শবে বরাত ও ঈদের রাতে জাগ্রত থাকা

وأخرجوا من طريق مروان بن سالم، عَنِ ابْنِ كُرْدُوسٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحْيَا لَيْلَتَيِ الْعِيدِ وَلَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتُ الْقُلُوبُ
-“ইবনে কারদুস ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈদের রাত ও শাবান মাসের মধ্য রাত অর্থাৎ শবে বরাতের রাতে জাগ্র থাকবে (নফল ইবাদত করবে) ক্বাল্ব মৃত্যুর দিনে তার ক্বাল্ব মরবেনা।”  ১১,  ইমাম আসকালানী: আল ইছাবা ফি তামিজিছ ছাহাবা, রাবী নং ৭৪০৮; ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৬৫৪৬ এর ব্যাখ্যায়;

এ বিষয়ে ইমাম আবু নুয়াইম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৪৩০ হিজরী এভাবে সনদসহ কারে উল্লেখ করেছেন,
حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرِو بْنُ حَمْدَانَ، قَالَ: ثنا الْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ، ثنا أَحْمَدُ بْنُ سَيَّارٍ، ثنا أَبُو عَبَّادٍ الْمِصْرِيُّ ابْنُ أُخْتِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، ثنا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ الْقِتْبَانِيُّ، عَنْ عِيسَى بْنِ إِبْرَاهِيمَ الْقُرَشِيِّ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ الْجَزَرِيِّ، عَنْ مَرْوَانَ بْنِ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ كُرْدُوسٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحْيَا لَيْلَتَيِ الْعِيدِ وَلَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتُ الْقُلُوبُ
-“ইবনে কারদুস ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈদের রাত ও শাবান মাসের মধ্য রাত অর্থাৎ শবে বরাতের রাতে জাগ্রত থাকবে (নফল ইবাদত করবে) ক্বাল্ব মৃত্যুর দিনে তার ক্বাল্ব মরবেনা।”  ২২,  ইমাম আবু নুয়াইম: মারেফাতুস ছাহাবা, হাদিস নং ৫৯০৮;

এই হাদিসের মূল রাবী হযরত কারদুস (رضي الله عنه) একজন বিশিষ্ট সাহাবী। যেমন হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
ذكره الحسن بن سفيان، وعبدان المروزي، وابن شاهين، وعلي بن سعيد وغيرهم في الصحابة،
-“হুছাইন ইবনে সুফিয়ান, আব্দান মারুজী, ইবনে শাহিন, আলী ইবনে সা’দ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সহ অন্যান্যরা ‘হযরত কারদুস’কে সাহাবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।”  ৩৩,  ইমাম আসকালানী: আল ইছাবা ফি তামিযিছ ছাহাবা, রাবী নং ৭৪০৮;


এই হাদিসের সনদে ‘ঈসা ইবনে ইব্রাহিম কুরাইশী’ নামক একজন রাবী রয়েছে। যার সম্পর্কে আইম্মায়ে কেরামের অভিমত লক্ষ্য করুন,
قال البخاري والنسائي: منكر الحديث. وقال يحيى: ليس بشئ. وقال أبو حاتم: متروك الحديث. وقال النسائي أيضا: متروك.
-“ইমাম বুখারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: সে মুনকার। ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে কিছুই নয়। ইমাম আবু হাতিম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: সে পরিত্যায্য। ইমাম নাসাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) অনুরূপ পরিত্যায্য বলেছেন।”  ৪৪,  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৬৫৪৬ এর ব্যাখ্যায়; ইমাম আসকালানী: লিছানুল মিযান, রাবী নং ৫৯১৫;


ইমামগণের অভিমতের আলোকে হাদিসটির সর্বনিম্ন স্তর দ্বায়িফ হবে। আফছুছ হল, কথিত ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব তার ‘হাদিসের নামে জালিয়াতী’ গ্রন্থের ৫৪৫ পৃষ্ঠায় “মিযানুল এ’তেদাল” কিতাবের রেফারেন্স বলেছেন, ইমাম বুখারী, নাসাঈ, ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ও আবু হাতিম রাজী ও অন্যান্য মুহাদ্দিছগণ তাকে মিথ্যাবাদী রাবী বলেছেন। (নাউজুবিল্লাহ) অথচ তাদের কেউ এই রাবীকে মিথ্যাবাদী বলেননি। বলুন এরূপ মিথ্যাচারিতা করা কোন আলিমের জন্য কি শুভা পায়? এটা কি ইমামদের নামে জালিয়াতী নয়? 
এর সনদে مَرْوَانُ بنُ سَالِمٍ (মারওয়ান ইবনে ছালিম) নামক রাবী রয়েছে যার সম্পর্কে ইমাম বুখারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম মুসলীম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, مُنكر الحَدِيث -“সে মুনকারুল হাদিস।” ৫৫,  ইমাম বুখারী: দোয়াফাই ছাগীর, রাবী নং ৩৫৩; ইমাম বুখারী: তারিখুল কবীর, রাবী নং ১৬০২; আদ দোয়াফা, রাবী নং ২৩৮; ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলামী, রাবী নং ৩৪২; ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৫৮৭৩;

