“প্রজ্ঞাবানের অভিসন্ধিতে নিঃসন্দেহে শরয়ী বিধিবিধান হাবীবুল্লাহ (ﷺ)’র হাতে” 

منية اللبيب ان التشريع بيد الحبيب


১৩১১ হিজরী। 


কিতাবঃ শরীয়তের বিধি-বিধান নবীর হাতে 

মূলঃ আ'লা হযরত মুজাদ্দিদ ইমাম আহমদ রেযা (রহঃ) 

অনুবাদঃ মুহাম্মদ হােসাইন রেযা কাদেরী। 

Text Ready : Masum Billah Sunny


অনুবাদঃ মুহাম্মদ হােসাইন রেযা কাদেরী।

আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম। ফোনঃ ০১৮২৫৮৫৭৬৪২

প্রকাশনায়ঃ 

MSH Q - R Group 


আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম। 


স্বত্ব : 


প্রকাশক কর্তৃক সংরক্ষিত 


হাদিয়া - ৩৫/ 


কৃতজ্ঞতা স্বীকার : অধ্যাপক মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান মাওলানা মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান ফারুক 


প্রাপ্তিস্থান : মুহাম্মদী কুতুবখানা 


মােবাইলঃ ০১৮১৯৬২১৫১৪ 


উৎসর্গ 


 বেতাগী আস্তানা শরীফের পীর সাহেব সাইয়িদুল আজম, গাউছে জামান, কুতুবুল আক্তাব, হযরত হাফেজ হাকিম শাহ মুহাম্মদ বজলুর রহমান মুহাজেরে  মক্কী রাহমাতুল্লাহি তাআলা আলাইহি, এর চরণকমলে। 



শরীয়তের বিধিবিধান নবীর হাতে 


আল্লাহ পাক সৃষ্টির আদি হতে অন্ত পর্যন্ত যাবতীয় বিধিবিধান পৃথিবীতে বাস্তবায়ন করেছেন নবী-রসূল ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে। 


আল-কুরআন ও তফসীরের আলোকেঃ


◼ মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন ,

 يٰا أَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُم

তরজমায়ে কানযুল ঈমান : হে ঈমানদারগণ, নির্দেশ মান্য করাে আল্লাহর এবং নির্দেশ মান্য করাে রসূলের এবং তাদেরই, যারা তােমাদের মধ্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। (সূরা নিসা, আয়াত - ৫৯)


উক্ত আয়াতে কারীমার আলােকে প্রতীয়মান হয় যে, মুমিন বান্দা মাত্রই আল্লাহ ও তাঁর রসূল (ﷺ) ও উলিল আমরের হুকুম তথা বিধানমালা মান্য করতে বাধ্য। কেননা আল্লাহ পাক সেটা বান্দার উপর ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় করেছেন। প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টিকর্তার এ বসুন্ধরায় প্রভাকর যতদিন প্রখর আলাে ছড়াবে, মৃগাস্ক জ্যোৎস্নানাে কিত করবে, গাগনাম্বু অবারিত বর্ষিত হবে, আর মহাপ্রলয় পরবর্তী শেষ বিচারের দিন মনুষ্য ও জিন জাতির হিসাব নিকাশ সমাপ্তিতে স্বর্গ ও নরকবাসী চিহ্নিত করা হবে, তাও হাবীবুল্লাহ (ﷺ)'র বিধিবিধানানুযায়ী করা হবে। আল্লাহ পাক স্বয়ং সে অধিকার দান করেছেন, গ্রহীতা স্বয়ং গ্রহণ পূর্বক বাস্তবায়ন করেছেন, মহামান্য মানীষীগণ যা স্বীকার ও শিরােধার্য করে নিয়েছেন, বিদগ্ধ লেখকবৃন্দ যা স্বীয় কিতাবের পরতে পরতে লিপিবদ্ধ করেছেন তাকে কুফরি বা শিরক প্রমাণের অপচেষ্টা করা - এ কেমন ধার্মিকতা ! অথচ এ সত্য সৃষ্টির সূচনালগ্ন হতেই প্রতিষ্ঠিত, তাইতাে আল্লাহর প্রেরিত নবী - রসূলগণ আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম এ বিধিবিধানের উপর ঈর্ষা করেছিল, মহান রবের দরবারে তাবেদারী করার আকুতি জানিয়েছিল আর আল্লাহ পাক তা কবুল করেছিল। 


অতএব সুপ্রতিষ্ঠিত একটি বিষয়কে নব্য আঙ্গিকে তক-বির্তকের মাধ্যম বানানাে সমপূর্ণ অজ্ঞতার পরিচায়ক, বৈ আর কিছুই নয়। যেখানে আল্লাহর নবীকে (ﷺ) নিঃসন্দেহে তিনি শরয়ী বিধানমালার ইখতিয়ার দান করেছেন, সেখানে উম্মত কতৃক হস্তক্ষেপ পূর্বক আপনা নবীর (ﷺ)’র শ্রেষ্ঠত্ব ও মান মর্যাদা হ্রাস করার অপচেষ্টা করাটা কিরূপ ঔদ্ধত্যতা, তা ব্যক্ত করার ভাষা খুজেঁ পাই না। 


সুবিদিত এ বিষয়টিকে যুগে যুগে মানুষের নিকট উপস্থাপন করেছেন ফুকাহায়ে ইজাম, মুহাদ্দিস, মুফাসিসর, মুয়াররীহিন ও উলামায়ে আহলে হক। অগ্রবর্তীদের সে সত্য দাবীর স্বপক্ষে সুদৃঢ় দলীল-প্রমাণ পেশ করে সংক্ষিপ্ত তবে পূর্ণাঙ্গ পুস্তক প্রণয়ন করেছেন হিজরী চর্তুদশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, কলম যুদ্ধের বিজেতা সৈনিক, শায়খুল মুহাদ্দিসীন, সাইয়িদুল মুহাকীনি, সাইয়িদী ওয়া সানাদী, আ'লা হযরত ইমাম আব্দুল মুস্তফা আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি তাআলা আলাইহি, পুস্তকের নাম “মুনিয়াতুল - লবীব আন্নাত - তাশরিয়ী বিইয়াদিল হাবীব” । এ পুস্তকে বিশুদ্ধ হাদিসসমূহের নিরিখে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে শরীয়তের বিধিবিধান আল্লাহর প্রিয় হাবীবের (ﷺ)র হতে ন্যস্ত। যেখানে গ্রন্থকার বপ্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, আল্লাহর নবী ইবরাহীম খলীলুল্লাহ (عليه السلام) যেমনি মক্কা শরীফিকে হারাম ও বরকতের জন্য দোয়া করেছেন, তেমনি আল্লাহর নবী হাবীবুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম মদীনা শরীফকে হারাম বানিয়েছেন ও তার বরকতের জন্য দোয়া করেছেন। 


এ বিষয়ের সমপৃক্ততায় কুরআন-সুন্নাহর কতিপয় ইশারা প্রমাণাসিদ্ধ: 


◼ তাফসীরে জালালাইনে পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ৫৯ নম্বার আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্ণিত রয়েছেঃ


ونزل لمَّا اختصم يهودى ومنا فق فد عا المنا فق الى كعب بن الا شر ف ليحكم بينهما ودعا اليهو دى الى النّبىّ صلى الله تعالى عليه وسلم فا تياه فقضى لليهودى فلم يرضى المنا فق واتيا عمر رضى الله عنه فذ كرله اليهودى ذلك فقال للمنا فق اكذ لك قال نعم فقتله

