নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য


কুরআন-হাদিসে নারী-পুরুষ সৃষ্টির যেমন উদ্দেশ্য উল্লেখিত হয়েছে মূলতঃ তা হলো মূল উদ্দেশ্য। এর বাইরেও আরো বহু উদ্দেশ্য নিহিত আছে। যেমন-


আল্লাহ তা‘আলা মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন-

 وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ 

আর আমি জ্বিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য। ৪

৪.সূরা যারিয়াত, আয়াত: ৫৬


এখানে ইনসানের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয় অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং বলা যায় যে, নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্যও আল্লাহর ইবাদত করা। তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)র প্রতিটি আদেশ-নিষেধ পুরুষের পাশাপাশি নারীও অন্তর্ভূক্ত আছে। কেবল কিছু কিছু বিষয়ে নারীর সুবিধার্থে ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়।


মানব বংশ বিস্তারও নারী সৃষ্টির অন্যতম উদ্দশ্য। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا 

হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তা থেকে স্ত্রীকে সৃষ্টি করেছেন। যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নর-নারী বিস্তার করেছেন। আর আল্লাহকে ভয় কর যাঁর নামে তোমরা একে অপরকে যাচনা কর এবং সতর্ক থাকো জাতিবন্ধন সম্পর্কে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন। ৫

৫.সূরা নিসা, আয়াত: ১


এই আয়াতটিতে মানব বংশের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আয়াতটিতে তিনটি বিষয়ের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। 


এক. সকল মানুষ হযরত আদম (عليه السلام) থেকে সৃষ্ট। 


দুই.     হযরত হাওয়া (عليه السلام) কেও হযরত আদম (عليه السلام) থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।


তিন. সকল নর-নারী হযরত আদম (عليه السلام) ও হযরত হাওয়া (عليه السلام) থেকে সৃষ্ট।


অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- 

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَل ِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ 

হে মানব! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে। তারপর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাতে তোমরা পরষ্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সমস্ত খবর রাখেন। ৬

৬.সূরা হুজরাত, আয়াত: ১৩


সুতরাং একথা নির্বিঘ্নে বলা যায় যে, আজকের বিশাল পৃথিবীতে সম্প্রসারিত অগণিত মানব প্রজন্ম এবং কিয়ামত পর্যন্ত মানব বংশ বিস্তার হযরত আদম (عليه السلام) ও হাওয়া (عليه السلام)’র যুগল জীবনের ফসল আর মহান আল্লাহর অপার করুণা।


নারী সৃষ্টির আরো একটি উদ্দেশ্য হলো - পুরুষের একাকীত্ব দূরীভূত করা, তার সুখ-দুঃখের সঙ্গী হওয়া যা নারী সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় উল্লেখ হয়েছে।


তাছাড়া স্বামীর বিছানার সঙ্গী হওয়া, সন্তান জন্ম দেওয়া, সন্তানের লালন-পালন করা, স্বামীর ধন-সম্পদ, আসবাবপত্র সংরক্ষণ করা, পারিবারিক কাজ-কর্ম সম্পাদন করা, ভালকাজে স্বামীকে সহযোগীতা ও উৎসাহিত করা ইত্যাদি নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য।

Top