আক্বীকার বর্ণনা



মাসআলাঃ সন্তান জন্মের সাত দিন অথবা তার পরবর্তী যে কোন দিন সন্তানের নামে আল্লাহর ওয়াস্তে যে পশু যবেহ করা হয় তাকে আক্বীক্বাহ বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আক্বীক্বাহ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। রাসূল (ﷺ) নিজেই হযরত হাসান ও হযরত হোসাইন রাদ্বিআল্লাহু আনহুমার আক্বীক্বাহ করেছেন। আক্বীক্বাহ দ্বারা সন্তান বলা-মুসীবত ও বিভিন্ন রকমের কষ্ট এবং রোগ-ব্যাধী থেকে মুক্ত থাকে। ১৬৫

 ➥১৬৫. বুখারী শরীফ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৮২২।


মাসআলাঃ আক্বীক্বাহ করার উত্তম নিয়ম হচ্ছে- যখন কোন ছেলে কিংবা মেয়ে জন্মগ্রহণ করবে তখন সপ্তম দিবসের মধ্যে তার নাম রাখবে এবং সপ্তম দিবসে উক্ত ছেলে-মেয়ের নামে আল্লাহর ওয়াস্তে দুই-কিংবা একটি জন্তু কোরবানী করে দেবে। আর জন্ম গ্রহণকারী ছেলে ও মেয়ের মাথার চুল ফেলে দিয়ে ঐ চুল সমপরিমাণ চান্দী কিংবা স্বর্ণ সদকা করে দেবে।


মাসআলাঃ যদি ছেলে হয় তাহলে দুইটি ছাগল কিংবা দুইটি ছাগী অথবা ভেড়া যবেহ করা। আর যদি মেয়ে হয় তাহলে একটি দিয়ে আক্বীক্বাহ করা।


মাসআলাঃ অপারগ অবস্থায় ছেলের জন্য একটি জন্তু আক্বীক্বাহ করাই যথেষ্ট। ذبح رسول الله صلى الله عليه وسلّم عن الحسن بشاة অর্থাৎ হুযুর (ﷺ) হযরত হাসান (رضي الله عنه)’র পক্ষ হতে একটি ছাগল যবেহ করে আক্বীক্বাহ করেছেন।১৬৬

 ➥১৬৬. তিরমিযী শরীফ, পৃষ্ঠা-১৮৩।

 

মাসআলাঃ আক্বীক্বার মাংস প্রত্যেকই খাওয়া জায়েয। কতেক লোকদের মধ্যে এটি প্রচলিত রয়েছে যে, নানা-নানি, দাদা-দাদী, মা-বাপ আক্বীক্বার মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। এটি ভুল এবং মূর্খদের কথা। তাদের এহেন ভ্রান্ত কথার উপর আমল না করা আবশ্যক। তবে উত্তম হচ্ছে-কোরবানীর মাংসের ন্যায় আক্বীক্বার মাংসকেও সকলের মধ্যে বন্টন করে খাওয়া।


মাসআলাঃ যেভাবে কোরবানীর পশু যবেহ করা হয়, ঠিক সে পদ্ধতিতে আক্বীক্বাহর পশুও যবেহ করা আবশ্যক। 


মাসআলাঃ যদি কোরবানীর পশুর মধ্যে আক্বীক্বার নিয়তে অংশ তথা হিচ্ছা তা এক অংশ হউক কিংবা দুই অংশ হউক আক্বীক্বার নামে দেয়া জায়েয আছে।  ১৬৭

➥১৬৭. ইসলামী ফিক্হ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৫২৪ ও ৫৪৭।


মাসআলাঃ আক্বীক্বাহকারী কোরবানীর জন্তুর মধ্যে শরীক হওয়া যাবে। আক্বীক্বাহ করাটা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম একটি সুরত তথা পন্থা। ১৬৮

 ➥১৬৮. রদ্দুল মোখতার, শামী, কানুনে শরীয়ত শাশীর উদ্ধৃত, পৃষ্ঠা-২৩৬।


মাসআলাঃ যার উপর সন্তান লালন-পালনের জিম্মাদার সেই তার আক্বীক্বাহ করা আবশ্যক।


মাসআলাঃ সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর আক্বীক্বাহ করা মুস্তাহাব। এটি কেবলমাত্র জীবিত সন্তানের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ। কেননা মৃত সন্তান ভূমিষ্ট হলে তার ক্ষেত্রে আক্বীক্বাহ্ করতে হবে না।  ১৬৯

 ➥১৬৯. ফতোয়ায়ে রহিমীয়া, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৯৬।

Top