দুরূদ পাঠে জান্নাত লাভ
❏ হাদিস ৬১:
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, হুজুর (ﷺ) বলেছেন , যে ব্যক্তি আমার উপর একহাজার বার দুরূদ পাক পাঠ করে, সে যতক্ষণ না নিজের স্থান জান্নাতের মধ্যে দেখে নেবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত মৃতুবরণ করবে না।
[আত্তারগীব ফি ফাযায়িলিল আমাল লি ইবনে শাহিন, ১৪ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৯, সা’দাতুদ দারাইন, আল - মাকতাবাতুত তাওফিকিয়্যাহ,তুরস্ক, পৃ-১১৫]
❏ হাদিস ৬২:
হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর দিনে এক হাজার বার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, সে তাঁর জান্নাতের ঠিকানা না দেখা পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করবে না। [আল্লামা মুনযিরি, আত তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস নং: ২৫৭৯]।
❏ হাদিস ৬৩:
হযরত তুফাইল ইবন উবাই (رضي الله عنه) তাঁর পিতা উবাই ইবন কা’ব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,
عن ابى بن كعب قال قلت بارسول الله انى اكثر الصلوة عليك فكم اجعل لك من صوتى فقال ماشئت قلت الربع قال ماشئت فان زدت فهو خير لك قلت النصف قال ماشئت فان زدت فهو خيرلك قلت الثلثين قال ماشئت قان زدت فهوخير لك قلت اجعل لك صلوتى كلها قال اذا يكفر فمك ويكفر لك ذنبك–
“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রাতের এক-চতুর্থাংশ অতিবাহিত হলে উঠে গেলেন এবং বলতে লাগলেন, হে লােক সকল! তােমরা আল্লাহ যিকর কর, তােমরা আল্লাহর যিকর কর। প্রকম্পিতকারী এসে গিয়েছে যার পিছনে আসবে পশ্চাদগামী। মৃত্যু তার তিক্ততা নিয়ে এসে গিয়েছে, মৃত্যু তার তিক্ততা নিয়ে এসে গিয়েছে। আমি (উবাই) বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমি তাে দু'আর মধ্যে অনেক সময় কাটাই, অতএব আপনার উপর দুরূদের জন্য কতটুকু সময় দেবাে? হুযুর (ﷺ) বললেন, তােমার ইচ্ছা। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ? তিনি বললেন, তােমার ইচ্ছা; আরাে অধিক করলে তােমার জন্য বেশি মঙ্গলময় হবে। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তােমার ইচ্ছা; আরাে বেশি করলে তােমার জন্য ভাল হবে। উবাই (رضي الله عنه) বলেন, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তােমার ইচ্ছা; আরাে বেশি করলে তােমার জন্য ভাল হবে। উবাই (رضي الله عنه) তখন বললেন, আমার দু'আর সবটুকু সময় আপনার উপর দুরূদ পড়ার জন্য দিয়ে দিবাে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাহলে তােমার সব দুশ্চিন্তা দূরীভূত হওয়ার জন্যে যথেষ্ট হবে এবং তােমার গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”
তথ্যসূত্রঃ
১.ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৪/২১৮ পৃ. হা/২৪৫৭,
তিনি বলেন-“এ হাদিসটি হাসান সহিহ।
২.খতিব তিবরিযি, মিশকাত, (ভারতীয় ছাপা-৮৬),
৩.ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ২/৩২৭ পৃ. হা/২৫৭৭, তিনি বলেন,-“ইমাম আহমদ, তিরমিযি, হাকেম এটি সহিহ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।“ তিনি আরও বলেন, এ হাদিসটির সনদ অত্যন্ত শক্তিশালী।”
৪.ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ২/৪৫৭পৃ. হা/৩৫৭৮, এবং হা/৩৮৯৪, ইমাম হাকেম নিশাপুরী (রঃ) বলেন-“এ হাদিসটির সনদ সহীহ।”
৫.ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৩/৮৫ পৃ. হা/১৪১৮ এবং হা/১৪৭৭,
৬.ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার তালখীছ গ্রন্থে একে সহীহ বলেছেন।
৭.ইমাম যিয়া মুকাদ্দাসী, আহাদিসুল মুখতার, ৩/৩৯০ পৃ. হা/১১৮৮, তিনি বলেন-“এ হাদিসটির সনদ হাসান।”
৮.ইমাম ইবনে আছির, জামেউল উসূল, ১১/৫ পৃ. হা/৮৪৬৭,
৯.ইমাম মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ২/২৭৬ পৃ. হা/৩৯৯৭,
১০.মুফতি আমজাদ আলী আযমী (رحمة الله), বাহারে শরিয়ত (তৃতীয় খণ্ড), পৃ ১৮১, সাকলাইন প্রকাশনী।
১১.মোবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াজী, ৭/১২৯পৃ.
১২.ইবনে হাজার আসকালানী, ফতহুল বারী, ১১/১৬৮পৃ.
১৩.ইমাম ইবনে আছির, জামিউল উসূল, ১১/৫পৃ. হা/৮৪৬৭।
❏ হাদিস ৬৪:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,
ان الجنة تشتاق الى خمسة نفرتالى القرأن وحافظ للسل ن ومطعم الجيعان ومكس العريات ومن صلى على حبيب الرحمن
অর্থাৎ, পাঁচ প্রকার মানুষের প্রতি স্বয়ং বেহেশতই আকৃষ্ট হয়ে আছে :
১। কোরআন শরীফ তেলাওয়াকারী
২। নিজের জিহ্বাকে অনর্থক কথাবার্তা থেকে রক্ষাকারী।
৩। ক্ষুধার্থকে অন্নদানকারী।
৪। বস্ত্রহীনকে বস্ত্রদান এবং
৫। আল্লাহর প্রিয় হাবিবের প্রতি দুরূদ পাঠকারী। সুবাহানাল্লাহ দুরূদ পাঠকারীর কত বড় মর্যাদা।
(জিকরে এলাহি- ৯৮)
❏ হাদিস ৬৫:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, জান্নাতে সব থেকে বেশী হুর ওই ব্যক্তিরই হবে, যে সব থেকে বেশী দুরূদ শরীফ পাঠ কারী হবে।