অর্থাৎ আয়াতটি তখন অবতীর্ণ হয়, যখন জৈনিক ইহুদি ও মুনাফিকের মাঝে কোনাে বিষয়কে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়ে যায়, ফলে মুনাফিক ব্যক্তিটি ইচ্ছে করল বিষয়টি কা'ব ইবনে আশরাকের কাছে উস্থাপন করতে, যাতে সে উভয়ের মাঝে পয়সালা করে দিতে পারে। আর ইহুদি ব্যক্তি বিষয়টি নবী করীম (ﷺ)-এর দরবারে উস্থাপন করতে চাইলেন। অবশেষে তারা উভয়ে বিষয়টি নিয়ে হুজুরে পাক (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন, রাসূল (ﷺ) ইহুদির পক্ষে রায় দিলেন। তবে মুনাফিক ব্যক্তি এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারল না, তাই তারা দ্বিতীয়বার ফয়সালার জন্য হযরত ওমর (رضي الله عنه) - এর নিকট উপস্থিত হল। আর ইহুদি ব্যক্তি হযরত ওমর (رضي الله عنه) - এর নিকট রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কৃত বিচার মীমাংসার কথাটি পরিস্কার জানিয়ে দিলেন, হযরত ওমর (رضي الله عنه) মুনাফিক ব্যক্তিকে বলেলন ব্যাপারটা কী তাই? মুনাফিক বলল, হ্যা। তা শুনে হযরত ওমর (رضي الله عنه) তাকে হত্যা করে ফেললেন। 


এতে প্রতীয়মান হয় যে, যে কেউ রাসূলুল্লাহর (ﷺ)- এর বিধান অমান্য করে, ফারুকে আজম (رضي الله عنه)'র মতে তার শাস্তি মৃত্যুদন্ড । 


◼ ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত-তাবারি (رحمة الله) সূরা মায়িদার ৪২ নং আয়ারেতর তাফসিরে লেখেন – 

(وان تعرض عنهم) أى من الحلم بينهم (فلن يضروك شيئً) أى لايقدرون لك على ضرر فى دين او نيا خدع النظر بينهم أن شئت(وان حكمت) أى وان اخترت أن تحكم (فاحكم بينهم بالقسط) أى العدل وقيل بما فنى القران وشريعة الاسلام_

ইমাম তাবারী (رضي الله عنه) বলেন, হে নবী! ব্যভিচারকারী স্ত্রীলােকটির গােত্রের লােকেরা যারা এখনও পর্যন্ত আপনার কাছে আসেনি, যদি তারা আপনার কাছে অভিযােগ নিয়ে উপস্থিত হয়, তবে আপনি ইচ্ছা করলে তাদের মাঝে ফয়সালা করতে পারেন। আর ইচ্ছা করলে আপনি তাদেরকে উপেক্ষাও করতে পারেন, ফলে বিচার ভার তাদের প্রতিই অপিৰ্ত হবে। অতএব আপনার اختيار আছে এ দুয়ের যে কোনটি অবলম্বন করতে পারেন। 

(জামেউল বয়ান ফি তাফসিরুল কুরআন, ৩য় খন্ড, পৃ. ৩০৪)


উপযুক্ত আলােচনায় বুঝা গেল যে, শরয়ী বিধিবিধানের ইখতিয়ার। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে (ﷺ)কে দান করেছেন। 


◼ আল্লামা কাযী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানিপথী (রহঃ) তাঁর তাফসীরে মাযহারী শরীফে সূরা আহযাবের ৩৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন –

وما كان لمؤ من ولا مؤ منة

মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর থাকবে না। 

অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ ও যয়নব বিনতে জাহশের জন্য জায়েয নয়-

اذا قض الله ورسوله امرًا

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) কোন বিষয়ে নির্দেশ করলে : অর্থাৎ কোন বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ দিলে।

ان يكون لهم الخيرة من امرهم 

সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার: 

অর্থাৎ সে বিষয়ে নিজেদের ইচ্ছা মত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া তাদের জন্য বৈধ নয়, বরং নিজেদের ইচ্ছাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (ﷺ)’ ইচ্ছার অনুবর্তী বানাতে হবে। তিনি বলেন, আলােচ আয়াতটি প্রমাণ করে যে, শর্তহীন আদেশ দ্বারা ওয়াজিব (ফরয) বা অবশ্য পালনীয় বিধান সাব্যস্ত হয়। 

[তাফসিরে মাযহারী, দশম খন্ড, পৃ, ৪১]


◼ তাফসীরে জালালাইন শরীফে রয়েছে, 

وما ارسلنا من رسول الا ليطاع فيما يأمر به ويحكم بإذن الله با مره لا يعص ويخا لفُ _

অর্থাৎ আমি কেবল এই উদ্দেশ্যেই রাসূল (ﷺ)’ প্রেরণ করেছি, যেন আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী নির্দেশ ও ফয়সালা মান্য করা হয়, তাদের নাফরমানি ও বিরুদ্ধাচারণ যেন না করা হয়। 

[তাফসিরে জালালাইন, প্রথম খন্ড]


আর উপরােক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়ঃ


◼ আল্লামা কাযী মুহাম্মদ সানাউল্লাহ পানিপথী (রহঃ) বলেন – 

“রিসালতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে পায়গাম্বারের আনুগত্য মানুষের উপর অপরিহার্য করা । ازن অর্থ নির্দেশ, অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে, যে পয়গম্বর প্রেরিত হবে, মানুষ তাঁর নির্দেশ পালন করবে, আর যে ব্যক্তি তার রায়ে সন্তুষ্ট না হবে এবং তাঁর নির্দেশ অমান্য করবে, সে হত্যার উপযুক্ত হবে। কেননা আল্লাহর রাসূলের (ﷺ) বিচার না মানার অর্থই হচ্ছে তাঁর রিসালত কবুল না করা। 

['তাফসিরে মাযহারী, ৩য় খন্ড]


◼ আল্লামা আবুল ফিদা ইবনে কাসীর (রহঃ) সূরা নিসার ৬৫ নং আয়াতের তাফসীরে বলেন, আল্লাহ তাআলা স্বীয় পবিত্র ও সম্মানিত সত্তার শপথ করে বলেছেন, কোন ব্যক্তিই ঈমানের সীমার মধ্যে আসতে পারে না যে পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ে আল্লাহ তাআলার শেষনবী (ﷺ)'কে ন্যায় বিচারক মেনে না নেবে এবং প্রত্যেক র্নিদেশকে, প্রত্যেক মীমাংসাকে, প্রত্যেক সুন্নাতকে প্রত্যেক হাদিসকে গ্রহণযােগ্য রূপে স্বীকার না করবে। আর অন্তর ও দেহকে একমাত্র ঐ রাসূলেরই (ﷺ) অনুগত না করবে। মােটকথা, যে ব্যক্তি তার প্রকাশ্য, গােপনীয়, ছােট ও বড় প্রতিটি বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) - এর বিধিবিধানকে সমস্ত নীতির মূল মনে করবে সে হচ্ছে মুমিন। 

['তাফসিরে ইবনে কাসির, প্রথম খন্ড]



আল-হাদিসের আলোকেঃ



হাদিস ১ :


◼ সাহীহাইনে হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে,  

عن انس بن مالك رضي الله عنه ان النَّبى صلى الله تعا لى عليه وسلم دخل مكَّة يو م الفتح وعلى رأسه المعضر فلما نز عه جاء رجلَّ فقال ابن خطل متعلقَّ با ستارِ الكعبةِ فقال اُقتله قال مالك ولم يكن النَّبى صلى الله عليه وسلم فيما نرى والله اعلم يومئذ محرما _

নিঃসন্দেহে মক্কা বিজয়ের দিন নবী করীম (ﷺ) মাথায় লােহার টুপি পরিহিত অবস্থায় মক্কায়ে মুয়াজ্জমায় প্রবেশ করেছেন। তিনি সবে মাত্র টুপি খুলেছেন এ সময় এক ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে বলল, ইবনে খাতাল (জাহেলী যুগে যার নাম ছিল আব্দুল উযযা -***) কাবার গিলাফ ধরে দাঁড়িয়ে আছে । নবী করীম (ﷺ) বললেন, তাকে হত্যা কর। ইমাম মালিক (رضي الله عنه) বলেন, আমাদের ধারণানুযায়ী সেদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইহরাম পরা অবস্থায় ছিলেন না। ***আল - বিদায়া ওয়ান নিহায়া।

