গায়াতুল মামুলের খণ্ডন


আমি বলছি, এ উক্তিসমূহ দ্বারা হযরত সৈয়দুনা ইবনে আব্বাস  (رضي الله عنه)-এর বাণীর হাকীকত সুস্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন- যদি আমার উটও হারিয়ে যায় তবে নিশ্চয়ই তা 'কিতাবুল্লাহ’ থেকেই পেয়ে যাবাে। এটা আবুল ফজল মুরসী তার থেকে বর্ণনা করেছেন। যেমন তাফসীরে ইতকানে রয়েছে নিঃসন্দেহে কুরআনে কারীমে তাই রয়েছে যে তা পাওয়ার পন্থা বলে দেয়। এটাই শীর্ষস্থানীয় ইমাম আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (رحمة الله) তাফসীরে ইতকানে’ তেতাল্লিশতম অধায়ে বর্ণনা করছেন। ইমাম আবু মুহাম্মদ মুফাসসির জুয়াইনী (রাহঃ) বলেছেন, কতেক ইমাম আল্লাহ তায়ালার বাণী الٓـمّٓ. غُلِبَتِ  الرُّوۡمُ  ১৩ থেকে (মাসয়ালা) বের করেছেন যে,মুসলমানরা ৫৮৩ হিজরী সনে বায়তুল মােকাদ্দাস বিজয় করবেন। তারা যাই বলেছেন, তাই হয়েছে।

 আমি বলছি, ৫৮৩ হিজরী সনে বায়তুল মােকাদ্দাস বিজয় হওয়াই সুস্পষ্ট, ঐতিহাসিকগণ তাই বর্ণনা করেছেন। যেমন তারীখে কামিলে’ ইবনে আসীর (رحمة الله) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু জুয়াইনীর মৃত্যু তা বিজয় হবার প্রায় দেড়’শ বছর পূর্বেই হয়েছে। তাহলে ঐ ইমাম যাঁর থেকে জুয়াইনী এ কাহিনী বর্ণনা করেছেন কিভাবে তিনি তা বর্ণনা করলেন? ইবনে খালকান বলেছেন, “আবু মােহাম্মদ জুয়াইনী ৩৮ হিজরী জিলহজ্জ মাসে ইন্তেকাল করেন। 

আল্লামা সামনী কিতাবুজ জাইলেও অনুরূপ মত ব্যক্ত করেন। আর ‘আনসাব' নামক কিতাবে তার নিবাস নিশাপুর' বলে উল্লেখ রয়েছে। 

