❏ ঘটনা ৬:

তিন হাজার দিনার কর্জ পরিশোধ


"একজন নেককার ব্যক্তির তিন হাজার দিনার কর্জ হয়। মহাজন লােকটির বিরুদ্ধে কাযীর দরবারে নালিশ দায়ের করে। কাযী তাঁকে কর্জ আদায়ের জন্য এক মাসের সময় দেন। লােকটি কাযীর দরবার থেকে ফিরে এসে মসজিদের মিহরাবের নিকট গিয়ে আল্লাহ পাকের দরবারে কান্নাকাটি আরম্ভ করে দেয় এবং রাসূলে করীম (ﷺ) এর ওপর দরূদ পাঠে নিমগ্ন হয়ে যান। সাতাশ দিনের রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, একজন লােক তাকে বলছেন, আল্লাহ তা'আলা তােমার কর্জ আদায় করে দেবেন। তুমি আলী ইবনে ঈসা উযিরের নিকট যাও এবং তাঁকে বল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নির্দেশ দিচ্ছেন, আপনি আমার তিন হাজার দিনার কর্জ পরিশােধ করে দিন। লােকটি বলেন, যখন আমি জাগ্রত হই, তখন আমার মন প্রফুল্ল ছিল কিন্তু যদি উযির মহােদয় জিজ্ঞেস করেন তােমার একথার সত্যতার প্রমাণ কি? তবে আমি তাকে কি বলবাে? একথা ভেবে আমি তার কাছে গেলাম না। পরবর্তী রাতে আমি পুনরায় হুযূর আকরম (ﷺ) কে স্বপ্নে দেখি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি উযিরের কাছে যাওনি কেন? আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমি এ আশঙ্কায় উযিরের কাছে যায়নি যে, যদি তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, একথায় যে তুমি সত্যবাদী তার প্রমাণ কি? তবে আমি কি বলবাে? হুযূর আকরম (ﷺ) আমার মনােভব পছন্দ করলেন এবং ইরশাদ করলেন, যদি আলী ইবনে ঈসা এ ব্যাপারে তােমার সত্যবাদিতার কোন প্রমাণ তলব করে, তবে তুমি তাঁকে বল যে, একথার সত্যতার প্রমাণ এই যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই বলেছেন যে, তুমি ফজরের নামাযের পর লােকজনের কথা বার্তায় লিপ্ত হওয়ার পূর্বে পাঁচ হাজার বার দরূদ শরীফ পাঠ করে আমার দরবারে পেশ করে থাকো আর তােমার এই আমলের কথা আল্লাহ তাআলা এবং কিরামন-কাতিবীন ব্যতীত আর কেউ অবগত নয়। এ স্বপ্ন দেখার পর আমি সােজা উযিরের নিকট গমন করি এবং স্বপ্নের ঘটনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করি। আর রাসূলুল্লাহ ও নির্দেশিত সত্যতার প্রমাণ তাঁর কাছে পেশ করি। উযির মহােদয় আমার একথা শুনে খুবই সন্তুষ্ট হন এবং বলেন, 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সত্যবাদীতার ওপর ধন্যবাদ।

দ্বিতীয় রাতে আমি খােদ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে স্বপ্নে দেখি এবারও তিনি উহাই ইরশাদ করলেন যা প্রথম রজনীতে ইরশাদ করেছিলেন। আমি অত্যন্ত প্রফুল্ল মনে জাগ্রত হই। কিন্তু উল্লিখিত কারণে উযিরের নিকট গমন করা থেকে বিরত থাকি। এরপর তিনি আমাকে তিন হাজার দিনার দান করে বলেন, যাও তোমার কর্জ পরিশোধ কর।

▶[শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৬২-৩৬৩, গাজী প্রকাশনী।]

Top