সাহাবীগণ আকাশের তারকা তুল্য

<p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">দ্বিতীয় অধ্যায়</p><p style="text-align: justify;">এই অধ্যায়ে ঐ সকল হাদিস সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে যে গুলোর সনদ বিদ্যমান রয়েছে এবং ছহীহ্, হাছান, দ্বায়িফ সকল প্রকারের হাদিস রয়েছে। তবে কোন প্রকার জাল হাদিস এই অধ্যায়ে নেই। যারা এই অধ্যায়ের কোন হাদিসকে জাল বলবে এতে তাদের অজ্ঞতাই প্রকাশ পাবে।</p><p style="text-align: justify;">সাহাবীগণ আকাশের তারকা তুল্য</p><p style="text-align: justify;">وَعَن عمر بن الْخطاب قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: سَأَلْتُ رَبِّي عَنِ اخْتِلَافِ أَصْحَابِي مِنْ بَعْدِي فَأَوْحَى إِلَيَّ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّ أَصْحَابَكَ عِنْدِي بِمَنْزِلَةِ النُّجُومِ فِي السَّمَاءِ بَعْضُهَا أَقْوَى مِنْ بَعْضٍ وَلِكُلٍّ نُورٌ فَمَنْ أَخَذَ بِشَيْءٍ مِمَّا هُمْ عَلَيْهِ مِنِ اخْتِلَافِهِمْ فَهُوَ عِنْدِي عَلَى هُدًى قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ فَبِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمْ اهْتَدَيْتُمْ . رَوَاهُ رزين</p><p style="text-align: justify;">-“হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি রাসূলে পাক (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: আমি আমার রব তা’আলাকে আমার পরে সাহাবীদের এখতেলাফ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। অত:পর আমার প্রতি ওহী হল যে, ওহে বন্ধু মুহাম্মাদ (ﷺ)! নিশ্চয় আপনার সাহাবীদের মর্যাদা আমার কাছে আকাশের তারার মত। একটি আরেকটির চেয়ে শক্তিশালী এবং প্রত্যেকটির মধ্যেই নূর বা আলো রয়েছে। যে তার থেকে কিছু গ্রহণ করবে যা তাদের কাছে মতানৈক্যপূর্ণ কিন্তু ইহা আমার কাছে হেদায়াতের পথ। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন: আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, যে কোন একজনকে অনুসরণ করলে হেদায়েতের রাস্তা পেয়ে যাবে।” ১৭৮৭৮. মেসকাত শরীফ, ৫৫৪ পৃ: হাদিস নং ৬০১৮; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ১০ খন্ড, ২০২ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: শরহে মুসনাদে আবী হানিফা, ১ম খন্ড, ৩২৮ পৃ:; ইমাম যুরকানী: শরহে যুরকানী আলাল মুয়াত্তা, ২য় খন্ড, ৩৩৬ পৃ:; মুবারকপুরী: তুহফাতুল আহওয়াজী, ১০ম খন্ড, ১৫৫ পৃ:; আল্লামা ছানআনী: আত তানভীর ফি শরহু জামেউছ ছাগীর, ২য় খন্ড, ৫৯৭ পৃ:; তাখরিজু আহাদিসুল কাশ্শাফ, ২য় খন্ড, ২৩০ পৃ:; আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বদরুল মুনীর, ৯ম খন্ড, ৫৮৪ পৃ:; ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবির, হাদিস নং ২৫৯৪; জামেউল ফাওয়াইদ, ৩য় খন্ড, ৩৮২ পৃ:; আল মুন্তাখাবু মিন ইলালিল খিলাল, ১ম খন্ড, ১৪৩ পৃ: হাদিস নং ৭০; মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১ তম খন্ড, ১৬৩ পৃ:; তাফছিরে কবীর শরিফ, ২৫তম খন্ড,১৮৯ পৃ:; ২৭ তম খন্ড, ১৪৮ পৃ:; ১১তম খন্ড, ১৬৩ পৃ:; তাফছিরে ছা’লাবী, ৩য় খন্ড, ৩৩৪ পৃ:; তাফছিরে খাজেন, ৩য় খন্ড, ৩৯৩ পৃ:; তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ১২তম খন্ড, ৫১৩ পৃ:; ২৫ তম খন্ড, ৪৪ পৃ:; আল্লামা আজলুনী: কাশফুল খফা, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃ:, হাদিস নং-৩৮১; দায়লামী শরিফ, হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে; তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৯ম খন্ড, ২৩৮ পৃ: ৫ম খন্ড, ৮১ পৃ:; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ৫১ পৃ:; কাজী আয়্যাজ: শিফা শরীফ, ২য় জি: ৪১২ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">উপরে উল্লেখিত হাদিসটিতে দুইটি রেওয়াতের সমন্বয় করা হয়েছে। প্রথম অংশটি হযরত উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণিত এবং দ্বিতীয়টি হযরত জাবের (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর রেওয়ায়েত। যেমন হযরত জাবের (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর রেওয়ায়েতটি ইমাম দারা কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৩৮৫ হিজরী} এবং হাফিজ ইবনে আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৪৬৩ হিজরী} তদীয় স্ব স্ব কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</p><p style="text-align: justify;">حَدَّثَنا القاضي أحمد بن كامل بن خلف حَدَّثَنا عَبد الله بن روح حَدَّثَنا سلام بن الحَارِث حَدَّثَنا الحَارِث بن غُصَيْن عن الأَعْمَش عن أبي سُفْيان عن جَابِر قَالَ قَالَ رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ بِأَيِّهِمْ اقْتَدَيْتُمْ اهْتَدَيْتُمْ   </p><p style="text-align: justify;">-“হযরত জাবের (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, তাঁদের যে কাউকে অনুসরণ করলে হেদায়াতের রাস্তা পেয়ে যাবে।”  ১৭৯৭৯.  ইমাম দারা কুতনী: আল মু’তালিফু ওয়াল মুখতালিফ, ৪র্থ খন্ড, ১০ ও ১৭৭৮ পৃ:; তাখরিজু আহাদিসুল কাশ্শাফ, ২য় খন্ড, ২৩০ পৃ:; ইমাম ইবনে আব্দিল র্বার জামেউল বায়ানুল ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহী, হাদিস নং ১৭৬০;</p><p style="text-align: justify;">এই হাদিসের রাবী عَبد الله بن روح ‘আব্দুল্লাহ ইবনে রুহ’ সম্পর্কে ইমাম দারা কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: ليس بِهِ بأس তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই।  ১৮০৮০.  ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ২৩৫;</p><p style="text-align: justify;">আরেকজন রাবী الحَارِث بن غُصَيْن ‘হারেছ ইবনে গুছাইন’ সম্পর্কে ইবনে আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) مجهول অপরিচিত বললেও ইমাম ইবনে হিব্বান (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ثِقَة ছিক্বাহ বা বিশ্বস্ত বলেছেন। ১৮১ ৮১.  ইমাম আসকালানী: লিছানুল মিযান, রাবী নং ৬৮৭;</p><p style="text-align: justify;"> ‘আমাশ’ أبي سُفْيان ‘আবী সুফিয়ান’ বুখারী-মুসলীমের রাবী। আরেকজন রাবী ‘সালাম ইবনে হারেছ’ সম্পর্কে ইমাম দারা কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কোন প্রকার সমালোচনা করেননি।  ১৮২৮২.  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৩৩৩৯;</p><p style="text-align: justify;">এই হাদিসের আরেকজন রাবী ‘কাজী আহমদ ইবনে কামিল ইবনে খালাফ’ এর রেওয়ায়েতকে হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম হাকেম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) صَحِيحُ ছহীহ্ বলেছেন।  ১৮৩৮৩. ইত্তেহাফুল মিহরাত, হাদিস নং ১৭৯২৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ১৫৪৭, ১৮৫৮, ২৮৫৮;</p><p style="text-align: justify;">ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম হাকেম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার রেওয়ায়েতকে صَحِيحُ ছহীহ্ বলেছেন।  ১৮৪৮৪. মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৩০৪৬, ৬১৭৩, ৭২০৩, ৭৬৪০, ৮০৪১;</p><p style="text-align: justify;">উল্লেখিত পর্যালোচনার আলোকে বলা যায়, এই হাদিসখানার সর্বনিম্ন স্তর হবে হাছান অথবা ছহীহ্। কারণ এর কোন রাবী চরমভাবে সমালোচিত নয়। সর্বোপরি একাধিক রেওয়ায়েত দ্বারা এর সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন এই হাদিসটি আরেকজন সাহাবী থেকে ভিন্ন আরেকটি সনদে বর্ণিত আছে। ইমাম ইবনে বাত্তা আল আকবারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৩৮৭ হিজরী} তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,</p><p style="text-align: justify;">وَحَدَّثَنِي أَبُو يُوسُفَ يَعْقُوبُ بْنُ يُوسُفَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو يَحْيَى زَكَرِيَّا بْنُ يَحْيَى السَّاجِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْحَاقَ الْأَنْوَارِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو شِهَابٍ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ فَبِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمُ اهْتَدَيْتُمْ</p><p style="text-align: justify;">-“হযরত ইবনে আব্বাস (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, তাঁদের যে কাউকে অনুসরণ করলে হেদায়াতের রাস্তা পেয়ে যাবে।”  ১৮৫৮৫. ইমাম ইবনে বাত্তা: ইবানাতুল কুবরা, ২য় খন্ড, ৫৬৪ পৃ: হাদিস নং ৭০২;</p><p style="text-align: justify;">এই সনদটি দ্বায়িফ হলেও দুইটি সনদ একত্রিত হয়ে অবশ্যই ক্বাবী বা শক্তিশালী হবে। অপরদিকে হযরত উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণিত হাদিসটি সনদসহ ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৪৫৮ হিজরী এবং আল্লামা জামালুদ্দিন আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইবনে ইউছুফ ইবনে মুহাম্মদ যায়লায়ী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৬২ হিজরী তদীয় স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেন,</p><p style="text-align: justify;">أخبرنَا أَبُو عبد الله الْحَافِظ حَدثنَا أَبُو الْعَبَّاس مُحَمَّد بن يَعْقُوب حَدثنَا بكر بن سهل حَدثنَا نعيم بن حَمَّاد حَدثنَا عبد الرَّحِيم ابْن زيد الْعمي عَن أَبِيه عَن سعيد بن الْمسيب عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ سَأَلْتُ رَبِّي عَنِ اخْتِلَافِ أَصْحَابِي مِنْ بَعْدِي، فَأَوْحَى إِلَيَّ: يَا مُحَمَّدُ! إِنَّ أَصْحَابَكَ عِنْدِي بِمَنْزِلَةِ النُّجُومِ فِي السَّمَاءِ، بَعْضُهَا أَقْوَى مِنْ بَعْضٍ، وَلِكُلٍّ نُورٌ، فَمَنْ أَخَذَ بِشَيْءٍ مِمَّا هُمْ عَلَيْهِ مِنِ اخْتِلَافِهِمْ فَهُوَ عِنْدِي عَلَى هُدًى</p><p style="text-align: justify;">-“হযরত উমন ইবনুল খাত্তাব (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি রাসূলে পাক (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: আমি আমার রব তা’আলাকে আমার পরে সাহাবীদের এখতেলাফ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। অত:পর আমার প্রতি ওহী হল যে, ওহে বন্ধু মুহাম্মাদ (ﷺ)! নিশ্চয় আপনার সাহাবীদের মর্যাদা আমার কাছে আকাশের তারার মত। একটি আরেকটির চেয়ে শক্তিশালী এবং প্রত্যেকটির মধ্যেই নূর বা আলো রয়েছে। যে তার থেকে কিছু গ্রহণ করবে যা তাদের কাছে মতানৈক্যপূর্ণ কিন্তু ইহা আমার কাছে হেদায়াতের পথ।”  ১৮৬৮৬. ইমাম বায়হাক্বী: মাদখাল, হাদিস নং ১৫১; তাখরিজু আহাদিসুল কাশ্শাফ, ২য় খন্ড, ২৩১ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;">এই সনদেও বর্ণনাকারী ‘বকর ইবনে সাহল’ بكر بن سهل সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: </p><p style="text-align: justify;">حمل الناس عنه، وهو مقارب الحال. -“লোকেরা তার থেকে হাদিস গ্রহণ করেছে আর সে হাদিস বর্ণনায় গ্রহণযোগ্য।”  ১৮৭৮৭.  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ১২৮৪; লিছানুল মিযান;</p><p style="text-align: justify;">বর্ণনাকারী أَبُو الْعَبَّاس مُحَمَّد بن يَعْقُوب ‘আবুল আব্বাস মুহাম্মদ ইবনে ইয়াকুব’ সম্পর্কে ইমাম শামছুদ্দিন যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: حُجّةً مشهورًا. -“হুজ্জত ও সুপরিচিত রাবী।”  ১৮৮৮৮. ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৫৯৫;</p><p style="text-align: justify;">‘আবু আব্দুল্লাহ হাফিজ’ أَبُو عبد الله الْحَافِظ একজন সুপ্রসিদ্ধ বিশ্বস্ত হাফিজ যিনি ইমাম বায়হাক্বীর উস্তাদ। ‘নাঈম ইবনে হাম্মাদ’ نعيم بن حَمَّاد একজন বিশ্বস্ত ইমাম ও সু-প্রসিদ্ধ মুছান্নিফ এবং ইমাম বুখারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর শায়েখ। বর্ণনাকারী ‘আব্দুর রাহীম’ এর পিতা زَيْدُ بْنُ الْحَوَارِيِّ الْعَمِّيُّ ‘জায়েদ ইবনে হাওয়ারী আম্মীউ’ সম্পর্কে ইমামদের কেউ কেউ দ্বায়িফ বললেও ইমাম দারা কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আবু বকর বাজ্জার, (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম হাছান ইবনে সুফিয়ান (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে বিশ্বস্ত ও গ্রহণযোগ্য বলেছেন।  ১৮৯৮৯.  ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৪৭৬;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">ইমাম আবু হাফ্ছ ইবনে শাহিন (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে বিশ্বস্তদের অন্তভর্‚ক্ত করেছেন। ইমাম আবু ইসহাক্ব যুযাজানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন।  ১৯০৯০.  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ১৭৬৯;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">ইমাম ইবনে মাঈন (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন। ১৯১৯১. ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২১০২;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;"> ইমাম আবু দাউদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম ইবনে হিব্বান ও ইমাম আহমদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।  ১৯২৯২.  