 
ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: قَالَ أَحْمد وَغَيره وَلَيْسَ بِثِقَة -“ইমাম আহমদ ও অন্যান্যরা তাকে ছিক্বাহ নয় বলেছেন।”  ৬৬,  ইমাম যাহাবী: আল মুগনী ফিদ দোয়াফা, রাবী নং ৬১৬৪; যাহাবী: তারিখুল ইসলামী, রাবী নং ৩৪২;

ইবনে আদী তাকে বলেছেন: ليس بثقة. -“সে বিশ্বস্ত নয়।”  ৭৭,  ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল ফিদ দোয়াফা, রাবী নং ১৮৭০; ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলামী, রাবী নং ৩৪২;

ইমাম মিযযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন:
قال عَبد اللَّهِ بْن أَحْمَد بْن حنبل عَن أبيه، وأبو جَعْفَر العقيلي، والنَّسَائي: ليس بثقة 
-“আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে হাম্বল তার পিতা ও আবু জাফর উকাইলী এবং নাসাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণনা করেন, সে বিশ্বস্ত নয়।”  ৮৮,  ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৫৮৭৩;

ইমাম নাসাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও দারে কুতনী বলেছেন: مَتْرُوك الحَدِيث -“সে মাতরুকুল হাদিস।”  ৯৯,  ইমাম নাসাঈ: দোয়াফা ওয়াল মাতরুকুন, রাবী নং ৫৫৮; ইমাম দারে কুতনী: দোয়াফা ওয়া মাতরুকিন, রাবী নং ৩২৮৩;

উল্লেখিত অভিমত গুলোর আলোকে বলা যায়, এই রাবীর রেওয়ায়েতের সর্বনিম্ন স্তর হবে ‘দ্বায়িফ’। আফছুছ! কথিত ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব তার ‘হাদিসের নামে জালিয়াতী’ গ্রন্থের ৫৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন ‘মারওয়ান ইবনে ছালিম’ নাকি মিথ্যাবাদী রাবী, (নাউজুবিল্লাহ) অথচ ইমাম বুখারী, মুসলীম নাসাঈ, আহমদ, দারে কুতনী, ইবনে আদী, আবু নুয়াইম ইস্পাহানী, যাহাবী, মিযযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখ কেউ তাকে মিথ্যাবাদী বলেননি। প্রিয় পাঠক! আপনারাই বলুন এরূপ মিথ্যা ধোকাবাজী করা কি ইমামদের নামে জালিয়াতী নয়? সার্বিক বিবেচনা করে ইমাম শামছুদ্দিন যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিসের সনদ সম্পর্কে বলেন:- وهذا حديث منكر -“এই হাদিস মুনকার।”   ১০১০,  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৬৫৪৬ এর ব্যাখ্যায়;



মুনকার হাদিস বাতিল নয় বরং ফাজায়েলের ক্ষেত্রে আমলযোগ্য, যদি ছহীহ্ হাদিসের মুখালেফ বা বিপরীত না হয়। তবে ঈদের রাতে জাগ্রত থাকার বিষয়ে অন্য ছহীহ্ রেওয়ায়েত বিদ্যমান। যেমন হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
حَدِيثٌ رُوِيَ أَنَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَحْيَا لَيْلَتَيْ الْعِيدِ لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتُ الْقُلُوبُ ابْنُ مَاجَهْ مِنْ حَدِيثِ ثَوْرٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَذَكَرَهُ الدَّارَقُطْنِيُّ فِي الْعِلَلِ مِنْ حَدِيثِ ثَوْرٍ عَنْ مَكْحُولٍ عَنْهُ قَالَ وَالصَّحِيحُ أَنَّهُ مَوْقُوفٌ عَلَى مَكْحُولٍ،
-“হাদিস বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাত জেগে ইবাদত করবে ক্বাল্ব মৃত্যুর দিন তার ক্বাল্ব মরবেনা। ইবনে মাজাহ ছাউর, খালেদ ইবনে মাদান ও আবু উমামা (رضي الله عنه) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। ইমাম দারে কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার ‘ইলাল’ গ্রন্থে ছাউর হযরত মাকহুল ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: নিশ্চয় ইহা মাকহুল হতে মাওকুফ ছহীহ্।” ১১১১,  ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবির, হাদিস নং ৬৭৫;

