পাঁচটি রাতে দোয়া নিশ্চিৎ কবুল হয়

قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ: وَأَخْبَرَنِي مَنْ، سَمِعَ الْبَيْلَمَانِيَّ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: خَمْسُ لَيَالٍ لَا تُرَدُّ فِيهِنَّ الدُّعَاءَ: لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ، وَأَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ، وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَلَيْلَتَيِ الْعِيدَيْنِ 
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, পাঁচটি রাতে কোন দোয়া ফিরত আসেনা, তা হল: জুমআর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শবে বরাতের রাত ও দুই ঈদের দুই রাত।”  ২১২১,  মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং ৭৯২৭;

এর সনদে الْبَيْلَمَانِيَّ ‘বায়লামানী’ নামক একজন রাবী রয়েছে যার মূল নাম হল مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ابْنِ الْبَيْلَمَانِيِّ (মুহাম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে বায়লামানী) রয়েছে। হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী তাকে ضَعِيفٌ দ্বায়িফ বলে উল্লেখ করেছেন। দেখুন তাকরীবুত তাহজিব, রাবী নং ৬০৬৭। 
قَالَ الْبُخَارِيُّ، وَغَيْرُهُ: مُنْكَرُ الْحَدِيثِ. -“ইমাম বুখারী ও অন্যান্যরা বলেছেন: সে মুনকারুল হাদিস।”  ২২২২,  ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলামী, রাবী নং ৩৬৩;


ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন, ইমাম বুখারী, নাসাঈ, আবু হাতিম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখ তাকে ضَعِيفٌ দুর্বল রাবী হিসেবে চিহ্ণিত করেছেন, কিন্তু কেউ তাকে জাল রেওয়ায়েতকারী বলেননি। দেখুন হাফিজ আসকালানীর ‘তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৪৮৯। তাই এই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর হবে দ্বায়িফ ।
এর আরেকটি মারফূ সুত্র রয়েছে, ইমাম ইবনে আসাকির ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার তারিখের কিতাবে সনদসহ উল্লেখ করেছেন,
أخبرنا أبو الفتح نصر الله بن محمد حدثنا نصر بن إبراهيم أنبأنا أبو سعيد بندار بن عمر الروياني أنبأنا أبو محمد عبد الله بن جعفر الخبازي أنبأ أبو علي الحسن بن علي بن محمد بن بشار الزاهد بهمذان قراءة عليه من أصل سماعه أنبأنا علي بن محمد القزويني حدثنا إبراهيم بن محمد بن برة الصنعاني حدثنا عبد القدوس حدثنا إبراهيم بن أبي يحيى عن أبي قعنب عَن أبي أُمَامَة الباهلي قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم خَمْسُ لَيالٍ لَا تُرَدُّ فِيهِنَّ الدَّعْوَةُ أوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبانَ وَلَيْلَةُ الجُمُعَةِ وَلَيْلَةُ الفِطْرِ وَلَيْلَةُ النَّحْرِ
-“হযরত আবু উমামা বাহেলী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: পাঁচটি রাতে কোন দোয়া ফিরত আসেনা, তা হল: জুমআর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শবে বরাতের রাত, ঈদুল ফিতরের রাত ও কুরবানীর রাত।”  ২৩২৩,  তারিখে দামেস্ক, ১০ম খন্ড, ৪০৮ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ৬০৭৫; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ১১৯৭৯; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ৬৫৯৬; আল্লামা ছানআনী: আত তানভীর শরহে জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ৩৯৩৬;

এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে ছালেহ ছানআমী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১৮২ হিজরী উল্লেখ করেন,
ورواه عنه الديلمي أيضًا والبيهقي من حديث ابن عمر قال ابن حجر: وطرقه كلها معلولة.
-“আবু উমাম (رضي الله عنه) হতে ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন এবং বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকেও বর্ণনা করেছেন। হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: এর প্রত্যেকটি সনদেই ত্রæটি রয়েছে অর্থাৎ এর সনদগুলো দ্বায়িফ ।”  ২৪২৪,  আত তানভীর শরহে জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ৩৯৩৬;

এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম আব্দুর রউফ মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: 
عَن أبي أُمَامَة باسناد ضَعِيف -“আবু উমামা (رضي الله عنه) হতে দ্বায়িফ সনদে।”  ২৫২৫,  আল্লামা মানাভী: আত তাইছির বি’শরহে জামেইছ ছাগীর, ১ম খন্ড, ৫২০ পৃ:;

নাছিরুদ্দিন আলবানী প্রায়ই অনুমানের উপর নির্ভর করে কথা বলত, তার প্রমাণ সে ‘ছিলছিলায়ে দ্বায়িফা’ গ্রন্থে ১৪৫২ নং হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন ইমাম মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিস সম্পর্কে কিছুই বলেননি। অথচ আমরা দেখেছি ইমাম মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় ‘তাইছির’ গ্রন্থে এর সনদ নিয়ে কথা বলেছেন যা আমি সামান্য পূর্বে উল্লেখ করেছি। ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর সনদ সম্পর্কে তার জামেউস ছাগীর কিতাবে ضَعِيف দ্বায়িফ বলেছেন। অতএব, এই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর হবে দ্বায়িফ বা দুর্বল, কিন্তু জাল বা মওজু নয়।
--------------------------------
Top