মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দুরূদ শরীফ পড়া
❏ হাদিস ৬:
হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) হতে হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে পাক (ﷺ) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন-
"বিছমিল্লাহি আল্লহুম্মা ছাল্লি আ'লা মুহাম্মাদিন",
আর যখন বের হতেন তখনও বলতেন -
"বিছমিল্লাহি আল্লহুম্মা ছাল্লি আ'লা মুহাম্মাদিন।"
তথ্যসূত্রঃ
(১) ইবনুস সুন্নী, আমলুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলা, পৃষ্ঠা-১৮১।
(২) ইবনে হাজার আসকালানী, নাতায়েযুল আফকার, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৮২
(৩) লিছানুল মিজান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩১৬।
❏ হাদিস ৭:
আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে,
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ؛ فَلْيُسَلِّمْ علَى النَّبيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وليقُلْ: اَللَّهمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمتِكَ، وَإِذَا خَرَجَ؛ فَلْيَقُلْ: اَللَّهمَّ إنِّيْ أَسْألُكَ مِنْ فَضْلِكَ".
(سنن ابن ماجه, رقم الحديث ৭৭২, وسنن أبي داود, رقم الحديث ৪৬৫, واللفظ لابن ماجه, وصححه الألباني).
অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি যখন মাসজিদে প্রবেশ করবে, তখন যেন সে নাবী কারীম (ﷺ) এর প্রতি সালাম পেশ করে। এবং এই দোয়াটি পাঠ করে:
"اَللَّهمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمتِكَ".
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনার রহমতের দরজা আমার জন্য খুলে দিন।
আর যখন মাসজিদ থেকে বের হবে, তখন যেন সে এই দোয়াটি পাঠ করে:
"اَللَّهمَّ إنِّيْ أَسْألُكَ مِنْ فَضْلِكَ".
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলূকা মিস ফাদ্বলিকা।”
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি”।
তথ্যসূত্রঃ
১) সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ৭৭২ এবং
২) সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫
৩) ইমাম আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ,: ১/২৯৮পৃ. হাদিস: ৩৪১৫ও ৬/৯২পৃ. হাদিস, ২৯৭৬৭,
❏ হাদিস ৮:
আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে,
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَن ّرَسُوْلَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ, قَالَ: إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ؛ فَلْيُسَلِّمْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ, وَلْيَقُلْ: اَللَّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ، وَإِذَا خَرَجَ؛ فَلْيُسَلِّمْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ, وَلْيَقُلْ: اَللَّهُمَّ اعْصِمْنـيْ مِنَ الشَّيْـطانِ الرَّجـيْمِ".
(سنن ابن ماجه, رقم الحديث ৭৭৩, وسنن أبي داود, رقم الحديث ৪৬৫, واللفظ لابن ماجه, وصححه الألباني).
অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন:
তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি যখন মাসজিদে প্রবেশ করবে, তখন যেন সে নবী কারীম (ﷺ) এর প্রতি সালাম পেশ করে। এবং এই দোয়াটি পাঠ করে:
"اَللَّهمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمتِكَ".
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার করুণার দরজাগুলি খুলে দিন”।
আর যখন মাসজিদ থেকে বের হবে, তখন যেন সে নবী কারীম (ﷺ) এর প্রতি সালাম পেশ করে। এবং এই দোয়াটি পাঠ করে:
"اَللَّهمَّ اعْصِمْنـيْ مِنَ الشَّيْـطانِ الرَّجـيْمِ".
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে বিতাড়িত ও অভিশপ্ত শয়তান হতে রক্ষা করুন”।
[সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৩ এবং সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫]
❏ হাদিস ৯:
ফাতেমা বিনতু মুহাম্মাদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,
وَعَنْ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهاَ قَالَتْ: كَانَ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ المَسْجِدَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ، وَقَالَ: "رَبِّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ"، وَإِذَا خَرَجَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ، وَقَالَ: "رَبِّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ".
(جامع الترمذي, رقم الحديث ৩১৪, وسنن ابن ماجه, رقم الحديث ৭৭৩, واللفظ للترمذي, وقال الإمام الترمذي عن هذا الحديث بأنه: حسن, وصححه الألباني).