[বুখারী শরীফ, কিতাবুল মাগাযী]



এতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, হারাম শরীফেও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মৃত্যুর পরওয়ানা জারি করেছেন। অথচ আমরা জানি তাতে হত্যা, ঝগড়া - বিবাদ নিষিদ্ধ। 


হাদিস ২ :


◼ ইমাম আবু জাফর আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আল-মিসরী আত-তাহবী (রহঃ) বর্ণনা করেন, 

عن عباد ة بن الصا مت قال قال رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم خذوا عنى فقد جعل الله لهن سبيلا- الخ 

হযরত উবদা ইবনুল সামিত (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “আমার থেকে তােমরা শরীয়তের বিধি-বিধান গ্রহণ কর, আল্লাহ তাদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।” 

[শারহু মাআনিল আসার, খন্ড -৩]


উপরােক্ত হাদিস স্বয়ং বিশ্বমানবতার মুক্তির প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আইনি সংবিধান মদীনা সনদের প্রবক্তা

 ◼ হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (ﷺ)- এর উক্তি - “আমার থেকে তােমরা শরীয়তের বিধি-বিধান গ্রহণ কর।"


এতে প্রতীয়মান হয় যে, আহকামে শরীয়ত তাঁরই হাতে ন্যস্ত। 


হাদিস ৩ :


◼ ইমাম মুসলিম (رضي الله عنه) হযরত আলী ইবনে হুমায়ন (رضي الله عنه) থেকে হযরত মিস ওয়ার ইবনে মাখরামা সূত্রে দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। হযরত মিসওয়ার বলেন, 


إِنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ خَطَبَ بِنْتَ أَبِي جَهْلٍ عَلَى فَاطِمَةَ، فَسَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَخْطُبُ النَّاسَ فِي ذَلِكَ، عَلَى مِنْبَرِهِ هَذَا، وَأَنَا يَوْمَئِذٍ مُحْتَلِمٌ فَقَالَ: «إِنَّ فَاطِمَةَ مِنِّي، وَإِنِّي أَتَخَوَّفُ أَنْ تُفْتَنَ فِي دِينِهَا» قَالَ ثُمَّ ذَكَرَ صِهْرًا لَهُ مِنْ بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ، فَأَثْنَى عَلَيْهِ فِي مُصَاهَرَتِهِ إِيَّاهُ فَأَحْسَنَ، قَالَ «حَدَّثَنِي فَصَدَقَنِي، وَوَعَدَنِي فَأَوْفَى لِي، وَإِنِّي لَسْتُ أُحَرِّمُ حَلَالًا وَلَا أُحِلُّ حَرَامًا، وَلَكِنْ وَاللهِ لَا تَجْتَمِعُ بِنْتُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبِنْتُ عَدُوِّ اللهِ مَكَانًا وَاحِدًا أَبَدًا

অবশ্য ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহা জীবিত থাকাকালে হযরত আলী (رضي الله عنه) আবু জাহলের কন্যাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন আমি এ বিষয় নিয়ে রাসূলুল্লাহু (ﷺ)'কে লােকদের সামনে মিম্বরে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতে শুনেছি, আমি সে সময় সদ্য বালিগ বয়সের। তখন তিনি বললেন, ফাতিমা আমারই অঙ্গ, আমার ভয় হচ্ছে, সে তার দ্বীনের ব্যাপরে ফিতনায় না পতিত হয়। অতঃপর তিনি আবদ ই-শামস গােত্রীয় তাঁর জামাতার আলােচনা করলেন। তার আত্মীয়তার সুন্দর প্রশংসা করলেন এবং বললেন, সে আমায় যা বলেছে সত্য সাব্যস্ত করেছে। যে অংঙ্গীকার করেছে তা প্রতিপালন করেছে আর আমি কোন হালালকে হারাম করি বা হারামকে হালাল করি না। তবে আল্লাহর কসম, আল্লাহর রাসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে কখনাে এক জায়গায় একত্রিত হবে না।

[মুসলিম শরীফ]


উক্ত হাদিসের আলােকে প্রমাণিত হয় যে, শরীয়তে বিধিবিধান আল্লাহর রাসূল (ﷺ) - এর করায়ত্তে। কেননা একজন পূরুষ চাইলে একসাথে চার জন স্ত্রী বিবাহবন্ধনে রাখতে পারবে, যা আল্লাহর কুরআনের ফয়সালা । 


হাদিস ৪ :


◼ ইমাম আবু জাফর আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আল-মিসরী আত-তাহাবী (রহঃ) হযরত উমারাহ ইবনে খুযায়মাহ আনসারী সূত্রে দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন। 

যাতে রাসূলুল্লাহু (ﷺ) হযরত খুযায়মা ইবনে সাবিত (رضي الله عنه)'র একার সাক্ষ্যকে দু'ব্যক্তির সাক্ষ্যের সমান করেছিলেন। উমারাহ (رضي الله عنه) বলেন, আমার চাচা যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাহাবী ছিলেন, তিনি বলেন, একবার রাসূলে পাক একজন গ্রাম্য লােকের নিকট হতে একটা ঘােড়া ক্রয় করলেন। অতঃপর তিনি তার ঘােড়ার মূল্য নেয়ার জন্য তাকে তার পেছনে আসতে বললেন। রাসূলুল্লাহু (ﷺ) দ্রুত চললেন কিন্তু সে ধীরে আসতে লাগল, কিছু লােক তার সম্মুখীন হলাে এবং তার সাথে ঘােড়াটি ক্রয়ের আলােচনা করতে লাগল, তারা একথা জানে না যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘােড়াটি ক্রয় করেছেন। এমনকি তাদের একজন নবী (ﷺ) যে মূল্য দিয়ে ঘােড়াটি ক্রয় করেছেন, তার চেয়েও বেশি মূল্য বললাে। অতঃপর নবী (ﷺ) কে গ্রাম্য লােকটি চিৎকার করে ডেকে বললাে, আপনি যদি ঘােড়াটি ক্রয় করতে চান ক্রয় করুণ, নইলে আমি বিক্রয় করে দেব, তার এ চিৎকার যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শুনতে পেলেন, তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। অতঃপর বললেন আমি কি তােমার কাছ থেকে ঘােড়াটি ক্রয় করিনি? লােকটি বললাে, না। আল্লাহর কসম, আমি আপনার নিকট বিক্রয় করিনি। নবী (ﷺ) বললেন, অবশ্যই তুমি বিক্রয় করেছ, আমি তােমার কাছ থেকে ক্রয় করেছি। অতঃপর লােকজন নবী (ﷺ) এবং উক্ত গ্রাম্য লােকটির নিকট জমা হতে লাগল। আর তারা দুজন একে অপরের সাথে কথা কাটাকাটি করছিল। গ্রাম্য লােকটি বলতে লাগল, আমি যে আপনার নিকট বিক্রয় করেছি এ ব্যাপারে একজন সাক্ষী পেশ করুন। এ সময় যে মুসলমানই সেখানে উপস্থিত হতেন, তিনি বলতেন, তােমার সর্বনাশ হােক। নবী (ﷺ) সত্য ব্যতীত অসত্য বলতে পারে না। 


حتى جاء خز يمة فا ستمع لمراجعة النبى صلى الله تعالى عليه وسلم ومراجعة الا عرابى وهو يقول هلم شهيدًا يشهدلك انَّى قد بايهنك فقال جزيمة انا اشهد انَّك قد بايعتهُ فاقبل النيى صلى الله تعالى عليه وسلم على خزيمة فقال بما تشهد فقال بتصد يقك يارسول الله فجعل رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم شهاد ةَ خز يمةَ بشَّهادة رجلين _  - 