মােট কথা, বক্তব্যের ঘটনাবলী ইমাম জুয়াইনীর বক্তব্যের ন্যায়। আল্লাহ তায়ালা উভয়কে দয়া করুক। সুতরাং পবিত্রতা ঐ ব্যক্তির জন্য যিনি তাঁর নবীর সদকায় এ মরহুম উম্মতকে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করেছেন। তাঁর উপর আল্লাহর দরুদ ও সালাম এবং বরকত ও সালাম তাঁর সকল উম্মতের উপর। আর স্বীয় সত্তার শপথ! যদি ঐ সকল লােকদের বলা হয়, বলাে এরা الٓـمّٓ. غُلِبَتِ  الرُّوۡمُ আয়াত থেকে কিভাবে বের করেছে? তাহলে অবশ্যই। তারা হতবাক হয়ে যাবে এবং কোন জবাব দিতে পারবেনা। তাহলে আমরা কিভাবে অজ্ঞতার সাথে উম্মতের উস্তাদ, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رحمة الله)-এর উপর হুকুম প্রয়ােগ করবাে? যার জন্য রাসূলে করীম (ﷺ) আশীর্বাদ করেছেন- হে আল্লাহ তাঁকে কিতাবের জ্ঞান প্রদান করুন। ইবনে সুরাকাহ কিতাবুল এজাজে ইমাম আবু বকর ইবনে মুজাহিদের সূত্রে বর্ণনা করেন, সৃষ্টি জগতে এমন কোন জ্ঞান নেই যা আল্লাহর কিতাবে নেই।তাবাকৃাত’ গ্রন্থে সৈয়দ ইব্রাহীম দাসাওয়াতীর (رحمة الله) জীবন চরিত্রের বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলতেন ' যদি আল্লাহ তায়ালা তােমাদের হৃদয়ের তালা উন্মুক্ত করে দেন, তাহলে তােমরা কুরআনের আশ্চর্যাবলী, হিকমত ও জ্ঞানসমূহ সম্পর্কে অবহিত হয়ে যাবে। আর ব্যতীত অন্য সব কিছুতে দৃষ্টি করা থেকে বেপরােয়া হয়ে যাও যে, অস্তিত্বময় পৃষ্ঠাসমূহে যা কিছু লিপিবদ্ধ হয়েছে তা সবই এতে বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন--“আমি কুরআনে করীম কোন কিছু উঠিয়ে রাখিনি। ইবনে জাবের ও ইবনে আবী হাতিম স্বীয় তাফসীরসমূহে’ হযরত আবদুর রহমান ইবনে জায়েদ ইবনে আসলাম (আমীরুল মুমেনীন হযরত ওমর ফারুক  (رضي الله عنه) এর আজাদ কৃত গােলাম) থেকে আল্লাহ তায়ালার আয়াত- “আমি কুরআনে কোন কিছু বাদ দিইনি’-এর তাফসীরে বলেছেন, আমরা কুরআন থেকে অন্যমনস্ক হবাে না, কোন বস্তু এমন নেই যা তাতে উল্লেখ নেই। দায়লমী মুসনাদুল ফেরদৌসে হযরত আনাস ইবনে মালিক  (رضي الله عنه)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসুলে পাক(ﷺ) ইরশাদ করেছেন-‘পূর্বাপর সকল বস্তুর জ্ঞান কুরআনে খোঁজ করলে পাওয়া যাবে। ইতিপূর্বে আমি এ হাদীস হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ-এর সূত্রে উল্লেখ করেছি। সুতরাং এ থেকে আমি আরম্ভ করেছি এবং এরই উপর সমাপ্ত করেছি। নিঃসন্দেহে আপনার নিকট তাখসিসের (খাস হওয়া) ঐকমত্যের দাবী বাতিল হওয়া প্রকাশিত হয়েছে।



সুতরাং আল্লাহ তায়ালা স্বীয় কিতাবে কোন বস্তু ত্যাগ করার ধারণা। গ্রহণযােগ্য হবেনা। শব্দততা নস (অকাট্য বক্তব্য) সমুহের অধিক নস"। (ব্যাপকতার) উপর। অতএব, স্পষ্ট ও বিস্তারিত বর্ণনা থেকে কোন বস্তু বাদ যাওয়া শুদ্ধ হতে পারে না। আর (ব্যাপক শব্দ) ১ (যে কোন একক-এর উপর প্রভাবের) ব্যাপারে নিশ্চিত ও অকাট্য। আর নসসমূহকে তার জাহির অর্থের উপর প্রতিপন্ন করা আবশ্যক যতক্ষণ এর উপর কোন বিশুদ্ধ দলীল তাকে (খাস ও বিশ্লেষণকরণ) ভিন্ন দিকে না নিয়ে যাবে এবং যতক্ষণ কোন দলীল বাধ্য না করবে। তাখসীস’ ও ‘তাভীল’ হচ্ছে বক্তব্যের পরিবর্তন করা। দলীল ছাড়া তা করা হলে শরীয়ত থেকে নিরাপত্তাই উঠে যাবে। আর হাদীসে আহাদ যত বিশুদ্ধই হােকনা কেন কুরআনের ব্যাপকতাকে নির্দিষ্ট করতে পারবে না। বরং এর সম্মুখে অস্তিত্বহীন হয়ে যাবে। সুতরাং হাদীস ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ের আলাপ-আলােচনারতাে প্রশ্নই উঠেনা। আর যে তাখসীস আ’মকে তার অকাট্যতা থেকে পরিত্যাগ করেনা, আর যে বস্তু। তাখসীসে আকলীর কারণে আমের কায়দা থেকে বের হয়ে যায় তা সনদ বানিয়ে কোন সন্দেহজনক দলীল দ্বারা খাস করা যায় না। সুতরাং আল্লাহরই প্রশংসা যে, বিশ্লেষণ যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত হলাে। 