অর্থ: “আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যখন মাসজিদে প্রবেশ করতেন, তখন মুহাম্মাদের প্রতি দুরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন:
"رَبِّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ".
অর্থ: “হে আমার প্রভু! আপনি আমার পাপগুলি ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার করুণার দরজাগুলি খুলে দিন”।
আর আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যখন মাসজিদ থেকে বের হতেন, তখন মুহাম্মাদের প্রতি দুরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন:
" رَبِّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ".
অর্থ: “হে আমার প্রভু! আপনি আমার পাপগুলি ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার অনুগ্রহের দরজাগুলি খুলে দিন”।
[জামে তিরমিযী, হাদীস নং ৩১৪ এবং সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৩]
মসজিদে প্রবেশের সময় দুরূদ ও সালাম পেশ
❏ হাদিস ১০:
হযরত আমর ইবনে হাযম (رضي الله عنه) বলেন,
عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ قَالَ: السَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، اللَّهُمَ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ وَالْجَنَّةَ
রাসূল (ﷺ) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তিনি বলতেন আল্লাহর হাবিবের উপর সালাম ও সালাম বর্ষিত হউক। তারপর প্রবেশের দোয়া বলতেন…(১)।’’
(ইমাম আবদুর রাযযাক, আল-মুসান্নাফ,: ১/৪২৫পৃ.হাদিস:১৬৬৩, মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুরঃ ফতোয়ায়ে আহলে সুন্নাহ)
❏ হাদিস ১১:
أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَلَامٍ كَانَ إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ سلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالَ: افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ وَإِذَا خَرَجَ سلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَعَوَّذَ مِنَ الشَّيْطَانِ
"নিশ্চয়ই হযরত আবদুুল্লাহ বিন সালাম (رضي الله عنه) তিনি যখন কোন মসজিদে প্রবেশ করতেন তিনি প্রথমে নবিয়ে দোজাহান (ﷺ) কে সালাম দিতেন তারপর প্রবেশের দোয়া বলতেন।(১)’’
তথ্যসূত্রঃ
(ক) ইমাম আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, ৬/৯৭পৃ. হাদিস : ২৯৭৬৮
(খ) ইবনে আবি উসামা ইবনে হারেস (ওফাত.২৮২হি.), মুসনাদে হারিস, ১/২৫৪পৃ.হাদিস,১/২৫৪পৃ.হাদিস,১৩০, মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুরঃ ফতোয়ায়ে আহলে সুন্নাহ)
❏ হাদিস ১২:
হযরত আবু হুমাইদ সায়েদী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ، فَلْيُسَلِّمْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ لِيَقُلْ: اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ،
"রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে অতঃপর সে যেন তাঁর রাসূলের প্রতি সালাম দেয়। তারপর বলবে এই (মসজিদে প্রবেশের) দোয়া.....(১)..।’’
টিকা____________________________
🔺১.
মসজিদে প্রবেশ কালে দু‘আঃ
اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِيْ اَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার রহমতের দরজা আমার জন্য খুলে দাও।]
🔺২.
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দোয়াঃ
اَللّٰهمَّ اِنِّي اَسْٮَٔلُكَ مِنْ فَضْلِكِ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলূকা মিস ফাদ্বলিকা।”
অর্থঃ হে আল্লাহ আমি আপনার দয়া প্রার্থনা করি।
________________________________
❏ হাদিস ১৩:
এ বিষয়ে হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতেও আরেকটি হাদিসে পাক বর্ণিত আছে।’’
وَقَال النَّخَعِيّ إذَا لَم يَكُن فِي الْمَسْجِد أَحَد فَقُل: السَّلَام على رسول الله صلى الله عليه وَسَلَّم وَإذَا لَم يَكُن فِي البَيْت أَحَد فَقُل: السَّلَام عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَاد اللَّه الصَّالِحِين
-‘‘বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত ইবরাহিম নাখাঈ (رحمة الله) বলেন, যখন মসজিদের মধ্যে কোন লোক থাকবে না তখন রাসূল (ﷺ) কে সালাম দিবে এবং যে ঘরে কেউ না থাকে, সে ঘরে (প্রবেশের সময়) বলবেন, হে আল্লাহর মাহবুব বান্দাগন আপনাদের প্রতি সালাম।’’
তথ্যসূত্রঃ
(ইমাম কাযী আয়ায : শিফা তাহরিফে হুকুকে মোস্তফা : ২/৬৭পৃ. মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুরঃ ফতোয়ায়ে আহলে সুন্নাহ)
❏ হাদিস ১৪:
عن عبد الملك بن سعيد بن سويد، قال: سمعت ابا حميد، أو أبا أسيد الأنصاري يقول: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " إذا دخل أحدكم المسجد فليسلم على النبي صلى الله عليه وسلم، ثم ليقل: اللهم <ص:۱۲۷» افتح لي أبواب رحمتك، فإذا خرج قليقل: اللهم إني أسألك من فضلك "، رواه أبو داود وابن ماجه والدارمي،
وقال الرازي : قال أبو زرعة : عن أبي حميد وابي أسيد كلاهما عن النبي صلى الله عليه وسلم أصح . وقال المناوي : إذا دخل أحدكم المسجد فليسلم ندبا مؤكدا أو وجوبا علي النبي صلي الله عليه وسلم لأن المساجد محل الذكر ، والسلام علي النبي صلى الله عليه وسلم منه .