এমন সময় হযরত খুযায়মা (رضي الله عنه) সেখানে উপস্থিত হন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও গ্রাম্য লােকটির কথােপকথন শােনেন। সে বলছিল- আপনি সাক্ষী পেশ করুন, যে একথার সাক্ষ্য দেবে যে, আমি আপনার নিকট ঘােড়াটি বিক্রয় করেছি। তখন খুযায়মা (رضي الله عنه) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ঘােড়াটি বিক্রয় করেছ। তখন নবী (ﷺ) তার দিকে অগ্রসর হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কিভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছ? তিনি বললেন, 

হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ! আপনাকে যে আমি সত্য নবী মেনে নিয়েছি, তার মাধ্যমেই সাক্ষ্য দিচ্ছি, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত খুযায়মা (رضي الله عنه) - এর সাক্ষ্যকে দুজন ব্যক্তির সাক্ষ্যের সমান ঘােষণা করলেন। 

[শারহু মা’আনিল আসার, খন্ড -৩]


দু’জন সাক্ষীর মােকাবেলায় খুযায়মা ইবনে সাবিতের সাক্ষ্যকে যথেষ্ট করা, নিঃসন্দেহে শরয়ী বিধানমালা যে হাবীবুল্লাহ (ﷺ) - এর হাতে ন্যস্ত সেটার অকাট্য প্রমাণ বহন করে। আর এমনটিই মুসলিম মিল্লাতের ঈমান আকিদা হওয়া চাই । আমীন! 


"হুযুর সৈয়্যদে আলম (ﷺ) এর সুদৃঢ় পরওয়ানায় পবিত্র মদীনায়ে তৈয়্যবাকে হারাম ঘােষণার হাদিস সমূহ"


হাদিস ৫ :


◼ সহীহাইনে (হাদীসের বিশুদ্ধতম দুই কিতাব) রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবেদন করেন : 


اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ، وَإِنِّي أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا - هما واحمد والطحا وى فى شرح معا نى الا ثار عن انس رض الله تعالى عنه _


হে আল্লাহ ! নিঃসন্দেহে হযরত ইবরাহীম (عليه السلام) মক্কাকে হারাম করেছেন, আর আমি মদীনায়ে তায়েবার দু প্রস্তরময় ভূখন্ডকে হারাম করলাম।” 


▪ কানযুল উম্মাল বাযযারের শর্তের অনুকুলে হাদিস নম্বর - ৩৮১২৩, মুআসসাসা আর রিসালা,বৈরত -১৪/১২৫। 

▪ সহীহ বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া, বাবু ইয়াজিফফুনান নাসলান, কদীমী কুতুবখানা করাচী- ৪৭৭/১। 

▪ সহীহ বুখারী,কিতাবুল মাগাযী, গাযওয়ায়ে উহুদ, কদিমী কিতাবখানা, কারাচী - ৫৮৫/২। 

▪ সহীহ বুখারী,কিতাবুল ইতিসাম, বাবু মা যাকারান নবী (ﷺ) প্রাগুক্ত, ১৪০৯০/২। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফযল মাদীনা, কদীমী কিতাবখানা, করাচী - ৪৪১/১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, আল মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ১৪৯/৩।

▪ শারহু মা’আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২২। 


এ হাদিস বুখারী, মুসলিম ও আহমদ এবং ইমাম তাহাবী এটি শারহু। মা’আনিল আসার’ গ্রন্থে হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা হতে বর্ণনা করেছেন। 


হাদিস ৬ :


◼ সহীহাইনে এইমতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: 


إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ وَدَعَا لِأَهْلِهَا، وَإِنِّي حَرَّمْتُ الْمَدِينَةَ كَمَا حَرَّمَ إِبْرَاهِيمُ مَكَّةَ، وَإِنِّي دَعَوْتُ فِي صَاعِهَا وَمُدِّهَا بِمِثْلَيْ مَا دَعَا بِهِ إِبْرَاهِيمُ لِأَهْلِ مَكَّةَ - 

هم جميعا عن عبد الله بن زيد بن عاصم رضي الله تعالى عنه - -


নিঃসন্দেহে হযরত ইবরাহীম (عليه السلام) মক্কায়ে মুয়াজ্জামাকে হারাম ঘােষণা করেছেন ও তাঁর অধিবাসীদের জন্য দোয়া করেছেন। আর নিঃসন্দেহে আমিও পবিত্র মদীনাকে হারাম ঘােষণা করেছি। যেমনিভাবে হযরত ইবরাহীম (عليه السلام) মক্কাকে হারাম ঘােষণা করেছেন। আর আমি মদীনার এক মুদ ও সা’ এর বরকতের জন্য দোয়া করছি। যেরূপ দেয়া হযরত ইবরাহীম (عليه السلام) আহলে মক্কার জন্য করেছিলেন। 


এ হাদিস আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (رضي الله عنه) হতে তারা সকলেই বর্ণনা করেছেন। 


▪ সহীহ বুখারী, কিতাবুল বুরূহ, বাবু বারাকাতিস সায়িম নবী (ﷺ), কাদিমী কিতাব খানা, করাচী - ২৮৬/১। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা ওয়া দুআউন নবী (ﷺ), কাদিমী। কিতাবখানা, করাচী - ৪৪০/১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ৪০/৪। 

▪ শারহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২।। 


হাদিস ৭ :


◼ সহীহাইনে এইরূপে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, হুযুরে আক্বদাস (ﷺ) আরজ করেন: হে আল্লাহ ! নিশ্চয়ই হযরত ইবরাহীম (আঃ) তােমার বন্ধু, তােমার নবী, আর আপনি তাঁর যবানের উপর মক্কায়ে মুয়াজ্জমাকে হারাম করেছেন। 


اللهم وانا عبدك ونبيك وانى اُحِرّ مُ ما بين لا بتيها

অর্থাৎ হে আল্লাহ ! আমিও তােমার বান্দা ও তােমার নবী, আমি মদীনায়ে তাইয়েবার দু'টি কৃষ্ণ প্রস্তরময় ভূমির গােটা স্থানকে হারাম ঘােষণা করছি। 


▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা ওয়া দুআউন নবী কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪০/১। 

▪ সুনানে ইবনে মাজাহ, আবওয়াবুল মানাসিক, বাবু ফযলুল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানি, করাচী - পৃষ্ঠা - ২৩২। 

▪ কানযুল উম্মাল, হাদিস নম্বর : ৩৪৮৮২, মুআসসাসা আর রিসালা, বৈরুত - ২৪৫/১২।


হাদিস ৮ :


ইমাম তাহাবী (رضي الله عنه) এটির নিকটবর্তী বর্ণনা করেছেন এবং এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন - 


ونهى النبى صلى الله تعالى عليه وسلم ان يقصد شجرها او يخبط او يؤخد طير ها -


রাসূল (ﷺ) মদীনার গাছ কাটতে, তার পাতা ছিড়তে এবং এখানকার পাখি শিকার করতে নিষেধ করেছেন।


▪ শারহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানি, করাচী - ৩৪৩/২। 


হাদিস ৯ :


সহীহ মুসলিম শরীফে রয়েছে যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন ,  


انّى اُحَرِمُّ ما بين لا بتى المدينة ان يقطع عضا هها او يقتل صيد ها - هو واحمد واطحا وى عن سعد بن ابى وقاض رضى الله تعالى عنه 


নিঃসন্দেহে আমি মদীনার দুই প্রান্তের মধবর্তী স্থানকে হারাম বলে। ঘােষষণা করলাম। অতএব এখানকার গাছপালা কর্তন করা এবং এখানকার জীব জন্তু শিকার করা হারাম করেছেন।  


এ হাদিস ইমাম মুসলিম ও ইমাম আহমদ এবং ইমাম তাহাবী (রহঃ) সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদমী কিতাব খানা, কারাচী - ৪৪০/১।

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত সাঈদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, আল মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ১৮১/১। 

▪ শারহু মা’আনিল আসার, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪০/১।



হাদিস ১০ :


সহীহ মুসলিম শরীফের মাঝে এ বর্ণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ، وَإِنِّي أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا - هو والطحاوى عن رفع بن خد يج رض الله تعالى عنه -

