দ্বিতীয় অধ্যায়
এ দুআ প্রসঙ্গে আপত্তি ও এর জবাবসমূহ
জানাযার পর দুআ প্রসঙ্গে চারটি আপত্তি আছে- তিনটি আকলী (যুক্ত ভিত্তিক) ও একটি নকলী (কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক)। এগুলো ব্যতীত আর কোন আপত্তি নেই।
১ নং আপত্তি: সেই পুরানো মুখস্থ করা বুলি-এ দুআ বিদ্আত এবং প্রত্যেক বিদ্আত যেহেতু হারাম, সেহেতু এ দুআও হারাম, শিরক ও অনৈসলামিক।
উত্তর: এ দুআ বিদ্আত নয়, হুযুর আলাইহিস সালামের পবিত্র বাণী ও কর্মে এর প্রমাণ রয়েছে। সাহাবায়ে কিরামও এর উপর আমল করেছেন। ফকীহগণও এর অনুমতি দিয়েছেন। যেমন প্রথম অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে। আর দি একে বিদ্আত বলে মেনেও নেয়া হয়, তাতে কোন ক্ষতি নেই। কেননা এবং প্রত্যেক বিদ্আত হারাম নয়। পাঁচ প্রকারের বিদ্আত রয়েছে। (বিদ্আত শীর্ষক আলোচনায় দেখুন)।
২ নং আপত্তি: জানাযার নামায হচ্ছে দুআ। পুনরায় দ্বিতীয়বার দুআ প্রার্থনা করা জায়েয নেই। প্রথম দুআই যথেষ্ট।
উত্তর: এ আপত্তিটা একেবারে মামুলী। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মথ্যে দুআ আছে। ইসতাহারা, চন্দ্র গ্রহণ ও বৃষ্টির জন্য নামায সবই দুআর উদ্দেশ্যেই পড়া হয়। কিন্তু এসবের পরেও দুআ প্রার্থনা করা জায়েয বরং সুন্নাত। হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন- فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ-‘‘অতঃপর তোমরা বেশী বেশী করে দোয়া কর।’’ ১৪৮
➥{ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৫/২৭৪পৃঃ হাদিস নং- ৯৪৬১, মুসলিম, আস্-সহিহ, ১/৩৫০পৃঃ হাদিস নং- ৪৮২, আবু দাউদ, আস্-সুনান, ১/২৩১পৃঃ হাদিস নং- ৮৭৫, নাসাঈ, আস্-সুনান, ১/২২৬পৃঃ হাদিস নং- ১১৩৭, ও আস্-সুনানিল কোবরা, ১/৩৬৪পৃঃ হাদিস নং- ৭২৭, ইবনে হিব্বান, আস্-সহিহ, ৫/২৫৪পৃঃ হাদিস নং- ১৯২৮, বায়হাকী, আস্-সুনানিল কোবরা, ২/১৫৮পৃঃ হাদিস নং- ২৬৮৬ }
দুআর পরে দুআ প্রার্থনা করাটাই হচ্ছে অতিরিক্ত দুআ। এটাতো কেবল দুআ মাত্র। অথচ কোন কোন অবস্থায় জানাযার নামায দ্বিতীয়বারও হয়ে থাকে। যেমন যদি মৃতব্যক্তির ওলিকে (উত্তরসূরী) বাদ দিয়ে অন্যরা নামায পড়ে ফেলেছেন, তখন তিনি দ্বিতীয়বার নামায পড়তে পারবেন। সোমবার হুযুর আলাইহিস সালামের তিরোধান হয়েছিল এবং বুধবারে দাফন করা হয়েছিল। (শামী কিতাবুস সালাত الامامت অধ্যায়ে দ্রষ্টব্য) এ দু’দিন দলে দলে মানুষ আসতে থাকে ও জানাযার নামায আদায় করতে থাকে, কেননা তখন পর্যন্ত হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক আকবর (যিনি