হযরত আবু হােমাইদ আস্-সায়েদী বা আবু উসাইদ আল আনছারী (رضي الله عنه) বয়ান করেন যে, হুযূর নবী আকরম (ﷺ) বলেন, যখন তােমাদের মধ্য থেকে কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন তার উচিৎ যে, হুযূর নবী আকরাম (ﷺ)-এর উপর সালাম প্রেরণ করা। তারপর বলবে, হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন এবং যখন মসজিদ থেকে বের হবে তখন বলবে। হে আল্লাহ! আমি আপনার থেকে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।
এ হাদিসকে ইমাম আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ এবং দারেমী বর্ণনা করেছেন। ইমাম আবু হাতেম রাজী বলেন যে, ইমাম আবু জুরআ’ বলেন, হযরত আবু হােমাইদ এবং আবু ওসাইদ (رضي الله عنه) উভয় থেকে বর্ণিত বর্ণনাসমূহ বিশুদ্ধতম। এবং ইমাম মুনাভী বলেন, যখন তােমাদের মধ্য থেকে কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন তার উচিৎ হুযূর নবী আকরাম (ﷺ) এর খেদমতে সালাম পেশ করাকে পছন্দনীয় এবং আবশ্যকীয় মনে করে আবেদন করা, কেননা মসজিদ হল জিকির করার স্থান এবং হুযূর নবী আকরাম (ﷺ)’র খেদমতে সালাম পেশ করাও আল্লাহর জিকির এর শামিল।
তথ্যসূত্রঃ
(১)দারেমী : আস্ সুনান, ১/৩৭৭, হাদিস : ১৩৯৪।
(২)ইবনে মাজাহ : আস্ সুনান, কিতাবুল মাসাজিদ ওয়াল জামাআত, ১/২৫৪, হাদিস : ৭৭২।
(৩-৪)বায়হাকী, আস্-সুনানিল কোবরা, ২/৬১৯পৃ. হাদিসঃ ৪৩১৭ ও ২/৬১৯পৃ. হাদিসঃ ৪৩১৯,
(৫)আবু দাউদ : আস্ সুনান, কিতাবুস সালাত, ১/১২৬, হাদিস : ৩৬৫।
(৬)বাযযার, আল-মুসনাদ, ৯/১৬৯পৃ. হাদিসঃ ৩৭২০,
(৭)নাসাঈ, আস্-সুনানিল কোবরা, ১/৪০৪পৃ. হাদিসঃ ৮১০,
(৮)নাসাঈ, আমালুল ইউয়াম ওয়াল লাইলা, ১/২২০পৃ. হাদিস,১৭৭,
(৯)আবূ আওয়ানাহ, আল-মুসনাদ, ১/৩৫৪পৃ. হাদিস, ১২৩৪
(১০)ইবনে হিব্বান : আস্ সহীহ, ৫/৩৯৭, হাদিস : ২০৪৮।
(১১)রাযী : ইলালুল হাদীস, ১/১৭৮, হাদিস : ৫০৯।
(১২)ড: তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।
(১৩)মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুরঃ ফতোয়ায়ে আহলে সুন্নাহ।
❏ হাদিস ১৫:
عن فاطمة بنت الحسين، عن جدتها فاطمة الكبرى قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل المسجد صلى على محمد وسلم، وقال: رب اغفر لي ذنوبي، وافتح لي أبواب رحمتك، وإذا خرج صلى على محمد وسلم، وقال: رب اغفر لي ذنوبي، وافتح لي أبواب فضلك. رواه الترمذي وأحمد وعبد الراق.