বাকী রইলাে, যদি তােমরা এর বিপরীত মত পােষণ করাে, আর যদি কোন উক্তি তােমাদের উপর পাঠ করা হয় এবং তা তােমাদের মনঃপুত না হয়, আর তা অন্যের উপর ঝুঁকে পড়তে দেখাে, তাহলে তা সর্বশেষ প্রচেষ্টায় প্রতিহত করতে চাও এবং প্রত্যেক ব্যাপকতাকে খাসের দিকে ফিরিয়ে দাও, আর ব্যাপকতা স্বীকার করে বলে দাও যে, তা খাস হওয়ার উপর ব্যবহার করা অপরিহার্য। সুতরাং নিজ কুপ্রবৃত্তির হুকুম এবং নসসমূহের সাথে স্বেচ্ছাচারিতা এবং যদি এটা বৈধ হয় তবে আম ও খাসসমূহের মধ্যে মূলত কোন বৈপরীত্য অবশিষ্ট থাকে না। যেমন তা কারাে নিকট গােপনীয় নয়। আর আল্লাহই পথ প্রদর্শনকারী। (দেখুন, তার পুস্তিকার ৭, ৮ ও ৩১ পৃষ্ঠা)


(1) বাক্যগত অকাট্যতা ও উসুলগত অকাট্যতা অর্থাৎ উসুলে ফিক্বাহ-এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তােমরা কি দেখছােনা যে, ব্যাপক অকাট্যতা হলাে গবেষণামূলক। সুতরাং বাক্যগত অকাট্যতার সম্মুখে তা কিছুই নয়। অতএব, কোন হানাফীর কুরআনের ব্যাপকতা দ্বারা প্রমাণ স্থির করা এবং তাঁর মাযহাবে এর হুকুম অকাট্য হওয়া, আল্লাহ তায়ালার মর্মার্থের উপর দৃঢ়ভাবে না কোন হুকুম প্রয়ােগ করে, আর না তাভীলের (বিশ্লেষণ) গন্ডি থেকে বহিভূত করে, যেমন বিবেকবান আলিমদের নিকট গােপনীয় নয়।


আমাদের নবী--(যা সংঘটিত হয়েছে আর যা ভবিষ্যতে হবে) সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন (১)। আপনাদের নিকট প্রতীয়মান হলাে যে, রাসুলে পাক(ﷺ)-এর জ্ঞান কুরআন করীম থেকেই অর্জিত। আর প্রত্যেক বস্তুর স্পষ্ট বর্ণনা এবং প্রত্যেক বস্তুর বিস্তারিত হওয়া এ পবিত্র কিতাবেরই গুণ ও বৈশিষ্ট্য। বরঞ্চ এর একেকটি আয়াত কিংবা একেকটি সুরারও এ বৈশিষ্ট্য। আর কুরআন করীম একবারে নাজিল হয়নি, বরং অল্প-অল্প (প্রয়ােজনানুসারে) আনুমানিক তেইশ বছরে নাজিল হয়েছে। সুতরাং যখন নবীর উপর কোন আয়াত কিংবা সুরা নাজিল হতাে, রাসুলে পাক (ﷺ)-এর জ্ঞানের উপর জ্ঞান ততই বৃদ্ধি পেতে থাকতাে। শেষ পর্যন্ত যখন কুরআন অবতরণ পরিপূর্ণ হলাে, প্রত্যেক বস্তুর বিস্তারিত সুস্পষ্ট বর্ণনাও পূর্ণ হলাে। আল্লাহ তায়ালা আপন হাবীব (ﷺ))-এর উপর স্বীয় নিয়ামতের পূর্ণতা দান করলেন যা কুরআনে। করীমে তাঁর সাথে অঙ্গীকার করেছিলেন।