ইমাম আসকালানী: লিছানুল মিযান , রাবী নং ৫৮৪৫;</p><p style="text-align: justify;">বর্ণনাকারী عَبْدُ الرَّحِيْمِ بنُ زَيْدِ ‘আব্দুর রাহীম ইবনে জায়েদ’ ইমামদের কাছে দ্বায়িফ বিধায় এই হাদিসটি সর্বনিম্ন স্তর হবে দ্বায়িফ। তবে একাধিক রেওয়ায়েত কর্তৃক সমর্থিত বিধায় হাদিসটি হাছান পর্যায়ে পৌছবে।</p><p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত ইমাম আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে সালামা কাদ্বাঈ মিছরী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৪৫৪ হিজরী} উল্লেখ করেন,</p><p style="text-align: justify;">أَخْبَرَنَا أَبُو الْفَتْحِ مَنْصُورُ بْنُ عَلِيٍّ الْأَنْمَاطِيُّ، ثنا أَبُو مُحَمَّدٍ الْحَسَنُ بْنُ رَشِيقٍ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، ثنا جَعْفَرٌ يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الْوَاحِدِ، قَالَ: قَالَ لَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَثَلُ أَصْحَابِي مَثَلُ النُّجُومِ، مِنَ اقْتَدَى بِشَيْءٍ مِنْهَا اهْتَدَى</p><p style="text-align: justify;">-“হযরত আবু হুরায়রা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, যে কোন বিষয়ে তাদের অনুসরণ করবে হেদায়েতের রাস্তা পেয়ে যাবে।”  ১৯৩৯৩. মুসনাদে শিহাব, ২য় খন্ড, ২৭৫ পৃ:; তাখরিজু আহাদিসুল কাশ্শাফ, ২য় খন্ড, ২৩১ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;">এই হাদিসের রাবী جَعْفَرٌ بْن عَبْد الْوَاحِد ‘জাফর ইবনে আব্দুল ওয়াহেদ’ সম্পর্কে কেউ কেউ সমালোচনা করলেও ইমাম মুগলতাঈ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: وكان ثقة -“সে বিশ্বস্ত।”  ১৯৪৯৪.  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৯৯৬;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">الْحَسَنُ بْنُ رَشِيقٍ ‘হাছান ইবনে রাশিক’ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: وثقه جماعة. -“একদল ইমাম তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।”  ১৯৫৯৫.  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এতেদাল, রাবী নং ১৮৪৭;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">‘মুহাম্মদ ইবনে জাফর ইবনে মুহাম্মদ’ সর্বসম্মতিক্রমে বিশ্বস্ত রাবী। এছাড়া বাকী সকল রাবীগণ বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য। অতএব, এই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর হবে হাছান। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েতে আছে,</p><p style="text-align: justify;">وَأما حَدِيث ابْن عمر فَرَوَاهُ عبد بن حميد فِي مُسْنده وَالدَّارَقُطْنِيّ فِي كِتَابه فَضَائِل الصَّحَابَة كِلَاهُمَا من حَدِيث حَمْزَة الْجَزرِي وَقَالَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ: أَخْبَرَنِي أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حدثنا أَبُو شِهَابٍ، عَنِ حَمْزَةَ الْجَزَرِيِّ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابن عمر رَضِيَ الله عَنْهما قَالَ: قَالَ رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ إِنَّمَا أَصْحَابِي مثل النُّجُوم فَأَيهمْ أَخَذْتُم بقوله اهْتَدَيْتُمْ</p><p style="text-align: justify;">-“হযরত ইবনে উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: নিশ্চয় আমার সাহাবীদের উদাহরণ হল আকাশের তারকার মত, যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে তাঁদের কথাকে গ্রহণ করবে তাহলে হেদায়েত পেয়ে যাবে।”  ১৯৬৯৬.  ইমাম আব্দ ইবনে হুমাইদ: মুসনাদ গ্রন্থে, হাদিস নং ৭৮১; ইমাম দারে কুতনী তার ‘ফাদ্বাইলে সাহাবা’ গ্রন্থে, তাখরিজু আহাদিসুল কাশ্শাফ, ২য় খন্ড, ২৩১ পৃ:; মাতালিবুল আলিয়া, হাদিস নং ৪১৫৯;</p><p style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে ইবনে কুদামা মাকদেসী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, </p><p style="text-align: justify;">لا يصح هذا الحديث -“এই হাদিস ছহীহ্ নয়।”  ১৯৭৯৭.  আল মুন্তাখাবু মিন ইলালিল খিলাল, ১ম খন্ড, ১৪৩ পৃ: হাদিস নং ৬৯;</p><p style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</p><p style="text-align: justify;">قَالَ أَبُو عُمَرَ: هَذَا إِسْنَادٌ لَا تَقُومُ بِهِ حُجَّةٌ؛ لِأَنَّ الْحَارِثَ بْنَ غُصَيْنٍ مَجْهُولٌ</p><p style="text-align: justify;">-“আবু উমার বলেন: এই সনদ দ্বারা হুজ্জত ছাবিত করা যাবেনা। কেননা হারেছ ইবনে গুচাইন অপরিচিত রাবী।”  ১৯৮৯৮. জামেউল বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহ, ২য় খন্ড, ৯২৫ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">‘হারেছ ইবনে গুছাইন’ الْحَارِثَ بْنَ غُصَيْنٍ হাফিজ ইবনে আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কাছে মাজহুল বা অপরিচিত হলেও ইমাম ইবনে হিব্বান (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে ছিক্বাহ বা বিশ্বস্ত বলেছেন। এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন:</p><p style="text-align: justify;">وَقَدْ ذَكَرَهُ ابْنُ حَجَرٍ الْعَسْقَلَانِيُّ فِي تَخْرِيجِ أَحَادِيثِ الرَّافِعِيِّ فِي بَابِ أَدَبِ الْقَضَاءِ، وَأَطَالَ الْكَلَامَ عَلَيْهِ، وَذَكَرَ أَنَّهُ ضَعِيفٌ وَاهٍ، بَلْ ذَكَرَ عَنِ ابْنِ حَزْمٍ أَنَّهُ مَوْضُوعٌ بَاطِلٌ، لَكِنْ ذُكِرَ عَنِ الْبَيْهَقِيِّ أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ حَدِيثَ مُسْلِمٍ يُؤَدِّي بَعْضُ مَعْنَاهُ يَعْنِي قَوْلَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ الْحَدِيثَ. قَالَ ابْنُ حَجَرٍ: صَدَقَ الْبَيْهَقِيُّ هُوَ يُؤَدِّي صِحَّةَ التَّشْبِيهِ لِلصَّحَابَةِ بِالنُّجُومِ   </p><p style="text-align: justify;">-“হাফিজ ইবনে হাজার আস্কালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর ‘তাখরিজু আহাদিসুর রাফেয়ী’ গ্রন্থের ‘আদাবুল ক্বাদ্বা অধ্যায়ে ইহা উল্লেখ করেছেন এবং এর উপর অনেক লম্বা আলোচনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই হাদিস দুর্বল। বরং ইবনু হাজেম থেকে উল্লেখ করেছেন, ইহা মওজু ভিত্তিহীন। কিন্তু তিনি ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে উল্লেখ করেন যে, ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় মুসলীমের হাদিস ইহার অর্থকে সমর্থন করে, অর্থাৎ রাসূল (ﷺ) এর বাণী: তারকা সমূহ আকাশের আমানত। ইবনে হাজার আস্কালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সত্য বলেছে যে, সাহাবীরা আকাশের তারকার মত ইহার সত্যতা এই হাদিস আদায় করে।”  ১৯৯৯৯.  ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১তম খন্ড, ১৬৩ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনে হাজার আস্কালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</p><p style="text-align: justify;">وَفِي حَدِيثٍ مُنْقَطِعٍ يَعْنِي حَدِيثَ الضَّحَّاكِ ابْنِ مُزَاحِمٍ مَثَلُ أَصْحَابِي كَمَثَلِ النُّجُومِ فِي السَّمَاءِ، مَنْ أَخَذَ بِنَجْمٍ مِنْهَا اهْتَدَى. قَالَ: وَاَلَّذِي رَوَيْنَاهُ هَا هُنَا مِنْ الْحَدِيثِ الصَّحِيحِ يُؤَدِّي بَعْضَ مَعْنَاهُ. قُلْت: صَدَقَ الْبَيْهَقِيُّ،</p><p style="text-align: justify;">-“দ্বাহ্হাক ইবনে মুযাইম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর রেওয়ায়েতটি মুনকাতে, “আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, যে কোন একটি তারকাকে গ্রহণ করে সে হেদায়েত পেয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমি বলছি: এ বিষয়ে যে সমস্থ রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সত্য বলেছে যে, সাহাবীরা আকাশের তারকার মত ইহার সত্যতা এই হাদিস আদায় করে।”  ২০০২০০.  ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবির, হাদিস নং ২৫৯৪;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম ইবনু মুলাক্কিন (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</p><p style="text-align: justify;">حَدِيث أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ بِأَيِّهِمْ اقْتَدَيْتُمْ اهْتَدَيْتُمْ رَوَاهُ عبد بن حميد من رِوَايَة ابْن عمر وَغَيره من رِوَايَة عمر وَأبي هُرَيْرَة وأسانيدها كلهَا ضَعِيفَة قَالَ الْبَزَّار لَا يَصح هَذَا الْكَلَام عَن رَسُول الله صَلَّى الله تَعَالَى عَلَيْهِ وَسلم وَقَالَ ابْن حزم خبر مَكْذُوب مَوْضُوع</p><p style="text-align: justify;">-“হাদিস- আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত, তাঁদের যে কাউকে অনুসরণ করলে হেদায়াতের রাস্তা পেয়ে যাবে। ইমাম আব্দ ইবনু হুমাইদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইহা ইবনে উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেছেন এবং অন্যান্য ইমামগণ হযরত উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হযরত আবু হুরায়রা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইহার প্রতিটি সনদ দুর্বল। ইমাম বাজ্জার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: আল্লাহর রাসূল (ﷺ) থেকে ছহীহ্ সূত্রে ইহা বর্ণিত নয়। ইবনু হাজম বলেছেন:২০১১. ইবনু হাজম (র:) অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য ইমামদের মতের সাথে অযোক্তিক দ্বিমত করেছেন।</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">  ইহা মিথ্যা ভিত্তিহীন খবর।” ২০২২. ইমাম ইবনু মুলাক্কিন: খুলাছাতুল বাদরুল মুনীর, হাদিস নং ২৮৬৮;</p><p style="text-align: justify;">ইমাম শারফুদ্দিন হুসাইন ইবনু আব্দিল্লাহ ত্বীবি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৪৩ হিজরী তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেছেন,</p><p style="text-align: justify;">قوله عليه الصلاة والسلام: أصحابي كالنجوم الحديث حسنه الإمام الصنعاني.</p><p style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল (ﷺ)’র বাণী- আমার সাহাবীগণ আকাশের তারকার মত’ এই হাদিসকে ইমাম ছানআনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাছান বলেছেন।”  ২০৩৩. ইমাম ত্বীবি: শারহু মিসকাত, ২য় খন্ড, ৬৭৪ পৃ: ২১৩ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;</p><p style="text-align: justify;">এ প্রসঙ্গে হাফিজ ইবনে তাইমিয়া বলেছেন,</p><p style="text-align: justify;">فَهَذَا الْحَدِيثُ ضَعِيفٌ ضَعَّفَهُ أَهْلُ الْحَدِيثِ؛ قَالَ الْبَزَّارُ: هَذَا حَدِيثٌ لَا يَصِحُّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ</p><p style="text-align: justify;">-“এই হাদিস দ্বায়িফ, মুহাদ্দিছিনে কেরাম একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বাজ্জার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: রাসূল (ﷺ) থেকে এই হাদিস ছহীহ্ রূপে নেই।  ২০৪  ৪. মিনহাজু সুন্নাতুন নববিয়া, ৮ম খন্ড, ৩৬৪ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানী উল্লেখ করেছেন,</p><p style="text-align: justify;">وأما قول الشعراني في "الميزان" (১ / ২৮): وهذا الحديث وإن كان فيه مقال عند المحدثين، فهو صحيح عند أهل الكشف،</p><p style="text-align: justify;">-“আর ইমাম শারানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ‘মিযান’ গ্রন্থে বক্তব্য হল, এই হাদিস সম্পর্কে যদিও মুহাদ্দিছিনে কেরামের অনেক সমালোচনা রয়েছে কিন্তু আহলে কাশ্ফ এর কাছে এই হাদিস ছহীহ্।”  ২০৫৫. সিলসিলায়ে জয়ীফা, ১ম খন্ড, ১৪৫ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;">সুতরাং হাদিসটি ছহীহ্ হাদিসের সাথে মিল থাকায় ক্বাবী বা শক্তিশালী হয়ে গেছে। “ইমামগণ হাদিসটিকে কেউ জাল বলেননি বরং দ্বায়িফ বলেছেন” কুখ্যাত নাছিরুদ্দিন আলবানী প্রথমে এই কথা স্বীকার করে পরে আবার হাদিসটিকে জাল বলার বেহুদা চেষ্টা করেছেন। আর এই আলবানীর আরেকজন চেলা জনাব আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব লিখেছেন, “সিহাহ সিত্তা তো দূরের কথা অন্য কোন প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থে এ হাদিসটি নেই।”  ২০৬৬.  হাদিসের নামে জালিয়াতী, ৪১২ পৃ:;</p><p style="text-align: justify;">অথচ ইমাম দারা কুতনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনু আব্দিল র্বাররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম ইবনে বাত্তা আল আকবারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে সালামা কাদ্বাঈ মিছরী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আব্দ ইবনে হুমাইদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখ হাদিসটি তিনাদের স্ব স্ব কিতাবে বর্ণনা করেছেন। হযরত ইবনে আব্বাস (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হযরত জাবের (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হযরত আবু হুরায়রা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও হযরত ইবনে উমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে হাদিসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত রয়েছে। ইমাম বায়হাক্বী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখ হাদিসটিকে গ্রহণ করেছেন। এরপরেও এসব মিথ্যাবাদীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।</p><p style="text-align: justify;">------------------------------------</p>