وفي رواية يقول : بسم الله والسلام علي رسول الله .......... فذكر الحديث نحوه. رواه ابن ماجه وابن أبي شيبة .
وفي رواية : قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل المسجد صلي على محمد وسلم ....... فذكر الحديث نحوه. رواه احمد وابو يعلي والتبراني-
وفي رواية : قالت : قال : السلام عليك أيها النبي ورحمه الله وبرگاته ، اللهم اغفرلي ذنوبي وافتح لي أبواب رزقك . رواه أبو يعلي في المعجم،
হযরত ফাতেমা বিনতু হােছাইন (رضي الله عنه) নিজ দাদীজান সৃষ্টি জগতের সৈয়দা ফাতেমাতুল কুবরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বললেন, হুযূর নবী আকরাম (ﷺ) মসজিদে প্রবেশ করার সময় মুহাম্মদ মােস্তফা (ﷺ)’র উপর সালাত ও সালাম পড়তেন, অতঃপর এ দোয়া বলতেন, হে রব! আমার জন্য আমার (অর্থাৎ উম্মতের) পাপ মােচন করে দিন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন। এবং বাহির হওয়ার সময়ও মুহাম্মদ মােস্তফা (ﷺ) এর উপর সালাত ও সালাম পড়তেন, অতঃপর এ দোয়া চাইতেন। হে আমার রব! আমার জন্য আমার (উম্মতের) পাপ ক্ষমা করে দিন এবং আমার জন্য আপনার দয়ার দরজাসমূহ খুলে দিন।
এ হাদিসকে ইমাম তিরমিজী আহমদ এবং আবদুর রাজ্জাক বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেন, হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার হাদিস হাসান।
অপর এক বর্ণনায় আছে যে, হযরত (ﷺ) বলতেন, আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং আল্লাহ তা'আলার রাসূল (ﷺ) এর উপরও সালাম হােক... তারপর এরূপে হাদিস বয়ান করেন। ইহাকে ইমাম ইবনু মাজাহ এবং ইবনু আবি শায়বাহ বর্ণনা করেছেন।
অপর এক বর্ণনায় সৈয়দা ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বয়ান করেন যে, হুযূর নবী আকরাম (ﷺ) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন মুহাম্মদ মােস্তফা (ﷺ) এর উপর সালাম প্রেরণ করতেন এবং এরূপে মসজিদ থেকে বাহির হওয়ার সময়ও মুহাম্মদ মােস্তফা (ﷺ)’র উপর সালাম প্রেরণ করতেন, ইহার পর পূর্ববর্তী হাদিসের দোয়া বয়ান করলেন। ইহাকে ইমাম আহমদ, আবু ইয়া’লা এবং ত্বাবরানী বর্ণনা করেছেন।
আরেক বর্ণনায় আছে যে, সৃষ্টিজগতের সৈয়দা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বয়ান করলেন যে, হযরত (ﷺ) ইহাই বলতেন, হে আল্লাহর নবী! আপনার উপর শান্তি হােক এবং আল্লাহ তায়ালার রহমত ও বরকত হােক। এ হাদিসকে ইমাম আবু ইয়া'লা আল-মু'জম এ বর্ণনা করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
ক. তিরমিযী : আস্ সুনান, কিতাবুস সালাত ২/১২৭, হাদিস : ৩১৪।
খ. ইবনে মাজাহ : আস্ সুনান, কিতাবুল মাসাজিদ ওয়াল জামাআত, ১/২৫৩, হাদিস : ৭৭১।
গ. ইবনে আবূ শায়বা : আস্ মুসান্নাফ, ১/২৯৮, হাদিস : ৩৪১৬। এবং ৬/৯৬, হাদিস : ২৯৭৬৪।
