِنَّ قَالَ: يَقُول: سُبْحَان اللهِ، وَالحَمْدُ للهِ، واللهُ أكْبَرُ، حَتَّى يَكُونَ مِنهُنَّ كُلُّهُنَّ ثَلاثاً وَثَلاثِينَ. متفقٌ عَلَيْهِ وَزَادَ مُسلِمٌ فِي رِوَايَتِهِ: فَرَجَعَ فُقَرَاءُ المُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالُوا: سَمِعَ إِخْوَانُنَا أَهْلُ الأَمْوَالِ بِمَا فَعَلْنَا فَفَعَلُوا مِثْلَهُ ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : ذَلِكَ فَضْلُ الله يُؤتِيهِ مَنْ يَشَاءُ আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।একদা গরীব মুহাজির (সাহাবাগণ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এঁর নিকট এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো উঁচু উঁচু মর্যাদা ও চিরস্থায়ী সম্পদের অধিকারী হয়ে গেল।তারা নামায পড়ছে, যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে, যেমন আমরা রাখছি। কিন্তু তাদের উদ্বৃত্ত মাল আছে, ফলে তারা হজ্জ করছে, উমরাহ করছে, জিহাদ করছে ও সাদকাহ করছে, (আর আমরা করতে পারছি না)।’এ কথা শুনে তিনি বললেন, “আঁমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিস শিখিয়ে দেব না, যার দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের মর্যাদা লাভ করবে, তোমাদের পরবর্তীদের থেকে অগ্রবর্তী থাকবে এবং তোমাদের মত কাজ যে করবে, সে ছাড়া অন্য কেউ তোমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠতর হতে পারবে না?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল! (আমাদেরকে তা শিখিয়ে দিন।)’ তিনি বললেন, “প্রত্যেক (ফরয) নামাযের পরে ৩৩ বার তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করবে।” আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনাকারী আবূ সালেহ বলেন, ‘কিভাবে পাঠ করতে হবে, তা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’ ও ‘আল-হামদু লিল্লাহ’ বলবে। যেন প্রত্যেকটি বাক্য ৩৩ বার করে হয়। তথ্যসূত্রঃ (ক.) সহীহুল বুখারী: ৮৪৩ (খ.) মুসলিম: ৫৯৫ (গ.) আবূ দাউদ: ১৫০৪ (ঘ.) আহমাদ: ৭২০২ (ঙ.) দারেমী: ১৩৫৩ ❏ মুসলিমের বর্ণনায় এ কথা বাড়তি আছে যে, অতঃপর গরীব মুহাজিরগণ পুনরায় আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এঁর নিকট এসে বললেন, ‘আমরা যে আমল করছি, সে আমল আমাদের ধনী ভাইয়েরা শোনার পর তারাও আমল শুরু করে দিয়েছে? (এখন তো তারা আবার আমাদের চেয়ে অগ্রবর্তী হয়ে যাবে।)’ আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বললেন, “এ হল আল্লাহর অনুগ্রহ; তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।” [হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস] ❏ হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে وَعَنْه، عَن رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثاً وَثَلاَثِينَ، وحَمِدَ اللهَ ثَلاثاً وَثَلاَثِينَ، وَكَبَّرَ الله ثَلاَثاً وَثَلاَثِينَ، وَقَالَ تَمَامَ المِئَةِ: لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ البَحْرِ». رواه مسلم উক্ত রাবী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরয) নামায বাদ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ ও ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং একশত পূর্ণ করতে ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকালাহু লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর’ পড়বে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে; যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়। তথ্যসূত্রঃ (ক.) মুসলিম: ৫৯৭ (খ.) আবূ দাউদ: ১৫০৪ (গ.) আহমাদ: ৮৬১৬, ৯৮৯৭ (ঘ.) মুওয়াত্তা মালিক: ৮৪৪ ☛৬০. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোন মুসলিম যদি দু’টি কাজ নিয়মিত করতে পারে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কাজ দু’টি খুবই সহজ কিন্তু করার মানুষ খুব কম। প্রথমত, প্রত্যেক সালাতের পরে ১০ বার সুবহানআল্লাহ, ১০বার আলহামদুলিল্লাহ ও ১০ বার আল্লাহু আকবর বলবে। এতে ১৫০ বার জিহবার যিকর হবে এবং আল্লাহর কাছে আমলনামায় বা মীযানে ১৫০০ সাওয়াব হবে।দ্বিতীয়ত, বিছানায় শয়ন করার পরে ৩৪ বার আল্লাহু আকবর, ৩৩ বার আল-হামদুলিল্লাহ ও ৩৩ বার সুবহানআল্লাহ বলবে। এতে মুখে ১০০বার ও মীযানে ১০০০ বার হবে”।রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আংগুলে গুনে গুনে তা দেখান।সাহাবীগন প্রশ্ন করেনঃ “এই দুটি কর্ম সহজ হওয়া সত্ত্বেও পালনকারী কম কেন? তিঁনি উত্তরে বলেনঃ “কেউ শুয়ে পড়লে শয়তান এসে এগুলি বলার আগেই ঘুম পাড়িয়ে দেয়। সালাতের পরে এগুলি বলার আগেই তাকে তার বিভিন্ন কথা মনে করিয়ে দেয়। [সুনানু আবু দাউদ ৪/৩১৬, নং ৫০৬৫] ☛৬১. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «أَفْضَلُ الذِّكْرِ: لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ» . رواه الترمذي، وقال: حديث حسن জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, সর্বশ্রেষ্ঠ যিক্র হচ্ছে ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” [তিরমিযী:৩৩৮৩, ইবনু মাজাহ: ৩৮০০] হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস ☛৬২. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে وَعَنْ سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رضي الله عنه قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: «أَيَعجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَكْسِبَ فِي كُلِّ يَومٍ أَلْفَ حَسَنَةٍ !» فَسَأَلَهُ سَائِلٌ مِنْ جُلَسائِهِ: كَيْفَ يَكْسِبُ أَلفَ حَسَنَةٍ ؟ قَالَ: «يُسَبِّحُ مِئَةَ تَسْبِيحَةٍ فَيُكْتَبُ لَهُ أَلْفُ حَسَنَةٍ، أَوْ يُحَطُّ عَنْهُ أَلفُ خَطِيئَةٍ» . رواه مسلم সা’দ ইবনে আবূ অক্কাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এঁর নিকট উপস্থিত ছিলাম।তিনি বললেন, “তোমাদের কোন ব্যক্তি প্রত্যহ এক হাজার নেকী অর্জন করতে অপারগ হবে কি?” তাঁর সাথে উপবিষ্ট ব্যক্তিদের একজন জিজ্ঞাসা করল, ‘কিভাবে এক হাজার নেকী অর্জন করবে?’ তিঁনি বললেন, “একশ’বার তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) পড়বে। ফলে তার জন্য এক হাজার নেকী লেখা হবে অথবা এক হাজার গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে।” তথ্যসূত্রঃ (ক.) মুসলিম: ২৬৯৮ (খ.) তিরমিযী: ৩৪৬৩ (গ.) আহমাদ: ১৪৯৯, ১৫৬৬, ১৬১৫ ❏ হুমাইদী বলেন, মুসলিম গ্রন্থে এ রকম يُحَطُّ أَوْ (অথবা–মিটিয়ে দেওয়া হবে) এসেছে। বারক্বানী বলেন, এটিকে শু’বাহ, আবূ আওয়ানাহ ও ইয়াহয়্যা আলক্বাত্তান সেই মূসা হতে বর্ণনা করেছেন, যাঁর সূত্রে ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন।এঁরা বলেছেন, وَيُحَطُّ (এবং— মিটিয়ে দেওয়া হবে।) অর্থাৎ, তাতে ‘ওয়াও’-এর পূর্বে ‘আলিফ’ বর্ণ নেই। (আর তার মানে হল, তার জন্য এক হাজার নেকী লেখা হবে এবং এক হাজার গুনাহও মিটিয়ে দেওয়া হবে।) [হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস] ☛৬৩. আল্লাহ ও রাসুল صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টি প্রত্যাশী আশিকে রাসুল সম্মানিত হাজীগণ! যদি তাওয়াফে কিংবা সাঈতে প্রত্যেক স্থানে অন্য কোন দোয়ার পরিবর্তে দরূদ শরীফ পড়তে থাকেন, ইহা সবচেয়ে উত্তম আমল। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ দরূদ ও সালামের বরকতে আপনার অসমাপ্ত কাজের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তাই গ্রহণ করুন, যা মুহাম্মদ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর কৃত সত্য ওয়াদার ভিত্তিতে সকল দোআ থেকে উত্তম। অর্থাৎ এখানে ও প্রত্যেক স্থানে নিজের জন্য দোআ করার পরিবর্তে আপন হাবীব صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর দরূদ শরীফ (এর তোহফা) পেশ করতে থাকুন। মক্কী মাদানী সুলতান, মাহবুবে রহমান, صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: (তুমি দরূদ শরীফের) এই আমল করলে, আল্লাহ তাআলা তোমার সকল কাজ করে দিবে এবং তোমার গুণাহ ক্ষমা করে দিবে। তথ্যসূত্রঃ (ক.) তিরমিযী, ৪র্থ খন্ড, ২০৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ২৪৬৫ (খ.) ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ১০ম খন্ড, ৭৪০ পৃষ্ঠা ☛৬৪. বালা মুসিবত থেকে বাঁচার জন্য – «لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ». বাংলা উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায-যা-লিমীন। বাংলা অর্থঃ আঁপনি ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, আঁপনি পবিত্র-মহান, নিশ্চয় আমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত। [তিরমিযী ৫/৫২৯, নং ৩৫০৫; হাকেম এবং তিনি একে সহীহ বলেছেন, ইমাম যাহাবী সেটা সমর্থন করেছেন, ১/৫০৫। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৬৮।]
🌴 শেষ কথা 🌴 ❏ রাসুল (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মে কোনো সুন্নাতুন্ হাসানা তথা উত্তম প্রথা/রীতি প্রবর্তন করেন, তিনি এর সওয়াব পান এবং যারা তার পরে ওতে আমল করবে, তাদের সওয়াবও তিনি পেতে থাকেন; আর তাদের (পরবর্তী আমলকারীদের) সওয়াবেরও এতে ন্যূনতম কমতি হয় না। অনুরূপ ভাবে কেউ যদি ধর্মে খারাপ কিছু সংযোজন করে আর কেউ তা অনুসরণ করে, সে ওই মন্দের জন্য দায়ী থাকবে।” [সহীহ মুসলিম, ৬৪৬৬] ❏ রাসূল (ﷺ) আরও ইরশাদ করেন-আঁমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও [মানুষের কাছে] পৌঁছে দাও। তথ্যসূত্রঃ ১. সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৩২৭৪ ২. সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং- ২৬৬৯ ৩. তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-৫৫৭০ ৪. সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং- ৬২৫