সাহাবীগণ আকাশের তারকা তুল্য

দ্বিতীয় অধ্যায় এই অধ্যায়ে ঐ সকল হাদিস সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে যে গুলোর সনদ বিদ্যমান রয়েছে এবং ছহীহ্, হাছান, দ্বায়িফ সকল প্রকারের হাদিস রয়েছে...

Read more »

বিষয় নং-১০: লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানীর ধোঁকা থেকে সাবধান!

<p style="text-align: justify;">বিষয় নং-১০: লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানীর ধোঁকা থেকে সাবধান!</p><p style="text-align: justify;">আমি আমার এ গ্রন্থে যাদের  খন্ডন করেছি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আহলে হাদিসের তথাকথিত ইমাম নাসিরুদ্দীন আলবানী (মৃত্যু. ১৪২০ হি.)। এ লোকটি ১৯১৪ ঈসায়ী সালে ইউরোপের একটি দেশ আলবেনিয়ায়র রাজধানী কুদরাহ্তে জন্ম গ্রহণ করেন। আলবেনিয়ায় জন্ম গ্রহণ করার কারণে তাকে আলবানী বলা হয়। তার পুরো নাম হলো আবু ‘আবদুর রাহমান মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন আলবানী’। তার পিতার নাম নূহ নাতাজী আলবানী আল-হানাফী। তিনি ছিলেন তৎকালিন সময়ের একজন প্রসিদ্ধ হানাফী আলেম। আলবানীও প্রাথমিক যুগে হানাফী ছিলেন এবং তার সম্মানিত পিতার বন্ধু শায়খ সায়ীদ আল-বুরহানীর নিকট সে হানাফি মাযহাবের অনেক ফিকহের গ্রন্থ অধ্যায়ন করেন। ১৪৬৪৬ . যা আমি লিখলাম সেগুলো হুবহু আহলে হাদিস আবুল কালাম আযাদ আলবানীর জীবনীতে এবং তার একটি আরবী পুস্তকের বাংলা অনুবাদ “ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি’’ বইয়ের ৭-৮ পৃষ্ঠায় তা লিখেছেন। (আযাদ প্রকাশন, আন্দরকিল¬া, চট্টগ্রাম) এ ছাড়া সৌদি আরব থেকে তাঁর আরাবীতে বিশাল জীবনী গ্রন্থ “সাবাতু মুয়ালাফাতিল আলবানী’’ (যা লিখেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আশ্-শামরানী) বের হয়েছে সেখানেও লিখা হয়েছে তিনি প্রথমে হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন পরে মুজতাহিদ হয়ে গেছেন। (দেখুন-পৃ. ২ ও ১৬)</p><p style="text-align: justify;">পরে সে নিজে পথভ্রষ্ট হয়ে সকল মাযহাবকেই অস্বীকার করে বসেন এবং মাযহাব মানাকে হারাম, শিরক পর্যন্ত ঘোষণা করে বসে। অথচ তার সম্মানিত পিতা ও সে নিজেও হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিল। </p><p style="text-align: justify;">আলবানী এমন কোন হাদিস গবেষক নয়, তার অধিকাংশ সময় কেটেছে ঘড়ি মেরামত করে। ১৪৭৪৭ . আবুল কালাম আযাদ আলবানীর জীবনীতে এবং তার একটি আরবী পুস্তকের বাংলা অনুবাদ “ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি’’ বইয়ের ৭ পৃষ্ঠায় তা লিখেছেন। (আযাদ প্রকাশন, শাহী জামে মসজিদ, আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম)</p><p style="text-align: justify;">আহলে হাদিসগণ ঘড়ির ডাক্তারসহ বিভিন্ন ডাক্তারদের কথা মানতে তাদের কোন অসুবিধা হয় না, কিন্তু আমরা একজন তাবেয়ী ইমাম আবু হানিফা (ﷺ) এর কথা মানলে তাদের এত গাঁ জ্বলা, অথচ হাদিসের পরিভাষায় উনার কথাও হাদিস। আলবানীর অনুসারীরা তার প্রশংসায় লিখেছে যে- “পৃথিবীর মুসলিমদের সম্মুখে বিশুদ্ধ সুন্নাহ উপস্থাপন কারার তাওফীক যে কয়জন বান্দাকে দিয়েছেন তাদের মধ্যে হাফিয যাহাবী (রহ.), ও হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.)-এর পর আল্লামা মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন (রহ.)-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।”   ১৪৮৪৮ . আবুল কালাম আযাদ, ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি, ৭ পৃষ্ঠা</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! তাদের কাছে হাফেজুল হাদিস ইমাম ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ অনেক বিজ্ঞ হাদিস বিশারদ যারা ইলমে হাদিসের জন্য নিজের জীবনকে অতিবাহিত করে দিয়েছেন সে মুহাদ্দিছদের কোন  নাম তাদের মুখে আসলো না,  আসলো পৃথিবীর সবচেয়ে মনগড়া তাহকীককারী আলবানী নাম। অথচ সে ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র সমালোচনা করেছে,  যা নিম্নে আলোচনা করা হবে।</p><p style="text-align: justify;">আলবানী অসংখ্য মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদিসকেও দ্বায়িফ ও মওদ্বু বা জাল বলে তার বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। সেগুলো আমি এখানে দ্বিতীয় বার আলোচনা করতে চাই না, কারণ এ গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হাদিসের আলোচনায় তার ভুয়া তাহক্বীকের জবাবে আলোচনা হবে।</p><p style="text-align: justify;">যে কারণে আলবানীর তাহকীক অনুসরণ করা হবে না:</p><p style="text-align: justify;">ক. ইমাম-মনীষীদের সমালোচনা: এ আলবানী নামক লোকটির সমালোচনা থেকে পৃথিবীর বিজ্ঞ বিজ্ঞ ইমামগণও বাঁচতে পারে নি। সে তার ‘সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্ দ্বায়িফাহ’ গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ইমাম তিরমিজির ব্যাপারে লিখেছেন, ইমাম তিরমিজি( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর সুনানে কত জাল হাদিসকে যে হাছান, ছহীহ্ বলে ফেলেছেন তার কোন হিসাব নেই।  ১৪৯৪৯ . আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ ওয়াল মাওদ্বুআহ, ১/৮৫ পৃ. হা/২৪</p><p style="text-align: justify;">আলবানী নামক এ লোকটির দৃষ্টিতে একটি হাদিস ছহীহ্ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিছ তাকে ছহীহ্ বলায় তিনি হাদিসের বিখ্যাত তিন জন হাফেজুল হাদিসের তথা ইমাম হাকিম নিশাপুরী, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনজেরী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সমালোচনায় লিখেন- </p><p style="text-align: justify;">وقال الحاكم: صحيح الإسناد ! ووافقه الذهبي! وأقره المنذري في  الترغيب (৩/১৬৬)! وكل ذلك من إهمال التحقيق، والاستسلام للتقليد، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا الإسناد</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম হাকিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,  হাদিসটির সনদ ছহীহ্। ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর সাথে একত্মাতা পোষণ করেছেন। ইমাম মুনজেরী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘তারগীব ও তারহীব’ নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর এটি হয়েছে, তত্ত¡-বিশে¬ষণের প্রতি উদাসীনতা, তাক্বলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ (অন্ধানুকরণ),  নতুবা একজন  বিশেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে ছহীহ্ বলতে পারেন!।”  ১৫০৫০ আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ ওয়াল মাওদ্বুআহ, ৩/৪৭৯ পৃ. হা/১২৫৯;</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আলবানীর যদি একটুও লজ্জাবোধ থাকতো এমন মহান তিনজন ইমামের সমালোচনা করতে পারতেন না। অথচ এ সমস্থ আলেমদের সে ছাত্র হওয়ারও যোগ্য নন। ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর লিখিত আসমাউর রিজালের গ্রন্থ পড়ে সকল মুহাদ্দিছদের হাদিসের সনদ বিশ্লেষণ করতে হয় সেই মহান ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর সমালোচনা! তার এ গ্রন্থের আরেক স্থানে হাফেজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فيا عجبا للسيوطى كيف لم يخجل من تسويد كتابه الجامع الصغير بهذا الحديث.....</p><p style="text-align: justify;">-“কী আশ্চর্য! জালালুদ্দীন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর জামেউস সগীরে কিভাবে এ হাদিস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না!  ১৫১৫১.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফা,  ৩/৪৭৯পৃ. হা/১৩১৪</p><p style="text-align: justify;">নাউযুবিলাহ! তিনি তার এ পুস্তকে ইমাম ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে বলেন- وجعجع حوله السيوطى -“ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাকডাক (কোলাহলপূর্ন, হট্ট গোলপূর্ন) ছেড়ে থাকেন।” ১৫২ ৫২.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফা, ৪/১৮৯পৃ. হা/১৬৯৫;</p><p style="text-align: justify;">দেখুন ইমাম ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র মত একজন হাফিজুল হাদিস ও মুজাদ্দিদের তাহক্বীক তাঁর কাছে নাকি হট্টগোল করার মত! একজন হাদিসের খাদেম কি এ বেয়াদবি সহ্য করতে পারেন! সে তাঁর সম্পর্কে আরেক স্থানে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وقعقع حوله السيوطي في اللآلي؛ فلم يصنع شيئاً كغالب عادته! وقد أقره في الجامع الكبير. وتساهل بعضهم فحسنه!</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর লা-আলিল মাসনূআ এর হাওয়ালা কোলাহলপূর্ণ, .......তিনি এ (তার দৃষ্টিতে দ্বায়িফ) হাদিসকে হাছান বলার ক্ষেত্রে ঢিলেমীর পরিচয় দিয়েছেন।”  ১৫৩৫৩. আলবানী,  সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ,  ১১/৬২৪ পৃ. হা/৫৩৭৩;</p><p style="text-align: justify;">সে ইমাম তাজুদ্দীন সুবকী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) যিনি ইমাম তকি উদ্দিন সুবকী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র ছেলে এবং বিজ্ঞ হাদিস বিশারদ, হাফেজে হাদিস আলেম ছিলেন; তাঁর সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;"> لكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبى لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان مافيه من التعصب</p><p style="text-align: justify;">-“মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামী তাকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করার মধ্যে তেমন  উল্লেখযোগ্য কোনো উপকারিতা নেই।”  ১৫৪৫৪.