✧ সমস্ত ফিতনার মধ্যে ওহাবী-নজদীদের ফিতনা সর্বাধিক বিপজ্জনক
এ সমস্ত ফিতনা ও হুকমী সমূহের মধ্যে ওহাবী নজদীদের ফিতনা ছিল সর্বাধিক বিপজ্জনক। এ ব্যাপারে আমাদের নবী করিম (ﷺ) প্রথম থেকেই সতর্ক করে গেছেন, নানাভাবে মুসলমানদেরকে সজাগ করে দিয়েছেন।
❏ মিশকাত শরীফের ‘ইয়ামন ও শামের বর্ণনা’ অধ্যায়ে বুখারী শরীফের বরাত দিয়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত “একদিন দয়ার সাগর হুযুর (ﷺ) হাত তুলে আল্লাহর দরবারে দু’আ করছিলেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَامِنَا
-‘হে আল্লাহ! আমাদের শাম প্রদেশে বরকত দাও।’
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي يَمَنِنَا
-‘‘হে আল্লাহ! আমাদের ইয়ামন প্রদেশে বরকত দাও।
উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে জনৈক সাহাবী আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের নজদের জন্য দু’আ করুন। পুনরায় হুযুর (ﷺ) দু’আ করলেন, শাম ও ইয়ামনের নাম উল্লেখ করলেন কিন্তু নজদের নাম নিলেন না। পুনরায় দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক নজদের জন্য দু’আ করার অনুরোধ করার পরেও হুযুর শাম ও ইয়ামনের জন্য উপযুর্পরি ৩ বার দু’আ করলেন কিন্তু বারংবার নজদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া সত্ত্বেও নজদের জন্য দু’আ করলেন না। বরং শেষে বললেন,
هُنَاكَ الزَّلَازِلُ وَالْفِتَنُ وَبِهَا يَطْلُعُ قرن الشَّيْطَان
-‘‘যে অঞ্চল সৃষ্টির আদিকালেই আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত, সে ভুখন্ডের জন্য দু’আ কিভাবে করি? ওখানেই ইসলামের ভিত্কে নাড়াদানকারী ভূমিকম্প ও ফিত্না আরম্ভ হবে, ওখানেই শয়তানী দলের আবির্ভাব ঘটবে।”
{ক) বুখারীঃ আসসহীহঃ কিতাবুল ফিতানঃ ৬/২৫৯৮ হাদিসঃ ৬৬৮১
খ) তিরমিজীঃ আস-সুনানঃ কিতাবুল মানাকিবঃ ৫/৩৩ হাঃ ৩৯৫৩
গ) আহমদঃ আল-মুসনাদঃ ২/১১৮ হাদিসঃ ৫৯৮৭
ঘ) ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহঃ ১৬/২৯০ হাদিসঃ ৭৩০১
ঙ) তাবরানীঃ মু’জামুল কবীরঃ ১২/৩৮৪ হাদিসঃ ১৩৪২২
চ) মুনযিরঃ তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ৪/২৯ হাদিসঃ ৪৬৬৬
ছ) খতিব তিবরিযীঃ মিশকাতঃ ৪/৪৫৯ হাদিসঃ ৬২৭১}
এ থেকে বোঝা গেল হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র দৃষ্টিতে (পথভ্রষ্ট ও ঈমান নষ্ট করার দিক থেকে) দাজ্জালের ফিতনার পরে ছিল নজদের ফিতনার স্থান, যার সম্পর্কে তিনি এভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেলেন।
❏ অনুরূপ, মিশকাত শরীফের কিসাস শীর্ষক আলোচনায় “মুরতাদদের (ধর্মদ্রোহীদের) হত্যা” অধ্যায়ে নাসায়ী শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে হযরত আবু বরযা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত যে,