ঘ. আবদুর রাযযাক : আল মুসান্নাফ, ১/৪২৫, হাদিস : ১৬৬৪।
ঙ. আহমদ ইবনে হাম্বল: আল মুসনাদ, ৬/২৮২-২৮৩, হাদিস : ২৬৪৫৯-২৬৪৬২।
চ. আবু ইয়ালা : আল মুসনাদ, ১২/১২১, ১৯৯, হাদিস : ৬৭৫৩, ৬৮২২। এবং আল মু'জাম, ১/৫৪, হাদিস : ২৪।
ছ. তাবরানী : আল মু'জামূল কবীর, ২২/৪২৪, হাদিস : ১০৪৪। এবং আদ্ দোয়া, ১/১৫০, হাদিস : ৪২৩-৪২৬।
জ.ড: তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।
❏ হাদিস ১৬:
عن أبي هريرة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: " إذا دخل أحدكم المسجد فليسلم على النبي صلى الله عليه وسلم، وليقل : اللهم افتح لي أبواب رحمتك، وإذا خرج، فليسلم على النبي صلى الله عليه وسلم، وليقل : اللهم اعصمني من الشيطان الرجيم"
رواه ابن ماجه والنسائي والبخاري في الكبير. وقال الحاكم : هذا حديث صحيح علي شرط الشيخين . وقال الكناني : هذا إسناد صحيح ورجاله ثقات .
হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত যে, হুজুর নবী আকরাম (ﷺ) বললেন, যখন তােমাদের মধ্য থেকে কেউ মসজিদে প্রবেশ কর, তখন তার উচিৎ যে, তিনি হুজুর নবী আকরাম (ﷺ) এর খেদমতে সালাম পেশ করবে এবং (এর পর) ইহা বলবে, হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা সমূহ খুলে দিন। এবং যখন মসজিদ থেকে বের হবে, তখনও হুজুর নবী আকরাম (ﷺ) এর খেদমতে সালাম পেশ করবে এবং (ইহার পর) বলবে হে আমার আল্লাহ! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে বাচান।
অপর এক বর্ণনানুযায়ী বললেন, তার উচিৎ যে, সে (সালাম পেশ করার পর) বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে দুরে রাখুন।
এ হাদিসকে ইমাম ইবনু মাজাহ, নাসাঈ এবং বুখারী আত্তারিখুল কবর এ বর্ণনা করেছেন। এবং ইমাম হাকেম বললেন, এ হাদিস ইমাম বুখারী ও মুসলিম এর শর্তাবলীর ভিত্তিতে সহীহ। ইমাম কেনানী বললেন, এ হাদিসের সনদ সহীহ এবং ইহার বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযােগ্য।
তথ্যসূত্রঃ
(১) ইবনে মাজাহ : আস্ সুনান, কিতাবুল মাসাজিদ ওয়াল জামাত, ১/২৫৪, হাদিস : ৭৭৩।
(২) বাযযার, আল-মুসনাদ, ১৫/১৬৮পৃ. হাদিসঃ ৮৫২৩,
(৩) ইবনে খুযায়মা, আস্-সহিহ, ১/২৩১পৃ. হাদিসঃ ৪৫২,
ও ৪/২১০পৃ. হাদিসঃ ২৭০৬
(৪) ইবনে হিব্বান, আস্-সহিহ, ৫/৩৯৫পৃ. হাদিসঃ ২০৪৭,
(৫) নাসায়ী : আস্ সুনানুল কুবরা, ৬/২৭, হাদিস : ৯৯১৮।
(৬) বুখারী : আত্ তারীখুল কুবরা, ১/১৫৯, হাদিস : ৪৭০।
(৭) হাকেম : আল মুসতাদরাক, ১/৩২৫, হাদিস : ৭৪৭।
(৮) কেনানি : মিসবাহুয যুযাজাহ, হাদিস : ২৯৩
❏ হাদিস ১৭:
عن محمد بن عبد الرحمن، أن عبد الله بن سلام كان إذا دخل المسجد سلم على النبي صلى الله عليه وسلم، وقال: «اللهم افتح لي أبواب رحمتك» ، وإذا خرج سلم على النبي صلى الله عليه وسلم وتعوذ من الشيطان .
