❏ প্রশ্ন-৯০ঃ মাগরিবের নামাযে দীর্ঘ সূরা পাঠ করার বিধান কী? অথচ প্রায় সকল কিতাবে মাগরিবের নামাযে ছোট সূরা পড়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। লম্বা ক্বিরাত পড়লে নামাযের কোন ক্ষতি হবে কি না?


✍ উত্তরঃ هوالمستعان ইমাম সাহেব মুক্তাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে ক্বিরাত পড়া উত্তম। কারণ মুকতাদিদের মধ্যে কোনো অসুস্থ ও দুর্বল লোক থাকতে পারে। তাই ফোকাহা-ই কিরাম রাহিমাহুমুল্লাহ নামাযে লম্বা ক্বিরাতকে মাকরূহ বলেছেন। অবশ্য দীর্ঘ ক্বিরাতে নামাযের ওপর কোন প্রভাব পড়বে না। স্বয়ং নবী করীম   মাগরিবের নামাযে বেশ কয়েকবার সূরায়ে তুর এবং সূরায়ে মুরসালাত পড়েছেন। 

হযরত ইমাম হাম্মাদ ইবনুল হাসান আশ-শরন্বলালী (رحمه الله تعالي ) বলেন,


وكره للامام تطويل الصلواة لما فيه من تنفير الجماعة لقوله عليه السلام من ام فليخفف . قال العلامة احمد الطحطاوى تحت قول تطويل الصلاة بقرأة او تسبيح او غيرهما.


‘শরন্বলালী গ্রন্থে ইমাম হাম্মাদ বলেন, ইমামের জন্য লম্বা কেরাত পড়া ঠিক নহে। কেননা এতে জমাতে মুসল্লিদের বিরক্তি আসে। হাদিস শরীফেও হুযূর   এরশাদ করেন, যিনি ইমামতি করবেন তিনি যেন কিরাত, রুকু, তাসবীহ্ সর্বত্রই সংক্ষেপ করেন। ইমাম তাহ্তাবী বলেন, শুধু কিরাত নয়।’  

123. তাহত্বাবী, বাবুল ইমামত, পৃষ্ঠা-২৪৬।


ফতোয়ায়ে শামীতে আছে,


ويكره تحريما تطويل الصلواة على القوم زائدًا على قدر السنة فى قرأة واذكار رضٰى القوم الخ . 


‘ফাত্ওয়ায়ে শামীতে উল্লেখ আছে, জামাতে ইমামতি করাতে যেন কেরাত লম্বা না করে অবশ্যই তা সুন্নাত মোতাবেক এবং কেরাত, রুকু, সিজদাহ্ ও তাসবীহ পড়াতে মুসল্লিদের অবস্থাভেদে করা হয়, নচেৎ মাকরূহ হবে।’ 

124. রদ্দুল মুখতার, বাবুল ইমামত, খন্ড-১ম, পৃষ্ঠা-৫৬৪।


عن جبير بن مطعم عن ابيه قال سمعتُ رسول الله صلى الله عليه وسلّم يقرأ فى المغرب بالطور، عن ام الفضل بنت الحارث قالت سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلّم يقرأ بالمغرب بالمرسلات- 


হযরত যোবায়ের বিন মুতয়িম (رضى الله تعالي عنه) স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হুযূর  কে মাগরিবের নামাযে সূরায়ে তূর পড়তে শুনেছি। হযরত উম্মুল ফযল বিনতুল হারিস (رضى الله تعالي عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হুযূর  কে মাগরিবের নামাযে সূরাতুল মুরসিলাত পড়তে শুনেছি।    

125. সহীহ মুসলিম, খন্ড-১ম, মাগরিবের নামাযে কিরাত অধ্যায়, পৃষ্ঠা-১৮৭; সহীহ বুখারী শরীফ (উভয় হাদীস বর্ণিত), খন্ড-১ম, মাগরিবের নামাযে কিরাত বড় করে পড়ার অধ্যায়, পৃষ্ঠা-১০০; অনুরূপ আল-জওয়াহারাতুন্ নায়্যিরাহ্, খন্ড-১ম, পৃষ্ঠা-৭৫; অনুরূপ মেশকাত শরীফে, খন্ড-১ম, পৃষ্ঠা-৭৯। 


❏ প্রশ্ন-৯১ঃ এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে অপবাদ দিল যে, তুমি (নিজ ভাইয়ের স্ত্রীর) ভাবির সাথে অপকর্ম বা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছে। অথচ উক্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। এখন শরয়ী বিধান মতে অভিযুক্ত ব্যক্তির পিছনে ইকতিদা করা জায়েয হবে কি না?


✍ উত্তরঃ বাস্তবিক পক্ষে যদি প্রশ্ন সঠিক হয় এবং এটা পক্ষান্তরে ভিত্তিহীন অভিযোগ। অভিযোগকারী ব্যক্তি যদি তাওবা না করে, তাহলে অপবাদ দেয়ার কারণে উক্ত ব্যক্তি ফাসেক হিসেবে গণ্য হবে। অতএব দ্বীনদার মুত্তাকী ও পরহেজগার লোক তার পেছনে ইক্তিদা করা মাকরূহে তাহরীমী। হ্যাঁ! একথা স্মরণ রাখবে যে, একাকী নামায পড়ার চেয়ে ফাসেকের ইকতিদায় জামাতে নামায পড়া উত্তম।


ولو صلى خلف مبتدع او فاسق فهو محرز ثواب الجماعة لكن لا ينال مثل ما ينال خلف تقى. 


‘কেউ যদি ফাসেক বা বিদআতীর পেছনে নামায পড়ে সে জামাতের সাওয়াব পাবে। কিন্তু মুত্তাকি ইমামের ইকতিদার সমতুল্য সাওয়াব পাবে না।’ 

126. খোলাসাতুল ফাতওয়া, পঞ্চদশ পরিচ্ছেদঃ ইমামের ইকতিদা প্রসঙ্গে, খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৫০।

Top