সনদসহ হাদিসখানা ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে হুছাইন জুরযানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৪৯৯ হিজরী ও আল্লামা ইসমাঈল ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ফাদ্বল ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৫৩৫ হিজরী এভাবে উল্লেখ করেছেন,
أَخْبَرَنَا أَبُو طَاهِرٍ عَبْدُ الْكَرِيمِ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ بْنِ مُحَمَّدٍ شَيْخُ الصُّوفِيَّةِ , بِأَصْفَهَانَ، بِقِرَاءَتِي عَلَيْهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ حَيَّانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ أَحْمَدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو حُمَيْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدٍ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ: مَنْ قَامَ لَيْلَتَيِ الْعِيدِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتَ الْقُلُوبُ 
-“হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) বলেন: যে ব্যক্তি ঈমান ও একাগ্রতার সাথে দুই ঈদের রাতে জাগ্রত থাকবে ক্বাল্ব মৃত্যুর দিন তার মৃত্যু হবেনা।”  ১২১২,  তারতিবুল আমালী, হাদিস নং ১৬১৭; ইমাম ইবনে শাহিন: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব লি’কাওয়াইমিস সুন্নাহ, হাদিস নং ৩৭৩; ইমাম নববী: খুলাছাতুল আহকাম, হাদিস নং ২৯৯৬; ইমাম ছিয়তী: জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ১২৫১৬;

লা-মাজহাবী নাছিরুদ্দিন আলবানী এই হাদিসটিকে দ্বায়িফ বলেছেন, দেখুন ‘দ্বায়িফ জামেউস ছাগীর ওয়া যিয়াদা, হাদিস নং ৫৭৪২। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,
أَخْبَرَنَا أَبُو سَعِيدٍ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الْعَبَّاسِ قَالَ: أَخْبَرَنَا الرَّبِيعُ قَالَ: أَخْبَرَنَا الشَّافِعِيُّ قَالَ: أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ: قَالَ ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: مَنْ قَامَ لَيْلَتِي الْعِيدِ لِلَّهِ مُحْتَسِبًا لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ حِينَ تَمُوتُ الْقُلُوبُ
-“হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) বলেন: যে ব্যক্তি ঈমান ও একাগ্রতার সাথে দুই ঈদের রাতে জাগ্রত থাকবে ক্বাল্ব মৃত্যুর দিন তার মৃত্যু হবে না।”  ১৩১৩,  ইমাম বায়হাক্বী: মারেফাতুস সুনান ওয়াল আছার, হাদিস নং ৭০২৭; ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ৬২৯৩;