নিঃসন্দেহে হযরত ইবরাহীম (আঃ) মক্কায়ে মুয়াজ্জমাকে হারাম বানিয়েছেন, আর আমি মদীনার দুটি কৃষ্ণ প্রস্তরময় ভূমির মধ্যবর্তী জায়গাকে হারাম ঘােষণা করছি।” 


উপর্যুক্ত হাদিসটি ইমাম মুসলিম ও ইমাম তাহাবী হযরত রাফি ইবনে খাদীজ (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন। 


▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদী, কাদীমী কিতাখানা,করাচী - ৪৪০/১। 

▪ শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এস, সাঈদ কোমপানী, করাচী - 

৩৪২/২। 


হাদিস ১১ :

 

সহীহ মুসলিম শরীফে এইরূপে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 


اللهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ فَجَعَلَهَا حَرَمًا، وَإِنِّي حَرَّمْتُ الْمَدِينَةَ حَرَامًا مَا بَيْنَ مَأْزِمَيْهَا، أَنْ لَا يُهْرَاقَ فِيهَا دَمٌ، وَلَا يُحْمَلَ فِيهَا سِلَاحٌ لِقِتَالٍ، وَلَا تُخْبَطَ فِيهَا شَجَرَةٌ إِلَّا لِعَلْفٍ- 


হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই ইবরাহীম (আঃ) মক্কায়ে মুয়াজ্জমাকে হারাম ঘঘাষণা করেছেন এবং তা পবিত্র ও সম্মানিত বানিয়েছেন, আর নিশ্চয়ই আমি মদীনার দুই পাহাড়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত যা কিছু রয়েছে তাকে হারাম ঘােষণা করছি, এবং তা পবিত্র ঘােষণা করলাম। অতএব এখানে রক্তপাত করা যাবে না, এখানে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে অস্ত্রবহন করা যাবে না, এং পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্য ব্যতীত গাছপালার পাতাও পাড়া যাবে না। 

[সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদিমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪৩/১]


হাদিস ১১ :

 

সহীহ মুসলিম শরীফে এইমতে বর্ণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরজ করেন, 


اللهم انى قد حر متُ مابين لابتيها كما حر مت على لسان ابراهيم الحرم- هو واحمد والرُّو نى عن ابى قتادة رضى الله تعالى عنه 


হে আল্লাহ! নিঃসন্দেহে আমি গােটা মদীনাকে হারাম ঘােষণা করে দিলাম। যেমনিভাবে আপনি ইবরাহীম (আঃ) - এর মুখের (ঘোষণার) উপর পবিত্র হেরেমকে হারাম বানিয়েছেন । ২১

এ হাদিস ইমাম মুসলিম ও ইমাম আহমদ হযরত আবু কাতাদা (رضي الله عنه) সূত্রে বর্ণনা করেন। 


২১. 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদিমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪৩-৪৪০/ ১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আবু কাতাদা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, আল মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত ৩০৯/৫। 


হাদিস ১২ :


হাদীস : সহীহ মুসলিম শরীফে এইরূপে বর্ণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,


 إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ  بيت الله وَاَمَّنه وَإِنِّي حَرَّمْتُ الْمَدِينَةَ مَا بَيْنَ لَابَتَيْهَا، لَا يُقْطَعُ عِضَاهُهَا، وَلَا يُصَادُ صَيْدُهَا- هو والطحاوى عن جابر بن عبد الله رضي الله تعالى عنهما -


নিঃসন্দেহে ইবরাহীম (আঃ) বায়তুল্লাহকে হারাম বানিয়ে দিয়েছেন, এবং নিরাপত্তা দানকারী বানিয়েছেন। আর আমি মদীনায়ে তাইয়েবাকে হারাম করলাম। এখানকার না ঘাস কাটা যাবে, আর না তার কোন শিকার ধরা যাবে।২২ 


এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম ও ইমাম তাহাবী হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন। 


২২. 

▪ শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৫২/২। 

▪ কানযুল উম্মাল, ইমাম মুলিমের বরাতে, হাদীস : ৩৪৮১০, মুআসসাসাতু আর রিসালাহ, বৈরুত - ২৫৩২/১২। 


হাদিস ১৩ :


সহীহাইনের মাঝে রয়েছে যে, হযরত আবু হুরায়রা। রাদ্বিয়ালরাহু তাআলা আনহু বর্ণনা করেন, 


حرم رسول الله صلى الله تعا لى عليه وسلم ما بين لا بتى المد ينة وجعل اثنا عشر ميلاً حول المد ينة حِمى - هما واحمد وعبد الرزاق فى مصنفه _

সমস্ত মদীনায়ে তাইয়েবাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হারাম করে দিয়েছেন। আর তিনি পবিত্র মদীনার চারপাশের বারাে মাইল পর্যন্ত সবুজ ঘাসের চারণভূমিকে লােকদের হস্তক্ষেপ থেকে নিজের সংরক্ষণে নিয়ে নিলেন। ২৩


২৩. 

▪ সহীহ বুখারী, ফয়িলুল মদীনা, বাবু হারামুল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী -২৫১/১। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪২/১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহু হতে বর্ণিত, আন মাকতাবুল। ইসলামী, বৈরুত - ৪৮৭/২। 

▪ আল - মুসান্নাফ লিআবদির রাযযাক কিতাবু হুরমাতুল মদীনা, হাদীস : ১৭১৪৫, আল - মাজলিসুল আলামী, বৈরুত - ২৬১৪ - ২৬০৯। 



হাদিস ১৪ :


এ হাদীস বুখারী ও মুসলিম এবং হযরত আবদুর রাযযাক স্বীয় মুসান্নকে উদ্ধৃত করেছেন। ইমাম ইবনে জারীর (رحمة الله) এর বর্ণনা এই যে, 

حرّم رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم شجر ها ان يعضد او يخبط - رواه عن خبيب ن الهذ لى رضي الله تعالى عنه _ 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পবিত্র মদীনার গাছপালা কর্তন করা, তার পাতা ছিড়া হারাম ঘােষণা করেছেন। ২৪ 


এ হাদীস শরীফ ইমাম ইবনে জারীর (رحمة الله) হযরত হাবীব হুজালী (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন। 


২৪.ইমাম ইবনে জারীর, হযরত হাবীব হুজালী সূত্রে বর্ণিত। 


হাদিস ১৫ :


সহীস মুসলিম শরীফে রয়েছে যে, হযরত রাফি ইবনে খাদীজ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, 

انّ رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم حرَّم ما بين لا بتي المد ينة _ هو والطحا وى فى معا نى الا ثار _

নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মদীনায়ে তাইয়েবার সমগ্র স্থানকে হারাম বানিয়েছেন। ২৫ 


এ হাদিস ইমাম মুসলিম ও তাহবী শারহু মা’আনিল আসারে বর্ণনা করেছেন। 


২৫. 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪০/১। 

▪ শারহু মা'আনিল আসার, কিতাবুল সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২। 


হাদিস ১৬ :


হাদীস সহীহ মুসলিম ও শারহু মা’আনিল আসারে এইমতে হযরত আসিম আল আহওয়াল (ﷺ) হতে বর্ণিত যে, 

قلت لِاَ نس بن مَلك احرّم رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم المدينة قال نعم الحديث - زاد ابو جعفر فى رواية لايعضد شجر هاولمسلم ض  اخرى ذلك فعليه لعنة والملئكة والنا س اجمعين _  


অর্থাৎ আমি (হযরত আসিম আল আহওয়াল (রাঃ) হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه)কে জিজ্ঞেস করলাম যে, রাসূলুল্লাহ কি মদীনাকে হারাম ঘােষণা করেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। ২৬ 

তা হারাম, অতএব এখানকার উদ্ভিদ কাটা যাবে না, ঘাস উপড়ানাে যাবে না। ২৭ 

যে ব্যক্তি এরূপ করবে তার উপর আল্লাহ ও তাঁর ফিরিস্তাদের এবং সমগ্র মানব জাতির লা'নত তথা অভিশম্পাত। ২৮ 