رواه ابن أبي شيبة .
হযরত মুহাম্মদ ইবনু আবদির রহমান (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (رضي الله عنه) যখনই মসজিদে প্রবেশ করতেন, তখন হুযূর নবী আকরাম (ﷺ) এর উপর সালাম প্রেরণ করতেন তারপর বলতেন “আল্লাহুম্মফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা” (হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার দয়ার দরজাসমূহ খুলে দিন) এবং যখন মসজিদ থেকে বের হয়ে আসতেন তখনও হুযূর নবী আকরাম (ﷺ)’র উপর সালাম প্রেরণ করতেন অতঃপর বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চেয়ে নিতেন (তাঁর এই আমল হুযূর (ﷺ)’র ওফাত মেশকের পর সর্বদা প্রচলিত ছিল।)
এ হাদিসকে ইমাম ইবনু আবি শায়বাহ বর্ণনা করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
[ইবনে আবূ শায়বা : আল্ মুসাননাফ, ১/২৯৮, হাদিস : ৩৪১৬]
❏ হাদিস ১৮:
وفي رواية : عن عقلمة أنه كان إذا دخل المسجد قال: «السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته، صلى الله وملائكته على محمد»
رواه ابن أبي شيبة.
এক বর্ণনায় হযরত আলকামা (رضي الله عنه) বয়ান করেন যে, যখন তিনি মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন “আচ্ছালামু আলাইকা আইয়ুহান নবীত্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু সাল্লাল্লাহু ওয়ামালাইকাতুহু আ'লা মুহাম্মাদিন (ﷺ)। (হে সম্মানিত নবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর দয়া এবং বরকতসমূহ হােক (সর্বদা) আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে দয়া এবং তার ফেরেশতাদের পক্ষ থেকেও মুহাম্মদ মােস্তফা (ﷺ) এর উপর দুরূদ ও বরকতসমূহ হােক।)
এ হাদিসকে ইমাম ইবনু আবি শায়বাহ বর্ণনা করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
[ইবনে আবূ শায়বা : আল্ মুসাননাফ, ১/২৯৮, হাদিস : ৩৪১৭]
❏ হাদিস ১৯:
وفي رواية : عن إبراهيم كان إذا دخل المسجد قال: « بسم الله والصلاة على رسول الله» ، وإذا دخل بيتا ليس فيه أحد قال: «السلام عليكم» رواه ابن أبي شيبة .
এক বর্ণনায় হযরত ইবরাহীম (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, যখন তিনি মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন, “বিসমিল্লাহি ওয়াসসালাতু আ'লা রাসুলিল্লাহি” (আল্লাহ্ তা'আলার নামে এবং হুযূর নবী আকরাম (ﷺ)’র উপর দুরূদ প্রেরণের সাথে আমি এ মসজিদে প্রবেশ করছি।) এবং যখন এমন কোন ঘরে প্রবেশ করতেন, যেখানে কোন কেউ নাই, তখন বলতেন “আসসালামু আলায়কুম” (আপনার উপর শান্তি হােক)।
এ হাদিসকে ইমাম ইবনু আবি শায়বাহ্ বর্ণনা করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
[ইবনে আবূ শায়বা : আল্ মুসাননাফ, ১/২৯৮, হাদিস : ৩৪১৮]
❏ হাদিস ২০:
হযরত সাহল (رضي الله عنه) বলেন, আমি নবীজী (ﷺ) কে সালাম করার জন্য আসলাম। তখন হাসান ইবনে আলী (رضي الله عنه) নবীজী (ﷺ) এর পাশের ঘরে রাত্রের খাবার গ্রহণ করছিলেন। তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি সাড়া দিলাম। তিনি বললেন, আসুন যাতে আমার সাথে নৈশ্যভোজে অংশ নিতে পারেন। আমি বললাম, জি না আমার প্রয়োজন নেই। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তাহলে কেন দাঁড়িয়ে আছেন? আমি বললাম- وقفت اسلم على النيى صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ, আমি নবী করীম (ﷺ) কে সালাম করার জন্য দাড়িয়ে অপেক্ষা করছি। তিনি বললেন- اذا دخلت المسجد فسلم عليه যখন তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন তাকে সালাম করবে।