দুরূদ প্রেরণের জন্য ফেরেশতা নিয়ােগ 



❏ হাদিস ১৯:


হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।   

رقم الحديث : ۱۲ حديث مرفوع ( وَأَحَجَليّا بن أدمدَ بن عبُدَ أن الكاتب ثنا | أحمد بن عُبيد الصقار , ثللحسن بن سعيد , ثنإبراهيم بن الحَجّاج ثنلحمّاد بن سَلْمَةً نَبُرد بُن سِنَان عنَ محَولِ الشامي عن أبي أُمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَال قال رسول اللَّهِ صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " أكثروا علي من الصلاة في كل يوم جُمُعَان صَلاة أمتي تُعرض عليّ في كل يوم جُمُعَةِ , فمن كان أكثرَهُمْ عَلَى صَلاةً كَانَ أَفَرَبَهُمْ مِنّي مَنْزِلَةً ( ۱۲ )

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, আমার প্রতি প্রত্যেক জুমার দিনে অধিক পরিমাণে দুরূদ সালাম প্রেরণ করো, কেননা আমার উম্মতের সালাত-সালামসমূহ আমার নিকট প্রত্যেক জুমাবারে পেশ করা হয়। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে আমার প্রতি সর্বাধিক সালাত-সালাম প্রেরণকারী হবে, সে ক্বিয়ামতের দিন আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে। 


তথ্যসূত্রঃ

১.বায়হাকী: শুআবুল ঈমান, ৩:১১০, হাদীস নং ৩০৩২। 

২.বায়হাকী: আল সুনানুল কুবরা, ৩:২৪৯, হাদীস নং ৫৭৯১। 

৩.ইমাম বায়হাকীঃ হায়াতুল আম্বিয়াঃ হাদীস নং-১২: 

৪.মুনযিরী: আত তারগীব ওয়াত তারহিব মিন আহদীসিস শরীফ, ২:৩২৮: হাদীস নং ২৫৮৩। 

৫.সুবকী: শিফাউস সিকাম ফি যিয়ারতি খায়রিল আনাম, ১৩৬। 

৬.মাকরীযী: ইমতাউল আসমা ১১:৬৬। 

৭.ইবনু কাইয়িম, জালাউল আফহাম। ৪০। হাদিস নম্বর: ৫৬। 

৮.আযীমাবাদী: আওনুল মা'বুদ আলা সুনানি আবি দাউদ, ৪:২৭২। 

৯.দায়লামী: দাইলামী, ফিরদাউসুল আখবার ১: ৮১। হাদিস নম্বর: ২৫০। 

১০. আবু তাইয়িব। আওনুল মাবুদ। ৪: ২৭২। 

১১. হিন্দী, কানযুল ওম্মাল,১: ৪৮৮, হাদিস নম্বর: ২১৪১।

১২. ফিরােজাবাদী, আস সালাতু ওয়াল বিশরু ফিস সালাতি আলা খাইরিল বাশার ৭৫। 

১৩. সাখাবী, আল কওলুল বদী ফিস সালাতি আলাল হাবীবিশ শফী(ﷺ) ১৫৮। 


হাদিসের সনদ মানঃ


▶ফিরােজাবাদী বলেন, হাদিসটির সনদ জাইয়িদ’ এবং রিজাল (রাবীগণ) অত্যন্ত নির্ভরযােগ্য ।

▶ইমাম সাখাবী বলছেন, বায়হাকী রেওয়ায়তটি হাসান সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন। 


❏ হাদিস ২০:


হযরত আউস ইবনে আউস  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে,


عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم. إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَامِکُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، فِيْهِ خُلِقَ آدَمُ، وَفِيْهِ قُبِضَ وَفِيْهِ النَّفْخَةُ، وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ فَأَکْثِرُوْا عَلَيَّ مِنَالصَّلَاةِ فِيْهِ، فَإِنَّ صَلَاتَکُمْ مَعْرُوْضَةٌ عَلَيَّ، قَالَ : قَالُوْا : يَا رَسُوْلَ اﷲِ! کَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْکَ وَقَدْ أَرِمْتَ؟ يَقُوْلُوْنَ : بَلِيْتَ قَالَ صلي الله عليه وآله وسلم : إِنَّ اﷲَ حَرَّمَ عَلَي الْأَرْضِ أَجْسَادَالْأَنْبِيَاءِ


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমুয়ার দিন সর্বাধিক সেরা। কারণ ঐ দিন আদম (عليه السلام) সৃষ্টি করা হয়েছিল ঐ দিনই ওনার ওফাত হয়েছিল ।ঐ দিন সিঙ্গায় ফুত্‍কার দেয়া হবে আর ঐ দিনই (কিয়ামতের) চিত্‍কার শুরু হবে! তাই ঐ দিন বেশি বেশি করে আমার প্রতি দুরূদ পাঠাও। তোমাদের দুরূদ আমার নিকট (নিশ্চই) পৌঁছানো হবে। তাঁরা (সাহাবীগণ) জিজ্ঞাসা করলেন - আমাদের দরুদ আপনার ওফাতের পর আপনার উপরে কিরুপে পেশ করা হবে? আপনার বরকতময় মোবারক দেহ কি মাটিতে মিশে যাবে না?

রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা জমিনের জন্য নবীগণের দেহকে ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন।"


তথ্যসূত্রঃ


১. আবূ দাউদ: আস্ সুনান, কিতাবুস সালাত, ১/২৭৫, হা-১০৪৭ এবং কিতাবুস সালাত, ২/৮৮, হা-১৫৩১।

২. নাসাঈ: আস্ সুনান, কিতাবুল সালাহ : অধ্যায়: জুমু'আ, ৩/৯১, হা-১৩৭৪। এবং আস্ সুনানুল কুবরা, ১/৫১৯, হা-১৬৬৬।

৩.ইবনু মাজাহ্: আস্ সুনান, কিতাবু ইকামাতিস সালাত, ১/৩৪৫, হা-১০৮৫।

৪.দারেমী: আস্ সুনান, বই : জুমা, অধ্যায় : ফি ফদ্বল ইয়াওমাল জুমা ১/৪৪৫, হা-১৫৭২।

৫.আহমদ ইবনে হাম্বল: আল মুসনাদ, ৪/৮, হা-১৬২০৭। ২৬/৮৪, হা- ১৬১৬২

৬.ইবনে আবি শায়বাহ্: আল মুসান্নাফ, আস-সালাহ ২/২৫৩, হা-৭৬৯৭, ৬/৪০, হা- ৮৭৮৯

৭.ইবনে খুজায়মা: আস্ সহীহ, ৩/১১৮, হা-১৭৩৩-১৭৩৪।

৮.ইবনে হিব্বান: আস্ সহীহ, বই : আর-রাকাইক, অধ্যায় : আদিয়্যাহ : ৩/১৯০, হা-৯১০।

৯.হাকেম: আল মুসতাদরাক, ১/৪১৩, হা-১০২৯।

১০.বাযযার: আল মুসনাদ, ৮/৪১১, হা-৩৪৮৫

১১.তাবরানী: আল মু'জামুল আওসাত, ৫/৯৭, হা-৪৭৮০।

১২.তাবরানী: মু'জামুল কবীর, ১/২৬১, হা-৫৮৯।

১৩.বায়হাকী: আস্ সুনানুস সগীর, ১/৩৭১, হা-৬৩৪।

১৪.বায়হাকী: আস্ সুনানুল কুবরা, ৩/২৪৮, হা-৫৭৮৯। Or, অধ্যায় : আল- জুমুয়া : ৩/৩৫৩, হা-৫৯৯৩