 (১) মদীনা শরীফের কতেক ওলামায়ে কিরাম প্রতিবাদ স্বরূপ তাওরীতে আল্লাহ্ তায়ালার আয়াত تفصيلا لكل شيء পেশ করলেন। আমি বললাম, তাওরীতে কোন দলীল খাস হওয়ার উপর রয়েছে কিনা? দ্বিতীয়টির ভিত্তিতে অস্বীকারের কারণ কি? আর প্রথমটির ভিত্তিতে স্থায়িত্বের দলীল হযরত কলিমুল্লাহ (عليه السلام) সম্পর্কে কিভাবে হবে? মাহবুবে খােদা(ﷺ) এর সম্পর্কে স্থায়ীত্বের দলীল এবং কোন শব্দ একস্থানে দলীলসহ খাস হওয়া ও অন্যস্থানে দলীলবিহীন খাসকে আবশ্যক করে না। তখন নিশ্ৰুপতা অবলম্বন করেন এবং কোন কথা বলেননি। আমি এখন বলছি, ইবনে আবী হাতিম মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, যখন হযরত মুসা (عليه السلام) আলওয়াহ' নিক্ষেপ করেন তখন হেদায়েত ও রহমত ছাড়া অবশিষ্ট আর বিশ্লেষণ উঠে গেছে। তিনি আবু মা'বদ ও ইবনে মুনজির তাঁর থেকে রেওয়ায়েত করেন, সাঈদ ইবনে জুবায়র বলেন, তাওরীতের তখতীসমূহ যমরুদ (মূল্যবান পান্না):-এর ছিলাে। হযরত মুসা (عليه السلام) যখন তা নিক্ষেপ করেছিলেন, তখন বিশ্লেষণ উঠে গেছে আর হেদায়েত ও রহমত অবশিষ্ট রয়ে গেছে এবং তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন, (আর আমি তােমাকে পটে লিখে দিয়েছি সর্বপ্রকার উপদেশ ও বিস্তারিত সব বিষয়) আর এ আয়াত তেলাওয়াত করেন, (তারপর যখন মুসার (عليه السلام) রাগ পড়ে গেলাে, তখন তিনি তখতীগুলাে তুলে নিলেন আর যা কিছু তাতে লিখা ছিলাে, সেসমস্ত লােকের জন্য হেদায়েত ও রহমত যারা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করে এবং বলেন যে, এখানে বিস্তারিত বিষয়ের বর্ণনা করেন নি। অতএব, সন্দেহ দূরিভূত হয়ে গেলাে। এদিকে

এমতাবস্থায় কুরআন করীম নাজিল সমাপ্ত হওয়ার পূর্বে যদি রাসুলে পাক (ﷺ)কে লক্ষ্য করে কতেক নবীদের ব্যাপারে এ কথা হয় যে, আমি এর বর্ণনা | আপনার কাছে করিনি, অনুরূপ মুনাফিকদের ব্যাপারে যে, আপনি তাদের চিনতে 

পারেন নি অথবা রাসুলে পাক (ﷺ) কোন ঘটনা কিংবা কর্মে নিরবতা পালন করেছেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত ওহী নাজিল হয়েছে এবং জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাহলে এগুলাে না ঐসকল আয়াতের অস্বীকৃতি বাচক, না রাসুলে পাক (ﷺ)-এর জ্ঞানের পরিব্যাপ্তির অস্বীকার। যেমন সুবিবেচকদের নিকট গােপন নয়।

