দাড়ি দৈর্ঘ-প্রস্থের দিকে কাটা

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْخُذُ مِنْ لِحْيَتِهِ مِنْ عَرْضِهَا وَطُولِهَا.
-“হযরত আমর ইবনে শুয়াইব তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) দাড়ি মোবারকের দৈর্ঘ ও প্রস্থের দিক থেকে কাটতেন।”  ২২,  তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ২৭৬২; ইমাম বাগভী: শরহে সুন্নাহ, ১২তম খন্ড, ১০৮ পৃ:; মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ৪৪৩৯; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ২২তম খন্ড, ৪৭ পৃ:; ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১০ খন্ড, ৩৫০ পৃ:; ইমাম ইবনে আব্দিল র্বার আল ইস্তেজকার, ৮ম খন্ড, ৪২৯ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ৯৩৪৭; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ১৮৩১৮; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ৯৯৯২;


এই হাদিসের রাবী ‘উমর ইবনে হারুন’ যার মূল নাম হল:
عُمَرُ بنُ هَارُوْنَ بنِ يَزِيْدَ بنِ جَابِرِ بنِ سَلَمَةَ الثَّقَفِيُّ (উমর ইবনে হারুন ইবনে ইয়াজিদ ইবনে জাবের ইবনে সালামা সাকাফী) যার সম্পর্কে ইমামগণের অভিমত লক্ষ্য করুন: ইমাম তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, 
وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ، يَقُولُ: عُمَرُ بْنُ هَارُونَ مُقَارِبُ الحَدِيثِ 
-“আমি মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীকে বলতে শুনেছি: উমর ইবনে হারুন হাদিস বর্ণনা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য।”  ৩৩,  তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ২৭৬২;

হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: 
وَقَدْ ضَعَّفَ عُمَرَ بْنَ هَارُونَ مُطْلَقًا جَمَاعَةٌ -“উমর ইবনে হারুনকে সাধারণ দৃষ্টিতে একদল মুহাদ্দিছ দ্বায়িফ বলেছেন।”৪৪,  ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১০ খন্ড, ৩৫০ পৃ:;

  আল্লামা হাফিজ ইবনে জাওযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, 
وَقَالَ أَبُو دَاوُد غير ثِقَة وَقَالَ عَليّ وَالدَّارَقُطْنِيّ ضَعِيف -“ইমাম আবু দাউদ বলেছেন: সে বিশ্বস্ত নয়। ইমাম দারে কুতনী তার ব্যাপারে বলেছেন: সে দ্বায়িফ ।”৫৫,  হাফিজ ইবনে জাওযী: আদ দোয়াফা ওয়া মাতরুকুন, রাবী নং ২৫১৪;


  ইমাম মুগলতাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
 وذكره أبو العرب، والبخاري، والعقيلي، وابن شاهين، والبلخي، والدولابي، ويعقوب بن سفيان، ويعقوب بن شيبة وأبو إسحاق الحربي، وأبو علي الطوسي في جملة الضعفاء وقال أحمد العجلي: ضعيف
-“ইমাম আবু আরব, ইমাম বুখারী, ইমাম উকাইলী, ইমাম ইবনে শাহিন, ইমাম বালখী, ইমাম দোলাভী, ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান, ইমাম ইয়াকুব ইবনে শাইবাহ আবু ইসহ্ক্বা হারাবী, ইমাম আবু আলী তুশী রহিমাহুমুল্লাহ সকলেই তাকে দ্বায়িফ দের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।”  ৬৬,  ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪০৪৮;