১৫.বায়হাকী: শু'আবুল ঈমান, ৩/১০৯, হা-৩০২৯। Or অধ্যায় : ফাজাইলুস সালাতুন্নবী (ﷺ) ৪/৪৩২, হা-২৭৬৮

১৬. যাহদ্বামী: ফাদ্বলুস্ সালাতি আলান্ নবী, হা-২২।

১৭.ওয়াদীয়াশী: তুহফাতুল মুহতাজ, ১/৫২৪, হা-৬৬১।

১৮.আসকালানী: ফাতহুল বারী, ১১/৩৭০।

১৯.আযলূনী: কাশফুল খিফা, ১/১৯০, হা-৫০১।

২০.ইবনে কাসীর, তাফসীরিল কুরআনিল আযীম, ৩/৫১৫ সুরা আল-আহজাব ৫৬,

২১.ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৪২৯ পৃ. হা/১৩৮১, 

২২.ইমাম কাসতালানীঃ আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যা, ৩য় খন্ড, ৪২৭ পৃ

২৩.ড. তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।


হাদিসটির সনদ-মান পর্যালোচনা 


☞ এ হাদিসকে ইমাম আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ্, দারেমী, অাহমদ, ইবনু খুজায়মা এবং ইবনু হিব্বান বর্ণনা করেছেন।

▶ ইমাম হাকেম বলেন, এ হাদিস ইমাম বুখারীর শর্তাবলীর ভিত্তিতে সহীহ্ এবং

▶ ইমাম ওয়াদিয়াশীও বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু হিব্বান সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন এবং

▶ ইমাম আসক্বালানী বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু খুজায়মা সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন।

▶ ইমাম আজলুনী বলেন, ইহাকে ইমাম বায়হাকী উত্তম, মজবুত সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।

▶ইবনু কাছির বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু খুজায়মা, ইবনু হিব্বান, দারু কুতনী এবং ইমাম নববী 'আল-আযকার' -এ সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন।


❏ হাদিস ২১:


হযরত আবু দারদা  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।

عن أبي الدرداء قال قال رسول الله صلىالله عليه و سلم أكثروا الصلاة علي يوم الجمعة . فإنه مشهود تشهده الملائكة . وإن أحدا لن يصلي علي إلا عرضت علي صلاته حتى يفرغ منها ) قال قلت وبعد الموت ؟ قال ( وبعد الموت . إن الله حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء (سنن ابن ماجه، كتاب الجنائز، باب ذكر وفاته صلى الله عليهو سلم، رقم الحديث-১৬৩৭

রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন-তোমরা জুমআর দিন বেশি বেশি করে দুরূদ পড়। নিশ্চয় ফেরেস্তারা এর উপর স্বাক্ষ্যি থাকে। আর যখন কেউ আমার উপর দুরূদ পড়ে তখনই তা আমার নিকট পেশ করা হয়। আবু দারদা রাঃ বলেন-আমি জিজ্ঞাসা করলাম - মৃত্যুর পরেও কি তা পেশ করা হবে? উত্তরে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

"হ্যাঁ! আল্লাহ্‌ পাক নবীগণের শরীর মোবারাককে ভক্ষণ করা জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। তাই নবীগণ (কবরে) জীবিত আছেন এবং নিয়মিতভাবে তারা রিজিকও পেয়ে থাকেন।"


তথ্যসূত্রঃ


১. ইবনে মাজাহ্ঃ কিতাবুল জানাযা, খন্ড- ১/৫২৪পৃ, হাদিস: ১৬৩৬,

২. ইবনে মাজাহ্ঃ কিতাবুল জানাযা, খন্ড- ১/৫২৪পৃ, হাদিস: ১৬৩৭

৩. ইবনে মাজাহ্ঃ ইকামাতুস সালাহ ওয়াস সুন্নাহ ফিহা : অধ্যায় ৭৯, ১/৩৪৫, হা- ১০৮৫

৪. মুনজারীঃ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব, খন্ড- ২/২২৮পৃ, হাদিস: ২৫৮২।