       অতএব, রাসুলে পাক (ﷺ)-এর জ্ঞান অস্বীকারের ব্যাপারে যত প্রকার কাহিনী ও বর্ণনাবলী দ্বারা ওহাবীরা সনদ গ্রহণ করে, যদি এসব কাহিনীর। ইতিহাস জানা না থাকে, তাহলে এর দ্বারা সনদ গ্রহণ বােকামি ও মুখতা বৈ কিছু নয়। এ কারণে যে, হতে পারে এ সকল কাহিনী ও ঘটনাবলী কুরআন করীম নাজিল সমাপ্তির পূর্বেকার সংঘটিত হয়েছে। যদি জানা যায় যে, এর ইতিহাস নাজিল সমাপ্তির পূর্বের, তাহলে এর দ্বারা সনদ গ্রহণ কাঁটাযুক্ত বৃক্ষকে হাত দ্বারা। কোষমুক্ত করার মত যা সম্পূর্ণ পাগলামী। আর পাগলও রং বেরঙের হয়। আর যদি ইতিহাস পরের হয় এবং দাবীদারদের দাবীর পক্ষে কোন প্রমাণ না থাকে, তাহলে প্রমাণকারী আহমক এবং এর দ্বারা প্রমাণ স্থির করা অসম্ভব। আমি স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসা করছি এবং সব প্রশংসা সেই মহান সত্ত্বারই প্রাপ্য। নবী করিম (ﷺ) এর জ্ঞান হ্রাস করার জন্য ওহাবীরা যেসব প্রমাণ দ্বারা সনদ গ্রহণ করে তা এঅবস্থাসমূহ থেকে বাইরে নয়। যদি ভুল বলে স্বীকার ১ করে নিই যে, 

এখানে এমন কোন রেওয়ায়েত পাওয়া গেলাে যার ইতিহাস জানা যায় যে, এটা। কুরআন নাজিল সমাপ্তির পরের, তাহলে তা নিশ্চিত বলে দেয় যে, সে সময় পর্যন্ত বস্তুতঃ কতেক বস্তুর কোন জ্ঞানই হাসিল হয়নি।

(১) ওহাবীদের মুখসমূহের একটি হলাে, তারা শাফায়াতের হাদীস “অতঃপর আমি স্বীয় শির উত্তোলন করবাে এবং স্বীয় প্রতিপালকের ঐ হামদ, গুণকীর্তন ও প্রশংসা করবাে, যা তিনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। এর দ্বারা প্রমাণ করতে চায় যে, রাসুলে পাক(ﷺ)-এর হামদ ও সানা (প্রশংসা ও স্তুতি বন্দনা) তাঁর সুন্দরতম প্রশংসাবলী থেকেই হবে। সুতরাং হাদীসই প্রকাশ করে দিলাে যে, হুজুর(ﷺ)-এর উপর ঐ সময়ই আল্লাহ তায়ালার ঐ গুণটি প্রকাশিত হবে, যা তিনি তখনাে পর্যন্ত জানতেন না। প্রকৃতপক্ষে তাদের এ বক্তব্যের দ্বারা। বিতর্কের কোন সুযােগ নেই। কেননা, আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, হুজুর (ﷺ)-এর জ্ঞান আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতকে পরিবেষ্টনকারী নয়, আর না মূলতঃ তাতে কোন 



অতএব, আমরা যথেষ্ট মনে করি একটি মাত্র সম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ উপকারী উত্তর যা সকল বাতুলতাকে দূরিভূত করে এবং এর মূলােৎপাটন করে বহুদূরে নিক্ষেপ করে যা সমস্ত ঘটনাবলীতে দীপ্ত ও প্রকাশমান, তা হলাে- খবরে আহাদ যখন কুরআনের আয়াতের বিপরীত হয় এবং বিশ্লেষণের কোন পন্থা অবশিষ্ট না থাকে, তখন তা কোন কাজে আসবে না, তা শ্রবণ করা যাবে না এবং তা কোন উপকারে আসবেনা। বরঞ্চ যদি এখানে উসুলের কিতাবাদি থেকে ইমামদের প্রমাণসমূহ উক্ত করি, তাহলে এর চেয়েও উত্তম ও অধিক মজবুত পছন্দের কথা এই যে, এরই সাক্ষ্য পেশ করা যা বর্তমানে হিন্দুস্থানে ওহাবীদের ইমাম রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী স্বীয় কিতাবে তার ছাত্র খলীল আহমদ আম্বেটবীর দিকে সম্পর্কিত করেছেন। স্বয়ং তিনি এ মাসয়ালায় আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক রাসুলে পাক (ﷺ) কে অদৃশ্য জ্ঞান প্রদান করা আকায়েদের মাসয়ালার অন্তর্ভুক্ত এবং ফজিলতের নয় বলে উল্লেখ করেছেন। যার বক্তব্য নিম্নরূপ-“আকৃায়েদের মাসয়ালা কিয়াস নয় যে, কিয়াস দ্বারা প্রমাণিত হয়ে যাবে, বরং অকাট্য, অকাট্য বক্তব্যসমূহ ‘নস’ দ্বারা প্রমাণিত হয়। এখানে কোন নস্ (কোরআন-হাদীসের সুস্পষ্ট বক্তব্য) নেই। সুতরাং এর স্বীকৃতি ঐ সময়ই ভেবে দেখার যােগ্য যখন গ্রন্থকার তা অকাট্য বক্তব্য দ্বারা প্রমাণ করবে। 