ইমাম মিযযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৪২ হিজরী তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,
وَقَال عَباس الدُّورِيُّ وأبو بكر بْن أَبي خيثمة ، عَن يحيى ابن مَعِين: ليس بشيءٍ. وَقَال أحمد بْن مُحَمَّد بْن القاسم بْن محرز عَن يحيى بْن مَعِين: ليس هُوَ ثقة. وَقَال الغلابي عن يحيى: ليس بثقة، ونصر بْن باب مثله. وَقَال مرة أخرى: ضعيف. وَقَال أَبُو داود عن يحيى: هُوَ غير ثقة. وَقَال زكريا بْن يحيى الساجي: فيه ضعف.
-“আব্বাস দাওরী ও আবু বকর ইবনে আবী হায়ছামা হযরত ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেন, সে কিছু নয়।
আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে কাশেম ইবনে মারুজ হযরত ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেছেন: সে বিশ্বস্ত নয়।
গালাবী হযরত ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেছেন: সে বিশ্বস্ত নয়। অন্যত্র আরো বলেছেন: সে দ্বায়িফ । ইমাম আবু দাউদ হযরত ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেছেন: সে বিশ্বস্ত নয়।
জাকারিয়া ইবনে ইয়াহইয়া ছাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: তার মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। ৭৭,  ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৩১৭;


 ইমাম শামছুদ্দিন যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,
وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ: تَكَلَّمَ فِيْهِ ابْنُ المُبَارَكِ، فَذَهَبَ حَدِيْثُهُ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بنُ أَبِي حَاتِمٍ: قُلْتُ لأَبِي: إِنَّ أَبَا سَعِيْدٍ الأَشَجَّ حَدَّثَنَا عَنْ عُمَرَ بنِ هَارُوْنَ، فَقَالَ: هُوَ ضَعِيْفُ الحَدِيْثِ، وَسُئِلَ عَنْهُ عَلِيُّ بنُ المَدِيْنِيِّ، فَضَعَّفَهُ جِدّاً. وَقَالَ أَبُو عِيْسَى فِي (جَامِعِهِ) : سَمِعْتُ مُحَمَّداً يَقُوْلُ: مُقَارَبُ الحَدِيْثِ،
-“ইমাম আবু হাতেম বলেছেন: ইমাম ইবনে মুবারক তার ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন এবং তার হাদিস গ্রহণ করেছেন। আব্দুর রহমান ইবনে আবু হাতেম বলেন, আমি আমার পিতাকে বললাম: ইমাম আবু সাঈদ আশাজ ‘উমর ইবনে হারুন’ থেকে হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি বললেন: সে দ্বায়িফ রাবী। ইমাম আলী ইবনে মাদানীকে তার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: সে অত্যান্ত দুর্বল। ইমাম আবু ঈসা তার জামে গ্রন্থে বলেন: আমি মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীকে বলতে শুনেছি: সে হাদিস বর্ণনায় মোটামুটি গ্রহণযোগ্য।”  ৮৮,  ইমাম যাহাবী: সিয়ারে আলামী নুবালা, রাবী নং ৭৫;

যেসকল ইমামগণ ‘উমর ইবনে হারুন’কে দ্বায়িফ বা দুর্বল রাবী বলেছেন, তাদের তালিকা নিচে দেওয়া হল:-
ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম আলী ইবনে মাদানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম বুখারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম আবু দাউদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম দারে কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম আবু হাতেম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম উকাইলী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম ইবনে মাঈন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম আবু আরব ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎),
ইমাম ইবনে শাহিন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), 
ইমাম বালখী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), 
ইমাম দোলাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), 
ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), 
ইমাম ইয়াকুব ইবনে শাইবাহ আবু ইসহ্ক্বা হারাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), 
ইমাম আবু আলী তুশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখ সকলেই ‘উমর ইবনে হারুন’কে দ্বায়িফ বা দুর্বল রাবী বলেছেন। তাই তার বর্ণিত রেওয়ায়েত দুর্বল হিসেবে সাব্যস্থ হবে কিন্তু মাওজু বা জাল হবে না। এ কারণেই এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা ইমাম মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, 
ت عَن ابْن عَمْرو بن الْعَاصِ وَقَالَ غَرِيب وَقَالَ غَيره ضَعِيف
 -“তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইহা ইবনে আমর ইবনে আস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরিমজি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইহাকে গরীব বলেছেন, অন্যান্য ইমামগণ বলেছেন ইহা দ্বায়িফ ।”  ৯৯,  আল্লামা মানাভী: আত তাইছির বি’শরহে জামেইছ ছাগীর, ২য় খন্ড, ২৬৮ পৃ:;

-------------------------------
Top