৫. ইবনে কাসীরঃ তাফসীরু কুরআনিল আযীম, খন্ড- ৩/৫১৫পৃ, খন্ড- ৪/৪৯৩পৃ।

৬. মুনাবীঃ ফয়যুল কদীর, খন্ড- ২/৮২পৃ।

৭. আযুলুনীঃ কাশফুল খিফা, খন্ড- ১/১৯০পৃ, হাদিস: ৫০১

৮. সুনানুস সাগীর লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৪৬৯,

৯. আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৭৮০,

১০. সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৫৭২,

১১. মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩৪৮৫,

১২. মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫৭৫৯

১৩. আবু দাউদ : আস সুনান, কিতাবুস সালাত : ১:২৭৫, হাদিস ১০৪৭

১৪. নাসাঈ : আস সুনান, অধ্যায় : জুমুয়া ৩:৯২

১৫. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল : আল মুসনাদ (৪:৮)

১৬. ইমাম ইবনে হিব্বান : আস সহীহ : (৩:১৯১, হাদিস ৯১০)

১৭. ইবনে খুজায়মাহ : আস সহীহ : (৩:১১৮, হাদিস ১৭৩৩)

১৮. ইমাম হাকিম : আল মুস্তাদরাক (১:২৭৮)

১৯. ইমাম তাবারানী : আল মুজমাউল কবীর  (১:২১৭, হাদিস ৫৮৯)

২০. বায়হাকী : আস সুনান আল কুবরা : (৩:২৪৯).

২১.ড. তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।

২২. কিনানী, মিছবাহুয যুজাজাহ্। ২: ৫৮, ৫৯। হাদিস নম্বর:৬০২। 

২৩. খতীবে তাবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ।১: ৩৯২। হাদিস নম্বর: ১৩৬৬। 

২৪. মুনাবী, ফয়যুল কদীর। ২: ৮৭। 

২৫. সুবকী, শিফাউস সিকাম ফি যিয়ারাতি খাইরিল আনাম। ৩৫, ৩৬। 

২৬. উনদুলুসী, তুহফাতুল মুহতাজ। ১: ৫২৬। হাদিস নম্বর: ৬৬৩। 

২৭. ইবনু কাইয়িম, জালাউল আফহাম। ৬৩। হাদিস নম্বর: ১০৮। 

২৮. ইবনু কছীর, তাফসীরুল কুরআন । ৩: ৫১৪। 

২৯. ইবনু কছীর, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া। ৪: ২৫৮। 

৩০. মুকরীযী, ইমতাউল আসমা। ১১: ৬৫। 

৩১. মাযী, তাহযীবুল কামাল।১০: ২৩। হাদিস নম্বর: ২০৯০। 

৩২. ফিরােজাবাদী, আস সিলাতু ওয়াল বাশারু ফিস সালাতি আলা খাইরিল বাশার। ৭৫। 

৩৩. সাখাবী, আল কওলুল বদী ফিস সালাতি আলাল হাবীবিশ শফী । ১৫৮। 

৩৪. শাওকানী, নাইলুল আওতার। ৩: ৩০৪, ৩০৫। 


হাদিসটির সনদ-মান পর্যালোচনা 


▶ এ হাদিসকে ইমাম ইবনু মাজাহ্ সহীহ্ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।

▶ ইমাম মুনযেরী বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু মাজাহ্ উত্তম-মজবুত সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।

▶ ইমাম মুনাবী বর্ণনা করেন যে, ইমাম দমীরী বলেন, ইহার রাভীগণ (বর্ণনাকারীগণ) নির্ভরযোগ্য।

▶ ইমাম আজলুনীও ইহাকে হাসান বলেছেন।

▶ ইমাম সাখাবী (রহঃ)'র অভিমত, হাদিসটির রিজাল (বিভিন্ন স্তরের রাবীগণ) অত্যন্ত নির্ভরযােগ্য। 

Top