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ, ২/২৮৫ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">সে আরও অসংখ্য হক্কানী ইমামের সমালোচনা করেছে; তার অসংখ্য কুফুরী আক্বীদা  এবং তার ভূয়া তাহক্বীকের জবাবে আমি ইনশা আল্লাহ! শীঘ্রই বিস্তারিতভাবে বই প্রকাশ করবো। আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত দুই হাদিসের মহান ইমাম সম্পর্কে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فلا يفيد بعد الاطلاع على هذا أن ابن خزيمة أخرجه، لا سيما وهو معروف عند أهل المعرفة بهذا الفن أنه متساهل في التصحيح،على نحو تساهل تلميذه ابن حبان، الذي عرف عنه الإكثار من توثيق المجهولين</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম ইবনে খুজায়মা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এটিকে ছহীহ্ বলে সংকলন করার মধ্যে কোনো ফায়েদা নেই, হাদিস শাস্ত্র সম্পর্কে পূর্ণজ্ঞাত লোকজন জানেন যে, ইমাম ইবনে খুজায়মা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসকে ছহীহ্ বলার ক্ষেত্রে বেশি শিথিলতাকারী, এমনিভাবে হাদিস ছহীহ্ বলার ক্ষেত্রে শিথিলতাকারী হলেন তাঁর ছাত্র ইমাম ইবনে হিব্বান। তাকে অধিকাংশ মুহাদ্দিছ মাজহুল রাবীকে ছিক্বাহ বলার ব্যক্তি হিসেবেই চিনেন।”  ১৫৫৫৫.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪০২ পৃ. হা/১২৪৭-এর আলোচনা;</p><p style="text-align: justify;">বিখ্যাত হাদিসের ইমাম, ইমাম হাকেম নিশাপুরী (ওফাত. ৪০৫ হি.)-এর নিকট একজন রাবী গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের বলে তিনি তার একটি হাদিসকে ছহীহ্ বলেছেন, এজন্য আলবানী তাঁর সমালোচনায় লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">ولذلك فقد أخطأ الحاكم خطأ فاحشا حين قال: هذا حديث صحيح الإسناد ! واغتر به الفقيه الهيتمي، فصححه في كتابه أسنى المطالب في صلة الأقارب  (ق ৪১/১)</p><p style="text-align: justify;">-“এটি হাকেমের মারাত্মক ভুল যে, তিনি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য করেছেন- এ হাদিসের সনদ ছহীহ্। আর ফকীহ হাইতামী তার কথার কারণে ধোঁকায় পড়ে তার ‘আসনাল মাতালিব ফি সিলাতিল আকারিব’ গ্রন্থে (ক্বাফ, ১/৪১ পৃষ্ঠায়) ছহীহ্ বলেছেন।”  ১৫৬৫৬  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪৫৮ পৃ. হা/১২৯৪;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">বিখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহ.) সম্পর্কে আলবানী লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">اشل الله يدك وقطع لسانك يدعو على العلامة الشيخ عبد غدة ويقول عنه:انه غدة كغدة البعير ثم يقول مستهزئا ضاحكا:اتعرفون غدة</p><p style="text-align: justify;">-“আল্লাহ্ তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহব্বাকে কর্তন করুক। (কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২) এ রকম শতশত পূর্বের ও সমসাময়িক মুহাদ্দিসের সে ব্যাপারে কঠিন মন্তব্য করেছে। </p><p style="text-align: justify;">খ. রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত নিয়ে জঘন্য বক্তব্য:</p><p style="text-align: justify;">ইবনে তাইমিয়ার এ বাতিল মতবাদকে প্রচারকারীর অন্যতম শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত সম্পর্কে লিখেছেন-</p><p style="text-align: justify;">وأحاديث زيارة قبره صلى الله عليه وسلم كلها ضعيفة لا يعتمد على شيء منها في الدين، ولهذا لم يروأهل الصحاح والسنن شيئا منها، وإنما يرويها من يروي الضعاف كالدارقطني والبزار وغيرهما.</p><p style="text-align: justify;">-“রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত সম্পর্কিত সকল হাদিস দ্বায়িফ। দ্বীনি বিষয়ে এগুলোর কোনটির উপরেই নির্ভর করা যায় না। সে কারণেই এ বিষয়ক হাদিস নির্ভরযোগ্য ছহীহ্, সুনান গ্রন্থের কোনো লেখক এ সংক্রান্ত কোনো হাদিস তাদের গ্রন্থগুলোতে বর্ণনা করেননি। সেগুলো বর্ণনা করেছেন তারাই যারা দুর্বল হাদিস বর্ণনা করে থাকেন যেমন- দারাকুতনী, বায্যার আরোও অনেকে।”  ১৫৭৫৭  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাসিদ দ্বঈফাহ, ১/১২৩ পৃ. হা/৪৭;</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারতের বিরুদ্ধে যত কূটকৌশলই রয়েছে সবই প্রয়োগ করছে এ ইবনে তাইমিয়ার বাতিল মতবাদ প্রচারকারী এবং টাকার কিনা এ মুফতিগণ। </p><p style="text-align: justify;">গ. ছহীহ্ বুখারী-মুসলিমের হাদিসকে দ্বায়িফ বলার দৃষ্টতা:</p><p style="text-align: justify;">আহলে হাদিসদের এ ইমাম ছহীহ্ বুখারী মুসলিমের অনেক হাদিসকে দ্বায়িফ বলে চালিয়ে দিয়েছে, আর তাঁর দৃষ্টিতে দ্বায়িফ হাদিস জাল হাদিসেরই প্রকারের অর্ন্তভুক্ত। ছহীহ্ বুখারীতে রয়েছে-</p><p style="text-align: justify;">عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: ثَلاَثَةٌ أَنَا خَصْمُهُمْ يَوْمَ القِيَامَةِ، رَجُلٌ أَعْطَى بِي ثُمَّ غَدَرَ، وَرَجُلٌ بَاعَ حُرًّا فَأَكَلَ ثَمَنَهُ، وَرَجُلٌ اسْتَأْجَرَ أَجِيرًا فَاسْتَوْفَى مِنْهُ وَلَمْ يُعْطِهِ أَجْرَهُ</p><p style="text-align: justify;">-“(তথ্য সূত্র: ইমাম বুখারী, আস-ছহীহ্, ৩/৯০ পৃ. হা/২২৭০) এ ছহীহ্ হাদিস বিষয়ে আলবানী লিখেছেন-</p><p style="text-align: justify;">رواه أحمد والبخارى عن أبي هريرة. (ضعيف)</p><p style="text-align: justify;">-“হাদিসটি ইমাম আহমদ (رضي الله عنه) ও বুখারী (رضي الله عنه) হযরত আবূ হুরায়রা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণনা করেছেন, হাদিসটি দ্বায়িফ।”  ১৫৮৫৮  আলবানী, যঈফু জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাহ, ১/৫৯০ পৃ. হা/৪০৫০;</p><p style="text-align: justify;">দেখুন তিনি ছহীহ্ বুখারী হাদিসের উপর কিভাবে আঙ্গুল তুলেছেন! </p><p style="text-align: justify;">অথচ আলবানী মিশকাতের তাহকীকে এই হাদিসকেই ছহীহ্ বলেছেন!  ১৫৯৫৯  আলবানী, তাহকীকে মিশকাত, ২/৮৯৯ পৃ. হা/২৯৮৪, কিতাবুল ইজারাহ;</p><p style="text-align: justify;">ছহীহ্ বুখারীর আরও অনেক ছহীহ্ হাদিসকে সে এভাবে দ্বায়িফ বলেছেন। এবার আমি ছহীহ্ মুসলিম শরীফ থেকে একটি উদাহরণ পেশ করবো। ইমাম মুসলিম (رضي الله عنه) সংকলন করেন-</p><p style="text-align: justify;">عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ، فَلْيَفْتَتِحْ صَلَاتَهُ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ</p><p style="text-align: justify;">-“(তথ্য সূত্র: ইমাম মুসলিম, আস-ছহীহ্, ১/৫৩২ পৃ. হা/৭৬৮)</p><p style="text-align: justify;">এ ছহীহ্ হাদিস বিষয়ে আলবানী লিখেছেন-</p><p style="text-align: justify;">رواه الإمام أحمد ومسلم عن أبي هريرة. (ضعيف)</p><p style="text-align: justify;">-“হাদিসটি ইমাম আহমদ (رضي الله عنه) ও মুসলিম (رضي الله عنه) হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, হাদিসটি দ্বায়িফ।”  ১৬০ ৬০ আলবানী, যঈফু জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাহ, ১/৮৯ পৃ. হা/৬১৯;</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! সে ছহীহ্ বুখারী মুসলিমের এমন অনেক ছহীহ্ হাদিসকে জাল দ্বায়িফ বলেছেন, যার বিস্তারিত আলোচনা জনাব শহিদুল্লাহ বাহাদুর সাহেবের লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">ঘ. আলবানী নিজেই নিজেকে খন্ডন:</p><p style="text-align: justify;">আলবানী এক হাদিসকে দ্বায়িফ বলে নিজেই আবার তার অপর আরেক গ্রন্থে নিজের মতকে রদকে রদ করে ছহীহ্ বলেন, যা কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমের কাজ নয়। এ বিষয়ে আমি কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি। ১. খতিব তিবরিযি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-</p><p style="text-align: justify;">وَعَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلَّا عَلَى أَرْبَعَةٍ: عَبْدٍ مَمْلُوكٍ أَوِ امْرَأَةٍ أَوْ صَبِيٍّ أَوْ مَرِيضٍ</p><p style="text-align: justify;">-“(তথ্য সূত্র: সুনানে আবি দাউদ, ১/২৮০ পৃ. হা/১০৬৭) এ হাদিসকে আলবানী স্ত্রী লোকদের মসজিদে গমন নিষেধ প্রমাণ হওয়ায় মিশকাতের তাহকীকে একে দ্বায়িফ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।  ১৬১৬১. আলবানী, তাহকীকে মিশকাত, ১/৪৩৪ পৃ. হা/১৩৭৭, মাকতুবাতুল ইসলামী, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ. ১০৮৫ খৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অপরদিকে আলবানী এ হাদিসকে তার একাধিক গ্রন্থে ছহীহ্ বলে তাহকীক করেছেন। ১৬২ ৬২.  আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/৫৪ পৃ. হা/৫৯২, ছহীহ্ আবু দাউদ, হা/১০৬৭;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">পাঠকবর্গ! আপনারাই চিন্তা করুন সে কেমন তাহকীককারী! </p><p style="text-align: justify;">২. ইমাম আবু দাউদ ও খতিব তিবরিযি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-</p><p style="text-align: justify;">عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْجُمُعَةُ عَلَى كُلِّ مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ</p><p style="text-align: justify;">-“যে জুম‘আর আযান শুনবে তার জন্যই জুম‘আ।” (তথ্য সূত্র: ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ১/২৭৮ পৃ. হা/১০৫৬) অপরদিকে আলবানী এ হাদিসকে তার অন্য গ্রন্থে একে (حسن) ‘হাছান’ বলে তাহকীক করেছেন। (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/৫৮ পৃ. হা/৫৯৩) পাঠকবর্গ! আপনারাই চিন্তা করুন সে কেমন তাহকীককারী!</p><p style="text-align: justify;">তার বিষয়ে এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, যার বিস্তারিত জনাব শহিদুল্লাহ বাহাদুর সাহেবের লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">ঙ. বুখারী-মুসলিমের রাবীকে দ্বায়িফ বলা:</p><p style="text-align: justify;">আহলে হাদিসদের ইমাম আলবানীর তাহকীক পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ছহীহ্ বুখারী-মুসলিমের অসংখ্য রাবীকে দ্বায়িফ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি। ১. আলবানী হযরত উমর (য)-এর বর্ণিত একটি হাদিসের পর্যালোচনা করতে গিয়ে লিখেন- وأبو مسلم الأنصاري هذا المحمر لم أعرفه. -“সনদে আবূ মুসলিম নামে একজন রাবী রয়েছেন তাকে আমি চিনি না।”  ১৬৩৬৩.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪৮২ পৃ. হা/১৪৯৪;</p><p style="text-align: justify;">অথচ এ আবূ মুসলিম হচ্ছেন ছহীহ্ বুখারীর রাবী, তাকে তিনি মাজহুল বানিয়ে দিতে চেয়ে ছিলেন। তাকে মুহাদ্দিছগণ আবূ মারিয়ম আনসারী হিসেবে চিনেন। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে সামগ্রীকভাবে ছিক্বাহ বলেছেন। ১৬৪৬৪. ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৬৭২ পৃ. ক্রমিক.৮৩৫৭;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;"> ইমাম ইবনে কাসির (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এবং ইবনে হাজার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وقال العِجْليُّ: أبو مريم مولى أبي هريرة تابعي، ثقة.