২৬. সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪১/১। 

২৭. শারহু মা, আনিল আসার , কিতাবুস সায়ীদ বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম. সাঈদ। কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২। 

২৮. সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদিমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪১/১। 


হাদিস ১৭ :


সুনানে আবু দাউদে রয়েছে যে, হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন - 


انّ رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم حرَّم هذا الحر ام _


নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ মহা সম্মানিত হারামকে হেরেম বানিয়ে দিয়েছেন। ২৯ 


২৯. সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মানাসিক, বাবু কি তাহারিমুল মদীনা, আফতাবে আলম প্রেস, লাহাের - ২৭৮/১। 


হাদিস ১৮ :


হযরত শারজীল (রাঃ) বলেন, আমি পবিত্র মদীনায় শিকার ধরার জন্য জাল টানাচ্ছিলাম, এমতাবস্থায় হযরত যায়দ ইবনে সাবিত আনসরী (رضي الله عنه) আমাদের নিকট আগমন করলেন। অতঃপর তিনি জাল ধরে ছুড়ে ফেলে দিলেন, আর ইরশাদ করলেন, 

تعلموا انَّ رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم حرَّم صيد ها - الا مام ابو جعفر فى فى شرح الطحا وى _

তােমরা কি জান না যে, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পবিত্র মদীনায়ে তাইয়েবার শিকার ধরা হারাম করেছেন। ৩০ 


এ হাদিস ইমাম আবু জাফর শারাহু তাহাবীর মধ্যে বর্ণনা করেছেন।


৩০.শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ বাবু, সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, কারাচী - ৩৪২/২। 


হাদিস ১৯ :


আবু বকর ইবনে আবূ শায়বাহ হযরত যায়দ (رضي الله عنه) হতে এরূপ বর্ণনা করেছেন যে, 


انَّ النبى صلى الله تعالى عليه وسلم حرم ما بين لَاَبْتَيها


নিঃসন্দেহে নবী (ﷺ) মদীনার দু'টি কৃষ্ণ প্রস্তরময় ভূমির মধ্যবর্তী স্থানকে হারাম ঘােষণা করেছেন। ৩১ 


৩১. মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা, কিতাবুস সিয়ার ১৮২/৬


হাদিস ২০ :

 

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন - 

اِنَّ رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم حرَّم ما بين لابتى المدينة ان يعضد شجرها او يخبط _


নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সমগ্র মদীনাকে হারাম বানিয়ে দিয়েছেন, করা নিষিদ্ধ এবং এখানকার পাতা ছিড়াও নিষিদ্ধ। ৩২ 


৩২. শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২। 


হাদিস ২১ :


হযরত ইবরাহীম ইবনে আবদুর রহমান ইবনে আওফ বর্ণনা করেন, একদা আমি কুমুলা নামক স্থানে একটা পাখি শিকার করলাম, অতঃপর সেটি হাতে নিয়ে আমি বের হলাম। এমন সময় আমার সম্মানিত পিতা আবদুর রহমান ইবনে আওফ (رضي الله عنه) এর সাথে আমার সাক্ষাত হলাে। অতঃপর তিনি রাগান্বিত অবস্থায় আমার কান মলে দিলেন। তারপর আমার হাত থেকে নিয়ে পাখিটা তিনি ছেড়ে দিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, 


حرَّم رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم صيد ما بين لا بتيها _


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পবিত্র মদীনায় শিকার করা নিষিদ্ধ ঘােষণা করেছেন। ৩৩


৩৩. শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২। 



হাদিস ২২ :


হযরত সা'ব ইবনে জাচ্ছামা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, 


انّ رسول الله صلى الله تعا لى عليه وسلم حرّم البقيع وقال لاحمى الا لله ورسوله


নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জান্নাতুল বাকীকে হারাম সাব্যস্ত করেছেন। আর তিনি বলেছেন : আল্লাহ জাল্লা - জালালুহু ও তাঁর রসূল (ﷺ) ব্যতীত কারাে জন্য চারণভূমির মালিকানা নেই। ৩৪


৩৪ . শারিহ মাআনিল আমার, বাবু ইয়াহিয়াইল আবদিল মাইতি, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানী, করাচী - ১৮৫/২।


◼ তিনটি বর্ণনাই ইমাম তাহাবীর (রহঃ) (অর্থাৎ উপর্যুক্ত তিনটি হাদীসই ইমাম তাহাবী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন) 


◼ উপরােক্ত ১৬টি হাদীসের মধ্যে প্রথম ৮টির মধ্যে স্বয়ং হুযুরে আক্বদাস (ﷺ) ইরশাদ করেছেন

আমি মদীনা শরীফকে হারাম ঘােষণা করেছি।  


◼ আর পরবর্তী ৮টির মধ্যে সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন : 

হুযুর (ﷺ) হারাম ঘােষণা করার কারণে মদীনায়ে তাইয়েবা হারাম হয়ে গেল। বাস্তবিকপক্ষে এ গুণ মহাপ্রতাপশালী আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। 


◼ প্ররাম্ভিক আট খানা থেকে পাঁচটির মধ্যে স্বীয় সম্মানিত পিতা সাইয়িদুনা ইবরাহীম (عليه السلام) এর দিকে সম্পর্কিত করেই ইরশাদ হয়েছে যে, 

সম্মানিত মক্কাকে পবিত্র হারাম ঘােষণা স্বয়ং তিনিই করেছিলেন, তিনিই নিরাপত্তা দানকারী বানিয়েছেন। 


◼ প্রকৃতপক্ষে স্বয়ং রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন - 

ان مكة مرحرمها الله تعالى ولم يحرمعا الناس - البجارى والتر مذى عن ابى شُرَيح ن البغد ادى رضي الله تعالى عنه -

নিঃসন্দেহে মক্কায়ে মুয়াজ্জমাকে আল্লাহ তাআলা হারাম করেছেন। কোন ব্যক্তি এটিকে হারাম করেননি।৩৫


এ হাদীস বুখারী ও তিরমিযী হযরত আবু শুরায়েখ বাগদাদী . (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন। 


৩৫. 

▪ সহীহ বুখারী, আবওয়াবিল উমরা, বাবু লা- ইয়াদিদু শাজারুল হারাম, কদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ২৪৭/১! 

▪ সুনানে তিরমিযী, কিতাবুল হজ্জ, হাদীস নম্বও : ৮০৯, দারুল ফিকর, বৈরুত - ২১৭/২। 


এ সমস্ত সনদসমূহ (হাদীসের মূল কথাটুকু যে সূত্র পরমপরায় গ্রন্থ সংকলনকারী পর্যন্ত পৌঁছেছে) আমার পুস্তকের জন্য বিশেষ উপলক্ষ। কিন্তু তা ওয়াহাবীদের জানের উপর বড়ই মারাত্মক ও কঠিন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  


পবিত্র মদীনার জঙ্গল হারাম হওয়াটা শুধুমাত্র উপর্যুক্ত হাদীসসমূহে বলা হয়েছে তা নয়, বরং এছাড়াও অসংখ্য হাদীস সমূহে উপস্থাপিত হয়েছে। 


হাদিস ২৩ :


হাদীসে সহীহাইন : হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

المد ينة حرم من كذا الىذا لا يقطع مشجر ها - هما واحمد والطحا وى واللفظ للجا مع العحيح-

"মদীনা এখান থেকে ওখান পর্যন্ত হারাম, সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না।" ৩৬


এ হাদীসটি ইমাম বুখারী ও মুসলিম এবং আহমদ আর তাহাবী বর্ণনা করেছেন। আর বর্ণিত শব্দসমূহ জামে আস - সহীর। 


৩৬.