ওলি ছিলেন) নামায পড়েননি। অতঃপর যখন হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক (رضي الله عنه) শেষ দিন নামায পড়ে নিলেন, এরপর কিয়অমত পর্যন্ত তা আর কারো জন্য বৈধ রইলো না। (ফত্ওয়ায়ে শামীর صلواة الجنازة بحث: ومن احق بالامامت শীর্ষক অধ্যায়ে দেখুন) এখন বলুন এ নামাযতো দুআই ছিল। এটা আদায়ও হয়ে গিয়েছিল। তবুও দ্বিতীয়বার নামায কিভাবে হলো? এ প্রশ্নটা যেন এ রকম-কেউ বললেন খানা খাওয়ার পর পানি পান করো না। কেননা খাবারে পানি মওজুদ রয়েছে, তা পানি দ্বারা রান্না হয়েছে।
৩নং আপত্তি: দুআ প্রার্থনা করার কারণে দাফন কার্যে দেরী হয় এবং এটা হারাম।
উত্তর: এ আপত্তিটাও ভিত্তিহীন।
প্রথমত. আপনারা এ দুআকে যে কোন অবস্থায় নিষেধ করে থাকেন। এবং উপরোক্ত আপত্তি থেকে বোঝা গেল যে দাফন কার্যে যদি দেরী হয়, তাহলে নিষেধ, অন্যথায় নয়। তাহলে বলুন, যদি এখনও কবর তৈরী হতে দেরী আছে অথচ নামাযে জানাযা হয়ে গেছে। তাহলে এ অবস্থায় দুআ ইত্যাদি পাঠ করবে কিনা? কেননা এখানে দাফন কার্যে বিলম্বটা দুআর জন্য নয় বরং করব তৈরীতে বিলম্ব হেতু।
দ্বিতীয়ত. দুআ করতে বেশী দেরী হয় না। বেশী হলে দু-তিন মিনিট লাগে। এরকম ক্ষীণ বিলম্বটা আদৌ ধর্তব্য নয়। এ রকম দেরী বরং এর থেকে আরও বেশী দেরী হয় আস্তে আস্তে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে, ধীরে সুস্থে গোসলের কাজ সমাধা করতে এবং ধৈর্য সহকারে কবর খনন করতে। যদি এতটুকু দেরীও হারাম হয়, তাহলে গোসল ও কাফনদাতাকে বিদ্যুৎ গতিতে গোসল ও কাফনের কাজ সমাধা করতে হবে, কবর খননকারীদেরকে মেশিনের মত চটপট কবর খনন করতে হবে, কফিন বহন কারীদের ইঞ্জনের মত দৌড়ে যেতে হবে এবং সাথে সাথে কবরের মধ্যে নিক্ষেপ করতে হবে।
তৃতীয়তঃ আমি প্রথম অধ্যায়ে উদ্ধৃতি সহকারে বর্ণনা করেছি যে, দাফনের আগে মৃতব্যক্তির পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন, তাদেরকে সান্তনা ও প্রবোধ দেয়া জায়েয বরং সুন্নাত। তাহলে নামাযের আগে হোক বা পরে সমবেদনা জ্ঞাপন ও সান্তনা দিতে সময় লাগবে কিনা? নিশ্চয় লাগবে। কিন্তু ধর্মীয় কাজ হেতু এটা জায়েয।
চতুর্থতঃ আমি একটু আগেই উলেখ করেছি যে, হুযুর আলাইহিস সালামের ওফাত শরীফ সোমবার এবং দাফন করা হয়েছে বুধবার।
❏ আল্লামা শামী (رحمة الله) ফত্ওয়ায়ে শামীর কিতাবুস সালাতেরبَابُ الْإِمَامَةِ শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণনা করার পর বলেছেন-
وَهَذِهِ السُّنَّةُ بَاقِيَةٌ إلَى الْآنَ لَمْ يُدْفَنْ خَلِيفَةٌ حَتَّى يُوَلَّى غَيْرُهُ.