</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম ইজলী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আবূ মারিয়ম হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه)-এর গোলাম ছিলেন, তিনি তাবেয়ী, বিশ্বস্ত ছিলেন।” ১৬৫৬৫. ইবনে কাসির, তাকমীল ফি জারহু ওয়া তা‘দীল, ৩/৪৩২ পৃ. ক্রমিক. ২৩৯৮, ইবনে হাজার, তাহযিবুত তাহযিব, ১২/২৩২ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"> ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, (ثقة) তিনি ছিক্বাহ বা বিশ্বস্ত।”  ১৬৬৬৬. যাহাবী, আল-কাশেফ, ক্রমিক. ৬৮২৮;</p><p style="text-align: justify;">২. আলবানী একটি হাদিস পর্যালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وإسماعيل احتج به الشيخان، وقال الحافظ: صدوق يخطىء قليلا</p><p style="text-align: justify;">-“এ সনদে ইসমাঈল নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস ইমাম বুখারী-মুসলিম (رضي الله عنه) ছহীহ্ গ্রন্থদ্বয়ে স্থান দিয়েছেন, তবে হাফেজ ইবনে হাজার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, সে সত্যবাদী, হাদিসে ভুল করতেন, তা কম।”  ১৬৭৬৭.  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিস সহীহা, ৩/২৬৭ পৃ. হা/১২৭২;</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! উক্ত রাবীর যেহেতু শাইখাইন (রহ.) সংকলন করেছেন সেখানে সে রাবীর সমালোচনা করার কারোও অধিকার নেই। তার বিষয়ে এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, যার বিস্তারিত জনাব শহিদুল্লাহ বাহাদুর সাহেবের ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">চ. এক স্থানে এক রাবীকে ছিক্বাহ বলে অন্য স্থানে দ্বায়িফ বলা:</p><p style="text-align: justify;">১. আলবানী হযরত জাবের (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণিত হাদিস নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে সনদে থাকা এক ‘ফুযাইল ইবনে সুলাইমান’ রাবী নিয়ে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وهو وإن احتج به الشيخان فقد قال الحافظ فى التقريب : صدوق له خطأ كثير</p><p style="text-align: justify;">-“এ সনদের ‘ফুযাইল’ নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস ইমাম বুখারী-মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ছহীহ্ গ্রন্থদ্বয়ে স্থান দিয়েছেন, তবে হাফেয ইবনে হাজার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, সে সত্যবাদী, হাদিসে প্রচুর ভুল করতেন।”  ১৬৮৬৮.  আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/২০৭ পৃ. হা/৭৫৬;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">অথচ অন্য এক হাদিসের আলোচনা করতে গিয়ে এ রাবী সম্পর্কে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قلت: وإسناده جيد رجاله رجال البخاري، وفي الفضيل كلام لا يضر</p><p style="text-align: justify;">-“আমি (আলবানী) বলি, এ সনদটি শক্তিশালী, সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী ছহীহ্ বুখারীর বর্ণনাকারী, সনদে ফুযায়েল নামক রাবী রয়েছেন, তার বিষয়ে কোনো সমালোচনা গ্রহণযোগ্য নয়।”  ১৬৯৬৯. আলবানী, সিলসিলাতুল...সহীহা, ৩/২১৫ পৃ. হা/১২১৩;</p><p style="text-align: justify;">২. আহলে হাদিস আলবানী একটি হাদিসের সনদ পর্যালোচনা করতে গিয়ে রাবী ‘মুহাম্মদ বিন আজলান’ সম্পর্কে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وابن عجلان متكلم فيه -“সনদে ইবনে আজলান রয়েছে, তার বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে।”  ১৭০৭০.  আলবানী, তামামিল মিন্নাহ, ২১৮ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অথচ অন্য এক হাদিসের আলোচনা করতে গিয়ে এ রাবী সম্পর্কে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قلت: وإسناده جيد...... وابن عجلان إنما أخرج له البخاري تعليقا ومسلم استشهادا.</p><p style="text-align: justify;">-“আমি (আলবানী) বলি, এ সনদটি শক্তিশালী,.....সনদে ইবনে আজলান নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস ছহীহ্ বুখারীতে তা‘লিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে এবং ইমাম মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার ‘আস-ছহীহ্’ গ্রন্থে তার হাদিসের  সাক্ষ্য দিয়েছেন।”  ১৭১৭১.  আলবানী, সিলসিলাতুল...সহীহা, ৫/২৭১ পৃ. হা/২২৩১;</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, তিনি ছহীহ্ বুখারী মুসলিমের রাবীকেও দ্বায়িফ বলতে পরওয়া করেন না; যার বিস্তারিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">ছ. বিভিন্ন মুজতাহিদ তবকার ইমামদের সমালোচনা:</p><p style="text-align: justify;">তিনি মাযহাব বিরোধী হওয়ার কারণে পৃথিবীর মহান মহান ইমামদের সমালোচনা করতেও দ্বীধাবোধ করেননি। ১. সে হানাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমামে আযম আবু হানিফা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ পৃথিবীর অসংখ্য মুজতাহিদ তবকার আলেমদের সমালোচনা করেছেন। আহলে হাদিসদের ইমাম আলবানী ইমাম আযমের বিরোধীগণের সেরাদের অন্যতম; সে লিখেছে- ولا يحتج بأبي حنيفة لضعفه في الحديث -“আবু হানিফার হাদিস দলিলযোগ্য নয়; কেননা তিনি হাদিসে দুর্বল।”   ১৭২৭২  . আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ১/৬৬৫ পৃ. হা/৪৫৮ </p><p style="text-align: justify;">আলবানী তার এই মিথ্যা দাবীর পিছনে কিছু ভূয়া দলিল আর যুক্তি পেশ করেছেন। এই ধোঁকাবাজ চালাকী করে আরও লিখেছেন-</p><p style="text-align: justify;">ومما لا شك فيه عندنا أن أبا حنيفة من أهل الصدق، ولكن ذلك لا يكفي ليحتج بحديثه</p><p style="text-align: justify;">-“এতে কোন সন্দেহ নেই যে আবু হানিফা (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সত্যবাদীদের অর্ন্তভুক্ত ছিলেন। কিন্তু তাঁর হাদিস দলিল দেওয়ার জন্য উপযুক্ত/যথেষ্ট নয়।”  ১৭৩৭৩  . আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ১/৬৬৫ পৃ. হা/৪৫৮  নাউযুবিল্লাহ </p><p style="text-align: justify;">২. শুধু তাই নয় সে মাযহাব বিরোধী হওয়ার কারণে ইমাম আযমের অন্যতম সহচর ইমাম কাযি আবু ইউসুফ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর সমালোচনা করেন। সে তাঁর সম্পর্কে এ স্থানে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">أبو يوسف فيه ضعف من قبل حفظه، قال الفلاس:  صدوق كثير الخطأ</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম আবু ইউসুফ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)তার হেফযে দুর্বলতা রয়েছে, মুহাদ্দিছ ফাল্লাস বলেন, তিনি যদিও সত্যবাদী হাদিসে তিনি প্রচুর ভুল করতেন।” ১৭৪ ৭৪ . আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ২/৩০ পৃ. হা/৫৩৫</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">অথচ ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইমাম কাযি ইউসুফের জীবনীতে লিখেছেন-</p><p style="text-align: justify;">هُوَ الإِمَامُ، المُجْتَهِدُ، العَلاَّمَةُ، المُحَدِّثُ، قَاضِي القُضَاةِ، أَبُو يُوْسُفَ يَعْقُوْبُ بنُ إِبْرَاهِيْمَ بنِ حَبِيْبِ بنِ حُبَيْشِ بنِ سَعْدِ بنِ بُجَيْرِ بنِ مُعَاوِيَةَ الأَنْصَارِيُّ، الكُوْفِيُّ.</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম কাযি আবু ইউসুফ। তিনি ছিলেন একজন ইমাম, মুজতাহিদ, আল্লামা, মুহাদ্দিছ, কাযিউল কুযাত,....কুফার অধিবাসি।” ১৭৫৭৫  . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৮/৫৩৫ পৃ. ক্রমিক. ১৪১</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, তিনি ছহীহ্ বুখারী মুসলিমের রাবীকেও দ্বায়িফ বলতে পরওয়া করেন না; যার বিস্তারিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">জ. আলবানীর দৃষ্টিতে দ্বায়িফ হাদিসের হুকুম:</p><p style="text-align: justify;">পাঠকবর্গ! আমি ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, দ্বায়িফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য এ বিষয়ে মুহাদ্দিছদের ইজমা সংঘঠিত হয়েছে। কিন্তু আহলে হাদিস আলবানী সকল মুহাদ্দিসের ইজমার বিরোদ্ধে অবস্থান নিয়ে লিখেন- “অনেকে এরূপ ধারণা পোষণ করেন যে, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীসের উপর আমল করা যাবে এ মর্মে কোনো মতভেদ নেই। বাস্তবিক পক্ষে তা সঠিক নয়।”  ১৭৬৭৬.  আলবানী, য‘ঈফ ও জাল হাদীছ সিরিজ, ১ম খন্ড, ৫০ পৃ. তাওহীদ পাবলিকেশন্স, বংশাল, ঢাকা-১১০০;</p><p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে বিখ্যাত হাফিজুল হাদিস, ফকীহ, ইমাম নববী আশ-শাফেয়ী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন-</p><p style="text-align: justify;">قد اتفق العلماء على جواز العمل بالحديث الضعيف فى فضائل الاعمال:مقدمة المؤلف</p><p style="text-align: justify;">-“উলামায়ে কিরাম এই বিষয়ে সবাই ঐক্যমত পোষণ করেছেন দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য।” ১৭৭৭৭ . ইমাম নববী: আরবাঈন: ১/২০ পৃ. এবং ইমাম ইবনে দাকিকুল ঈদ, শরহে আরবাঈনুন নববিয়্যাহ, ১/২০ পৃ.</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">পাঠকদের কাছেই বিচারের সিদ্ধান্ত অর্পন করা হলো, আপনারা কাকে মানবেন, আলবানীকে না ইমাম নববী (রহ.)সহ পৃথিবী বিখ্যাত ইমামদের!</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আলবানীর খন্ডন নিয়ে যেহেতু আলাদা পুস্তক আমি লিপিবদ্ধ করেছি সেহেতু আলবানীর বিষয়ে এখানে বিস্তারিত আলোকপাত করতে চাই না। তবে এই নাছিরুদ্দিন আলবানী সম্পর্কে একটি নূন্যতম একটি ধারণা হল, সে শতাব্দির শ্রেষ্টতম জালিয়াত, মিথ্যাবাদী ও দাজ্জাল ছিল। রাসূলে আকরাম (ﷺ) এর জামানা থেকে আজ পর্যন্ত আলবানীর মত এতবড় বিপদগামী ও পথভ্রষ্টকারী কেউ আসেনি। </p><p style="text-align: justify;">এই অধ্যায়ে ঐ সকল হাদিস সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে যে গুলোর সনদ বিদ্যমান রয়েছে এবং ছহীহ্, হাছান, দ্বায়িফ সকল প্রকারের হাদিস রয়েছে। তবে কোন প্রকার জাল হাদিস এই অধ্যায়ে নেই। যারা এই অধ্যায়ের কোন হাদিসকে জাল বলবে এতে তাদের অজ্ঞতাই প্রকাশ পাবে।</p><div style="text-align: justify;"><br /></div>

