❏ প্রশ্ন-৪৫ঃ সিদরাতুল মুন্তাহা ও সিদরাতুন নবী কাকে বলে এবং উভয়ের মধ্যে পার্থক্য কি?


✍ উত্তরঃ সিদরাতুল মুন্তাহা মি‘রাজ শরীফের হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ‘সিদরা’ অর্থ- বরই গাছ বা কুল বৃক্ষ। সিদ্রাতুল মুন্তাহা ওই কুল বৃক্ষকে বলা হয়, যা সপ্ত আসমানের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। ফেরেশতাকুল সরদার সৈয়্যদুনা জিবরাঈল (عليه السلام)-এর উর্ধ্বকাশের শেষ গমনস্থল, এর সামনে এক চুল পরিমাণও তিনি যেতে সক্ষম নন। পৃথিবী থেকে যা কিছু আকাশের দিকে উঠানো হয় এবং আসমান থেকে যা কিছু পৃথিবীতে অবতরণ করা হয় সব কিছু ‘সিদরাতুল মুন্তকাহা’য় গিয়ে থেমে যায়। অতঃপর সেখান থেকে ফেরেশতারা উপরে নিয়ে যায় এবং নীচে নিয়ে আসে। 

60. মিশকাত শরীফ।


কোরআন মজিদের ‘সূরা আন-নাজমে’ এভাবে বর্ণিত হয়


أَفَتُمَارُونَهُ عَلَى مَا يَرَى . وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى . عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى . عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَى . إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَى .


‘তোমরা কি বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যুক্তিতর্কে লিপ্ত হয়েছ? অথচ এটা তর্কের বিষয় নয়। কেননা তিনি তো মি‘রাজ রজনীতে সিদরাতুল মুন্তাহায় যা পূণ্যবানদের অবস্থান করার অনেক স্থান রয়েছে। সৈয়্যদুনা জিবরাইল (عليه السلام) তাঁর প্রকৃত আকৃতিতে আরো একবার তাঁর নিকট আসা অবস্থায় দেখেছিলেন। যখন ওই সিদ্রার ওপর নূরের ছায়া ছিল সিদ্রাতুল মুন্তাহার নিকটে। যার নিকট রয়েছে ‘জান্নাতুল মাওয়া’। যখন বৃক্ষটি আচ্ছন্ন করেছিল, যা আচ্ছন্ন করার ছিল।’  

61. সূরা আন-নজম, আয়াতঃ ১২-১৬।


প্রশ্নোলি­খিত ‘সিদরাতুল মুন্তাহা, যা কোরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত এবং ‘সিদরাতুন নবী’ যা সম্পর্কে হাদীস ও ইতিহাসে বর্ণনা আছে। ‘সিদরাতুল মুন্তাহা’ আসমানে এবং ‘সিদরাতুন্ নবী’ পৃথিবীতে অবস্থিত। ঘটনাটি এভাবে বর্ণিত আছে যে, একটি কুল বৃক্ষ হুযূর (ﷺ) -এর মু’জিযা স্বরূপ দ্বিখন্ডিত হয়ে গিয়েছিল। একদা হুযূর মোস্তফা (ﷺ) উটের ওপর আরোহন করে অন্ধকার রাত্রে সফর করছিলেন এবং তাঁর চোখে তন্দ্রারভাব এসেছিল। এমতাবস্থায় তিনি   নিদ্রার জন্য ঘুমাতে গেলে সামনে একটি কুল বৃক্ষ এসে দ্বিখন্ডিত হয়ে তাঁর দু’পাশের্ব দু’ভাগ হয়ে তাকে পরিবেষ্টন করে নিল। তিনি   কোন অসুবিধা ছাড়া অত্যন্ত নিরাপদে মাঝখানে ঢুকে ঘুমাচ্ছিলেন এবং সে অবস্থা ঘুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছিল। তাই উক্ত গাছটি 'সিদরাতুন নবী’ নামে প্রসিদ্ধ হয়।  

62. ইসলামী মা‘লুমাত কা মাখযন, পৃষ্ঠা-৪০২।

Top