বরাহীনে কাতেয়ার ৮১ পৃষ্টায় আরাে বলা হয়েছে-“আকীদার মাসআ’লাবলীতে অকাট্যতার দিকই বিবেচ্য, বিশুদ্ধ ধারণা নয়”। ৮৭ পৃষ্টায় বলা হয়েছে, “এক্ষেত্রে বিশুদ্ধ হাদীসে আহাদও গ্রহণযােগ্য নয়। উসুল শাস্ত্রে যার প্রমাণ বিদ্যমান। সুতরাং রহস্য জড় খুললাে, সত্য থেকে সন্দেহ দূরীভূত হয়ে গেলাে। গাঙ্গুহী, ওহাবী, দেওবন্দী, দেহলভী এবং প্রত্যেক বেয়াদব, অসভ্য গোঁয়ার, জঙ্গলী সব মিলে এমন একটি প্রমাণ উপস্থাপন করুক, যার দাবী অকাট্য এবং মর্মার্থ নিশ্চিত ও প্রমাণ মজবুত প্রমাণিত হয়। যেমন কুরআনের আয়াত ও মুতাওয়াতির। হাদীস, যা নিশ্চিত অকাট্য ও শক্তিশালী বর্ণনা দ্বারা প্রমাণ করবে যে, অবতরণ 

বস্তুর পরিবেষ্টন হতে পারে। কেননা, সসীম অসীমকে বেষ্টন করা অসম্ভব। সুতরাং আল্লাহর জাত ও সিফাত সম্পর্কে হুজুর (ﷺ)-এর নতুন জ্ঞানসমূহ সর্বদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। কিন্তু তা কখনাে আল্লাহর সত্ত্বা পর্যন্ত পৌছতে পারবে না এবং কখনাে তাঁকে বেষ্টন করতে পারবেনা। বরং জ্ঞান অর্জন সব সময় সসীম এবং সব সময়ই অবশিষ্ট থেকে যাবে। 



সমাপ্তির পরে কোন ঘটনা রাসুলের নিকট গােপন থেকেছে, প্রকৃত পক্ষে তিনি যা জানেনও নি। এটা নয় যে, হুজুর(ﷺ) জ্ঞাত হয়েছেন কিন্তু বলেননি। কেননা, হুজুরের নিকট এমন জ্ঞানও রয়েছে, তাঁকে গােপন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলাে। অথবা জ্ঞান ছিলাে কোন সময় তাতে সাময়িক বিস্মৃতি এসেছে যে, তাঁর পবিত্র। হৃদয় কোন গুরুত্বপূর্ণ কর্মে মশগুল ছিলাে। স্মৃতিতে না আসা, জ্ঞান না থাকা নয়। বরং প্রথমে জ্ঞান থাকাই অপরিহার্য। যেমন বােধসম্পন্নদের নিকট একথা অজানা 

নয়। হাঁ! হাঁ, আপনারা এমন কিছু দলীল পেশ করুন যদি সত্যবাদী হন, যদি * পেশ করতে না পারেন, আমরা বলছি পারবেনইনা। তাহলে জেনে রাখুন, আল্লাহ। 

ধােকাবাজদের প্রতারণাকে সফল করেন না।

Top