-‘‘এ সুন্নাত এখনও বলবৎ আছে। কোন খলীফা ততক্ষণ পর্যন্ত দাফন করা হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন খলীফা মনোনীত না হয়।’’ ১৪৯
➥{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রুদ্দুল মুহতার, ১/৫৪৮ পৃঃ পরিচ্ছেদ: بَابُ الْإِمَامَةِ}
এর থেকে বোঝা গেল, দুনিয়াবী কারণে দাফনকার্যে দেরী করা মাকরূহ কিন্তু ধর্মীয় কারণে জায়েয। এ জন্য দাফনকার্যে দেরী করার কথা বলা হয়েছে। দুআ প্রার্থনা করাও ধর্মীয় কাজ। যদি কেউ নামাযের শেষ মুহুর্তে শামিল হয়, তাহলে সে দুআ পড়ে সালাম ফিরাতে পারবে। কিন্তু যদি নামাযের পরে সংগে সংগে লাশ উঠিয়ে ফেলে, তাহলে সে লোকটি দুআ শেষ করতে পারবে না। কেননা উঠানো জানাযার নামায হয় না। সুতরাং পরে আসা নামাযীদের জন্যও জানাযার নামাযের পর দুআ করার ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে। যদি দেরীটা আঁচ করার মত হয়, তাহলে জায়েয। পঞ্চমতঃ শর্তহীনভাবে দাফনকার্যে দেরী করাটা যে হারাম, কোন্ কিতাবে আছে? ফকীহগণ বলেন, জুমাবার কেউ মারা গেলে, জুমার নামায পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই বরং সম্ভব হলে জুমার আগেই দাফন করবেন। কিন্তু এটা বলেননি যে অপেক্ষা করাটা হারাম, শিরক, কুফরী। আল্লাহ মাফ করুন।
৪ নং আপত্তি: ফকিহগণ জানাযার পর দুআ করা নিষেধ বলেন।
❏ যেমন ‘জামেউর রমুজ’ গ্রন্থে বর্ণিত আছে,
لَايَقَوْمُ دَاعِيًا لَهُ.
-‘‘জানাযার নামাযের পর দুআর জন্য দাঁড়িয়ে থাকবেন না।’’
❏ যখিরাতুল কুবরা ও ‘মুহিত’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে
لَايَقَوْمُ بِالدُّعَاءِ بَعْدَ صَلَوةِ الجَنَازَةِ .
-‘‘জানাযার নামাযের পর দুআর জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না।’’
❏ ফাত্ওয়ায়ে আলমগীরীতে উলেখিত আছে -
لَا يَدْعُوْا بَعْدَهُ فِى ظَاهِرِ الْمَذْهَبِ.
-‘‘মাযহাবের প্রকাশ্য অভিমত হচ্ছে, এরপর দুআ না করা।’’
❏ মিরকাত শরহে মিশকাতে বর্ণিত আছে-
وَلَا يَدْعُو لِلْمَيِّتِ بَعْدَ صَلَاةِ الْجَنَازَةِ لِأَنَّهُ يُشْبِهُ الزِّيَادَةَ فِي صَلَاةِ الْجَنَازَةِ.
-‘‘জানাযার নামাযের পর মৃতব্যক্তির জন্য দুআ করবেন না।’’ ১৫০
➥{মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৩/১২১৩পৃঃ হাদিস নং- ১৬৮৭, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ- ১৪২২হিঃ}
কেননা, এটা নামাযে জানাযার পরিবর্ধনের মত।
❏ কাশফুল গিতারে বর্ণিত আছে-
قائم نه شود از نماز برائے دعا.
-‘‘জানাযার নামাযের পর দুআর জন্য দাঁড়িয়ে থাকবেন না।’’
❏ জামেউর রমুযে আছে-
وَلَايَقَوْمُ بِالدُّعَاءِ بَعْدَ صَلَوةِ الجَنَازَةِ المَكْرُوْة.