বিষয় নং-১০: লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানীর ধোঁকা থেকে সাবধান!

বিষয় নং-১০: লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানীর ধোঁকা থেকে সাবধান! আমি আমার এ গ্রন্থে যাদের  খন্ডন করেছি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আহলে হাদিস...

Read more »

বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?

<p style="text-align: justify;">বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?</p><p style="text-align: justify;">আমাদেরসাধারণ শিক্ষিত কতিপয় লোক কখনো বলে থাকেন ছহীহ্ হাদিস শুধু ছহীহ্ বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ। নাউযুবিল্লাহ!</p><p style="text-align: justify;">আবার তাদের কোনো হযরতগণ বলে থাকেন যে না সিহাহ সিত্তাহ (তাদের দৃষ্টিতে কুতুবে সিত্তাহ) হলো নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থ, এছাড়া আর কোনো অনুসরণযোগ্য হাদিস গ্রন্থ নেই। হাদিস শাস্ত্রের পান্ডিত্য অর্জনকারীদের নিকট তাদের এ কথাগুলো হাসির খোরাক। তাদের হাসার কারণ হলো এ ধরনের বক্তব্য আহলে হাদিসদের কোনো শায়খ অর্থাৎ ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কাইয়্যুম, শাওকানী, আলবানী, ইবনে বায, শায়খ উছাইমীনসহ প্রমুখ কেউই প্রদান করেননি যে, বুখারী ও মুসলিমেই শুধু ছহীহ্ হাদিস সীমাবদ্ধ বা ৬টি প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ ব্যতিত আর কোনো ছহীহ্ হাদিসের গ্রন্থ নেই। আলবানী পর্যন্ত ‘সুনানে আরবাআ’ প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থের বাইরে অনেক গ্রন্থের ছহীহ্ দ্বায়িফ নির্ণয় করেছেন বা টীকা করেছেন, অথচ তাদের আলবানীর এ তাহকীককৃত কিতাবগুলো দেখলেই এ বাতিল চিন্তাভাবনা দূর হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কোনো হাদিস বিশেষজ্ঞ (মুহাদ্দিছ) আলিমের পক্ষে পৃথিবীর সমস্ত হাদিস সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, এটা একটা সাধারণ কথা। পৃথিবীতে যত হাফেযুদ্দুনিয়া ছিলেন তারাও এ দাবী করেনি যে, আমরা একক পৃথিবীর সকল ছহীহ্ হাদিস সংগ্রহ করে ফেলেছি। এ সম্পর্কে আহলে হাদিসদের ইমাম হাফিজ ইবনে তাইমিয়া লিখেন,</p><p style="text-align: justify;"> لَوْ فُرِضَ انْحِصَارُ حَدِيثِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فيها, فَلَيْسَ كُلُّ مَا فِي الْكُتُبِ يَعْلَمُهُ الْعَالِمُ, وَلَا يَكَادُ ذَلِكَ يَحْصُلُ لِأَحَدِ, بَلْ قَدْ يَكُونُ عِنْدَ الرَّجُلِ الدَّوَاوِينُ الْكَثِيرَةُ وَهُوَ لَا يُحِيطُ بِمَا فِيهَا. بَلْ الَّذِينَ كَانُوا قَبْلَ جَمْعِ هَذِهِ الدَّوَاوِينِ كانوا أَعْلَمَ بِالسُّنَّةِ مِنْ الْمُتَأَخِّرِينَ بِكَثِيرِ؛ لِأَنَّ كَثِيرًا مِمَّا بَلَغَهُمْ وَصَحَّ عِنْدَهُمْ قَدْ لَا يَبْلُغُنَا إلَّا عَنْ مَجْهُولٍ؛ أَوْ بِإِسْنَادِ مُنْقَطِعٍ؛ أَوْ لَا يَبْلُغُنَا بِالْكُلِّيَّةِ فَكَانَتْ دَوَاوِينُهُمْ صُدُورَهُمْ الَّتِي تَحْوِي أَضْعَافَ مَا فِي الدَّوَاوِينِ, وَهَذَا أَمْرٌ لَا يَشُكُّ فِيهِ مَنْ عَلِمَ الْقَضِيَّةَ.</p><p style="text-align: justify;">-“যদি ধরে নেয়া হয় যে, রাসূল (ﷺ)-এর সমস্ত হাদীসের কিতাবসমূহে সংকলন করা হয়েছে এবং রাসূল (ﷺ)-এর হাদিস এর মাঝেই সীমাবদ্ধ, তবে কোনো আলেম হাদীসের কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করবে, এটি সম্ভব নয়। আর কারও পক্ষে এটি ঘটেও না। বরং কারও নিকট সংকলিত অনেক হাদীসের কিতাব থাকতে পারে, কিন্তু সে এ সমস্ত কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে সামর্থ হয় না। প্রকৃতপক্ষে এ সমস্ত কিতাব সংকলনের পূর্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ছিলেন। তাঁদের কিতাব ছিল-তাঁদের অন্তর; যাতে সংরক্ষিত ছিল এ সমস্ত সংকলিত কিতাব থেকে কয়েক গুণ বেশি হাদিস। আর এ বিষয়ে জ্ঞান রাখে, এমন কেউই বিষয়টির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে না।” ১৩৮৩৮  . ইবনে তাইমিয়া, রফউল মালাম আনিল আইয়্যামাতুল আ‘লাম, ১/১৭পৃ.</p><p style="text-align: justify;">ইবনে তাইমিয়ার বক্তব্য থেকে এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ থাকে না যে, হাদীসের বিষয়ে কিতাবসমূহ সংকলিত হওয়ার পূর্বে একেক মুহাদ্দিছ ও ফকীহ সংকলিত হাদীসের কিতাবসমূহের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হাদিস জানতেন। আর সমস্ত ছহীহ্ হাদিস কোনো মুহাদ্দিসের আয়ত্ত করাও সম্ভব নয়। অপরদিকে মনে রাখতে হবে যে, ইমামগণ অনেক ছহীহ্ হাদিস জানা সত্ত্বেও তা লিপিবদ্ধ করে যেতে পারেননি। তার মানে এই নয় যে, তারা যেসব হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন কেবল তাই ছহীহ্, দুনিয়াতে আর কোনো ছহীহ্ হাদিস নেই। এবার আমার এ বক্তব্যের বাস্তবতা প্রমাণের জন্য কয়েকজন ইমামের দৃষ্টান্ত তুলে ধরছি। </p><p style="text-align: justify;">১. ইমাম বুখারী: আল্লামা ইবনুস সালাহ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) (ওফাত. ৬৪৩ হি.) বর্ণনা করেন-</p><p style="text-align: justify;">وَقَدْ قَالَ الْبُخَارِيُّ:  أَحْفَظُ مِائَةَ أَلْفِ حَدِيثٍ صَحِيحٍ، وَمِائَتَيْ أَلْفِ حَدِيثٍ غَيْرِ صَحِيحٍ</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম বুখারী (رضي الله عنه) বলেন, আমি এক লক্ষ ছহীহ্ হাদিস এবং ছহীহ্ নয়, এমন দুই লক্ষ হাদিস জানি।” ১৩৯৩৯  . মুকাদ্দামাতু ইবনিস সালাহ, পৃষ্ঠা-২০, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, আদি, আল-কামিল, মুকাদ্দামা, ১/১২৬পৃ. খতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদী, ২/২৫পৃ.</p><p style="text-align: justify;">সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! ইমাম বুখারী (رضي الله عنه) সুনিশ্চিতভাবে এক লক্ষ ছহীহ্ হাদিস মুখস্ত জানেন বলে নিজের মত প্রকাশ করেছেন, আজ দুনিয়ায় লিপিবদ্ধ আকারে হাদিসের যে কিতাবগুলো রয়েছে তাকরার হাদিস (একই হাদিস বারংবার উল্লেখ) ব্যতিত এক লক্ষ শুধু ছহীহ্ হাদিস পাওয়া দুষ্কর; কিন্তু একপ্রকার মূর্খ-জাহেলদের জন্য পরিতাপের বিষয় হলো যে, তারা বলে বেড়ায় কেবল বুখারী-মুসলিমেই ছহীহ্ হাদিস সীমাবদ্ধ!</p><p style="text-align: justify;">২. ইমাম আহমদ: ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (رضي الله عنه) সাড়ে সাত লক্ষ হাদীসের হাফেজ ছিলেন।  ১৪০৪০  ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ১ম খন্ড;</p><p style="text-align: justify;">হাদিস বিশেষজ্ঞগণ জানেন যে ইমাম আবূ যারওয়া (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাফেযুদ্দীনিয়ার একজন। এ বিষয়ে ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-</p><p style="text-align: justify;">قَالَ ابْنُ أَبِي حَاتِمٍ: قَالَ سَعِيْدُ بنُ عَمْرٍو: يَا أَبَا زُرْعَةَ، أَنتَ أَحْفَظُ، أَمْ أَحْمَدُ؟ قَالَ: بَلْ أَحْمَدُ.</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম ইবনে আবি হাতেম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, মুহাদ্দিছ সাঈদ ইবনে আমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাফেযুদ দুনিয়া ইমাম আবু যারওয়া (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে লক্ষ্য করে বলেন, হে আবু যারওয়া! আপনি বড় হাফিজুল হাদিস নাকি ইমাম আহমদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বড় হাফিজুল হাদিস? তিনি বললেন, না, বরং ইমাম আহমদই সবচেয়ে বড় হাফিজুল হাদিস।” ১৪১৪১  . যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১১/১৮৭ পৃ.</p><p style="text-align: justify;">আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম জাওযী লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قَالَ أَبُو الْحُسَيْنِ: وَسَأَلْت جَدِّي مُحَمَّدَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ، قُلْت: فَكَمْ كَانَ يَحْفَظُ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ؟ قَالَ: أَخَذَ عَنْ سِتِّمِائَةِ أَلْفٍ.</p><p style="text-align: justify;">-“শায়খ আবুল হুসাইন তিনি তার দাদা মুহাম্মদ ইবনে উবায়দুল্লাহ জিজ্ঞেস করলাম যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কত হাদিস হেফয করেছেন? তিনি ৬ লক্ষ হাদিস থেকে মুসনাদ সংকলন করেছেন।” ১৪২৪২  . ইবনুল কাইয়্যুম, ইলামুল মুয়াককিন, ১/৩৬ পৃ.</p><p style="text-align: justify;">উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর নবী (ﷺ)’র অনেক হাদিসই লিপিবদ্ধ হয়নি, যা মুহাদ্দিছগণ মুখস্ত করেছিলেন।</p><p style="text-align: justify;">৩. ইমাম মুসলিম: ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-</p><p style="text-align: justify;">-وَقَالَ الحُسَيْنُ بنُ مُحَمَّدٍ المَاسَرْجِسِي: سَمِعْتُ أَبِي يَقُوْلُ: سَمِعْتُ مسلماً يَقُوْلُ: صنَّفْتُ هَذَا (المُسْنَد الصَّحِيْح) مِنْ ثَلاَث مائَة أَلْف حَدِيْث مَسْمُوْعَة</p><p style="text-align: justify;">“মুহাদ্দিছ হুসাইন বিন মুহাম্মদ মাসারজীসি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি আমার সম্মানিত পিতা থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি ইমাম মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে বলতে শুনেছি, আমি তিন লক্ষ হাদিস থেকে (বাছাই করে) মুসলিম শরীফ সংকলন করেছি।” ১৪৩৪৩  . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১২/৫৬৫ পৃ. ক্রমিক. ২১৭</p><p style="text-align: justify;">উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল যে আল্লাহর নবী (ﷺ)’র অনেক ছহীহ্ হাদিসই ইমাম মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিপিবদ্ধ করেননি, যা তাঁর হিফ্য বা মুখস্ত ছিল।</p><p style="text-align: justify;">৪. ইমাম আবু দাউদ: ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-</p><p style="text-align: justify;">وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ بنُ دَاسَةَ: سَمِعْتُ أَبَا دَاوُدَ يَقُوْلُ: كَتَبْتُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- خَمْسَ مائَةَ أَلْفِ حَدِيْثٍ، انْتَخَبْتُ مِنْهَا مَا ضَمَّنْتُهُ هَذَا الكِتَابَ -يَعْنِي: كِتَابَ (السُّنَنِ)- جمعتُ فِيْهِ أَرْبَعَةَ آلاَفِ حَدِيْثٍ وثمَانِي مائَةِ حَدِيْثٍ، ذَكَرْتُ الصَّحِيْحَ ، وَمَا يُشْبِهُهُ وَيُقَارِبُهُ</p><p style="text-align: justify;">-“মুহাদ্দিছ আবু বকর ইবনে দাসাহ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি ইমাম আবু দাউদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি পাঁচ লক্ষ হাদিস থেকে বাছাই করে চার হাজার আটশত হাদিস কিতাবুস-সুনানে সন্নিবেশ করেছি। আমি ছহীহ্, ছহীহ্র সাথে সাদৃশ্যযুক্ত এবং তার কাছাকাছি হাদিস এতে উল্লেখ করেছি।” ১৪৪৪৪  . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১৩/২১০ পৃ. ক্রমিক. ১১৭</p><p style="text-align: justify;">উপরের বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর নবী (ঐ)’র অনেক হাদিসই ইমাম আবূ দাউদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)’র মুখস্ত ছিল, তিনি তা জানা সত্ত্বেও সব হাদিস লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি বিভিন্ন কারণে।</p><p style="text-align: justify;">৫. ইমাম আবু যুরআ‘: ইমাম আবু যুরআ’ (رَحْمَةُ الله عليه) সাত লক্ষ হাদীসের হাফেয ছিলেন। এজন্য তিনি হাফেযুদ্দুনীয়ার একজন। ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-</p><p style="text-align: justify;">وَقَالَ مُحَمَّدُ بنُ بَشَّارٍ: حُفَّاظُ الدُّنْيَا أَرْبَعَةٌ: أَبُو زُرْعَةَ بِالرَّيِّ، وَمُسْلِمٌ بِنَيْسَابُوْرَ، وَعَبْدُ اللهِ بنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بِسَمَرْقَنْدَ، وَمُحَمَّدُ بنُ إِسْمَاعِيْلَ بِبُخَارَى.</p><p style="text-align: justify;">-“মুহাদ্দিছ মুহাম্মদ বিন বাশ্শার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, পৃথিবীর মধ্যে হাফেযুদ্দুনিয়া  ফিল হাদিস চারজন, ক. রায়-এ আবূ যুরআ‘, খ. সমরকন্দে দারিমী, গ. বুখারায় মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল এবং ঘ. নাইশাপুরে মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ।” ১৪৫৪৫ . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১২/২২৬ পৃ. ক্রমিক. ৭৮</p><p style="text-align: justify;">ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য হাফেযে হাদিসের জন্ম হয়েছে। আমরা জানি হাফেজে হাদিস বলা হয় সেই মুহাদ্দিছকে, যিনি ন্যূনতম এক লক্ষ হাদিস সনদ ও মতনসহ হিফ্য করেছেন এবং সেটি আয়ত্তে রেখেছেন। ইমাম যাহাবীর ‘তাযকিরাতুল হুফফায’ নামক কিতাবে হাফেজে হাদিসদের জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক মুহাদ্দিছ হাফিজুল হাদিসদের জীবনী নিয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ সমস্ত হাফিজুল হাদিস লক্ষলক্ষ হাদিস মুখস্থ করা সত্ত্বেও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার এবং আল্লাহর নবীর সকল ছহীহ্ হাদিস তাঁরা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেননি; কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে কতিপয় লোক বিশুদ্ধভাবে একটি হাদিসও পাঠ করার যোগ্যতা রাখে না, এ সমস্ত ব্যক্তিদের নিকট যখন ছহীহ্ বুখারী মুসলিম ব্যতিত অন্য কোনো কিতাব থেকে কোনো হাদিস তেলাওয়াত করা হয় তখন সে মুজতাহিদ তবকার হাফেজুল হাদিসদের ন্যায় ভাব নিয়ে বলেন, হাদিসটি কি ছহীহ্ বুখারী মুসলিমে আছে! যদি বলা হয়, না, তখন সে বলে দেন এটি ছহীহ্ নয়। অথচ হাদিস ছহীহ্ হওয়ার জন্য হাদিসের সনদ ছহীহ্ হওয়া শর্ত, কোনো কিতাব নয়। আল্লাহ পাক আমাদেরকে এ সমস্ত ফিতনাবাজ লোকদের থেকে হেফাজত করুন, আমিন।</p><p style="text-align: justify;">উপরের আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, ছহীহ্ হাদিস নির্ধারিত কতিপয় গ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়, যে লিখকের কিতাবেই হাদিস সংকলিত হোক না কেনো তিনি এবং তার সংকলিত সনদ যদি ছহীহ্ বা নির্ভরযোগ্য হয় তাহলেই সে হাদিসকে ছহীহ্ বলে স্বীকৃতি দিতে হবে, যদি সে নিজেক রাসূল (ﷺ)-এর উম্মত বলে দাবী করে থাকেন। পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিছ হাদিস ছহীহ্ হওয়ার জন্য হাদিসের সনদ ছহীহ্ হওয়া শর্তারোপ করেছেন, তাই বলে তারা শুধু মুষ্টিমেয় কতিপয় ছহীহ্ হাদিসের কিতাবকে ছহীহ্ হাদিসের সীমাবদ্ধতা আরোপ করেননি।</p>

বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?

বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ? আমাদেরসাধারণ শিক্ষিত কতিপয় ...

Read more »

বিষয় নং-৮: ছিক্বাহ রাবীর মুরছাল হাদিস গ্রহণযোগ্য

<p style="text-align: justify;">বিষয় নং-৮: ছিক্বাহ রাবীর মুরছাল হাদিস গ্রহণযোগ্য:</p><p style="text-align: justify;">বর্তমান আহলে হাদিসগণের দৃষ্টিতে মুরছাল হাদিস দ্বায়িফ হিসেবে গণ্য তাই তা গ্রহণযোগ্য নয়, অথচ এটি হচ্ছে তাদের মনগড়া নীতিমালা। বিশেষ করে আলবানী ও তার কতিপয় অনুসারী এ নিয়ে খুবই বেশী বাড়াবাড়ি করতে দেখা যায়। পৃথিবীর জমহুর উলামাগণের মাযহাব হলো তাবেয়ী যদি ছিক্বাহ বা নির্ভরযোগ্য হয় তাহলে তার মুরছাল গ্রহণযোগ্য।</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-০১: আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) একটি হাদিসের সনদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন-</p><p style="text-align: justify;">وَقَالَ أَبُو دَاوُدُ: هَذَا مُرْسَلٌ: أَيْ: نَوْعٌ مُرْسَلٌ وَهُوَ الْمُنْقَطِعُ لَكِنَّ الْمُرْسَلَ حُجَّةٌ عِنْدَنَا وَعِنْدَ الْجُمْهُورِ</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম আবু দাউদ বলেন সনদটি মুরছাল, আর মুরছাল হলো মুনকাতে‘ঈ এর প্রকার। তবে জমহুর মুহাদ্দিছীনে কেরামের নিকট মুরছাল হুজ্জাত বা দলিলের উপযুক্ত।”  ১২৩২৩  মিরকাতুল মাফাতিহ, ১/৩৬৮ পৃ. হা/৩২৩, কিতাবুত ত্বহারাত;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-২: আল্লামা আনোওয়ার শাহ কাশ্মীরী লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وقال النسائي: إنه مرسل، أقول: إن المرسل حجة عند الجمهور</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম নাসাঈ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, এ হাদিসটি মুরছাল, আমি বলি, তবে জমহুর মুহাদ্দিছীনে কেরামের নিকট মুরছাল হুজ্জাত বা দলিলের উপযুক্ত।”  ১২৪২৪ আরফুয মাযী, ১/৪৩৭ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৩: আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এক স্থানে তিনি লিখেন- قُلْتُ: الْمُرْسَلُ حُجَّةٌ عِنْدَ الْجُمْهُورِ</p><p style="text-align: justify;">-“আমি  (মোল্লা আলী ক্বারী) বলেন, মুরছাল হাদিস জমহুর উলামায়ে কিরামের নিকট হুজ্জাত।”  ১২৫২৫ মেরকাত, ২/৭৯৫ পৃ. হা/১০০৬;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৪: তিনি তার আরেক সুপ্রসিদ্ধ পুস্তকে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قلت المرسل حجة عند الجمهور -“মুরছাল হাদিস জমহুর উলামায়ে কিরামের নিকট হুজ্জাত।”  ১২৬২৬ শরহে শিফা, ১/৪৫০ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৫: তিনি তার আরেক পুস্তকে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قُلْتُ الْمُرْسَلُ حُجَّةٌ عِنْدَ الْجُمْهُورِ -“মুরছাল হাদিস জমহুর উলামায়ে কিরামের নিকট হুজ্জাত।”  ১২৭২৭  আসরারুল মারফূআ, ৩৪০ পৃ. হা/৪৮১-এর আলোচনা;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৬: তিনি আরও লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قَالَ جُمْهُور الْعلمَاء: إِن الْمُرْسل حجَّة مُطلقًا -“অধিকাংশ আলেমগণ বলেন, সাধারণভাবে মুরছাল হাদিস নিকট হুজ্জাত।”  ১২৮২৮  শরহে নুখবাতুল ফিকর, ৪০৩ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৭: ইমাম যুরকানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">لِأَنَّ الْمُرْسَلَ حُجَّةٌ عِنْدَنَا -“নিশ্চয় মুরছাল হাদিস আমাদের (মুহাদ্দিছদের) নিকট হুজ্জাত হবার উপযোগী।”  ১২৯২৯ যুরকানী, শারহে মুয়াত্তা, ১/৬৩ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৮: আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">لِأَن الْمُرْسل حجَّة عندنَا. -“আমাদের (হানাফীদের) নিকট মুরছাল হাদিস হুজ্জাত।”  ১৩০৩০  আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ২/১৬২ পৃ. এবং ৬/২৩২ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-৯: আহলে হাদিস মোবারকপুরী লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وَالْحَدِيثُ الْمُرْسَلُ حُجَّةٌ عِنْدَ الْإِمَامِ أَبِي حَنِيفَةَ وَمَالِكٍ وَأَحْمَدَ مُطْلَقًا</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম আযম আবূ হানিফা, ইমাম মালেক এবং ইমাম আহমদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর নিকট দ্ব্যর্থহীনভাবে মুরছাল হাদিস হুজ্জাত।”  ১৩১৩১ তুহফাতুল আহওয়াজি, ২/৮১ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-১০: আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ পানিপথী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন-</p><p style="text-align: justify;">قلنا المرسل حجة -“আমরা (হাদিসবিজ্ঞানী) বলি, মুরছাল হাদিস হুজ্জাত।”  ১৩২৩২ তাফসিরে মাযহারী, ১/৩১৮ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-১১: ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وَأُعِلَّ بِالْإِرْسَالِ وَهُوَ لَا يَضُرُّ ; لِأَنَّ الْمُرْسَلَ حُجَّةٌ عِنْدَ الْجُمْهُورِ</p><p style="text-align: justify;">-“মুরছাল হাদিসের সমালোচনা ক্রটির কারণ নয়। কেননা মুরছাল অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে হুজ্জাত।”  ১৩৩৩৩ জামেউল ওসায়েল ফি শারহিল শামায়েল, ১/৮৮ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-১২: তিনি এ গ্রন্থের আরেক স্থানে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">قُلْتُ: الْمُرْسَلُ حُجَّةٌ عِنْدَ الْجُمْهُورِ -“আমি (ইবনে হাজার) বলি, মুরছাল হুজ্জাত হবার বিষয়ে জমহুর উলামায়ে কিরামগণ একমত।”  ১৩৪৩৪ জামেউল ওসায়েল ফি শারহিল শামায়েল, ১/১৪৯ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-১৩: তিনি অন্যত্র একটি মুরছাল হাদিস প্রসঙ্গে লিখেন- </p><p style="text-align: justify;">وَهُوَ لَا يَضُرُّ، فَإِنَّ مَذْهَبَنَا وَمَذْهَبَ الْجُمْهُورِ أَنَّ الْمُرْسَلَ حُجَّةٌ</p><p style="text-align: justify;">-“মুরছাল হওয়াটা ক্ষতিকর নয়। যেহেতু আমাদের এবং অধিকাংশ হাদিস বিজ্ঞানীর মতে মুরছাল হাদিস হুজ্জাত।”  ১৩৫৩৫  জামেউল ওসায়েল ফি শারহিল শামায়েল, ১/২৪৯ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">তিনি অন্যত্র লিখেন- وَالْحَدِيثُ الْمُرْسَلُ حُجَّةٌ عِنْدَ الْجُمْهُورِ</p><p style="text-align: justify;">-“মুরছাল হাদিস জমহুর উলামায়ে মুহাদ্দিছীনের নিকট হুজ্জাত হবার উপযোগী।”  ১৩৬৩৬ জামেউল ওসায়েল ফি শারহিল শামায়েল, ১/২২৭ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">অভিমত নং-১৪: আল্লামা যারকাশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فَإِن الْمُرْسل حجَّة عِنْد مَالك كَمَا نَقله ابْن عبد الْبر وَالْقَاضِي أَبُو بكر وَغَيرهمَا وَكَذَلِكَ عِنْد أَحْمد كَمَا نَقله ابْن عبد الْبر وَالْقَاضِي [أَبُو بكر]</p><p style="text-align: justify;">-“ইমাম মালেকের নিকট মুরছাল হাদিস হুজ্জাত, যা ইমাম ইবনে আবদুল র্বারররর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এবং কাযি আবু বকর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ অন্যান্যরা তার থেকে বর্ণনা করেছেন, এমনিভাবে এ দুই মুহাদ্দিছ ইমাম আহমদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর মতও অনুরূপ উল্লেখ করেছেন।”  ১৩৭৩৭  আন-নুক্কাত, ৪৯২ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল যে মুরছাল হাদিস জমহুর মুহাদ্দিছ, ফুকাহা, মুফাসসিরগণের নিকট হুজ্জাত, তাই আমাদের অধিকাংশদের মতের দিকেই ধাবিত হতে হবে।</p><div style="text-align: justify;"><br /></div>

বিষয় নং-৮: ছিক্বাহ রাবীর মুরছাল হাদিস গ্রহণযোগ্য

বিষয় নং-৮: ছিক্বাহ রাবীর মুরছাল হাদিস গ্রহণযোগ্য: বর্তমান আহলে হাদিসগণের দৃষ্টিতে মুরছাল হাদিস দ্বায়িফ হিসেবে গণ্য তাই তা গ্রহণযোগ্য নয়, অথচ...