একবার হুযুর (ﷺ) কিছু গণীমতের মাল বন্টন করছিলেন, তখন পেছন থেকে একজন লোক বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনি ন্যায় সঙ্গতভাবে বণ্টন করেননি। হুযুর (ﷺ) রাগান্বিত হয়ে বললেন, আমার পরে আমার থেকে বেশী কোন ইনসাফকারী ও ন্যায় পরায়ণ ব্যক্তি পাওয়া যাবে না। তারপর বললেন, শেষ যামানায় এর বংশ থেকে একটি গোত্রের উদ্ভব হবে, যারা কুরআন পাঠ করবে বটে, কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠদেশের নিচে পৌঁছবে না। অধিকন্তু, তারা ইসলাম থেকে এমনিভাবে দূরে সরে যাবে, যেমনি করে তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়।
❏ তারপর বললেনঃ-
سِيمَاهُمُ التَّحْلِيقُ لَا يَزَالُونَ يَخْرُجُونَ حَتَّى يَخْرُجَ آخِرُهُمْ مَعَ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ والخليقة
-‘‘মাথামুন্ডানো হলো এদের বিশেষ চিহ্ন; এদের একের পর এক বের হতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত এদের শেষ দলটি দাজ্জালের সংগে মিলিত হবে। যদি তোমরা তাদের সাক্ষাত পাও, জেনে রেখো, তারা হলো সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে সবচে নৃশংস)।’’
{ক) নাসায়ীঃ আস-সুনানুল কোবরাঃ ৭/১১৯পৃ. হাদিসঃ ৪১০৩
খ) নাসায়ীঃ সুনানুল কোবরাঃ ২/৩১২পৃ. হাদিসঃ ৩৫৬৬
গ) আহমদঃ আল-মুসনাদঃ ৪/৪২১পৃ.
ঘ) ইমাম বায্যারঃ আল-মুসনাদঃ ৯/২৯৪ হাদিসঃ ৩৮৪৬
ঙ) আবি শায়বাহঃ আল-মুসান্নাফঃ ৭/৫৫৯ হাদিসঃ ৩৭৯১৭
চ) খতিব তিবরিযীঃ মিশকাত, কিতাবুত দিয়াতঃ ৬৪৮ পৃ. হাদিসঃ ৩৫৪৩
ছ) আবু দাউদঃ আস-সুনানঃ ৪/৫২২ পৃ. হাদিস নং- ৪৩৫৩}
এ হাদীছের মধ্যে এদের পরিচয় বর্ণনা করা হয়েছে। মাথা মুন্ডানো ছাড়া এখনও কোন ওহাবীকে পাওয়া মুশকিল।
❏ অন্য জায়গায় তিনি আরও বললেন, তারা মুর্তি পুজারীদেরকে ছেড়ে দেবে, কিন্তু মুসলমানদেরকে হত্যা করবে। (বুখারী শরীফঃ ১ম খন্ড, কিতাবুল আম্বিয়া,
ইয়াজুজ মাজুজের কাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত বর্ণনা;
❏ মুসলিম শরীফ ও মিশকাত শরীফ আল-মুজিযাত অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদ দেখুন" উক্ত জায়গায় মিশকাত শরীফে আরও উল্লেখিত আছেঃ-
لَئِنْ أَنَا أَدْرَكْتُهُمْ لَأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ عَادٍ.
-“যদি আমি তাদেরকে পেতাম, ‘আদ’ গোত্রের মত হত্যা করতাম।’’
{ক) বুখারীঃ আস-সহীহঃ কিতাবুত তাওহীদঃ ৬/২৭০২পৃ. হাদিস ৭৪৩২
খ) বুখারীঃ আস-সহীহঃ কিতাবুল আম্বিয়াঃ ৩/১২১৯পৃ. হাদিসঃ ৩৩৪৪
গ) মুসলিমঃ আস-সহীহঃ কিতাবুয-যাকাতঃ ২/৭৪১পৃ. হাদিসঃ ১০৬৪
ঘ) আবু দাউদঃ আস-সুনানঃ কিতাবুস-সুন্নাহঃ ৪/২৪৩পৃ.হাদিসঃ ৪৭৬৪}
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।