❏ প্রশ্ন : রাসূল (ﷺ) নবীগণের নবী কিনা? بعثت إلى الناس كافة (আমি সকল মানুষের কাছে প্রেরিত হয়েছি) এর দ্বারা কী উদ্দেশ্য? রাসূলের যুগ থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত মানুষ উদ্দেশ্য, নাকি আগের নবী রাসূলের যুগের লোকও উদ্দেশ্য? এমন হলে শাখা মাসআলায় ইখতিলাফ কেন?


✍ জবাব : وبه نستعين হাফেয আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (رحمة الله) বলেন, নবুওয়াতে মোস্তফাবিয়া ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক বড়। মৌলিক বিষয়ের ক্ষেত্রে অন্য নবীগণের শরীয়াতের থেকে ভিন্নতা নেই। বরং তাদের সাথে মিল আছে। কিছু শাখাগত মাসআলার মধ্যে যে ইখতেলাফ রয়েছে, তা হয়তো বিশেষত্বের, নতুবা রহিতের কারণে। অথবা একথা মনে করতে হবে যে, সেই উম্মতের জন্য আমাদের নবীর সেই শরীয়াত ছিলো। যা তাদের কাছে তাদের নবীগণ নিয়ে এসেছে। আর আমাদের জন্য এই শরীয়াত। যা রাসূল (ﷺ) নিজে নিয়ে এসেছেন। শাখাগত ইখতিলাফের একটি বাস্তবতা হলো, সময় ও ব্যক্তির পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তন হয়। এই ব্যাখ্যার দ্বারা দুটি হাদীসের ব্যাখ্যাও স্পষ্ট হয়ে গেলো। যা আগে আমাদের থেকে গোপন ছিলো। প্রথমে ঐ হাদীস, بعثت إلى الناس كافة প্রথমে আমাদের ধারণা ছিলো, রাসূল (ﷺ) এর যুগ থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষ। কিন্তু এখন জানা গেলো, এর আগে ও পরের সকল মানুষ।


অন্য হাদীস كنت نبيا وأدم بين الروح والجسد ‘আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন হযরত আদম আ. রূহ শরীরের মাছে ছিলেন।’ আগে আমাদের ধারণা ছিলো, এর দ্বারা উদ্দেশ্য আল্লাহর ইলমে তার নবী হওয়ার উদ্দেশ্য। কিন্তু এখন জানতে পারলাম যে, এর অর্থ অনেক ব্যাপক। সুতরাং রাসূল (ﷺ) এর অস্থিত্বের প্রকাশ এবং চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত পৌঁছার পরে এবং তার আগের অবস্থা ও পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য হলো, তাদের কাছে প্রেরিত করা এবং তার নববী বাণী শ্রবণের যোগ্যতার দিক থেকে। তিনি নবী হওয়া ও তারা উম্মাত হওয়ার দিক থেকে কোনো পার্থক্য নেই। তারা এর আগে নববী বাণী শ্রবণের যোগ্য হতো তাহলে তাকে আগেই প্রেরণ করা হতো। বিধান শর্তযুক্ত হওয়া কখনো পরিবেশের কারণে হয়। কখনো ব্যক্তির কারণে হয়। এখনে শর্ত পরিবেশের কারণে। আর সে পরিবেশ হলো, তিনি লোকদের দিকে প্রেরিত হওয়া এবং তার কথা শ্রবণকে গ্রহণ করা। এই পবিত্র শরীরের হাত তারা গ্রহণ করা। যখন তিনি তাদের সাথে মিষ্টি মুখে কথা বলবে।


এর দৃষ্টান্ত হলো এমন, কোনো পিতা কাউকে এই কথা উকিল বানালো যে, তার জন্য যখন উপযুক্ত পাত্র পাওয়া যাবে তার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিবে। তার উকিল বানানো ঠিক আছে। লোকটা উকিল হওয়ার যোগ্য হয়ে যাবে। তার উকিল হওয়া প্রমাণিতহয়ে যাবে। এবার তার কার্যক্ষমতা উপযুক্ত পাত্র পাওয়ার উপর স্থগিত থাকবে। আর একথা স্পষ্ট যে, উপযুক্ত পাত্র কিছু দিন পরেই পাওয়া যাবে। এই বিলম্ব উকিল শুদ্ধ হওয়া ও উকিল হওয়ার যোগ্যতার মাঝে বৈপরিত্ব নেই। যেমনটি বলেছেন, ইমাম তাকী উদ্দীন সুবকী। শায়খ জালাল উদ্দীন সুয়ূতী এমনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। (খাসায়েসে কোবরা প্রথম খন্ড)

Top