❏ প্রশ্ন-১৬৩: শীশ শব্দটি কোন ভাষার শব্দ এবং অর্থ কী? 


✍ উত্তর: এই নামটি সুরইয়ানী ভাষার শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর দান। কারো কারো মতে, এটা অনারবী শব্দ। বনি ইসরাইলের কিতাবসমূহে এর অর্থ পাওয়া যায় বদলা বা বিনিময় অর্থাৎ হাবিলের বিনিময় বা বিকল্প। তিনি হাবিলের হত্যাকান্ডের ৫ ( পাঁচ) বছর পর জন্মগ্রহণ করেন যখন হযরত আদম (عليه السلام) এর বয়স হয়েছিল দু’শ ত্রিশ বছর।

ইবনে কুতাইবা মা’রিফ গ্রন্থে লিখেছেন যে, হযরত শীশ (عليه السلام) ছিলেন হযরত আদম (عليه السلام)’র সন্তানদের মধ্যে সর্বাধিক দয়ালু ও সুন্দর। তিনি ছিলেন হযরত আদম (عليه السلام)-এর অধিক সদৃশ। অন্যান্য সন্তানদের বিপরীতে তিনি এককভাবে বা একা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। 

তারীখে তাবারীতে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, বনি আদমের বংশধর তুফানের পর তাঁর উপরেই সমাপ্ত হয়। তাঁর ওপর পঞ্চাশটি সহীফা অবতীর্ণ হয়েছিল। তিনি প্রথমে প্রথমে ইবরানী ভাষায় কথা বলতেন। তাঁর ওপর যে সব সহীফা অবতীর্ণ হয়েছিল সেগুলোতে ছিল বিজ্ঞান, প্রকৌশল, সংগীত, গণিত, জ্যোর্তিবিজ্ঞান ইত্যাদি বিদ্যা ও শাস্ত্র। তাই ইউনানী হেকিমী শাস্ত্রের তাকে প্রথম শিক্ষক বা জনক বলে।

‘যাইনুল কাসাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, আল্লাহ্ তা‘আলা হযরত শীশ (عليه السلام)কে প্রচুর সম্পদ দিয়েছিলেন। তিনি তা দিয়ে ব্যবসা করতেন এবং অধিকাংশ সম্পদ আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য ব্যয় করতেন।

কতিপয় মুহাক্কিক ‘ফুসূসুল হিকম’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাগ্রন্থে লিখেছেন, যখন হযরত আদম (عليه السلام) মৃত্যু শয্যায় আসীন হলেন তখন তার মনে জান্নাতী ফলের আকাঙ্খা সৃষ্টি হলো। হযরত জিবরাঈল (عليه السلام) একটি পাত্রে জান্নাতী ফল নিয়ে আসলেন। ওই পাত্রটি ছিল একটি হুরের (জান্নাতী রমণী) মাথার ওপর। হযরত আদম (عليه السلام) ফল খাওয়ার পর দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ্! এই হুরটির সাথে শীশের বিয়ে হোক। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দু‘আ কবুল করেন এবং হুরটির সাথে হযরত শীশ (عليه السلام) এর বিয়ে হলো। তিনি বয়স পেয়েছিলেন ৯১৩ বছর। অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে ‘আল-আখবারুল আউয়াল’ গ্রন্থের মধ্যে।

হযরত মাওলানা রফিউদ্দিন দেহলভীর মতে হযরত আদমের    ইন্তিকাল হতে তিনি ১২৪৩ বছর বয়সে ওফাত লাভ করেন।

কেউ কেউ বলেন, তাঁকে নিজের পিতার কবরে দাফন করা হয়। আবার কারো মতে, তাঁকে বালাবাক্কা অঞ্চলের সুরাইন আমাল গ্রামে দাফন করা হয়। সেখানে মানুষ তাঁর কবর যিয়ারত করার জন্য যায়। 

221. ইসলামী মা’লুমাত, পৃষ্ঠা নং-৪৪৩।

Top