পাঁচ রাতে ইবাদতকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে
আল্লামা ইসমাঈল ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ফাদ্বল ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৫৩৫ হিজরী তদীয় কিতাবে হাদিস উল্লেখ করেন,
أخبرنا أبو الفتح الصحاف، أنا أبو سعيد النقاش الحافظ، أنا أبو ذر: الحسين بن الحسن بن علي الكندي بالكوفة، ثنا الحسين بن أحمد المالكي، ثنا سويد بن سعيد، ثنا عبد الرحمن بن زيد، عن أبيه، عن وهب بن منبه، عن معاذ بن جبل رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من أحيا الليالي الخمس وجبت له الجنة، ليلة التروية، وليلة عرفة، وليلة النحر، وليلة النصف من شعبان
-“হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তি বছরে পাঁচটি রাতে জাগ্রত থাকবে তার জন্য জান্নাত আবশ্যক হবে। তারাবীহ এর রাত, আরাফার রাত, কুরবানীর রাত ও শবে বরাতের রাত।”  ১৬১৬,  ইমাম ইবনে শাহিন: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব লি’কাওয়াইমিস সুন্নাহ, হাদিস নং ৩৭৪; মুনজেরী: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, হাদিস নং ১৬৫৬;

এই হাদিসের সনদে عبد الرحمن بن زيد بن أسلم العمري (আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম আমেরী) নামক রাবী রয়েছে তার ব্যাপারে ইমামগণের অভিমত লক্ষ্য করুন:-
وروى عثمان الدارمي، عن يحيى: ضعيف. وقال البخاري: عبد الرحمن ضعفه علي جدا. وقال النسائي: ضعيف. 
-“উছমান দারেমী হযরত ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণনা করেন, সে দুর্বল রাবী। ইমাম বুখারী বলেছেন: আব্দুর রহমান দ্বায়িফ । ইমাম নাসাঈ বলেছেন: সে দুর্বল।”  ১৭১৭,  ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৪৮৬৮;

ইমাম ইবনে আদী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাকে ضَعِيف দ্বায়িফ বলে উল্লেখ করেছেন, দেখুন ‘আল কামিল ফিদ দোয়াফা, রাবী নং ১১০৫। ইমাম ইবনে আদী আরো উল্লেখ করেন,
سألت أحمد بن حنبل عن عبد الرحمن بن زيد بن أسلم فقال: ضعيف. 
-“ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন: সে দুর্বল রাবী।”  ১৮১৮,  ইমাম আবু হাতিম: জারাহ ওয়া তাদিল, রাবী নং ১১০৭;

ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: ضعفه أَحْمد وَالدَّارَقُطْنِيّ -“ইমাম আহমদ ও দারে কুতনী তাকে দ্বায়িফ বলেছেন।”  ১৯১৯,  ইমাম যাহাবী: আল মুগনী ফিদ দোয়াফা, রাবী নং ৩৫৬৮;

হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,
وقال أبو زرعة ضعيف وقال أبو حاتم ليس بقوي في الحديث كان في نفسه صالحا وفي الحديث واهيا قال الساجي وهو منكر الحديث 
-“ইমাম আবু যুরাআ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন সে দুর্বল, ইমাম আবু হাতেম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: তার হাদিস শক্তিশালী নয়, সে নিজে সৎ লোক কিন্তু তার রেওয়ায়েত দুর্বল। ইমাম ছাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: সে মুনকার।”  ২০২০,  ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৩৬১;

অতএব, উল্লেখিত অভিমতের আলোকে হাদিসটি সর্বনিম্ন অবস্থা হবে ইহা দ্বায়িফ বা দুর্বল, যা আমলের বেলায় যথেষ্ঠ। লক্ষ্য করুন, ইমাম বুখারী, ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন, আহমদ, আবু যুরাআ, ইবনে আদী, নাসাঈ, দারে কুতনী, ইমাম ছাজী, যাহাবী, আসকালানী রহিমাহুমুল্লাহ প্রমূখ ‘আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম’ কে দুর্বল রাবী বলেছেন, কিন্তু কেউ তাকে মিথ্যাবাদী বলেননি। আফছুছের বিষয় হল, কথিত ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার ‘হাদিসের নামে জালিয়াতী’ গ্রন্থের ৫৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন এই রাবী নাকি মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রসিদ্ধ (নাউজুবিল্লাহ)। প্রিয় পাঠক! বলুন এটা কি ইমামগণের নামে মিথ্যা জালিয়াতী নয়? হায় হায়! আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব তার বই-এ রাবীর নামটাও ভুল লিখেছেন।
------------------------------
Top