Read more »

বিষয় নং- ৬: কোনো সনদের ক্ষেত্রে একজন রাবীর হেফ্যে (স্মৃতিশক্তিতে) সামান্য দুর্বলতা দ্বারা হাদিস ‘হাছান’ হয়, দ্বায়িফ নয়

<p style="text-align: justify;">বিষয় নং- ৬: কোনো সনদের ক্ষেত্রে একজন রাবীর হেফ্যে (স্মৃতিশক্তিতে) সামান্য দুর্বলতা দ্বারা হাদিস ‘হাছান’ হয়, দ্বায়িফ নয়:</p><p style="text-align: justify;">হাদিস শাস্ত্রে একজন রাবী হেফ্যে সামনে ক্রুটিযুক্ত হলে তার হাদিস ‘হাছান’ স্তরে উপনীত হবে, এটাই উসূলে হাদিসের নীতি। বর্তমান আহলে হাদিসগণ ফিতনা ছড়াচ্ছে যে, রাবীর এ ধরনের সমস্যার দ্বারা হাদিস দ্বায়িফ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমি কতিপয় বিজ্ঞ মুহাদ্দিছদের অভিমত পেশ করবো, ইনশা আল্লাহ।</p><p style="text-align: justify;">১. হাফেজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত. ৯১১ হি.} বলেন- فَإِنْ خَفَّ الضَّبْطُ فَهُوَ الْحَسَنُ لِذَاتِهِ.</p><p style="text-align: justify;">-“বর্ণনাকারীর সংরক্ষণ শক্তি সামান্য দুর্বল হলে সে হাদিসকে হাছান লি জা’তিহী বলা হয়।”  ১০৭৭ . ইমাম ছিয়তী, তাদরীবুর রাবী, ১/১৭৩পৃ. দারু তৈয়্যব, বয়রুত, লেবানন।</p><p style="text-align: justify;">২. ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فَإِنْ خَفَّ الضَّبْطُ: فَالْحَسَنُ لِذَاتِهِ، وَبِكَثْرَةِ طُرُقِهِ يُصَحَّحُ</p><p style="text-align: justify;">-“বর্ণনাকারীর সংরক্ষণ শক্তি যদি সামান্য ক্রটিযুক্ত হয়, অত:পর সে হাদিসের মান ‘হাছান লিজাতিহি’ এবং এ জাতীয় হাদিস যখন অনেক সূত্রে বর্ণিত হবে সেটিকে তখন ছহীহ্ (লিগাইরিহী) বলা হয়।”  ১০৮৮. ইবনে হাজার আসকালানী, নুখবাতুল ফিকর, ১/৭৮ পৃ. </p><p style="text-align: justify;">৩. ড. মাহমুদ আত-ত্বহান লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فإن خف الضبط، فالحسن لذاته -“বর্ণনাকারীর সংরক্ষণ শক্তি সামান্য দুর্বল হলে সে হাদিসকে ‘হাছান লি জাতিহী’ বলা হয়।” ১০৯ ৯ . ড. মাহমুদ আত্-ত্বহান, তাইসিরুল মাসতালিউল হাদিস, ৫৮ পৃ.।</p><p style="text-align: justify;">৪. মাওলানা জাফর আহমদ উসমানী বলেন-</p><p style="text-align: justify;">فان خف الضبط والصفات الاخرى فيه فهو الحسن- -‘রাবীর যবত (সংরক্ষণগুণ) সামান্য দুর্বল হয়ে ছহীহ্ হাদিসের সকল শর্ত বিদ্যমান থাকলে তাকে হাদিসে ‘হাছান’ বলে।” ১১০১০ . কাওয়াইদ ফি উলূমিল হাদিস, ৩৪ পৃ. </p><p style="text-align: justify;">৫. আল্লামা আমির সান‘আনী লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فَإِنْ خَفَّ الضَّبْطُ (مَعَ بَقِيَّةِ الشُّرُوطِ الْمُتَقَدِّمَةِ فِي الصَّحِيحِ) (فَالْحَسَنُ لِذَاتِهِ) وَبِكَثْرَةِ الطُّرُقِ يُصَحَّحُ (فَيُسَمَّى الصَّحِيحُ لِغَيْرِهِ)</p><p style="text-align: justify;">-“বর্ণনাকারীর সংরক্ষণ শক্তি যদি সামান্য ক্রটিযুক্ত হয়, (এছাড়া ছহীহ্ হওয়ার বাকি শর্তসমূহে সে সনদে রাবীর থাকে) অত:পর সে হাদিসের মান ‘হাছান লিজাতিহি’ এবং এ জাতীয় হাদিস যখন অনেক সূত্রে বর্ণিত হয় সেটি ছহীহ্ হয়েছে যায় (যাকে ছহীহ্ লিগাইরিহী বলা হয়)।”  ১১১১১ সান‘আনী, সবলুস সালাম, ২/৭২২ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">বিষয় নং-৭: সনদে কোনো একজন বর্ণনাকারী মুনকার, অথবা মুদ্ত্বরাব অথবা মাতরুক থাকলে সে হাদিসকে জাল বলা হবে না।</p><p style="text-align: justify;">বর্তমান আহলে হাদিসগণ খুবই ফিতনা ছড়াচ্ছে যে হাদিসের সনদে কোন রাবীর ব্যাপারে যদি মুনকার, মাতরুক ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয় তাহলে তা তাদের দৃষ্টিতে জাল হাদিস হিসেবে গণ্য। অথচ এটি হচ্ছে তাদের মনগড়া নীতিমালা। সকল মুহাদ্দিছগণই বলেছেন সনদের একজন রাবীর প্রতি উপরের বর্ণিত দুর্বলতার ইঙ্গিত দ্বারা সনদটি দ্বায়িফ হবে কিন্তু জাল নয়। </p><p style="text-align: justify;">ক. (সনদ মুনকার হওয়া): এ বিষয়ে ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী (رضي الله عنه) বলেন-</p><p style="text-align: justify;">المنكر نوع اخر غير الموضوع وهو قسم الضعيف-التعقبات:৭৩-باب :الاطعمة</p><p style="text-align: justify;">-“সর্বসম্মত অভিমত হলো মুনকার সনদ জাল হাদিসের প্রকার নয়,  বরং দ্বায়িফ হাদিসের প্রকার।”  ১১২১২  ছিয়তী, তা‘আকিবাত ‘আলাল মাওদ্বুআত, ৩৭ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">ইমাম ছিয়তী (رضي الله عنه) তার এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেন,</p><p style="text-align: justify;">صرح ابن عدى بأن الحديث منكر فليس بموضوع-التعقبات:৬২</p><p style="text-align: justify;">-“এটা সুস্পষ্ট কথা ইমাম ইবনু আদী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন মুনকার সনদের হাদিস জাল নয়।”  ১১৩১৩  ছিয়তী,  তা‘কিবাত, ৬২ পৃষ্ঠা</p><p style="text-align: justify;"> তিনি এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেছেন যে,</p><p style="text-align: justify;">المُنْكَرْ مِنْ قِسْم الضَّعِيْف وَهُوَ محتمل فى الفضائل-التعقبات:باب المناقب</p><p style="text-align: justify;">-“হাদিসের সনদ মুনকার হওয়া দ্বায়িফ হওয়ার অর্ন্তভুক্ত, তবে ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে তা দলিল হওয়ার সম্ভবনা রাখে।” ১১৪১৪  ইমাম ছিয়তী, তা‘কিবাত,  কিতাবুল মানাকিব;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;"> আল্লামা ইবনুল র্আরাক কেনানী (৯৬৩ হি.) এ বিষয়ে লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">وَالْمُنكر من قسم الضَّعِيف وَهُوَ مُحْتَمل فِي الْفَضَائِل.</p><p style="text-align: justify;">-“হাদিসের সনদ মুনকার হওয়া দ্বায়িফ হওয়ার অর্ন্তভুক্ত, তবে ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে তা দলিল হওয়ার সম্ভবনা রাখে।”  ১১৫১৫  তানযিহুশ শরিয়াহ, ২/৫০ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">খ. (সনদ মুজতারিব হওয়া): অপরদিকে মুজত্বরাব সনদ সম্পর্কে ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন-</p><p style="text-align: justify;">الُمضْطَرِبْ مِنْ قسم الضَعِيْف لَا المَوْضُوْع :২৭: باب الجنائز</p><p style="text-align: justify;">-“মুজতারাব দ্বায়িফ সনদেরই প্রকার, এটি জাল নয়।”  ১১৬১৬  ইমাম ছিয়তী,  তা‘কিবাত, ২৭ পৃষ্ঠা;</p><p style="text-align: justify;">আল্লামা তাহের পাটনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) একটি হাদিস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেন- مُضْطَرب: قلت من قسم الضَّعِيف لَا الْمَوْضُوع</p><p style="text-align: justify;">-“এ সনদটি মুজত্বারিব, আমি (তাহের পাটনী) বলি, মুজতারাব হলো দ্বায়িফ সনদের প্রকার, তাই বলে এটি জাল নয়।” ১১৭ ১৭  তাযকিরাতুল মাওদ্বুআত, ২১৯ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">গ. (সনদ মু’দাল হওয়া): ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ বদরুদ্দীন হামাভী আশ-শাফেয়ী (ওফাত. ৭৩৩ হি.) -</p><p style="text-align: justify;">والمعضل من قسم الضَّعِيف -“হাদিসের সনদ ‘মু’দাল’ হওয়া দ্বায়িফ সনদের অর্ন্তভুক্ত (জাল এর নয়)।” (المنهل الروي , ৪৭ পৃ.) </p><p style="text-align: justify;">ঘ. (সনদ মুনকাতী‘ঈ হওয়া): আল্লামা জাযায়েরী দামেস্কী (رضي الله عنه) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">والمنقطع من قسم الضَّعِيف -“সনদ মুনকাতী‘ঈ (সনদের মাঝে কোনো একজন বিচ্ছিন্ন) হওয়া দ্বায়িফ হাদিসের অর্ন্তভুক্ত (জাল নয়)।” ১১৮১৮ তাওজিহুন নযর ইলা উসূলিল আছার, ২/৭৩০ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"> বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা কাস্তাল্লানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন- </p><p style="text-align: justify;">والْمُنْقَطِعَ مِنْ قِسْمِ الضَّعِيفِ -“সনদ মুনকাতী‘ঈ (সনদের মাঝে কোনো একজন বিচ্ছিন্ন) হওয়া দ্বায়িফ হাদিসের অর্ন্তভুক্ত (জাল নয়)।”  ১১৯১৮  কাস্তাল্লানী, ইরশাদুস সারী, ১/২১ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন- </p><p style="text-align: justify;">والْمُنْقَطِعَ مِنْ قِسْمِ الضَّعِيفِ -“সনদ মুনকাতী‘ঈ (সনদের মাঝে কোনো একজন বিচ্ছিন্ন) হওয়া দ্বায়িফ হাদিসের অর্ন্তভুক্ত (জাল নয়)।”  ১২০২০  ইবনে হাজার, ফতহুল বারী, ১/৩৪৭ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;"><br /></p><p style="text-align: justify;">আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী লিখেন- </p><p style="text-align: justify;">أَنَّ الْمُنْقَطِعَ مِنْ قِسْمِ الضَّعِيفِ -“নিশ্চয় সনদ মুনকাতী‘ঈ (সনদের মাঝে কোনো একজন বিচ্ছিন্ন) হওয়া দ্বায়িফ হাদিসের অর্ন্তভুক্ত (জাল নয়)।”  ১২১২১ নায়লুল আউতার, ৬/৩৭৫ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">ঙ. ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</p><p style="text-align: justify;">فقد صرح بأن رواية المجهول من قسم الضعيف -“এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে সনদ মাজহুল হওয়া দ্বায়িফ সনদের অর্ন্তভুক্ত (জালের নয়)।”  ১২২২২  ইবনে হাজার, আন-নুক্কাত, ৩৮৭ পৃ.;</p><p style="text-align: justify;">তাই কোনো মুহাদ্দিসের সনদ বিষয়ে কোনো দুর্বলতা বুঝায় এমন শব্দ দ্বারা কোনো হাদিসকে জাল বলা যাবে না।</p>

বিষয় নং- ৬: কোনো সনদের ক্ষেত্রে একজন রাবীর হেফ্যে (স্মৃতিশক্তিতে) সামান্য দুর্বলতা দ্বারা হাদিস ‘হাছান’ হয়, দ্বায়িফ নয়

বিষয় নং- ৬: কোনো সনদের ক্ষেত্রে একজন রাবীর হেফ্যে (স্মৃতিশক্তিতে) সামান্য দুর্বলতা দ্বারা হাদিস ‘হাছান’ হয়, দ্বায়িফ নয়: হাদিস শাস্ত্রে একজন ...

Read more »