ইমাম নববী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৬৭৬ হিজরী এ বিষয়ে সকল হাদিসকে ضَعِيف দ্বায়িফ বলেছেন কিন্তু বাতিল বলেননি। দেখুন খুলাছাতুল আহকাম হাদিস নং ২৯৯৬-৯৮। হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন সিরাজুদ্দিন আবুল হাফ্ছ শাফেয়ী মিছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮০৪ হিজরী উল্লেখ করেছেন,
وَرَوَى الْخَطِيبُ فِي غُنْيَةِ الملتمس بإسناده إلَى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ أَنَّهُ كَتَبَ إلَى عَدِيِّ بْنِ أَرْطَاةَ عَلَيْك بِأَرْبَعِ لَيَالٍ فِي السَّنَةِ فَإِنَّ اللَّهَ يُفْرِغُ فِيهِنَّ الرَّحْمَةَ أَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ وَلَيْلَةُ الْفِطْرِ وَلَيْلَةُ النَّحْرِ وَقَالَ الشَّافِعِيُّ بَلَغَنَا أَنَّ الدُّعَاءَ يُسْتَجَابُ فِي خَمْسِ لَيَالٍ فِي لَيْلَةِ الْجُمُعَةِ وَلَيْلَةِ الْأَضْحَى وَلَيْلَةِ الْفِطْرِ وَأَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ ذَكَرَهُ صَاحِبُ الرَّوْضَةِ مِنْ زِيَادَاتِهِ وَوَصَلَهُ ابْنُ نَاصِرٍ فِي كِتَابِ فَضَائِلِ شَعْبَانَ لَهُ وَفِيهِ حَدِيثٌ ذَكَرَهُ صَاحِبُ مُسْنَدِ الْفِرْدَوْسِ مِنْ طَرِيقِ إبْرَاهِيمَ بْنِ أَبِي يَحْيَى عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ هُوَ ابْنُ سَهْلٍ مَرْفُوعًا نَحْوُهُ وَقَدْ رَوَى ابْنُ الْأَعْرَابِيُّ فِي مُعْجَمِهِ وَعَلِيُّ بْنُ سَعِيدٍ الْعَسْكَرِيُّ فِي الصَّحَابَةِ مِنْ حَدِيثِ كُرْدُوسٍ نَحْوَ  
-“খতিব তার উনাইয়াতুল মুলতামিছ-এ বর্ণনা তার সনদে উমর ইবনে আব্দুল আজিজ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় তিনি আদী ইবনে আরত্বা ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কাছে চিঠি লিখেছেন যে, বছরে চারটি রাত রয়েছে যে রাতে স্বয়ং আল্লাহর রহমত দান করা হয় তা হল: রজব মাসের প্রথম রাত, শবে বরাতের রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, কুরবানীর রাত। ইমাম শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: আমার কাছে হাদিস পৌছেছে যে, পাঁচটি রাতে দোয়া নিশ্চিৎ কবুল হয়: জুমআর রাত, কুরবানীর রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, রজবের প্রথম রাত ও শবে বরাতের রাত। ‘রওদ্বাতু মিন যিয়াদাতি গ্রন্থাকার ও অছালা ইবনু নাছির তার কিতাবু ফাদ্বাইলু শাবান গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ছাহেবে ফেরদৌছ আরেকটি সূত্রে ইবনে ছাহেল এর পুত্র আবু উমামা (رضي الله عنه) থেকে মারফূরূপে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনে আরাবী তার ‘মুজাম’ গ্রন্থে ও আলী ইবনে সা’দ আসকারী হযরত কারদুস (رضي الله عنه) আলোচনা কালে ইহা উল্লেখ করেছেন।”  ১৪১৪,  ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবির, হাদিস নং ৬৭৫; আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৫ম খন্ড, ৪০ পৃ:;


আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন সিরাজুদ্দিন আবুল হাফ্ছ শাফেয়ী মিছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮০৪ হিজরী উল্লেখ করেছেন,
وَنقل الْبَيْهَقِيّ فِي ্রالْمعرفَةগ্ধ عَن الشَّافِعِي أَنه قَالَ: بلغنَا أَن الدُّعَاء يُسْتَجَاب فِي خمس لَيَال: فِي لَيْلَة الْجُمُعَة، وَلَيْلَة الْأَضْحَى، وَلَيْلَة الْفطر، وَأول لَيْلَة من رَجَب، وَلَيْلَة النّصْف من شعْبَان.
قَالَ الشَّافِعِي: وَأَنا إِبْرَاهِيم بن مُحَمَّد قَالَ: رَأَيْت مشيخة من خِيَار أهل الْمَدِينَة يظهرون عَلَى مَسْجِد رَسُول الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم لَيْلَة الْعِيدَيْنِ فَيدعونَ ويذكرون الله تَعَالَى حَتَّى تذْهب سَاعَة من اللَّيْل. قَالَ الشَّافِعِي: وبلغنا أَن ابْن عمر كَانَ يحيي لَيْلَة النَّحْر
-“ইমাম বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার মারেফা গ্রন্থে নকল করেছেন যে, ইমাম শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: আমার কাছে হাদিস পৌছেছে যে, পাঁচটি রাতে দোয়া নিশ্চিৎ কবুল হয়: জুমআর রাত, কুরবানীর রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, রজবের প্রথম রাত ও শবে বরাতের রাত। ইমাম শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আরো বলেন: ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মদ বলেছেন: মদিনা শরীফের বড় বড় মাশায়েখগণকে দেখেছি তারা দুই ঈদের রাতে মসজিদে নববীতে অবস্থান করতেন ও দোয়া করতেন ও জিকির করতেন যতক্ষন না রাতের একটা অংশ না যেত। ইমাম শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আরো বলেন: আমার কাছে রেওয়ায়েত পৌছেছে যে, নিশ্চয় আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) কুরবানীর রাতে জাগ্রত থাকতেন।”  ১৫১৫,  আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৫ম খন্ড, ৪০ পৃ:; ইমাম বায়হাক্বী: মারেফাতুস সুনান ওয়াল আছার, হাদিস নং ৭০২৮-৩০; ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ৬২৯৩;


উপরোক্ত বিষয়টি ৩ জন সাহাবী ও একাধিক তাবেঈদের সমর্থন দ্বারা হাছান লি’গাইরিহী এর স্তরে পৌছবে। তাই বলা যায় এই হাদিস হাছান।
--------------------------------
Top