▪ সহীহ বুখারী, ফয়িলুল মদীনা, বাবু হুরমতিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ২৫১/১। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফাযায়িলুল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা , কারাচী - ৪৪১/১। 

▪ কানযুল উম্মাল, হাদীস নম্বও : ৩৪৮০, মুআসসানা আর – রিসালা, বৈরুত - ২৩১/১২। 

▪ মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, হযরত আনাস (رضي الله عنه)'র সূত্রে বর্ণিত। আল মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ২৪২/৩।


হাদিস ২৪ :


হাদীসে সহীহাইন : হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

المد ينة حرم - الحد يث هما والطحاوى وابن جرير اللفظ للمسلم 

"মদীনা হলাে হারাম।" ৩৭


এ হাদীসটি বুখারী, মুসলিম, তাহাবী ও ইবনে, জারীর বর্ণনা করেছেন, আর বর্ণিত শব্দসমূহ মুসলিম শরীফের।  


৩৭. সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ৪৪২/১। 


হাদিস ২৫ :


হাদীসে সহীহাইন : মাওলা আলী কাররামাল্লাহু তাআলা ওয়াজাহাহু হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

المد ينة حرم ما بين عير الى كذا - ولمسلم والطحا وى ما بين عير الى ثور الحد يث زاد احمد وابو داؤد فى رواية لا يجتلى خلاها ولا ينفرصيد ها _

মদীনার আইর থেকে মাওর পর্বত পর্যন্ত হারাম। ৩৮


ইমাম আহমদ ও আবু দাউদ তাদের বর্ণনায় আরাে বৃদ্ধি করেছেন যে, এখনকার ঘাস কর্তন করা যাবে না। আর এর কোন প্রাণী শিকার করা যাবে না।” ৩৯


৩৮. 

▪ সহীহ বুখারী, ফয়িলুল মদীনা, বাবু হুরমাতিল মদীনা, কদমী কিতাব খানা, করাচী - ২৫১/১। 

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪২/১, 

▪ সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মানাসিক, বাবু ফি তাহরিমুল মদীনা, আফতাবে আলম প্রেস, লাহাের – ২৭৮/১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত – ৮১/১। 

▪ শারহু মা’আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী -করাচী - ৩৪১/২। 


৩৯. 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত -১১৯/১।

▪ সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মানাসিক, বাবু ফি তাহরিমল মদীনা, আফতাবে আলম প্রেস, লাহাের ২৭৮/১। 



হাদিস ২৬ :


হাদীস সহীহ মুসলিম : হযরত সাহল ইবনে হুনায় (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাত মােবারক দ্বারা মদীনায়ে তাইয়েবার দিকে ইঙ্গিত করে ইরশাদ করলেন, 

انّها حرم اٰمن - هو واحمد والطحاوى وابو عونة-

নিঃসন্দেহে এটি নিরাপত্তা দানকারী ও হারাম। ৪০


এ হাদীস ইমাম মুসলিম, আহমদ, তাহাবী ও হযরত আবু ওয়াইনা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। 


৪০

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ৪৪৩/১। 

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত সাহল ইবনে হুনায়ক হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ৪৮৬/৩। 

▪ কানযুল উম্মাল, হযরত আবু ওয়াইনার বরাতে বর্ণিত, হাদীস নম্বর ৩৪৮০০, মুআসসাসা আর - রিসালা, বৈরুত - ২৩০/১২। 

▪ শারহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু। সায়ীদিন মদীনা, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানী - করাচী - ৩৪২/২। 


হাদিস ২৭ :


হাদীস : ইমাম আহমদ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

لهكل نبى حرم وحر مى المدينة- 


প্রত্যেক নবীর জন্যে একটি হারাম রয়েছে, আর আমার হারাম হচ্ছে মদীনা। ৪১


৪১. মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত – ৩১৮/১। 


হাদিস ২৮ :


হাদীস : আবদুর রাযযাক হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, 


انّ النبى صلى الله تعالى عليه وسلم حرم كلّْ دافّةٍ اقبلت على المد ينة من العفة الحد يث-


নিঃসন্দেহে নবী করীম (অ) মদীনায় বসবাসরত প্রত্যেক গােত্রের জনসাধারণের উপস্থিতিতে মদীনার কাটাযুক্ত বৃক্ষ কর্তন করা নিষিদ্ধ ঘােষণা করেছেন। ৪২ 


৪২. আল মুসান্নিফ লিআবদির রাজ্জাক, বাবু হুরমাতুল মদীনা, হাদীস নম্বও : ১৭১৪৭, আল - মাজলিসুল উলামা, বৈরুত – ২৬১/৯। 


হাদিস ২৯ :


হাদীস : ইমাম তাহাবী বিশুদ্ধ পন্থায় হযরত মালিক হতে, তিনি ইউনুছ – ইবনে ইউসুফ হতে, তিনি ইউসুফ হযরত আতা ইবনে ইয়াসার হতে, হযরত আতা ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেন, একবার তিনি কতিপয় ছেলেদেরকে পেয়েছিলেন, যারা একটি শৃগালকে ধরা দেয়ার জন্য ঘেরাও করেছিল । হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (رضي الله عنه) ওসব ছেলেদেরকে তাড়িয়ে দিলেন। ইমাম মালিক বর্ণনা করেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, তিনি তাদেরকে একথাই বলছিলেন, 

اَفِى حرَّم رسول الله صلى الله تعا لى عليه وسلم يصنع هذ ا-

কেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) - এর হারামকৃত এলাকায় এমন করা হচ্ছে । ৪৩ 


৪৩. শরহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদুল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২। 


হাদিস ৩০ :


হাদীস : মুসনাদুল ফিরদাউসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 

يبعث الله عز وجل من هذه البقيعة ومن هذا الحرم سبعين الفا يدخلون الجنة بغير حساب يشفع كل واحد منهم فى سبعين الفا وجو ههم كا لقم ليلة البدر -

আল্লাহ তাআলা কিয়ামত দিবসে এ জান্নাতুল বাকী ও হারাম ৭০ হাজার এমন কতগুলাে ব্যক্তিদের উঠাবেন যে, তাঁরা বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তাদের মধ্যে প্রত্যেকই একজন ৭০ হাজারকে সুপারিশ করবে। তাদের চেহেরা চৌদ্দ তারিখের পূর্ণিমা চন্দ্রের মতাে আলােকোজ্জ্বল হবে। 


৪৪. 

▪ আল – ফিরদাউস বিমসূরিল খেতাব, হাদিস : ৮১২৩, দারুল কুতুবুল আলামিয়া বৈরুত - ২৬০/৫। 

▪ কানযুল উম্মাল, হাদিস : ৩৪৯৬, মআসসাসা - তুর – রিসালা, বৈরুত - ২৬২/১২। 


আর যদি ওসব হাদীস সমূহ গননা করা হয়, যাতে মক্কায়ে মুয়াজ্জমা ও মদীনায়ে তাইয়েবাকে হারামাইন ঘােষণা করা হয়েছে, তবে তা আধিক সংখ্যক হবে। বর্ণনাকৃত এ সমস্ত হাদীস সমূহ প্রত্যেক অধ্যায়ে হাদিসে মুতাওয়াতির পর্যায়ের। অতএব দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে প্রমাণিত যে, মুস্তফা (ﷺ) মদীনা তাইয়েবার জঙ্গলের ক্ষেত্রে সুদৃঢ় নির্দেশ ও পূর্ণ তাগীদের সাথে ঐরূপ আদব (শিষ্টাচারিতা) সাব্যস্ত করলেন, যেরূপ মক্কায়ে মুয়াজ্জামার জঙ্গলের রয়েছে। এখন আমি তুলে ধরছি তায়েফা - তালুগা ওহাবীদের ইমাম, যার খারাপ পরিণতি স্বীকৃত, সে তার অপূর্ণাঙ্গ কটুভাষা পরিস্কারভাবে লিখে গেছেন। -“ দুটি কৃষ্ণ প্রস্তরময় পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানের জঙ্গলের আদব করা, তাতে শিকার না করা, তার বৃক্ষ কর্তন না করা, এ সমস্ত কাজ আল্লাহ স্বীয় ইবাদতের জন্য বলেছেন। কিন্তু যে কেউ কোন পীর, পয়গাম্বও অথবা ভূত ও পরীদের স্থানকে চক্রকাওে আবর্তনে জঙ্গলের আদব করে, তবে তার উপর শিরক প্রমাণিত হবে। ৪৫ 


৪৫. তাকবিয়াকুল ঈমান, মুকাদ্দামাতুল কিতাব, মাতাবয়ু আলিমী আন্দাররা, লুহারী দরওয়াজায়ে লাহাের - ৮ পৃ.