-‘‘জানাযার নামাযের পর দুআ করা মাকরূহ। কেননা এটা পরিবর্তন সাদৃশ্য।’’
❏ ইবনে হামিদ থেকে বর্ণিত আছে-
اِنَّ الدُّعَاءِ بَعْدَ صَلَوةِ الجَنَازَةِ المَكْرُوْة.
-‘‘জানাযার নামাযের পর দুআর করা মাকরূহ।’’
উপরোলিখিত ভাষ্য সমূহ থেকে বোঝা গেল, জানাযার নামাযের পর দুআ ইত্যাদি নাজায়েয।
উত্তর: এ আপত্তির দুঃরকমের উত্তর দেয়া যায়-সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিতভাবে। সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো, এ দুআ নিষেধ করার পিছনে তিনটি কারণ আছে।
প্রথমতঃ চতুর্থ তকবীরের পর সালামের আগে যদি দুআ করা হয়,
দ্বিতীয়তঃ দুআটা যদি দীর্ঘক্ষণ হয়, যার ফলে দাফনে দেরী হয়। এজন্যে জুমআর অপক্ষোয় দাফনকার্যে দেরী করা নিষেধ।
তৃতীয়তঃ যদি নামাযের মত কাতারবন্দী অবস্থায় এভাবে দুআ করা হয় যে, দর্শকরা নামায হচ্ছে বলে মনে করে। কেননা এটা পরিবর্ধন সদৃশ। সুতরাং যদি সালাম ফিরানোর পর বসে কিংবা কাতার ভেংগে মাত্র অল্পক্ষণ দুআ করা হয়, তাহলে মাকরূহহীনভাবে জায়েয। এ কারণ সমূহ এ জন্যই বের করা হয়েছে, যাতে ফকীহগণের ইবারতসমূহে পরষ্পর দ্বন্ধ সৃষ্টি না হয় এবং উপরোক্ত উক্তিসমূহ যেন প্রথম অধ্যায়ে বর্ণিত হাদীছসমূহের ও সাহাবায়ে কিরামের উক্তি ও আমলের বিপরীত না হয়।
বিশ্লেষণমূলক উত্তর হচ্ছে উপরোক্ত ইবারত সমূহের মধ্যে জামেউল রুমুয, যখিরা, মুহিত ও কাশফুল গিতারের ইবারত সমূহে দুআ করা সম্পর্কে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বরং দাঁড়িয়ে দুআ করাকে নিষেধ বলেছেন। আমরাও সেটা নিষেধ করি। মিরকাত ও জামেউল রুমুযে এটাও উলেখিত আছে لِأَنَّهُ يُشْبِهُ الزِّيَادَةَ এটা অতিরিক্ত সদৃশ অর্থাৎ যে দুআর ফলে নামাযের জানাযার মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে বলে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়। এর থেকে বোঝা গেল এভাবে দুআ করা নিষেধ, যেখানে ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ থাকে। যেমন কাতার বন্দী অবস্থায় দাঁড়িয়ে দুআ করা। যদি কাতার ভেংগে ফেলে বা বসে পড়ে, তাহলে কোন অসুবিধা নেই। ফরয জামাতের পর নির্দেশ আছে যে মুসলিগণ যেন কাতার ভেংগে দিয়ে সুন্নাত পড়ে, যাতে জামাত হচ্ছে বলে কারও সন্দেহ না হয়। (ফাত্ওয়ায়ে শামী ও মিশকাত শরীফের السنن অধ্যায় দেখুন) এর থেকে এটা প্রকাশ পায় না যে ফরযের পরে সুন্নাত পড়া নিষেধ বরং ফরযের সাথে মিলিয়ে পড়াটাই নিষেধ। জানাযার পর দুআটাও তথৈবচ।
❏ আলমগীরীর যে ইবারত উদ্ধৃত করা হয়েছে তা ভুল। এর আসল ইবারত হচ্ছে
وَلَيْسَ بَعْدَ التَّكْبِيرَةِ الرَّابِعَةِ قَبْلَ السَّلَامِ دُعَاءٌ هَكَذَا فِي شَرْحِ الْجَامِعِ الصَّغِيرِ لِقَاضِي خَانْ. وَهُوَ ظَاهِرُ الْمَذْهَبِ.
