❏ প্রশ্ন-৮৮ঃ মাগরিবের নামায তাড়াতাড়ি পড়ার ফযিলত দেখে কিছু সংখ্যক লোক প্রবঞ্চনার স্বীকার হয় যে, মাগরিবের নামাযের সময় অতীব সংক্ষিপ্ত! সাধারণত মাগরিবের নামাজের সময়সীমা কতটুকু হওয়া উচিত? দলিলসহ বর্ণনা কর।
✍ উত্তরঃ মাগরিবের নামাযের সময় ফিকহে হানফি মতে, সূর্যাস্ত হতে শুরু হয়ে পশ্চিম আকাশে লাল রেখা শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকে। ইমাম আযম আবু হানিফা (رحمه الله تعالي )-এর মতে, সাদা রেখা অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকে। মাগরিবের সময় মৌসুম ও বিভিন্ন এলাকার তারতম্যে দূরে-কাছের আনুপাতিক তারতম্যে কার্যকর হয়ে থাকে। এমনকি কোনো এলাকায় এক ঘন্টা তিন মিনিট, কোনো জায়গায় এক ঘন্টা পনের মিনিট এবং আবার কোথাও এক ঘন্টা বিশ মিনিট মাগরিবের সময় হয়। সাধারণত মাগরিব ও এশার মাঝখানে দেড় ঘন্টা সময়ের ব্যবধান হয়ে থাকে।
তবে মাগরিবের নামায পশ্চিমাকাশের লালিমা ডুবে যাওয়ার পূর্বে পড়ে নেয়া উচিৎ। যাতে ইমামগণের মতবিরোধ থেকে বাঁচা যায়। অবশ্য মুসাফির অথবা ওজর-আপত্তি ও অসুস্থ লোকের জন্য সাদা রেখার মধ্যে পড়ার অনুমতি আছে।
121. ফতওয়ায়ে শামী, কিতাবুস সালাত, খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬১।
শরহে বেকায়ায় আছে,
وعند ابى حنيفة الشفق هو البياض الذى يلى الحمرة، هكذا فى القدورى .
‘ইমাম আবু হানিফা (رحمه الله تعالي )’র মতে শফক অর্থ হচ্ছে, লালিমা অস্তমিত হওয়ার পর সাদা লালিমা ডুবা পর্যন্ত থাকে।’
মাসআলাঃ সূরা ফাতিহা থেকে যদি একটি অংশও ভুলক্রমে বাদ পড়ে, তবে সিজদা সাহু ওয়াজিব হবে। যেমন- নামাযের প্রথম রাকাতে যদি সূরা ফাতিহা থেকে اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ ভুলক্রমে বাদ পড়ে, এতে সিজদা সাহু ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ ফরযসমূহের প্রথম দুই রাকাত, সুন্নাত, বিতির এবং নফল নামাযের সকল রাকাতে সূরা ফাতিহা থেকে একটি অক্ষরও যদি বাদ পড়ে, তবে সিজদা সাহু ওয়াজিব হবে। যদি সিজদা সাহু আদায় না করে, তাহলে নামায পূনরায় পড়া ওয়াজিব হবে।
122. দুর্রুল মুহতার শামী, باب كل صلواة اديت مع كراهة , খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৫।
❏ প্রশ্ন-৮৯ঃ ইস্তিসকার নামায ছাড়া অন্য কোন শরয়ী পদ্ধতি অনুমোদন আছে কিনা? অর্থাৎ- কোনো কোনো এলাকায় ইস্তেসকার নামাযের পরিবর্তে এ নিয়ম প্রচলিত আছে, এশার নামাযের পর এক ব্যক্তি সূরা ইয়াসীন শরীফ শুরু থেকে প্রথম মুবীন পর্যন্ত তিলাওয়াত করে। অতঃপর এক ব্যক্তি উচ্চকন্ঠে নামাযের সুন্নাত আযানের মত আযান দেয়া শুরু করে এবং আরো অনেক কিছু করে। পরিশেষে এক লম্বা দু‘আর মাধ্যমে এর যবনিকাপাত করে। বৃষ্টির জন্য এ ধরনের পদ্ধতি গ্রহণ করা কী জায়েয?
✍ উত্তরঃ ইস্তিসকার নামাযের পরিবর্তে এমন নিয়ম সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। হ্যাঁ! যদি কোন আল্লাহর সাহেবে বেলায়ত ওলি ও দরবেশ-বুযূর্গ কোনো বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করেন, তাহলে সেটা হবে তাঁর জন্য খাস। সর্বসাধারণের জন্য নয়। সার্বজনীন নিয়ম যা প্রচলিত আছে তা হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। বৃষ্টিবর্ষণ মহান আল্লাহ তা‘আলার দয়া, মেহেরবানী ও অনুগ্রহের ওপর নির্ভরশীল এবং এটা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যা চান তাই করেন- فَعَّالٌ لِمَا يُرِيْدُ আল্লাহ'র নিকট দু‘আ প্রার্থনা করা, বৃষ্টি চাওয়া- এটা প্রত্যেক সময়, প্রত্যেক অবস্থায় এবং যে কোনো পদ্ধতিতে জায়েয, বৈধ, মুসতাহসান ও মনদুব।