কেন, আমি (গ্রন্থকার ) বলব যে, এ নাপাক (আপবিত্র) মাযহাব ও অভিশপ্ত ধর্ম এজন্য অবিস্কার হয়েছে যে, এরা আল্লাহ ও রাসূল পর্যন্ত শিরকের হুকুম পৌছাবে। তাতে আর কার কী ক্ষতি হয়। এ দুর্ভাগা ও বদ - দ্বীনদের (ধর্মহীনদের) উপর হাজার লালা (মুখু নিঃসৃত থুথু)। 


আপনারা দেখেছেন যে, ঐ ইমাম বন্ধুর অনুসারী যিনি বড়ই একত্ববাদীর ফেরিওয়ালা বনে ফিরেছেন। আর নিজ ইমামের সমস্বরে সুর মিলালেন, যার محمدٌ رسول الله পড়তে খুব বেশি লজ্জা লাগে। আল্লাহর অগণিত দরূদ সমূহ - رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم محمد ও তার প্রতি আদব রক্ষাকারী গােলামদের উপর। 


নবী (ﷺ) সম্পর্কে উপদেশ : ও হে মুসলমানেরা ! কেবলমাত্র এ কথা বুঝবেন না যে, ঐ পথভ্রষ্ট গােষ্ঠীর ইমামের কাছে পবিত্র হারম ও হুযুর পুরনূর মালেকুল উমাম (ﷺ) - এর প্রতি আদব রাখাটা শিরক নয় বরং তাদের মাযহাবে - কোনাে ব্যক্তি হুযুরে আক্বদাস (ﷺ) এর পবিত্র জিয়ারতের উদ্দেশ্য মদীনায়ে তাইয়েবায় গেলে ও তথাপি চার-পাঁচ মাইল দূরত্ব থেকে (ওহাবীরা যেমনটি বলে যে, জিয়ারতের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা শিরক, মাথা ঝুঁকানাে শিরক) তার নিজের উপর রাস্তায় ধৃষ্টতা দেখানাে ও অশ্লীল কথাবার্তা বলে চলাটা যেন ফরযে আইন ও জযবায়ে ঈমান। এমনকি যদি কেউ স্বীয় মলিক ও আক্বা (ﷺ) - এর শ্রেষ্ঠত্ব ও শক্তিমত্তার প্রতি নির্মল দৃষ্টি রেখে শিষ্টতা প্রদর্শন ও আদবের সাথে চলে ! তাহলে তাদের দৃষ্টিতে মুশরিক হয়ে যাবে। তার ঐ পথভ্রান্তকারী কিতাব লিখার উদ্দেশ্যই হচ্ছে উক্ত স্থানে ও রাস্তায় অশ্লীল কথার্বাতা বলা। ৪৬ 


৪৬. তাকবিয়াকুল ঈমান, মুকাদ্দামাতুল কিতাব, মাতাবায়ু আলিমী আন্দায়রা লুহারী, দরওয়াজায়ে লাহাের - পৃ.৭


জীবদ্দশায় স্বীয় কাজ (সম্পাদিত বই) তাকে গুণাহের যােগ্য করল, যে খােদার উপর মিথ্যা অপবাদ রটনা করল যে,

”এ সমস্ত কাজ আল্লাহ নিজ ইবাদতের জন্য আপন বান্দাদেরকে বলেছেন। যে কেউ কোন পীর ও পয়গম্বরের (নবী-রাসূল) জন্য করবে তার উপর শিরক প্রমাণিত। ৪৭ 


৪৭. তাকবিয়াকুল ঈমান, মুকাদ্দামাতুল কিতাব, মাতাবায়ু আলিমী আন্দায়রা লুহারী, দরওয়াজায়ে লাহাের - পৃ.৭, 



! سبحا ن الله (সুবহানাল্লাহ!) অনর্থক অশ্লীল কথার্বাতা বলাটা নজদী ওহাবীদের ঈমানী চেতনা, বরং সত্যিকার জিজ্ঞাসা করুণ, তখন দেখবেন, এদের সকলের ঈমান ঐ পরিমাণই। তাতে ফলাফল এ দাঁড়াল যে, মুজতাহিদুত তায়েফার (ওহাবী ধর্মের গবেষকের) যদি এই ইবারত লেখার সময় আয়াতে কারীমা -


 فلا رفث ولا فسو ق ولا جدال فى الحج

১। (তবে না স্ত্রীদের সামনে সম্ভোগের আলােচনা করা হবে, না কোন গুণাহ, না কারাে সাথে ঝগড়া হজ্জের সময় পর্যন্ত।) ৪৮ 

৪৮. আল কুরআনুল কারীম – ১৯৭/২।



পুরাপুরি স্মরণ না আসত, অন্যথায় মদীনায়ে তাইয়েবার রাস্তায় فسوق (গুণাহ) ও فجور (ব্যভিচার) করে পাথচলাটা ফরয বলে দিত। 


তাও এভাবে যে, কেউ যদি সেখান থেকে গুণাহ না করে ফিরে আসে তাহলে মুশরিক হয়ে বাবে, -

  ولا حول ولاقوة الا بالله العلى العظيم

সূক্ষ্ম তত্ত্ব : নজদী শায়েখবৃন্দ ! খােদার একি ন্যায়বিচার যে, ইবাদতের কাজ গুলাে করা থেকে বেঁচে থাকাটা আম্বিয়া ও আউলিয়াদের বেলায় কি নিদিষ্ট, নতুবা একে অপরের ক্ষেত্রে কি শিরকী কর্মকান্ড জয়েজ। নয় নয়, যা শিরিক তা খােদা ব্যতীত সর্ব ক্ষেত্রেই শিরীক। অতএব জনাব আপনারা যখন আপনাদের কোনাে নজীর - বশীর অথবা পীর - ফকির অথবা মুরিদ - রশীদ কিংবা দুস্ত - আজীজ সেখানে (মদীনায়) যাবে, তখন রাস্তার মাঝে লড়াই, ঝগড়া, এক অন্যের মাথা - ফাটাফাটি, মাথা ঘর্ষণ করে চলতে বলবেন! নতুবা দেখুন, কোনাে অবস্থাতেই মাগফেরাতের সুগন্ধ পাবেন না, কেননা আপনারা হজ্জ ব্যতিরেখে রাস্তায় ঐ কথাবার্তা না বলা থেকে বেঁচে সে কাজই করলেন, যা আল্লাহ স্বীয় ইবাদতের জন্য আপন বান্দাদেরকে বলেছেন। আর ঐ জুতা -মােজাতে এ উপকারিতা কেমন হয় যে, যাতে এক কাজে তিন মজা মিলে । جدال (ঝগড়া – বিবাদ) হওয়াটা তাে স্বয়ং প্রকাশ্য, আর যখন কোনাে হেতু নেই তাে فسق (গুণাহ) উপস্থিত, আরرفث (অশ্লীল কথাবার্তা) মানে প্রত্যেক যুক্তিযুক্ত কথাবার্তা অগ্রাহ্য করলে তাে সেটিও হাসিল। একবাক্যে বলতে গেলে নজদীদের (ওহাবীদের) ঈমানে তিনটি রােকনই পরিপূর্ণ।

ولا حول ولا قوة الا باالله العلى العظيم

আলহামদুলিল্লাহ! রেযার এ কলম নজদী - ওহাবীদের স্তূপ দ্বারে বিজলীর ন্যায় আঘাত হেনে মর্মপীড়া দিতে সবচেয়ে পৃথক ভূমিকা রাখে। 

والحمد لله رب البعلمين -

ú
Top