-‘‘চতুর্থ তকবীরের পর সালামের আগে কোন দুআ নেই।’’ ১৫১
➥{নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৬৪, পরিচ্ছেদ: الْفَصْلُ الرَّابِعُ فِي حَمْلِ الْجِنَازَةِ, জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ শরহে কুদুরী, পৃষ্ঠা-১৩৮}
অর্থাৎ জানাযার নামাযে প্রথম তিন তকবীরের পর কিছু না কিছু পাঠ করা হয় কিন্তু তকবীরের পর কিছুই পাঠ করা যাবে না, যেমন আমি প্রথমে উলেখ করেছি।
❏ বাদাইয়া, কেফাইয়া ও এনায়া গ্রন্থে উলেখিত আছে-
وَلَيْسَ بَعْدَ التَّكْبِيرَةِ الرَّابِعَةِ قَبْلَ السَّلَامِ دُعَاءٌ.
-‘‘চতুর্থ তকবীরের পর সালামের আগে কোন দুআ নেই।’’ ১৫২
➥{আল্লামা আইনী, বেনায়া শরহে হেদায়া, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২৫৩}
ইবনে হামিদের নামে যে ইবারত উদ্ধৃত করা হয়েছে, এটা আসলে কুনিয়া গ্রন্থের ইবারত। কিন্তু কুনিয়া কোন গ্রহনযোগ্য কিতাব নয়। এর থেকে ফাত্ওয়া দেয়া যায় না। মুকাদ্দামায়ে শামীর رسم المفتى শীর্ষক আলোচনায় বর্ণিত আছে যে, কুনিয়া গ্রন্থের রচয়িতা দুর্বল রিওয়ায়েতও গ্রহণ করে। তাই ওই গ্রন্থ থেকে ফত্ওয়া দেয়া জায়েয হবে না।
❏ শামীর ইবারতটা হচ্ছে এ রকম -
أَوْ لِنَقْلِ الْأَقْوَالِ الضَّعِيفَةِ فِيهَا كَالْقُنْيَةِ لِلزَّاهِدِيِّ، فَلَا يَجُوزُ الْإِفْتَاءُ مِنْ هَذِهِ.
-‘‘......তেমনিভাবে দুর্বল মতের কিতাব দ্বারা ফাতওয়া দেয়া যেমন জাহেদীর কুনিয়া কিতাব। আর এ ধরনের কিতাব দ্বারা ফাতওয়া দেওয়া বৈধ নয়।’’ ১৫৩
➥{ইবনে আবেদীন শামী, ফাতোয়ায়ে শামী, ১/৭০পৃঃ }
❏ আলা হযরত (رحمة الله) ‘বজলুল জওয়ায়ে’ গ্রন্থে উলেখ করেছেন যে, কুনিয়া গ্রন্থের রচয়িতা হচ্ছে মুতাযলী।
এবং যদি কুনিয়ার এ ইবারত সঠিকও মেনে নেয়া হয়, তা স্বয়ং বিরোধিতাকারীদেরও বিপরীত হবে, কেননা ছাহেবে কুনিয়া বলেন যে জানাযার পর দুআ করা নিষেধ; তাহলে দাফনের পরও দুআ নাজায়েয হওয়া উচিত। কারণ এ সময়টা নামাযে জানাযার আগে নয়। মোটকথা কোন ইবারতই আপনাদের অনুকূলে নয়। জানাযার নামাযের পর দুআ জায়েয বরং সুন্নাত।
━━━━