❏ প্রশ্ন-৩ঃ আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা ও গুণাবলীতে মুহাব্বত ও ভালবাসার মর্মার্থ ও উদ্দেশ্য কী?
✍ উত্তরঃ وبالله التوفيق অধিকাংশ যুক্তিবিদগণ বলেন, মুহাব্বত হচ্ছে ইরাদা বা ইচ্ছার একটি প্রকার। আর ইরাদা বা ইচ্ছার সম্পর্ক কেবল সম্ভাব্য বিষয়ের সাথে হয়। এ কারণে আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা ও গুণাবলীর সঙ্গে মুহাব্বতের সম্পর্ক অসম্ভব। তাই আমরা যখন একথা বলি, আমরা আল্লাহকে ভালবাসি; তখন এর দ্বারা উদ্দেশ্য হবে- আমরা আল্লাহর আনুগত্য ও খিদমত অথবা আল্লাহ প্রদত্ত সওয়াব, প্রতিদান ও দয়াকে ভালবাসি।
"সুফিয়ায়ে কিরামগণ বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা শুধুমাত্র তাঁর সত্তার কারণে ভালবাসেন এবং তাঁর প্রদত্ত খিদমত, সওয়াব ও প্রতিদানকে মুহাব্বত করা মানে তাঁর দেওয়া ইহসান ও সওয়াবের স্বাদ গ্রহণ করা। এ স্বাদ ও দুঃখ-দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া তাঁর আনুগত্য ও খিদমতের ওপর নির্ভরশীল। এজন্যে আমরা আল্লাহ্ তা‘আলার আনুগত্য করাকে ভালবাসি। আর এটাই হলো আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভালবাসার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও মর্মার্থ। যেমন- আমরা বলি যে, আমরা হযরত ইমাম আবু হানিফা এবং হযরত ইমাম শাফেঈ রাহমাতুল্লাহি আলাইহিমাসহ অন্যান্য সকল ইমামকে ভালবাসি- এটা তাঁদের ইলম ও ফিক্হ শাস্ত্রে পান্ডিত্য ও গভীর জ্ঞানের কারণে। অনুরূপভাবে কেউ যদি বলেন- বেলায়তের অধিকারী অমুক ওলীকে মুহাব্বত করি- এটা তাঁর ইবাদত, রিয়াযত, তাকওয়া পরহেযগারীর কারণে। মানুষ হাতেম তাঈকে তাঁর দানশীলতা ও বদান্যতার কারণে ভালবাসে। পরম সুন্দর ও লাবণ্যময় ব্যক্তিকে তার সৌন্দর্যের কারণে মুহাব্বত করে। রাজা-বাদশা ও আমীর-ওমারাদেরকে ভালবাসে তাঁদের বীরত্ব, সাহসিকতা, নির্ভীকতা ও রাজনীতির কারণে। কিন্তু উপরিউক্ত সকল গুণাবলী পরিপূর্ণতার সাথে সত্তাগতভাবে একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার জন্যেই নিহিত; অন্যান্যদের গুণাবলী সত্তাগত নয়। তাই কাউকে যদি পরিপূর্ণ গুণাবলীর কারণে ভালবাসতে হয়, তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলাই এর পরিপূর্ণ ও অধিক হকদার। কারণ পরিপূর্ণ গুণাবলীর অধিকারী সত্তাগতভাবে একমাত্র আল্লাহই।"
1. তাফসীরে রাযী এবং যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আল্লামা গোলাম রাসুল সাঈদি হানাফি চিশ্তি ছারেবী (رحمة الله)