হযরত খিযির (عليه السلام) এবং হযরত ইলিয়াস (عليه السلام) এর ঘটনা সম্পর্কিত হাদীস


❏ হাদিস ২: 


শায়খ মজদুদ্দীন (رحمة الله) থেকে আবুল মুযাফফর মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ খাইয়াম সমরকন্দী (رحمة الله)-এর কাহিনীর পাশাপাশি হযরত খিযির (عليه السلام) এবং হযরত ইলিয়াস (عليه السلام) সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনার অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে যে, 

তিনি বললেন, একদিন আমি পথ হারিয়ে গেলে, হঠাৎ একজন লােককে দেখতে পাই, তিনি আমাকে বললেন, এসাে! আমি তার সাথে চললাম। আমার মনে হচ্ছিল যে, সম্ভবত তিনি হযরত খিযির (عليه السلام) হবেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার নাম কী? তিনি বললেন, খিযির ইবনে আনশা আবুল আব্বাস (عليه السلام)। আমি তার সাথে আরও একজন লােককে দেখতে পাই। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার নাম কি? তিনি বললেন, ইলিয়াস ইবনে শাম (عليه السلام)। এরপর তাদের উভয়কে সম্বােধন করে আমি বললাম, আল্লাহ তা'আলা আপনাদের ওপর রহমত নাযিল করুক। আপনি কি হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (ﷺ)-কে দেখেছেন? তারা বললেন, হ্যাঁ দেখেছি। আমি বললাম, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা তার পবিত্র জবান থেকে যা শুনেছেন তা আমাকে বলুন, যাতে আমি আপনাদের থেকে রিওয়ায়ত করতে পারি। তাঁরা বললেন, আমরা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (ﷺ)-কে ইরশাদ করতে শুনেছি,

“যে ব্যক্তি صَلَّى اللهُ عَلَى مُحَمَّدِ ﷺ পাঠ করবে, তার অন্তর মুনাফিকী থেকে এমনভাবে পবিত্র হয়ে যাবে যেমন পানি দ্বারা বস্ত্র পরিষ্কার করা হয়। 

উক্ত সনদে আরও বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (ﷺ)- ইরশাদ করেছেন,"যে ব্যক্তি صَلَّى اللهُ عَلَى مُحَمَّدِ ﷺ বলবে, তাঁর মুখের ওপর রহমতের ৭০টি দরজা খুলে দেওয়া হয়।"

উক্ত সনদে আরও বর্ণিত আছে যে, 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, যখন তুমি কোন মজলিসে বসে বল, 

 بسم الله الرَّحْمنِ الرَّحِيم ، وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدِ 

তবে আল্লাহ তা'আলা একজন ফেরেশতাকে নিয়ােগ করবেন, যিনি তােমাকে গীবত (পরনিন্দা) করা থেকে বিরত রাখেন। আর যদি তুমি মজলিস থেকে ওঠে যাওয়ার সময় বল, 

بسم الله الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ ، وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدِ 

তবে আল্লাহ তা'আলা জনগণকে তােমার গীবত করা থেকে বিরত রাখবেন। 

উল্লিখিত সনদে আরও বর্ণিত আছে যে, 

হযরত খিযির (عليه السلام) এবং হযরত ইলিয়াস (عليه السلام) বলেছেন যে, এক ব্যক্তি সিরিয়া থেকে হযরত রাসূলে মকবুল (ﷺ)-এর পবিত্র দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমার আব্বাজান আপনার মুলাকাতের জন্য খুবই উদগ্রীব, কিন্তু তিনি বৃদ্ধ এবং অন্ধ। আপনার দরবারে উপস্থিতির শক্তি নেই। তিনি (ﷺ) ইরশাদ করলেন, “তােমার আব্বাকে বল, তিনি যদি সাত রাতে বলে, 

صَلَّى اللهُ عَلَى مُحَمَّدِ ﷺ

তবে তিনি আমাকে স্বপ্নে দর্শন করবেন এবং তিনি আমার থেকে হাদীস রিওয়ায়ত করবেন।"


তথ্যসূত্রঃ

(১) ইমাম সাখাভী (رحمة الله),  আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী; পৃ. ১৩৭-১৩৮।

(২) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৫৯, গাজী প্রকাশনী।

Top